উপন্যাসের শেষ পাতায় তুমি পর্ব -২২+২৩

#উপন্যাসের_শেষ_পাতায়_তুমি
#Writer_Tanisha_Akter_Tisha
#Part_22

কপি নিষিদ্ধ ❌

সারাটা রাত তিশার দ্বি/ধা দন্ডে কেটেছে,সারারাত ভেবেছে ওসমানকে এসএমএস এর কথাটা বলবে কিনা।

১০ টায়,তিশা ওসমানের কেবিনে যায়,
দরজা খুলে ভেতরে প্রবেশ করে,

ওসমান : হৃদয়হরণী এত সকালে আসলে।

তিশা কিছু বলেনা চুপচাপ চেয়ারে বসে আছে। চেহারায় চিন্তার ছাপ স্পষ্ট।
ওসমান তিশার মুখোমুখি চেয়ারে বসে ওর হাত মুঠো করে ধরে,
ওসমান : কি হয়েছে জানপাখি এত চিন্তিত দেখাচ্ছে কেন?

তিশা নিচের দিকে তাকিয়ে আমতা আমতা করে, কককিচ্ছু না।

ওসমান : কিছুতো হয়েছে, বলো আমায়,

ওসমানের চোখের দিকে তাকিয়ে,
তিশা : আমাকে ভালোবাসেন?

ওসমান মুচকি হেসে বলে,
তুমি জানো না।

তিশা : মুখে বলুন ভালোবাসেন।

তিশার গালে হাত রেখে,
নিজের থেকেও বেশি ভালোবাসি।

তিশা ছলছল চোখে তাকিয়ে বল,
কখনো ছেড়ে যাবেন না তো।

ওসমান তিশাকে জড়িয়ে ধরে,
ওসমান : এভাবেই সারাজীবন নিজের বক্ষপিঞ্জরে তোমাকে আবদ্ধ করে রাখবো।

তিশার ঠোঁটে প্রাপ্তির হাসি ফুটে উঠে।

ওমর আয়েশা লেকের সামনে বসে আছে,
ওমর একটা চকলেট বারিয়ে দেয়,
নেও মায়াবতী।
আয়েশা চকলেট টা নিয়ে একটু খেয়ে,
তোমাকে একটা নাম দেওয়া দরকার।
কি নাম দেওয়া যায়।
কিছুক্ষণ ভেবে,
হুম পেয়েছি,
মুচকি হেসে,
মায়াবতীর আশিক।

ওমর : আশিক বানায়া আশিক বানায়া আশিক বানায়া আপনে।

আয়েশা : ইমরান হাসমি হলে নাকি?

আয়েশার দিকে আরেকটু চেপে বসে,
হলে ক্ষতি কি,
ওমর চোখ টিপ দেয়,

আয়েশা : নো নো আশিক বাদ, উমম..
দিওয়ানা হুম,মায়াবতীর দিওয়ানা।

ওমর : Deewana kar raha hein
Tera rup suneyera.

আয়েশা : উফফ এটাও তো ইমরান হাসমির গান।

ওমর আয়েশার কানে কানে কিছু বলে,
ওর কথা শুনে আয়েশা লজ্জা পায়।

আজ ৪ তারিখ,

ওমর, অবান্তিকা,ওসমান,ওয়াহিদ তিশাদের বাসায় বসে আছে,

ওয়াহিদ : মামনি তোমরা কালই ঐ বাসায় সিফট হবে,ফার্ম হাউসে তোমাদের বিয়ে হবে,আমরাও হলুদের অনুষ্ঠান পর্যন্ত ঐখানে থাকবো আর বরযাএী সবাই খান বাড়ি থেকে আসবো তোমাদের বিয়ে পরিয়ে খান বাড়িতে নিয়ে যাব আর বউভাত টা খান বাড়িতে হবে। ঠিক আছে?

তিশা,ওসমান,অবান্তিকা,আয়েশা,ওমর : হুম।

ওরা আরো বিষয় নিয়ে কথা বলছিল,কথার মাঝে ওসমানের ফোন বেজে উঠে,
ওসমান : এক মিনিট।

কিছুক্ষণ পর ওসমান ফিরে আসে,
ওসমান : বাবা একটা প্রবলেম হয়েছে।

ওয়াহিদ : কি হয়েছে?

ওসমান : লন্ডনের হসপিটালে কিছু সমস্যা দেখা দিয়েছে, আমাদের লন্ডন যেতে হবে,১২ তারিখে ঐখানে থাকতে হবে।

ওয়াহিদ : কিন্তু হঠাৎ কি হলো?

ওসমান : সেটা জানি না, যেয়ে দেখতে হবে।

ওয়াহিদ : তাহলে বউভাতের অনুষ্ঠান শেষ করে রাতের ফ্লাইটে যেও।

ওসমান : হুম আমিও এটাই ভাবছিলাম।

ওয়াহিদ : মামনিদের নিয়ে যাবে?

ওসমান : হুম।ওদের পাসপোর্ট, ভিসা সব তো করাই আছে।

ওয়াহিদ : আচ্ছা।

পরদিন সকালে আয়েশা, তিশা ফার্ম হাউসে যেয়ে পৌঁছায়,
বিকালে ওসমানরাও চলে আসে,
ওসমান তিশার রুমে এসে দেখে তিশা ঘুমাচ্ছে,
ওসমান ওর চুলে হাত বুলাতেই ওর ঘুম ভেঙে যায়।

তিশা : সবাই চলে এসেছে?

ওসমান : হুম, মাথা ব্যাথা করছিল?

তিশা : হুম।

ওসমান : কমেছে?

তিশা : হুম।

ওসমান : হাত মুখ ধুয়ে আসো সবাই তোমার জন্য ওয়েট করছে।

তিশা : আপনি যান আমি আসছি।

ওসমান : আচ্ছা।

তিশা ফ্রেস হয়ে নিচে নেমে দেখে সবাই একএে বসে আছে।
বাড়ি ভর্তি মানুষ।
তিশা সবাইকে সালাম দিয়ে সোফায় ওসমানের পাশে বসে।

রাবেয়া (ওয়াহিদের চাচাতো ভাইয়ের বউ) : বাহ ভাবি আপনার বউরা তো মাশাল্লাহ খুব সুন্দর।

অবান্তিকা মুচকি হাসে।

ওমর : বড়দের মাঝে আমরা থেকে কি করবো চলো আমরা ছাদে যেয়ে আড্ডা দেই।
ওমর,ওসমান,আয়েশা, তিশা ও ওসমানের কাজিনরা সবাই ছাদে যেয়ে গোল হয়ে বসে।
সাজ্জাত,ইয়াসিন,প্রিয়া,সামির,রিয়া,
আহনাফ,মেঘা,তামিম,হৃদিকা,আরিশ,
রাইসা,
ছাদে এসে,
আমরাও চলে এসেছি।

ওসমান : এখানে এসে বসো।

ওরা সবাই একসাথে বসে আড্ডা দিচ্ছিল।
তিশা লক্ষ করলো সায়েফ (রাবেয়ার ছেলে)ওর দিকে বা/জে দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।
ওরা অনেকক্ষণ অাড্ডা দেয়, রাতে ডিনার করে সবাই যার যার রুমে চলে যায়।

তিশা রুমের দরজা আটকাতে যাবে তখন সায়েফ দরজায় হাত রাখে।

তিশা : আপনি এখন এখানে?

সায়েফ : বেবি তোমার সাথে কথা বলতে এসেছি।

তিশা : আমি আপনার ভাইয়ের বউ তাই সম্মান দিয়ে কথা বলুন।

সায়েফ : ওহ বেবি রেগে যাচ্ছ কেন।

ওসমান সায়েফের কাধে হাত রেখে,
কিরে তুই এখানে কি করছিস।

ওসমান আসাতে সায়েফ কিছুটা ঘাবড়ে যায়,
ভাবির সাথে কথা বলছিলাম।

ওসমান : ওহ, এবার তুই আসতে পারিস, তোর ভাবির সাথে আমি কথা বলবো।

ওসমান রুমে ঢুকে দরজা লাগিয়ে দেয়।
ওসমানের কাজে সায়েফের রাগ উঠে যায়।

ওসমান : জানপাখি এই দেখো কি নিয়ে এসেছি।

তিশা : ফুচকা!

ওসমান : হুম,ভাবলাম ফুচকা নিয়ে এসে আমার বউটাকে হ্যাপি করে দেই।

তিশা : কিন্তু এতো রাতে কোথায় পেলেন,

ওসমান : ম্যাজিক করে।

তিশা : বসুন আর নিজ হাতে খাইয়ে দিন।

পরদিন,

আজ তিশাদের মেহেদী অনুষ্ঠান,

দুইটা স্টেজ তৈরি করা হয়েছে, একটায় তিশা আর আরেকটায় আয়েশা বসে আছে।
তিশা ও আয়েশা একরকম সবুজ কালার
কাঞ্জিবারাম শাড়ি পরেছে, ব্রাইডাল মেকাপ করা,
সুন্দর করে হেয়ার স্টাইল করা, ভারী অর্নামেন্ট পরেছে,মাথায় গোল্ডেন কালার ওড়না দেওয়া।

“Mehendi laga ke rakhna ” গানে ডান্স করে ওসমান, ওমর সহ সব ছেলেরা এন্ট্রি নিল।

ওসমান তিশার পাশে বসে,মেহেদী আর্টিসের থেকে একটা মেহেদী কোন নিয়ে তিশার ডান হাত ধরে,
আমি এই হাতে দিচ্ছি আপনি ওর বাম হাতে দিন।

তিশা অবাক হয়ে বলে,
আপনি মেহেদী দিতে পারেন!

ওসমান : তোমাকে নিজ হাতে মেহেদী পরাবো তাই শিখেছি।

ওসমানের কথা শুনে সবাই একসাথে,
ও………….

সবার এভাবে ও বলাতে তিশা লজ্জা পায়।

ওমর : এইযে ম্যাডাম ঐখানে কি দেখছেন,হাত বারান।

আয়েশা : তুমিও!

ওমর : জ্বি ভাইয়ার সাথে আমিও শিখেছি।

হৃদিকা : দেখো বউকে মেহেদী পরাবে বলে ভাইয়ারা মেহেদী দেওয়া শিখেছে আর তুমি তো শিখার চেষ্টাও করোনি হুহ।

সাজ্জাত : শা’লা তোদের জন্য আমার বউ মুখ ফুলিয়ে রেখেছে।

সাজ্জাতের কথা শুনে ওমর,ওসমান ফিক করে হেসে দিল।

ওসমান তিশার হাতে আর ওমর আয়েশার হাতে খুব সুন্দর করে মেহেদী পরিয়ে দিচ্ছে।

মেহেদী পরানো শেষে,
ওসমান : কেমন হয়েছে?

তিশা : অসাধারণ।দিন এবার আপনার হাতে আমার নাম লিখে দিই।

ডান হাতের তালুর মেহেদী শুকিয়ে যাওয়ায় তিশা
মেহেদী কোন ধরলেও মেহেদী নষ্ট হয় না।

ও ওসমানের হাতে লিখে,
তিশা,আমার হৃদয়হরণী।

ওসমান : আমার নাম টা খুঁজে বের করো তো।

তিশা কিছুক্ষণ খুঁজে,
পেয়েছি এইতো শাহাদাত আঙুলে লিখেছেন, ডিজাইনের মধ্যে ছোট করে লিখেছেন তাইতো খুঁজতে সময় লাগলো।

ওমর : ডান।

আয়েশা : খুব সুন্দর হয়েছে, তুমিতো আমার থেকেও সুন্দর করে দিতে পারো।

ওমর উত্তরে মুচকি হাসলো।

আয়েশা : দেও তোমার হাতেও দিয়ে দেই,

আয়েশাও ওমরের হাতে মেহেদী দিয়ে দেয়।

ওমর : এটা কি লিখেছো।

আয়েশা : পড়ে দেখো।

ওমর : “আমি বিবাহিত আমার এক মায়াবতী আছে,কোনো মেয়ে আমার দিকে তাকালে আমার মায়াবতী তার চোখ উ*ঠি*য়ে মার্বেল খেলবে”।
এগুলো কি দিখেছো।

আয়েশা : সত্যি কথা লিখেছি। আর হ্যাঁ তুমি যদি আমি ব্যতীত কোন মেয়ের দিকে তাকিয়েছো তাহলে তোমার চোখ তু*লেও মার্বেল খেলবো।

ওমর : বাহ কি কপাল আমার, ডা*কা*ত মার্কা বউ পেয়েছি।
ওমরের কথা শুনে আয়েশা কিউট স্মাইল দিল।

সবার মেহেদী দেওয়া শেষ।

নাচ গানের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শেষ হল।

তিশা ওসমানের রুমে সামনে দাঁড়িয়ে আছে, নক করায় ওসমান দরজা খুলে,তিশাও ভেতরে প্রবেশ করে,
তিশা : আপনাকে কিছু বলার ছিলো।

ওসমান : হুম বলো।

তিশা : সায়েফ ভাইয়া কাল আমার দিকে বাজে দৃষ্টিতে তাকিয়ে ছিলেন আর আজ আমাকে বাজে প্রস্তাব দিয়েছে ফলস্বরূপ তাকে আমি চ/ড়
মে/রে/ছি আমি কি কিছু ভুল করেছি?

ওসমান : একদম ঠিক করেছি।

তিশা : আপনাকে কথাটা জানানো দরকার ছিল তাই বলতে এসেছি।

তিশা বাহিরে যাওয়ার জন্য পা বাড়ালে,ওসমান ওকে পেছন দিয়ে জড়িয়ে ধরে,
ওসমান : ম্যাম এসেছেন আপনার ইচ্ছায় কিন্তু যাবেন আমার ইচ্ছায়।

তিশা : ছাড়ুন মশাই আমি এখন না ঘুমালে কাল আর খুঁজে পাবেননা।

ওসমান : এতো ঘুমাতে হবেনা চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকো।

তিশা : ওহো ছাড়ুন তো।

ওসমান : জ্বি না কোনো ছাড়াছাড়ি নেই।

তিশা কিছু একটা ভেবে দরজার বাহিরে তাকিয়ে,
দেবরজ্বী।

ওসমান তিশাকে ছেড়ে দেয়।
ওসমান : কোথায় ওমর?

তিশা : তার রুমে,
বলে তিশা দেয় দৌড়, ওকে আর পায় কে।

ওসমান মুচকি হেসে,
আমার ঘুম হা/রা/ম করে নিজে ঘুমাতে গেল।
পরক্ষণে সায়েফের কথা মনে করে রাগে কপালের রগ ফুলে উঠে, স্পর্শকে কল করে,

স্পর্শ : ইয়েস বস।

ওসমান : সায়েফের হাত পা ভে/ঙে ফেলো, ওকে আমি কাল এখানে নয় হসপিটালে দেখতে চাই।

স্পর্শ : ওকে বস।

ওসমান কল কেটে, রেগে বিড়বিড় করে বলে,
তোকে জা*নে মে*রে ফেলতাম শুধু চাচ্চুর কথা ভেবে মা*রলাম না।

আজ ওদের হলুদের অনুষ্ঠান,

বড় করে স্টেজ তৈরি করেছে,তিশা ও আয়েশা মাঝে বসেছে আর তিশার পাশে ওসমান এবং আয়েশার পাশে ওমর বসেছে।

তিশা ও আয়েশা আজ ক্রীম কালারে লেহেঙ্গা পরেছে,লেহেঙ্গাটা ক্রীম কালারের হলেও হোয়াইট স্টোনের কাজ করায় ক্রীম কালার টা বুঝা যাচ্ছেনা।গায়ে ভারী অলংকার জড়ানো, ব্রাইডাল মেকআপ করা, চুলে স্টাইলিশ হেয়ার স্টাইল করা, মাথায় স্টোনের কাজ করা সাদা ওড়না দেওয়া।

সবার অগোচরে ওসমান তিশার কানে কানে বলে,
মে/রে ফেলতে চাও বুঝি,

তিশা ওসমানের দিকে তাকায়।

ওসমান আবার আস্তে করে বলে,
মারাত্মক সুন্দর লাগছে।

তিশাও একই ভাবে আস্তে করে বলে,
আপনাকে দেখে তো অলরেডি খু**ন হয়ে গেছি, আপনি এত সুন্দর কেন?

আয়েশা রেগে সামনের দিকে তাকিয়ে ওমরের কানে কানে বলে,
ঐ মেয়েটা তোমার দিকে এভাবে ডেপডেপ করে তাকিয়ে আছে কেন?

ওমরও আস্তে করে বলে,
কোথায় কোন মেয়ে তাকিয়ে আছে?

আয়েশা : ঐযে ঐ মেয়েটা।

ওমর : আহা আমি কি ওর দিকে তাকিয়েছি নাকি, আমিতো আমার মায়াবতীর দিকে তাকিয়ে আছি।

আয়েশা : হ্যাঁ তুমি আমার দিকেই তাকাবে, অন্য কারো দিকে তাকালে তোমার খবর আছে।

ওমর : ওকে ওকে।

আয়েশা : বায় দা ওয়ে আমার বরটাকে খুব সুন্দর লাগছে।

ওমর : থ্যাঙ্ক ইউ মেরি জান।

সবাই হলুদ দিতে শুরু করলো, প্রথমে ওয়াহিদ ওদের চার জন কে হলুদ দিল তারপর অবান্তিকা, এভাবে একে একে সবাই ওদের হলুদ দিল।

হলুদ দেওয়ার পর্ব শেষ হতেই তিশা ওর রুমে দিকে যায়।
রুমের সামনে যেতেই কেউ ওর হাত ধরে টান দিয়ে রুমের মধ্যে নিয়ে দেয়ালের সাথে আটকে দেয়,

#উপন্যাসের_শেষ_পাতায়_তুমি
#Writer_Tanisha_Akter_Tisha
#Part_23

কপি নিষিদ্ধ ❌

রুমের সামনে যেতেই কেউ হাত ধরে টান দিয়ে রুমের মধ্যে নিয়ে দেয়ালের সাথে আটকে দেয়,
ওসমান তিশার দিকে ঝুঁকে দাঁড়িয়ে আছে,

তিশা : এভাবে তাকিয়ে আছেন কেন?

ওসমান : সবাই তো তোমাকে হলুদ দিল, আমারটাই বাকি রয়ে গেছে।
টেবিলের উপর থেকে হলুদের বাটি থেকে কিছুটা হলুদ নিয়ে তিশার কোমড়ে হাত রেখে কিছুটা নিজের সাথে মিশিয়ে গালে হলুদ ছোঁয়ায় তিশাও আবেশে চোখ বন্ধ করে নেয়।
তিশা চোখ খুলে ওসমানের দিকে তাকিয়ে পা একটু উঁচু করে ওসমানের গালের সাথে গাল স্লাইড করে।

তিশা : আপনাকেও হলুদ দিয়ে দিলাম।

ওসমান মুচকি হেসে তিশার হাত ধরে ঘুরিয়ে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে কাধে থুতনি রেখে চোখ বন্ধ করে, তিশাও চোখ বন্ধ করে।

একটু পর,
তিশা : এবার বাহিরে যাওয়া যাক।

তিশাকে ছেড়ে দিয়ে,
ওসমান : হুম।

সাজ্জাত,ইয়াসিন,প্রিয়া,সামির,রিয়া,আহনাফ,মেঘা,তামিম,হৃদিকা,আরিশ,রাইসা,ওসমানের কাজিনরা
“Gallan Goodiyaan” গান টায় নাচলো।

ওসমান তিশার হাত ধরে গেয়ে উঠে,
“Dill ibadat kar raha hai
Dhadkane meri sun
Tujhko Main kar lu Hasil
lagi hai ye hi dhun.”

পুরোটা গান তিশার দিকে তাকিয়ে গেয়েছে।

ওমর আয়েশার হাত ধরে এক হাঁটু গেড়ে বসে গেয়ে উঠে,
“তুমি আকাশের বুকে
বিশালতার উপমা
তুমি আমার চোখেতে
সরলতার প্রতিমা”।

পুরোটা গান আয়েশার হাত ধরে এক হাঁটু গেড়ে বসে গেয়েছে।

সবাই ওদের গান গাওয়া শেষে জোরে হাত তালি দেয়,

ওমর, আয়েশ, তিশা, ওসমান একসাথে
“Tenu Leke mein javanga” গান টায় নাচলো।

সাজ্জাত,ইয়াসিন,প্রিয়া,সামির,রিয়া,আহনাফ,মেঘা,তামিম,হৃদিকা,আরিশ,রাইসা,ওমর, আয়েশা,তিশা, ওসমান ওরা একসাথে “Dill Dooba ” গান টায় নাচলো।

তিশা ও আয়েশা একসাথে
“Saiyaan Superstar”,”Makhna”,”Maine payel hai chankai” গানটায় নাচলো।

প্রিয়া,রিয়া,মেঘা,হৃদিকা,রাইসা,ওসমানের বোনেরা “Chamma Chamma” গানে নাচলো।

সাজ্জাত,ইয়াসিন,সামির,আহনাফ,তামিম,আরিশ,ওসমানের ভাইরা,বন্ধুরা “Tumse milke dil ka jo haal” গানে নাচলো।

ওসমানের ফ্রেন্ড,কাজিন,তিশার ফ্রেন্ড ওরা আরো কয়েকটা গানে নাচলো।

সবাই একসাথে “Kala chasma” গানে নাচলো।

লাস্টে সব কাঁপলের স্পট মিউজিকে কাঁপল ডান্স দ্বারা অনুষ্ঠান শেষ হল।

রাত ২:৩০,

তিশা সুইমিংপুলের পানিতে পা ডুবিয়ে রেখেছে, ওসমান তিশার পেছনে বসে ওকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে বসে আছে, তিশার মাথা ওসমানের বুকে ঠেকিয়ে শরীরের পুরো ভর ওসমানের উপর ছেড়ে হেলান দিয়ে বসে আছে,

তিশা : একটা কথা বলি?

ওসমান : হুম।

তিশা : আপনি মামনির সাথে ঠিক মতো কথা বলেন না কেন।

ওসমান : বলিতো।

তিশা : আমাকে মিথ্যা বলবেন না, আমি লক্ষ্য করেছি আপনি মামনির সাথে প্রয়োজন ছাড়া কথা বলেন না। আজ সকালে মামনির রুমে যেয়ে দেখি মামনি আপনার ছবি বুকে জড়িয়ে কাঁদছিলেন।
কি হয়েছে আপনাদের মধ্যে?

ওসমান : ওহো কিছুই হয়নি এসব ব্যাপার বাদ দাও তো।

তিশা :[মনে মনে]: বুঝেছি আপনি আমাকে বলতে চাইছেননা,ঠিক আছে আমিও আপনার মুখ থেকে বের করেই ছাড়বো,মামনি আর আপনার মধ্যে
মনমা!লিন্যও দূর করবো।

ওসমান : [মনে মনে]: ঐ কথাগুলো এখন তোমাকে বলতে চাইনা সময় হলে ঠিক জানতে পারবে।

তিশা : আমার একটা আবদার রাখবেন?

ওসমান : হুম।

তিশা : আমরা বিয়ে পর প্রতিদিন তাহাজ্জুদ নামাজ পরবো, আর নামাজ শেষে আপনি আমায় কোরআন তেলাওয়াত করে শুনাবেন।আমার এই আবদার রাখবেন?

ওসমান : জ্বি রাখবো, আমারও একটা আবদার আছে।

তিশা : হুম বলুন।

ওসমান : তোমাকে সবসময় আমার বুকে মাথা রেখে ঘুমাতে হবে, রাখবে আমার আবদার?

তিশা : হুম রাখবো।

তিশা ওসমানের সাথে কথা বলতে বলতে ঘুমিয়ে পরে,ওসমান ওকে কোলে তুলে রুমে দিয়ে এসে নিজেও রুমে এসে ঘুমিয়ে পরে।

সকালে বরপক্ষের সবাই খান বাড়ি চলে যায়। ঐখান থেকেই বরযাএী আসবে।

তিশা, আয়েশা নাস্তা করে রুমে বসে আছে,

আয়েশা : আমার সবকিছু স্বপ্ন মনে হচ্ছে, কখনো ভাবিনি ওমরকে পাবো, কখনো ভাবিনি ওর বউ হব, কখনো ভাবিনি জীবনে এত সুখ পাবো।

তিশা : আমিও ভাবিনি ডক্টর সাহেবকে পাবো,ভাবিনি কেউ আমাকে এতটা ভালোবাসবে, আল্লাহ আমাদের খুব ভালোবাসেন তাই দুঃখের পর সুখ দান করেছেন।

আয়েশা : হুম আমরা খুব লাকি।

ওদের কথার মাঝে তিশার ফোনে এসএমএস আসে,
আয়েশা : ভাইয়ার এসএমএস নাকি?

তিশা : না, দেখ কিছুদিন যাবৎ অচেনা নাম্বার থেকে এসএমএস আসছে সব এসএমএস এ ওনার
বি;রু;দ্ধে কি সব লেখা, দেখ এটাতে লিখেছে, “ওসমানকে বিয়ে করলে সারা জীবন প/স্তা/তে হবে”।

আয়েশা : আরে বাদদে এসব এগুলো মনে হয় গরুর নেহারি টা করছে তোকে আর ভাইয়া কে আলাদা করার জন্য, তুই এসব কিছু মাথা থেকে ঝেরে ফেল,এসবে বিশ্বাস করবিনা।

তিশা : হুম।

আয়েশা : দোস্ত একটা কথা ভেবে আমার হাসি পাচ্ছে।

তিশা : কি?

আয়েশা : আমার আর ওমরের নামের অক্ষর একসাথে করলে OA হয়, কিন্তু তোর আর ভাইয়ার নামের অক্ষর এক করলে OT বা TO হয়।
OT হাহা কেমন শুনা যায় হাহাহা
তোরা Operation Theater এর সর্ট ফ্রোম, হাহাহাহা

তিশা : 😒

আয়েশা হাসতে হাসতে শেষ।
তিশা আয়েশাকে বালিশ দিয়ে মা/র/ছে,
তিশা : যা হা;রা;মি ফা!জিল মাইয়া।

আয়েশা হাসতে হাসতে চলে গেল।

তিশা :আসলেই তো OT কেমন কেমন শোনায়,ধুর কি ভাবছি।

খান বাড়িতে,

খান বাড়ি খুব সুন্দর করে সাজানো হয়েছে,

ওয়াহিদ : শুনো তুমি লাঞ্চ করে মামনিদের কাছে যাও,এখানে আমরা বাকিটা দেখে নিবো।

অবান্তিকা : আচ্ছা।

ওয়াহিদ বাকি কাজের তদারকি করতে চলে গেল,

অবান্তিকা ওমর ও ওসমানের কাছে গেলেন।

ওমর : মামনি বসো বসো।

অবান্তিকা : আমি লাঞ্চের পর তিশাদের কাছে যাব তোমরা ঠিকমতো ঐখানে পৌঁছে যেও।

ওমর : আচ্ছা।

অবান্তিকা ওমরকে জড়িয়ে ধরে,
ভালোবাসি বাচ্চা, সব সময় ভালো থেকো,আজ তোমার জীবনের সাথে আরেকজনের জীবন জোড়া লাগবে,কখনো তার অসম্মান করবে না।

ওমর : হুম।

অবান্তিকা ওমরকে ছেড়ে ওসমানের কাছে যায়।
কিছুক্ষণ ওর দিকে তাকিয়ে ওকে জড়িয়ে ধরে,
ওসমানও আজ বাধা দেয় না।
অবান্তিকা : বাবা সবসময় ভালো থেকো সুখ থেকো,তুমি খুব লাকি তিশার মতো একজনকে জীবনসঙ্গী হিসেবে পেয়েছো,ওকে কখনো কষ্ট দিওনা,মেয়েটা এতবছর অনেক কষ্ট পেয়েছে,ওকে সবসময় হাসি খুশি রেখো।

ওসমান : হুম।

ওসমানকে ছেড়ে দিয়ে,
চলো নিচে সবাই তোমাদের জন্য ওয়েট করছে।

ওমর, ওসমান : চলো।

ওরা সবাই একসাথে লাঞ্চ করে,অবান্তিকা তিশাদের কাছে যায়।

সন্ধ্যায়,
তিশা ও আয়েশা রেডি হয়ে নিজেদের রুমে বসে আছে,
তিশা ও আয়েশা একরকম গোল্ডেন এন্ড ব্রাউন কালার কম্বিনেশনের ব্রাইডাল গাউন পরেছে,ব্রাইডাল মেকাপ করা সাথে গায়ে ভারী অলংকার জড়ানো,সুন্দর করে হেয়ার স্টাইল করা তাতে গোলাপ ফুল লাগিয়েছে, মাথায় গোল্ডেন কালারের ওড়না দেওয়া।

তিশার ফোনে ইতোমধ্যে অনেক এসএমএস এসেছে কিন্তু ও সবগুলো ইগনোর করেছে।

তিশা অবান্তিকাকে জড়িয়ে ধরে বসে আছে,
তিশা : মামনি আমার সবকিছু স্বপ্ন মনে হচ্ছে, আমি খু্ব ভাগ্যবতী তোমাদের মতো পরিবার পেয়েছি,
কখনো ভাবিনি আমার জীবনে সুখ আসবে।

অবান্তিকা : আল্লাহ আমাদের পরীক্ষা করেন, আমাদের জীবনে কষ্টের পরই সুখ আসে, দোয়া করি সবসময় সুখে থাকো, আল্লাহ যেনো পৃথিবীর সব সুখ তোমায় দান করেন।

দরজার সামনে দাঁড়িয়ে,
আয়েশা : বাহ কেবল একজনকেই দোয়া দিচ্ছো, আমি বুঝি বা;নে;র জলে ভে/সে এসেছি।

অবান্তিকা হাত বারিয়ে দেয় আয়েশাও ওকে জড়িয়ে ধরে,
অবান্তিকা : দোয়া করি আল্লাহ যেনো আমার দুই মেয়েকেই সুখ দান করেন, কখনো যেনো তোমাদের উপর দুঃখের কালো ছায়া না ফেলে।

আয়েশা : কাঁদলে কিন্তু মেকআপ নষ্ট হয়ে যাবে।

তিশা : জ্বি নেহি, ওয়াটার প্রুফ মেকআপ,এখন পানিতে চু/বা/লেও মেকআপ নষ্ট হবেনা।

তিশার কথা শুনে অবান্তিকা ও আয়েশা ফিক করে হেসে দেয়।

ওসমান : ওমর আমার ফোনটা খুঁজে পাচ্ছিনা, তিশাকে একটা কল দে তো।

ওমর : এখনতো বের হব,কল দিতে হবে না।

ওসমান : আচ্ছা দেখি ফোনটা কোথায় রাখলাম।
ওসমান সব জায়গায় খুঁজেও ফোন পেলোনা।

আজ!বতো কোথায় গেলো ফোনটা তিশাকে কল করে বলবো? না থাক এখন তো বের হবোই।

তিশা ওর রুমে বসে আছে, বসে বসে বোরিং লাগছিল তাই ফোন হাতে নিল,দেখে একটা নাম্বার থেকে অনেক গুলো এসএমএস এসেছে, ইচ্ছে না থাকা সর্তেও নাম্বার টায় কিল্ক করা মাএই কয়েকটা ছবি ও একটি ভিডিও আর কিছু মেসেজ লেখা ছিল।
ছবি গুলো দেখে তিশা হতবাক হয়ে গেল,

একটা ছবিতে ওসমান ও একটা মেয়ের ছবি,
আরেকটায় ওমর, ওসমান, ও ঐমেয়েটার ছবি, আর আরেকটা ছবিতে ওসমানরা সবাই ছিল সাথে ঐ মেয়েটাও আছে,
মেয়েকে তিশা চিনে না আগে কখনো দেখেওনি।

একটা মেসেজে লেখা,

তিশা আমি ওসমানের স্ত্রী, দেখো ছবিগুলোতে তা স্পর্ট দেখা যাচ্ছে।

আসলেই তাই ছবিতে মেয়েটাকে বউ বউ লাগছে।

আরেকটা এসএমএসে লেখা,
আমরা দুজন দুজনকে খুব ভালোবাসি, প্লিজ আমাদের সাজানো সংসার ন/ষ্ট করো না।

আরেকটা এসএমএসে লেখা,
তুমি আমাদের জীবনে তৃ/তী/য় ব্যাক্তি, তোমার জন্য আমাকে ওসমান ক/ষ্ট দিচ্ছে নিজের থেকে দূরে সরিয়ে রেখেছে।

আরেকটা এসএমএসে লেখা,
দয়া করে ওসমানকে বিয়ে করোনা ও তোমার আর আমার দুজনেরই জীবন ন/ষ্ট করে ফেলবে,ওকে বিয়ে করোনা, আমার কথা যদি বিশ্বাস না হয় তবে ভিডিও টা দেখে বলো ভিডিও তে কি ওসমান নেই।

তিশা এসএমএস টা পরে তৎক্ষনাৎ ভিডিও প্লে করে, ভিডিও টা দেখে তিশা মাথা আকাশ ভেঙে পড়ে,
ভিডিও তে ঐ মেয়েটা আর একটা ছেলেকে
আ/প/ত্তি/কর অবস্থায় দেখা যাচ্ছে,ছেলেটার চেহারা দেখা যাচ্ছে কিন্তু শরীরের গঠন অবিকল ওসমানের মতো।
ভিডিও টা দেখে তিশা ধপ করে ফ্লোরে বসে পরে,তিশার চোখ থেকে পানি পরছে ও বিশ্বাস করতে পারছেনা।
তিশা : না ওটা ওসমান না অন্য কেউ।
তিশা ঐ নাম্বারে মেসেজ পাঠালো,
আমি জানি এসব মিথ্যা, ওটা আমার ওসমান না।

তিশার মেসেজে রিপ্লায় আসলো,
আমার কথা বিশ্বাস না হলে ওসমানকে জিজ্ঞেস করো এগুলো মিথ্যা কিনা।

তিশা মেসেজ টা পড়ে ওসমানকে কল করে,কিন্তু ওসমান কল রিসিভ করে না, আবার কল দিবে তার পূর্বে ওসমানের নাম্বার থেকে এসএমএস আসে,

এসএমএস এ লেখা,
হুম তিশা বলো।

তিশা ছবিগুলো পাঠিয়ে এসএমএসে লিখলো,
কে এই মেয়ে?

কেন কি হয়েছে?

তিশা : যা জিজ্ঞেস করেছি তার উত্তর দিন কে এই মেয়ে।

আমার স্ত্রী।

তিশা : কি!

হ্যাঁ।তোমাকে বলতে চেয়েও এতদিন বলতে পারিনি, সরি তিশা, কিন্তু এটা সত্যি ও আমার স্ত্রী।

তিশা ওসমানের এসএমএস পড়ে ফোন টা ছুড়ে
মা/রল, তিশার কষ্টে বুক ফে/টে যাচ্ছে, ও অঝোরে কান্না করছে,
কাঁদত কাঁদতে বিরবির করে বলছে,
কেন ওসমান কেন এমন করলে আমার সাথে, কেন এত স্বপ্ন দেখিয়ে নিমেষে তা ত/চ/ন/চ করে দিলে কেন এভাবে ধোঁ/কা দিলে।কেন ওসমান কেন?
বিরবির করে বলছে আর কাঁদছে।

এদিকে ওসমান ও ওমর চলে এসেছে বাহিরে সবাই গেট ধরেছে,

নিচে থেকে আসা আওয়াজে তিশা বুঝতে পারলো ওরা চলে এসেছে,
তিশা : নাহ আমি ওসমানকে আমার জীবন ন/ষ্ট করতে দিবো না, না তো ঐ মেয়ের জীবন ন/ষ্ট হতে দিব, ওসমান করবো না তোমায় বিয়ে চলে যাব তোমার থেকে বহু দূরে।
তিশা বসা থেকে উঠে রুম থেকে বেরিয়ে গেল।

ওসমান ও ওমর ওদের টাকা দিয়ে সদর দরজা দিয়ে প্রবেশ করে,আর সবার অগোচরে তিশা পেছনের দরজা দিয়ে বের হয়ে বাগানের গার্ডদের চোখ ফাঁকি দিয়ে বেরিয়ে যায়।

________________________________________________

In USA,

☆‌‌‌: হ্যালো, কাজ হয়েছে?

জ্বী ম্যাম, আপনি যেভাবে বলেছেন ঠিক সেভাবেই কাজটা করেছি।

☆: তিশা মেয়েটাকে আমার আর ওসমানের ছবি দিয়েছিলে।

জ্বী ছবি, ভিডিও সব দিয়েছি।

☆: তিশা মেয়েটা এখন কোথায়?

কাঁদতে কাঁদতে পেছনের দরজা দিয়ে বেরিয়ে যেতে দেখেছি।

☆: ওকে খুঁজে মে*রে ফেলো।

ওকে ম্যাম।

লোকটা কল কেটে দিল।

☆: ওসমান খান,৫ বছর ১০ মাস আগে তুমি সবার সামনে আমাকে অপমান করেছিলে আমার এখনো সেইদিন টার কথা মনে আছে,তোমাকে তো আমি শান্তিতে থাকতে দিবনা,আমিও তোমাকে সবার সামনে অপমান করবো, তোমার ভালোবাসার মানুষকে তোমার থেকে দূরে সরিয়ে দিব,তোমাকে আমি তি/লে তি/লে মা*রব, তোমার জীবন ধ্বং*স করে দিব।
বলে শয়তানি হাসি দিল।
তখন একটা ছেলে ওর ঘাড়ে কিস করে বলে,
ওহ কাম অন বেবি কি ফোন নিয়ে পরে আছো।
বলে ফোনটা নিয়ে সোফায় ছুড়ে মেয়েটাকে কোলে নিয়ে বেডে চলে যায়।

________________________________________________

In BD,

ওসমান ও ওমর স্টেজে বসে ছিল, হৃদিকা ওদের কাছে যায়,
ভাইয়া আয়েশা আপনাদের ডেকেছে দ্রুত চলেন।
বলে হৃদিকা স্টেজ থেকে নেমে আয়েশার রুমের দিকে যায় ওসমান,ওমরও হৃদিকার কথা শুনে আয়েশার রুমের দিকে যায়।

ওরা রুমে প্রবেশ করা মাএই আয়েশা ওমরকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে লাগলো।

ওমর,ওসমান : কি হয়েছে আয়েশা কাঁদছো কেন?

আয়েশা ওমরকে ছেড়ে ওসমানের দিকে তাকিয়ে, কাঁদতে কাঁদতে,
ভাইয়া তিশাকে খুঁজে পাচ্ছিনা।

ওমর,ওসমান : কি!

হৃদিকা : হ্যাঁ পুরো বাড়ি খুঁজেছি ও কোথাও নেই।

ওসমান : কি বলছো কোথায় যাবে ও, এখানেই কোথাও আছে।

হৃদিকা : না ভাইয়া ও কোথাও নেই সব জায়গায় খুঁজেছি পাইনি।

সাজ্জাত : কি হয়েছে ভাবি কাঁদছে কেন?

হৃদিকা : তিশাকে খুঁজে পাচ্ছিনা।

সাজ্জাত : কি বলছো!

ওমর : ভাবিকে কখন থেকে পাচ্ছেন না।

হৃদিকা : আপনারা আসার আগে আমি তিশার রুমে যাই তখন তো তিশা ওর রুমেই ছিল আপনারা ভেতরে আসার পর আমি ওর রুমে যেয়ে দেখি ও রুমে নেই পরে পুরো বাড়ি খুঁজি কিন্তু ওকে পাইনি।

ওসমান : আয়েশা তুমি কি জানো ও কোথায় যেতে পারে।

আয়েশা : না ভাইয়া।

ওসমান : দেখো ও তো এমনি এমনি কোথাও যাইনি, তুমি কিছু কি জানো, একটু ভেবে বলোতো।

আয়েশা : না তেমন কিছু তো….
ওর কিছু মনে পরে,
হ্যাঁ মনে পরেছে আজ সকালে ও বলেছিল ৫/৬ দিন ধরে ওর ফোনে অচেনা নাম্বার থেকে এসএমএস এসেছে, ও ঐ এসএমএস গুলো নিয়ে টেনশনে ছিল।

ওসমান : ওমর তিশার ফোনে কল কর।

হৃদিকা : ভাইয়া এইযে ওর ফোন রুমে বন্ধ অবস্থায় পরা ছিল।

ওসমান ফোন অন করার চেষ্টা করে ভাগ্যেক্রমে অনও হয়,ও মেসেজ অপশনে যেয়ে প্রত্যেকটা এসএমএস পরে ঐ ছবিগুলোও দেখে।

এসবকিছু দেখে ওসমানের মাথায় র*ক্ত উঠে যায়,রাগে কপালের র/গ ফুলে উঠে।

ওসমান : সাজ্জাত ৩০ মিনিট সবাইকে মেনেজ কর,তিশা বাসায় নেই এটা কেউ যেন জানতে না পারে।

সাজ্জাত : ঠিক আছে।

ওসমান : আয়েশা কান্না করো না তোমাকে প্রমিস করছি ৩০ মিনিটের মধ্যে তিশাকে খুঁজে বের করবো।ওমর আমার ল্যাপটপ টা নিয়ে আয়।

ওমর ল্যাপটপ নিয়ে আসে, ওরা সিসিটিভি ফুটেজ দেখতে পায় তিশাকে কাঁদতে কাঁদতে পেছনের দরজা দিয়ে বেরিয়ে যেতে।

ওসমান : আমি আসছি।

ওমর : ভাইয়া আমিও যাবো।

ওসমান : না ওমর আমাদের একসাথে যেতে দেখলে সবাই সন্দেহ করবে, তুই আর সাজ্জাত এই দিকটা সামলে নিস।তিশার কথা জিজ্ঞেস করলে বলবি তিশা অসুস্থ, কাউকে ওর রুমে যেতে দিবিনা।

ওসমান দ্রুত বের হয়ে গাড়িতে উঠে বসে গাড়ি স্টার্ট দেয়,
জানপাখি আমাকে ছেড়ে চলে এসে খুব বড় ভুল করলে।এই বিশ্বাস ছিল আমার প্রতি, এতোটাই ঠুনকো ছিল।
ওসমান রেগে ফুল স্পিডে গাড়ি চালাচ্ছে।

তিশা ঐ ব্রিজটার সামনে দাঁড়িয়ে নদীর দিকে তাকিয়ে কাঁদছে,
তোমাকে খু্ব ভালোবাসি ওসমান, আমি তোমার দেওয়া ক!ষ্ট টা মেনে নিতে পারছিনা, কেন এভাবে
ধোঁ/কা দিলে ওসমান, সবসময় ক!ষ্ট পেয়েছি, ভেবেছিলাম তোমার হাত ধরে সুখের সন্ধান পাবো, কিন্তু তুমি কি করলে আমার বিশ্বাস একমুহূর্তে ভে/ঙে ফেললে,চাইনা তোমার আর তোমার স্ত্রীর মাঝে
তৃ/তী/য় ব্যাক্তি হতে,চাইনা কারো সংসার
ভা!ঙতে,চাইনা আর ক!ষ্ট পেতে,চাইনা এই ক!ষ্টের জীবন,

তিশা নদীতে ঝা!প,

চলবে কি?

[

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here