গল্পঃ ভাগ্যর_লিখন পর্বঃ 6

গল্পঃ ভাগ্যর_লিখন
পর্বঃ 6
লেখাঃ Shakil

—- কফি নিয়ে এসেছে ব্যাপার কী,,,?? আমি উঠে বলতে লাগলাম সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠেই কার মুখ যে দেখলাম মনে হয় আজকের দিনটা একদমই বাজে যাবে।
— কই দেখিতো আজকে সূর্য্যটা কোনদিকে উঠেছে,,
আমার কথা শুনে মিতু রাগে কফি টেবিলে রেখে চলে গেলো। আমি কফি খেয়ে দেখলাম আজকের কফির স্বাদটা একটু আলাদা।
— বিছানা হতে উঠে পড়ে ফ্রেশ হয়ে রান্না ঘরের দিকে যেতে দেখলাম মিতু রান্না করছে,, কি ব্যাপার মিতুও কি রান্না পারে নাকি শখের বসে রান্না করছে,,,!! আপু ও ভাইয়াকে দেখলাম বাসায় নেই। রান্না ঘরে গিয়ে মিতুর কাছে জানতে চাইলাম সব কোথায় গিয়েছে??
—– ও আমার কথা শুনেও না শোনার ভান করলো, আমি আবারো বললাম তবুও না শোনার ভান করলো,,, ইচ্ছে করছিলো কাছে গিয়ে ঐদিনের মতো চুলের মুুঠি ধরে দুই চড় বসিয়ে দেই।
— মাসুদ ভাইয়াকে ফোন দিলে উনি ফোন উঠাচ্ছে নাহ। পরে বারির বাহিরে এক কাজের মানুষের কাছে জানতে চাইলে বলেন উনারা হাসপাতালে গিয়েছেন কে যেনো অসুস্থ তাই দেখতে। কোন হাসপাতালে গিয়েছে যে আমাকে বলে যাই নাই। আমি তাতো জানিনা। রুমে চলে আসতে রান্নাঘরেে উঁকি মেরে দেখি রান্না প্রায় শেষ।
—– মিস মিতু এতদিন তুমি আমার সাথে কথা বলো নাই,, দেখি আজ কথা বলো কিনা। রুমে গিয়ে দরজা হতে অন্যমুখ হয়ে আমি শুয়ে রইলাম। শুয়ে শুয়ে ভাবছি কখন মিতু এসে আমায় বলবে উঠ রান্না শেষ খাবার রেডি খাবি চল।
— একটুপর বুজতে পারলাম মিতু আমার রুমে প্রবেশ করেছে,, ও এসে আমাকে কিছুই বলছে নাহ। কি যেনো করছে আমি ঘাড় ঘুড়িয়ে দেখি ও সব খাবার আমার রুমে নিয়ে এসেছে। সব রেখে ও চলে গেলো। আমি জিহ্বাতে কামড় মেরে বলছি, তুই যদি আমার বোনের ননদ না হতি তাহলে আজ এই সুযোগ মিস করতাম নাহ। তোর এতো ইগো ডেমাক সব মাটিতে মিশিয়ে দিতাম শুধু তোর সাথে কিছু করলে আমার বোনের সংসারটা ভেঙ্গে যাবে বলে কিছু বললাম নাহ।
—– খেতে বসে দেখছি ভালোই রান্না করেছে মিতু। তারমানে ও রান্না পারে। আর যদি নাই পারে তাহলে মাসুদ ভাইকে কে রান্না করে খাইয়েছে,,!! নিশ্চয়ই মিতুই।
—- একটুপর মাসুদ আমাকে ফোন করে বলে আবির তোমার আব্বু একটু অসুস্থ হয়ে পড়েন তাই তোমার আপুকে নিয়ে সকাল সকাল একটু হাসপাতালে এসেছি,, তুমিতো তখন ঘুমাচ্ছিলে তাই ডাকাডাকি করি নাই । আসবে তুমি,,,??
—- নাহ আমি যাবো নাহ। আচ্ছা রাখি বলে মাসুদ ভাই ফোন রেখে দিলেন। আমি শুয়ে টিভি দেখছি আর ভাবছি উনি আমার কে তাই যাবো আমি,,,আমার কেউ নাহ উনি।
—- শয়তানি করে টিভির ভলিয়মটা বাড়িয়ে দিলাম। ভাবছি মিতু এসে বিরক্ত হয়ে কিছু বলবে। কি হলো ও আসছে না কেন,,,রুম থেকে বের হতে দেখলাম মিতুর বান্ধবী এসেছে,,,
আপুর বিয়ের দিন যে মেয়েটা আমার সাথে কথা বলেছিলো ঐ মেয়েটা এসেছে।
—- গিয়ে দেখি একটু ভাব জমানো যাই কিনা,,,
হাই কেমন আছেন??
আরে আবির তুমি,, হুমম ভালো আছি তুমি কেমন আছো??
এইতো ভালো,, তা কখন এসেছেন??
এইতো ৫ মিনিট,, আর তুমি আমাকে আপনে করে বলছো কেনও??
—- বুজলাম অল্পতেই এটাকে পটিয়ে ফেলা যাবে। আচ্ছা আপনি বলাই আমার অভ্যাস তো,, এখন থেকে তুমি করেই বলছি??
—- মিতুর বান্ধবীর সাথে বসে জমিয়ে গল্প করতে শুরু করে দিলাম। মিতু উঠে বললো তুই বস আমি ফাইলটা আর কফি নিয়ে আসছি।
—- মিতু চলে গেলো আমিও গল্প করতে থাকলাম। একটু পর মিতু একটা ফাইল আর কফি নিয়ে আসলো। আমি কফি খেতে খেতে বললাম,,, কিসের ফাইল এটা??
—- আমি আব্বুর থানার পাশ দিয়েই যাবো তাই আব্বু থানা থেকে ফোন করে আমাকে বললেন মিতুর ভাই আজকে থানায় আসবেন নাহ ফাইলটা নিয়ে যেতে৷ তাই এসেছি আরকি।
—- তারমানে তোমার আব্বু কী পুলিশ,,,??
হুমম আব্বু থানার এস আই। আমি কফি হাতে উঠে আসতে ওর বান্ধবী বললো কি হলো কোথায় যাচ্ছেন,,?? নাহ আসলে আমার একটু কাজ আসে আরকি।
উঠে আসতে মিতু মুচকি হাসি দিলো,,, ও হয়তো বিষটা বুজতে পেরে মনে মনে বলছে
—- এখন উঠে পালাচ্ছিস কেন,, মারবি নাহ লাইন, পটাবি নাহ আমার বান্ধবীকে।
— আমি রুমে এসে কফি খাচ্ছি আর ভাবছি তারমানে মিতুর ভাইকে মিতুর বান্ধবীর বাবাই ঐদিন আমায় এরেস্টবকরতে বলেছিলো। ভাগ্যিস আমি বেশি দুর এগোয় নি। তার আগেই সব জানতে পেরে গিয়েছি।
— একটুপর আপু আসলো। আপুর মনটা খারাপ তাই আমি অন্য কিছু না বলেই বললাম আপু আমি বাসায় চলে যাবো।
আপু কিছু বলার আগেই মিতুর বান্ধবী বললো চলুন আমি আপনাকে আমার গাড়িতে ড্রপ করে দিয়ে আসি।
—- যে ভয়ে চলে যেতে চাচ্ছি সেই ভয়টাই আবার সাথে যাবে বলছে,,,আপু বললো আজকের রাতটা থেকে কাল সকালে যাস। তোর ভাই বিকালে একটু ঘুড়তে নিয়ে যাবে। আমি ওকে বলে রুমে গেলাম।
—- বিকালে ভাইয়া-আপু আমি মিলে অনেক ঘুরাঘুরি করলাম,,মাসুদ ভাইয়া বেশকিছু আমাকে শপিং ও করে দিলেন। উনি বললেন তোমরা বাসায় যাই আমার থানায় একটু কাজ আছে। আমি আর আপু চলে আসলাম।
—- কিছুক্ষণ পর আপু এসে আমাকে খাওয়ার জন্য ডেকে নিয়ে গেলো। আমাকে খেতে দিয়ে বললো ভাই তুই খা আমি মিতুকে ডাকি ও খেয়েছে কিনা।
—- আপু চলে গেলো।
একটু পর এসেই বললো ভাই মাথা মনে হয় একশো ডিগ্রি গরম। চোখে জল আর রাগে কটমট করছে মহারানী।
আমি বললাম কেন আপু কি হয়েছে,,??
—- ঐ যে আমি তুই আর তোর ভাই ঘুরতে গিয়েছিলাম মিতুকে নিয়ে বলিনাই ও সাথে নিয়ে যাই নি তাই মনে হয়।
—- আমার খাওয়া প্রায় শেষের দিকে,, দেখলাম মিতু এসে খেতে বসলো আপু কিছু দিতে গেলে বলে উঠলো,,, “”আমার হাত আছে আমি নিয়ে খেতে পারি “””
— আপু আমার দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসি দিলো,, আমিও বুজলাম মিতুর মটকা টা আজ বেশ গরম। ওকে কিছু বলা যাবে নাহ।
—– খাওয়া-দাওয়া শেষ আপুর সাথে বসে বসে টিভি দেখছি,
আর গল্প করছি। একটু রাত হয়ে গেলে আমি আমার রুমে ঘুমাতে চলে আসলাম।
— শুয়ে ঘুমিয়ে পড়লাম। মাঝরাতে বুজতে একটু একটু পারছি আমার বুকের ওপর বার বার কে যেনো হাত রাখছে,, আমি ঘুমের ঘোরে সরিয়ে দিচ্ছি তবুও আবার হাত দিচ্ছে।
— আমার ঘুম ভেঙ্গে গেলো,, পাশে কেউ আছে কিনা হাত দিয়ে দেখতে গিয়ে দেখলাম কে যেনো শুয়ে আছে। আমি লাফ দিয়ে উঠে
—- টেবিল ল্যাম্পটা জালিয়ে দিলাম।
একি মিতু তুই,,,!!!
মিতু ওর মুখে হাত দিয়ে বললো একদম চুপ থাক।
—- তুই আমার বিছানায় কেন মিতু,,,?? আর রুমের দরজা তো অফ কি করে ভিতরে আসলি তুই,,??
—- তোর আগেই এসেছি,, আর কি জন্য এসেছি সেটা এখন বুজাবো তোকে,,,।
— দেখ মিতু তুই যদি ভাবিস যে আমার রুমে এসে উল্টো পাল্টা কিছু করে তোর ভাইয়া ও আপুর কাছে আমাকে খারাপ বানাবি তাহলে তুই চরম ভুল করবি,,কেননা এটা আমার থাকার রুম। আর উনারা কিছুই বিশ্বাস করবে নাহ বরং উল্টো তোকেই খারাপ ভাববে,,
— মিতু আমার কথা শুনেই হাহাহা করে হেসে দিলো। আমি অবাক হয়ে ওর দিকে চেয়ে রইলাম,,।
—- মাত্র দুইদিন কথা বলেই তুই আমার বান্ধবী টাকে পটিয়ে ফেলেচিস। ও তোকে ভালোবেসে ফেলেছে সন্ধ্যায় আমাকে ফোন করে তোর নম্বর চাইলো। তাই ভাবলাম নিজের হাতের কাছেই পরে আছে
—- একটা অমূল্য কিছু আমি তার কদর না বুজে তাকে দুরে সরিয়ে দিয়েছি,,আর নাহ আজ তাকে আপন করে নিবো
—- মিতুর কথা শুনে আমি একটু হাসি দিয়ে মনে মনে বলছি,, যে আমার মূল্যটা এতদিন বুজেনাই তার সঙ্গে জীবন পার আমি করবো নাহ,,
মাত্র দুইদিনেই আমার বিষয়ে সবটা না জেনেই যে আমাকে ভালোবেসেছে তার ভালোবাসাই আমি গ্রহণ করে নিবো।
— তুই হাসিস কেনও?? এমনি
আচ্ছা,, মিতু আমার আরও কাছে আসতে থাকলো
দেখ মিতু আর কাছে আসার চেষ্টা করবি নাহ,, নইলে আমি ভাইয়া-আপুকে ডাক দিবো,,,
ও কিছু না শুনেই আমার কাছে আসতেই থাকলো,,
—- আমিও কি করবো বুজতেছিলাম নাহ তাই আজকেও আবার…
….
..
..
..চলবে??
..
(গল্পটি ভালোলাগলে অবশ্যই জানাবেন)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here