গ্যাংস্টার পর্ব ৮

#গ্যাংস্টার
#Sabriha_Sadi (সাদিয়া)
পর্ব : ০৮
।।
রাজ ঠান্ডা মাথায় ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে এলেও এখন মাথায় আস্তেআস্তে রাগ উঠে যাচ্ছে।

কল দিচ্ছে তো দিচ্ছেই। রানির কল ধরার কোনো নাম নেই। রাজের রাগ হচ্ছে অনেক। প্রায় ২০ বার কল দেওয়ার পর রানি কল ধরে।

রাজ মাথা ঠান্ডা রেখে বলল,
“কি হয়েছে তোমার?”
“আপনার কি হয়েছে সেটা বলুন। গাধার মতো কল কেন দিচ্ছেন?”
“কি?”
“এত বার কল কেন দিচ্ছেন?”
“আচ্ছা বলবে আমায় কি হয়েছে তোমার?”
“ধ্যাত যত্তসব ন্যাকা ন্যাকা কথা যেন কিছুই জানে না। আজাইরা লাড্ডু কোথাকার।”

রানি রাগে ফোন কেটে দেয়। রাজেরও রাগ হচ্ছে। ফোন টা আছাড় দিয়ে বিছানায় ফেলে দেয়।

তারপর এত না ভেবে লম্বা একটা ঘুম দেয়।

রাতেও অনেক বার কল দেয় রানি কল ধরে না। শেষে ফোন বন্ধ করে রাখে। এবার রাজের ভীষণ রাগ হয়। কিছু বলছেও না কেন এমন করছে।

পর দিন সকালে রাজ ফ্রেশ হয়ে কলেজের সামনে যায়।

কিন্তু কলেজের সময় পের হয়ে গেছে তবুও রানি আসছে না। হয়তো আসবে না ভেবে রাজ গাড়ি নিয়ে অফিস চলে গেল।

রানির কিছু ভালো লাগছে না। তাই আজ কলেজেও যায়নি। সে ভেবেয় পায় না সত্যিই মানুষ টা এমন? তবে এত দিন যে সে এই মানুষটার কারণেই অবাক হয়েছে সে কি না….
রানি কান্না করে দেয় কথা গুলি ভেবে।

সেদিন আর কথা হয় না তাদের। রাজ রাগে ফেটে যাচ্ছে। কি হয়েছে কিছুই বুঝতে পারছে না।

রাতে রাজ একা সুইমিংপুলে বসে ভাবছিল। এমন সময় তার কল আসে। তার গ্যাং এর এক জন কল দিয়েছে।
“হ্যালো।”
“বস।”
“খবার পেলি কিছু?”
“বস আপনি আসার আগের দিন ম্যাম তাদের বাসার সামনে ক্যাফে তে একজনের সাথে দেখা করেছে। আর আপনি না থাকা কালীন তিনি ঘর থেকে এক বারও বের হয়নি।”
“কে ছিল? কার সাথে দেখা করেছে?”
“বস জানতে পারলাম একজন মহিলা।”
“যত তাড়াতাড়ি পারিস মেয়ে টাকে বের করার চেষ্টা কর।”
“ওকে বস।”
“মনে রাখিস খুব তাড়াতাড়ি।”
“ঠিক আছে কিন্তু বস…”
“কি হয়েছে?”
“বস শাহিন জেল থেকে মুক্তি পেয়েছে কিছুদিন হলো।”
“হোয়াট?”
“হুম। বস আপনি ব্যস্ত ছিলেন তাই বলা হয়নি। খুব রকম হাঙ্গামা করছে সে।”
“ওকে দেখছি রাখ। সবাই কে সাবধানে থাকতে বলিস।”
“ওকে বস।”

রাজ ফোন কেটে দিয়ে গভীর চিন্তায় পড়ে যায়। তবে কি শাহিন ই কোনো ভাবে….
রাজ নিজের মনে মনে অনেক কিছু ভেবে নেয়। আর সময় দেওয়া চলবে না। এর পর হয়তো খুব দেরি হয়ে যাবো। তাই আর অপেক্ষা করে সময় নষ্ট না করাই ভালো।

রাজ মুখে এক অদ্ভুত বাঁকা হাসি নিয়ে বলতে থাকে,
“মাই লিটল এঞ্জেল আসছি আমি খুব বেশি দেরি নয়। অপেক্ষা করো।”

সকালে রাজ ফুরফুরে মেজাজে ঘুম থেকে উঠে।
শাওয়ার নেয়। প্রিন্সের মতো আজ নিজেকে সাজায়। মুখে সেই এক গালে হাসি।

রানি ঘুম থেকে উঠে ছাদের এক কোণায় মন মরা হয়ে বসে আছে। যাকে পছন্দ করল। মনে মনে কত কিছু ঠিক করে নিল। আকাঙ্ক্ষিত মানুষ টার দেখাও পেলো। অবশেষে সেই মানুষ টা কি না…..
তবে এত দিন কি তার সাথে নাটক করল? সব তার অভিনয় ছিল? কিন্তু কি করে সম্ভব? মানুষ কি এত টাও নিখুঁত অভিনয় বাস্তবে করতে সক্ষম হয়? কেন জানি রানির এই কথা গুলি মনে আসলেও মানতে তার খুব বাঁধা লাগে। কষ্টও হয়।

বার বার সেদিনের মেয়ে টার কথা মনে হয়। মনে হতেই রাজের প্রতি রাগ আর বিতৃষ্ণা চলে আসে। আবার কি ভেবে চাইলেও রাজের প্রতি ঘৃণা আনতে পাড়ে না। সব মিলিয়ে নাজেহাল অবস্থা তার।

যতোই হোক এত দিন তার মনের মাঝে যে ছিল তাকে কি করে…

বেশ বেলা হয়ে গিয়েছে।
সেই যে রানি ১০ টা ২০ এ ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে ছাদে এলো। এখনো সেই এখানেই দাঁড়িয়ে আছে। এখান থেকে একটুও নড়েনি। হয়তো এখন বেশ বেলা হয়ে গিয়েছে। হয়তো অনেক সময় হয়েছে সে এখানে এসেছে।
তবুও এখন যেতে ইচ্ছে করছে না তার।

তার কানে নিচ থেকে হাসির আওয়াজ ভেসে আসছে। তার বাবা সচরাচর এমন অট্টহাসি হাসে না। কিন্তু আজ যেন তিনি হেসে বাড়ি মাথায় তুলে ফেলছে।

রানি অনেকটা বিরক্ত আর আগ্রহ নিয়েই নিচে নামল।

ড্রয়িংরুমে গিয়ে তার চোখ ছানাবড়া হয়ে যায়। অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে সামনের মানুষটার দিকে।

রাজ হাসি হাসি মুখ নিয়ে তার বাবার সাথে কথা বলছে। অন্য দিকে তার বাবা রাজের কথা শুনে জোরে হাসছে। রান্নাঘরের দিকে নজর দিলে দেখে তার মা খুব ব্যস্ত হয়ে কিছু করছে। হয়তো ওই লোক টা কে আপ্পায়নের ব্যবস্থা করছে।

রাজ রানির দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসল।

এই প্রথম মনে হয় রাজের দাঁত বের করা হাসি দেখল রানি। কত টা মায়া মাখানো। সুদর্শনে হাসি।

রানি ঢুক গিলল। চোখের পাতা ফেলে সামনের দিকে এগিয়ে গেল।

মেয়ে কে দেখে আরমান বলল,
“আয় মা আয়।”
“….

“দেখ মা কে এসেছে। রাজ চৌধুরী।”
রানি বিড়বিড় করে বলছে, “আব্বু তোমার থেকে আমি ওই মানুষটাকে বেশি চিনি হাড়ে হাড়ে।”

“কিছু বলছিস মা?”
“ন না আব্বু। উনি এখানে কেন?”
“সুখবর নিয়ে এসেছে।”

রানি ভ্রু কুঁচকে একবার রাজের দিকে তাকায়। রাজ ঠোঁট চেঁপে হাসে। আবার তার বাবার দিকে তাকায়।
“কি খবর? মানে সুখবর?”
“তোর আর উনার বিয়ে।”

“কি?” বলেই রানি বসা থেকে উঠে দাঁড়ায়।
ওদিকে তার মা ট্রে হাতে নিয়ে এত এত নাস্তা নিয়ে এলো রাজের জন্যে। তা দেখে রাজ আদিখ্যেতা দেখিয়ে বলল,
“আরে আন্টি এত কিছু আনার কি দরকার ছিল?”
“আরে না বাবা খাও খাও। আমাদের পরিবারের সদস্য হতে চলেছো। তোমাকে যত্ন তো একটু করতেই হয়।”
আরমান বলল,
“হ্যাঁ বাবা খাও। লজ্জা পেয়ো না। একটু পর থেকে তো এই বাড়ির মানুষই হয়ে যাবে। হাহাহা।”

রাজ মুচকি হাসে। আবার রানির দিকে তাকায়। ওদের অগোচরে এক চোখ টিপ দেয়।

রানির খুব রাগ হয়। তার গা জ্বলে যাচ্ছে এমন কথায়। তাদের কথা শুনে রানি হ্যাবলার মতো দাঁড়িয়ে আছে।

“কি যা তা বলছো তোমরা?”
“যা তা মানে?”
“তা নয় তো কি আব্বু? কি বলছো তোমরা এই সব?”
“কি বলছি শুনতে পাচ্ছিস না? রাজ বাবা তোর বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে এসেছে।”
“মানে কি?”

“রানি তুই কি তোর আব্বুর কথা শুনতে পাচ্ছিস না নাকি বুঝতে পারছিস না?”
“আম্মু এই সব..”

“আন্টি আঙ্কেল কি বলছে তুমি কি বুঝতে পারছো না? একটু পর আমাদের বিয়ে।” ওদের কথার মাঝে রাজ বা হাত ডুকিয়ে এ কথা বলল।
“বিয়ে মানে কি? আপনি আর কয়টা…”

রানির কথা শেষ করার আগে রাজ সিনথিয়া কে কিছু শপিং এগিয়ে দিয়ে বলল,
“আন্টি এই গুলি রানি কে পড়িয়ে দিন।”
“দাও বাবা।”

সিনথিয়া শপিং গুলি হাতে নেয়। এদিকে রানির কথা কেউ শুনতেই চাইছে না। হয়তো রাজ নয়তো আরমান আর না হয় সিমথিয়া কোনো না কোনো ভাবে তাকে আটকিয়ে দিচ্ছে।

“নে এই গুলি পড়ে রেডি হয়ে আয়।”

সিনথিয়া রানির হাতে ব্যাগ গুলি দিলে রানি রাগে সেই গুলি মাটি তে ছুড়ে ফেলে ফুসফুস করতে করতে নিজের রুমে চলে যায়।

মেয়ের এমন অবস্থা দেখে সিনথিয়া বিনয়ের সাথে বলে,
“কিছু মনে করো না বাবা। আসলে ও..”
“ইটস ওকে আন্টি। ওকে আমি ভালো করেই চিনি।”

আরমান বলল,
“এই কারণেই তো তোমার হাতে ওকে দিতে আমি সময় নিচ্ছি না বাবা।”

রাজ মুচকি হাসে। সিনথিয়া ব্যাগ গুলি নিয়ে আবার রানির রুমের দিকে যায়।
..
আসলে রাজ সকাল সকাল রানির বাসায় চলে এসেছিল। আরমান আর সিনথিয়া কে নিজের পরিচয় দেয় বাসায় এসেই। সবার মুখে এত নাম ডাক শুনে তাদেরও চিনতে অসুবিধা হয় না। তারা অবাক হয়ে যত্নে রাজ কে ঘরে নিয়ে আসে। সে রানি কে বিয়ের প্রস্তাব দেয়। রানি কে পছন্দ করে সেটাও জানায়। তাই তারা রাজি হয়ে যায়।

পাত্র দেখতে শুনতে ভালো। এতো নাম ডাক রানি কেও পছন্দ করে আপত্তি করার মানেই হয় না। তাই রানির বাবা মাও রাজি হয়ে যায়।

আজ শুক্রবার। তাই রাজ আজই বিয়ে করে নিতে চায় রানি কে। এটা শুনে তারা অবাক হয় এত তাড়াতাড়ি..

কিন্তু পরে আর না করেনি। কারণ তাদের জানানোর মতো তেমন কেউ নেই। আর রানি যে অবস্থায় আছে। মানে মানে বিয়ে টা হলে বাঁচে তারা। বিয়ের পরে না হয় মেয়ে এই বাড়িতেও থাকতে পাড়ে কোনো সমস্যা হবে না। বাবা মায়ের চিন্তা তো দূর হবে। এই ভেবেই অমত করে না।

একটু পর কাজি আসবে তাদের বিয়ে পড়াতে। রাজ সব প্রস্তুতি নিয়েই এসেছে। স্বাদে কি আর রাতের ঘুম আরাম করে চিন্তা করেছে সে?

সিমথিয়া রানির পাশে বিছানার উপর ব্যাগ গুলি রাখে।
“মা এমন ভালো ছেলে কি আর সব সময় পাওয়া যায়? এত ভালো ছেলে তোকে পছন্দ করে বলেই তো বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে এলো। তুই মা আর অমত করিস না। রাজি হয়ে যা। তোর বাবাও না হলে রাগ করবে। এই গুলি পড়ে রেডি হয়ে নে।”
“আম্মু তোমরা কেন বুঝতে চাইছো না আমার কথা? আমাকে কিছু বলার সুযোগ কেন দিচ্ছো না? উনাকে পছন্দ আমিও করতাম..”

“তা হলে আর অমত না করে চুপ করে রেডি হয়ে নে।”

রানি সামনের দিকে তাকিয়ে দেখে তার বাবা ঘরে প্রবেশ করেছে।
“আব্বু আমার কথাটা একটু তুমি শুনো।”
“কোনো কথা আমি শুনতে চাই না। এত দিন কষ্ট করে নিজের সব টা দিয়ে একমাত্র সন্তান কে মানুষ করেছি কি এই কারণে? অন্যের সামনের মেয়ের মুখের উপর কথা শুনতে? না এমন কখনোই হবে না। যদি আমাদের মা বাবা হিসেবে সম্মান করে থাকিস তা হলে ওই ছেলেটার সামনে বেইজ্জত করিস না আমাদের। যা বলছি তাই কর। তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে নে। একটু পর কাজি চলে আসবে।”

“আব্বু ওই লোকটা আ..”
“সিনথিয়া চলে এসো। বাকি টা ওর কাছে, আমাদের যা বলার আমরা বলে দিয়েছি।”

গম্ভীর কন্ঠে আরমান কথা টা বলে চলে গেল। স্বামীর বাধ্য স্ত্রী সিনথিয়া স্বামীর কথা মতো চলে যায়। যাওয়ার আগে দরজায় দাঁড়িয়ে বলে,
“জিদ না করে রেডি হয়ে নে। একা যদি রেডি হতে না পারিস তবে সামিয়া কে ডেকে নে।”

এই বলে সিনথিয়া চলে যায়।

রানির মাথাতেও সামিয়া আসে। ভাবে সামিয়া হয়তো কিছু করতে পারবে। তাই তাড়াতাড়ি করে সামিয়া কে কল দেয়। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বাসায় আসতে বলে।

সামিয়া বাসায় এসে রাজ কে বসে থাকতে দেখে অবাক হয়। তারপর তাড়াতাড়ি করে রানির কাছে চলে যায়।

“রানি রানি।”
“তুই এলি? এতক্ষণ লাগে? এত হাপাচ্ছিস কেন? কোন পাগলা কুত্তা দৌড়ানি দিল?”
“আরে থাম না। এখন তোর এই কথা গুলি একটু বন্ধ কর।”
“আমার সব শেষ।”
“স্যার মানে তোর রাজ চৌধুরী কে বাসায় দেখলাম আঙ্কেলের সাথে হাসছে কথা বলছে।”
“হুম রে। ডেভিল টা আমার আম্মু আব্বু কে খেয়ে ফেলেছে।”
“কি?”
“না মানে হাত করে নিয়েছে। নিজের বশে এনে ফেলেছে রে। আমি এখন কি করব?”
“কেন? কি হয়েছে বলবি তো। সব টা বল।”
“উনি আসছে আমায় বিয়ে করতে আজ।”
“হোয়াট?”
“হো বইন হো। আমার জীবন টা কয়লা। কি করব আমি?”
“মানে সিরিয়াসলি?”
“আরে এই বাইদানী তোর সাথে এখন মজা করতে আমার কোন পা টা গেছে রে?”
“উনি তোকে বিয়ে..”
“না না আমাকে না তো তোর নানি কে বিয়ে করতে আসছে। আজাইরা লাড্ডু কোথাকার।”
“না ইয়ে, তোকে বিয়ে করতে আসলে তো ভালোই। তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে নে।”
“কি করে রেডি হবো? উনি তো একটা ডেভিল।”

রানি সামিয়া কে সব টা বলে। সেদিনের পর থেকে তার মন খুব বেশি খারাপ হওয়ায় সামিয়া কে সব কিছু বললেও সেই ঘটনার কথা জানায়নি। তেমন মন মানসিকতা ছিল না তার।

সব শুনে সামিয়া বেশ অবাক হয়। এটাও সম্ভব? কি করে? সে হা করে তাকিয়ে আছে রানির দিকে।

“তুই ঠিক বলছিস?”
“তা নয় তো কি? স্বাদে কি আমি উনাকে বিয়ে করতে চাইছি না? উনি তো একটা লুচ্চা। যাকে কি না এত দিন মনে প্রাণে চেয়ে এসেছে আজ তাকেই বিয়ে করতে আমার…”
“আরে আরে কাঁদিস না। চুপ কর।”
“কি করে চুপ করব বল তো? উনি কি ভাবে করতে পারল? তারপরেও আমার সাথে…”
“তুই বা কি করে শিওর হচ্ছিস মুখের কথা শুনে?”
“নিজের চোখ কেও কি অবিশ্বাস করব? এটাই বলছিস তুই আমায়?”
“না আসলে। যাই হোক এখন কি করার?”
“আমিও তো তাই ভাবছি এখন কি করার? কি করব আমি? তুই কিছু বুদ্ধি দে।”
“আ আমি?”
“এমন করে বলছিস কেন? গোবর মাথায় একটু কিছুও কি বুদ্ধি নাই? সব টাই কি ফাঁকা কলসি লুচ্চা মেয়ে?”

সামিয়া রানির কথার জবাব না দিয়ে একটু ভেবে বলে,
“এক কাজ কর এখন উনি যা বলছে তেমনি কর। পরে উনার কাছে গিয়ে না হয় সব টা জেনে নিস। যদি সত্যিই হয় তবে না হয় ডি…”
“তার মানে তুই বলতে চাইছিস আমি জেনে শুনে নিজের গলা দঁড়ির সামনে নিয়ে হাজির করব? নিজেই নিজের জীবন টা আগুনের কাছে বিলিয়ে দিব। আর বলব নে আগুন খা আমায়। খেয়ে শেষ করে ছাই করে দে।”
“দেখ এখন এই সব বলার সময় নয়। উনি যেমন মানুষ তাতে সব করতে পাড়ে। যদি রাজি না হস পরে উনি তোর ক্ষতি করলে? তার থেকে ভালো উনি যা বলছে তাই কর। রেডি হয়ে নে।”

“আরে ডাইনি তোকে এনেছিলাম আমায় বাঁচাতে। এখন তুই নিজেই মরণ কে উস্কিয়ে দিচ্ছিস। তুই একটা আস্তো শাকচু..”

রানির কথা শেষ হওয়ার আগেই দরজার ওপাড় থেকে সিনথিয়ার কথা শুনা যায়।
“কি হলে রে? হলো তোদের? আর কতক্ষণ লাগবে? সামিয়া তাড়াতাড়ি করে রেডি কর ওকে। কাজি চলে আসবে একটু সময়ের মাঝে।”
“আ আন্টি হয়ে যাবে। তু তুমি যাও। আর একটু আছে।”
“তাড়াতাড়ি কর।”

বলেই সিনথিয়া চলে যায় দরজার ওপাড় থেকে।

“দেখ বইন তোর পায়ে পড়ি এখন চিন্তা ভাবনা না করে বিয়ে টা করে নে। পরে না হয় সব জেনে শুনে একটা কিছু ভাবা যাবে। তাড়াতাড়ি উঠ। তৈরি হ।”
“পরে কেন? আগে জেনে শুনে নিলে কি হয়?”
“তোর যে লাভার। সেই সময় টা পেলে তো। দেখছিস না একদিনও সময় দিল না। আজ বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে এলো। আজই বিয়ে করবে বলে সব ঠিকঠাকও করে নিল।”
“দেখ তুই উনাকে একদম কি কিছু বলবি না.”
“ওরে কতো দরদ। তাহলে রেডি হয়ে নে উনার গলায় গিয়ে ঝুঁলে পড়।”
“মুলা তুই…”
“কিছু না তাড়াতাড়ি বিয়ে করে উনার সংসার কর গিয়ে। উঠ।”

রানি মুখ ভুতা করে আছে। সামিয়া তাকে শাড়ী পড়িয়ে দিয়ে সাজাতে ব্যস্ত।

“বইন মুখ ভুতা করে রাখিস না। পরে দেখবি তোর হবু জামাই এই মুখ ভুতার কারণে আমাকেই না মেরে ফেলে..”
“সামু তুই…”
“ভুল কিছু বলি নি।”
“আমিও তাই চিন্তা করছি। কি করে ওই গ্যাংস্টারের সংসার করব? থাকব কি করে উনার সাথে এক ছাদের তলায়?”

চলবে….
(গঠনমূলক কমেন্ট করবেন)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here