#কাছে_দূরে♥️🥀
#moumita_mehra
#পর্ব-০২
ড্রয়ারটা খুলে হাতের পার্সটা রাখতেই পাশের সচ্ছ আয়নায় চোখ পড়ল হীরের। গালের ডান পাশটায় তিনটে আঙ্গুলের ছাপ পড়ে আছে। বুকের ভেতরটা মোচড় দিয়ে উঠল। রাগে চোখ দুটো লালচে হয়ে উঠল। ফফি-শপের ছেলেটার দুঃস্বাহসিক কান্ডটি আরও একবার চোখের সামনে ভেসে উঠল! ছেলেটি কে ছিলো? আর ভরা কফিশপে এত লোকজনের মাঝে তাকেই কেন টার্গেট করে চড় মারল? মাথার মধ্যে কতশত প্রশ্নরা হানা দিয়ে চলেছে! কিন্তু উত্তর একটারও নেই। হীর গালের উপর পরে থাকা অবাধ্য চুল গুলোকে কানের পাশে গুঁজে দিতেই আরও স্পষ্ট হয়ে ধরা দিলো আঙ্গুলের তিনটা দাগ। রাগ আর প্রতিহিংসা আরও এক দফা জাতাঁকলে পিষ্ট করল হীরকে। গালে হাত ছোঁয়াতেই ছ্যাঁত করে জ্বলে উঠলো জায়গাটা। হীর হাত নামিয়ে নিলো। আয়নার মাঝে নিজেকে ভালো করে দেখতে লাগল সে। তার মনে হচ্ছে সে নিজেকে চিনতে পারছে না। হীর কখনও কারোর গরম চাহনি অব্দি সহ্য করেনা সেখানে আজ সে একজন অপরিচিত ছেলের হাতে চড় খেয়ে বাসায় চলে আসল। এটাকে কি পালিয়ে আসা বলে না? তাহলে কি সে চোরের মতো পালিয়ে এসেছে? ভয় পেয়ে? হীর ভয় পেতেও জানে? কই আগে তো কখনও তার চোখে ভয় দেখা যায়নি! কেবল ক্ষোভ দেখা গিয়েছে! তবে আজ কেন সে ভয় পাচ্ছে? সে ভয় তো কেবল একজনকেই পায়! কেবল একজনকে! আর কাউকে নয়।
হীর নিজেকে সংযত রাখতে পারল না। আয়নার সামনে যা পেলো উলটপালট করে ছুঁড়ে মারল। রাগে থরথর করে কাঁপছে সে। নিজের বোকামোর জন্য নিজেকেই ঠাটিয়ে চড় বসাতে ইচ্ছে করছে। কেন কিছু বলল না সে ছেলেটা কে! কেন?
অর্ধেক খোলা ড্রয়টা হঠাৎই ভাইব্রেট করতে লাগল। হীরের ভাবনায় ব্যাঘাত ঘটিয়ে পার্সের ভেতর থেকে ফোনটা অসহায়ের মতো পরে পরে বাজতে লাগল। হীরের ইচ্ছে করল না ফোনটা বের করে দেখতে। তবুও সে বের করল। রাগ কমানোর তীব্র প্রচেষ্টা চালিয়ে বড় করে নিঃশ্বাস ছাড়লো। অতঃপর শান্ত কন্ঠে ফোনের ওপাশের ব্যাক্তিটির উদ্দেশ্য বলল,
—-” আদ্র, বল?”
—-” দোস্ত! তুই ঠিকাছিস?”
—-” আমার আবার কি হবে?”
—-” না মানে! আজ কফি-শপে যা হ,,লো…”
—-” তুই কি আমাকে শান্ত্বনা দিতে…”
আদ্র হীরের কথা থামিয়ে দিয়ে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে বলল,
—-” আমি তোকে শান্ত্বনা দিবো তা তুই ভাবলি কি করে? আসলে একটা নিউজ দেওয়ার জন্য তোকে কল দিয়েছি।”
—-” বলে ফেল!”
—-” কফি-শপটায় কারা যেন বোম ব্লাস্ট করেছে। আমরা বেরিয়ে আসার ঠিক এক মিনিট চুয়াল্লিশ সেকেন্ডের মাথায় পুরো কফিশপ কয়লায় পরিনত হয়েছে।”
নিউজটা আদ্র বেশ স্বাভাবিক গলায় বললেও হীর স্বাভাবিক ভাবে হজম করতে পারল না। মনে হলো যেন কেউ তাকে স্ব-জোরে ধাক্কা মেরেছে। ভেতরটা ধক করে উঠল হীরের। আদ্র আরও কিছু বলল কিন্তু হীরের কান অব্দি পৌঁছল না। হীর ফোনটা ফেলে দৌড়ে গেলো নীচে। টিভিতে নিউজ চলছে। ঘুরিয়ে ফিরিয়ে কফিশপটাকে দেখানো হচ্ছে। হীরের মনে পরে গেলো সেখানে কতগুলো মানুষ ছিলো! একটা ছোট্ট বাচ্চা আর তার বাবা ছিলো। এক বৃদ্ধ লোক ছিলেন। চার বান্ধবীরা একসাথে আড্ডা দিতে দিতে কফি খাচ্ছিলো। কফিশপে পা রাখতে রাখতে হীর চারপাশটা তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে একবার দেখেছিলো। মানুষ গুলোর গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করছিলো। এখন সেই মানুষ গুলো আর নেই! সবাই এই কফিশপটার মতোই পুরে কয়লা হয়ে গিয়েছে। হীর অনুভব করল তার মাথা ঘুরছে। ভয়ংকর ভাবে মাথা ঘুরছে। তার দাঁড়িয়ে থাকতে কষ্ট হচ্ছে! সোফার উপর বসে আজিম সাহেবও নিউজ দেখছিলেন। তার কপাল কুঁচকে আছে! সেও ভীষণ দুঃখ প্রকাশ করলেন শহরের এমন ঘটনায়। কারা ঘটাতে পারে এমন ভয়াবহ কান্ড? সেই ভাবনাতেই মাথা ধরিয়ে ফেললেন তিনি। নাজমা বেগমও ডাইনিং টেবিলে বসে নিউজের কথাগুলো মন দিয়ে শুনছেন। তার কিছুই করনীয় নেই এই মর্মান্তিক ঘটনায়। তা ভেবেই সে ছোট্ট করে নিঃশ্বাস ফেললেন। অতঃপর আবারও উঠে গেলেন রান্নাঘরে। রান্নার আর মাত্র অল্প কিছুই বাকি আছে। সানিয়া নিজের রুমে আছে। শহরে এমন অনেক কান্ডই ঘটে যায়। তাতে তার কিছু করার নেই সে জানে। তাই বোবাদের মতো নিউজ দেখে দুঃখ প্রকাশ করা তার নিয়মের মধ্যে পড়েনা। তাই সে জানতেও পারলনা আর মাত্র কয়েক সেকেন্ড দেরী হলে সে তাদের পরিবারের সর্বকনিষ্ঠ সদস্যকে হারাতো। হীর আর দাঁড়িয়ে থাকল না। নিজেকে স্বাভাবিক করতেই চলে গেলো নিজের রুমে।
___________
হীরের রুমের ব্যালকনিটাতে দাঁড়ালেই বাড়ির মেইন গেটটা সরাসরি দেখা যায়। সকাল থেকে পেটে পাথর বেঁধে দুপুর হয়ে গেলো এখনও অব্দি কিছু মুখে তুলেনি হীর। আজ তার মনটা ভীষণ খারাপ! বারবার কান্নাও পাচ্ছে, কিন্তু সে কাঁদছে না। কান্নাটা যথাসম্ভব চেপে রাখছে নিজের ভেতরে। সে কাঁদবে না। কাঁদলে তাকে বোকা বোকা লাগে দেখতে। কান্নার পর যখন সে নিজেকে আয়নায় দেখে তখন সে নিজেকে চিনতে পারেনা! কিছুক্ষন বোবা চোখে তাকিয়ে থেকেও সে নিজেকে চিনতে পারেনা। তার ধারনা, তার মতো বাকিরাও তাকে চিনতে পারবেনা। যদিও সে কখনো কান্না করে কারোর সামনে যায়নি! তাই পর্যবেক্ষণও করা হলো না যে,সে কাঁদলে তাকে বোকাদের মতো লাগে কি না? সবাই তাকে চিনতে পারছে কি না?
—-” আফা? খালাম্মায় আফানারে খাওনেরলাই ডাকে। আহেন।”
পেছন থেকে রুবির কন্ঠ পেয়ে নড়েচড়ে উঠল হীর। আঁড়চোখে একবার তাকালো রুবির দিকে। রুবি মুখ উঁচিয়ে হীরের মুখ দেখার প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। কিন্তু সফল হলো না। হীর একই ভাবে দাঁড়িয়ে থেকে বলল,
—-” আমার ক্ষিদে নেই। বড় মাকে গিয়ে বল আমি খাবো না।”
রুবি চমকে উঠল হীরের উত্তরে। যদিও ইচ্ছেকৃত। রুবি মুখে হাত চেপে হাসফাস করে বলল,
—-” আফনের কি হয়ছে আফা? সকালেও কিছু খাইলেন না! এহনও কইতাছেন খাইবেননা? আফনের কি শরীর খারাপ আফা? আফনের কি মাথা ব্যাথা করতাছে? আমি আফনারে মলম মালিশ কইরা দিম? মলম মালিশ করলে আফনার ভালা লাগবো।”
হীর কড়া গলায় জবাব দিলো,
—-” প্রয়োজন নেই। আমি খাবো না। যা এখান থেকে।”
রুবি এবার ভয় পেয়ে গেলো। হীরের রাগের ভয়। রুবি হীরকে খুব পছন্দ করে তবে হীরের রাগকে ভয় করে কখনও প্রকাশ করতে পারেনা। তার ধারনা সে হীরকে যদি বলে, “আফা আফনেরে আমার খোব ভালা লাগে।” তাহলে হীর তাকে এই বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিবে। আর কখও তাকে আর এই বাড়িতে ঢোকার পারমিশন দিবেনা। আর আজিম সাহেব তো হীরের কথাই শেষ কথা করে দেন। হীর যা বলে এই বাড়িতে বেশির ভাগ সময় সেটাই ঘটে। তাতে সেটা যদি রুবিকে বের করে দেওয়া নিয়েও হয় তবে সেটাও সম্ভব।
রুবি আর কিছু বলার সাহস না পেয়ে চলে গেলো। রুবি বের হয়ে যেতেই রুমে ঢুকল সানিয়ে। হীরকে ব্যালকনি ধরে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে সে পেছনে গিয়ে দাঁড়ালো। হীরের দৃষ্টি অনুসরণ করে হীরের মনের কথা জানার বৃথা চেষ্টা চালিয়ে বলল,
—-” কি করছিস সোনা?”
হীরের দৃষ্টি ঝুঁকে গেলো। পাশ ফিরে সানিয়াকে আবিষ্কার করে বলল,
—-” আজ ওয়েদারটা কেমন বিদঘুটে! তাই না?”
সানিয়া চারপাশে তাকিয়ে অবাক হওয়ার চেষ্টা করে বলল,
—-” বিদঘুটে! কে বলল বিদঘুটে? ভালো করে দেখ? আজ ওয়েদারটা কত সুন্দর।”
হীর বুঝতে পারল সে নিজের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে। নিজেকে নিয়ন্ত্রণে রাখার ছলে গলা খাঁকারি দিয়ে নড়েচড়ে দাঁড়ালো। সানিয়ার পরবর্তি কোনো প্রশ্নের স্বীকার হতে আপাতত আর কোনো ইচ্ছে না থাকতেই বলল,
—-” বড় মা খেতে ডাকছে। খেতে যাবে না চলো?”
সানিয়া চারপাশে আরেকবার নজর দিয়ে বলল,
—-” হু, আমি তোকে সেজন্যই ডাকতে এসেছিলাম। চল?”
হীর জোরপূর্বক হাসার চেষ্টা করল। হ্যাঁ সূচক মাথা নেড়ে সানিয়ার হাত ধরে নীচে চলে গেলো।
নাজমা বেগম আর রুবি খাবার সাজাচ্ছে টেবিলে। হীর আর সানিয়াকে নামতে দেখে নাজমা বেগম একগাল হেসে বললেন,
—-” সানি? তোর বাবাকেও ডেকে নিয়ে আয় তো মা।”
সানিয়া হীরকে টেবিলে গিয়ে বসতে ইশারা করে মায়ের উদ্দেশ্যে বলল,
—-” আচ্ছা মা।”
হীর এসে টেবিলে বসতেই নাজমা বেগম অভিযোগের ভান্ডার খুললেন। অভিযোগের সুরে বললেন,
—-” একজন কিন্তু দিনকে দিন বড় অবাধ্য হয়ে যাচ্ছে। খাওয়ার কথা বললেই তার সাফ সাফ উত্তর আসে আমি খাবো না। বলি কেন হ্যাঁ? সে কি বারবার ভুলে যায় সে বেশিক্ষণ অভুক্ত থাকলে তার গ্যাসের সমস্যা হয়?”
হীর হাসল। বড়মার দিকে আঁড়চোখে তাকিয়ে নিজের প্লেট তুলে বড় মার সামনে ধরল। অতঃপর সেও অভিযোগের সুরে বলল,
—-” একজন কিন্তু দিনকে দিন বড় অবাধ্য হয়ে যাচ্ছে। খাওয়ার কথা বললেই সে বলে আমার একটু কাজ আছে মা। একটু হাত দিয়ে খেয়ে নাও কষ্ট করে। সে কি বারবার ভুলে যায়? হীর তার হাতে ছাড়া একা একা খেতে পারেনা?”
হেসে ফেললেন নাজমা বেগম। হীরের হাত থেকে প্লেট টা নিয়ে খাবার বাড়তে বাড়তে বললেন,
—-” বড়মার তো বয়স হচ্ছে তাই না? তা সে যখন না থাকবে তখন হীর কি করে খাবে?”
হীর মুখ বাঁকিয়ে বলল,
—-” বড় মা না থাকলে হীরও থাকবে না। সে আর নতুন কি?”
নাজমা বেগম আঁতকে উঠলেন হীরের কথায়। হাত থেকে প্লেট টা নীচে নামিয়ে হীরের দিকে তাকালেন। হীরকে আগলে নিয়ে অসহায় কন্ঠে বললেন,
—-” এমন কথা বলে না মা! এসব বললে অমঙ্গল হয় জানোনা।”
হীর নাজমা বেগমের কোমর জড়িয়ে টেনে নিঃশ্বাস নিল। শান্ত কন্ঠে বলল,
—-” তুমিও এমন কথা আর বলবে না তাহলে। তাতেও অমঙ্গল হবে।”
শব্দ করে হেসে উঠলেন নাজমা বেগম। হীরের কপালে চুমু খেয়ে স্নেহভরা কণ্ঠে বললেন,
—-” আচ্ছা বাবা আর বলব না। এই রুবি, জলটা দে তো মা?”
রুবি এতক্ষণ ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে থেকে তাদের কান্ড দেখছিলো। সে বলে কি আর সাধে যে, সে হীরকে কিছুতেই বুঝতে পারেনা। যখন সে হীরকে খাওয়ার জন্য ডাকতে গেলো তখন হীর কেমন করে জবাব দিয়ে বলল, সে খাবে না৷ অথচ দেখো, হীর ঠিকই খেতে এলো। রুবির মতে হীর ভারি অদ্ভুত রকমের মেয়ে। তাকে খুব সহজে বোঝা কারোর কাম্য নয়।
রুবি দৌড়ে গিয়ে জগ ভর্তি পানি নিয়ে হাজির হলো। ততক্ষণে হীরের জন্য ভাত মাখানো হয়ে গিয়েছে। হীর বড় মায়ের হাতের প্রথম লোকমা ভাতের সাধ নিতে এতোই আগ্রহী যে সে আগেভাগেই হা করে রইল। কিন্তু ভাতের প্রথম লোকমা তার মুখে উঠল না। সে মুখে নেওয়ার আগেই কেউ একজন নাজমা বেগমের হাত টেনে নিয়ে নিজের মুখে পুড়ে নিলো। চমকে উঠলো উপস্থিত সবাই। সবার দৃষ্টি এবার সেই আগন্তুকের উপর। পাশ ফিরে তাকে দেখতেই নাজমা বেগমের চোখ জোড়া চিকচিক করে উঠল। আনন্দে আত্মহারা হয়ে ভাত মাখানো হাতেই “সাবাব” বলে জড়িয়ে ধরলেন আগন্তুককে। হীর জ্বলে উঠল আগন্তুককে দেখে। তার ভেতরে রাগ আর প্রতিহিংসার আগুন জ্বলে উঠতেই দাঁড়িয়ে গেলো সে। কিন্তু পরমুহূর্তেই আবারও নিভে গেলো হীর। নাজমা বেগমের মুখে নেওয়া নামটা যেন আবারও বারি খেলো মাথার মধ্যে। “সাবাব”! সাদমান সাবাব?
—-” মা? কেমন আছো তুমি?”
হীর আরও একদফা ধাক্কা খেলো। কফিশপের ছেলেটা সাবাব ছিলো! আজিম সাহেব এবং নাজমা বেগমের একমাত্র ছেলে সাদমান সাবাব। সানিয়া আর সাবাব জমজ ভাই বোন। বয়সের তফাৎ দশ বারো সেকেন্ড। জেনে রাখা ভালো, হীর আজিম সাহেবের ছোট ভাই রিয়াদ আহমেদ এবং কনিকা নুর এর একমাত্র মেয়ে “বারিকা হীর”। সাবাবকে হীর ছোট বেলায় দেখেছে। হীরের বাবা-মায়ের মৃত্যুর পর হীর যখন এই বাড়িতে আসে তখন হীরের বয়স ছিলো সাত বছর। হীর আটে পা রাখতেই সাবাব বিদেশ পাড়ি জমায়। বলতে গেলে তার ড্রিম ওয়ার্ল্ড আমেরিকার এক মধ্যপ্রদেশ ছিলো। সাবাব বিদেশে যাওয়ার পর তাকে দেখার সৌভাগ্য বা দুর্ভাগ্য কোনোটাই আর হীরের হয়ে উঠেনি! কেননা, বর্তমান সময়টা আধুনিকায়নের সময় হলেও ইন্টারনেটের দুনিয়া থেকে সাবাব নিজেকে সম্পূর্ণ আলাদা রেখেছে! কখনও তাকে ইন্টারনেট জগতে পা রাখতে দেখা যায়নি। সেই সূত্রে হীরের তাকে না দেখার সম্ভাবনাই বেশি ছিলো।
—-” আমি ভালো আছি রে বাবা! তুই কেমন আছিস?”
সাবাব মিষ্টি করে হাসল। মায়ের কপালে ছোট্ট একটা চুমু খেয়ে ভেজা গলায় বলল,
—-” তোমার দোয়ায় ভীষণ ভালো আছি মা।”
” সাবাব!”
“ভাই!”
সিঁড়ির পাশ থেকে ভেসে আসল আজিম সাহেব এবং সানিয়ার গলা। সাবাব ঘাড় ফিরিয়ে তাদের দেখতেই মুচকি হাসল। সানিয়া দৌড়ে এসে ঝাপটে ধরল ভাইকে। আনন্দে মাতোয়ারা প্রত্যেকটা মানুষের চোখেই জলে চিলচিক করছে। কিন্তু হীর নির্বিকার! তার দৃষ্টি বারবার ভয়ার্ত হয়ে উঠছে। কারন? সঠিক কারন যে সে নিজেও জানেনা!
#চলবে____________________