ক্যাসিনো পর্ব -০৯

#ক্যাসিনো ©লেখিকা_(মায়া)
#পর্ব_৯

গত তিন দিন থেকে মেহমেত এক দম স্বাভাবিক আচারন করছে। আর রাত করে বাড়ি ফেরে না, কোন প্রকার রেগেও থাকে না। ক্লাবে যাওয়া টাও বন্ধ করে দিয়েছে। আবার টাইম মত অফিসে যাচ্ছে,সময় মত মরিয়মের রান্না করা খাবার খাচ্ছেন। সব মিলিয়ে আগের সেই মেহমেত কে মরিয়ম খোঁজে পাচ্ছে। এখন মেহমেত কোন ফোন অথবা কোন মেসেজে ঘাবড়ে ও যায় না কিংবা হুটহাট চিন্তিত মুখ নিয়ে বেরিয়ে ও যায় না।

মিহির সাথেও খুব ভালো ব্যবহার করছে। আজ সন্ধ্যায় বাসায় ফিরেছে মেহমেত তার পর মিহি নিয়ে বেরিয়ে পড়েছে। ৮টার দিকে বাসায় ফিরে বাবা মেয়ে। মিহির হাতে অনেক বড় একটা টেডি বিয়ার। এতো বড় যে মিহি ঠিক মত ধরতেই পারছে না । বাবা আর মেয়ের খুশি খুশি মুখ দেখে মরিয়মের মন টা ফুরফুরে হয়ে যায়। এতো কিছুর পরেও কেন জানি তার বিশ্বাস হচ্ছে না যে সব কিছু ঠিক হয়ে গেছে।

মরিয়মের শরীরটা আগের যে অনেক টাই ভালো এখন। মেহমেত মরিয়মের কাছে হাত জোর করে মাফ চেয়েছে। মেহমেতের সেই অসহায় মুখ দেখে নির্দিধায় মাফ করে দিয়েছে তাকে। শুধু বলেছেন আবার যেন পাল্টে না যায় সে।
মেহমেত আশ্বাস দিয়ে বলেছে ইনশাল্লাহ তেমন আর কিছুই হবে না। এবার থেকে সব ঠিক ভাবে চলবে। কিন্তু মেহমেত একটা শর্ত দিয়ে বসেছে, গত ৬মাসের কোন কথা সে যেন জানতে না চায় কখনো। মরিয়ম এ বিষয়ে হ্যাঁ না কিছুই বলেনি।

মিহি দৌড়ে মায়ের কাছে এসেই রাজ্যের গল্প জুড়ে দিলো। মাঝে মাঝে মরিয়মের মনে হয় এতো এতো কথা বলে মেয়েটা কোন দিন না মাথার কোন সমস্যা হয়ে যায়।

আম্মু শুনেন না?? কি হয়েছে আজ! আব্বু আমায় অনেক জায়গায় ঘুরিয়েছে সাথে নেহাল ভাইজান ও ছিল। মরিয়ম রাতের রান্না করছে সাথে রহিমা খালা টুকটাক সাহায্য করছে। মরিয়ম রান্না করতে করতে বললেন, হুমম তার পর কি হলো???
আব্বু অনেক গুলো চকলেট খাইয়েছে আইসক্রিম ও খাইয়েছে। তার পর আমরা চাউমিন ও খেয়েছি জানেন!!
মিহি তার মনে বকবক করছে আর হাত দিয়ে নানান অঙ্গ ভঙ্গি করে তা মরিয়ম কে দেখাচ্ছে। মেহমেত একবার আড়চোখে মরিয়ম কে দেখে নিজের ঘরে চলে গেল।

রান্না টা রহিমা খালা কে দেখতে বলে মিহি কে কোলে উঠিয়ে নিল মরিয়ম তার পর আদুরে গলায় বললেন,, হয়েছে হয়েছে আমার আম্মুটার অনেক হয়েছে বকবকানি। এবার আম্মু একটু রান্না টা শেষ করতে দাও। তার পর খেয়ে দেয়ে তোমার অনেক গল্প শুনবো। এখন ভালো মেয়ের মত পড়তে বসো তো ঘরে গিয়ে। আমি কিন্তু রান্না শেষ করে তোমার হোম ওয়ার্ক কমপ্লিট হয়েছে কিনা দেখতে যাবো। মিহি হ্যাঁ সূচক মাথা নাড়ল। মরিয়ম মেয়ের গালে চুমু দিয়ে নেমে দিল কোল থেকে। মিহি দৌড়ে চলে গেল।

মরিয়ম রান্না ঘরে গিয়ে দেখে তরকারি থেকে পোড়া গন্ধ বের হচ্ছে। আর রহিমা খালা এক মনে কি যেন ভাবছে। মরিয়ম তারাতারি করে তরকারি গ্যাসস্টোভ থেকে নামিয়ে ফেললেন। রহিমা ভয়ে মাথা নিচু করে রেখেছে। আজ বুঝি তার রক্ষে নেই। এতো অমনযোগী হয়ে পড়েছো কেন খালা??? কি হয়েছে বলোতো আমায়???

আসলে ম্যাম সাহেব মাফ করবেন আমায়। আমি একটু অন্যমনস্ক হয়ে পড়েছিলাম। এবারের মতো মাফ করে দেন,দয়া করে আমাকে কাজ থেকে বের করে দিবেন না। মরিয়ম হচকচিয়ে যায় রহিমা খালার কথায়। আরে খালা কি বলছো?? তোমায় কাজ থেকে বের করতে যাবো কেন??? রহিমার চোখে পানি। মরিয়ম উত্তেজিত হয়ে বললেন তোমার কি হয়েছে খালা বল আমায়?? গত কয়েক দিন থেকেই দেখছি তুমি সব সময় কি যেন চিন্তাই থাকো। রহিমার ইতস্ততা ভাব কাটছে না দেখে। মরিয়ম রহিমার একটা হাত চেপে ধরে বলে। খালা!! নিশ্চিন্তে বল আমায় কি হয়েছে!! ভয় পেয়েও না আমি তোমার সাথে আছি।

রহিমা অবাক চোখে তাকিয়ে আছে। কত বড় ঘরের বউ হয়ে এতো টাকার মালিক হয়েও কেমন কাজের মানুষের জন্য উতলা হয়ে উঠেছে। মনে হচ্ছে যেন নিজের কোন কাছের মানুষের সমস্যা হয়েছে। রহিমা এক হাতে চোখের কোণের পানি টা মুছে বলেন। ম্যাম সাহেব আমাকে ৩মাসের বেতন কি অগ্রীম দিবেন??? আমি খুব বিপদের মুখে আছি। মরিয়ম কিছু টা আশ্বস্ত করে বলেন। খালা আমি দিয়ে দিবো টাকা সমস্যা নেই । কি বিপদ সেটা আমাকে বলো।

রহিমা নিজের চোখের পানি ছেড়ে দিয়ে বললেন, মেঘলার আব্বা হাসপাতালে ভর্তি আছেন, পেটের ভিতরে টিউমার ধরা পড়েছে। তারাতারি অপারেশন না করতে পারলে বাঁচবে না। দেড় লাখ টাকা লাগবে অপারেশনের জন্য। কোন মতে ৫০হাজার জোগার করেছি,ধার দেনা করে। এখনো ১লাখ টাকা জোগাড় করতে পারিনি। মরিয়ম রহিমা খালা কে রান্না ঘরে দাঁড় করিয়ে নিজের ঘরে চলে আসলেন। প্রায় মিনিটখানেক পর মরিয়ম হাতে টাকা নিয়ে ফিরে আসলেন। তার পর রহিমার হাতে টাকা ধরিয়ে দিয়ে বললেন। ২লাখ আছে এখানে, তারাতারি যেয়ে অপারেশনের জন্য টাকা টা জমা দিয়ে দাও। ৫০হাজার যাদের থেকে ধার করেছো তাদের ফেরত দিয়ে দিও। আর দেয় লাখ অপারেশনের জন্য জমা দিয়ে বাকি টাকার ঔষধ পত্র কিনবে ‌। তোমার এতো বড় বিপদ আর একবারে জন্য আমাকে বলোনি। ১মাসের ছুটি তোমার,, চিন্তা করো না তোমার কাজ অন্য কাউকে দিবো না আমি। আগে খালু ঠিক হয়ে যাক তার পর আসো।

রহিমা এতোক্ষণ কান্না চেপে রাখলেও এখন মরিয়মের দুই হাত কপালে ঠেকিয়ে হাউমাউ করে কেঁদে ফেললেন। আর বললেন। আমি কাজ করে সব টাকা শোধ করে দিবো ম্যাম সাহেব। আমি আপনার এতো বড় উপকার সারা জীবন ও ভুলবো না। মরিয়ম নিজের জুমে থাকা চোখের কোণের পানি মুছে বললেন। আমি জানি খালা এক জন স্ত্রীর কাছে তার স্বামী কতটা মূল্যবান। এই টাকা তার কাছে তুচ্ছ। তোমার টাকা শোধ করতে হবে না খালা। খালু কে সুস্থ করো আগে। রহিমার কান্না আরো জোরে বেগ পেলো। তবে এ কান্না আর দুঃখ ভরা নয় কিছু টা সুখের। মরিয়মের চোখের দিকে তাকিয়ে বললেন , সব ধনী মানুষ খারাপ হয় না, মনুষ্যত্ব এখনো বেঁচে আছে। আমি কথা দিচ্ছি এই উপকার আমি কোন দিন ভুলবো না ম্যাম সাহেব। আল্লাহ আপনাকে সুখে রাখুন।

মরিয়ম রহিমা খালাকে মিলন চাচা এগিয়ে দিয়ে আসতে বলেছে হসপিটাল পর্যন্ত। এতো সুন্দর একটা মুহূর্ত মেহমেত আড়াল থেকে ভালোই উপভোগ করছে।

মরিয়মের মন টা ভিষন খারাপ হয়ে গেল। মেহমেতের কিছু দিনের অবহেলাই জীবন টা যেন অন্ধকারে নিমজ্জিত হয়ে গেছিল। সেখানে কখনো ভাবতেও পারবে না মেহমেত কে ছাড়া থাকতে। আর রহিমা খালা পরিস্থিতিতে কত শক্ত মনের অধিকারী হয়ে উঠেছে তা অকল্পনীয়, অভাব মানুষ কে পাথর করে তোলে,তার জলজ্যান্ত প্রমাণ রহিমা খালা,,,স্বামী হসপিটালে আর সে কত মানুষের দোয়ারে বুঝি গিয়ে দাঁড়িয়েছে। এক বার তো তাকে বলতে পারতো। হয়তো বুকে সাহস হয়নি, এখন কার যুগের ধনী মানুষ জন তো আবার কত রকমের হয়। মনুষ্যত্ব সবার মধ্যে খোঁজে ও পাওয়া যায়না।



নূর মোহাম্মদ ক্লাবের ম্যানাজারের সামনে বসে আছে,ম্যানাজার খুব একটা পাত্তাই দিচ্ছে না। অফিসার তমাল আজ এসেছে,তবে সাধারণ ড্রেস আপে এসেছেন,যার কারণেই পাত্তা নেই।

অফিসার তমাল গম্ভির মুখ করে ম্যানাজার কে বললেন,,ভাই আমরা এক জনের খোঁজে এসেছি আজম নাম তার আপনার এখানেই কাজ করতো,সে গত কয়েক দিন আগে খুন হয়েছে। ম্যানাজার চোখ তুলে তাকালেন, নিজের কাজ রেখে তার পর কাঠিন্য ভাব নিয়ে বললেন আমি জানি সে খুন হয়েছে,, এবং সারা দেশ জানে সে খুন হয়েছে। তার বিষয়ে আমি কিছু জানি না,আর সে খুন হওয়ার ১৫দিন আগে থেকে কাজে আসেনি। আর আমি কিছু জানি না। আপনাদের যদি আর কিছু জানার থেকে ও থাকে তবুও আমি আর কিছু বলতে পারবো না। দয়া করে এখন আপনারা আসুন। কথা শেষ করেই আবার নিজের কাজে মন দিল ম্যানাজার ,, নূর মোহাম্মদ তখন নিজের পকেট থেকে একটা গান বের করে ম্যানাজারের টেবিলের উপর রাখলেন,সাথে তার আইডি কার্ড,, যেখানে জ্বল জ্বল করছে সিকিউরিটি এজেন্সি,নাম: নূর মোহাম্মদ,বয়স:২৬
সাথে আরো অনেক ডিটেল।

ম্যানাজার গান দেখে ভয়ার্ত দৃষ্টিতে সামনের দুজন ব্যাক্তির দিকে তাকালেন। অফিসার তমাল কিছু টা ভরকে গেলেন কারন সে দেখেছে সব সময় পকেটে টাকা দিয়ে কাজ হাসিল করতে। প্রথম বার দেখছে সে বন্দুক ও কাজে লাগায়। অফিসার তমালের চাহুনি টা বেশ বুঝতে পারছে নূর মোহাম্মদ,, সে মুচকি একটা হাসি দিল গোপনে তার পর মুখে কাঠিন্য ভাব নিয়ে এসে বললেন,পাশে যাকে দেখছেন সে কিন্তু সাধারণ জনগণ মনে করবেন না,, পুলিশ অফিসার তমাল,,, অফিসার খানিকটা ভাব নিলেন, তার নাম বলাতে।

ম্যানাজার শুকনো একটা ঢোক গিলে হাসার চেষ্টা করলেন, তার পর মুখে মিথ্যে বাধ্যকতা টেনে বললেন,,স্যার আমি বুঝতে পারিনি। মাফ করবেন আমায়। আমি সত্যি জানি না স্যার । আজম ১৫দিন থেকেই কাজে আসেনি। ওকে অনেক বার ফোন দিয়েছিলাম কিন্তু ফোন ও রিসিভ করেননি।

নূর মোহাম্মদ, চিন্তিত স্বরে বললেন,গত এক মাস ধরে আজমের ভিতরে কি কোন পরিবর্তন লক্ষ্য করেছিলেন,সারা বছর মদ খাওয়া ব্যাক্তি হঠাৎ মদ খাওয়া ছেড়ে দিলেন, কেন??? হ্যাঁ স্যার বিষয় টা আমিও দেখেছি,, অনেক খুশি খুশি থাকতো,আর মাঝে মাঝে বলতো আমি নিজেই একটা ক্লাব খুলবো। অনেক টাকা আসবে কিছু দিন পর। কথা গুলোকে খুব একটা গুরুত্ব দিতো না কেউই কারণ বয়স হয়েছে ভুল ভাল কি বকছে বকুক ‌। নূর মোহাম্মদ তখন কিছু একটা ভেবে বললেন, আচ্ছা এখানে কি কেউ AHK ব্রান্ডের জুতা পড়ে আসে??? আর এই ব্লেজারের বুতাম টা দেখেন তো!! কারো ব্লেজারে কি এমন বুতাম দেখেছেন??? ।।

ম্যানাজার বুতাম টা হাতে নিয়ে কিছু ক্ষন ভেবে বললেন। হয়তো দেখেছি, কিন্তু ঠিক মনে পড়ছে না। আর AHK. ব্রান্ডের জুতা পড়ে কত জন আসছে যাচ্ছে তা আমরা কি করে দেখবো স্যার। কারো পায়ের দিকে তাকানোর ফুরসৎ আছে নাকি বলেন স্যার।

নূর মোহাম্মদ আশাহত হলেন,কি যে প্যাচ এই কেসে কোন কুল কিনারা করতে পারছেন না। নূর মোহাম্মদ মুচকি হেসে বললেন, আচ্ছা ধন্যবাদ আপনাকে এখন তাহলে উঠি আমরা।

একটু থামুন স্যার,, AHk ব্রান্ড মানে আবদুল হামিদ খানের ব্রান্ড তাই না?? নূর মোহাম্মদ কপালে ভাঁজ টেনে বললেন হ্যাঁ। আপনি কি কিছু বলতে পারবেন??? আরে জুতার কথা ছাড়ুন স্যার,, কম্পানির মালিকের ছেলেই তো ক্লাবে আসে মাঝে মাঝেই। মিস্টার মেহমেত খান।

নূর মোহাম্মদ মৃদু কুঁচকে বললেন,,কিহ?? উনার মত মানুষ এই ক্লাবে আসে। শুনেছি অনেক ভালো এক জন মানুষ আবদুর হামিদ খান তার ছেলের ও নাম ডাক ও তো ভালোই। আরে স্যার ধনীদের ব্যাপার সেপার কেমনে বুঝবেন। তা ঠিক বলেছেন। আর হ্যাঁ স্যার প্রথম যেদিন,মেহমেত খান কে ক্লাবে আজম দেখেছিলেন সেদিন খুব তাড়াতাড়ি ছুটি নিয়ে বাসায় চলে গেছিলেন। মেহমেতের সাথে কি আরো কেউ ছিল??? জ্বি স্যার,,আর একজন ব্যাক্তি কখনো মুখ দেখিনি,তবে ক্যাসিনো তে পাক্কা একজন খেলোয়াড়। মাঝে মধ্যেই দুই জন খেলতে বসতো। মেহমেত খানকে খুব একটা আগ্রহ দেখা যেতো না এই খেলায়।

নূর মোহাম্মদের মুখে হাসি,, অফিসার তমাল গাড়ি চালাচ্ছেন। তার দিকে তাকিয়ে বললেন
কি বুঝলে খুনি কি মেহমেত??? হতেও পারে আবার নাও হতে পারে,,তবে ইনশাল্লাহ কেস প্রায় ৭৯% solved মনে হচ্ছে। অফিসার তমাল মুখে হাসি টেনে বললেন,,গান দিয়েও কাজ করো তাহলে তুমি??? নূর মোহাম্মদ দাঁত বের করে হাসলেন, তার পর বললেন,যাদের টাকার প্রয়োজন তাদের টাকা দিয়ে কাজ হাসিল করতে হয়। আর যারা অনেক টাকার মালিক তাদের জানের ভয় দেখে কাজ হাসিল করতে হয় বুঝলেন স্যার।



দুপুর ১২ বাজে, মরিয়ম বিছানায় শুয়ে শুয়ে বই পড়ছে, অসময়ে বই পড়তেও ভালো লাগছে না তার । বইয়ের নাম ক্রসেড ও সাইমুম সিরিজ,,, খুবই ইন্টারেস্টিং বই। তবুও মন বসছে না পড়ায় … মেহমেত অফিসে গিয়েছে,আর মিহি স্কুলে,বাসা এক দম ফাঁকা,,,

হঠাৎ মরিয়মের ফোন বেজে উঠলো ,,বইয়ের পাতা থেকে মুখ ফিরিয়ে, ফোন হাতে নিয়ে দেখে আননোন নাম্বার,,, ফোন রিসিভ করে সালাম দিল মরিয়ম, তার পর জিঙ্গাসা করলেন,,কে বলছেন,,অপর প্রান্তের ব্যাক্তি সালামের জবাব নিয়ে বললেন, আমি শাপলা বলছি লালকুঠির থেকে
চিনতে পেরেছো??

লালকুঠির নাম শুনেই মরিয়মের বুক টা ধুক করে উঠলো। তার পর উত্তেজিত হয়ে বললেন,,হ্যাঁ চিনতে পেরেছি আম্মা বললেন, আম্মা ডাক টা শাপলার মনে এক পশলা বৃষ্টির মত মনটাকে সজীব করে তোলে। শাপলা নিজের ঠোঁট প্রশত্ব করে বললেন,, তুমি কি এক বার লালকুঠিরে এখনি আসতে পারবে??? সেই মুখোশ ওয়ালা ব্যাক্তির কিছু তথ্য আমরা সংগ্রহ করেছি, তোমার হয়তো এইসব তথ্যে অনেক উপকৃত হবে।

মরিয়ম কিছু একটা ভেবে বললেন,,হ্যাঁ আমি যেতে পারব,এখনি বের হচ্ছি।

শাপলা ফোন কেটে দিল,, মরিয়ম মিহিকে নিয়ে বেপাকে পড়ল এক ঘন্টা পর মেয়েটা বাসায় ফিরবে তাকে না দেখলে তো অনেক কান্নাকাটি করবে আর বাসায় তো কেউ নেই। হঠাৎ মনে পড়ল। মিলন চাচা কে ফোন দিয়ে মিহি কে নেহালের বাসায় পৌঁছে দেয় যেন। সে একটা কাজে বের হচ্ছে,ফিরতে দেরি হবে। কাজ শেষ করে মিহি কে নেহালের বাসা থেকে নিয়ে আসবে।

মরিয়ম তারাতারি বোরখা হিজাব নিকাব পড়ে তৈরি হয়ে,, গাড়ির উদ্দেশ্য বের হলো। নিজেই গাড়ি ড্রাইভ করছে মরিয়ম আর ভাবছে,,সেই মুখোশ ওয়ালা ব্যাক্তি কে!! সেটা জানার জন্য মন ছটফট করছে। খুব দ্রুত ড্রাইভ করছে সে,,২ঘন্টার মধ্যে লালকুঠিরে পৌঁছে গেল সে।

শাপলার সামনে বসে আছে মরিয়ম। শাপলা মরিয়মের হাতে একটা পেপার ধরিয়ে দিলেন,,২০১২ সালের পেপার। একটা খুব বড় আর্টিকেল ছাপা হয়েছে, শিরোনাম হলো,ঢাবি বিশ্ববিদ্যালয়ের রেকর্ড ভাঙা রেজাল্ট করা সেই নিশান আজ জেল হাজতে বন্দি।

আর্টিকেল না পড়েই শাপলার দিকে তাকালেন তখন শাপলা নিজের ফোন থেকে নিশানের আর মেহমেতের ছবি বের করলেন। অনেক পুরোনো ছবি, দুই জন গলায় হাত দিয়ে রয়েছে,,
তার পর শাপলা বললেন ১০বছর কেটে গত ৮মাস আগে ছাড়া পেয়েছে নিশান।

চলবে ____????
সকলে পেজটা ফলো করবেন। গল্পটা কেমন লাগছে কমেন্ট করে জানাবেন।
ইনশাল্লাহ আগামী পর্বে নিশানের বিষয়ে কিছুটা খোলসা করা হবে। ধন্যবাদ সবাইকে,,যারা ধৈর্য সহকারে এখনো গল্প টা পড়ছেন 🙂🙂

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here