এক ঝাঁক জোনাকির আলো পর্ব ২০

#একঝাঁক~জোনাকির~আলো🍁
#writer~হাফসা~আলম🍂
.
.
২০.
সাফা নিজের রুমের জানালার পাশ ঘেঁষে খালি জায়গায় বসে আছে।চোখ তার দুর নীল আকাশের দিকে।চোখে মুখে লজ্জার আভা।হাতে একগুচ্ছ সাদা গোলাপ।সাফার মনের সুপ্ত ভালোবাসারা লজ্জায় প্রকাশিত হচ্ছে। হাতের গোলাপের দিকে একবার তাকাচ্ছে তো দুই ঠোঁট একসাথে চেপে হাসছে।মনের মাঝে অনুভুতির খেলা হচ্ছে। একবার গোলাপ গুলো বুকে চেপে দীর্ঘশ্বাস নেয় সে।ভালোবাসা এক অদ্ভুত খেলা।যেই খেলায় একবার নামলে আসক্তি নিশ্চিত। মেয়েদের মনের কোটারে ভালোবাসা সহজে জমা হয় না। কিন্তু একবার তা জমা হলে তা সম্পূর্ন মন জুড়ে বিচরন করে।সাফার মনে হচ্ছে গোলাপ গুলো শুধু গোলাপ না এতে জমে আছে একগুচ্ছ আবেগ আর অপ্রকাশিত ভালোবাসা।ইশশশ্ কেনো যে এই ভালোবাসা প্রকাশিত হয়নি??কেনো মনের কথা কোটারে জমা না রেখে বাতাসে ভাসিয়ে দেয়নি??কেনো গোলাপ হাঁটুতে ভর দিয়ে হাতে আসে নি??কেনো নীল আকাশকে ভালোবাসার দলিল করা হলো না??কেনো গলা দিয়ে উচ্চারিত হলো না সেই মুখরিত মনো মুগ্ধকর ভয়ঙ্কর শব্দ।যা ক্ষতবিক্ষত করে হৃদয়ের গালিচা।যা ভেঙে চুরমার করে মনের সুপ্ত আয়না।এত কেনোর মাঝেও সাফার ভালো লাগা কাজ করছে।তার মনে হচ্ছে লুকানো প্রেমই সুন্দর। প্রেমে গোপনীয়তা থাকাই ভালো।প্রেম তো প্রকাশেই শেষ হয়।তাই অপ্রকাশিতই থাকুক না।কিন্তু যদি প্রেম না হয়??যদি তার মনের জমানো সব দেওয়ার মত সময় না হয়??যদি তার অনুভুতি তাতেই সীমাবদ্ধ থাকে??সাফা হাসে খিলখিল করে।তারপর উচ্চারিত শব্দে বলে………
—–“ভালোবাসায় পাওয়ার আশা করতে নেই।তাহলে তো তা লেনদেন হয়ে যাবে।ভালোবাসায় শুধু অনুভুতির জায়গা আছে।তাই অনুভুতিতে সিক্ত হতে চাই সব বেলায়।

সাফা লাফিয়ে নামে জানালার পাশ থেকে।নিজের বিছানার পাশে থাকা ছোটো টেবিলের উপরে রাখা ফুলদানীটা থেকে প্লাস্টিকের ফুল গুলো খুলে তাতে নিভ্রর দেওয়া ফুলগুলো গেঁথে রাখে সে।একটা মুচকি হেঁসে দুহাতের মুঠোয় ফুলগুলোকে বন্ধী করে নিজের কোমল লাল ঠোঁটজোড়া বসিয়ে দেয়।একটা শব্দ করে চুমু খায় সে।তখন তার সামনের কিছু চুল এলোমেলো হয়ে ফুলের গায়ে পরে।সাফা সে চুল সরায় না।এভাবেই বসে থাকে।
.
.
নিভ্র নিজের রুমের দরজায় ঠেস দিয়ে বসে আছে।হাত এপিঠ ওপিঠ করে সে গোলাপটা দেখছে।একবার নাকের কাছে এনে ঘ্রাণ নিচ্ছে। তার মনে হচ্ছে পৃথিবীর সবচাইতে সুন্দর জিনিসই ফুল।তার নিজের ঘরময় ফুলে ফুলে ভরিয়ে রাখতে ইচ্ছে করছে।নিভ্র ঠোঁট কামড়ে ভাবে তার গোলাপ সত্যি আলাদা।এই গোলাপে অনুভুতির মায়া আছে।আছে এক আলাদা ছোঁয়ার গন্ধ।যা এই সাধারন ফুলকে করে তুলেছে অসাধারন। নিভ্র উঠে দাঁড়ায়। নিজের গোপন ডায়রির ভাঁজে ফুলটা রাখে।পাশের কলম নিয়ে একটা মোহনিয় কবিতা লেখে সে।কবিতা সে ছোট বেলা থেকেই লিখে।জীবনের বেশিরভাগ সময়টাই সে শুধু নিজের সাথে থেকেছে।তাই সময় অসময়ে সে ডায়রি লেখে।না না পাতার ভাঁজে আবার কবিতাও লিখে।ভালো লাগে এটা তার।তবে তার সব কবিতার চাইতে আজকেরটা আলাদা।তার কবিতা সবসময় জীবন, প্রকৃতি,বাস্তবতা আর নিজেকে নিয়ে ছিলো।কিন্তু আজকের কবিতাটা সে অদ্ভুত ভয়ঙ্কর অনুভুতির শিকার হয়ে লিখেছে।
.
অভ্রর গোলাপটা সে তার ডায়রিতে লাগানো সাফার ছবির পাশে লাগিয়ে দেয়।তারপর ডায়রিটা ভাজঁ করে বুকে চেপে ধরে।বুক ছিঁড়ে বেড়িয়ে আসে কিছু দীর্ঘশ্বাস। ঠোঁটজোড়া একটু মেলে হাসে সে।তারপর ডায়রিটা খুলে তার আর নিভ্রর জড়িয়ে ধরে রাখা ছবিটা দেখে।ছোটবেলার ছবি এটা।অভ্রর এখন অপ্রাপ্তির মাঝেও প্রাপ্তির অনুভুতি হয়।একটা চুমু খায় ছবিতে।ছবির এক পাশে নীল কালিতে ডিজাইন করে লেখা ভালোবাসার নীল💞।লেখাটায় হাত ছোঁয়ায় অভ্র।
.
.

সাফা রাফার পাশ ঘেঁষে ঘুড়ছে।রাফা বুঝতে পারে সাফার কিছু বলার আছে তবে বলতে পারছে না।কিন্তু কি বলবে তাও বুঝতে পারছে না।তাই প্রশ্ন করে…..
—-“মিষ্টির দোকান কিছু কি বলবে???
সাফা এই সুযোগটাই চাইছে।তাই এগিয়ে এসে বলে….
—-“এই বাসায় ছাদ নেই আপু??
—“কেনো থাকবে না।অবশ্যই আছে। তুমি কি যেতে চাও??
—“হুমম।ছাদ আমার খুবই প্রিয়। তাই আসার পর থেকেই ছাদ খুজে চলেছি।কিন্তু কোন দিকে বুঝতে পারছিনা।
—“চলো তাহলে।
.
রাফা সাফার হাতটা নিজের হাতের মুঠোয় নেয়।তারপর হাটাঁদেয় ছাদের উদ্যেশে।সিঁড়ির দিকে গিয়ে সাফা অবাক হয়।তার রুমের একটু পাশেই সিঁড়ি আর সে কি না খুঁজে খুঁজে মরেছে।নিজের বোকামিতে সে নিজেই অবাক।ছাদটা দেখে সাফা আরো অবাক হয়।ছাদের মাঝে একটা নীল পানির সুইমিংপুল। পুলের চারপাশে গাছ আছে কিছু।তবে ফুলের গাছ না।বিভিন্ন ক্যাকটাস গাছ।এইসব গাছে আবার ছোট ছোট ফুলও আছে।ছাদের একপাশ থেকে বাড়ির বাগানটা দেখা যায়।পিছনের দিকে বাগান।ছাদ ঘেঁষে একটা অদ্ভুত গাছ। যেটার নাম জানা নেই সাফার।সাফা এবার ডান দিকে তাকায়।ডানদিকে একটা সরু রাস্তা চলে গেছে।ছাদে এমন রাস্তা দেখে সাফা তো ভারী অবাক।রাস্তার শেষ হয়েছে একটা কাঁচের গোল ঘরে।গোল ঘরটার বাহির থেকে ভিতরের কিছুই দেখা যাচ্ছে না।সাদা পর্দা দিয়ে ডাকা ঘর।সাফার কৌতুহল জাগে।তাই রাফাকে প্রশ্ন করে……..
—-“আপু ওই দিকে কি??চলেন দেখি??
—-“আরে না।ওইটা নিভ্র ভাইয়ার ঘর।ভাইয়ার ঘরে আমরা তেমন যাইনা।ভয় লাগে??
—“ভয় পাওয়ার কি আছে আপু??উনি কি বাঘ??
—“তার চাইতে কম কি।(বলেই হাসে রাফা)

সাফা চোখ ছোট করে সেই হাসি দেখে।ভাবে সবাই এই লোকটাকে এত ভয় কেনো পায়??কই সে তো পায় না।তার কেনো যেনো ভয়ই লাগে না নিভ্রকে।উল্ট কিউট কিউট লাগে।লাল লাল ঠোঁট, সবুজ অদ্ভুত ভয়ঙ্কর চোখ,মারাত্মক সেই সিল্কি চুল।হাত দিয়ে যখন সাই করে চুলগুলো সরিয়ে দেয় সাফার তখন খুব করে বলতে ইচ্ছে হয় “থাক না এভাবে।কিন্তু বলা হয় না।দেখাই তার কাজ।রাফার ফোন বাজে।সাফার হুশ হয়।রাফা ফোন রিসিভা করতে করতে বলে……
—-“স্যরি মিষ্টির দোকান একটু নিচে যেতে হবে।নিশান কল করেছে আব্বুর সাথে একটু কথা বলতে চায়।তাই যেতে হবে।তুমি দেখে চলে এসো কেমন।আর ওই দিকে যাবে না।বোকা খেতে হবে তা হলে কিন্তু।”
.
সাফা মাথা ঝাঁকায়। কিন্তু মনে মনে বলে নিষিদ্ধ জিনিসে আগ্রহ বেশি।তাই এই নিষিদ্ধ ডাক্তার সাহেবের প্রতিও আমি অধিক আগ্রহিত।রাফা কথা বলতে বলতে হেঁটে চলে যায়।সাফার মাথায় আসেনা এই নিশানটা কে??সাফা প্লাজুটা একটু তুলে সুইমিংপুলে পা ভিঁজিয়ে বসে কিছুক্ষণ। তারপর একবার ঘাড় ঘুড়িয়ে নিভ্রর ঘরের দিকে তাকায়।হঠাৎ ঠোঁট চেপে হেঁসে উঠে দাড়ায়।ভেজা পা টিপে টিপে সে পা বাড়ায় সরু রাস্তার দিকে।ঘরটা তাকে খুব টানছে।সাফা নিভ্রর ঘরের দরজার সামনে দাড়ায়।দরজা খোলাই আছে।সাফা চোরের মতো উঁকিঝুঁকি দেয়।নিভ্রকে দেখতে না পেরে টুপ করে ডুকে পরে।ডুকেই তার মাথায় হাত।তিন তিনটা বুকশেলফ দেখে সাফার মাথা ঘুরে উঠে।মনে মনে বলে “বাবা গো এত বই পড়ে কোন গরু।”সাফা ঘুরে ঘুরে দেখে।বিশাল একটা রুম জুড়ে সাদা সোফা আছে।তিনটা বুকশেলফ আছে,সাথে একটা কাঁচের সিঁড়ি।তারমানে উপড়েও একটা রুম আছে।সাফার সে দিকের চাইতে পর্দার পিছনে কি আছে দেখার আগ্রহ সে দিকে বেশি।ঘরটাকে এই পর্দাই দুটি অংশে ভাগ করেছে।সাফা বুকশেলফের কাছে দাঁড়ায়। মাঝের বইগুলো থেকে একটা বই নেয় সে।তারপর বইয়ের প্রথম পাতা খুলেই সে মুখ কুচঁকে উঠে।একটা হৃদপিন্ডের ছবি তাতে।সাফার ভাষায় তার যুক্ত হৃদপিন্ড। হৃদপিন্ডের চারপাশে নানা লেখা।সাফা কপাল কুঁচকে একটু পড়ার ভঙি ধরে।মুহূর্তে সে মুখ বাঁকিয়ে বলে………
—-“এই সব ডাক্তারি টাক্তারি মানুষ পাড়ে নাকি??যারা পরে এরা ঘাসপুস খায় তাই এই বই হজম করার শক্তি পায়।সাফা তোর দ্বারা হবে না।তুই তো নাদুসনুদুস আইসক্রিম গার্ল।এটার জন্যেই বলি এই ডাক্তার গুলো মুখটা বাংলার দশের মত করে কেনো থাকে।এই গাড্ডা গাড্ডা বই পড়লে মানুষের মাথা ঠিক না থাকারই কথা।আহারে ভালো ভালো মানুষ গুলো এগুলো পড়ে পড়ে নিজেদেরকে গরু বানাই ফেলছে।দুঃখ লাগে।বেচারা ডাক্তার সাহেব😔😔
.
সাফা বইটা আবার জায়গায় রেখে দেয়।বইটা রাখার পরে তার নিজেকে হালকা হালকা লাগছে।বুকশেলফের তিন খন্ডে একটাতে মেডিকেলের নানা বইয়ে ভরা একটাতে রাজনৈতিক বই আর একটাতে সাধারন অনেক বড় লেখকের বই।সাফার একটা পাশও ভালো লাগেনি।মনে মনে বলে একদিন সে এই শেলফগুলোতে হুমায়ূন স্যারের বইয়ে ভড়িয়ে দিবে।সব বই হবে বাংলাদেশের লেখকের বই।তার এদের বই পড়তেই বেশি ভালো লাগে।প্রেমিক বই থাকবে এক খন্ডে। সাফা এগুলো মনে মনে ভাবে।তারপর সেই সাদা পর্দা ঠেলে ভিতরে যায়।আর একটা রুম দেখে সাফা মনে মনে ভাবে লোকটা যেমন রহস্যময় তার রুম, ঘর এমন কি বুকশেলফও তার মতই আজাইরা।রুমটা সাফার দারুন লাগছে।কি সুন্দর সাদা চাদরে মোরানো বিছানা,দু পাশে দুটি বেড টেবিল তাদের উপর দুটি লেম্প আছে।বিছানার সামনে একটা সাদা সোফা।কাঁচের আলমারি। তাতে দৃশ্য মান নিভ্রর সব ব্লেজার, শার্টে আর জেকেট। বিছনার বাম পাশে একটা সাদা টেবিল।টেবিলের উপড়ে বই আর ডায়রি দেখা যাচ্ছে। টেবিলের পাশে একটা কিছু আছে যা কাপড় দিয়ে ডাকা।সাফার মনে হচ্ছে কোনো প্যান্টিং হবে হয় তো।ডান পাশে একটা ওয়াসরুম আছে।আর বাম পাশের শেষে একটা বারান্দা মনে হয়।সাফার প্যান্টিংটা দেখার আগ্রহ জাগে।তাই এগিয়ে যায় কয়েক পা।সাফা কাপড়ে হাত দিতে যাবে তার আগেই ওয়াসরুম থেকে নিভ্রর আগমন হয়।সাফার সে দিকে খেয়াল নেই।সে নিজের মত দেখতে ব্যস্ত। নিভ্র দ্রুত পায়ে এগিয়ে এসে সাফাকে টেনে দেয়ালে চেপে ধরে।সাফা আকর্ষীক ভাবে অবাক হয়ে তাকায়।সাথে সাথেই চোখ বুজে নেয়।নিভ্র রাগে লাল হয়।দাঁতে দাতঁ চেঁপে বলে…….
—-“তুমি এখানে কি করছো??”

সাফা জবাব দেয় না।তার বুকের টিপটিপ শব্দ নিভ্রর কানে আসে।ভয়ে সাফার কাপঁনি যতটা না হচ্ছে তার চেয়ে বেশি নিভ্রকে নিজের এতো কাছে দেখে হচ্ছে। সাফা কাপঁছে। নিভ্র তাকিয়ে আছে সাফার খিঁচা মুখের দিকে।মুহূর্তেই নিভ্রর রাগ কমে আসে।সেই ভয়ঙ্কর টোল দৃশ্যমান হয়।নিভ্র সাফার এক হাত ছেঁড়ে দেয়।হাত বাড়িয়ে গালে হাত রাখে।সাফা কাপাঁ গলায় চোখমুখ খিঁচেই বলে………
—-“স্যরি স্যরি।স্যরি বলে দিয়েছি এবার ছাড়েন।আর জামা পড়ের।একটা মেয়ের সামনে কেউ জামা ছাড়া আসে নাকি??আপনার লজ্জা নাই নাকি??ডাক্তারদের কি লজ্জা হয় না??”

নিভ্র নিজের দিকে তাকায়।গায়েতো হাতা কাটা গেঞ্জি আছে তবুও জামা নেই কেনো বলছে??সাফা নিভ্রর খোলা বাহু দেখেই এমনটা বলছে।নিভ্র কথাটা বুঝতে পেরেই শব্দ করে হেঁসে সাফাকে ছেড়ে দিয়ে শার্ট নিয়ে গায়ে জড়িয়ে নেয়।কিন্তু বুতাম খোলা রাখে।তারপর সোফায় বসে বলল…….
—-“জামা পড়া হয়ে গেছে।আপনি তাকাতে পারেন।”

সাফা চট করে নিজের চোখ খুলে এদিন উদিক নিভ্রকে খুঁজে। নিভ্রর উদাম বাহু দেখেই সে চোখবুজেছে।ভয়মিশ্রিত অনুভুতিতে তার বুকের অদ্ভুত শব্দরা ধাক ধাক শব্দে মেতে উঠে তখন।নিভ্র সাফাকে এদিক ওদিক তাকাতে দেখে বলে……..
—-“আমি এদিকে।”

সাফা চোকিতেই তাকায়।দেখে নিভ্র সোফায় বাসে আছে।সাফা লজ্জা পায় নিজের আচরনে। লজ্জায় তার গালের দুপাশ লাল হয়।নাকের ডগায় লালের আভা দেখা দেয়।সে চোখ নামিয়ে মাথা নিচের দিকে দিয়ে রাখে।নিভ্র কিছুসময় দেখে সেই দৃশ্য। মেয়েদের লজ্জা পেলেই সুন্দর লাগে এটা সে যানতো না।সাফাই প্রথম মেয়ে যাকে দেখে তার নতুন নতুন অভিজ্ঞতা জন্মেছে।নিভ্র সোজা হয়ে বসে।সাফার দিকে তাকিয়ে তাকে সহজ কারার উদ্যেশে প্রশ্ন করে…..
—-“তা কি মনে করে আমার রুমে আসা হয়েছে??”
সাফা এবার নিভ্রর দিকে তাকায়।সে ভেবেছে নিশ্চিত ঝাঁড়ি খাবে কিন্তু কপাল ভালো মনে হচ্ছে। সাফা প্রশ্নের জবাব না দিয়ে পাল্টা প্রশ্ন করে……
—“আপনার ঘরে কেউ আসলে কি আপনি এভাবে ব্যবহার করেন??

নিভ্র হাসলো।তারপর জবাবে বলে……
—-“না।কিন্তু কেউ চোরের মত আসলে আমি এর চাইতে ভালো ব্যবহার করতে পারিনা।”
সাফার রাগ হয়।কত সাহস তাকে চোর বলে।কিন্তু পরেই ভাবে আসলেই তো সে না বলে ডুকেছে। নিভ্র আবার বলে…….
—-“আচ্ছা বাদ দাও।বসো। তুমি সোফায় এসে বসতে পারো??
—-“বিছানায় বসি??
নিভ্র ঠোঁট কামড়ে হেঁসে। তোয়ালে দিয়ে মাথা মুছে।তারপর বলে……
—-“বসো।
সাফা বসে।নিভ্র বলে….
—তা আমার রুমে কি মনে করে??
—“কেনো আপনার রুমে আসা যাবে না নাকি??
—“এমনটা কখন বললাম??
—“এটাইত বলতে চাচ্ছেন।এমন কেনো আপনি??একটু ভালো মানুষ হন বুঝলেন।আর বুকশেলফে কিসব ঘাসপুস রাখছেন এগুলো বাদলে নতুন বই আনবেন।হলে যাওয়ার আগেই আনবেন তাহলে দেখে যেতে পারবো বুঝলেন??
.
নিভ্রর মন খারাপ হয়।সাফা কি তাহলে হল পেলে চলে যাবে।নিভ্রর মনে ভয় হয়।কিছু স্পেশাল জিনিস দুরে যাওয়ার ব্যথার চাইতে তীব্র ব্যথা অনুভব হয় তার।সাফা আবার বলে…….
—-“কি হলো??কথা বলছেন না কা।শুনেন হুমায়ূন স্যারের বই বেশি আনবেন।কিছু বই আমি পড়তে নিবো।পিরিয়ে দিবো আবার।ঠিক আছে??
—“আচ্ছা।
—“আপনার বারান্দা আছে??
—“হুম ওই দিকে।
—“চলেন যাই।
সাফা উঠে দাড়ায়।নিভ্র পিছনে পিছনে আসে।ব্যালকুনিতে খুব সুন্দর বসার সোফা আছে একটা।কিছু ক্যাকটাস গাছ আছে।সাফা এই গাছ দেখে নাক ছিটকায়।তারপর বলে…….
—-“আপনি এমন খারুস কেনো জানেন??
নিভ্র ভ্রুকুঁচকে তাকায়।সাফা সাথে সাথে শাসনের সুর তুলে বলে…..
—-এভাবে তাকাবেন না একদম।আপনার ছাদে ব্যালকুনিতে এত এত ক্যাকটাস কেন??হুম??কি ফালতু গাছ😒আপনি গোলাপ লাগাতে পারেননা ব্যালকুনিতে??আমি বলি শুনুন সাদা গোলাপ লাগাবেন।ওরাই বেশি সুন্দর দেখতে।দেখলেই শান্তি শান্তি লাগে।বুঝলেন??
নিভ্র বাদ্ধ ছেলের মতো মাথা নাড়ায়। যেনো সাফার ঘর আর সে রুম সাজানোর কাজ করে।সাফা এবার বলে…..
—–“আচ্ছা আমি যাই।আপনি তো আলাদা থাকেন।তাই আপনাকে ডিস্টার্ব করতে চাই না।কিন্তু যা বলে গেলাম তা মনে থাকে যেনো।

সাফা হাটাঁ দেয়।রুমে এসে মাথা কাত করে বলে…..
—-“আপনি ছবি আঁকতে পারেন??
—-হুম
—-“একদিন আমার একটা ছবি এঁকে দিয়েন।এখন না অন্য একদিন।ঠিক আছে??
নিভ্র চোরের মত করে তাকায়।সে তো সাফার ছবি আগেই এঁকে ফেলেছে।সাফা যদি এখন কাপড়টা উল্টে দেয় তখন তো তার কপালে কি আছে কে যানে??এই মেয়ে যদি আবার তার মাথা ফাটিয়ে দেয়??সাফা হেঁটে চলে যায়।নিভ্র চিৎ হয়ে বিছানায় শুয়ে পরে।হাঁফ ছেড়ে বাচলো সে।তবে তা বলতে ইচ্ছে হয়েছে সাফাকে আর একটু থাকা যায় না??আর এটকু ঝগড়া করলেই তো হয়??আর একটু শাসনের সুর তুললে কি এমন হবে??কিন্তু নিভ্রর দ্বারা তা বলা আর হলো না।
.
সাফার খুশি লাগছে।নিভ্রকে জব্দ করতে পেরে তার খুশিতে নাচতে ইচ্ছে করছে।সাফা মিটমিটিয়ে হাঁসতে হাঁসতে সিঁড়ি বেয়ে নামে
.
.
#চলবে_______________🍁
পর্তুলিকা ফুল হবে আমি পুতুলীকা লিখে ফেলেছি।আর যিনি ধরে দিয়েছে তাকে ধন্যবাদ।

ভুলগুলো আল্লাহর দেওয়া মহান গুন ক্ষমার চোখে দেখবেন _________________🍂

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here