খড়কুটোর বাসা পর্ব -১২+১৩

#খড়কুটোর_বাসা
#পর্বঃ১২
#Jhorna_Islam

রুমের ভিতর আশেপাশের কয়েকজন মানুষ রয়েছে। সাথে একটা হুজুর ও রয়েছে।

যুথি সবার দিকে কিছু সময় তাকিয়ে রয়। তারপর দাদির দিকে তাকিয়ে কানের কাছে গিয়ে আস্তে করে প্রশ্ন ছুঁড়ে দাদি এসব কি?

উনারা সকলে এখানে যে হঠাৎ? তুমি তো ভেঙে কিছুই বলছো না কিছু কি হয়েছে?

তোকে সব পরে বলছি।তুই আগে নাত জামাইরে নিয়া তোর রুমে একটু বসা। ইরহান যুথির পিছনে দাড়িয়ে আছে। যুথি ইরহান কে বলে,,আসুন আমার সাথে একটু বসে জিরিয়ে নিন। ইরহান ও যুথির পিছনে পিছনে যুথির ছোট্ট রুমের ভিতর গিয়ে বসে পরে।

যুথি নিজের বোরখা টা খুলে রেখে ইরহান কে একটু বসতে বলে নিজের দাদির কাছে চলে যায় জানার জন্য কি হবে।

দাদি এই দাদি কি করবে তুমি বলোতে? আর এতো মানুষ জন কেনো ঘরে?

আমায় তো ঠিক করে বলতেছো ও না হয়েছে টা কি।

–তোর বিয়ে দিবো আবার!

— মানে মাথা খারাপ হয়ে গেছে তোমার? কি বলছো এগুলো তুমি। পা’গলের মতো একটা বললেই হলো? আমার বিয়ে হয়ে গেছে আবার কিসের বিয়ে?

— তো বিয়ে হয়ে গেছে দেখে কি আর করা যাবে না?

— শুনো দাদি মজা করে থাকলে এসব মজা বাদ দাও।আমার এসব একদম ভালো লাগছে না। তোমার নাত জামাই কিন্তু এই বাড়িতে ভুলে যেও না।আমার কিন্তু রা’গ উঠতেছে।

— এতো রে’গে যাচ্ছিস কেন বু? আগে আমার কথা শোন।

— যুথি ইতিমধ্যে জোরে জোরে নিশ্বাস নিচ্ছে রা’গ প্রায় উঠে গেছে তার দাদির কথা শুনে। নিজেকে শান্ত করে বলে,, ঠিক আছে বলো শুনছি।

— আমি কি অন্য কাউকে বিয়ে করতে বলছি নাকি তোরে? আমার নাত জামাইরে ই আবার বিয়ে করবি এখন।

— এসবের মানে কি দাদি?

— আসলে তোদের তো ফোনে বিয়ে হয়েছে। সামনাসামনি হয়নি।আমার যেনো মনটা কেমন করছে বিয়ে টা নিয়ে। কয়েকজন বলতেছে ঐ ভাবে বিয়ে হলেও আবার পরানো লাগে। তাই আমি চাইনা আমার বু এর সংসারের দিকে তাকিয়ে কেউ কিছু বলুক।

কে বলছে এসব কথা তোমায় দাদি? এসবের কোনো মানে হয়?

এটাতো বড় কোনো ব্যাপার না বু।তোদের তো আগে বিয়ে হয়েছেই।এখন করে নিলে কিছু হবে না। কয়েক মিনিটের ব্যাপার শুধু। রাজি হয়ে যা বু।

কিন্তু দাদি,,,, উনি কি ভাববেন বলেন তো? কেমন কেমন না বিষয় টা?

তুই একটু নাত জামাইকে বল। নিশ্চয় রাজি হবে কিছু বলবে না।

যুথির দাদির কথাই ঠিক হলো।ইরহান কোনো অসম্মতি জানায় নি। যুথির মুখে শুনে রাজি হয়ে গেছে।

বলেছে দাদির যা মনে হয় করুক আমার এতে কোনো আপত্তি নেই। মুরুব্বি মানুষ ভেবে চিন্তেই বলেছে।

যুথি ইরহানের কথায় অবাক হয়। অন্য কেউ হলে এতোক্ষন রাগারাগি করে চলে যেতো।শ্বশুর বাড়ি প্রথম দিন এলো তাও আপ্যায়ন না করে এসব বলছে।

সকলের সামনে ইরহান আর যুথি পুনরায় বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়।সকলেই বিয়ে পরিয়ে বিদায় নেয়।

যুথির দাদি এবার নাত জামাইর আপ্যায়ন করতে লেগে পরে। গরিব হতে পারে মনটা তো আর গরিব না। নিজের নাত জামাইকে যথাসাধ্য আপ্যায়ন করে।

ইরহান শত বলেও যুথির দাদি কে থামাতে পারে নি। কিছু সময় পর পর এটা ওটা এনে দিচ্ছে।

যুথি ইরহানের জন্য নিজের হাতে রান্না করে। যুথির দাদি রান্না করে নি যদি খারাপ হয়।নাত জামাই তাহলে খেতে পারবে না।

যুথি বলেছে রান্না করতে. দাদি বলে,,চুপচাপ তুই রান্না কর।আমার চান্দের লাহান নাত জামাই খাইবো।আমার এসব রান্না যদি না খেতে পারে। তখনতো উপোস থাকতে হবে। আমার বয়স হয়েছে এখনতো আর আমি আগের মতো কিছু রান্না করতে পারি না।

———————————-
বিকেলে তাছলিমা বানু উঠোনে মোড়া পেতে বসেছিলো।
এমন সময় পাশের বাড়ির এক মহিলা আসে।৷ নাম আছমা।তাছলিমা বানুর সাথে তার খুবই ভাব গলায় গলায় সম্পর্ক।

কিন্তু একজন আরেকজন কে এটা ওটা নিয়ে নিচু করতে ছাড়ে না।দুই জনের কেউই এই বিষয়ে কম যায় না। এমন সম্পর্ক আজ কাল দেখা যায় না।এতো খোঁচাখোঁচি করার পর ও আবার দুইজনের মিল।

আজ খালি হাতে আসেনি।হাতে একটা মিষ্টির পেকেট। তারাতাড়ি করে এসেই তাছলিমা বানুর পাশে রাখা আরেকটা মোড়ায় বসে পরে। তারপর বলে উঠে,,, ও ভাবি গো।

কেমন আছেন ভাবি? তাছলিমা বানু জিজ্ঞেস করে আছমা কে।

— কি আর বলবো ভাবি আপনারে,,আমার মতো সুখি কেউ আছেনি? এমনিতেই আমি অনেক সুখী।এখন আরো সুখী হয়ে গেলাম।

— কি নিয়ে এতো খুশি ভাবি?

— আমি দাদি হতে চলেছি গো ভাবি।তারপর তাছলিমা বানুর দিকে মিষ্টির পেকেট টা এগিয়ে দিয়ে বলে,, এই যে এই নেন আপনার জন্য মিষ্টি আনছি।আপনি তো আমার কতো আপন! তাই আপনার জন্যই প্রথম মিষ্টি নিয়ে আসলাম।আর সবার আগে খবর টা আপনাকেই জানাতে আসলাম।

— ওহ ভালো তো ভাবি।

— ভালো তো হতেই হবে।আজকাল যা দিন পরলো এখন ছেলে মেয়েরা বাচ্চা নিতেই চায় না।পরে কতো সমস্যা হয় জানেন ভাবি? মাঝে মাঝে তো হয়ই না। তাইতো বিয়ের এক বছর না ঘুরতেই আমার বউমারে বলে দিছি সুখবর যেনো পাই।

আমার বউ মা আবার আমার কথায় উঠে বসে। দেখলেন কেমন করে আমার কথার মান রাখলো?

আপনার বড় ছেলে তো অনেক দিন হলো বিয়ে করছে ভাবি।আপনার ছোটো ছেলেও আমার ছেলের আগে বিয়ে করেছে।এখনো তো আপনাকে একটা সুখবর দিতে পারলো না।

কোনো সমস্যা আছেনি ভাবি?

তাছলিমা বানু আছমার দিকে তাকিয়ে মনে মনে ফুঁসছে। ঠিক জানতো এই কথাটা শুনাবে তাকে। কিন্তু কথাটা তো ঠিকই বলছে। আজকেই দুই ছেলের বউ কে কড়া করে কয়েকটা কথা শুনাতে হবে। এদের জন্য সে কেন কথা শুনবে?

এসব ভাবতে ভাবতেই তাছলিমা বানু ঘরের দিকে হাটা দেয় আছমা কে বিদায় দিয়ে।

—————————————

ইরহান বিকেলে যুথি কে নিয়ে চলে যেতে চেয়েছিলো যুথির দাদি দেয়নি।যুথিও চায় থেকে যেতে।নিজের বাপের বাড়ি আসলে প্রতিটা মেয়েরই মন চায় থাকতে।আবার কবে না কবে আসতে পারে।যদিও যুথি গেছে মাত্র একদিন হয়েছে। তাও এটাই এক বছর মনে হচ্ছে যুথির কাছে।

ইরহান যখন থেকে যেতে রাজি না হয় তখন যুথি ইরহানের দিকে করুন চোখে তাকিয়ে বলে,,, এইই বোকা পুরুষ থেকে যাইনা।শুধু তো একটা দিন।এমন করেন কেন?

ইরহান দুষ্টু হেসে যুথির কোমড় ধরে টান দিয়ে নিজের সাথে মিশিয়ে নেয়। তারপর কানের পিছনে চুল গুলো গুজে দিতে দিতে বলে উঠে,, তুমি এখনো বুঝনি কেনো চলে যেতে চাচ্ছি?

— না তো কেন? বাজার না হয় কাল দুইজনে একসাথে করে নিয়ে বাড়িতে ফিরবো সমস্যা নেই তো।

— আমি তো তোমায় অনেক চা’লাক ভেবে ছিলাম যুথি।তুমি আমাকে বোকা বলো? আসল বোকা তো তুমি নিজে।

“বোকা পুরুষের বোকা বউ।”

মোটেও আমি বোকা নই।

ইশশ তুমি বললেই হলো?

হুম।

এতোদিন হয়ে গেলো এখনো বাসর টাই করা হলো না। দ্বিতীয় বারের মতো আবার বিয়ে করলাম।এই সুযোগ টা কে হাত ছাড়া করে? আমিতো একদম হাত ছাড়া করছি না।

যুথি ইরহানের কথায় কিছুটা লজ্জা পেয়ে যায়। হাত ছাড়িয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে কিন্তু পারে না। ইরহানের দিকে চোখ তুলে তাকাতেও পারছে না।

ইরহান যুথির লজ্জা রাঙা মুখের দিকে তাকিয়ে বলে,, হায় হায় আমার বা’ঘিনী বউ দেখি লজ্জা ও পায়।

ধ্যা’ত ছাড়েন না।

কোনো ছাড়াছাড়ি নেই।

বোকা পুরুষ কি শুরু করলেন বলেন তো?

আমার বউকে দেখাচ্ছি,,,,,

“তার বোকা পুরুষ শুধু ধো’কা খেতে না ভালোবাসতে ও জানে!”

#চলবে,,,,,,,#খড়কুটোর_বাসা
#পর্বঃ১৩
#Jhorna_Islam

তাছলিমা বানু ঘরে ঢুকেই ইমনের বউ লিমা কে ডাকতে থাকে।লিমা তখন খাটের উপর বসে বসে মোবাইলে তার বান্ধবীদের সাথে আলাপচারিতা করতে ব্যস্ত।

তাছলিমা বানুর ডাক শুনে খুবই বিরক্ত হয়।এই মহিলার জন্য একটু বসেও শান্তি পাওয়া যায় না।

একটু আরাম করে বসলেই ডাকাডাকি শুরু করে দেয়। আরে বাড়িতে কি শুধু লিমাই একমাত্র বউ নাকি? আরো তো আছে দিনা কে ডাক গিয়ে যত্তসব।

সবার থেকে বিদায় নিয়ে উঠে দাঁড়ায় লিমা।এখন না গেলে আবার গোষ্ঠী উদ্ধার করা শুরু করবে।কবে যে এই মহিলার থেকে মুক্তি পাবে।

রুম থেকে বের হয়ে জিজ্ঞেস করে,, কি হয়েছে আম্মা?

তাছলিমা বানু তখন বসার রুমে বসেছে।
এই দিকে আসো তোমার সাথে কথা আছে আমার।

লিমা গিয়ে তাছলিমা বানুর পাশে দাঁড়ায়।

তোমাদের বিয়ের কতো বছর হলো?

লিমা চোখ মুখ কোঁচকায় শ্বাশুড়ির এমন কথা শুনে। হঠাৎ করে বিয়ের কতো বছর হলো তা কেনো জানতে চাইছে?

বিয়ের বয়স দিয়ে কি করবেন আম্মা?

যেটা জিজ্ঞেস করতেছি সেটার উত্তর দাও।পাল্টা প্রশ্ন করতে বলিনি।

জ্বি মানে সাড়ে চার বছর মনে হয়।

তো এতো বছর হয়ে গেছে। এখনো একটা সুখবর দিতে পারলানা।তোমাদের জন্য বাড়িতে এসে আমায় আছমা কথা শুনিয়ে গেলো। আজ আছমা শুনিয়ে গেছে কাল অন্য জন এসে শোনাবে।পরে পুরো গ্রামের লোক এসে শুনাবে।

পরের মেয়ের জন্য আমি কেনো কথা শুনবো?

লিমা কথা গুলো শুনে হাতগুলো শক্ত করে মুঠো করে ধরে রাখে। এই কথা গুলো যেনো কানে বি’ষ ঢালার মতো লেগেছে।

লিমা আর ইমনের বিয়ে টা পারিবারিক ভাবে হলেও ওদের আগে থেকেই সম্পর্ক ছিলো।লিমার কিছু সমস্যার কারণে ও কখনো মা হতে পারবেনা জানতে পারে।ইমন কে সরাসরি না বললে ও অনেক ভাবে কথাটা বুঝাতে চেয়েছে কিন্তু সে বুঝেনি।তাই লিমা ও আর ঘাটায় নি। তাছলিমা বানু যে লিমার বাবার টাকা দেখে লিমা কে নিজের বউ করতে রাজি হয়েছে সেটা লিমা ভালো করেই জানে।

এই মহিলা বাচ্চা নিয়ে পরেছে এখন সে বাচ্চা কোথা থেকে এনে দিবে? এখন যদি জানতে পারে লিমা কখনো মা হতে পারবেনা তখন তো মনে হয় সব কিছু ধ্বংস করে দিবে।

লিমার ভাবনার মাঝেই তাছলিমা বানু বলে উঠে,, আজই ইমনের সাথে কথা বলবে।কথা বলে যত দ্রুত সম্ভব আমাকে খুশির খবর দিবে।আমি খুব তারাতাড়ি সেই সংবাদ টা পেতে চাই।

মাথায় ঢুকেছে আমার কথা?

লিমা মাথা নাড়িয়ে চুপচাপ রুমের দিকে হাঁটা দেয়। ইমনের সাথে খোলাখুলি কথা বলতে হবে। ইমন তো লিমা বলতে পা’গল।শুধু টাকা,পয়সার জন্য মায়ের কথায় সায় জানায়।

মা ছেলে সব গুলো টাকার লোভী। টাকা পেলে এদের আর কিছু লাগে না। দরকার পরলে ইমনকে নিজের বাপের বাড়ি থেকে টাকা এনে দিবে।পরে আলাদা হয়ে যাবে। এমনিতেই এই মহিলা এই বাড়িতে পা রাখার পর থেকে হুকুম চালিয়ে যাচ্ছে।

————————————–
।পরের দিন সকালে যুথি আর ইরহান নাস্তা করে যুথির দাদির থেকে বিদায় নিয়ে বেরিয়ে আসে। যুথি অবশ্য তার দাদি কে সব খুলে বলেছে ঐ বাড়ির বিষয়ে।

সব শুনে সে কি কান্না তার।ইরহানের জন্য ইরহানের কথা ভেবে আহাজারি করে কান্না করেছে।ইরহান কে অবশ্য শুনায়নি।ছেলেটা তাহলে কষ্ট পাবে নিজেকে ছোট মনে হবে।

যুথির দাদি বলেছিলো এখানেই থেকে যেতে একেবারের জন্য। ঐ বাড়িতে যাওয়ার দরকার নেই। যুথি তখন দাদি কে বুঝিয়েছে।

ইরহান একটা রিকশা ভাড়া করে নিয়ে আসে। যুথি কে নিয়ে একেবারে প্রয়োজনীয় সব জিনিস পত্র, বাজার,সদাই করে নিয়ে বাড়িতে যাবে।

যুথি এই বাড়ি থেকে অনেক কিছু নিয়ে নেয়,,যেমন রান্না করার জন্য মাটির চুলা,থালা,বাসন দুইজনের জন্য। আরো নানান কিছু নেয়।যুথি জানে ইরহানের হাতে বেশি টাকা নেই।তাই শুধু শুধু যখন এই বাড়িতে এসব আছে তাহলে কিনবে কেন? আর এমনিতেও দাদি এসব যুথির জন্যই কিনেছে।

যুথি কে এতো কিছু রিকসায় তুলতে দেখে ইরহান বেশ অবাক হয়। যুথি এসব তুমি কি করছো? এসব কেন নিচ্ছো?

তো কি হয়েছে? এগুলো পরে আছে সব ঘরে।আর দাদি সব আমার জন্যই কিনেছে।

কি ভাববে মানুষ?

মানুষের ভাবনা দিয়ে আমার কি কাজ? চুপ থাকেন আপনি। বলেই সব কিছু রিকশায় তুলে রিকশায় উঠে বসে।

ইরহান আর কি বলবে, সেও কথা না বাড়িয়ে চুপচাপ উঠে বসে।

তারপর দাদির থেকে বিদায় নিয়ে দুজন ই বেরিয়ে পরে।

গ্রামের রাস্তা এতোটা ও ভালো না অনেক উঁচু নিচু জায়গা রয়েছে সেখানে গিয়ে রিকশা বারবার উপরে উঠছে তো একবার নিচে নামছে। যুথি কয়েকবার সামনের দিকে ঝুঁকে পরে ও নিজেকে সামলে নেয়।

এইবার একটু জোরেই ঝাঁকি মারে যার দরুন যুথি গিয়ে ইরহানের উপর পরে।

ইরহান জোরে হেসে দেয় তারপর যুথির কোমড়ে হাত রেখে নিজের সাথে আরেকটু কাছে এনে জড়িয়ে ধরে।

বাহ্ আমার বউয়ের শরীরে কি জোর।সামান্য রিকশার ঝাঁকুনি তে তার নাজেহাল অবস্থা। এতোক্ষন আমাকে জড়িয়ে ধরলেই পারতা।

এতো সব মাথায় আসে এটা আসে না? যে পাশে আমার বর থাকতে আমি কেন ঝাঁকুনিতে হেলে দুলে পরবো।

এখন আমায় বলছেন? আপনিও তো ধরেন নি আমায়।

আমি তো দেখতেছিলাম তুমি কি করো!

হুহ দেখছে ঢং!

ছেলেরা কি ঢং করতে পারে নাকি?

অবশ্যই পারে।

বাদ দাও তোমার সাথে কথায় পারবো না।

বাজারে গিয়ে যুথি কে রিকশাতে বসিয়ে রেখেই ইরহান কেনা কাটা করতে যায়।যুথি যেতে চেয়েছিলো তবে ইরহান এতো মানুষের ভিড়ে নিয়ে যায়নি।

যুথি বলে দিয়েছে কি কি লাগবে সে অনুযায়ী সব কিনে ইরহান ফিরে আসে।

ইরহান এসে রিকশায় বসতেই যুথি প্রশ্ন করে একি জিনিস পত্র কোথায়? আপনি দেখি খালি হাতেই ফিরে আসলেন।

সব কেনা কাটা করে আরেকজনের হাতে পাঠিয়ে দিয়েছি। এতো জিনিস পত্র এখানে করে নিয়ে যাওয়া সম্ভব না তাই।আমাদের বাড়ির পাশেই ঐ রিকশা চালক কাকার বাড়ি।সমস্যা নেই পৌঁছে দিবে সব।

ওহ আচ্ছা।

তারপর আবার দুইজন বাড়ি চলে আসে। বাড়ি এসে দেখে ঐ রিকশা চালক আগেই জিনিস পত্র নিয়ে বসে আছে গেইটের সামনে।

যুথি ঐ রিকশাতে অনেকগুলো টিন ও দেখতে পায়। তাই ইরহান কে যুথি জিজ্ঞেস করে,, এইই এতো টিন দিয়ে কি করবেন?

পরে বলছি তুমি যেগুলো পারো নিয়ে যাও।আর ভারি গুলো নিতে হবে না ঐগুলা আমিই নিতে পারবো।

সমস্যা নেই তো আমি একটা একটা করে নিতে পারবো।

চুপচাপ যা বলছি তা৷ করো।আমি থাকতে আমার বউ এসব করে তার শক্তি ক্ষয় করবো এটা আমি হতেই দিবো না। জমায় রাখো অন্য সময় কাজে লাগবে বলেই ইরহান চোখ টিপ মারে।

যুথি রিকশা চালকের দিকে একবার তাইকি তারপর ইরহানের দিকে চোখ গরম করে তাকিয়ে আস্তে করে অস’ভ্য বলে চলে যায়।

ইরহান সব কিছু নামিয়ে রিকশা চালকদের ভাড়া মিটিয়ে সব এক এক করে ঘরে নেয়। টিন গুলো দরজার সামনে রাখে।

এবার বলুনতো এই টিন দিয়ে কি করবেন?

কলপাড়ের চারপাশে বেড়া দিবো।টয়লেট টা ও বেশ পুরোনো টিন গুলো বদলাবো।

এতোদিকে আপনার ন’জর?

তো থাকবেনা।আমার রানীর সুবিধা অসুবিধা সবই তো দেখতে হবে।

আমি আপনাকে যত দেখি ততো মুগ্ধ হই জানেন?

আমায় এতো দেখো কেন যুথি রানী? যদি ন’জর লেগে কালো হয়ে যাই?

হবেন না তো।কাজল দেওয়া চোখ দিয়ে দেখি।আর নিজের জিনিসের উপর কি কেউ নিজে ন’জর দেয়?

এসব তো পরেও করতে পারতেন।এখন টাকা গুলো নষ্ট করেছেন শুধু শুধু।

বো’কা মেয়ে এটাই সবচেয়ে আগে জরুরি।
আমার বউ আমার ঘরের সম্মান। তার ভালো মন্দ তো আমাকেই দেখতে হবে নাকি?

#চলবে,,,,,,,,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here