খড়কুটোর বাসা পর্ব -২৮+২৯

#খড়কুটোর_বাসা
#পর্বঃ২৮
#Jhorna_Islam

বিয়ে বাড়িতে এধরনের বিষয় অ’হ’র’হ ঘটে থাকে।কারো টাকা পয়সা,গয়না,মোবাইল চু’রি হয়ে যায়। এতো লোকের মাঝে কিভাবে যেনো নিয়ে যায় কেউ বুঝতেই পারে না। বিয়ে বাড়িতে দাওয়াত খাওয়ার উ’ছি’লা’য় চু’রি করে চলে যায়। মাঝে মাঝে বাইরের লোকও এসে চু’রি করে।

লিমা একনাগাড়ে কান্না করে চলেছে। তার সখের গয়না গুলো। এখন যেই দাম স্বর্ণের। সাধারণ মানুষের জন্য কিনা খুবই কষ্টের। আর এই গয়না গুলোতো সব বিদেশি।ঐ গয়না গুলোর মান ভালো।

এরকম গয়না তো আর জীবনেও পরা হবে না। ইমনতো জীবনে ও পারবে না গয়না গড়িয়ে দিতে। এতোদিন নিজে পরের কাঁধে কাঁঠাল ভেঙে খেয়েছে। এখন তো পা একটা গেছে। উফফ কোন দুঃখে এখানে আসতে গেলো আর কেনোই বা আসলো? আসলো তো আসলো গয়না গুলো কেনো পরে গেলো? না পরে আসলে তো কিছুই হতো না। শ্বাশুড়ি আর দিনার গয়না ঠিক আছে। তারটাই পেলো চু’রি করার জন্য?

তাছলিমা বানু অনেক রাগারাগি করছে। সীমার বাবার সাথে অনেক খারাপ ব্যবহার করছে।কেমন লোকদের দাওয়াত দেয়? যে গয়না চু’রি হয়ে যায়। এসব চো’র ছে’চ’ড়’দের দাওয়াত দিলে উনাদের কেনো দাওয়াত দিয়েছে। এই গয়না গুলোর মূল্য জানে কতো?

তাছলিমা বানুর চিৎকার চেচামেচি তে পুরো বিয়ে বাড়ির লোকজন এসে জমা হয়।

যুথি এসে একপাশে দাঁড়িয়ে এদের তামশা দেখছে।লিমার গয়না চু’রি হয়েছে শুনে প্রথমে খুশি হলেও পরোক্ষনে এটা ভেবে মন খারাপ হয়ে যায় যে তার বোকা পুরুষের পরিশ্রমের টাকায় কিনা গয়না গুলো। তারপর আবার ভাবে আমার মন খারাপ করে কি লাভ? এসব তো আর পেতো না। বেশ হয়েছে নিয়ে গেছে।

যার টাকায় কিনা গয়না তার বউয়ের সাথেই কি অহংকার দেখিয়েছে। গয়না পরে বেশ রং ঢং করছিল বেশ হয়েছে চো’র মহাশয় সঠিক কাজ করেছে।বেছে বেছে এই শ/য়তানির গয়নাই নিয়ে গেছে। সাথে ঐ দুটোর গুলো নিয়ে গেলো না? নিয়ে গেলে খুশি হইতো।

যুথির ভাবনার মাঝেই তার পাশে এসে দাদি দাঁড়ায়। তারপর যুথির দিকে তাকিয়ে জানতে চায় কোথায় গিয়েছিলি বু তুই? কখন থেকে খুজতেছি।

কোথাও যাইনি দাদি।তোমার নাত জামাই কল দিয়েছিলো তাই একটু বাইরে গিয়ে কথা বলতেছিলাম। তুমি কোথায় ছিলে?

আমিতো সীমার দাদির সাথে কথা বলতেছিলাম আর পান খাইতে গিয়েছিলাম।

ওহ আচ্ছা।

হ। কিন্তু এইখানে কি হইছেরে?

দেখতে থাকো মজার সা’র্কা’স চলছে।

যুথির দাদি বুঝতে পারছেনা এখানে কি হচ্ছে।

যুথি তারপর দাদিকে সব খুলে বলে।তারপর মিটমিটিয়ে হাসতে থাকে।

তাছলিমা বানুর তখন যুথির দিকে চোখ যায়।

যুথিও তখন তাছলিমা বানুর চোখের দিকে তাকায়।

তাছলিমা বানু এবার বলে,,, চো’র এখানেই আছে।সকলকে চে’ক করা হবে।কেউ যেনো এখান থেকে না যায়।আর চে’ক করা থেকে কেউ যেনো বাদ না পরে।

তাছলিমা বানুর এমন ধরনের কথায় কয়েকজন অমত জানায়। তাদের সম্মানে লাগে বিষয়টা। প্রথমে রাজি না হলেও পরে নিজেদের নির্দশ প্রমাণ করার জন্য রাজি হয়ে যায় ।

একে একে সকলেকে চে’ক করা হয়।যুথি আর তার দাদিকে যখন চে’ক করতে আসে তখন তাছলিমা বানু বলে ভালো করে ওদের কে চে’ক দিতে। যুথি কিছু বলেনি।বরং নিজে থেকে সহায়তা করেছে চে’ক করার জন্য।

যুথির কাছে কিছু পায় নি। তাছলিমা বানু আশায় আছে যুথির দাদির কাছে পাওয়ার।কিন্তু তার ধারণা ভুল করে যুথির দাদির কাছে ও পেলোনা।এমনকি কারো কাছেই পেলো না। চো’র কি চু’রি করে এখনো এতো দামি গয়না নিয়ে বসে থাকবে? কখন হয়তো চলে গেছে।

শেষে কোনো উপায় না পেয়ে বাড়িতে চলে যায় তিনজন।

ভাগ্যিস এখনো বরযাত্রী আসেনি নয়তো সীমার বাবা কে লজ্জাতে পরতে হতো।

যুথিরা ও বেশি সময় থাকেনি।সীমার থেকে বিদায় নিয়ে বাড়ি ফিরে যায়।

———————————-
এই নিয়ে দুইবার বাড়িতে বিচার এসেছে ইশানের নামে।মেয়ে নিয়ে এদিক ওদিক ঘুরে বেড়ায়। পার্কে, রাস্তা ঘাটে বিভিন্ন জায়গায় দেখা যায় ইশান কে একেক সময় একেক মেয়ের সাথে।

সি’গা’রে’ট খায় মুরুব্বিদের সামনেই। আবার কিছু বললে সি’গা’রে’টে’র ধোয়া ছাড়ে মুখের সামনে। বড়দের মুখের উপর কথা বলে। মারামারি তো আছেই।

আরো নানান ধরনের বিচার দিয়ে যায় এসে গ্রামের লোক তাছলিমা বানুর কাছে। তাছলিমা বানু পরেছে বি’পাকে।এমনিতেই ইমনের চিন্তায় ঘুম হা/রাম।আবার ছোট ছেলেটা ও কি শুরু করেছে।

ঐদিনের স্বপ্ন টা চেয়ে ও ভুলতে পারছে না। ইরহানের বাবার কথাটা বুঝি সত্যি হতে চলল।না এ হতে দিবে না তাছলিমা বানু। কোনমতেই।

ইশান কে নিজের কাছে ডেকে এনে ভালো করে বোঝায়।এসব ছেড়ে দিতে বলে।ঘরেতো বউ আছে তাহলে বাইরের মেয়েদের নিয়ে ঘুরাঘুরি কেনো? ঘুরে ভালো কথা কাছাকাছি কেন ঘুরাঘুরি করে যেটা গ্রামের লোকদের চোখে পরে।

আর বড়দের সাথে কেন ত’র্কে জড়ায়।ওরা মুরুব্বি মানুষ একটা সমাজে বাস করতে হলে এটা মাথায় রাখতে হবে। নয়তো সমাজ থেকেই বিতারিত করে দিবে।

ইশানের এক কথা সে এইসব লোকদের তো’য়া’ক্কা করে না। সে তার ইচ্ছে মতো চলবে।মেয়ে নিয়ে রাস্তা ঘাটে আরো বেশি করে ঘুরবে।কে কি বলবে তাতে তার কিছু আসে যায় না। এই লোকদের কি সমস্যা?

তোর নামে বিচার দিয়ে গেছে ইশান।

কে বিচার দিয়ে গেছে? নাম বলো এ শা*লা কে আমি দেখে নিচ্ছি।কতো বড় সাহস আমার নামে বিচার দিতে আসে বাড়িতে। নাম বলো মা হা*রা*ম*জা*দা দের বাপের নাম ভুলিয়ে দিবো।

তুই এসব করিস না ইশান।তোর ভাইয়ের অবস্থা টা তুই দেখতে পারছিস? সে হাটতে পারে না। তুই এখন গ্রামের লোকদের সাথে মারামারি করলে হবে? ওরা এতোগুলা লোক মিলে যদি তোর কিছু করে? তখন কি হবে তুই একা পারবি ওদের সাথে?

একা কখনোই ওদের সাথে তুই পারবি না। কেন এমন করছিস বাপ? নিজের ক্ষ’তি কেন নিজে ডেকে আনছিস?

ইশান তাছলিমা বানুর কথা শুনেনি। আরো রাগারাগি করে বাড়ি থেকে বের হয়ে যায়। তার এক কথা যেইটা ইচ্ছে সেইটা করবে কেউ যেনো নাক বা গলায়।

তাছলিমা বানু ইশানের কথায় হতাশ হোন।ছেলেটা উনার কথা বুঝতে কেন চাইছে না। মায়ের মন তো কু ডাকছে।ইশানের এই মেয়েদের প্রতি নেশা আর একঘে’য়ে’ মির জন্য না কোনো বড় বিপদ আসে।

———————–
কয়েকদিন হয়ে গেলো ইমন কে দেখতে যাওয়া হয় না। দিনা ও বাড়িতে নেই বাপের বাড়ি গেছে কয়েকদিন হলো।

ইশান এমনিতেও বাড়িতে থাকে না। অনেক রাত অবধি বাড়ির বাইরে থাকে।ঠিকমতো বাড়িতে এক বেলা ও খায় না।

তাই তাছলিমা বানু ইশানের কাছে বাড়ির চাবি দিয়ে ইমনকে দেখতে লিমাদের বাড়িতে চলে যায়। বলে যায় আজকের দিন থেকে আগামীকাল বিকেলে আসবে।নয়তো না আসতে পারলে পরশু আসবে।

ইশান ও বলে থেকে আসার জন্য। আসলে তার মনে অন্য কিছু চলছে যা তাছলিমা বানু জানে না।

তাছলিমা বানু্ চলে যাওয়া ইশান বেশ খুশি হয়। সূচনা কে ফোন দেয়।দিয়ে জানায় আজকে অন্য কোথাও আর যেতে হবে না।

তোমাকে আমার বাড়িতে নিয়ে আসবো।পরে তুমি আর আমি।বাড়ি পুরাই ফাঁকা কেউ নেই।

সূচনা গ্রামের লোকের কথা জানতে চাইলে বলে,,ওসব নিয়ে তুমি মাথা ঘামাইও না।তুমি শুধু আজকের জন্য প্রস্তুতি নাও আর কিন্তু ছাড় পাবে না।

আমার ভয়,করছে ইশান।অন্য কোথাও না হয়।তোমাদের বাড়িতে যাওয়া কি ঠিক হবে?

এই মেয়েটার অবাধ্যতা তে ইশান মনে মনে বেশ রে’গে যায়। তাও যথা সম্ভব নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করে ভালো করে বুঝিয়ে রাজি করায় এই বাড়িতে আসার জন্য।

সূচনা ও আর অমত করেনি। কেনই বা করবে? ইশানের টাকা পয়সার প্রতি তার ও লোভ জেগেছে। এই কয়েকদিনে অনেক কিছু পেয়েছে ইশানের থেকে।

সন্ধায় সূচনা কে ইশান নিজের বাড়িতে নিয়ে আসে। সূচনা কে ঘুরে ঘুরে সব দেখিয়ে বলে এসব এখন নিজেরই। ভাই আর আসবে না। তারপর দুইজন নিজেদের মতো করে সময় কাটায়।

পরের দিন সকালে তাছলিমা বানু জানায় সে আজও মনে হয় আসতে পারবে না। ইশান বলে আসার দরকার নেই থেকে আসো। সূচনা কে ও রেখে দেয়। বিকেলে গিয়ে দিয়ে আসে।কারণ সূচনার হাসপাতালে ডিউটি আছে।

বাড়িতে এসে ঘরে না গিয়ে ফোনে কথা বলতে বলতে পুকুর পাড়ের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিলো ইশান।কিন্তু একটু যেতেই থমকে যায় ইশান।চোখ দুটো নেশাতর দৃষ্টিতে সামনে নি’ব’দ্ধ।

#চলবে,,,,,,

কেমন হলো জানাবেন? সবাই একটু রেসপন্স করবেন।❤️#খড়কুটোর_বাসা
#পর্বঃ২৯
#Jhorna_Islam

দুপুর বারোটার দিকে ঘুমিয়ে উঠতে উঠতে বিকেল হয়ে গেছে। দাদিও ডাক দেয় নি যার কারণে গোসল করতে পারেনি যুথি। যুথি আবার গোসল না করে একদিন ও থাকতে পারে না । শরীর চুলকায় কেমন অ’স্বস্থি লাগে।রাতে ভালো করে ঘুমোতে পারে না।

তাই তিনটার দিকে ঘুম থেকে উঠেই গোসল করে নিয়েছে। ইরহান আজকে গোসল করতে মানা করেছিলো যুথি শুনেনি। বলেছিলো একদিন গোসল না করলে কিছু হবে না। আজ না হয় হাত মুখ ধুয়ে দাও। আর বেশি খারাপ লাগলে গামছা দিয়ে না হয় শরীরটা মুছে দাও গোসল করো না।এসময়ে ঠান্ডা লাগানো ঠিক হবে না।

সেই যে যাই বলুক যুথি কি শোনার মেয়ে নাকি? দাদি ও বলেছে গোসল যখন করবি কর।কিন্তু চুলটা ভিজাইস না।যুথি গোসল করতে গিয়ে সকলের বারণ ভুলে গেছে। আরামসে গোসল সেরে আসে। গোসল করে যেনো সে অনেক কিছু অর্জন করে ফেলেছে।

শীত এখনো রয়েছে। গ্রামে একটু বেশিই শীত শীত ভাবটা থাকে। খাওয়ার পর উঠলে তো আরো শীত করে। যুথি খেয়ে উঠার পর যেমন দ্বিগুণ শীতটা বেড়ে গেছে।

বাইরে তাকিয়ে দেখে হালকা রোদ আছে। তাই আর দেরি না করে ভিডিও কলে ইরহানের সাথে কথা বলতে বলতে পুকুর পাড়ে চলে যায়। এইখানে রোদটা ভালো ভাবে পরছে।তাই আরাম করে বসে বিকেলের মিষ্টি রোদ গায়ে মাখাতে থাকে।আর তার প্রাণ প্রিয় স্বামীর সাথে কথা বলতে থাকে। চুল গুলো ও ছেড়ে রাখা। ভালো করে মুছে আসলেও ভিজা ভিজা ভাব আছে তাই ছেড়ে রেখেছে।

হালকা হালকা ভাবে শরীরটা ঝাঁকুনি দিচ্ছে। ইরহান হয়তো তা বুঝতে পারছে।তাই ফোনেই বকাবকি শুরু করে দেয়,,,,

আমি মানা করেছিলাম না তোমায় গোসল না করতে? ঠান্ডা টা লাগুক পরে বোঝাবো মজা।

লাগবে না ঠান্ডা।

হ্যা আপনি তো সব জানেন।তারপর যুথি কে ন’কল করে বলে,, লাগবেনা ঠান্ডা।

যুথি ইরহানের কথায় মুখ ভেংচি কাটে।

এইই বাচ্চার আম্মু একদম মুখ ভেংচি কাটবেনা বলে দিলাম।

কেন কাটবো না? একশোবার কাটবো বলেই আবার ভেংচি কাটে।

আমি পাশে থাকলে বুঝাইতাম কেন কাটবে না।

কচু’ বুঝাইতেন।

ইরহান আর যুথি আরো নানান কথায় হাসতে থাকে।
———–

অন্যদিকে ইশান এখনো কানে ফোন হাতে স্ত’ব্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। এইটা সে কি দেখছে? নিজের চোখ কে বিশ্বাস করতে পারছে না।

ফোনের অপর পাশের মানুষ যে অনবরত কথা বলে হ্যালো হ্যালো করে চলেছে সেই দিকে তার হুঁশ নেই। তার চোখে যে নে’শা লেগেছে। যা তাকে চুম্বকের মতো সামনে বসে হাসতে থাকা রমনীর দিকে টানছে। চোখ ফেরানো দা’য় হয়ে গেছে।

এই মেয়ে এতো রূপবতী হলো কবে ভেবে পাচ্ছে না ইশান।শরীরের রং পুরোই পাল্টে গেছে। শরীর যেমন উজ্জলতা ছড়াচ্ছে। স্বাস্থ্য আগের থেকে অনেক টা ভালো হয়েছে। একটু মোটা হওয়ার দরুন যেন বেশিই ভালো লাগছে।

হুট করে কেউ আগের যুথি আর এখনকার যুথিকে দেখলে অবাক হয়ে যাবে অনেকটাই।যেমন এখন ইশান হচ্ছে।

পাশাপাশি বাড়িতে থাকলেও এতোদিন দেখা হয়নি ইশানের যুথির সাথে। অনেক দিন আগে দেখেছিলো সে। ঐসময় তো এতোটা সুন্দর ছিল না।আর না ইশানের ন’জর কাড়তে পেরেছিলো যুথি।

যুথিকে দেখে ইশানের মন নড়বড়ে হয়ে গেছে। একটা কথাই যেন প্রতিধ্বনিত হচ্ছে এই মেয়ে টা কে তার চাই।একদিনের জন্য হলেও একে নিজের করতে হবে। এতোদিন ঝিনুকের খোলস থেকে মুক্তা বেরিয়েছে।

যুথির সারা শরীরে দূর থেকে চোখ বুলিয়ে যাচ্ছে। কেউ এখন ইশানের মুখের দিকে তাকিয়ে বলে দিতে পারবে ইশানের মনে কি চলছে। চোখ দিয়েই যেনো যুথির পা থেকে মাথা পর্যন্ত ছুয়ে দিচ্ছে।

নারীর নেশায় ধরেছে ইশান কে। তার মাথায় এখন এটাও নেই কার দিকে সে ন’জর দিচ্ছে। যার দিকে সে ন’জর দিচ্ছে সে সম্পর্কে তার কি হয়।তার এখন একটাই লক্ষ এই মেয়েটার শরীরটা নিজের করে পাওয়া।

সময় জ্ঞান ভুলে ইশান এক দৃষ্টিতে যুথির দিকে তাকিয়ে আছে।

যুথি ইরহানের সাথে কথা বলার মাঝেই তার দাদি তাকে ডাকতে ডাকতে এদিকেই এগিয়ে আসছে।

তুই এই অসময় চুল ছেড়ে এখানে কেনো বসে আছিস বু?

রোদ পোহাচ্ছি দাদি।

আমি বারণ করেছিলাম চুল না ভিজাইতে।তুই কারো কথাই শুনিস না।

উফফ দাদি কিছু হবে না আমার।

এই অসময়ে এখানে বসে থাকিস না। ঘরে চল কতো কিছুর বা*জে ন’জর আছে জানিস? এখন অসময়ে ঘরের বাইরে থাকা ঠিক না।

একটু পর চলে যাবো দাদি। তারপর দাদির দিকে তাকিয়ে দেখে দাদির হাতে বোরখা।

তোমার হাতে বোরখা কেন দাদি? কি করবা? কোথাও যাইবা নাকি?

ওহ আসল কথাই তো ভুলে গেছি। আমার একটু ঐ বাড়িতে যেতে হবেরে। কয়েক টা জিনিস রয়ে গেছে। আনতে হবে।

এখন যাইবা?

হুম সন্ধার দিকে আইসা পরবো।বেশি সময় থাকবো না। যাবো আর আসবো।

ঠিক আছে যাও তুমি। তারাতাড়ি আইসা পইরো।

আচ্ছা বু।

আলমারিতে টাকা আছে ভাড়া নিয়ে যাও।নয়তো আসতে রাত হয়ে যাবে।

আচ্ছা আমি গেলাম।তুই সাবধানে থাকিস।আর ঘরে চলে যা।

দাদি চলে যাওয়ার পর যুথি আবার ইরহানের সাথে কথা বলতে থাকে।

ইশান ও হাতের ফোন পকেটে রেখে আরো এগিয়ে আসে। মনে মনে বলে বাহ্ সময় সব সময় আমাকে সুযোগ করে দেয়। এই দিকে এই বু’ড়ি চলে গেছে অন্য দিকে ইশানের বাড়িতে ও কেউ নেই। মনে মনে পৈ’শা’চি’ক আনন্দ পাচ্ছে ইশান।

যুথির এখনও বেশ শীত করছে। কিছুটা কাঁপছে।

ইরহান দেখে বলে,,শীত করছে?

হুম।

যাও ঘরে যাও এখানে আর থাকতে হবে না।

আমার কম্বল লাগবে!

আচ্ছা এইখান থেকে কেউ গেলে পাঠিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করবো। মনে হয় না তো এখন কেউ যাবে। পরে যেতে যেতে শীতই চলে যাবে। এক কাজ করো আমি টাকা পাঠাই একটা কিনে নাও।

নানা আমার বিদেশি কম্বল লাগবে। মানে সৌদিআরব এর কম্বল।

এটা কোন কথা? কম্বলের মাঝে কি পার্থক্য?

আপনি বুঝেন না আমি কিসের কথা বলছি? আমার বাবুর আব্বুকে লাগবে আমার বলেই ঠোঁট উল্টায়।

ইরহান সরু দৃষ্টিতে কিছু সময় যুথির দিকে তাকিয়ে রয়। তারপর বলে খুব দুষ্টু হয়েছো না? যাও কিছু সময় পর ই আজান দিয়ে দিবে।এই সময় এমন ভাবে থাকাটা সত্যিই ঠিক না দাদি ঠিকই বলেছে। সাবধানে ঘরে যাও। ঘর থেকে আর বের হইও না। আমি এখন রাখি কাজ করবে হবে যুথি রানী। সন্ধার পরে আবার কল দিবো।

আচ্ছা তাহলে। আপনি চিন্তা করবেন না আমি এখনই ঘরে চলে যাচ্ছি।

ইরহান কল কাটলে যুথি উঠে দাঁড়ায় ঘরে যাওয়ার জন্য। এতো সময় কথার খেয়ালে থাকলেও এখন মনে হচ্ছে কেউ আশে পাশে আছে।যুথির দিকে তাকিয়ে আছে।

যুথি চারপাশে চোখ বুলায়।

ইশান আগেই আম গাছের আড়ালে চলে গেছে। এইখানে কিছু করা যাবে না। পুকুরের ঐ পাশে লোকজন রয়েছে।

যুথি কাউকে দেখতে না পেয়ে মনে মনে একটু ভয় পায়।এইটা ভেবে কোনো অ’শ’রী’রী না তো। অন্য সময় হলে ভয় পেতো না এখন তো সে আর একা না। তার ভিতর একটা ছোট্ট প্রাণ এর অস্তিত্ব রয়েছে। হাতটা আপনা আপনি পেটে চলে যায়।

ঘরের দিকে পা বাড়াতে বাড়াতে বলে ধুর আমার এখানে আসাই ঠিক হয় নি।তারপর মনে মনে নানান দোয়া দুরুদ পরতে পরতে বড় বড় পা ফেলে এগিয়ে যায়।

ইশান ও যুথির পিছনে পিছনে যেতে থাকে।

যুথি ঘরের সামনে এসে পিছনে ঘুরবে তার আগেই তার মুখ কেউ চেপে ধরে। যুথি মুখের থেকে হাত সরানোর জন্য জোড়া-জাড়ি করতে গিয়ে হাত থেকে মোবাইল টা পরে যায়।

এখনো বুঝতে পারছে না কে তাকে এমনভাবে ধরেছে।অনেক চেষ্টা করেও কিছুতেই ছুটতে পারছে না। যুথি হাত পা ছোড়াছুড়ি বাড়িয়ে দেয়। আর মুখ দিয়ে উমমম উমমম করতে থাকে।

এতে করে ইশান বিরক্ত হয়ে যুথির কাধে আ’ঘা’ত করে। সামান্য টে’ক’নি’ক যানা আছে।কাঁধের আঘাতে যুথি অ’জ্ঞান হয়ে যায়। পিছনের দিকে ঢলে ইশানের উপরই পরে।

ইশান যুথিকে ধরে কোলে তুলে নেয়। তারপর নিজেদের বাড়ির দিকে যেতে থাকে।

যুথির শরীর থেকে একটা গ’ন্ধ আসছে।ইশান নাক দিয়ে টেনে নেওয়ার চেষ্টা করে বলে,,আহ্ ফুলের কি সুবাস। মধু নিশ্চই আরো মজাদার হবে।

পিছনে যুথির ফোন নিচে পরে আছে।

#চলবে,,,,,,,,,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here