এক_রক্তিম_ভোর পর্ব ২৯

#এক_রক্তিম_ভোর
#প্রভা_আফরিন
#পর্ব_২৯

‘আদ্র কাদছে কেনো প্রয়াস?’
জেসি শুকনো মুখে প্রশ্ন করলো।

প্রয়াস জিভ দিয়ে ঠোঁট ভিজিয়ে নিলো। পানি তেষ্টা পেয়েছে খুব। নির্লিপ্ত কণ্ঠে বললো,
‘দিশা হয়তো নাবিলার ব্যাপারে আলোচনা করছিলো। আদ্র সেটা শুনে ফেলেছে।’

‘কি বলছো! দিশার আরো সতর্ক হওয়া উচিৎ ছিলো। এই জন্যই স্কুল থেকে ফিরে মুখে কিচ্ছুটি তোলেনি ছেলেটা। কত করে খাইয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলাম কিন্তু কাজ হলো না।’

বলতে বলতে জেসি ব্যাগ থেকে পানির বোতলটা বের করে এগিয়ে দিলো প্রয়াসের দিকে। প্রয়াস পুরো বোতল পানি শেষ করে ফেললো৷ খালি বোতলটা জেসির দিকে এগিয়ে দিয়ে বসে রইলো চুপচাপ। জেসি একটা দীর্ঘদিন ফেলে বললো,

‘ তোমরা বাবা-ছেলে দুজনেই দেখছি আমাকে চিন্তায় শেষ করে ফেলবে। এভাবে আর কতক্ষন বসে থাকবে? কিছু অন্তত মুখে দাও।’

‘আমাকে নিয়ে ভেবো না। আদ্রকে একটু সামলাও গিয়ে। দেখো কিছু খাওয়াতে পারো কিনা। পারলে বাড়ি নিয়ে যাও একবার।’

‘চিন্তা করো না। আমি দেখছি।’
জেসি শুকনো মুখে বিদায় নিলো।

প্রয়াস নির্লিপ্ত, নির্জীব ভঙ্গিতে হেটে জানালার কাছে গেলো। দুপুর গড়িয়েছে অনেকক্ষন। সূর্য পশিমে হেলে পড়েছে কিছুটা। দুপুরের খাবার শেষে কেউ ভাত ঘুম দিতে ব্যস্ত, আবার কেউ পুনরায় নিত্যদিনের কাজে ব্যস্ত। প্রয়াসের কোনো তাড়া নেই। শুধু আছে এক বুক অপেক্ষা। হাতের মুঠো খুলে চোখের সামনে ধরলো সে। তালুতে একটা খয়েরী রঙের রাবার ব্যান্ড। একটা চাপা শ্বাস ফেলে আবার হাত মুঠো করে নিলো প্রয়াস। মনে মনে স্বগতোক্তি করে বললো,

‘এক নিষ্ঠুরকে ভালোবেসে জ্বলছি অনবরত।
সে কি জানে! আমার বুকে তার জন্য বিশাল ক্ষত।’

_________

ঘুম ভাঙতেই গালে কারো হাতের স্পর্শ পেলো নাবিলা। চোখ পিটপিট করে তাকাতেই দেখলো একটা ফর্সা মুখ ওর দিকে ঝুকে আছে। ওকে চোখ খুলতে দেখে গাল থেলে হাত সরিয়ে কিছুটা পিছিয়ে গেলো সে। নাবিলা হেসে ফেললো। বললো,

‘অলিভ ডিয়ার। গুড মর্নিং।’

অলিভার উত্তর দিলো না। সে প্রয়াসের কোলে মিশে গেলো। প্রয়াস হেসে বললো,

‘কাল যা করেছিস তারপর আমারই তোকে ভয় লাগছে আর ওতো একটা বাচ্চা।’

নাবিলা কপট রাগ দেখানোর ভান করলো৷ প্রয়াস ওর গাল টেনে দিয়ে বললো,

‘থাক আর রাগ দেখাতে হবে না। রাগ তো আমার দেখানো উচিৎ। বাসর রাতে পড়ে পড়ে ঘুমিয়েছিস। আর এদিকে আমার চোখে ঘুম নেই আজ কতগুলো দিন। সেদিকে কারো খেয়াল নেই।’

নাবিলার চেহারায় রাগ অদৃশ্য হয়ে ফুটে উঠলো একরাশ লজ্জা। ওর সামনে বসে থাকা মানুষটা ওর স্বামী। ভাবতেই কেমন এক সুখের লজ্জায় মুড়িয়ে যাচ্ছে সে। কাল রাত এগারোটার দিকে ওরা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছে। সেটাও এক বিরাট ঝামেলা ছিলো বলা চলে। হসপিটালে বিয়ে। এই হসপিটালে প্রথম বোধহয় এমন ঘটনা ঘটলো। ইতিমধ্যে পুরো হসপিটালে ছড়িয়ে পড়েছে কথাটা।

নাবিলার জ্ঞান ফেরারদিন রাতে জেসি দেখতে আসে ওকে। সমস্যাটা মূলত সেখান থেকেই শুরু। নাবিলা জেসিকে প্রয়াসের আশেপাশে সহ্য করতে পারছিলো না। ওর বারবার মনে হচ্ছিলো ও মরে যাবে। তারপরই প্রয়াস জেসিকে বিয়ে করে নেবে। আবার মনে হচ্ছিলো, জেসি হয়তো প্রয়াসকে কেড়ে নেবে। অথবা নাবিলা এক্সিডেন্ট এ অসুন্দর হয়ে গেছে, তাই প্রয়াস আর ওকে ভালোবাসবে না। এমন হাজারটা কথা সারাক্ষন মনে মনে আওড়িয়ে গেছে নাবিলা।

প্রয়াসকে নিয়ে পসেসিভ হয়ে গিয়েছিলো। ওকে কেবিন ছেড়ে বের হতে দিতো না। এমনকি অলিভারের কাছেও যেতে দিতে ভয় পেতো। ঘুমের ঘোরেও আবল তাবল বকে যেত। ডাক্তাররা জানায় নাবিলার হয়তো এক্সিডেন্ট থেকেই মানসিক সমস্যা হচ্ছে। ও প্রয়াসকে হারিয়ে ফেলার ভয় পাচ্ছে। নাবিলার এমন অস্বাভাবিক আচরণে সবাই চিন্তিত হয়ে যায়। বিশেষ করে প্রয়াস। কারন অলিভকে সামলানোর জন্য একমাত্র ওই আছে।

অলিভার কারো কাছেই যায়না প্রয়াস ছাড়া। মা হারা ছেলেটাকে প্রয়াস নিজেই মায়ের ভালোবাসা দিতে চেষ্টা করে যাচ্ছে অনবরত। ওকে ভুলিয়ে রাখছে অন্য কিছুতে। তবুও একটু পর পরই অলিভার মায়ের খোজ করে। প্রয়াস জানায় মাম্মা ব্যস্ত আছে। পরে আসবে। অলিভার কিছুক্ষনের জন্য ভুলে যায়। আবার হঠাৎ জোরে কেদে উঠে মাম্মা মাম্মা বলে ডাকে। বাধ্য হয়ে নাবিলা এবং অলিভারকে এক কেবিনে রাখার ব্যবস্থা করায় সে।

এরপরই একটা সুন্দর পরিবর্তন ঘটে। অলিভার নাবিলাকে পেয়ে অনেকাংশে মাকে ভুলে থাকতে পারে। নাবিলাও প্রয়াসকে হারানোর ভয় থেকে কিছুটা বেরিয়ে আসতে পেরেছে। কেবিনটা যেন তিনজনের ছোট্ট একটা সংসারে পরিনত হয়েছে। অলিভার যেন ওদের সন্তান হয়ে উঠলো সহজেই। ছোট্ট অলিভারের স্মৃতি থেকে মা নামক মানুষটা রয়ে গেলেও বাবাকে প্রায় ভুলে গেছে সে। একটি বারের জন্যও অয়নের জন্য কাদেনি ও। বরং প্রয়াসকেই যেন অঘোষিত বাবা মানতে শুরু করেছে।

ঘুম ভেঙে উঠেই আগে প্রয়াসের কোলে উঠে বলবে নাবিলার কাছে নিয়ে যেতে। নাবিলা ওকে কোলে নিলে অলিভ নাবিলার বুকে চুপটি করে শুয়ে থাকে। হয়তো মাকে খোজার চেষ্টা করে ওর মাঝে। নাবিলা পরম আদরে ওর মাথায় হাত বুলিয়ে দেয়। প্রয়াস খেয়াল রাখে কোনোভাবে যেন ওরা একে অপরকে ব্যাথা না দিয়ে ফেলে। ওর এখন নিজেকে পরিপূর্ণ মনে হয়। সারাদিন তিনজনের খুনসুটিতে কেটে যায়।

অলিভারকে নাবিলার পরিবারও মেনে নিয়েছে। দিশা একবার চেয়েছিলো অলিভারকে নিয়ে নিজের আলাদা জীবন শুরু করতে। প্রয়াস দেয়নি। ও ঠিক করে নিয়েছে নাবিলা এবং অলিভার সুস্থ হলে সবার প্রথম নাবিলাকে বিয়ে করবে তারপর অলিভারকে নিজের সন্তানের স্বীকৃতি দেবে সে। এমিলি নিজেই এই ইঙ্গিত দিয়ে গেছে প্রয়াসকে। কিন্তু ঝামেলা বাধালো নাবিলা।

কাল দুপুরে বাংলাদেশ ছাড়ার আগে জেসি একবার এসেছিলো দেখা করতে। তারপর থেকে নাবিলা আবার অদ্ভুত আচরণ শুরু করে। জেসির সাথে কথাতো বলেই না, উল্টো প্রয়াস জেসির সাথে কথা বলায় তেতে ওঠে। ওর চিৎকার, চেচামেচিতে ছোট্ট অলিভারও ভয় পেয়ে গেছে খুব। সেই ভয় থেকেই আবার মাম্মার জন্য কাদতে শুরু করে ছেলেটা। প্রয়াস কিছুতেই নাবিলাকে বিশ্বাস করাতে পারছিলো না যে ওকে কেউ নাবিলার থেকে আলাদা করতে পারবে না। কোনো মেডিসিন বা ঘুমের ইনজেকশনও নিচ্ছিলো না সে।

বাধ্য হয়ে রাত এগারোটায় তারেক হোসেন কাজি ধরে এনে দুটোকে বিয়ে দেন। নয়নতারা বেগম কবুল বলার আগে নাবিলার মাথায় ওর বিয়ের দোপাট্টা টা পড়িয়ে দেয় শুধু। কবুল বলা হয়ে গেলে নাবিলা শান্ত হয়। খেয়াল করে ওর পরিবারের প্রতিটা মানুষ ওকে দেখে মিটমিট করে হাসছে। নার্সও বাদ যায়নি। সবাই বেরিয়ে গেলে প্রয়াস ওর কানের কাছে বলে,

‘এমন বিয়ে পাগল আমি জীবনে দুটো দেখিনি। নিজে তো লজ্জায় পড়লি সাথে আমাকেও ফেললি। শেষমেষ আমার বাসর রাতটা এভাবে হাসপাতালে কাটাতে হবে?’

প্রয়াসের একের পর এক লাগামহীন কথার সম্মুখীন হয়ে নাবিলা নিজেই নার্সকে ঘুমের ঔষধ দিতে বলে। সেই ঘুমের প্রভাব কাটলো অলিভারের ছোয়ায়।

‘হয়েছে। আর লজ্জা পেয়ে কাজ নেই। এবার অলিভকে ধর৷ তোর ভয়ে কাল থেকে আবার মায়ের জন্য কাদছে।’

নাবিলা অলিভকে নিতে হাত বাড়ালো। অলিভ হাতের দিকে চেয়ে আছে। বোধহয় এখনো নাবিলার উগ্র আচরণ ভুলতে পারেনি বেচারা। নাবিলার খারাপ লাগলো খুব। প্রয়াসের জন্য এতোটাই ডেস্পারেট হয়ে গেছিলো যে বাচ্চাটার ওপর কিরুপ প্রভাব পড়বে খেয়ালই করেনি।

প্রয়াস অলিভারকে নাবিলার কোলে বসিয়ে দিলো। অলিভার গুটিয়ে গেলো। আজ আর নিজে থেকে ওকে জড়িয়ে ধরলো না। নাবিলা ওর মাথাটা বুকে চেপে ধরতেই অলিভার হু হু করে কেদে ফেললো। ছোট্ট দুই হাতে জোরে চেপে ধরলো নাবিলাকে। পিঠের কাটা স্থানে হালকা টান পড়লেও নাবিলা সয়ে গেলো। বুঝলো অলিভারের আসলে অভিমান হয়েছে। ঠোঁট ভেঙে উ উ শব্দ করে কাদছে। নাবিলা নিজেও ওর কপালে ঠোঁট ঠেকিয়ে কেদে ফেললো।

প্রয়াস আলতো হাতে দুজনকে জড়িয়ে ধরলো। কি সুন্দর এক দৃশ্য। অচেনা যে কেউ বলবে এখানে একটি ছোট্ট সুখী পরিবার একসাথে মিশে রয়েছে। সুখী পরিবারই তো বলা চলে। বাবা-মা না হয়েও প্রয়াস এবং নাবিলা সেই অনুভূতির সাক্ষাত পেয়েছে। অলিভারও তাই। নিজের বাবা মাকে কখনোই একসাথে পায়নি। প্রয়াস নাবিলাকে পেয়ে তিন বছরের অলিভার বাবা মাকে অনেকটাই ভুলে থাকতে পেরেছে।

অনেক সময় বাবা,মা হয়েও অনেকে সেই অনুভূতির সাক্ষাত পায় না। একটি পরিবার হয়েও বাচ্চারা সঠিক ভালোবাসা এবং শিক্ষা পায় না। সেই বাচ্চাগুলোর সঙ্গী হয় অবহেলা। সেখানে একটা দুর্ঘটনা অলিভারকে একদিকে নিঃস্ব করে দিয়ে অপরদিকে করে দিয়েছে পরিপূর্ণ। আগের স্বাভাবিক জীবনে সে কখনোই বাবা, মাকে একসাথে পেতো না। আর না দাদু, নানা, নানু পেতো। এখন সে সবাইকে পেয়েছে।

অলিভার ধীরে ধীরে যত বড় হবে, ততই মায়ের স্মৃতি আবছা হয়ে সেখানে স্থান পাবে নাবিলা। বা হয়তো পেয়েও গেছে। অলিভার দুয়েকটা বাংলা শব্দও শিখে ফেলেছে। প্রয়াস জানে অলিভার একটি নরম মাটির দলা। ওকে যেভাবে খুশি গড়ে তোলা যাবে।তাই প্রতিদিন অল্প অল্প বাংলা শেখাচ্ছে ওকে। নয়নতারা বেগম ওদের দূর থেকে দেখে বড় তৃপ্তি পেলেন। সায়মা বেগমকে উদ্দেশ্য করে বললেন,

‘অনেক সময় হারিয়েও অনেক কিছু পাওয়া যায়। নিঃস্ব হয়েও পরিপূর্ণ হওয়া যায়। ওরাই এর প্রকৃত উদাহরণ।’

_________

নাবিলার সবদিক দিয়ে মোটামুটি সুস্থ হয়ে উঠলেও ওর পায়ের ক্ষতটা সারেনি। তবে ডাক্তার বলেছে পরের সপ্তাহেই রিলিজ দিয়ে দেবে। বাড়িতে কিছুদিন সাবধানে রাখলেই হবে। অলিভার এখন সম্পূর্ণ সুস্থ। মায়ের জন্য এখন আর কাদে না।

নাবিলা ঘুমন্ত অলিভারের কপালে ঝুকে চুমু একে দিতে গিয়ে খোপা খুলে গেলো। চুল সরিয়ে প্রয়াসের দিকে তাকাতেই দেখলো ও ছোট ছোট চোখ করে তাকিয়ে আছে। নাবিলা তরিঘরি করে খোপা করতে নিলে প্রয়াস হাত আটকে দিলো। নাবিলার কোল থেকে অলিভারকে নিয়ে ওর বেডে নামিয়ে বুক অবধি চাদর তুলে দিলো। ফেরত এসে নাবিলার পাশে বসতেই নাবিলা বললো,

‘বলেছিলে বিয়ের পর বলবে আমার চুল তোমার কেনো সহ্য হয় না। এবার বলো।’

‘বিয়ে করলেই হলো বুঝি! কোথায় বিয়ে করে বউয়ের সেবা নিবো তা না উল্টে আমিই বউয়ের সেবায় দিন রাত নিয়োজিত।’

নাবিলা ঠোঁট টিপে হেসে ফেললো।

‘হাসবি না। একদম হাসবি না।’

‘আচ্ছা। হাসবো না।’

বলে নাবিলা আবার হেসে দিলো। প্র‍য়াস নাবিলার সবগুলো চুল একত্র করে তাতে মুখ ডুবিয়ে দিলো। নাবিলা থেমে গেলো। নুইয়ে গেলো।

‘ছিঃ! বউয়ের চুলে মুখ ডোবালে নাকি মাতাল করা সুন্দর সুবাস পাওয়া যায়? তোর চুলে গন্ধ কেনো?’

নাবিলা ভরকে গেলো। বললো,
‘হসপিটালে চুলের যত্ন কে করতে পারে শুনি? বাড়ি ফিরতে দাও। সুগন্ধি যুক্ত শ্যাম্পু ব্যাবহার করে চুলের গন্ধে তোমায় পাগল করে দেবো।’

প্রয়াসের হাত নাবিলার চুল ছেড়ে কোমড়ে চলে গেলো। নাবিলার নিঃশ্বাস বন্ধ হওয়ার যোগাড়। কাপাকাপা গলায় বললো,

‘কি করছো? নার্স চলে আসবে।’

‘আসবে না। এলেও নক করে আসবে। সবাই জানে এখানে স্বামী স্ত্রী আছে। এটা শুধু তোর আর আমার একান্ত সময়।’

নাবিলা চুপ হয়ে গেলো। লজ্জায় কান গরম হয়ে এসেছে ওর। প্রয়াস আবার বললো,

‘এই চুল আমার কেনো অসহ্য লাগে জানিস? খোলা চুলে তোর সৌন্দর্য কয়েকগুন বেড়ে যায়। এই চুল আমার বুকে প্রেমের ঢেউয়ের মতো আছড়ে পরে। আমায় দিশেহারা করে। মাতাল করে…’

প্রয়াসের মুখে হাত দিয়ে নাবিলা নিমজ্জিত কন্ঠে বললো,
‘প্লিজ চুপ।’

প্রয়াস নাবিলার হাতটা ঠোঁটের সাথে চেপে ধরলো। নাবিলার পুরো শরীর ঝিমঝিম করে উঠলো। অজানা শীহরন বয়ে গেলো হৃদয় জুড়ে। প্রয়াস ওর হাত ছেড়ে দিয়ে একটু কাছে টানতেই নাবিলা সরে গেলো।

‘আমার ঘুম পেয়েছে।’

প্রয়াস বাকা হেসে বললো,
‘সারারাত ঘুমের ঔষধ খেয়ে বেঘোরে ঘুমাস। তোর পাশে নির্ঘুম রাত কাটে আমার। সেই সময় তোকে কোথায় কোথায়, কিভাবে কিভাবে ছুই…’

নাবিলা বিষ্ফোরিত চোখে তাকালো।
‘মানে? তুমি এতো খারাপ!’

‘না এতো খারাপ না। কম কম খারাপ।’

‘ক কি করো ত তুমি আমি ঘুমালে?’

‘বেশি কিছু না। শুধু…’

‘শুধু?’

প্রয়াস নাবিলার ওষ্ঠদ্বয় নিজের আয়ত্বে নিয়ে নিলো।
নাবিলা থমকে গেলো। নিশ্বাসের গতি বৃদ্ধি পেলো।প্রয়াসের বুকের কাছটায় টিশার্ট খামছে ধরলো।

কিছুক্ষন পর ছেড়ে দিয়ে প্রয়াস বললো,
‘এইটুকুই শুধু।’

নাবিলা নিজের ভর ছেড়ে দিলো প্রয়াসের ওপর। প্রয়াস ওকে উষ্ণ আলিঙ্গনে আবদ্ধ করলো।

‘ এই যন্ত্রনাময় নির্ঘুম রাতের সমাপ্তি চাই আমি। তোকে বুকে নিয়ে একটা লম্বা সুখের ঘুম দিতে চাই।’

চলবে…

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here