কার হাতে যে ধরা দেব হায় পর্ব -০১

বাড়ি থেকে আমাকে জোর করে বিয়ে দেওয়া হচ্ছে। তাও আবার আমারই শ’ত্রু শৌর্য ভাইয়ার সাথে। এবং এই হুট করে বিয়ে দেওয়ার পেছনে আমারই বোকামি রয়েছে।

প্রথম থেকেই বলি তবে! আমার সব বন্ধুরা ক্লাশ সেভেনে থাকতেই ফেসবুক খুলে প্রেম ট্রেম করা শুরু করে দিয়েছিল। আমি যখন শুনতাম তাদের এফবি আইডি আছে আমার চোখ বড়বড় হয়ে যেত। কারণ সেইসময় একটা এফবি আইডি থাকা ছিল গুরুতর অ’প’রা’ধে’র মতো। তবে দিন যত যেতে থাকে আমারও একটা ফেসবুক আইডির লো’ভ হতে লাগল। আমার ক্লাশেই পড়তো একটা মেয়ে তার নাম নাতাশা। নাতাশাকে একদিন বললাম,
-‘আমাকে একটা আইডি খুলে দিবি?’

-‘তোর তো মোবাইল নেই। আর তাছাড়া তোর পরিবার তো অনেক স্ট্রিক্ট। মানবে?’

-‘ওদের বলব না। তুই এমন ভাবে খুলে দে যাতে কেউ না বোঝে।’

আমি দাদুর বাটন ফোনে আইডি খুললাম। সেইসময় যদিও অহরহ স্মার্ট ফোন ছিল তারপরেও আমার ভরসা ছিল ওই ছোট্ট বাটন ফোনটা। যদিও ফোন দাদুর ছিল তবুও আমিই চালাতাম। গেইম খেলতাম আর টসটস করে ব্যাক ক্যামেরা দিয়ে যা দেখতাম তার ছবি তুলে ফেলতাম। দাদুর কল এলে রিসিভ করে ধরিয়ে দিতাম আর দাদু কারো সাথে কথা বলতে চাইলে তাকে লাইনে ধরিয়ে দিতাম। এটা একটা চাকরীর মতো ছিল। সুবিধা একটাই যে আমি ছাড়া আর কেউ কখনো ফোনটা ধরত না যার ফলে আমার ফেসবুক চালানো বেশ সহজই ছিল। যাই হোক,
আমার ডাক নাম টিয়া। আইডির নাম দিয়েছিলাম ‘টিয়া পাখি’। আইডি খুলে আমি এমবি কার্ড কিনলাম লুকিয়ে লুকিয়ে, সেই এমবি ফোনে ভরে ফেসবুক চালানো শুরু করলাম।

আমি যে কত বড় বলদ ছিলাম তখন! আমি কি করলাম, খুঁজে খুঁজে আমার চাচাতো, ফুফাতো, মামাতো, খালাতো, ভাই-বোন গুলোর আইডিতে গিয়ে ফ্রেন্ড রিকুয়েস্ট পাঠালাম। শুধু তা-ই নয়, আমি তাদের নানান পোস্টে কমেন্ট করতে লাগলাম ‘ওয়াও, নেইস লাগসে, হিরো, সুপার হিরো, কিউটি, রাজা, রাণী’ হেন তেন ইত্যাদি!

আমার কাজিন গুলো বুঝতে পেরেছিল কিনা জানিনা কারণ কেউ আমাকে কখনো কিছু বলেনি। আমার, জেঠা আর চাচারা সবাই আমাদের বাড়ির পাশেই থাকত। অর্থাৎ সব ভাই পাশাপাশি জমি কিনে বাড়ি তৈরি করেছিলেন। আমাদের পাঁচ তলা বিল্ডিং এবং আমরা তিনতলায় থাকি আর বাকিগুলো ভাড়া দেই, জেঠাদের নিজস্ব ডুপলেক্স বাড়ি। জেঠার টাকা বেশি তো তাই বাড়ি ভাড়ার চিন্তা করেনি। সেজো কাকার তিন তলা বাড়ি আর ছোট কাকার চারতলা। তারাও দুইজন দোতলায় থাকেন বাকিটা ভাড়া দিয়েছেন। তো জেঠার ছোট ছেলে নাফিস ভাইয়ার বন্ধু হলেন শৌর্য ভাইয়া। আমাদের এলাকায় তাদের নিজেদেরই তিনটা বাড়ি। বেশ বড়লোক মানুষ। সারাক্ষণ খুব ভাব ধরে থাকেন। দেখতে চমৎকার। খুব ফর্সা আর অনেক লম্বা। তখন অবশ্য এখনকার মতো এত সুঠাম দেহ ছিল না। এখন তো আর্মিতে আছেন, অনেক ফিট বডি। ফর্সাটা কিছুটা কমে গেছেন। তামাটে একটা ভাব চলে এসেছে তবুও এখনও সুন্দর লাগে। কি ম্যানলি! বেশি প্রসংশা করে ফেলছি। যদিও সে আমার শ’ত্রু মানুষ তারপরেও সুন্দরের প্রশংসা করতে আমি কার্পণ্য করি না। কখনোই না!

এই সৌম্যদর্শন পুরুষটা আমার শ’ত্রু হলো কীভাবে! আরে এখানেই তো ফেসবুক বাবাজির অবদান রয়েছে! আমার জেঠাতো বোন পরী আমার সমবয়সী। ও আবার গার্লস স্কুলে পড়ত। একসাথে হয়তো স্কুলে থাকতাম না তবে স্কুল শেষ করে আমি আর ও সারাক্ষণ এক সাথেই ঘুরতাম। হুটহাট বিকেলে ও আমাদের বাড়িতে আর আমি ওদের বাড়িতে চলে যেতাম। তো এভাবেই একদিন সেই বাসায় গিয়ে শৌর্য ভাইয়ার সাথে দেখা হলো। নাফিস ভাইয়া, রোহান ভাইয়া, আরো একটা ছেলে ছিল লুডু খেলছিল ড্রয়িং রুমে বসে। সেই ছেলেটাকে দেখে আমার কিশোরী মনের দুরু দুরু ডাক শুরু হয়ে গিয়েছিল। ওই যে! ক্রাশ নামক বাঁশ খেয়ে বসলাম। রোহান ভাইয়া সেজো চাচার ছেলে। সে আবার নাফিস ভাইয়ার সমবয়সী। আমাকে দেখে বললেন,
-‘বুঁচি নাকি রে! কত্তদিন পর দেখলাম তোকে।’

মি’থ্যে কথা কীভাবে বলতে হয় আমার রোহান ভাইয়ার থেকে তা শেখা উচিত। গতকাল রাতেও সে আমাদের বাসায় গিয়ে আমার বড় ভাইয়া সহ আড্ডা মেরেছিল। এখন বলছে কত্তদিন পর! অবশ্য এটা তার কমন ডায়লগও বটে। আমি পাত্তা দিলাম না। চলে গেলাম পরীর কাছে। দুইজন মিলে গল্প করলাম। আসার সময় ভাইয়াদের কাউকে চোখে পড়ল না। এরপর থেকে বোধহয় শৌর্য ভাইয়ার সাথে বেশি বেশি দেখা হতে লাগল। এরই মাঝে একদিন আমাদের বাড়িতে এসেছিল নাফিস ভাইয়ার সাথে। ওই তখনই একবার কথা হয়েছিল। তাও খুব অল্প। নাম আর কোন ক্লাস এটাই জেনেছে কেবল।

তো আমার আইডি যখন খোলা হলো আমি কি করলাম আমার কাজিনদের পাশাপাশি তাকেও স্টক করতে লাগলাম। একদিন সে এত দারুন একটা ফটো আপলোড দিয়েছিল! আমি সারারাত সেই ফটোতে চোখ বুলিয়েছিলাম। শৌর্য ভাইয়ার ভাব বেশি আগেই বলেছি। তো তাকে রাস্তাঘাটে আমি কথা বলতে চাইতাম দুই তিনবার বলতে গিয়েছি সে এমন ভাব করে যেন চেনেই না। তখন গরমের ছুটি চলছিল। আমি বাসায় বসা। হাতে কোনো কাজ নেই। পরী নানুর বাড়িতে।

আমি ফেসবুকে ঢুকলাম। দেখলাম শৌর্য ভাইয়া মাত্র একটা পোস্ট করেছেন। কি ভেবে তার ইনবক্সে গিয়ে লিখলাম,
-‘কীরে মনা! ভালো আছস?’

মেসেজটা দুইঘন্টা পর সিন হয়েছিল বোধ হয়। কিন্তু রিপ্লাই আসেনি। আমি আবারও মেসেজ দিলাম,
-‘ওই! তোর ভাব বেশি? কথা কস না ক্যান?’

এবারও রিপ্লাই এলো না। আমার এত রা’গ হলো! ছেলেটার এত ভাব কেন? সে নিজেকে প্রিন্স চার্লস মনে করে বসে আছে নাকি? আমি এবার লিখলাম,
-‘ভেড়া একটা।’

তাৎক্ষণিক আমাকে ব্লক করা হলো। যার ফলে আমার ইগো হার্ট হলো প্রচুর। তবুও শান্তি তাকে কথা শুনাতে পেরেছি।

সেদিন বিকেলেই আমার প্রাইভেট ছিল। আমি পাঁচটায় প্রাইভেট শেষ করে যখন মোড়ের মাথায় এলাম তখন দেখা হলো শৌর্য ভাইয়ার সাথে। নাফিস ভাইকে পাশে দেখা গেল না। তিনি আর দুইটা ছেলে যাদের আমি চিনি না। আমি তাকে ক্রস করেই চলে আসছিলাম কিন্তু হঠাৎ আমার নাম ধরে ডেকে উঠল।

-‘এই টিয়া! এদিকে আসো।’

আমি গেলাম। একটু ভ’য় হতে লাগল। চিনে ফেলেছে নাকি যে আমি তখন তাকে মেসেজ দিয়েছিলাম! আমি আমতা আমতা করে বললাম,
-‘জ্বি ভাইয়া, ডাকছেন কেন?’

-‘জানো না? দুপুরে ওইসব কি মেসেজ দিয়েছিলে আমায়?’

আমি এত অবাক হলাম! চিনল কী করে যে আমি মেসেজ দিয়েছি? বললাম,
-‘কি বলছেন ভাইয়া? কীসের মেসেজ!’

-‘নাটক করবে না একদম। টিয়া পাখি আইডিটা তোমার না?’

-‘না না। আমার কোনো আইডি নেই।’

-‘আমাকে তোমার মতো বলদ পেয়েছ? নিজের নাম দিয়ে সাথে পাখি লাগালেই তো তুমি আলাদা কেউ হয়ে যাচ্ছো না। তোমার আইডি যে টিয়াপাখি সেটা সবাই জানে।’

-‘সবাই জানে মানে?’

-‘এই নাফিস, রোহান সবাই।’

-‘কি! আমাকে তো কখনো কিছু বলেনি। আমিও তো তাদের বলিনি যে ওইটা আমারই আইডি।’

-‘তুমি তো বেকুব। বলা লাগে না। এমনিতেই বোঝা যায়।’

-‘বেকুব, বলদ এসব কি বলছেন! ঠিক করে কথা বলেন ভাইয়া।’

-‘তুমি আমাকে ভেড়া বলেছ কি কারণে? আর তার সাথে যত্তসব ক্লাসলেস মেসেজেস!’

-‘ঠিক করেছি। আপনি ভেড়া। শুধু ভেড়া না। ষাঁড়।’

-‘কি বললে? আমি ষাঁড়!’

-‘হ্যাঁ।’

-‘একটা থা’প্প’ড় দিব। বে’য়া’দ’ব মেয়ে একটা! আদব কায়দা বলতে কিছু নেই।’

-‘আপনারও নেই। আপনি আমাকে মা’রার কথা বলেন কোন সা’হ’সে? আপনি কি ভেবেছেন আপনি একা থা’প্প’ড় দিতে পারবেন? আমি পারব না!’

শৌর্য ভাইয়া দুই কদম এগিয়ে এসে বললেন,
-‘কী বললে! তুমি আমাকে থা’প্প’ড় মা’র’বে? তাই নাকি! দেখি, থা’প্প’ড় দিয়ে দেখাও। তোমার সা’হ’স কত আমিও সেটা দেখি।’

এত রা’গ উঠছিল তখন যে হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছিলাম। ঠা’স করে তার ফর্সা গালে একটা থা’প্প’ড় মে’রে দিলাম। মা’রার পর নিজেরই হাত কেঁ’পে উঠল। ভ’য়ে জমে গেলাম। শৌর্য ভাইয়াও স্তব্ধ হয়ে গেল। বোধ হয় সেও আশা করেনি আমি সত্যিই এমন কিছু করে বসব। আরে আমি নিজেই তো ভাবতে পারিনি। ক্লাস এইট পড়ুয়া আমি এত বড় শৌর্য ভাইয়ার গালে ঠা’স করে চ’ড় মে’রে দিলাম! শৌর্য ভাইয়ার সাথে থাকা ছেলে দুইটার চোখও যেন কোটর থেকে বেরিয়ে আসবে। আমি বুঝলাম এখন সবচেয়ে ভ’য়া’ন’ক বি’প’দ সংকেত দেখা দিচ্ছে। আর এক মুহূর্তেও সেখানে দাঁড়ালাম না। দৌঁড়ে বাড়ির ফটকে চলে এলাম।

তারপর আর শৌর্য ভাইয়ার সাথে আমার দেখা হলো না। কিছুদিন অবশ্য আমিই লুকিয়ে চু’রিয়ে ছিলাম। তারপর একদিন শুনলাম আর্মিতে জয়েন করেছেন তিনি।

ওহ! আমার সেই আইডিও অফ করে দিয়েছিলাম। কাজিন মহল আমার আইডি না দেখতে পেয়ে তখন প্রথমবারের মতো বলল,

-‘কীরে টিয়াপাখি! তোর আইডির কি হলো! আমরা যে কোনো লাইক কমেন্ট পাচ্ছি না। ডিএক্টিভেট করে দিলি? আহহা! একজন এক্টিভ ফ্রেন্ড কমে গেল। থাক আবারও আইডি খুলিস। আগে এসএসসি টা দিয়ে নে।’

ভাইয়া যখন জানতে পারল আইডি খুলেছিলাম এমন মাইর দিয়েছিল! সেই আমি এইচএসসির আগে আর ফেসবুক খুলিনি পুনরায়।

এসএসসির পর আমি ভালো কলেজে ভর্তি হয়েছিলাম। বাসা থেকে একটু দূরে হওয়াতে কলেজের আবাসিকে উঠেছিলাম। আমার বাড়িতে আসা কমে গেল। ঈদে এলে এক সপ্তাহ থেকেই আবার ছুটতে হতো। পড়ালেখায় বুদ হয়ে পড়লাম। এইচএসসির পর একেবারে বাড়িতে আসার কথা যদিও ছিল না। তবুও এলাম। ভালো লাগছিল না হোস্টেল লাইফ। তাছাড়া এডমিশনের কোচিং সেন্টার গুলো আমাদের বাড়ি থেকেই কাছে। তাই বড় ভাইয়া একদিন গিয়ে আমাকে নিয়ে এলেন।

বাড়িতে আসার পর প্রথম প্রথম বেশ ভালোই দিন কাটতো। ভাবী আর ভাতিজি সহ বেশ মজার সময় পার হতো। পরীও আসা যাওয়া করত। আমার বিকেলে একটু হাঁটার অভ্যেস ছিল। ভাতিজি মুনকে নিয়ে হাঁটতাম। ছোট্ট মুন কি সুন্দর আমার আঙুল ধরে হাঁটে! এত আদর লাগে ওর জন্য!

আমি সেদিন ভাবলাম জেঠাদের বাসায় গিয়ে দেখা করে আসি। গেলাম মুনকে কোলে নিয়ে। এতপথ মেয়েটা হাঁটতে পারে না। ছোট তো!

ড্রয়িং রুমে গিয়েই তো আমার চোখ ছানাবড়া হয়ে গেল। এ কাকে দেখছি! শৌর্য ভাইয়া! আমি কি অবাক তার থেকেও তিনি বোধ হয় বেশি অবাক হলেন আমাকে দেখে। আমার বে’হা’য়া মন! সুদর্শন কিন্তু বুইড়া মেজর সাহেবকে দেখে আরো একবার ক্রাশ খেয়ে ফেলে। কিন্তু ভুললে চলবে না! এই লোক শ’ত্রু। আমাকে মা’র’তে চেয়েছিল। আমি যে তাকে মা’র’লাম সেটা আমার মাথায় আসেনি সে চেয়েছিল মা’র’তে এটা ভেবেই ফুঁ’সে উঠলাম। নাফিস ভাইয়া আমাকে ডেকে নিয়ে গিয়ে শৌর্য ভাইয়াকে বলল,

-‘এই দ্যাখ টিয়া। তোকে থা’প্প’ড় মে’রে’ছিল যে সেই টিয়া।’

শৌর্য ভাইয়া এমন ভাবে তাকালেন! আমি বুঝতেই পারলাম না রা’গ ছিল নাকি অন্য কিছু। তবে তিনি বললেন,

-‘বাহ! বিয়ে টিয়ে করে বাচ্চা কাচ্চাও হয়ে গেছে!’

আমি থতমত খেয়ে গেলাম কথাটা শুনে। অপ্রস্তুত হয়ে পড়লেন নাফিস ভাইও। তিনি বললেন,
-‘আরে এটা আমাদের মুন। মেহরাব ভাইয়ার মেয়ে।’

এবার শৌর্য ভাইয়ার চোখমুখের অঙ্গভঙ্গির একটু পরিবর্তন ঘটল। বলল,
-‘ওহ! তা এত মোটা হয়ে গেছে যে বোঝার উপায় নেই যে অবিবাহিত। বাচ্চা সমেত বরং ভালোই মানিয়েছে। সারাদিন ঘরে বসেই থাকো? হাঁটাহাঁটি করতে পারো না! ব্যায়াম করবে বেশি করে। আর যদি না পারো তবে বিয়ে করে নাও। তাহলে মোটা চিকন নিয়ে কোনো সমস্যা থাকবে না। সংসার করবে, বাচ্চা কাচ্চা পালবে। ভালোই মানাবে।’

আমার মুখটা এতবড় হা হয়ে গেল। নাফিস ভাইয়া হো হো করে হাসতে লাগলেন। আমি বুঝলাম এই অ’সভ্য লোকটা সেদিনের প্র’তি’শো’ধ নিচ্ছে। আমি বুঝলাম সে চাইছে আমি রে’গে যাই। কিন্তু এখন তো আর আমি বোকা নেই। তাই আমিও বললাম,
-‘ঠিক বলেছেন। বিয়ে করব। তা হাতের কাছে ছেলে থাকলে বলেন। আর নয়তো এক কাজ করেন। আপনি সিঙ্গেল থাকলে আপনিই বিয়েটা করেন। ভালোই হবে। আমার আবার অনেক দিনের শখ আর্মির বউ হবো।’

নাফিস ভাইয়া এবার আরো জোরে হাসতে লাগলেন। কিন্তু শৌর্য ভাই হাসলেন না। মুখটা গম্ভীর করে রেখেছেন। আমিও বুঝলাম। কাজ হয়েছে।

কিন্তু এখানেও গড়বড়! আমি কেবল বোকা না। বড় মাপের বেকুব। পরদিন আমাদের বাড়িতে শৌর্য ভাইয়ের বাবা-মা বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে হাজির। সেই দৃশ্য দেখে আমার জ্বর উঠে গেল। দুইদিন আমি ভ’য়ে, আ’ত’ঙ্কে বিছানায় বেহুশের মতো পড়ে ছিলাম। কারণ বাবা আর বাকি অভিভাবকরা সম্মতি দিয়ে দিয়েছেন। আমি যে কি পরিমাণের বেকুব সেই ভেবে ভেবে আমি হা হুতাশ করলাম। কোথায়, কখন, কাকে, কি বলতে হয় আমি কেন যে সেটা ভালো করে শিখলাম না! এই ভেবে আফ’সো’স করতে লাগলাম। তারই সাথে প্ল্যান করলাম, বিয়ে ভাঙার। মনে মনে ঠিক করলাম এই লোককে বিয়ে আমি করব না। আমার পক্ষে অসম্ভব তাকে বিয়ে করা।

#চলবে।

#কার_হাতে_যে_ধরা_দেব_হায় (পর্ব-১)
লেখনীতে– ইনশিয়াহ্ ইসলাম।

(আর এক অথবা দুই পর্ব রয়েছে। গল্পের নাম রবী’ন্দ্র’নাথ ঠা’কুরের গীত’বিতান থেকে নেওয়া।)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here