খড়কুটোর বাসা পর্ব -০৬+৭

#খড়কুটোর_বাসা
#পর্বঃ৬
#Jhorna_Islam

প্রতিটি ভোর মানে একেকটা নতুন দিনের সূচনা।পাখির কিচিরমিচির ও মোরগের ডাকে ঘুম ভেঙে যায় যুথির। চোখ পিটপিট করে তাকায়। আড়মোড়া ভেঙে উঠে বসে।
পাশে তাকিয়ে দেখে ইরহান গুটিশুটি মেরে শুয়ে আছে। হয়তো শীত করছে।ভোর হলে এমনিতেও শীত শীত ভাব থাকে।

যুথি পাশে থাকা কাঁথাটা ইরহানের গায়ে ভালো করে দিয়ে দেয়। তারপর ইরহানের দিকে কিছু সময় নিয়ে তাকিয়ে থাকে।

কাল ইরহানের বুকে পরে যখন যুথি কাঁদছিলো,,ইরহান তখন কতো শান্তনা দিতেছিলো।মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে ছিলো। কখন যে যুথি তার বোকা পুরুষের বুকে পরম শান্তিতে সে ঘুমিয়ে গিয়েছিল সে নিজেও জানেনা।

এখন সময় ভোর সাড়ে পাঁচটা যুথি উঠে ওয়াশরুমে চলে যায়। দাঁত মেজে হাত মুখ ধুয়ে বের হয়ে আসে। তারপর নামাজ টা পরে নেয়।এখন কেমন শান্তি শান্তি লাগছে। বাইরে গিয়ে হাটাহাটি করতে মন চাচ্ছে। কারণ যুথি প্রতিদিন খুব ভোরেই ঘুম থেকে উঠে। তারপর একটু ঘুরতে বের হয়।

ঘুরে এসে রান্না বান্না করে। যুথির দাদি অন্যর বাড়িতে কাজ করতে চলে যায়। তাই বাড়িতে সব যুথিকেই করতে হয়। যুথি কতো করে দাদিকে বলতো এবার তুমি কাজ করা বাদ দাও দাদি বিশ্রাম নাও।অনেক তো কাজ করেছো।এবার আমি কিছু করি।

দাদি তখন বলতো খবরদার যুথি এমন চিন্তা মাথায় আসলেও ঝেড়ে ফেল।আমি যতোদিন আছি ততোদিন মানুষের বাড়িতে তোকে কাজ করতে দিবো না।

যুথি তখন বলতো আমিকি বলেছি তোমায় মানুষের বাড়িতে কাজ করবো?

যুথির দাদি কথা শোনা তো দূর কিছু বলতেই দিতো না।এটা বোঝাতে পারতো না যুথি যে কোনো ভালো কিছু করতে পারবে।

কালকের রাখা প্লেট নিয়ে রুম থেকে বের হয়ে আসে যুথি। আশে পাশে তাকিয়ে রান্না ঘরের দিকে চলে যায়। এখনো একটা ও ঘুম থেকে উঠে নি।

যুথি কি করবে ভেবে পাচ্ছে না। এমন করে বসে থাকতে ও ভালো লাগছে না।

সকাল সকাল উঠলে এমনিতেই তারাতাড়ি খিদে লেগে যায়।
বাড়ির কারো উঠার নাম গন্ধ নেই।আটটা নয়টার আগে যে কেউ ঘুম থেকে উঠবেনা বুঝে গেছে যুথি।সব গুলো জ’মি’দারের বে’টি।

এদের কথা না ভেবে নিজেদের জন্য সকালের নাস্তা তৈরি করে আগে খেয়ে নিবে ঠিক করে নেয়। তারপর ভাবতে থাকে কি করা যায়। তখনই চোখের সামনে আটার ব’য়াম দেখতে পায়। ভেবে নিলো পরোটা আর ডিম ভেজে নিবে।অন্য কিছু করতে গেলে বেশি সময় লাগবে এখন আপাতত এগুলোকে দিয়ে পেট ঠান্ডা করবে। যেই ভাবা সেই কাজ ঝটপট আটা গুলিয়ে দুই জনের জন্য চারটা রুটি বেলে নেয়।তারপর ফ্রিজ থেকে দুটো ডিম নিয়ে ভেজে নেয়। পরোটা আর ডিম ভেজে রান্না ঘর টা আগের মতো গুছিয়ে রাখে যেনো বুঝাই না যায় এখানে অন্য কেউ রান্না করেছে।

খাবার নিয়ে নিজেদের রুমের দিকে যেতে যেতে মনে মনে আওড়ায় তোমরা আমাদের কথা ভাবোনি আমিও ভাববো না।তোমরা যদি ভালো হইতা এতোসময়ে আমি সব করে তোমাদের মুখে খাবার ধরতাম।ঘুম থেকে উঠেই সামনে খাবার পাইতা।

খাবার নিয়ে রুমে ঢুকে দেখে ইরহান রুমে নেই।বাথরুম থেকে পানির শব্দ ভেসে আসছে। যুথি প্লেট টা রেখে খাটে বসে । কিছু সময় পরই ইরহান বেরিয়ে আসে যুথির দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসে।

খাবারের প্লেটের দিকে চোখ পরতেই বেশ অবাক হয়। এতো সকাল সকাল খাবার? সবাই উঠে গেছে? কিন্তু ওদের তো নয়টার আগে কারো ঘুম ই ভাঙে না।

আমি করে নিয়ে এসেছি। ওরাতো ন’বা’বের বংশের লোক। আসেন খাবেন একদম ওদের কথা আর ভাববেন না।

এখন খেতে ইচ্ছে করছে না যে।

আসেন আমি খাইয়ে দিচ্ছি। তারপর একটু বাইরে থেকে দুজন ঘুরে আসবো। এটুকুই তাছাড়া খেতে অনেক দেরি আছে এগারোটার আগে যে খাবার জুটবে না জানা আছে।

ইরহান আর কিছু বলেনি দুইজন এক সাথে খেয়ে নেয়। তারপর বাড়ি থেকে বেরিয়ে পরে হাঁটার জন্য।

দুইজন সকালের পরিবেশ উপভোগ করছে নানান ধরনের কথা বলছে। কথার এক পর্যায়ে ইরহান জানায় সে ঠিক করে এসেছিলো দেশ ছেড়ে আর যাবে না।

অনেক তো অন্য দেশে ছিলো এখন নিজের দেশেই কিছু একটা করার চিন্তা ভাবনা।যদিও তার মাকে ছাড়া এই বিষয় টা কাউকে বলেনি। তাছলিমা বানু কে বলার পর চুপ ছিলো কিছু বলেনি। দেশে আসার পরের দিন টুকটাক কথা বলার মাঝখানে বলেছিলো। টাকা পয়সা তো অনেক করেছে।ব্যাংকে যে টাকা আছে তা দিয়ে অনায়াসে কিছু একটা করতে পারবে।

যুথি সব শুনে বলে,,টাকা তো সব ব্যাংকে তাই না?

— হুম।

— কার নামে?

— ইরহান বলে মায়ের নামে।

যুথি তাচ্ছিল্যের হাসি হাসে।আপনার কি মনে হয় উনি টাকা দিবে আপনাকে?

— ইরহান থমকে যায়।আসলেই তো দিবে না। কাল তো টাকা পয়সা নিয়েই ওরা ভাগাভাগি করছিলো।তাছলিমা বানু তো স্পষ্ট বলল সব তার নিজের নামে করেছে যেনো ইরহান না পায়।

ইরহানের ভাবনার মাঝেই বলে৷ উঠে,,,, এখনো বুঝলেন না আপনার সাথে এখন কেন এমন ব্যবহার করছে? আপনি দেশে থেকে যাবেন।তাদের আর বিদেশি টাকা পয়সা পাওয়া হবে না। আপনার টাকায় রাজত্ব করতে পারবে না।আপনি দেশে থাকলেই তো সমস্যা সব কিছু তে ভাগ বসবে।

আপনাকে মিথ্যা বলে নানান অজুহাত দিয়ে টাকা পয়সা নিতে পারবে না।

জানি আপনি আর একটা টাকা ও পাবেন না ওদের থেকে। তবুও আজই সুযোগ বুঝে চেয়ে দেইখেন।

তারপর দুইজন বাড়ির রাস্তা ধরে।

—————————————————–

বিকেলের দিকে ইরহান সকলের উপস্থিতি তে তাছলিমা বানুর কাছে গিয়ে বলে,,তার আর প্রবাস যাওয়ার চিন্তা ভাবনা নেই।দেশেই ছোট খাটো একটা ব্যবসা করবে।তাকে যেনো ব্যাংক থেকে তিন লাখ টাকা দেয়।

ইরহানের কথা শুনেই তাছলিমা বানু আঁতকে উঠে। অদ্ভুত দৃষ্টিতে দুই ছেলের দিকে তাকায়। ওরাও কেমন করে তাকিয়ে আছে।

টাকা চাই মানে? তুই কি বলছিস ইরহান? মাথা খারাপ হয়ে গেছে তোর?

মাথা খারাপের কি আছে মা? আমি দেশেই কিছু একটা করতে চাইছি স’ন্দিহান গলায় বলে ইরহান।

দেশে তুই কোন রাজ কার্য উদ্ধার করবি শুনি? এসব ভূ’ত মাথা থেকে ঝেড়ে ফেল। সুখে থাকতে ভূ’তে কিলায় না? চুপচাপ ছুটি শেষে চলে যাবি মন দিয়ে কাজ করবি।

মানে কি মা? আমি আর দেশের বাইরে যাবোনা ঠিক করেছি। আমি দেশে থাকবো এতে তো তোমার খুশি হওয়া দরকার তাই না?

তাছলিমা বানু ইরহানের কথায় হকচকায়। আরো কিছু বলতে নিবে তখনই ইরহানের ফোন টা বেজে উঠে।

ইরহান কথা থামিয়ে ফোন হাতে তুলে দেখে বিদেশ থেকে সে যে কোম্পানি তে কাজ করে সেই কোম্পানির ম্যানেজার ফোন করেছে।হয়তো জরুরি কিছু তাই ইরহান বলে আমি একটু আসছি বলেই নিজের রুমে চলে যায় কথা বলার জন্য।

তাছলিমা বানু এই সুযোগে যুথির কাছে এগিয়ে আসে।যুথি এতক্ষন একটা কথা ও বলেনি।চুপচাপ নিরব দর্শকের ভূমিকা পালন করেছে।

তাছলিমা বানু যুথিকে উদ্দেশ্য করে বলে উঠে,,, নিজের স্বামী কে বোঝায় মেয়ে।এমন বো’কামো করতে বারণ করো।দেশে কিছুই করতে পারবে না। বিদেশি ড’লার কামাবে।দেশে আর কয় টাকা পাবে? নুন আনতে পান্তা ফুরাবে। কিন্তু ঐদেশে ফিরে গেলে রানীর হা’লে থাকতে পারবে।

ভালো করে বুঝাও।নয়তো পস্তাতে হবে।খুব ভালো হবে না। এর জন্য আগেই বলছি চুপচাপ বলো আমি যা বলছি যেন মেনে নেয়। নয়তো এই তাছলিমা বানু কি করতে পারে তা তোমাদের ধারণার ও বাইরে।

যুথি তাছলিমা বানুর দিকে তাকিয়ে রয়।

#চলবে,,,,,,,

আজকে এতটুকুই। একটু বি’জি আছি।কাল ধা’মাকা আছে।🤭#খড়কুটোর_বাসা
#পর্বঃ৭
#Jhorna_Islam

আমার কথা মতো চললে সব ঠিক থাকবে।নয়তো সব উলট পালট হয়ে যাবে। এমন কিছু করবো না তোমরা কিছু বলতে পারবে আর না কিছু করতে পারবে।শুধু চুপচাপ দেখা ছাড়া কিছু করতে পারবে না।

ভালো আছি ভালো থাকতে দাও।খারাপ হতে বাধ্য করো না। এতোদিন যেমন সব কিছু চলেছে তেমন ভাবেই যেনো সব কিছু চলে। আমি আর আমরা ভালো থাকলে তোমরা ও ভালো থাকবে।

তাই আগে থেকেই সাবধান করছি বোঝাও ইরহান কে।দেশে এসেছে থাকুক ছুটি শেষ হলে যেনো আবার ফিরে যায়। নয়তো আফসোসের শেষ থাকবে না।

“কথায় আছে না অতি বাড় বেড়োনা ঝড়ে পরে যাবে।”

যুথি এবার মুখ খুলে,,,,, কেন উনি দেশে থাকলে আপনার কি সমস্যা?৷ এটা তো আরো ভালো খবর ঘরের ছেলে ঘরে থাকবে। আপনার এই দুই ছেলে বাড়িতে থাকবে উনি কেন গিয়ে দূরে পরে থাকবে?

যা জানোনা তা নিয়ে কথা বলবে না।

জানতাম না তো।এখন সব জানতে পারতেছি খুব ভালো করে জানতে পারছি।

নিজের ছেলেদের সময় ষোল আনা উনি নিজের পেটের ছেলে না বলে এক আনা ও না তাইনা নকল শ্বাশুড়ি আম্মা?

ভুলে যেওনা মেয়ে আমি তোমার কি হই সম্মান দিয়ে কথা বলবে।আর এটাও ভুলে যেওনা এই বাড়ির বউ হয়ে আসতে পেরেছো আমার বদৌলতে। তাই বুঝে শুনে কথা বলবে।

আমি ইরহানের বউ করে না আনলেতো কোনো রিকসাওয়ালার ঘরে জায়গা হতো।অল্প পানির মাছ এখন বেশি পানিতে পরে লাফালাফি করছো? আমি যা বলি চুপচাপ শুনবে।

আমি যা বলি তাই করবে।নয়তো এই বাড়ির ভাত জুটবে না কপালে।
ভুলে যেওনা আমার পছন্দ করে আনা মেয়ে তুমি।

সেইটাইতো আমাকে পছন্দ করে নিজের ভালো করতে গিয়ে খারাপ করে ফেললেন। ভুল জায়গায় সঠিক মানুষ টা পছন্দ করে এনেছেন।

“কথায় আছে না পরের জন্য গ’র্ত করলে সেই গ’র্তে নিজেকেই পরা লাগে।”

তাছলিমা বানু যুথিকে কিছু বলতে নিবে তার আগেই ইরহান এসে ঐ জায়গায় উপস্থিত হয়। মোবাইল টা পকেটে ঢুকাতে ঢুকাতে তাছলিমা বানু ও যুথির দিকে ব্রু কোচকে তাকায়।

আমি দুই দিনের ভিতরে শহরে যাবো আমার পরিচিত লোক আছে সেখানে সে ও ব্যবসা করে তার সাথেই আলাপ আলোচনা করে যেটা করলে সুবিধা হবে সেটাই করবো। তোমার একাউন্টে গত মাসে যে টাকা গুলো পাঠিয়েছি সে গুলো ব্যবসা করার পরিকল্পনা করেই পাঠিয়েছি।কথা গুলো বলে ইরহান তাছলিমা বানুর মুখের দিকে তাকায়। তাছলিমা বানু থো’ম ধরে দাঁড়িয়ে আছে।

— কি হলো মা? আশা করি বুঝতে পারছো আমি কি বলছি?

— গত মাসে যে টাকা গুলো পাঠিয়েছিলি সেই টাকা গুলো নেই ইরহান।

— নেই মানে? তিন লাখ টাকা নাই হয়ে গেলো কি করে? কি করেছো মা টাকা দিয়ে। আমার জানামতে তো কোনো কিছু করোনি।

— টাকা গুলো ইমন আর ইশান নিয়ে ছিলো।

— ওরা কেন আমার টাকা আমার অনুমতি ছাড়া নেবে? এতো টাকা দিয়ে ওদের কি কাজ? কি করেছে টাকা দিয়ে। সারাদিন তো শুয়ে বসেই কাটে ওদের। আর আমিতো ওদের খরচের জন্য আলাদা টাকা দিতামই।ঐখান থেকে কেনো আবার টাকা নিয়েছে?

ইরহানের কথা শুনে ইশান কিছু বলতে নিবে তার আগেই ইমন আটকে দেয়। ইশান রাগে ফুসছে।এমনিতেই তার মাথা গরম। বেশ করেছে শুয়ে বসে খায় এটা ইরহান বলবে কেন?

ইশান ইমনের দিকে ফুসতে ফুসতে তাকায়।ইমন আস্তে করে বলে,, চুপ থাক ভাই মাথা গরম করিস না।ঠান্ডা রাখ মাথা।মায়ের উপর ভরসা রাখ যা বলার মা কেই বলতে দে।

তুই এখন কিছু বলতে গেলে বা বাড়াবাড়ি করলে হিতে বিপরীত হবে।আমাদের মা যথেষ্ট বুদ্ধিমতি।আামাদের থেকে ভালো বুঝে কি করলে আমাদের ভালো হবে সেটাই উনি করবেন।ভরসা রাখ।

ইশান ইমনের কথায় চুপচাপ শান্ত হয়ে দাড়িয়ে থাকে।তার এমন ভাবে চুপচাপ দাড়িয়ে থাকতে মোটেও ইচ্ছে করছে না। ইচ্ছে করছে ইরহান কে গিয়ে কয়েক ঘা লাগিয়ে দিতে।

ইরহান তাছলিমা বানুর দিকে তাকিয়ে আছে তার উত্তরের আশায়।

তাছলিমা বানু বলে,,,, ঐ টাকা গুলো ইমন আর ইশান একটা জায়গা কিনার জন্য বায়না দিয়েছিলো।কিন্তু লোকটা নকল দলিল দেখিয়ে টাকা নিয়ে পালিয়ে গেছে।

আমার টাকা নিয়ে ওরা জায়গা কিনতে গেলো।সেখানে গিয়ে ধোকা খেয়ে টাকা ও হারালো অথচ আমিই কিনা জানিনা।একবার জানানোর প্রয়োজন ও মনে করোনি তোমরা বাহ্। বলেই ইরহান হাত তালি দেয়।

এতোগুলা টাকা ওরা নিয়ে গেছে ভালো কথা সেটা যে ধোকা খেয়ে হারিয়ে ও এসেছে সেটা কি আমার জানার অধিকার ছিলো না মা?

তুই তো এই ব্যাপারে থাকিস না ইরহান।আর আমি অবাক হচ্ছি এটা ভেবে তারপর তুই আমার কাছে কৈ’ফি’য়’ত চাইছিস? এক দিনেই এতো উন্নতি হয়ে গেছে? এসব নিশ্চয়ই তোর বউয়ের জোরে করছিস।

এর মধ্যে যুথিকে কেন টানছো মা।ও তো কিছু বলেনি।আর আমি কৈ’ফি’য়’ত চাইছি না।এটা জানার আমার অধিকার আছে। এত কষ্ট করে টাকা রোজগার করে যদি শুনি সেই টাকা অন্যরা নিয়ে গেছে তাহলে নিশ্চই এটা শুনে আমার ভালো লাগবে না।

সে যাই হোক এই টাকা গুলোতো আর ফেরত আসবে না। একাউন্টে তো আরো টাকা আছে। ঐখান থেকেই নিয়ে কাজ শুরু করবো। ঐ খান থেকেই দেও।

চে’ক এ সাইন করে দাও কাল সকাল সকালই বের হবো।ঐখান থেকে আসার সময় উঠিয়ে নিয়ে আসবো।

ইরহান মায়ের কথা শুন।এসব ব্যবসা বা দেশে কাজ করার চিন্তা মাথা থেকে ঝেড়ে ফেল।দেখলিতো মানুষ কিভাবে ঠ’কায়। আর এসব করে যে সফল হবি তা ও তো না।শুধু শুধু কেনো টাকা গুলো নষ্ট করবি। আমার অবাধ্য তো তুই ছিলিনা কখনো ইরহান তাহলে আজ কেনো আমার কথা শুনছিস না?

যা বলছি ঠান্ডা মাথায় ভাব।

ইরহান তার মায়ের দিকে তাকায়। তারপর এসব কথায় পাত্তা না দিয়ে বলে উঠে,,,, চে’ক বই টা কোথায় আছে মা?

তাছলিমা বানু রা’গী চোখে ইরহানের দিকে তাকায়।

নিশ্চই তোমার রুমে। আমি খুঁজে নিয়ে আসছি। বিছানার পাশে রাখা টেবিলের ড্রয়ারে নিশ্চয়ই আছে।ঐ খানেইতো কাগজপত্র রাখো। বলেই ইরহান তাছলিমা বানুর রুমে চলে যায়।

এই দিকে তাছলিমা বানু জোরে জোরে ইরহান কে ডাকছে।
ইরহান অনেক হয়েছে অনেক বাড়াবাড়ি করছিস।এর ফল কিন্তু ভালো হবে না।

এরপর আমি যা করবো সেটা তুই কল্পনা ও করতে পারবিনা। এতোদিন যেটা না করেছি এখন আমি সেটাই করবো।
—————-

ইশান এবার তার মায়ের সাথে রে’গে রে’গে বলে,,ওকে এতো তে’ল মেরে কেন বোঝাচ্ছো? সে কি তোমার কথা শুনছে? দেখেছো কতো বড় সাহস আমাদের সাথে উঁচু গলায় কথা বলে। ইচ্ছে তো করছে কয়েকটা লাগিয়ে দেই।ইমন ভাইয়ের জন্য পারিনি।

মা তুমি এখনো চুপ করে থাকবে? কোনো ব্যবস্থা নিবে না? টাকা রোজগার করে সা’পের পাঁচ পা দেখেছে।দেখেছো দুই দিনে কি রকম রং পাল্টে ফেলেছে।আগে তোমার কথায় উঠতো আর বসতো।তুমি এতো করে বলতেছো তোমার কথা শুনছে?

এসব টাকা পয়সা ও রোজগার করলেও এখন এসবের প্রতি ওর কোনো অধিকার নেই।তুমি কিছু করো মা।এদের আর আমার সহ্য হচ্ছে না। ইচ্ছে করছে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বিদেয় করতে।

এইই ইশান মুখ সামলে কথা বলবে বলে দিলাম।ভুলে যেওনা কাকে কি বলছো।যার টাকায় জীবন চলে তাকে এসব বলার সাহস পাও কোথায় তুমি? নিজের তো দুই টাকা ও রোজগার করার মো’র’দ নাই আবার বড় বড় কথা!

যেই প্লেটে খাও সেই প্লেটে ফোটা করতে একবার ভাবে না। ছিঃ লজ্জা হওয়া দরকার আরেকজনের ঘা’ড়ে চ’ড়ে খাচ্ছো এমনিতেই তো মুখ লুকিয়ে চলার কথা। আবার সে গলা উচিয়ে কথা বলে। এক পয়সা কামানোর যার কা’ম্য নয় সে এতো বড় কথা বলে মানুষ শুনলে হাসবে।

বে’হা’য়া নির্লজ্জ পুরুষ। ঘরে চুড়ি পরে বসে থাকো। বলেই যুথি ইশানের দিকে রা’গী চোখে তাকায়।

যুথির কথা গুলো ইশানের শরীরে গরম তেলে পানি পরার মতো লাগে। এমনিতেই রা’গে মাথা ফেটে যাচ্ছে তারউপর যুথি এসব বলায় আর নিজেকে নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারে না ইশান।

যুথির দিকে তে’ড়ে যেতে যেতে বলে,,,ফ”কি’ন্নি’র বা”চ্চা তোর এতো সাহস তুই আমাকে কথা শুনাস?বলেই হাত উচিয়ে যুথি কে চ’ড় মারতে যায়।

হুট করে ইশান এগিয়ে আসায় যুথি চোখ বন্ধ করে ফেলে।
চোখ বন্ধ অবস্থাতেই ঠা’স করে চ’ড় দেওয়ার আওয়াজ হয়।কিন্তু সেটা যুথির গালে না।যুথি চোখ পিটপিট করে তাকিয়ে দেখে ইরহান ইশানের হাত মুচড়ে ধরে দাঁড়িয়ে আছে। চ’ড় টা যে ইরহান ইশানের গালে দিয়েছে সেটা আর বুঝতে বাকি নেই।

ইরহান ইশানের হাত আরো জোরে মোচড় দিয়ে ধরে বলে তোর সাহস দেখে আমি অবাক হয়ে যাই।তুই আমার বউয়ের গায়ে হাত তুলতে যাস?

এখন যে চড় টা মারলাম না তোকে? এটা আরো আগে মারা দরকার ছিলো। ওর দিকে যেখানে চোখ তুলে তাকানোর কথানা। সেখানে তুই ওর গায়ে হাত তুলতে যাস?

আমার টাকায় বসে বসে খেয়েতো শুধু ব’য়’লা’র মুরগির মতো ফুলেছিস।এই শক্তি নিয়ে তুই যুথি কে মারতে আসিস?আমার হাত দেখেছিস খেটে খাওয়া মানুষের হাত।এই হাত যেমন আদর,স্নেহ দিতে জানে তেমনি অন্যকে শাস্তি দিতেও জানে।বলেই ইরহান ইশান কে একটা জোরে ধাক্কা মারে। ইশান ছিটকে গিয়ে কয়েক হাত দূরে পরে।

#চলবে,,,,,,,,,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here