এক_রক্তিম_ভোর পর্ব ২৫

#এক_রক্তিম_ভোর
#প্রভা_আফরিন
#পর্ব_২৫

পুরো এলাকা রঙ বেরঙের আলোয় সেজে উঠেছে। শাহেদ এবং তারেক হোসেন মিলে এক সপ্তাহ আগে থেকেই পুরো এলাকার রাস্তা ঘাট আলোয় আলোয় ভরিয়ে তুলেছে। আগামীকাল গায়ে হলুদ। আত্মীয় স্বজনরা সব আসতে শুরু করে দিয়েছে।

নাবিলা জানালা দিয়ে বাহিরের ডেকোরেশন দেখছিলো। তার ভালোবাসার মানুষটা পরশুদিন আইনত এবং ধর্মীয়মতে তার ব্যক্তিগত পুরুষে রুপান্তরিত হতে চলেছে। নাবিলা দাদির ঘরের জানালার গ্রিলে মাথা ঠেকিয়ে রঙ বেরঙের স্বপ্ন বুনতে লাগলো। মনের ভেতর আজ রঙের মেলা বসেছে। সবকিছুই সুন্দর লাগছে। অয়নের সাথে বিয়ে ঠিক হওয়ার পর ভেবেছিলো জীবনটা স্বাধীনতাহীন ভাবে পার হয়ে যাবে। ভাগ্যকে কত দোষ দিয়েছিলো তার জন্য। কিন্তু আজ! আজ ওর জীবনে বিষাদের সামান্যটুকু ছায়াও নেই।

নাবিলার ভাবনার মাঝেই ফোন বেজে উঠলো। তাকাতেই দেখলো প্রয়াস কল দিয়েছে। একটা মিষ্টি হাসি ফুটে উঠলো ঠোঁটের কোনে। রিসিভ করতেই প্রয়াস তরিঘরি করে বললো,

‘ছাদে আয়।’

ফোন কেটে গেলো। নাবিলা ওরনাটা গায়ে পেচিয়ে ছাদের উদ্দেশ্যে রওনা দিলে পেছন থেকে নয়নতারা বেগম ডাকলেন,

‘কোথায় যাস এখন? আয় মাথায় তেল দিয়ে দেই। কালকে থেকে তো চুলের ওপর অনেক ধকল যাবে। যত্ন নেওয়ার সময় পাবি না।’

নাবিলা আমতা আমতা করে উত্তর দিলো,
‘দাদি আসলে একটু ছাদে যেতাম। ঘরে দমবন্ধ লাগছে। একটু বাতাসে যাই। তেল পরে দিয়ে দিয়ো।’

নয়নতারা বেগম নাবিলার বিয়ের জন্য বানানো গহনা গুছাতে গুছাতে বললো,
‘ভাবের মানুষ গুহায় থাকলে, সেখানেও বাতাস লাগে। কাছে না থাকলে উত্তাল বাতাসেও দমবন্ধ লাগে।’

নাবিলা মাথা নিচু করে হাসলো।

‘যা কিন্তু বেশিক্ষণ থাকবি না। মাথায় কাপড় দিয়ে যা।’
নাবিলা ওড়নার আচল মাথায় চাপাতে চাপাতে ছাদে চলে গেলো।

প্রয়াস ছাদের রেলিঙে দুই হাত রেখে রাতের আকাশের মধ্য মনি চাঁদকে দেখে চলেছে। সরু চিকন কাচির মতো চাঁদ। নাবিলা পাশে এসে দাঁড়িয়ে বললো,

‘তুমি এতো সুন্দরভাবে নির্নিমেষ আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকো তা দেখলে আমার হিংসা হয়।’
প্রয়াস হাসলো। বললো,

‘আকাশ আর আমার মধ্য একটা মিল আছে।’

‘কি মিল?’

‘আকাশের একটা চাঁদ আছে। আমারো একটা চাঁদ আছে।’

নাবিলার ঠোঁটের কোণা বিস্তৃত হলো। প্রয়াস ওর হাত ধরে টেনে ছাদের পেছনের দিকে নিয়ে গেলো। এদিক টা একটু অন্ধকার। বাড়ির পেছনের দিকটা দেখা যায় এখান থেকে। প্রয়াস পেছন থেকে নাবিলাকে বাহুবন্ধনে আবদ্ধ করে ওর কাধে থুতনি রাখলো। নাবিলা লজ্জায় মাথা নুইয়ে নিলো। প্রয়াস আকাশকে উদ্দেশ্য করে বললো,

‘শুনছো অভ্রনীল , তোমার একটা চাঁদ আছে। রজনীতে অপরুপ রুপালি আলোয় সে তোমায় সৌন্দর্যে মুড়িয়ে দেয়। তবে সে দিনের বেলা তোমার কাছে থাকতে পারে না কিন্তু। আমারো একটা চাঁদ আছে। সে দিনে রাতে সবসময় আমার কাছে আছে। তার রুপের ছটায় আমার চোখ ঝলসে যায়। মন থমকে যায়। হৃদয়ে সদর্পে ছুটে বেরায় সে। এই রুপ শুধু আমিই দেখি। কারন সে একান্তই আমার। তোমার চাঁদের আকার, রুপ, আলো বদলায়। কখনো বেশি কখনো কম। আর আমার চাঁদ যে একটু কমে না। আর আমার চাঁদ আমার কাছে চির কিশোরী। তাহলে কে বেশি ভাগ্যবান? তুমি? না আমি?’

নাবিলা হেসে ফেলে বললো,
‘তুমি কিন্তু দিন দিন বাচ্চা হয়ে যাচ্ছো এখন।’

‘প্রেমে পড়লে বুড়ো মানুষের অবধি বয়স কমে যায়। আর আমি বাচ্চা হলে ক্ষতি কোথায়? তুই শুধু আমার মনটা আগলে রাখিস। আমি পুরো তোকেই শুষে নেব নিজের মধ্যে। আমাদের আলাদা অস্তিত্ব দরকার পরবে না।আমরা দুইয়ে মিলে এক থাকবো সবসময়।’

‘বিয়ের পরও কি আমায় তুই করে ডাকবে?’

‘বিয়ের পরও কি তুই আমায় ভাইয়া বলে ডাকবি?’

‘উহু।’

‘তাহলে কি ডাকবি?’

‘জানি না তো।’

‘মনি কাকাই কে কি বলে ডাকে শুনেছিস?’

‘মা তো ‘নাবিলার বাবা’ বলে ডাকে।’

প্রয়াস ওর মাথায় টোকা দিয়ে বললো,
‘আচ্ছা! তোর জন্মের আগেও বুঝি তাই বলে ডেকেছে?’

‘জন্মের আগে কি বলে ডেকেছে সেটা আমি কিভাবে জানবো?’

‘তোর জানতে হবে না। আমি জানি।’

‘কি বলে ডাকতো?’

‘ওগো শুনছো?’

নাবিলা ঠোঁট টিপে হেসে বললো,
‘আসলে আমিও না কয়েকবার আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে প্র‍্যাক্টিস করেছিলাম। কেমন যেনো শোনায়। আমার লজ্জা লাগে। বাবা মায়ের সামনে ডাকবো কিভাবে?’

‘বাবা মা তখন আমাদের ভাই-বোন হিসেবে দেখবেন না। তাই লজ্জা পেয়ে দয়া করে এই সুমধুর ডাক থেকে আমায় বঞ্চিত করিস না প্লিজ!’

‘চেষ্টা করবো।’

‘তোকে তুই ডাকতে আমার বেশি ভালো লাগে। তুই ডাকটা আমার অন্তর থেকে আসে। তুমি ডাকটা যখন অন্তর থেকে আসবে তখন অবশ্যই ডাকবো।’

প্রয়াস নাবিলাকে নিজের দিকে ঘুরিয়ে বললো,
‘বলতো! আমি কিভাবে সবার আগে তোর মনের খবর আগে টের পেলাম?’

নাবিলা কিছু না বলে প্রশ্নসূচক চোখে তাকালো। প্রয়াস বলতে লাগলো,

‘যেদিন তুই আমাকে প্রোপজ করতে আসবি বলে ঠিক করেছিলি তার আগের দিন রাতে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে বারবার প্র‍্যাক্টিস করেছিলি মনে আছে?’

নাবিলা বিস্মিত কন্ঠে বললো,
‘তুমি কিভাবে…? ওয়েট। তুমি বারান্দায় ছিলে সেদিন রাতে? বারান্দার দরজা চাপানো ছিলো।তাহলে জানালা দিয়ে সব দেখেছো তাইনা? দিস ইজ নট ফেয়ার।’

নাবিলা গাল ফোলাতে গিয়েও ফোলালো না। প্রয়াস বললো,

‘রোজকার মতো সেদিনও তোর বারান্দায় এসেছিলাম। কিন্তু ভেতরে লাইট অন ছিলো বলে না ঢুকে জানালা দিয়ে তাকাই। তারপর সেই কাঙ্ক্ষিত মুহূর্তটা স্মৃতির পাতায় জমা হয়। যখন কেউ আমাকে মনের কথা জানাতে প্রস্তুত হচ্ছে আর আমি আড়ালে তা দেখছি। কি সুন্দর একটা অনুভূতি।সকাল সকাল রেডি ছিলাম তুই এসে মনে কথা জানাবি আর আমিও শিকার করে নেব। মাঝখান দিয়ে জেসি এসে জড়িয়ে ধরে দিলো তোকে ভুল বুঝিয়ে। তারপরই দুষ্টু বুদ্ধিটা এলো। একটু জেলাস করানোর।’

নাবিলাও স্বীকার করে নিলো সেদিন ছাদে ওদের সব কথা শুনে ফেলার কথাটা। তারপর দুজন একযোগে কিছুক্ষণ হাসলো।

নাবিলার হাতখোপা টা খুলে সব চুল পিঠে ছড়িয়ে গেলো। প্রয়াস একপলক তাকিয়ে অন্যদিকে মুখ করে বললো,

‘জলদি বাধ এদের।’

‘আমার চুলের সাথে তোমার কিসের শত্রুতা
বলোতো?’ নাবিলা ভ্রুকুটি করে জানতে চাইলো।

‘উত্তরটা তোলা রইলো। বিয়ের পর বলবো।’

‘এখন কেনো নয়?’

‘কারন আমার মন বলতে চাইছে না। তোর ব্যপারে আমার মনকে আমি কখনোই জোর করবো না। সে যেটা চাইবে তাই হবে। আর সে এই মুহূর্তে কি চাইছে জানিস?’

নাবিলা প্রয়াসের কথায় দুষ্টুমির আভাস পেলো। সরে যেতে বললো,

‘দাদি জলদি ফেরত যেতে বলেছে। আমি যাই।’

__________

‘হ্যালো।’

‘কেমন আছেন মেক-আপ সুন্দরী?’

‘হুম। ভালো।’

‘আমায় জিজ্ঞেস করবেন না কেমন আছি?’

‘আপনি ভালোই আছেন।’

‘আপনি কি কোনো কারনে আমার ওপর রেগে আছেন মিস মাহি? এভাবে রুক্ষ কণ্ঠে কথা বলছেন কেনো?’

‘নাহ। রাগ করবো কেনো?’

‘তাহলে কি অভিমান?’

‘আপনি আমার কে যে আপনার ওপর রাগ, অভিমান করবো।’

‘সেটাও ঠিক। জানতে চাইবেন না কেনো এই দুই সপ্তাহ কল দেইনি।’

‘আমার কি জানার প্রয়োজন আছে? থাকলে তো বলতেন তাইনা?’

সোহান একটু হাসলো।
‘আমি দুই সপ্তাহ আগে বন্ধুদের সাথে ট্যুরে গিয়েছিলাম। পাহাড়ে সবসময় মোবাইল নেটওয়ার্ক পাওয়া যায় না। আর পেলেও কল দিতে ইচ্ছে করেনি। প্রকৃতির সাথেও কিছুটা ব্যক্তিগত সময় কাটানো উচিৎ। এতে মনের কলুষতা দূর হয়। প্রকৃতি অন্তরের সকল বিষাদ টেনে বের করে নেয়। জীবন যে আসলেই অনেক সুন্দর তা উপলব্ধি করা যায়। ওখানে গিয়ে কিছু জিনিস উপলব্ধি করলাম জানেনতো। প্রকৃতিও খুব ভালো বন্ধু হতে পারে। প্রকৃতি প্রেমও শেখায়।’

মাহির অভিমান কিছুটা কমলো বোধহয়। শান্ত কন্ঠে বললো,
‘তা প্রেম শিখে এসেছেন নাকি?’

‘শিখতে হলো বৈকি। ওখানে না গেলে হয়তো বুঝতামও না আমি প্রেম রোগে আক্তান্ত হচ্ছি ধীরে ধীরে।’

কথাটা মাহির খুব ভালো লাগলো। মনে এক ধরনের প্রশান্তি বইয়ে দিলো।
‘আজ ফিরেছেন বুঝি?’

‘না। ফিরেছি তিনদিন আগে। তবে এসেই শুনলাম ভাইয়া হসপিটালে এডমিট। ভাইয়ার একটা ছোট্ট এক্সিডেন্ট হয়েছে। পায়ে কিছুটা ফ্রেকচার হয়েছে। সেটা নিয়ে একটু দৌড়ের ওপর ছিলাম। সবাইকে মানসিক ভাবে সামলাতে চেষ্টা করে গেছি। ভাইয়ার এখনো রিলিজ দেয়নি। কাল দিবে।’

মাহির রাগ উধাও হয়ে গেলো। সোহানের ভাইয়ার জন্য সমবেদনা প্রকাশ করে জানালো কাল দেখা করতে যাবে। আরো কিছু টুকটাক কথায় রাত গভীর হতে থাকলো। সেদিকে কেউ ভ্রুক্ষেপ করলোও না। আজ যে তারা ঝগড়া না করে বন্ধুসুলভ আচরন করছে সেদিকেও ভ্রুক্ষেপ হলো না। বরং কিছুদিনের দুরত্ব তাদের মনে যেই নতুন অনুভূতির সাক্ষাৎ ঘটিয়েছে, যে তৃষ্ণা জমিয়েছে, তা নিবারনে মগ্ন রইলো।

ওদের সব কথাই টুকটাক নাবিলার কানে এলো। মাহিকে গতকাল বাড়ি থেকে নিয়ে এসেছে নাবিলা। এখন দুজনে এক ঘরে শুয়েছে। মাহি বারান্দার দরজার কাছে দাঁড়িয়ে টুক টুক করে কথা বলে যাচ্ছে। নাবিলা সেদিকে মনোযোগ দিলো না। ওর মনে উৎকন্ঠা নতুন জীবনের। নিশুতির আধারে বাহিরে থেকে আসা আধো আলোয় একজন নতুন প্রেমের ছোয়ার ভাসছে আর অন্যজন মনে সংসার পাতছে।

___________

সূর্য পূর্বাকাশে তার উপস্থিতি জানান দিতেই হলুদের আয়োজনের জন্য ব্যস্ততা বেড়ে গেলো। আত্মীয়রা বেশিরভাগ চলে এসেছে বাড়িতে। বসার ঘর, রান্নাঘর, এমনকি নাবিলার ঘর বাদে সব ঘরেই তাদের পদচারণা হয়ে গেছে। বাচ্চারা এদিক সেদিক ছুটে বেরাচ্ছে। বাগানে প্রয়াস এবং নাবিলার হলুদ ও বিয়ের ব্যাবস্থা চলছে। প্রয়াসের নানা বাড়ি, দাদা বাড়ির আত্মীয়রাও মূলত নাবিলাদের বাড়িতে। বিয়েতে ছেলেপক্ষ মেয়েপক্ষ নেই। সায়মা বেগম সেটা চায়ওনি। দুই পরিবারের আত্মীয়রা একত্রে কাজ করে যাচ্ছে।

নাবিলা ঘুম থেকে উঠেছে সকাল সকাল। কিন্তু দাদির রুপচর্চার কবলে পড়ে মুখে, হাতে, পায়ে ঘরে বানানো উবটান লাগিয়ে বসে থাকতে হয়েছে। গোসল সেড়ে বাহিরে আসতেই প্রয়াসের মামা, মামির সামনে পড়লো নাবিলা। মামি মহিলাটা কিছুটা ঝাঝালো ধরনের। অর্থাৎ ভালো ভাবে কথা বললেও মনে হয় ধমকাচ্ছেন। স্বাভাবিক মুখভঙ্গিতে মনে হয় রেগে আছেন। প্রয়াস দেশ ছাড়ার সময় এসেছিলেন একবার। তবে নাবিলার সাথে দেখা হয়নি।

নাবিলা সালাম দিয়ে দাঁড়িয়ে যেতেই প্রয়াসের মামি ওকে মাথা থেকে পা পর্যন্ত দেখলো। মামা বললো,

‘কেমন আছো মা? আমাকে মনে আছে তো?’

‘জি মামা মনে আছে। আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি। আপনাদের কোনো অসুবিধা হচ্ছে না তো?’

‘না না। একটুও অসুবিধা হচ্ছে না। সায়মা আপা আমাদের যথেষ্ট খেয়াল রাখছেন।’

প্রয়াসের মামি পাশ থেকে বললো,
‘এতো বেলা অবধি ঘুমাও নাকি প্রতিদিন?’
নাবিলা ইতস্তত করে বললো,

‘জি.. ইয়ে মানে না। আরো সকালে উঠেছি। দাদির সাথে ছিলাম।’

মহিলাটি স্বামীর দিকে তাকিয়ে স্বগোতক্তি করে বললো,
‘ওহহ। তা গায়ের রঙতো অতোটা ফর্সা না। প্রয়াসের একটা বান্ধবী দেখলাম কি ধবধবে ফর্সা৷ প্রয়াসের যে কেনো সেদিকে মন গেলো না? ছেলেটা ঠকে গেলো।’

নাবিলা মামা তাকে চুপ করতে বললেও করলো না। স্ত্রীকে মাঝে মাঝে অসহ্য মনে হলেও প্রয়াসের মামা কিছু বলতে পারেন না ভয়ে। মামি তারপর নাবিলার দিকে তাকিয়ে বললো,

‘আজকাল ফর্সা হওয়ার কতকিছু পাওয়া যায়। ওগুলা মাখতে পারো না?’

মাহি হাই তুলে রুম থেকে বের হলো।সবে ঘুম থেকে উঠেছে বোধহয়। এখনো ফ্রেস হয়নি। দেয়ালে হেলান দিয়ে অলস ভঙ্গিতে প্রয়াসের মামিকে উদ্দ্যেশ করে বললো,

‘আহা মামা! বিয়ের সময় আপনিও প্রয়াস ভাইয়ার মতো ঠকেছিলেন তাইনা?’

মামা মাথা নেড়ে হ্যা বোঝাতে গিয়েও স্ত্রীর দিকে তাকিয়ে না বোঝালো। নাবিলা ঠোঁট টিপে হেসে ফেললো। মামি বিস্ফোরিত চোখে তার সামনে দাড়ানো ঘুম জড়ানো আলুথালু বেশে থাকা মেয়েটাকে দেখলো।

‘এই মেয়ে কি বলতে চাইছো তুমি?’

‘তেমন কিছু না আন্টি। আপনার গায়ের রঙ তো নাবিলার থেকেও অনেক চাপা। আপনাদের সময় বোধহয় ফর্সা হওয়ার কিছু ছিলো না। বা যেসব ছিলো তাতে কাজ হতো না। নাহলে আপনি এতোদিনে ধবধবে কোরিয়ান গ্লাস স্কিন পেয়ে যেতেন। হে হে।’

মাহি বুঝে গেছে সে ভুল করে ফেলেছে তাই বোকা হাসি দিয়ে আস্তে করে কেটে পড়লো। নাবিলাও কোনো রকমে মহিলার হিংস্র চাহনি থেকে পালিয়ে বাঁচলো।

‘আমি থাকবো না এখানে। হাটুর বয়সী মেয়ে কিনা আমাকে অপমান করে? এক্ষুনি জানাচ্ছি শাহেদ ভাইকে।’

মামা থামিয়ে দিয়ে বললো,
‘জানাতে গেলে তুমিই অপমানিত হবে। কে বলেছিলো নাবিলাকে ওসব বলতে? তোমার মনে হয় ওদের মেয়েকে এভাবে বলায় প্রয়াস জানলে তোমাকে ছেড়ে দেবে? তাই হজম করে নাও। নাহলে সবার সামনে অপমানিত হয়ে বাড়ি চলো।’

চলবে…

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here