এতো চাই তোকে পর্ব ৭

#এতো_চাই_তোকে
#পার্ট_০৭
#Mst_Liza

চেম্বারের দরজা খুলতেই দেখতে পেলাম সবাই ছুটে বাইরের দিকে যাচ্ছে।হৃদ ভাইয়া আর আমি ব্যাপারটা বুঝে বাইরে আসলাম। হসপিটালের সাদের উপরে এক কর্ণিশে দাড়িয়ে চিৎকার করে বলছে প্রিয়া আমি মরবো আমি মরবো।হৃদ স্যারকে যদি না পাই আমি মরবো। এটা শুনে উপরে তাকিয়ে দেখতে পেলাম প্রিয়া এমনটা করছে।আমাদের দেখে প্রিয়া আমায় উদ্দেশ্য করে বলল,

—“কি ভেবেছিস ফুল? আমি হেরে যাবো? হৃদ স্যার শুধু আমার।ছোটবেলা থেকে আমি যা চেয়েছি তাই পেয়েছি।এখন আমার হৃদ স্যারকে চাই।যদি না পাই এইখান থেকে এক ঝাঁপে নিচে এসে পরবো।”

মেঘ স্যার আপুকে ধরে বলছে,

—“প্লিজ হৃদ আর ফুলকে বোঝাও নূর।আমার বোনটার কিছু হলে তোমায় আমি ক্ষমা করবো না।আমি ভাবতে বাধ্য হবো তোমার সাথে সংসার করার কথা।”

হৃদ ভাইয়া ভীরের মাঝ থেকে প্রিয়ার দিকে তাকিয়ে আছে।আর চিৎকার করে বলছে,

—“এসব নাটক বন্ধ করও তুমি।এতোই যদি সাহস থাকে দাও ঝাঁপ। মুখে কেন বলছো?”

আপু হৃদ ভাইয়াকে টেনে ধরে বলল,

—“এভাবে বলিস না তুই হৃদ।প্রিয়া অনেক জেদি মেয়ে।জেদের বশে যা ইচ্ছা করে ফেলতে পারে।”

আপু হৃদ ভাইয়াকে কথাটা বলে আমার হাত ধরে এক সাইটে নিয়ে আসলো।আমার কাছে হাত জোর করে বলল,

—“ফুল আমি বোন হয়ে তোর কাছে ভিক্ষা চাচ্ছি আমাকে একটু সাহায্য কর।খুব ভালোবাসি মেঘকে আমি।প্রিয়ার কিছু হয়ে গেলে মেঘ আমার সাথে সংসার করবে না।তখন আমি মরে যাবো।”

আমি আপুকে বললাম,

—“এভাবে কেন বলছো আপু? এতে আমি কি করতে পারি?”

আপু বলল,

—“হৃদ তোকে ভালোবাসে।তুই তো বাসিস না।তোর জায়গায় যদি আমি হতাম তাহলে আমার বোনের জন্য, একটা মেয়ের জীবন বাঁচানোর জন্য, এইটুকু আমি করতাম।হৃদ একসময় আমাকে ভালোবেসেছিলো। কিন্তু ভুলতে পেরেছে।যখন ওর মনে তুই এসেছিস।ও আবার পারবে তোকে ভুলতে।একবার যখন পেরেছে দ্বিতীয়বার নিশ্চয় পারবে।তুই হৃদকে বল প্রিয়াকে ভালোবাসতে, বিয়ে করতে।হৃদকে বল তুই অন্য কাউকে ভালোবাসিস।প্লিজ ফুল এমন কিছু কর যেন হৃদ রেগে গিয়ে এই মুহূর্তে প্রিয়াকে বিয়ের জন্য হ্যাঁ বলে।”

আমি নিশ্চুপ হয়ে রইলাম। আমাকে আপু ঝাঁকিয়ে বলল,

—“একটা মেয়ের জীবনের প্রশ্ন ফুল।আমার বোন হয়ে তুই কারও আত্মহত্যার কারণ হতে পারিস না।”

আমি ভেবে দেখলাম আপুকে তো হৃদ ভাইয়া একটা সময় ভালোবেসেছিলো।আপুর সুখের জন্য মেঘ স্যারের মতো এতো ধনী একজনের সাথে বিয়ে দেওয়ার অনেক চেস্টা করেছে।অনেক অপমানিত হয়েছে।আপুর সুখের জন্য। আর আজ আপুর সংসার বাঁচাতে হৃদ ভাইয়ার এতো পরিশ্রম আমি বৃথা হতে দেবো? আপুকে আমি বললাম,

—“বেশ তোমার খুশির জন্য প্রিয়াকে হৃদ ভাইয়া বিয়ে করবে।আমার কোনো দাবি নেই হৃদ ভাইয়ার প্রতি।হৃদ ভাইয়া আজ থেকে শুধু প্রিয়ার।”

আপু আমার কাছে জানতে চাইলো,

—“তুই হৃদকে ভালোবাসিস নাতো? যদি ভালোবেসে থাকিস তাহলে আমি তোকে জোর করবো না।”

আমি মাথা নাড়িয়ে আপুর কাঁধে হাত রেখে বললাম,

—“না আপু আমি হৃদ ভাইয়াকে কখনো ভালোবাসি নি।তুমি আমার কথা ভেবো না।প্রিয়াকে সামলাও।আমি একটু আসছি।”

আমি বাড়িতে ফোন করে কাকি মণির কাছ থেকে সেই ছেলেটার ফোন নম্বর নিলাম যার সাথে আমার বিয়ে ঠিক হয়েছে।আমার একটা ফোনে ছেলেটা ছুটে এলো হসপিটালের সামনে।তার নাম সায়ান।আমি সায়ানকে বললাম সবটা।সায়ান প্রিয়া আর মেঘ স্যারের কাজিন।সে জানে প্রিয়া কেমন। তাই আমার সাথে অভিনয়ের জন্য হ্যাঁ বলে দিলো।আমরা দু’জন হাত ধরে ভীরের মধ্যে আসলাম। হৃদ ভাইয়াকে দেখিয়ে হেসে উঠে সবাইকে উদ্দেশ্য করে বললাম,

—“প্রিয়াকে হৃদ ভাইয়া বিয়ে করবে কিনা জানি না।তবে তোমরা সবাই আমার বিয়েতে এসো।এর সাথে আমার বিয়ে হবে।”

হৃদ ভাইয়া আমাকে টেনে নিজের দিকে ঘুরিয়ে নিলো।আমাকে বলল,

—“এসব কি করছিস তুই?”

আমি বললাম,

—“সায়ানকে আমি আপুর বিয়েতে দেখেই পছন্দ করে নিয়েছিলাম।আর ওকেই আমি বিয়ে করবো।ভালোবাসি ওকে।”

কথাটা শুনে হৃদ ভাইয়া নিশ্চুপ হয়ে রইলো। মনে হচ্ছিল জীবনে আরও একবার ভালোবাসায় এমন ঠকবে কখনো ভাবেনি।কোনো কিছু না বলে ওখান থেকে চলে গেলো হৃদ ভাইয়া।আমি উপরে তাকিয়ে বললাম,

—“হৃদ ভাইয়া তোমার প্রিয়া।তোমাকেই বিয়ে করবে।নিচে নেমে এসো।”

প্রিয়া বলল,

—“ঠিক আছে। তুমি যখন বলছো তখন নামছি।আজই বিয়ের দিন ঠিক করতে ভাইয়া যাবে তোমাদের বাড়িতে।”

মেঘ স্যার বলল,

—“হ্যাঁ হ্যাঁ যাবো নেমে আই বোন।”

প্রিয়া নিচে নেমে আসলে মেঘ স্যার আপুকে ধন্যবাদ জানালো।আপু আমাকে জড়িয়ে ধরে বলল,

—“আমার বোন হিসেবে তোর প্রতি গর্ববোধ হচ্ছে আজ।”

আমি সায়ানকে ধন্যবাদ জানালাম অভিনয় করার জন্য। প্রিয়া যে নাটক করছিলো তা আমি বুঝি। তবুও জেদের বশে যদি কিছু করে বসতো তাহলে মেঘ স্যার আর আপুর সম্পর্কটা নস্ট হতো।যা আমি চাই না।এবার আমি পুরো হসপিটালে খুঁজে চলেছি হৃদ ভাইয়াকে।কিন্তু পাচ্ছি না কোথাও।আমাকে যে হৃদ ভাইয়াকে বলতে হবে আমি তাকে ঠকাচ্ছি না।

চলবে,,,,,

এ্যাসাইনমেন্ট লিখছিলাম। ফাঁকে ফাঁকে গল্প লিখেছি।তাই সাজাতে পারিনি।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here