#এক_ফ্রেমে_তুমি_আমি
#পর্বঃ০৪_০৫
#Arshi_Ayat
রিয়ার কথা শুনে নিলয় ওকে ধরতে নিলেই ও দৌড়ে নিচে চলে গেলো।নিলয় রিয়ার নাগাল না পেয়ে বলল”ইশ শিট।”
৫.
দুপুরে রিয়া,আয়রা আর মিম খেতে বসেছে।মিম খেতে খেতে বলল”শোন আমাদের মনে হয় পাশের ফ্ল্যাটে বিরিয়ানী দেওয়া উচিত।”
“এহ!কষ্ট করে আমরা রান্না করছি না তো ওদের দিবো কেনো?” রিয়া বলল।
“আর ওদের দিলেও একশোটা দোষ বের করবে।” আয়রা খেতে খেতে বলল।
“থাক তবু এটাতো বলতে পারবে না যে রান্না করে দেই নি।আর আমরা কিন্তু ওদের ওয়াইফাই চালাচ্ছি।”
মিমের কথায় আয়রা বলল”হুম ঠিক বলেছিস।আসলেই দেওয়া উচিত।”
তারপর মিম আর আয়রা বিরিয়ানী নিয়ে ওদের দরজায় বেল বাজালো।মিম খেয়ে ফেসবুকিং করছে ওর নিলয়ের সামনে আসার একদম ইচ্ছে নেই।
নিরব দরজা খুলতেই মিম মিষ্টি হাসি দিয়ে বলল”আমরা রান্না করেছি তো তাই আপনাদেরও দিলাম।”
নিরবও হালকা হেসে বলল”আচ্ছা।ঠিকাছে খেয়ে বলবো কেমন হয়েছে।”
“অবশ্যই।” মিম বলল।
আয়রা এতক্ষণ চুপচাপ দাড়িয়ে ছিলো।হঠাৎ বলে উঠলো”আচ্ছা আপনাদের দলের একজন আছে না ওই যে দেখতে রাম চরনের মতো কিন্তু খালি ঝগড়া করে ওই ছেলেটা কই?”
নিরব কিছু বলার আগেই আয়রার পেছন থেকে কে যেনো বলে উঠলো”ঠিক তোমার পিছনে।”
আয়রা পিছনে ফিরে তাকিয়ে দেখলো সায়ান্ত জিন্সের পকেটে হাত দিয়ে দাড়িয়ে আছে।আয়রা ভ্রু কুচকে জিগ্যেস করলো”আপনি আমার পিছনে আসলেন কিভাবে?”
সায়ান্ত ভাব নিয়ে বলল”জাদু।”
“আচ্ছা তাহলে জাদু করে একটু বাসায় গিয়ে দেখান তো।”
“আমি আবার সবাইকে জাদু দেখাই না।বিশেষ করে পাগলদের তো আরো আগে দেখাই না।”
“আমি ছাগলদের জাদু দেখি না।বিশেষ করে রামছাগল দের জাদু আরো আগে দেখি না।”
এটা বলে আয়রা মিমকে নিয়ে ঘরে ঢুকে দরজা আটকে দিলো।আর সায়ান্ত ঘরে ঢুকে বলল”দেখলি কি বেয়াদব।আমাকে রামছাগল বলল।”
“তুইও তো ওকে পাগল বললি।”
“ও আসলেই একটা পাগল।”
“জানিসতো পাগলকে কিন্তু সরাসরি পাগল বললে ক্ষেপে যায়।”
সায়ান্ত হাসতে হাসতে বলল”তা ঠিক বলছিস।এখন চল বিরিয়ানীটা টেস্ট করি।”
সায়ান্ত আর নিরব বিরিয়ানী পুরোটাই শেষ করলো ওদের দুজনের জন্য রাখলো না।বিরিয়ানী শেষ হবার পর নিরব জিহ্বায় কামড় দিয়ে বলল”ইশশ ওদের জন্য তো রাখলাম না।”
“ওদের না জানালেই চলবে।” সায়ান্ত হাত ধুতে ধুতে বলল।
“ওকে কিন্তু ওই দুইটা তো নাক ঢেকে ঘুমাচ্ছে।”
আচ্ছা চল দুটোকে তুলি।নিরব গিয়ে সাজিদের মুখে একগ্লাস পানি ঢেলে দিলো কিন্তু সাজিদ না উঠে বালিশে মুখ মুছে উপুড় হয়ে শুয়ে পড়লো।
আর সায়ান্ত নিলয়ের নাকে কাগজ দিয়ে সুড়সুড়ি দেওয়া শুরু করলো।সুড়সুড়ি দিতেই নিলয় এক লাফে উঠে বসে বলল”আরে ইয়ার এমনে বিরক্ত করিস না প্লিজ।”
“না খেয়ে আয় তারপর ঘুমা।” সায়ান্ত বলল।
নিরব সাজিকে উঠানোর ব্যার্থ চেষ্টা করে সায়ান্তকে বলল”ভাই ওরে উঠানোই যাচ্ছে না।”
সায়ান্ত আবার নিলয়কে দেওয়া থেরাপি সাজিদের ওপর এপ্লাই করলো।সাজিদ এবার দুম করে উঠে বসে পড়লো।তারপর দুজনকে ঠেলেঠুলে খেতে পাঠালো।এই দুজন খাওয়া দাওয়ার একদম খেয়াল রাখে না।
.
.
.
.
.
.
.
বিকেলে মিম বের হলো টিউশনি করাতে।সে সপ্তাহে মঙ্গলবার আর বুধবার বাদে প্রতিদিনই পড়ায় প্রতিদিনের মতো আজও পাড়ানোর জন্যই বের হয়েছে।তারপর একঘন্টা পড়িয়ে বাসার দিকে রওনা হলো।আজ হাটতে ইচ্ছে করছে তাই হেটেই বাড়ি ফিরবে।
সন্ধ্যা এখনো পুরোপুরি হয় নি।নিরব আর সায়ান্ত বের হয়েছিলো আড্ডা দিতে।কিছুক্ষণ আড্ডা দিয়ে সায়ান্ত ওর আপুর বাসায় গেলো।কাছেই ওর আপুর বাসা।আর নিরব হেটে বাসায় ফিরতে লাগলো।হঠাৎ সামনে মিমের মতো কাউকে হাটতে দেখে নিরব সিউর হওয়ার জন্য ডাক দিলো”মিম।”
কারো গলায় নিজের নাম শুনতে পেয়ে মিম পিছনে তাকিয়ে দেখলো নিরব আসছে।মিম দাড়ালো।নিরব ওর পাশে এসে হাটতে হাটতে বলল”বাসায় যাচ্ছেন?”
“হ্যাঁ টিউশনি করিয়ে আসলাম।”
“ওহ!আচ্ছা আজকের বিরিয়ানীটা অনেক ভালো ছিল।থ্যাংকিউ।”
“ওয়েলকাম ভাইয়া।”
নিরব মিমের ওয়েলকাম শুনে হাসতে পারলো না ভাইয়া বলার কারণে।আর মিম মনে মনে হাসছে ভাইয়া বলে।কারণ আয়রা একদিন বলেছিলো ছেলেদের ভাইয়া বলতে তাহলে তাদের দিল নাকি দুই টুকরা হয়ে যায়।সেইজন্য আজ সে এটা এপ্লাই করলো।মিমের ভাইয়া বলাটা নিরব একবারেই মানতে পারছে না।তারমানে এই না যে মেয়েরা ভাইয়া বললে নিরবের খারাপ লাগে বরং ফার্স্ট ইয়ারের অনেক মেয়েই তাকে ভাইয়া বলে।তাতে নিরবের কিছুই আসে যায় না।কিন্তু মিমের ভাইয়া ডাকটা সে নিতে পারছে না।তবুও সে কিছু বলল না।একটু হেসে জিগ্যেস করলো”আপনার গ্রামের বাড়ি কোথায়?”
“রাঙ্গামাটি।আপনার?”
“কুমিল্লা।আপনার ভাই বোন কয়জন?”
“একাই।আপনি?”
“বড়ভাই আছে।”
“ওহ!আচ্ছা ভার্সিটি থেকে পিকনিকে কবে যাবে জানেন?আসলে বাবার একমাত্র মেয়ে হয়ে অনেকটা বন্দী জীবন কাটিয়েছি।ইন্টারমিডিয়েটও কোথাও যেতে পারি নি।তাই এবারের পিকনিকটা নিয়ে অনেক এক্সাইটেড।”
“ওহ!সম্ভবত পিকনিকের নোটিশ কাল দিয়ে দেবে।আর এবার অবশ্যই আপনার যাওয়া হচ্ছে।এক্সাইটমেন্ট টা ধরে রাখুন।”
মিম মিষ্টি একটা হাসি দিলো।তারপর দুজনেই বাসায় চলে গেলো।
৬.
একটু পরপর চার বান্দরের চিল্লানিতে আয়রা আর রিয়ার মাথা গরম হয়ে গেছে।মিমের কোনো রিয়েকশন নাই।আয়রা রেগে বলল”আর টিকতে পারতেছি না।এতো জোরে চিল্লায় মনে হয় ডাকাত পড়ছে।”
রিয়া বলল”চলতো একটু শায়েস্তা করে আসি।এভাবে বসে থাকা যায় না।”
আয়রা আর রিয়া বেরিয়ে ওদের দরজায় বেল বাজালো।কিন্তু কেউ খুললো না।আরো দুইবার বাজানোর পর নিলয় দরজা খুলে ওদের দেখে বলল”রাতে আমরা ভিক্ষা দেই না।দয়া করে আসতে পারেন।”
রিয়ার মেজাজ তুঙ্গে উঠে গেলো।রিয়া নিলয়ের কলার ধরে বলল”কারে ভিক্ষুক বললি তুই?একদন পেপে দিয়ে চেপে দিবো।”
নিলয় ওর হাত কলের থেকে সরিয়ে বলল”তোর সাহস তো কম না তুইতুকারি করিস আবার গায়ে হাত দিস।”
নিলয়ের এমন চড়া গলার আওয়াজ পেয়ে সায়ান্ত এসে দেখে এই অবস্থা।সায়ান্ত জিগ্যেস করলো” কি হইছে?”
এবার আয়রা বলল”কি আর হবে?আপনারা এতো জোরে চিল্লান কেনো?”
“আমাদের ফ্ল্যাটে আমরা চিল্লাবো।আপনাদের কি?”
রিয়া আয়রার হাত ধরে বলল”আমাদের কিছু না।আয়রা চল।”
রিয়া আয়রা কথা বলার সুযোগ না দিয়ে একটানে ঘরে নিয়ে এলো।আয়রা বলল”কি রে নিয়ে এলি কেনো? ”
“কাটা দিয়ে কাটা তুলবো।দেখ এখন কি করি।”
রিয়া সাউন্ড বক্সে ফুল ভলিউমে আখ মারে গান চালালো।আয়রা রিয়ার কান্ডে হেসে দিলো।তারপর কিছুক্ষণ পর নিরব এসে বলল তার আর চিল্লাবে না।তখন রিয়া গাম বন্ধ করলো।কিন্তু রিয়ার গায়ের জ্বালা মিটছে না।
রাতে শোয়ার সময় সায়ান্ত নিলয়কে বলল”দোস্ত তোর ওই কথাটা বলা উচিত হয় নি।’
“হুম। বুঝতে পারি নি এমন হবে।”
“সরি বলে দিস।”
“ওকে।”
.
.
.
.
অনেক্ষণ ধরে রিয়া যাওয়ার চেষ্টা করছে কিন্তু পারছে না কারণ নিলয় পথ আগলে দাড়িয়ে আছে।
চলবে…
#এক_ফ্রেমে_তুমি_আমি
#পর্বঃ০৫
#Arshi_Ayat
“সরে দাড়ান আর আমাকে যেতে দিন।”
রিয়া অন্যদিকে চেয়ে নিলয়কে উদ্দেশ্য করে বলল।
নিলয় ওর দিকে তাকিয়েই বলল”ঠিকাছে সরে দাড়াবো কিন্তু আমাকে আগে ক্ষমা করতে হবে তারপর আমার দিকে তাকিয়ে মুচকি একটা হাসি দিতে হবে।”
রিয়া ভ্রু কুচকে জিগ্যেস করলো”মুচকি হাসি দিতে হবে কেনো?”
“মুচকি হাসি দিলে বুঝবো তুমি মাফ করেছো।”
রিয়া নিচের দিকে তাকিয়ে বলল”মাফ করেছি।”এটা বলে নিলয়ের দিকে তাকিয়ে কৃত্রিম হাসি দিয়ে বলল”এবার আমাকে যেতে দিন।”
“না মুচকি হাসি হয় নি তুমি জোর করে হেসেছো।তারমানে তুমি আমাকে এখনো মাফ করো নি।”
রিয়া আর সহ্য করতে না পেরে নিলয়কে ধাক্কা দিয়ে চলে গেলো।নিলয়ও ওর পিছনে আসতে আসতে বলল”ওই রিয়া শোনো।”
রিয়া কোনো জবাব না দিয়ে তাড়াতাড়ি হেটে চলে গেলো।নিলয় মনে মনে বলল”ক্লাস শেষে একটু জ্বালাবো।”
৬.
ক্লাস শেষে মিম লাইব্রেরির সামনে গিয়ে দেখলো নিরবের চুল ধরে একটা মেয়ে টানছে।আর নিরব হাসছে।মেয়েটার সাথে হেসে কথাও বলছে।মিম মনে মনে বলল”ওনার গার্লফ্রেন্ডা সুন্দর।”মিম ওদের সামনে দিয়ে গিয়ে অন্য একটা টেবিলে বসলো।নিরব ব্যাপারটা খেয়াল করলো।তারপর নিরব মনে মনে ভাবলো মিম তাসনিয়াকে আমার গার্লফ্রেন্ড ভাবে নি তো!এইজন্য নিরব বেশ জোরে জোরে বলল”কি রে তাসনিয়া দুলাভাই দেখতে কেমন?”
এই কথাটা মিমের কান পর্যন্তও পৌঁছালো।মিম ভেবে পাচ্ছে না যে এতো জোরে বলার কি আছে।মিম নিরবের দিকে তাকাতেই দেখলো ও বাকা চোখে তাকিয়ে আছে।মিমের কাছে ব্যাপারটা কেমন যেনো লাগলো।সে বইটা হাতে নিয়ে লাইব্রেরি থেকে বেরিয়ে গেলো।নিরবও ওর পিছনে বেরিয়ে পড়লো।মিম বুঝতে পারলো যে নিরবও পিছনে আসছে।মিম কিছু বলল না নিজের মতো হাটতে লাগলো।নিরব ওর পাশাপাশি এসে বলল”নোটিশ দেখেছিলেন পরশু যে পিকনিক।”
“হ্যাঁ দেখেছি।”
“যাবেন?”
“হ্যাঁ অবশ্যই যাবো।”
“গুড।ওই মেয়েটা কিন্তু আমার গার্লফ্রেন্ড ছিলো না।”
মিম হেসে বলল”ওহ!তো আপনি আমাকে বলছেন কেনো?”
“না আমি ভেবেছি আপনি ওকে আমার গার্লফ্রেন্ড ভেবেছেন।”
“আনি ভাবলেই আপনার কি?”
নিরব মিমের এই কথার উত্তর পেলো না।আসলেই কে কি ভাবলো তাতে তার কি?তাকে কেনো কৈফিয়ত দিতে হবে?নিরব এটা ভাবছিলো হঠাৎ ওর ফোন আসায় ও সরে গেলো।আর মিম চলে গেলো।
.
.
.
.
.
.
ক্লাস শেষ হতেই সায়ান্ত ফুচকার দোকানে এলো।সায়ান্ত ফুচকা খেতে খুব ভালো লাগে তবে বেশি ঝাল ওর সহ্য হয় না।তাই সব সময় ঝাল ছাড়া খায়।আজও খেতে গেলো।একটা মুখে পুরতেই সায়ান্তর চোখ লাল হয়ে গেলো ঝালে।সায়ান্ত দ্রুত পানি খেলো।মোটামুটি একটু ঝাল কমতেই লক্ষ করলো আয়রা ফুচকা ওয়ালাকে বলছে “এই মিয়া ফুচকায় ঝাল দেন নাই কেন?ঝাল ছাড়া ফুচকা খাওয়া যায়?”
এবার সায়ান্ত বুঝলো যে এই প্লেটে এতো ঝাল কেনো দোকানদার একজনের প্লেট আরেকজন কে দিয়েছে।কিন্তু এখন প্লেট পাল্টাবে কি করে?এর মধ্যেই সায়ান্ত খেয়াল করলো আয়রা নিজের প্লেটে ইচ্ছামতো ঝাল দিয়েছে।এখনতো পাল্টানোর চান্সও নেই।এখন কি করবে?সায়ান্তু খুব কষ্ট তিনটা ফুচকা খেয়ে বিল পে করে চলে গেলো।আর সারা রাস্তায় চার বোতল পানি শেষ করেছে।সায়ান্ত বুঝতেছে না এতো ঝাল মানুষ কিভাবে খায়।এগুলো তো স্বয়ং পেত্নীও খেতে পারবে না।অবশ্য আয়রা পেত্নীর চেয়ে কম কই।এই ভেবে সায়ান্ত হাসলো।সায়ান্ত বাসায় এসে লিফটে ঢুকেই দেখলো আয়রা দাড়িয়ে আছে।সায়ন্ত খোঁচা মেরে বলল”এতো ঝাল মানুষ কিভাবে খায়।আস্তো পেত্নীও তো এতো ঝাল খেতে পারবে না।”
আয়রা কিছুই বলল না।সায়ান্ত তার কথায় ত্যাড়া জবাব না পেয়ে ভাবলো মেয়েটা কি শুনলো না নাকি?শুনলে তো এতক্ষণে লিফট ভেঙে ফেলার কথা।সায়ান্ত পিছনে তাকিয়ে দেখলো আয়রা গান শুনছে।এইজন্যই তো এখন ভূমিকম্প হয় নি।কিন্তু সায়ান্ত শান্তি হচ্ছে না।অন্তত ঘরে ঢোকার আগে আয়রা কে যে করেই হোক জ্বালাতে হবে।সায়ান্ত আর আয়রা দুজনই লিফট থেকে বের হলো।সায়ান্ত আয়রাকে উদ্দেশ্য করে বলল”শোনো।”
আয়রা হেডফোন খুলে বলল”কি?”
“তুমি একটা পেত্নী।”
আয়রা কিছুই বলল না বাকা হেসে ঘরে ঢুকে দরজা লাগিয়ে দিলো।সায়ান্ত ভাবতে লাগলো কি হলো মেয়েটার এতো চেঞ্জ।তারপর ঘরে এসে।শার্ট খুলতেই দেখলো শার্টের পিছনে চুইংগাম লাগানো।খুব বিশ্রি ভাবে এটে আছে।সায়ান্ত বুঝতে পারলো এটা কার কাজ।মনে মনে বলল শয়তান জীবনেও ভালো হবে না এটাই তার প্রমাণ।সায়ান্ত রেগে চিৎকার দিয়ে বলে উঠলো”আয়রাআআআআ”
আর এদিকে দ্যা শয়তানির রাণী আয়রা “মে লারকি বিউটি ফুল” এই গানটায় ঢুমকা দিচ্ছে।”
৭.
রিয়া হাটছে পিছনে পিছনে নিলয়ও আসছে।হঠাৎ একটা ছেলে রিয়ার পথ আটকে দাড়ালো।রিয়া ছেলেটাকে জড়িয়ে ধরে ওর সাথে হাটতে আরম্ভ করলো।নিলয় স্তব্ধ!এটা লি হলো!রিয়া এই ছেলেটাকে জড়িয়ে ধরলো কেনো?বয়ফ্রেন্ড নাকি?হলে হবে কিন্তু আমি কি করবো ও তো আমাকে মাফ ই করছে না।অন্য একটা প্য্লান বের করতে হবে।এসব ভেবে নিলয় উল্টো দিকে হাটা শুরু করলো।
রিয়া ভাইয়ের সাথে হাটতে হাটতে পিছনে ফিরে তাকিয়ে দেখলো নিলয় চলে যাচ্ছে।এটা দেখে রিয়া হেসে দিলো।বোনের হাসি দেখে রিয়াদ বলল”কি রে হাসছিস যে?”
“এমনিতেই।তুমি আজকেই ফিরবে?”
“হুম কাজ শেষ।আবার তুই তো জানিস তোর ভাবি অসুস্থ।”
“হুম।তোমাকে তো কতো করে বললাম আমি ভাবির সাথে থাকি তুমিই তো থাকতে দাও না।”
“আরে না পাগলি।তোর ভাবির জন্য আমি আছি তো।আজ আজ যেতে হবে।আসি আল্লাহ হাফেজ।ভালো থাকিস।”
“আচ্ছা।তুমি সাবধানে যেও।”
রিয়াদ চলে যেতেই রিয়ার চোখ ঝাপসা হয়ে গেলো।পৃথিবীতে ভাই ছাড়া কেউ নেই।বাবা মা অনেক আগেই গত হয়েছেন।সে চাইলেই পারে ভাই ভাবির সাথে থাকতে কিন্তু ভাবির অত্যাচারে আর থাকা হয় নি।ভাই তাকে হোস্টেলে দিয়ে দিলো।এরপর থেকে মাঝেমাঝেই ভাই এসে দেখে করে যায়।এবারের মতো প্রত্যেকবারই রিয়া ঝাপসা চোখে ভাইয়ের চলে যাওয়া দেখে।রিয়া চোখের পানি মুছে হাটা ধরে।তার এই হাসিখুশি চেহারার অন্তরালের চেহারাটা কেউ দেখে নি।তার জানের বান্ধবীরাও না।রিয়া এমনই একটু চাপা স্বভাবের।
আজ ওর চোখের পানি শুধু ও নয় আরো একজনও দেখেছে দূর থেকে দাড়িয়ে।সে হচ্ছে নিলয়।নিলয় তখন যেতে নিলেও যায় নি ও চেয়েছিলো আসলে ছেলেটাকে এটা বের করতে।তারপর লুকিয়ে লুকিয়ে ওদের পিছনে এসেছে।তারপর বুঝলো এটা ভাই কিন্তু রিয়া কাদছে কেনো?এটা নিলয় বুঝলো না।কিন্তু রিয়াকে হাসাতে হবে তাহলে যদি ও তাকে মাফ করে।এই উদ্দেশ্য নিলয় রিয়ার পিছন থেকে এন্ট্রি নিয়ে বলল”রিয়া কবে করবা বিয়া?”
কারো এমন কথায় রিয়া পিছনে তাকিয়ে দেখলো নিলয় হাসছে।রিয়াও ভেংচি দিয়ে বলল”যখন বর আসবে গহনা নিয়া।”
নিলয় রিয়ার কথায় হাসতে হাসতে বলল”বাহ!ভালোই মিলাইছো।”
রিয়া কিছুই বলল না।নিলয় আবার বলল”বকুল নাকি বেলি?”
“বেলি।আপনার?”
“সেম তবে বকুলও ভাল্লাগে।যেমন ধরে আমার যে বউ হবে সে বকুলের মালা পরে আমার সামনে দাড়িয়ে বলবে ভালোবাসি।”
রিয়া হেসে বলল”বাহ!দারুণ রোমান্টিক তো আপনি।”
চলবে……
(ভুলত্রুটি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।)