এক ফ্রেমে তুমি আমি পর্ব ২+৩

#এক_ফ্রেমে_তুমি_আমি
#পর্বঃ০২+০৩
#Arshi_Ayat

২.
‘না বাবা যা হবার হবে কুত্তার কামড় খাওয়ার চেয়ে দু চারটা চড় খেয়ে নেবো সেটাও ভালো’এটা ভেবে আয়রা উল্টো দিকে ঘুরে সায়ান্তর দিকে দৌড়াচ্ছে।সায়ান্ত দৌড়াতে দৌড়াতে ভাবছে মেয়েটা কি পাগলো হলো আবার এদিকেই আসছে কেনো!”

দৌড়াতে দৌড়াতে আয়রা আর সায়ান্ত মুখোমুখি হলো।সায়ান্ত থেমে জিগ্যেস করলো”আবার এইদিকেই আসছো কেনো?তুমি না পালাচ্ছিলে?”

“হ্যাঁ কিন্তু আমার পিছনে দেখুন একটা কুকুর আসছে আপনি প্লিজ আমাকে একটু বাচান।”

সায়ান্ত এবার বাঁকা হেসে বলল”বাঁচাবো তাও আমি!তোমার জায়গায় যদি একটা পাগলও আসতো তাও আমি বাচাতাম কিন্তু তোমাকে কখনো না।”

এই বলে সায়ান্ত আয়রার হাত ধরে টেনে কুকুরের কাছে নিয়ে যাচ্ছে।আয়রা বার বার হাত ছাড়াতে চাইছে কিন্তু পারছে না।যখন কুকুরের একবারে সামনে চলে এলো তখন আয়রা কান্না শুরু করে দিয়ে বলল”এতো মাসুম কিউট মেয়ের সাথে আপনি এমন কেনো করছেন।আপনি এতোটা নির্দয় কেনো?”

“তোমাদের মতো অসভ্য মেয়েদের টাইট দেওয়ার জন্য এমনই করতে হবে।”

আয়রা আবারও বলল”সরি আর করবো না।মাফ করে দিন।সত্যি বলছি।”

সায়ান্ত চোখ ছোটছোট করে বলল”সত্যি তো?”

“হ্যাঁ হ্যাঁ সত্যি।” আয়রা এটা মুখে বললেও মনে মনে বলল’কচুর সত্যি খালি একবার বেচে ফিরি তারপর এই সয়তানটার থোতা কিভাবে স্টপ করতে হয় এইটা আমি ভালো মতোই জানি।”

আয়রার সত্যি কথা শুনে সায়ান্তর মনে দয়া হলো সে বলল”ঠিকাছে চলো আমার সাথে।”

আয়রা সায়ান্তর সাথে হাটতে লাগলো।কিছুদূর যাওয়ার পর সায়ান্ত বলল”এবার নিজের রাস্তা মাপো।”

এই বলে সায়ান্ত ডানদিকের রাস্তায় চলে গেলো।আর আয়রা চলে গেলো বামের রাস্তায়।

আয়রা হাটতে হাটতে চিন্তা করলো কাল শুক্রবার মানে ছুটি তাহলে কালকে চিল করতে হবে।পুরাই চিল!সেইজন্য কাচ্চি করলে কেমন হয়!ওরা দুইটাতো কাচ্চির জন্য পাগল।তাহলে কাচ্চি করলেই ভালো হবে।এখন গিয়ে হালকা পাতলা পড়ে তিনজনে মিলে রান্না করবো আর কালকে সারাদিন চিল করতে করতে খাবা।এগুলো ভাবতে ভাবতে আয়রা জিহ্বা দিয়ে ঠোঁট টা ভিজিয়ে বলল”আহা চিল আর চিল!”

আর অপরদিকে সায়ান্ত ভাবছে কাল তো ছুটি আর কাল বাংলাদেশের একটা ম্যাচও আছে।সারদিন বাইরে আড্ডা দিবো আর রাতে জমিয়ে ম্যাচ দেখবো উইথ পপকর্ন।

৩.
মিম একটা একটা টিউশনি করিয়ে বের হলো বাসায় আসার জন্য।কিন্তু বের হয়ে কোনো রিকশা পেলো না।হঠাৎ একটা খালি রিকশা দেখে দ্রুত ডাক দিলো।তারপর রিকশায় উঠার আগেই কোথা থেকে একটা ছেলে উঠে গেলো।মিম কিছু বলতে যাবে তখনই ওর চোখ যায় ছেলেটার ওপর।এটা তো পাশের ফ্ল্যাটের নিরব।মিম একটু হেসে বলল”এক্সকিউজ মি।রিকশাটা আগে আমি দাড় করিয়েছি।”

“ওহ!আসলে আমিও কোনো রিকশা পাচ্ছিলাম না তাই এটা খালি দেখে উঠে পড়লাম।আর আসলে আমি আপনাকে খেয়াল করি নি।”

“ওহ!আপনি কি বাসায় যাচ্ছেন?”

“হ্যাঁ।আপনি?”

“সেম।তাহলে চলুন একসাথে যাই।যেহেতু রিকশা পাচ্ছি না সেহেতু কি আর করার।”

“সিউর।আসুন বসুন।”

মিম নিরবের পাশে বসতে বসতে জিগ্যেস করলো”আপনার সমস্যা হবে না তো?”

নিরব হেসে বলল”না না কোনো সমস্যা নেই।”

মিম জবাবে মিষ্টি হাসলো।কিছুক্ষণ দুজনেই চুপ থেকে মিম ই প্রথমে বলল”আচ্ছা মি.সায়ান্ত ভার্সিটিতে আয়রার সাথে এমন করলো কেনো?”

“ও এমনই ওর মুখের ওপর কেউ কথা বললে ওর রাগ উঠে যায়।সেইজন্যই এমন করেছে।”

“ওহ!আয়রাও কম না।আগুনে ঘি ঢালতে পছন্দ করে।”

মিমের কথা শুনে নিরব হাসলো।মিম আবার বলল”আপনার নামের সাথে আপনার স্বভাবেরও মিল দেখছি।”

নিরব লাজুক হেসে বলল”আসলে ফ্রেন্ড আর ফ্যামিলি ছাড়া কারো সাথেই তেমন একটা কথা বলা হয়ে ওঠে না।”

“ও…”

মিম আর নিরব টুকটাক কথা বলতে বলতেই পৌঁছে গেলো।পৌঁছে দুজনেই ভাড়া দিতে গেলো।কিন্তু নিরব জোর করে ভাড়া দিয়ে দিলো।মিম গেট দিয়ে ঢুকতে ঢুকতে বলল”এটা কিন্তু ঠিক হলো না।আপনি কেনো ভাড়াটা দিতে গেলেন!”

নিরব হেসে বলল”সমস্যা নেই।অন্য একদিন আপনি দিয়ে দিয়েন।”

মিম হালকা হেসে আচ্ছা বলল।নিরব প্রত্যুত্তরের হাসলো।দুজনই লিফটে উঠলো।কারো মুখেই কথা নেই।চারতলায় লিফটা থামলো তারপর দুজনেই বেরিয়ে গেলো।দুজনেই ঘরে ঢুকে দরজা আটকে দিলো।
.
.
.
.
.
রিয়া এসাইনমেন্ট করছে আর আয়রা ডিসকো দি’বাবে গানো নাচছে আর একটু পরপরই আহো আহো করছে।মিম গিয়ে আয়রার কান থেকে হেড ফোন খুলে বলল”কি রে কাল তো শুক্রবার কি করবি?”

আয়রা হেডফোন এক কানে লাগিয়ে নাচতে নাচতে বলল”চিল হব্বে চিল।দেখিস না আমার এখন থেকেই চিল শুরু হয়ে গেছে।আচ্ছা শোন একটু পর কাচ্চি রান্না করবো?তোরা কি বলিস?”

কাচ্চির কথা শুনে রিয়া এসাইনমেন্ট থেকে মুখ তুলে বলল”ইয়াহ!কাচ্চি ই জোস হব্বে।খাইতে খাইতে চিল হবে।”

আয়রা এসে রিয়ার সাথে হাইফাইভ করে বলল”ইয়াহ বেব 😎”

তারেপর মিমের কাছে গিয়ে বলল”কি রে তুই কাচ্চি খাবি না?”

“দোস্ত ডায়েটে আছি রে।” মিম কাচুমাচু করে বলল।

আয়রা হাসতে হাসতে বলল”এমনেই তো চিকনি চামেলি তার ওপর আবার যদি ডায়েট করিস তাহলেতো আরো চিকনি হয়ে যাবি।আর একদিন খেলে হাতি হয়ে যাবি না।তোর ডায়েট শুক্রবারের জন্য ছাদে উঠিয়ে রাখ।”

আয়রার কথা শুনে মিম আর না করে নি।
.
.
.
.
.
“আহ!কি ঘ্রাণ বের হচ্ছে বিরিয়ানীর।জিহ্বায় পুরো পানি চলে আসছে।দেখতো কেউ আশে পাশে বিরিয়ানী রাধছে কি না?”সায়ান্ত জিহ্বা দিয়ে ঠোট ভিজিয়ে পেটে হাত বুলাতে বুলাতে বলল।

সাজিদ শুয়ে শুয়ে বলল” আরে পাশের ফ্ল্যাটেই রাধছে।”

পাশের ফ্ল্যাটের কথা শুনে সায়ান্ত মুখ বাকিয়ে বলল”কি চাল দিয়ে রাধছে আল্লাহ ই জানে।বাসি বাসি গন্ধ বের হচ্ছে।বিরিয়ানীই রাধতে পারে না।”

নিরব অবাক হয়ে বলল”তুইতো একটু আগে বললি বিরিয়ানীর ঘ্রাণে তোর জিহ্বায় পানি চলে এসেছে।”

সায়ান্ত বলল”আমিতো জানতাম না যে বিরিয়ানী ঘ্রাণ পাশের ফ্ল্যাটের থেকে আসছে।”

“ওহ!এখন পাশের ফ্ল্যাট থেকে ঘ্রাণ আসছে বলে বাসি হয়ে গেলো।ওই তোর এতো শত্রুতা কেনো ওদের সাথে?” সাজিদ বলল।

“অবশ্যই শত্রুতা আছে।বেয়াদব সবগুলো।” সায়ান্ত মুখ বাকিয়ে বলল।

“তুইও না শুধু শুধুই এমন করিস।” নিরব ফোন টিপতে টিপতে বলল।

“শুধু শুধু কি ঠিকই বলেছে সায়ান্ত।গার্লস আর স্টুপিড।”নিলয় কান থেকে হেডফোন খুলে বলল।তারপর আবার বলল” চল সায়ান্ত ওদের একটু ডিস্টার্ব করে আসি।কি সুন্দর আমাদের রেখে কাচ্চি খাবে।তা হবে না।”

সায়ান্ত নিলয়ের কথায় তাল মিলিয়ে বলল”চল দোস্ত।”

দুজনই উঠে রান্না ঘরে গেলো।ওদের রান্না ঘরের বিপরীতেই আয়রাদের রান্নাঘর তাই ওপাশ থেকে এপাশে কিছু বললে স্পষ্ট শোনা যায়।সায়ান্ত আর নিলয় রান্নাঘরে এসে দাড়ালো তারপর সায়ান্তই প্রথমে বলল”ছিঃকি রাধছে।একদম বাসি গন্ধ বের হচ্ছে।এই গন্ধের জন্য ঘরে একদমই থাকা যাচ্ছে না।কে এগুলো রাধছে?মনে হচ্ছে কোনো শাকচুন্নির দল এগুলো রাধছে।সায়ান্ত কথা ওপাশ থেকে আয়রার গায়ে তীরের মতো বিধলো।ও দাত কিড়মিড় করে বলল”কোন পিশাচের যেনো নাকটা ইয়া লম্বা হয়ে গেছে।খালি অন্যদের খাবারের ঘ্রাণ নেয়।নাকটা চাকু দিয়ে কেটে ফেলতে হবে।”

চলবে….

(ভুলত্রুটি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।)

#এক_ফ্রেমে_তুমি_আমি
#পর্বঃ০৩
#Arshi_Ayat

আয়রার কথা শুনে নিলয় বলল”গার্লস দের আমি শুধু শুধু স্টুপিড বলি নাকি এইজন্যই বলি।কাউকে সম্মান করতে জানে না।”

আয়রা কিছু বলতে যাবার আগেই রিয়া বলল”বয়েজরা সম্মান পাওয়ার যোগ্য হলে সম্মান দিতাম।”

রিয়ার বলা শেষ হতেই আয়রা বলল”আরে চলতো এখান থেকে দুইটা কাউয়া কা কা করছে এখন কি আমাদেরও কা কা করতে হবে নাকি!আমরা গিয়ে চিল করবো এখন।”

এইটা বলে ওরা রান্নাঘর থেকে চলে গেলো।ওইপাশ থেকে ওরাও বুঝলো যে ওরূ চলে গেছে তাই বাক্য খরচ করে লাভ নেই।তাই ওরাও রান্নাঘর থেকে চলে আসলো।ওদের দেখে নিরব বলল”কি জ্বালাতে পেরে যদি তোদের শান্তি লাগে তাহলে গিয়ে তরকারিটা গরম কর।সেই দুপুরে বুয়া রান্না করে দিয়ে গেছিলো এখনও গরম করা হয় নি।”

সায়ান্ত সোফায় বসে বলল”আজ সাজিদ গরম করবে।”

সাজিদ শোয়া থেকে উঠে বসে বলল”কিহ!আমি কেনো করবো?”

নিলয় নির্বিকার হয়ে বলল”কাল আমি করেছিলাম তাই আজ তুই এর পরেরদিন নিরব তারপরে সায়ান্ত।সো নো ফাকিবাজি যা গিয়ে গরম কর।”

সাজিদ আর কোনো উপায় না পেয়ে তরকারি গরম করতে গেলো।
.
.
.
.
.
.
আয়রা, মিম আর রিয়া বসে বসে মুভি দেখছে।হঠাৎ ইলেকট্রিসিটি চলে যেতেই ওয়াইফাই ও চলে গেলো।মুভির মাঝ দিয়ে ইলকেট্রিসিটি চলে যাওয়ায় তিনজনের মাথাই বিগড়ে গেলো।আয়রা রেগে বলল”বালের কারেন্ট।এখনি যাইতে হইলো কি সুন্দর একটা রোমান্টিক সিনে ছিলাম এখনই চলে গেলো।”

রিয়া বলল”এখন কি করবি?”

মিম হাই তুলতে লাইট জ্বালিয়ে বিছানায় গিয়ে বসে বলল”ঘুমাবো।”

“হুম আমারও ঘুম পাচ্ছে।” রিয়া বিছানায় শুতে শুতে বলল।

এবার আয়রা বলল”আমার একটুও ঘুম আসছে না।তোরা ঘুমা আমি ছাদ থেকে একটু ঘুরে আসি।”

মিমি চার্জার ফ্যানটা ছেড়ে শুয়ে বলল”এখন রাত ১২ টা বাজে এতো রাতে ছাদে যাবি কেনো?”

“কই এতো রাত সবে ১২ টা বাজে।সমস্যা নাই বেশিক্ষণ থাকবো না।দশমিনিট পর চলে আসবো।”আয়রা বলল।

“আচ্ছা যা দরজা লক করে চাবি নিয়ে যাস।”

“ওকে”
বলেই আয়রা মেইন দরজার চাবি নিয়ে দরজায় লক দিয়ে ছাদে চলে গেলো।তারপর রেলিং ধরে দাড়িয়ে আকাশ দেখতে লাগলো।রাতের আকাশ অনেক সুন্দর।চারপাশে তারার মেলা আর মাঝে চাদের আলোর খেলা।ভিষণ মায়াময় রাতের আকাশ।আয়রা মুচকি হেসে ভাবতে লাগলো একটা গান হলে মন্দ হতো না।কিন্তু তার “আকাশে তে লক্ষ তারা” এই গান ছাড়া আর কোনো গান মনে পড়ছে না।তাই এটাই গাওয়া শুরু করলো।

“আকাশে তে লক্ষ তারা,
চাদ কিন্তু একটা রে।”

এতুটুকু গাইতে না গাইতে পাশ থেকে কে যেনো বলে উঠলো”হেইয়া।”

আয়রা চমকে পাশ ফিরে তাকাতেই দেখলো”সায়ান্ত দাত কেলিয়ে তাকিয়ে আছে তার দিকে।”

মুহুর্তেই আয়রা চটে গিয়ে বলল”অসভ্য লোক কোথাকার।একজন গান গাইলে তার গানের ভেতর বাম হাত না ঢুকালে ভালো লাগে না তাই না?”

সায়ান্ত হাসতে হাসতে বলল”কোথায় বাম হাত ঢুকালাম আর আমার বাম হাত তো আমার সাথেই আছে।বরং তোমার গান যেনো আরো সুন্দর হয় তাই ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক দিচ্ছিলাম।”

“বালের ব্যাকগ্রাউন্ড।বেশি কথা বললে মুখটা সেলেই করে দেবো।সো স্টপ ইউর থোতা।”

৳”তোমরা মেয়ের কথায় কথায় বাল বলো কেনো?আর স্টপ ইউর থোতা না বলে মাউথ বললেই পারো।”উৎসুক কন্ঠে বলল সায়ান্ত।

“আপনার সমস্যা কই বাল বললে আমরা তো বাল বলি আর আপনারা তো মেয়ে দেখলেই মাল বলেন।আর থোতা শব্দটা আমি আবিষ্কার করেছি।আমি অলওয়েজ ইউনিক।😎

আয়রার প্রথম কথায় সায়ান্ত কোনো উত্তর দিলো না।আয়রা সত্যিটাই বলেছে কিছু ছেলের জন্য আজ সবগুলো ছেলে কলুষিত।কিন্তু আয়রার দ্বিতীয় কথার উত্তরে বলল” তুমি ইউনিক না তুমি হলো পাগল।”

আয়রাকে পাগল বলায় আয়রা খুব রেগে গেলো।কোনো কথা না বলে দৌড়ে ছাদের দরজা দিয়ে বেরিয়ে বাইরে থেকে দরজা লাগিয়ে দিলো।প্রতিবারের মতো এবারও সায়ান্ত বুঝার আগেই কাজটা হয়ে গেলো।সায়ান্ত দৌড়ে দরজার কাছে গিয়ে বলল”আয়রা দরজা খোলো।”

“খুলবো না।আপনি আমাকে পাগল বলেছেন কেনো?”

“সন্ধ্যায় যে তুমি আমাকে কাউয়া বলছো তার কি হবে?”

“ভালো হইছে বলছি।”

“আমিও বলছি ভালে কারছি।”

“আচ্ছা তাহলে এই ভালো কাজের জন্য উপহার স্বরুপ আপনি আজকে ছাদে বসে বসে মশার কামড় খান গেলাম।”

এটা বলেই আয়রা হাসতে হাসতে চলে গেলো।সায়ান্ত রাগে কিড়মিড় করে বলল একবার বের হতে পারলে ঠাটিয়ে একটা চড় মারবো।বেয়াদব মেয়ে।কিন্তু এখন নামবো কিভাবে? ফোনও তো আনি নি।সায়ান্ত বিরক্তি নিয়ে দোলনায় বসে রইলো।
.
.
.
.
.
বিশ মিনিট হয়ে গেলো আয়রা শুয়ে আছে কিন্তু ঘুম আসছে না।তাই আবার উঠে ছাদে যাওয়ার জন্য বের হলো।আয়রা বেমালুম ভুলে গেলো যে সে ছাদে সায়ান্তকে আটকে রেখে গেছে।তাই ছাদে গিয়ে কাউকে রেলিং ধরে দাড়িয়ে থাকতে দেখে আয়রা ভয়ে চিল্লিয়ে উঠে বলল”ভূত!ভূত!”

পিছন থেকে কারো ভূত ভূত আওয়াজ শুনে সায়ান্ত দৌড়ে এসে আয়রার মুখ চেপে ধরে বলল”এই বেয়াদব মেয়ে এমন চিল্লাচ্ছো কেনে?”

আয়রা হাত দিয়ে ইশারা করছে ওর মুখ থেকে হাত নামাতে।সায়ান্ত হাত নামাতেই আয়রা চেচিয়ে বলল”তো চিল্লবো না তো কি করবো!এভাবে ভূতের মতো দাড়িয়ে থাকলে তো চিল্লাবোই।”

“তুমিই তো আমাকে আটকে রেখে গিয়েছিলে সেইজন্যেই তো দাড়িয়ে ছিলাম।”

আয়রার মনে পড়লো যে কিছুক্ষণ আগে সে সায়ান্তকে আটকে রেখে গিয়েছিলো।এবার ভয়ে ঢোক গিলে সায়ান্তর দিকে তাকিয়ে দেখলো সে রেগে তার দিকে তাকিয়ে আছে।আয়রা ব্যাপারটাকে সহজ করার জন্য দাত কেলিয়ে বলল”দেখুন আজকে আকাশটা সুন্দর না?”

সায়ান্ত চোখ ছোট করে বলল”এগুলো বলে লাভ নাই।একপায়ে কান ধরে দাড়িয়ে থাকো দশমিনিট।”

“আচ্ছা দুই পায়ে দশ মিনিট দাড়িয়ে থাকি?”

“বেশি কথা বললে কিন্তু কানও ধরতে হবে।”

আয়রা এবার চুপ করে একপা উঠিয়ে দাড়িয়ে রইলো।আর সায়ান্ত দোলনায় পায়ের ওপর পা তুলে বসে রইলো।পাচ মিনিট পর আয়রা চেচিয়ে বলল”পনেরো মিনিট হয়ে গেছে।এখন পা ঠিক করি?”

“আমি পাঁচ মিনিট আর পনেরো মিনিট চিনি।চুপচাপ দাড়াও সময় হলো আমিই বলবো।”

আয়রা কোনো কথা না বলে আবার এক পায়ে ভর দিয়ে দাড়িয়ে রইলো।কিছুক্ষণ পর সায়ান্ত ঠিক হতে বলল।তারপর দুজনেই তর্ক করতে করতে নিচে নেমে এলো।এবং যে যার রুমে গিয়ে শুয়ে পড়লো।

৪.
সকাল দশটা বাজে।রিয়া নিজের কাপড় গুলে ধুয়ে ছাদে শুকাতে নিয়ে গেলো।ছাদে এসে দেখে নিলয় দাড়িয়ে দাড়িয়ে আখ চাবাচ্ছে।রিয়া কিছু বলল না চুপচাপ গিয়ে কাপড় মেলে দিতে লাগলো।হঠাৎ নিলয় খোঁচা মেরে বলল”কিছু কিছু মানুষের একদম ম্যানার নাই।ভালো মন্দ কিছু রান্না করলে যে পাশের ফ্ল্যাটেও দিতে হয় সেটাই জানে না।”

রিয়াও কম যায় না সেও খোচা মেরে বলল”আজকাল ছেছড়া মানুষের অভাব নাই। খালি অন্যের খাবারের দিকে নজর দেয়।এসব ছেছড়া দের জ্বালায় শান্তিতে কিছু রান্নাও করা যায় না।”

নিলয়ের রাগে শরীর জ্বলে যাচ্ছে।সে রেগে চেচিয়ে উঠে বলল”এই তোমার সাহস কি করে হয় আমাকে ছেছড়া বলার।”

রিয়া কাপড় মেলা শেষ করে বলল”আমি কারো নাম ধরে বলি নি।এতে যদি কারো গায়ে লাগে তাহলে সে আসলেই সেটা।”

রিয়ার কথা শুনে নিলয় ওকে ধরতে নিলেই….

চলবে…

(ভুলত্রুটি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।আর আপনাদের কোন জুটি টা ভালো লাগে?)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here