ক্যাসিনো পর্ব -১০

#ক্যাসিনো ©লেখিকা_(মায়া)
#পর্ব_১০

১০বছর জেল খাটা আসামীর সাথে মেহমেতের কি সম্পর্ক??? মরিয়ম ছবিটার দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইল কিছুক্ষন। তার পর খবরের কাগজ টার দিকে তাকালো এক বার।

শাপলার দিকে মরিয়ম ছোট ছোট চোখ করে বললেন,,মেহমেতের সাথে এই নিশানের কিসের সম্পর্ক??? সেটা আমি বুঝতে পারছি না। তবে দেখে মনে অবশ্যই বন্ধুত্বের সম্পর্ক ছিল। মরিয়ম অস্থির কন্ঠে জিজ্ঞেস করলেন আবার,এই ছবি এই পেপার পেলেন কোথায় আপনি???

শাপলা দ্রুত কন্ঠে জবাব দেয়,,কাল রাত ঠিক ১০টা নাগাদ, এক জন ব্যক্তি আসে,কালো রঙের শার্ট, প্যান্ট,মাস্ক পড়া সাথে মাথায় কেপ পড়েছে। চোখ দুটো ও মাথার কেপ জন্য দেখা যাচ্ছে না। এমনিতেই রাত হলেই লালকুঠিরে যুবক থেকে বয়স্ক পর্যন্ত পুরুষদের অভাব হয় না। ছেলেটা সোজা শাপলার কাছে এসে বসলো আরামে। শরু চোখে শাপলা ছেলেটার দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করলেন, বলেন সাহেব কি ধরনের মেয়ে চাচ্ছেন?? ছেলেটা গম্ভির মুখে উত্তর দিল,২১,২২ বছরের কোন মেয়ে লাগবে, এখানকার সব থেকে সুন্দরী মেয়ে কে চাই ,যত টাকা লাগে দিবো,তবে মেয়েটিকে ফ্রেশ হতে হবে এক দম, অন্য কেউ আর আগে যাকে ছুঁয়ে দেখেনি। শাপলা কিছুক্ষন হাসলো তার পর জবাব দিলো। ২২ বয়সের এক সুন্দরী তরুণী এখানে আছে, কিন্তু একে বারে ফ্রেশ কুৎসিত মেয়ে ও নেই, কেন পতিতালয়ে তো রোজই ৪, ৫ মেয়ে নতুন আসে শুনেছি, তাহলে নেই কেন??

সেসব আপনার না জানলেই চলবে সাহেব!! এখন আপনি যদি সুন্দরী কাউকে চেয়ে থাকেন তাহলে দেখছি,কি বলছেন!! ঠিক আছে , নিয়ে আসুন দেখি আগে, শাপলা তখন তার এক পুরুষ চ্যালা কে ডেকে বললেন, মহুয়া কে নিয়ে আয়। তার পর শাপলা ছেলেটার দিকে তাকিয়ে মনে মনে ভাবলো এই কন্ঠস্বর এর আগেও শুনেছে, তার পর আবার ভাবলো কত পুরুষই তো আসে এখানে, হবে হয়তো কেউ। হুট করে লক্ষ্য করলো যে ছেলেটার মাথার কেপ টা ভালো করে ঠিক করছে তখন স্পষ্ট তার চোখ দেখতে পাই। এই চোখ ওয়ালা ব্যাক্তি তো মেহমেত সাহেব কে এখানে নিয়ে এসেছিল, শাপলার চোখ দুটো নিমিষেই প্রশস্ত হয়ে যায়। এই ছেলে কেই তো মরিয়ম খোঁজ ছিল। এসব কিছুর ভাবনায় মহুয়া কে নিয়ে আসা হলো, ছেলেটার মহুয়া কে দেখে পছন্দ হলো এক রাতের জন্য ডিল হলো ২০হাজার টাকা, কিন্তু ঝামেলা বাঁধলো যখন ছেলেটি মহুয়া কে নিজের বাসায় নিয়ে যেতে চায়। শাপলা কখনো লালকুঠিরের বাহিরে মেয়ে পাঠান না। কিন্তু এই ছেলের কিছু খোঁজ জানার জন্য যেতে দিতে রাজি হলো এবং amount করা হলো ৩০হাজার।

মহুয়া কে তার সাথে যেতে দেওয়ার আগে একেলা ভাবে কিছু কথা বলল,যে করেই হোক ছেলেটার একটা ছবি উঠিয়ে নিয়ে আসতে এবং কোথায় থাকে কি করে এমন নানান খোঁজ সে ছেলেটার কাছে থেকে জানতে বলল,,,

মহুয়া কে নিয়ে নিশান ছোট একটা ফ্লাটে উঠলো, এবং ঘরে পৌঁছে যখন নিজের পোশাক খুলতে উদ্ধৃত হলো, নিশান রাগি গলায় বলে পোশাক কেন খোলছেন এখানে??? মহুয়া যার নয় তাই অবাক হলো। মহুয়ার যত টুকু আজ পর্যন্ত দেখেছে। কোন পুরুষ তার কাছে গেলে কোন কথা ছাড়াই, আগে জামা কাপড় খুলতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে আর এই পুরুষ বলে কি?? এতো টাকা দিয়ে কি তাকে শুধু বসিয়ে রাখার জন্য নিয়ে আসলো নাকি??

মহুয়া হাবলার মত চেয়ে আছে নিশানের দিকে, তার পর নিশান একটা ব্যাগ থেকে মেরুন রঙের শাড়ি বের করে মহুয়ার হাতে দিয়ে ওয়াশরুমে গিয়ে শাড়িটা পড়ে আসতে বলল, মহুয়া শাড়ি টা হাতে নিয়ে বলে, ওয়াশরুমে কেন যেতে হবে এখানেই আপনার সামনে পড়ি সাহেব??

নিশান রাগান্বিত চেহারা বানিয়ে বললেন,যা বলেছি তা করো। আগ বাড়িয়ে কিছু করতে যেও না। যাও এখন।

মহুয়া বিস্ফোরিত মুখ বানিয়ে বিড় বিড় করতে করতে ওয়াশরুমে গেল। নিশানের এমন আচারনে মহুয়া অবাক হচ্ছে শুধু। শাড়ি টা পড়ে মহুয়া রুমে প্রবেশ করে দেখে, নিশান সোফায় বসে ড্রিংক করছে,আর টেবিলে রাখা বই জাতীয় কিছু উল্টিয়ে উল্টিয়ে দেখছে। মহুয়া নিশানের এটেনশন পাওয়ার জন্য,গলা খাকারি দিল। নিশান সামনে তাকালো দুধে আলতা গায়ের রঙে মেরুন রঙের শাড়ি টা তে মহুয়া অনেক আবেদনময়ী লাগছে। পিঠ ছড়ানো চুল গুলো হালকা ফেনের বাতাসে উড়ছে। যে কোন পুরুষের মনে ঝড় তোলার জন্য তার চোখ দুটোই যথেষ্ট। কিন্তু নিশান স্বাভাবিক ভাবেই মহুয়া কে আগা গোড়া খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখছে। বক্ষের অর্ধেকটায় শাড়ি নেই,ফর্সা উদর খানি ও অর্ধেক টা বের করা।

নিশান ঘোর লাগানো দৃষ্টিতে তাকিয়ে মহুয়া কে পাশে বসালেন। মহুয়ার চোখে মুখে কোন লজ্জার নেই। তা না থাকাটাও স্বাভাবিক ।
নিশান কিছু ক্ষন মহুয়া কে দেখে ড্রিংকের গ্লাসে আর এক বার চমক দিয়ে জিজ্ঞেস করলেন, খাবার খেয়েছো রাতের?? মহুয়া এই কথাটাই ভিষন ভাবে হচকচিয়ে যায়। এক জন পতিতা কে টাকা দিয়ে ভারা করে কখনো কোন পুরুষ কি জিজ্ঞেস করতে পারে যে সে খাবার খেয়েছে কিনা?? মহুয়া অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইল। নিশান মুচকি হেসে উঠে গেল, রান্না ঘরে হাড়ি পাতিলের শব্দ পাওয়া যাচ্ছে, মহুয়া কৌতুহল বশত রান্না ঘরে গিয়ে দেখে, নিশান রুটি তৈরি করছে, অনেক ক্ষন মহুয়া নিশানের নিকে নির্বোধের মতো তাকিয়ে রইল। প্রায় ২০মিনিট পর খাবার হাতে নিশান রুমে ফিরল। মহুয়া ভাবান্তরের মত দক্ষিনা জানালার গ্রিল ধরে দাঁড়িয়ে রয়েছে। বাহিরের আকাশে বাঁকা চাঁদ উঠেছে,লক্ষ তারার মেলা বসেছে,সেই বাঁকা চাঁদের মিটিমিটি আলোয় মহুয়াকে কোন অপ্সির থেকে কম লাগছে না।

মহুয়ার সামনে রুটি আর ডিম পোঁচ এর প্লেট সামনে ধরে বলল,,ধরো খেয়ে নাও রাত অনেক হয়েছে, মহুয়া কোন কথা না বলে খাচ্ছে। আর আড়চোখে বার বার নিশানের দিকে তাকাচ্ছে, মহুয়ার চোখের কোণে পানি জমে উঠেছে। কেউ কখনো পতিতা বলে সম্মান করেনি, এভাবে কখনো তার জন্য খাবার বানাইনি। যখন কৈশোর বয়সে পা রাখলো,মা মারা গেল,বাবা মারা গিয়েছেন মহুয়ার বয়স যখন তিন বছর,,মা আবার দ্বিতীয় বিয়ে করে তখন থেকে জীবন টা তার বিষিয়ে গেছে,মা যাওয়ার পর লালকুঠিরে বিক্রি করে দেয় তাকে। তার পর থেকে ভালোবাসা, আদর,ভালো লাগা, ইচ্ছে বলতে ছিটে ফোটা ও নেই তার জিবনে।

নিশানের ছোট কাজ মহুয়ার জিবনে যেন মরুভূমিরের মাঝে এক পশলা বৃষ্টির মত ঝরে পড়লো।

নিশান পাগলের মত ড্রিংক করছে,,এক দম মাতাল অবস্থা প্রায়। মহুয়া যেটাকে বই মনে করেছিল তা আসলে বই নয় এক টা এ্যালবাম সেটা। নিশান এ্যালবাম ঘেঁটে ঘেঁটে একটা ছবি বের করলেন,,একটা তরুণীর ছবি,,হাস্যজ্বল মাখা চেহারা, চাপা গায়ের রঙ হলেও মায়াবী চেহারার অধিকারী, মেরুন রঙের শাড়ি পরিহিত। নিশান এক ধ্যানে ছবিটি দেখায় মত্ত হয়ে পড়লো। মহুয়া বুঝতে পারলো নিশ্চই এই মেয়ে তার অতি বিশেষ কেউ। মেরুন রঙের শাড়ি দেখে বুঝলো,হয়তো তার প্রিয়সীর শূন্যতা লাঘব করার জন্য তাকে এখানে নিয়ে আসা হয়েছে,আর তার মত করে দেখার জন্য এই শাড়ি পড়তে বলা হয়েছে। হঠাৎ এ্যালবামের পাতা উল্টিয়ে উল্টিয়ে দেখতে গিয়ে একটা ছবি মেঝেতে পড়ে যায়। মহুয়া তা মেঝেতে ঝুঁকে উঠিয়ে নিল। বিস্মিত চোখে ভালো করে দেখলো মেহমেত সাহেব আর নিশান,,হুট করেই ছবি টা মহুয়ার হাত থেকে খপ করে নিয়ে নেই। আর চোয়াল শক্ত করে ছবিটি কে দুমরে মুচরে দূরে ফেলে দেয়। দেখেই বুঝতে পারল যে এই মানুষ টার প্রতি তার ভিষন ক্ষোভ।

মহুয়া মেহমেত আর ঐ মেয়েটির ছবির কথা জিজ্ঞেস করলো কিন্তু কোন উত্তর দিলো সে। মূর্হতেই রাগে গজগজ করতে করতে আর এক গ্লাস ড্রিংক সে মুখে পুরে নিল। তার আক্রোশে ফুঁসতে ফুঁসতে মহুয়া কে টেনে বিছানায় স্বজোরে ফেলে দেয়। তার পর ক্ষুধার্ত হায়নার মত ঝাপিয়ে পড়ে মহুয়া বুকে। কিছু ক্ষনের ব্যবধানে নিশানের এমন ভয়াবহ রূপ দেখে মহুয়া ভয় পেয়ে যায়। কিন্তু নিশান তেমন কোন হিংস্রতায় দেখালো না। উল্টো নরম এবং ঘোর লাগানো কন্ঠে বললেন,, আমি কি তোমার কপালে একটা আলতো ভাবে ঠোঁট ছোঁয়াতে পারি?? মহুয়া কিছুই বলল না শুধু অবাক চোখে নিশানের দিকে তাকালো। তার পর মহুয়ার কপালে ছোট্ট করে ঠোঁট ছোঁয়ালো। তার পর মহুয়ার উদর থেকে শাড়ি সরিয়ে তাতে মাথা ঠেকিয়ে ঘুমিয়ে পড়ল। মহুয়া কিছুই বুঝতে পারলো না নিশানের এমন আচারনে। কিন্তু সব থেকে মহুয়ার ভালো লেগেছে নিশানের কপালে ঠোঁট ছোঁয়ানো । প্রথম কোন পুরুষের স
স্পর্শে ভালো লাগা কাজ করেছে।

গভীর রাতে হঠাৎ মহুয়া শুনতে পাই কেউ হুহু করে কাঁদছে। তার চোখের পানিতে ভিজিয়ে যাচ্ছে তার উদর। মহুয়া অস্থির হয়ে নিশান কে জিজ্ঞেস করলেন,,কি হয়েছে আপনার?? আপনি কাঁদছেন কেন?? এই যে শুনছেন?? হুট করে নিশান মহুয়া কে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে ধরে অস্থির হয়ে বলছে,,শাহানা প্লিজ আমাকে ছেড়ে যেওনা!! তোমার কিছুই হবে না আমি তোমার কিচ্ছু হতে দিবো না। শাহনা!! মহুয়া বুঝতে পারলো নিশান কোন স্বপ্ন দেখছে। ভোর বেলা মহুয়ার ঘুম আগলা হয়ে গেলে নিশান কে বুকের মাঝে থেকে সড়িয়ে সেই দুমড়ে মুচরে যাওয়া ছবি টার কয়েক পিক উঠিয়ে নিল। তার পর সেই এ্যালবাম টা ঘেঁটে ঘেঁটে দেখতে লাগলো আর শেষ পাতায় ২০১২ সালের একটা পেপারের টুকরা পেল। পেপারের টুকরা টা পড়ে কিছু ক্ষনের জন্য মাথা টা হ্যাং হয়ে গেল মহুয়ার। পেপারের সারমর্ম হলো, নিশান ঢাবি বিশ্ববিদ্যালয়ের টপ করা এক জন ছাত্র, কিন্তু ভালো ছাত্র হওয়ায় সে মেয়েদের ফাঁসিয়ে তার সাথে শারীরিক সম্পর্ক করতো। সাথে অনেক খারাপ অভ্যাস তার রয়েছে তার মধ্যে অন্যতম হলো সে জুয়া খেলে টাকা কামাতো এবং বিভিন্ন নেশা দ্রব্য গ্রহণ করতো। আর এমন নেশা সে আরো অনেক ছাত্র ছাত্রীদের কাছে সে বিক্রি করতো। সর্বশেষ যে আরোপ তার নামে এসেছে তা হলো, শাহানা নামের এক যুবতী মেয়ে প্রেমের জালে ফাঁসিয়ে তাকে বিভিন্ন ভাবে ফ্রোস করে শারীরিক সম্পর্ক করার জন্য উদ্ধৃত করে কিন্তু সে রাজি হয় না। এবং এমনি এক দিন তাকে নির্জন এক বাসায় নিয়ে যায় ঘুরতে যাওয়ার নাম করে। তখন শাহানা কে নেশা দ্রব্য গ্রহণ করায় জোর করে আর অতিরিক্ত নেশা অবস্থায় তাকে ধর্ষণ করে নিশান এবং এক সময় মাত্রাতিরিক্ত নেশা সে নিজেও করে ফেলে এবং উন্মাদের মত তাকে শারীরিক এবং মানসিক অত্যাচার করতে থাকে এক পর্যায়ে শাহানা কে সে হত্যা করে। পরবর্তীতে পুলিশ তদন্ত করে নিশান কে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। এবং বিভিন্ন প্রমানার্থে তাকে যাবতজীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

মহুয়া বুঝতে বিস্ফোরিত নয়নে নিশানের দিকে এক দৃষ্টি ফিরালো। চাপা কষ্ট যেন সে অনুভব করলো। কেন জানি তার বিশ্বাস হচ্ছিল না এই কাগজের কথা। ধপ করে সোফায় বসে পড়ল সে। কাল রাতে যেভাবে নিশান শাহানার জন্য অস্থির অনুভূতি দেখলো সেটার মনে হচ্ছে এটা মিথ্যে যে নিশান এমন কাজ শাহানার সাথে করেছে।

নিশানের ঘুম ভেঙ্গে গেল,মাথা টা প্রচুর পরিমাণে ব্যাথা করছে কালকে নেশার রেশ এখনো কাটেনি । মাথা টা বড্ড ঝিমঝিম করছে । হঠাৎ মনে পড়ে কাল রাতের কথা সে একটা মেয়ে নিয়ে এসেছিল। বিছানায় চোখ বুলালো কিন্তু বিছানায় কাউকে না দেখতে পেয়ে চট করে উঠে বসল নিশান। তার সোফায় দিকে দেখলো মহুয়া বসে রয়েছে। হাতে এ্যালবাম আর পেপারের টুকরা টা। মহুয়া এ্যালবামের একটা ছবি খুব ভালো করে লক্ষ্য করছে সে,শাহানা আর নিশানের একসাথের ছবি,,দেখে মনে হচ্ছে,শাহানা বউ সেজেছে।

তখন নিশান রেগে হুংকার গলায় বলল। কারো অনুমতি ছাড়া অপরিচিত কারো জিনিসে হাত দিতে নেই। এটুকু কি জানো না তুমি। নিশান খাট থেকে এলোমেলো পায়ে মহুয়ার কাছে গিয়ে এ্যালবাম আর পেপারের টুকরা টা হাত থেকে কেড়ে নিল। মহুয়া অপরাধীর মত মাথা নিচু করে নিল এবং দুঃখিত বলল। নিশান শান্ত স্বরে জবাব দিলেন। ঠিক আছে কিন্তু নেক্সট টাইম এমন কাজ কখনোই করোনা।

তার পর নিজের হাত ঘড়িতে সময় দেখল ৮টা বাজতে চলেছে। ইশ্ এতো ক্ষন ঘুমিয়েছে সে। মহুয়া কে লালকুঠিরে দিয়ে আসতে হবে। মহুয়ার দিকে না তাকিয়ে বললেন, তারাতারি ফ্রেশ হয়ে আসো।

মহুয়া কন্ঠ খাদে ফেলে বলল, আচ্ছা এই পেপারের কথা গুলো কি সত্য??
আর শাহানার সাথে সত্যি কি এমন টা হয়েছিল,, নিশান চোখ বুজে নিল অসহ্য কোন কষ্ট কে পরাস্ত করার চেষ্টা করছে যেন। তার পর চোখ খুলে স্বাভাবিক গলায় জবাব দিলো,,হ্যাঁ আমার স্ত্রীর সাথে এমন টাই হয়েছিল!! কিন্তু আসল অপরাধী অন্য কেউ ছিল।
আর দয়া করে গভীর কোন প্রশ্ন করো না ওয়াশরুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে এসো তোমাকে তোমার জায়গায় পৌঁছে দিতে হবে। মহুয়া কোন কথা না বলে ফ্রেশ হতে চলে গেল। তার পর দুজনে বাসা থেকে বেরিয়ে গাড়িতে উঠলো। মহুয়া কে নিয়ে গিয়ে একটা রেস্টুরেন্টে ঢুকলো তার পর নাস্তা করলো দুই জনেই। মহুয়ার মাথায় হাজার চিন্তার রেশ । এতো মানুষের সাথে সে রাত কাটিয়েছি,এতো মানুষ কে সে দেখেছে, কিন্তু নিশানের মত রহস্যময় পুরুষ তার জীবনে বুঝি একটাই দেখলো। যদি সে এমন কিছু নাই করে থাকে তাহলে জেলে কিভাবে গেল?? আর যেখানে যাবতজীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল, সেখানে নিশান ১০বছর পর জেল থেকে ছাড়া পেল কিভাবে??? শাহানার সাথে কি হয়েছিল?? আর নিশানের সাথেই বা কি হয়েছিল?? মেহমেত কেই বা কেন এতো ঘৃনা করছে নিশান???

মহুয়া কে লালকুঠিরে পৌঁছে দেওয়া হয়। কিন্তু কেন জানি ঐ জীবনে আর ফিরে যেতে ইচ্ছে করছে না। একটা দিনের এই স্বাভাবিক জীবন টাই লোভ ধরে গেল তার। আর সব থেকে বড় কথা নিশান কে নিয়ে ভিষন কৌতুহলী হয়ে উঠলো সে। গাড়িতে আসার সময় বার কয়েক ভেবে ছিল সে যে নিশান কে জিজ্ঞেস করবে কিন্তু সাহসে হয়ে উঠলো না যদি রেগে যায়।

মরিয়ম এতো ক্ষন মহুয়ার কথা গুলো নির্বাকের মত শুনছিল,,মেহমেত তো নিজেও ঢাবি ভার্সিটির ছাত্র ছিলেন,,কি এমন ঘটেছিল ২০১২ সালে???

চলবে _____?????

সকলে পেজটা ফলো করবেন আর এই পর্বটা কেমন লাগলো জানাবেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here