কতটা চাই তোকে পর্ব ২১+২২

#কতোটা_চাই_তোকে💖
#Writer:—#TanjiL_Mim💖
#part:—21
.
.
🍁
“স্থির দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছি আমি’!!আর একটু লজ্জা মাখা মুখ নিয়ে সেই কখন কাব্যকে বলছি আমায় ছেড়ে দিতে এই ভাবে কেউ কারো সামনে কোলে তুলে রাখে নাকি’!!কিন্তু কাব্যের সেদিকে কোনো খেয়াল নেই’!!আমি একটু নড়েচড়ে কাব্যের কানে কানে বললামঃ

———“এসব কি হচ্ছে ছাড়ো আমায়,,ওই আপু কি মনে করছে বলো তো!!

——–“যা মনে করছে করতে দে’!!তুই চুপ করে বস বলছি’!!আর একবার নড়লে তোর খবর আছে??(দমক দিয়ে)

“কাব্যের দমক শুনে আমি চুপ’!!

“হর্ঠাৎই কাব্য লাবন্যের দিকে তাকিয়ে বলে উঠলঃ

——–“তুই এখানে কেন??

“লাবন্য কিছুক্ষন চুপ থেকে বলে উঠলঃ

——–“সরি………

”লাবণ্যের কথা শুনে আমি আর কাব্য দুজনেই অবাক হলাম’!!লাবণ্য আবারও বলে উঠলঃ

———“সরি কাব্য আর মাইশা’!!বিশেষ করে মাইশা তোমাকে সরি!!আমার জন্য তোমাদের দুজনের মধ্যে ঝামেলা হইছিল’!!আসলে সেদিন কাব্যের কোনো দোষ ছিল না’!!তাই আমি সরি বলতে এসেছি’!!ভেবেছিলাম কাব্যকে সরি বলে তোমার কাছে গিয়ে সরি বলবো’!!যেহেতু তোমরা দুজনেই একসাথে আছিস তাই আরো সুবিধা হলো আমার’!!তাই তোদের দুজনের কাছেই আমি সরি বলছি’!!আই এম রিয়েলি সরি’!!(নীরব আওয়াজে)

“লাবণ্য আপুর কথা শুনে খারাপ লাগলো আমার’!!আমি কাব্যের কাছ থেকে উঠে এসে’!!লাবণ্য আপুর হাত ধরলাম আমি’!!তারপর বলে উঠলামঃ

——–“it’s okk apii…..!!তুমি তোমার ভুল বুঝতে পেরেছো এতেই চলবে আপু……!!

“আমার কথা শুনে লাবন্য বলে উঠলঃ

——–“তুমি খুব ভালো মাইশা’!!আমাকে ক্ষমা করেছো এর জন্য তোমায় অনেক ধন্যবাদ’!!আর কাব্য কি এখনো আমার উপর রেগে আছিস……

“এমন সময় কাব্য এসে বললোঃ

——–“ঠিক আছে তুই যখন তোর ভুল বুঝতে পেরেছিস তাই তোর উপর কোনো রাগ নেই আমার’!!

“কাব্যের কথা শুনে হাসলো লাবন্য তারপর বলে উঠলঃ

——-“ধন্যবাদ কাব্য’!!আর একটা কথা আমি কালই আমেরিকা চলে যাচ্ছি’!!ভাবছি ওখানেই থেকে যাবো আর ফিরবো না দেশে’!!তোরা ভালো থাকিস’!!মাঝে মাঝে তোদের সাথে কথা হবে ফোনে’!!আচ্ছা শোন আমায় এখন যেতে হবে অনেক কাজ আছে’!!হয়তো তোদের সাথে আর দেখা হবে না আমার’!!তাই আবারো বলছি সরি তোদের দুজনকেই’!!এই বলে এক প্রকার পালিয়ে চলে আসলো লাবন্য’!!হয়তো আর কিছুক্ষন থাকলে তার চোখের পানি দেখে ফেলতো কাব্য আর মাইশা’!!অনেক ভেবে দেখেছে সে জোর করে কখনো কারো ভালোবাসা পাওয়া যায় না’!!তাই সেও আর চেষ্টা করবে না’!!নিজের জীবনটাকে নতুন ভাবে নতুন করে সাজিয়ে নিবে’!!এসব ভেবে অফিস থেকে বেরিয়ে গাড়িতে বসে পরল লাবন্য’!!শেষ বারের মতো কাব্যের অফিসের দিকে তাকিয়ে চললো সে তার গন্তব্যে……

“মনের মাঝে রয়েছে তার নতুন ভাবে নতুন করে জীবন শুরু করার পূর্ণ বাসনা……

__________________________________________

_____________________

“নীরবতা নিয়ে দাঁড়িয়ে আছি আমি আর কাব্য’!!হর্ঠাৎই নীরবতা ভেঙে কাব্যকে বলে উঠলামঃ

———-“আপুর খুব কষ্ট হচ্ছে মনে হয়’!!দেখেছো কিভাবে পালিয়ে গেল আমাদের সামনে থেকে…….

———-“কিছু কথা বলি শোন’!!জীবনটা এমনি মানুষের লাইফে এমন 3rd person চলে আসলে এমনই হয়’!!আমার মতে লাবণ্য যেটা ভেবে নিয়েছে সেটা সঠিক’!!কারন দেখ (পিছন থেকে মাইশাকে জড়িয়ে ধরে)

“আমি তো তোকে ভালোবাসি’!!আর তুইও আমায়’!!তাই ও হলো 3rd person আমাদের লাইফের’!!আর তাই ওর উচিত নয় আমাদের লাইফে থেকে শুধু শুধু কষ্ট পাওয়ার’!!তাই ও যেটা করেছে সেটাই সঠিক’!!

———“কিন্তু…….

———“কোনো কিন্তু নয় ওর লাইফেও কেউ না কেউ আছে ডারলিং…..’!!আর সে ওর লাইফে খুব তাড়াতাড়ি চলে আসবে……’!!আর ওর আজ যে কষ্ট হচ্ছে কাল তা ঠিক হয়ে যাবে’!!সব ভুলে যাবে দেখিস……..!!আর ওর কথা এখন ভুলে আমাদের কথা ভাব……’!!চল খাবারগুলো তো মনে হয় ঠান্ডা হয়ে গেছে…..

———“আহ’!!দেখছো একদম ভুলেই গেছিলাম’!!চলো চলো……

“তারপর আমরা দুজন মিলে গিয়ে বসে খাবার খেতে শুরু করলাম’!!কাব্য আমায় খাইয়ে দিল আর আমি কাব্যকে…….

_____________________

~ “মাঝ খানে কেটে গেল দুদিন’!!এই দুদিন কেটে গেল খুব সুন্দর ভাবে’!!এখন কাব্যের সাথে কাটানো এক একটা মুহূর্তই খুব সুন্দর’!!এক কথায় বলতে গেলে আমি এখন কাব্যকে পাগলের মতো ভালোবাসি’!!আর কাব্যও আমাকে অসম্ভব রকম ভালোবাসে…….

“সূর্যের আলোতে ঘুমাচ্ছি আমি’!!এমন সময় কেউ খুব গভীর ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে তা আমি খুব ভালোভাবেই বুঝতে পারছি আর সেটা যে কাব্য ছাড়া আর কেউ নয় সেটাও আমি জানি’!!হুট করে কেউ কপালে চুমু দিয়ে দিল’!!হুট করে চোখ খুলে ফেললাম আমি’!!তারপর ক্ষিপ্ত মেজাজে বললামঃ

——–“এসব কি হচ্ছে ঘুমের মধ্যে আমার মান-সম্মানের ফালুদা কেন বানাচ্ছো!!

“আমার কথা শুনে কাব্য বলে উঠলঃ

——–“কি আমি তোর মান-সম্মানের ফালুদা বানাচ্ছি দাড়া তাইলে…..

“এই রে খাইছে জামাই আমার রেগে গেছে মনে হয়’!!হুট করে শোয়া থেকে বিছানার উপর উঠে দাঁড়ালাম আমি’!!তারপর চেঁচিয়ে বলে উঠলামঃ

———“এই না না আমি তো মজা করছিলাম,,তুমিও না সব কিছু সিরিয়াসলি নিয়ে নিচ্ছো…..

———“তাইলে তুই কেন বিছানা উপর উঠে দাঁড়ালি নাম নিচে……

———-“তুমি বকবে না তো…….

———“না তুই আমার দশটা না পাঁচ টা না একটা মাএ বউ তোকে কি আমি বকতে পারি…..

——–“সত্যি বলছো তো…….

———“হুম সত্যি বলছি……

——–“ঠিক আছে তুমি দূরে গিয়ে দাঁড়াও আমি ওয়াশরুমে যাবো…….

———“ঠিক আছে……এই বলে কাব্য কিছুটা দূরে সরে গেল’!!তার এইভাবে দূরে সরা দেখে আমিও চুপচাপ বিছানা থেকে নেমে দৌড়ে যাবো এমন সময় কাব্য আমার হাত ধরে টেনে তার বুকের ফেললো’!!

“আচমকা এমনটা হওয়াতে আমি পুরো ভ্যাবাচেকা খেয়ে গেলাম’!!তারপর কাব্যের মুখের দিকে তাকিয়ে বলে উঠলামঃ

———-“এটা ঠিক নয় তুমি কিন্তু বলেছিলে আমায় বকবে না…….

———“হুম বলেছিলাম তো বকবো না,,আদর তো করতেই পারি’!!

———-“হু এমন কিছু কিছু……

“কাব্য আমায় জড়িয়ে ধরে বললঃ

———-“হুম এমন কিছুই ম্যাম……..

———-“কিন্তু এখন যে আমায় যেতে হবে স্যার……

———–“তা তো আমায়ও যেতে হবে……

———“তাহলে আর কি যাও তাড়াতাড়ি’!!আর আমায়ও তো ভার্সিটি যেতে হবে’!!তাই ছাড়ো’!!

“কাব্য আর কিছু না বলে ছেড়ে দিলো আমায়’!!আমিও মুচকি হেঁসে গালে ছোট্ট একটা চুমু দিয়ে দৌড়’!!মাইশার কাজে হাসলো কাব্য’!মুখ থেকে অটোমেটিক বেরিয়ে আসল “পাগলী একটা”!!তারপর সেও তৈরি হতে লাগলো অফিসের জন্য…….

_____________________

“সকাল ১০টা……..
“কাব্য মাইশা আর তানিশাকে ভার্সিটি নামিয়ে দিয়ে চলে আসলো অফিসে…..

“বর্তমানে অফিসের কিছু কাজে ব্যস্ত সে’!!এমন সময় কাব্যের বাবা আসলো কাব্যের রুমে……
কাব্য তার বাবাকে দেখে বললোঃ

——–“আসো ভিতরে বসো…….

“কাব্যের বাবা হেঁসে বসলো চেয়ারে’!!তারপর বললোঃ

———“তোমার আর মাইশার মধ্যে সব মিল হয়ে গেছে দেখে ভালো লাগছে আমার’!!তবে তোমায় যে কিছু দিনের জন্য সিলেট যেতে হবে সেটা নিশ্চয়ই জানো তুমি…..

———“হুম কালকেই যাবো তুমি চিন্তা করো না……

———“হুম তা ঠিক আছে তবে তুমি চাইলে মাইশাকেও নিয়ে যেতে পারো…….

———-“ঠিক আছে বাবা’!!মনে মনে খুশি হলো কাব্য কারন সেও তো চাইছিল মাইশাকে নিয়ে যেতে….’!!অফিসের কিছু কাজের জন্য সিলেটে যেতে হবে কাব্যকে’!প্রথমে কিছুটা খারাপ লেগেছিল কাব্যের মাইশাকে ছাড়া থাকতে হবে কিন্তু এখন আর মন খারাপ নেই…..অসম্ভব খুশি কাব্য’!!

__________________________________________

_____________________

“রাত ৮ঃ০০টা………

“বিছানায় বসে আছি’!!এমন সময় তানিশা দৌড়ে রুমে আসলো’!!ওর এভাবে দৌঁড়ানো দেখে অবাক হয়ে বললাম আমিঃ

———“কি হলো গরুর মতো দৌড়াচ্ছিস কেন??

———“কি আমি গরু তুই গরু তোর জামাই এই না থুক্কু তোর জামাই তো আমার ভাই না তোর হইবে কিছু একটা সে গরু…….

———-“তোর জামাই গরু……!!যা গে ওসব বাদ কেন এভাবে দৌড়াচ্ছিস কেন???

———–“ওহ হা তোকে আম্মু ডাকছে…….

———“ও এই ব্যাপার চল তাহলে এই বলে শাড়ির কুঁচি ধরে আমি তানিশা চললাম নিচে…….

………….

“রান্না ঘরে কাজ করছিল মামুনি’!!আমিও গিয়ে খুশি মনে পিছন থেকে মামুনিকে জড়িয়ে ধরে বললামঃ

———“কি বলবে বলো মামুনি…..

———“চলে এসেছিস…….

——–“হুম তুমি ডাকবে আর আমি আসবো না…….

———-“তা তো আমি জানি,যাক ওসব বাদ যার জন্য তোকে ডেকেছি তাড়াতাড়ি জামা-কাপড় গুছিয়ে ফেল তোদের কালকে যেতে হবে…….

———-“কোথায় যাবো……

———-“সিলেটে…..

———-“কেন…..

———“কাব্যকে কিছু কাজের জন্য সিলেট যেতে হবে আর তাই তুই ও যাবি…….

———“আমি গিয়ে করবো……..

“এমন সময় তানিশা বলে উঠলোঃ

———“তুই গিয়ে রান্না করবি ঘর ঝাড়ু দিবি তারপর ভাইয়ার গা হাত পা টিপে দিবি……

———“কি আমি এসব করবো যামু না আমি’!!

“এমন সময় রান্নাঘরে বাহিরে দাঁড়িয়ে কাব্য বলে উঠলঃ

———“কোথায় যাবি না তুই…….

“আচমকা এমনটা হওয়াতে আমি ঘাবড়ে গিয়ে বললামঃ

———-“কই না তো কিছু না……

“তানিশা বলে উঠলঃ

————“ও তাই নাকি ভাবি……

———–“হপ মাইয়া তুই চুপ কর……

———-“ওর কথা একদম শুনবে না…….

“আমার কান্ডে হাসলো মামুনি……

“সাথে আমিও…..

_____________________

“সকালে তাড়াতাড়ি তৈরি হয়ে সবার কাছ থেকে বিদায় জানিয়ে বসে পরলাম গাড়িতে’!!আমরা বসতে কাব্য গাড়ি চালাতে শুরু করল’!!আমিও কাব্যকে জড়িয়ে ধরে চললাম নিজেদের গন্তব্যে….এখন আর নেই কোন সংকোচ আছে শুধু ভালোবাসা, ভালোবাসা আর শুধুই ভালোবাসা………
!
!
!
!
!#কতোটা_চাই_তোকে💖
#Writer:—#TanjiL_Mim💖
#part:—22
.
.
🍁
“বেশ কয়েক ঘন্টা পর গাড়ি এসে থামলো একটা বড় হোটেলের সামনে’!!আমি আর কাব্য নেমে সোজা চলে গেলাম হোটেলে’!!রুমে ঢুকে কাব্য চলে গেল ওয়াশরুমে’!!আর আমি পুরো রুমটায় চোখ বুলাতে লাগলাম’!!অসম্ভব সুন্দর দেখতে রুমটা’!!একটা খাট রয়েছে সামনে’!!সাদা রঙের তোশক বিছানায় শুতেই পুরো নরম বিছানা’!!কিছুক্ষন শুয়ে থেকে উঠলাম’!!হর্ঠাৎই চোখ গেল বেলকনির দিকে’!!আস্তে আস্তে বেলকনির দিকে গেলাম আমি’!!বেলকনি থেকে সামনে তাকাতেই চোখ অটোমেটিক হা হয়ে গেছে আমার’!!সামনে রয়েছে অসম্ভব সুন্দর রকম চা বাগান’!!আশেপাশের পরিবেশটা সত্যি খুব মনোরম কর’!!কম করে হলেও আমাদের বিল্ডিং এর পাঁচ তালার ওপরে দাঁড়িয়ে আছি’!!বাহিরের দৃশ্য যে এতোটা সুন্দর হবে জানা ছিল না আমার’!!তবে বিভিন্ন ফটো দেখে ছিলাম চা বাগানের কিন্তু বাস্তবে ফটো চেয়েও আরো বেশি সুন্দর’!!মুগ্ধ নয়নে তাকিয়ে আছি আমি বাহিরে’!!এমন সময় পিছন থেকে কাব্য জড়িয়ে ধরলো আমায়’!!আচমকা এমনটা হওয়াতে আমি পুরো কেঁপে উঠলাম পরক্ষণেই নিজেকে সামলে নিলাম’!!এমন সময় কাব্য বলে উঠলঃ

———“এখানে কি করছিস তুই…….

———“তেমন কিছু নয় ওই বাহিরে তাকিয়ে ছিলাম…….

———-“ওহহ……

———-“আচ্ছা আমরা ওইখানে ঘুরতে যাবো তো……(হাত দিয়ে দেখিয়ে)

———-“হুম নিশ্চিয়ই যাবো তবে এখন নয় পরে আর আমায় এখন যেতে হবে!!

———“ঠিক আছে তুমি গিয়ে তৈরি হও……

———“হুম তবে শোন একদম বাহিরে যাবি না,রুমের মধ্যে থাকবি বিকেলে আমি এসে ঘুরতে বের হবো ঠিক আছে……..

“বিনিময়ে আমি শুধু মাথা নাড়ালাম’!!

“তারপর কাব্য তৈরি হয়ে চলে গেল’!!আর আমিও দরজা বন্ধ করে নরম বিছানায় শুয়ে ঘুম……

__________________________________________

_____________________

“বিকেল ৫ঃ০০টা……..

“আমরা বের হলাম চা বাগান দেখার উদ্দেশ্যে!!ইয়া বড় বড় রাস্তা পেরিয়ে হেঁটে চলেছি আমি’ আর কাব্য’!!,, পাহাড়ি রাস্তাগুলোকে ঘিরে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের গাছ পালা”!!হর্ঠাৎই চোখ গেল সামনে থাকা কিছু মহিলাদের দিকে’!!সম্ভবত তারা এখন বাড়ির ফেরার উদ্দেশ্যে রওনা দিবে’!!তাদের দেখে বুঝতে পেরেছি এতক্ষণ তারা চা বাগানে চা সংগ্রহের কাজ করছিল এখন হয়তো বাড়ি ফিরবে’!!হয়তো আমাদের এখানে আসতে দেরি হয়ে গেছে’!!এটা হয়েছে শুধু মাএ কাব্যের জন্য কাজ সেরে ফিরতেই দেরি করেছে সে!!এমন সময় কাব্য বলে উঠলঃ

———–“এই জন্য বলে ছিলাম কাল আসি,এখন এখানে সবাই ফিরে যাবে আর সন্ধ্যাও হয়ে আসবে’!!জায়গাটার চারপাশে গাছ পালায় ভরে যাওয়ার কারনেই খুব তাড়াতাড়ি রাত হয়ে যায় এখানে’!!

“একরাশ মন খারাপ নিয়ে বাড়ি ফেরার উদ্দেশ্য চললাম আমরা’!!ধুর শুধু শুধু আসলাম এখানে ভেবেছিলাম এতো এতো ছবি তুলবো কিছুই হলো না’!!অন্ধকারে ছবি ভালো হয় না-কি…….

“এমন সময় কাব্য বলে উঠলঃ

———-“মন খারাপ করিস না কালকে আলো থাকতেই আসবো আমরা এখানে……

“মন খারাপ নিয়েই বলে উঠলামঃ

———-“ঠিক আছে…….

“তারপর আর কি আমরা আবার বেক করলাম হোটেলে যাওয়ার উদ্দেশ্যে’!!আমাদের সাথে ছিল আমাদের হোটেলের ম্যানেজার’!উনিও বলে ছিল এখন না আসতে কিন্তু আমি শুনলাম না ‘!!এখন মনে হচ্ছে না শুনে ভুলই করেছিলাম’!!

“বেশকিছুক্ষন পর আমরা চলে আসলাম হোটেলে’!!হাঁটতে হাঁটতে পা ব্যাথা হয়ে গেল কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হলো না’!!

“একরাশ মন খারাপ নিয়ে মাইশা চলে গেল ওয়াশরুমে’!!আর কাব্যও কিছু না ভেবে বসে পরলো বিছানায়’!!

_____________________

“রাতে……….

“শাওয়ার নিয়ে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে আছে মাইশা’!!চুল থেকে তার টপ টপ করে পানি পরছে’!!বিকেলে ঘুরাঘুরি করার জন্য প্রচুর ক্লান্ত লাগছিল মাইশার’!!তাই কোনো কিছু না ভেবেই শাওয়ার নিয়েছে সে’!!এখন ফ্রেশ লাগছে তার’!!এই মুহূর্তে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে চুল মুছতে ব্যস্ত সে’!!

.

“এদিকে কাব্য বিছানায় বসে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে মাইশার দিকে’!!অদ্ভুত এক অনুভূতি বয়ে চলেছে তার ভিতর’!!কাব্য তার ল্যাপটপ টা টেবিলে উপর রেখে চলে যায় মাইশার সামনে’!!তারপর পিছন থেকে জড়িয়ে ধরে মাইশার চুলের ভিতর মুখ ডুবিয়ে দেয় কাব্য’!!

.

“আচমকা এমনটা হওয়াতে মাইশা পুরো কেঁপে উঠল’!!পরক্ষণেই আয়নায় কাব্যকে দেখে হাসলো সে’!!

———“তুই কি শ্যাম্পু ইউস করিস বলতো যার গন্ধে আমি পুরো পাগল হয়ে যাই’!!

“কাব্যের এমন কথা শুনে হাসলো মাইশা তারপর বলে উঠলঃ

———-”তুমি যে শ্যাম্পু কিনে দিয়েছো সেটাই তো……

———-“এত রাতে শাওয়ার নিয়েছিস কেন??

———-“এমনি ক্লান্ত লাগছিল অনেক্ক্ষণ যাবৎ ভাবছিলাম গোসল করবো তাই…….

———“উহু!!এই কাব্য মাইশার ঘাড়ে চুমু দেয়’!!সাথে মাইশা পুরো কেঁপে উঠল’!! হুট করে কাব্য মাইশাকে কোলে তুলে নেয়’!!

“আচমকা এমনটা হওয়াতে মাইশা ঘাবড়ে গিয়ে বললোঃ

———-“এসব কি করছো তুমি’!!

“এতরাতে শাওয়ার নিয়ে আমায় পাগল বানিয়ে এখন বলা হচ্ছে এসব কি করছো……

“কাব্যের কথার আগা মাথা কিছু না বুঝে মাইশা বলে উঠলঃ

———“মানে…….

——–“বুঝাচ্ছি চল…..

“এই বলে মাইশাকে কোলে তুলে নিয়ে লাইট অফ করে শুয়ে পড়ে কাব্য……’!!তারপর দুজনেই ডুবে যায় ভালো বাসার সাগরে………

__________________________________________

_____________________

“সকালে……….

“আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে ধরে ঘুমিয়ে আছে কাব্য মাইশাকে’!!আস্তে আস্তে ঘুম ভাঙল মাইশার’!!কাল রাতের কথা মনে করে হাসলো মাইশা’!!তারপর কাব্যকে ছাড়িয়ে চলে গেল ওয়াশরুমে……..
.
.
.
.
.
.
🌼
“মাঝখানে কেটে গেল দুদিন’!!এই দুইদিন মাইশার আর চা বাগানে ঘোরা হলো না’!!কারন কাব্যের কাজের চাপ এতটাই ছিল যে একদিনও তাড়াতাড়ি ফিরতে পারি নি’!!এ জন্য মাইশা অবশ্য প্রতিদিনই রাগ করতো’!!আর কাব্য এসে প্রতিদিন মাইশার রাগ ভাঙাতো……..

“আজকে আর কোনো প্রবলেম নেই কাব্যের ঘুরতে যেতে’!!কারন কালকেই কাব্যের কাজ শেষ হয়েছে এখানের’!!আর দুদিন পরেই ফিরে যাবে তারা……

“আর এই দুদিন শুধু মাইশাকে ঘুরাঘুরি করবে বলে প্রমিজ করেছে কাব্য…….

“তাই মাইশা আজকে খুব খুশি’!!আজকে মাইশা একটা মেরুন রঙের চুড়িদার পড়েছে সাথে চুলগুলো বিনুনি করে এক পাশে রেখে দিয়েছে’!!চোখে কাজল,ঠোঁটে লিপস্টিক মুখে হালকা মেকাপ ব্যাস মাইশা তৈরি’!!আর কাব্য আজকে পরেছে সুন্দর একটা টি-শার্ট সাথে জিন্স টি-শার্টের হাতা কনুই পর্যন্ত ভোল্ট করা তার,হাতে ব্লাক ঘড়ি,আর বরাবরের মতো চুল গুলো খুব সুন্দর করে সাজানো,ব্যাস কাব্য তৈরি’!!

“আজকে আর ওরা ওদের সাথে ম্যানেজারকে নিবে না একাই ঘুরতে যাবে!

“সারাদিন ঘুরাঘুরি, প্রচুর সেলফি আর খাওয়াদাওয়ার মাধ্যমে আজকের মতো দিনটা শেষ হলো কাব্যের আর মাইশার…….

__________________________________________

_____________________

“দেখতে দেখতে কেটে গেল কয়েক মাস’!!খুনশুটি আর ভালোবাসার মাধ্যমে কাটছে মাইশা কাব্যের জীবন’!!এখন রোজ রাতে কাব্য মাইশাকে পড়াশোনা করায়’!!আর মাইশা প্রতিদিন পরতে পরতে ঘুমিয়ে পড়ে’!!কিছুদিন পর মাইশার পরীক্ষা ‘!!তাই আর এই রোজ কারের ডিউটিতে এখন অভ্যস্ত মাইশা কাব্য দুজনেই……!!আর কাব্যের মূল উদ্দেশ্য হলো মাইশাকে পড়াশোনায় ভালো রেজাল্ট করানো’!!এই মেয়েটা একদম পড়াশোনায় কানচোরা…..তাই কাব্যই পড়াশোনার দায়িত্ব নিয়েছে……

…….

——-“টেবিলে বসে ঝিমাচ্ছি আমি’!!ধুর এই প্রতিদিন পড়াশোনা আর ভালো লাগছে না আমার’!!এই রকম জামাই থাকতে আর কি লাগে আমার’!!এমন জামাই আর লাগবে না আমার প্রতিদিন শুরু পড়ায় ধুর একটুও ভালোবাসে না’!!এই বলে নেকা কান্না শুরু করেদিয়েছি আমি…..

“এদিকে আমার কান্না শুনে কাব্য হাতের লাঠি টা নিয়ে বারি মারলো টেবিলে উপর কাব্য’!!তারপর বলে উঠলঃ

———-“যতই কান্না করো না কেন জানেমন কাজ হবে না’!!কাব্যের বউ হয়ে যদি ভালো রেজাল্ট না করো তাহলে কি হবে তোমার ভাবতে পারছো……..

———-“আমার লাগবে না তোমার বউ হওয়া,,খালি বকে………

———“তুই সত্যি আমার বউ হবি না……,এই বলে আবারো লাঠিটা নিয়ে মারলো টেবিলের উপর……

“সাথে সাথে আমি কেঁপে উঠলাম তারপর বললামঃ

———-“ধুর পাগল জামাই মজা বুঝে না,তোমায় ছেড়ে কোথায় যাবো আমি……

“এই বলে ন্যাকা কান্না করতে করতে পড়াশোনা করতে লাগলাম আমি’!!আর কাব্য চুপ করে হাতে লাঠি নিয়ে বসে রইল……

——–“এ্যা এ্যা আমি খেলুম না কাক্কু জামাই আমার একটু ভালো না…..🥺🥺

———“আবার……

——–“না না পড়ছি তো……
!
!
!
!
!
!
!
!
!
#চলবে………..

❤️❤️❤️[

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here