কলঙ্কের ফুল পর্ব ১০

#কলঙ্কের_ফুল
#পর্ব_১০
#Saji_Afroz
.
.
.
নাহ কাউকে দিবেনা ফোন সে।
যে বাবা তার মতের বিরুদ্ধে গিয়ে এমন একটা পাত্রের সাথে বিয়ে করিয়ে দিতে চায় সে বাবার সাথে আর কি কথা বলবে সে!
আর রাজীব?….
হাজারো স্বপ্ন দেখিয়ে অসময়ে কাছে না টেনে দূরে সরিয়ে দিয়েছে যে, সেই রাজীবের সাথে কোন আশায় কথা বলবে সে!
কারো সাথেই কথা বলবেনা সে। কারো সাথেই না। যাদের কথা এভাবে ভাবছে তারা হয়তো সে পালিয়ে যাওয়াই হাফ ছেড়ে বেঁচেছে।
কি দরকার? কি দরকার আবারো অপমানিত হওয়ার? তার চেয়ে কষ্ট বুকের মাঝে রেখে, স্মৃতি আঁকড়ে ধরে বাকি জীবন পার করে দেওয়াটাই শ্রেয়।
.
মেহেরীকা পায়চারি করছে সারারুমে। ভালো লাগছেনা তার কিছুই। কি করবে ভেবেও পাচ্ছেনা।
হঠাৎ চোখ যায় তার রুমে রাখা বুক সেলফ-টার উপর। এগিয়ে গিয়ে সেখান থেকে একটি বই নেয় মেহেরীকা, ভগওয়ান এস গিডওয়ানীর
লেখা ‘দি সোর্ড অব টিপু সুলতান’। সময় কাটানোর জন্য বই পড়ার চেয়ে ভালো কাজ আর হতেই পারেনা। খুশি মনে বই এর পাতা উল্টাতেই প্রথম পাতায় লেখা দেখে সে-
শুভ জন্মদিন আদিয়াত চৌধুরী।
.
আদিয়াত? আদিয়াত কে? আদি নয়তো? কিন্তু সেতো বলেছিলো তার নাম আদি চৌধুরী। মেহেরীকা নামটা খুব বড়। ছোট নাম সুন্দর।
.
তার মানে মিথ্যে বলেছিলো আদি?
মেহেরীকাকে মেহের ডাকার জন্য?
.
এসব ভেবে আনমনে হেসে চলেছে মেহেরীকা।
কিন্তু তার কাছে আদির চেয়েও আদিয়াত নামটাই বেশি ভালো লেগেছে। হোক না বড়। সে তাকে আদিয়াত বলেই ডাকবে।
.
-ছোট ভাবী?
.
দিবার ডাকে মেহেরীকা পেছনে তাকাতেই দিবা বললো-
আমার সাথে নিচে চলো। সানিয়ার বাবা এসেছে।
.
.
.
ড্রয়িংরুমে বসে আছেন এরশাদ মাহমুদ, আমজাদ চৌধুরী, সালেহা চৌধুরী, মিলি, সানিয়া, আদি।
.
দিবার সাথে মেহেরীকা তাদের দিকে এগিয়ে আসতেই সানিয়া বলে উঠে-
আব্বু এই মেয়েটা নাকি আদির বউ।
.
এরশাদ মাহমুদ কিছুক্ষণ মেহেরীকার দিকে তাকিয়ে প্রশ্ন করেন-
কবে থেকে চিনো আদিকে?
-২বছর।
-২বছরের পরিচয়ে কি মনেহয় তোমার? তুমি আদিকে ভালো রাখার মতো যোগ্যতা অর্জন করেছো? আমার মেয়ে সানিয়া ছোট থেকেই দেখে আসছে আদিকে। তার চেয়ে বেশি আদিকে কেউ ভালো রাখতে পারবেনা।
আদিরও সেটা বুঝা উচিত।
-আপনারা কি সবাই দীর্ঘদিন যাবৎ পরিচিত মহিলাকেই বিয়ে করেছেন?
.
মেহেরীকা এমন উল্টো একটা প্রশ্ন করে বসবে বুঝতে পারেনি কেউ।
এরশাদ মাহমুদ মুখে বিরক্তি নিয়ে বলেন-
মানে?
-কেনো এখুনি বললেন যে সানিয়া আমার চেয়েও বেশিদিন ধরে আদিকে চিনে। তাই বেশি ভালো রাখতে পারবে আদিকে। তাই আমি জানতে চাইছিলাম আপনি আর আদির বাবা কি ছোট বেলার পরিচিত মেয়েকেই বিয়ে করেছেন বেশি ভালো থাকার জন্য?
.
মেহেরীকার কথা শুনে সালেহা চৌধুরী অবাক হয়ে যান। সুন্দরীর সাথে সাথে এই মেয়ে সাহসী আর বুদ্ধিমতীও! নাহলে নতুন বউ হয়ে কারো মুখের উপর এভাবে জবাব দিতে পারে?
.
মুচকি হেসে মেহেরীকার উদ্দেশ্যে সালেহা চৌধুরী বলেন-
না মা আমি তোমার শ্বশুড়ের পরিচিত ছিলাম না। একবারই দেখা হয় আমার সাথে। আর আমি যতটুকু জানি এরশাদ ভাইয়ের ও পরিচিত কারো সাথে বিয়ে হয়নি।
-হুম। পরিচিত কারো সাথে বিয়ে হলেই যে বেশি ভালো থাকবে এমন কোনো কথা নেই।
তাছাড়া আদিয়াত এর ভালো থাকা যদি আমার উপর নির্ভর করে এতে কারো খারাপ লাগার কিছু আছে বলে মনে করিনা আমি।
.
আদিয়াত! এই নাম মেহের কি করে জানলো? নিশ্চয় দিবার কাছ থেকে শুনেছে। ধ্যাত কতো গর্ব সহকারে বলেছিলো সে, তার নামটা ছোট। শুধুমাত্র মেহেরীকাকে মেহের ডাকার জন্য এই মিথ্যে বলেছিলো সে। এখন তার বড় নামটা জেনে ফেলেছে মেহেরীকা। এটা কিছু হলো!
.
-এই যে? আমি ঠিক বলেছিনা?
.
মেহেরীকার প্রশ্নে মাথা নেড়ে জবাব দেয় আদি-
হুম।
.
এদিকে রাগে ফুঁসতে থাকে সানিয়া। যদি মেহেরীকাকেই বিয়ে করবে তাহলে তাকে কেনো আশ্বাস দেওয়া হয়েছে! এতো বড় অপমান মেনে নেওয়া যায়না, কিছুতেই না। তবে আপাতত মাথা ঠাণ্ডা রাখতে হবে। হুটহাট কিছু করা ঠিক হবেনা।
.
নিজের রাগ সংযত করে সানিয়া তার বাবার উদ্দেশ্যে বলে-
আব্বু বাদ দাও। চলো এখন এখান থেকে।
.
আমজাদ চৌধুরী সানিয়ার উদ্দেশ্যে বলেন-
আমি জানি মা তুমি কষ্ট পেয়েছো।
-সানিয়া এতো সহজে কষ্ট পায়না আঙ্কেল। যাক আপনি এতো ভাববেন না। যেটা সানিয়ার সেটা সানিয়ার থাকবে। এখন আর কিছু বলার ইচ্ছে নেই আমার।
.
বাবার দিকে তাকিয়ে সানিয়া আরো বলে-
আব্বু আমি গাড়িতে গিয়ে বসছি, তুমি আসো।
.
সোফা ছেড়ে উঠে হনহন করে সানিয়া বেরিয়ে যায় চৌধুরী বাড়ি থেকে।
.
আমজাদ চৌধুরীর উদ্দেশ্যে এরশাদ মাহমুদ বলেন-
আমি আসি তাহলে।
-আমি খুবই দুঃখিত এরশাদ।
-যা হয়েছে তাতে তোর কোনো হাত নেই আমি জানি আমজাদ।
-তবুও…
-আজ আসি। সানিয়া অপেক্ষা করছে।
.
.
.
রাত ১১টা….
রাতের খাবার শেষে সবাই যে যার রুমে গেলেও আদি এখনো যায়নি। সানিয়া বাসা থেকে যাওয়ার পরে মেহেরীকার সাথে আদির এখনো কথা হয়নি। নিজের নাম নিয়ে মিথ্যে বলার কারণে মেহেরীকার মুখোমুখি হতেও তার লজ্জা করছে।
.
এদিকে আদি না আসায় মেহেরীকা শুতে পারছেনা। সে কোথায় কিভাবে শোবে বুঝতেই পারছেনা।
কি করছে টা কি আদিয়াত? সানিয়া চলে গিয়েছে দরকার শেষ হয়ে গিয়েছে? একটা মেয়েকে অপরিচিত বাসায় এনে এভাবে একা ফেলে রাখার কোনো মানে হয়! হোক না সে তার নকল বউ।
রাগে ফুঁসতে ফুঁসতে মেহেরীকা বিছানায় গিয়ে শুয়ে পড়ে। আদিয়াত জাহান্নামে হলেও থাক, তার কি!
.
.
.
সারাদিন নানান ঝামেলায় দিবা তার পিকুর সাথে ভালো করে কথা বলার সুযোগ পায়নি।
তাই এখন নিজের রুমে ঢুকেই দরজা বন্ধ করে মোবাইল হাতে নিয়ে কল দেয় পিকুকে।
.
-হ্যালো পিকু?
-এতোক্ষণে আমার কথা মনে হলো?
-আর বলোনা বাসায় এতো ঝামেলা।
-কি ঝামেলা?
-ছোট ভাইয়া তার গফ কে বিয়ে করে বাসায় নিয়ে এসেছে।
-বলো কি! মেনেছে তোমার বাসায়?
-এসব নিয়েই ঝামেলা আর কি। বাবা মানেনি কিন্তু মায়ের জন্য কিছু করতে পারছেন না।
-আচ্ছা তাই! তাহলে তোমার মা আমাদেরও মেনে নিবেন। বাবা না মানলেও এভাবে সাহায্য করবেন।
-না মানার কি আছে পিকু! মা বাবার একমাত্র আদরের ছেলে তুমি। সবদিক দিয়ে ঠিক আছো তোমরা। অবশ্যই মেনে নিবেন সকলে।
-তাই যেনো হয়। তোমাকে ছাড়া চলাটা কষ্ট হবে আমার।
-আমাকে ছাড়া তোমায় কেউ চলতে বলছেনা।
-হুম। কাল কলেজে যাবা? দেখতে ইচ্ছে করছে তোমায়।
-আজ না দেখলে?
-আমার বউ আমি দেখবো, তোমার কি সমস্যা?
-বউ! কি করে হলাম?
-এই আকাশ, বাতাস সব সাক্ষী রেখে….
.
পিকুর কথা শুনে উচ্চশব্দে হেসে উঠে দিবা।
.
-হাসলা কেনো দিবা?
-বাংলা সিনেমার ডায়ালগ কেনো দিচ্ছো তুমি!
-ওহ বাংলা সিনেমার হয়ে গিয়েছে?
-জ্বী হ্যাঁ।
-আচ্ছা যাও নিজের মতোই বলি। আজ না হয় কাল বিয়েতো হবেই আমাদের, তাছাড়া আমিতো মন থেকে তোমাকে বউ মনেই করি। আর তাই বউ বলে ডাকতে বেশি ভালো লাগে আমার।
.
পিকুর কথা শুনে খুশিতে দিবার চোখে পানি চলে আসে। হাতের আঙুল দিয়ে চোখের কোণে জমে থাকা পানি মুছে বলে-
এই পিকু বদলে যেওনা কখনো, এমন থাকলে জানটাও দিতে পারবো।
.
.
.
সারাদিনে আরিফকে কাছে পেয়েছে এখন মিলি। তাও আরিফ মিলির সাথে কথা বলে চোখ বন্ধ করে ঘুমানোর চেষ্টা করছে।
-আরিফ? ঘুমিয়ে গিয়েছো?
.
ঘুম ঘুম চোখে আরিফ জবাব দেয়-
নাহ।
.
আরিফের বুকের উপর মিলি মাথা রেখে বলে-
বাসায় এতো ঝামেলা চলেছে আজ। তাড়াতাড়ি আসতে বলেছিলাম তোমায়। আসোনি তুমি।
-অফিসে অনেক কাজ থাকে মিলি।
-কাজ প্রতিদিন থাকে তোমার। আমার সাথে একটু সময় কাটাও না। নিজ থেকে প্রপোজ করেছিলাম বলে দাম দাওনা বুঝি?
.
সারাদিন অফিসের কাজে ব্যস্ত থেকে বাসায় এসে একটু শান্তিতে থাকবে সেই সুযোগও সে পায়না মিলির জন্য।
প্রতিদিন প্রতিদিন এক কথা শুনতে শুনতে অতিষ্ঠ সে। কিন্তু মিলি যে মেয়ে তাকে কিছু বলাও যাবেনা এখন। উল্টা কিছু বললে এই রাতে কেঁদে কেঁদে সবাইকে জানাতে যাবে সে।
ছোট্ট একটা নিঃশ্বাস ফেলে আরিফ বলে-
মিলি আমার ঘুম এসেছে প্রচুর।
.
মিলি নিজের মাথা আরিফের বুক থেকে উঠিয়ে বালিশে রেখে উল্টো দিকে মুখ ঘুরিয়ে শুয়ে পড়ে। আরেকটা রাত নির্ঘুম কাটবে মিলির আগের কথা ভেবে ভেবে। যে দিনগুলো পার করে এসেছে আদৌ কি সেগুলো ফিরে পাওয়া যাবেনা? ভালোবাসার মানুষটাকে আপন করে পেয়েও যেনো পেলোনা সে।
.
.
.
বিছানায় শুয়ে আছে মুনিয়া।
মেহেরীকার কথা বড্ড মনে পড়ছে তার। কোথায় হারিয়ে গেলো তার বোনটা!
সে কি পুলিশের সাহায্য নিবে? কিন্তু তার মা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, এসব পুলিশ টুলিশের ঝামেলা না করার জন্য। কিন্তু এভাবে খোঁজ না নিয়ে বসে থাকারও মানে হয়না। হয়তো তার বোন পাশে কোথাও আছে। অভিমান করে বসে আছে সে। হুম তাই হবে। কিচ্ছু হয়নি মেহেরীকার। সুস্থ আছে সে, ভালো আছে সে।
এসব ভেবে নিজের মনকে শান্তনা দিয়ে চোখ জোড়া বন্ধ করে মুনিয়া ঘুমানোর চেষ্টা করে।
.
.
.
ছাদের রেলিং এর উপর পা ঝুলিয়ে বসে আছে সানিয়া। আজ তার নিজের জীবন এর জন্য ভয়, ভুত এর ভয় কিছুই লাগছেনা। শুধুমাত্র আদিকে হারানোর ভয় পাচ্ছে সে। আচ্ছা আদিতো বিয়ে করে ফেলেছে, তাহলে তাকে কি সে হারিয়ে ফেলেছে? নাহ কিছুতেই না। বিয়ে করেছে কি হয়েছে! ডির্ভোস নামক একটা বিষয় আছে সেটাও মাথায় রাখতে হবে। হুম আদি আর মেহেরীকার ডির্ভোস করিয়েই ছাড়বে সে। কিন্তু কিভাবে! খুব তাড়াতাড়ি বুদ্ধি, নাহ কুবুদ্ধি বের করতে হবে।
আদি আমার, আদি আমার,, আপনমনে বিড়বিড় করে পা দুটো নেড়েই চলেছে সানিয়া।
.
.
.
ঘড়িতে সময় রাত ১২.৩০টা।
এতোক্ষণে নিশ্চয় ঘুমিয়ে পড়েছে মেহের। অবশ্য সেতো শোয়ার সাথে সাথেই ঘুমিয়ে পড়ে। আনমনে এসব ভেবে পা টিপে টিপে আদি নিজের রুমে ঢুকে দরজা লাগিয়ে দেয়।
বিছানার পাশে যেতেই মেহেরীকাকে ঘুমন্ত অবস্থায় দেখতে পায় সে।
আবার সেই ঘুমন্ত পরী…. এতো বেশি মায়াবী লাগে কেনো তাকে ঘুমন্ত অবস্থায়? ঘুমিয়ে সে কি পরীদের রাজ্যে ভ্রমণ করতে যায়? যার কারণে তার মুখটা আনন্দে চিকচিক করে? হবে হয়তো।
নাহ আর বেশিক্ষণ তাকানো যাবেনা। নাহলে….
মাথায় কোনো উল্টা পাল্টা ভাবনা না এনে লাইট অফ করে আদি বিছানা থেকে একটা বালিশ নিয়ে শুয়ে পড়ে সোফার উপর।
.
.
-এই যে? উঠো।
.
মেহেরীকার ডাক আদির কান পর্যন্ত পৌঁছালেও চোখ জোড়া খুলতে তার একদম ইচ্ছে করছেনা।
গলার স্বরে বিরক্তি ভাব এনে বললো আদি-
উঠবো না আমি।
-উঠবে না! তোমার বাবাকে বলতে যাচ্ছি, আমি তোমার নকল বউ…
.
কথাটি শুনেই আড়মোড়া ভেঙ্গে আদি উঠে বসে। ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখে সকাল ৫.০০ টা।
করুণ দৃষ্টিতে মেহেরীকার দিকে তাকিয়ে আদি বললো-
এতো ভোরে কেনো ডাকলে আমায়? আমি এতো ভোর সকালে উঠিনা।
-আচ্ছা! কখন উঠো?
-সকাল ৭টাই। তাও বাবার ভয়ে। সবার সাথে বসে নাস্তা সারতে হয়। নাস্তা খেয়ে এসে আবার ঘুম দেয়। তারপর উঠতে ১০/১১ টা বেজেই যায়।
-এখন থেকে সকাল ৫টাই উঠতে হবে। আবার ঘুমালে ঘুমোবে।
-মানে কি?
-মানে নামাজ পড়তে হবে ফযরের। শুধু ফযরের কেনো! ৫ ওয়াক্ত নামাজ পড়তে হবে।
-মেহের! আমি ঘুমোবো তুমি পড়ো!
-আল্লাহ্‌…. ছিঃ! এইরকম বলেনা। ভালোনা তুমি? উঠো।
.
মেহেরীকার দিকে তাকিয়ে মৃদু হেসে আদি বলে-
এভাবে বললে না উঠে কি পারি?
-হুম গুড। এবার তাড়াতাড়ি মসজিদে যাও।
-এখন!
-হুম এখন যেতে হবে।
-এখানে….
-নাহ, এখানে পড়লে হবেনা। যাবা নাকি বাবাকে….
-আরে তুই বাপ চুপ কর, যাচ্ছি আমি।
-গুড। কতদূর মসজিদ?
-২মিনিট লাগবে।
-তাহলেতো ভালোই।
.
আদি উঠে ড্রয়ার খুলে পাঞ্জাবি নিয়ে ওয়াশরুমের দিকে যায়।
এদিকে মেহেরীকা মুখ টিপে হাসতে থাকে।
.
২মিনিট পর আদি ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে মেহেরীকার উদ্দেশ্যে বলে-
যাচ্ছি তাহলে।
-একটা কথা ছিলো।
-বলো।
-সানিয়াতো কিছু বলেনি আর। আমার কি কাজ শেষ?
-আমি যতদূর সানিয়াকে চিনি এতো সহজে হার মানবেনা সে। কিছুদিন অপেক্ষা করো।
-ঠিক আছে।
.
.
.
সকাল ৭টা……
সবাই ডাইনিং টেবিলে আসলেও মেহেরীকা আসেনি।
আমজাদ চৌধুরী, আদির দিকে তাকিয়ে প্রশ্ন ছুড়ে-
তোমার বউ কে আমাদের বাসার নিয়ম বলোনি?
-বলেছি। সে উঠেছে। তুমি যদি মাইন্ড করো তাই আসেনি।
.
হো হো করে হেসে উঠেন আমজাদ চৌধুরী।
উপস্থিত সবাই অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছেন তার দিকে।
হাসি থামিয়ে তিনি বলেন-
না জানিয়ে বিয়ে করে চলে এসেছে আর নাস্তা করতে আসতে আমার কথা চিন্তা করছে। অদ্ভুদ কাণ্ডকারখানা!
.
সালেহা চৌধুরী স্বামীর কথা শুনে বলে উঠেন-
আহ তুমি থামোতো! নতুন বউ একটু লজ্জা পাবে স্বাভাবিক। সবার খাওয়া হলে আমি গিয়ে দিয়ে আসবো।
.
মিলি হেসে বলে-
আমি আছিতো মা! আমি দিয়ে আসবো, সমস্যা নেই।
.
হঠাৎ কলিং বেল এর শব্দ পায় সকলে।
.
মিলি আবার বলে উঠে-
এতো সকালে কে আসতে পারে!
.
আমজাদ চৌধুরী বিরক্তি মুখে বলেন-
সেটা দরজা খুললেই বুঝা যাবে।
-আমি খুলছি।
.
মিলি এগিয়ে গিয়ে সদর দরজা খুলেই চমকে যায়।
সে দেখতে পায়, সানিয়া দাঁড়িয়ে রয়েছে লাগেজ হাতে নিয়ে।
-এতো সকালে তুমি সানিয়া?
.
(চলবে)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here