চাঁদ হয়ে রবো পর্ব ৩

“চাঁদ হয়ে রবো”
~খাদিজা বিনতে হক
পর্ব-৩
,
“কাজটা ঠিক ঠাক করার জন্য ধন্যবাদ।
টাকাটা তোমার একাউন্টে চলে যাবে”
“আরে পেনিক খাচ্চো কেনো।এতো দিনে ধরা পরেছি যে আজ পরবো”
“আমার কাজ করো শুধু।ওকে।বেশি কথা আমার ভালো লাগে না।আমি অল্প কথার মানুষ।কথা কম কাজ বেশি বেশি”
,
আশিক সাহেব এতো চিন্তা করছেন কেনো?
অফিসে কাজে মনোযোগ দেখছি না?
কোনো ব্যপারে চিন্তিত?
পার্সোনাল হলে থাক?
,
তুষার হাসার চেষ্টা করে বলল
“আপনার থেকে কি লুকাবো।বলেন?”
তুষারের জেনো গলা আটকে আসছে।আর যাই হোক চার দেয়ালের কথা বাহিরের কাউকে বলাটা বেমানান।
,
বুজেছি?ফ্যামিলি প্লানিং করছেন?তাই চিন্তিত?ভাবি বয়সটা তো দেখতে হবে?খুব যে ছোটো মেয়েটা?
“ও ছোটো কি না বড় আমি মাঝে মাঝে বুজতে পারিনা।হয়তো বা বুজি না”
,
বুজতে পেরেছি।গভির চিন্তায় আছেন।নিন।এই সিগারেটটায় টান দিন ভালো লাগবে।
,
ফাহাদ সাহেব তুষারের অফিসের ম্যানেজার।
,
“এখন আর ভালো লাগে না। এসব।ফাহাদ ভাই।”
“আমি জানতে চাই না।তবে এটুকু বলতে পারি।
মানুষের শরীরে রোগ হয়।আপনারও ঠিক তাই।হয়েছে।না আমি এটা বলবো না আপনি অসুস্থ।
সমস্যা সবার জীবনে থাকে।সমস্যা তখনই মিটবে যখন সমস্যার গোরায় যেতে পারবেন।যেমন ধরুন সামনের সতেজ গাছটা ধিরে ধিরে শুকিয়ে মরে যাচ্ছে।আমরা উপরে থেকে পরি চর্যা করবো।ঠিক।ঠাক।কিন্তু ভিতরের খবর কউ রাখিনা।আপনার যে করনে মোনটা উসখুস তার গোরায় যেতে হবে দ্বিধায় থাকবেন না।”
,
তুষার তার লাল লাল চোখ দুটো দিয়ে তাকালো ফাহাদ সাহেবের দিকে।ওর চোখ দেখে যে কেউ বুজতে পারবে।ও নেশা করেছে।সিগারেটে পোরা
কালো ঠোট দুটো কাপছে।হাতের মেবাইলটা নিয়ে কল দিলো সেই নাম্বারে যে নাম্বারটায় সেদিন ফোন দিয়ে কেউ ওকে বলে ছিলো
“কে পৌষী বলছেন।কাল কের টাকাটা নিলোন না।আপনি আমার কতটা উপকার করেছেন আপনিও জানেন না।সত্যি আমি আপনার কাছে কালকের দিনের জন্য কৃতার্থ।সত্যি অন্য রকম একটা দিন ছিলো কাল।আপনি তো আমাকে,,,,।”
এই টুকু শুনে ফোনটা কেটে দিয়েছিলো।কাল অন্য ছেলেদের সাথে ছিলো কথাটা শুনেই তুষারের রক্ত মাথায় উঠে গুয়ে ছিলো।লোকটার বাকি কথা গুলো আর শোনে নি।
হয়তো বা ওর মতে লোকটা খারাপ কিছু বলতো যেটা শোনার আগে নিজেকে অক্ষম মনে হতো।
,
পৌষী শাড়ী টানতে টানতে উপরে তুলছে।
আজ যে কতো বার পরেছে এই শাড়ীর কুচিতে বেধে ও নিজেও জানে না।কুচি গুলোও বার বার খুলে গেছে।শেষ মেষ কুচি গুলো মুচড়িয়ে কোমরে গুজে দিলো।শ্বাশুড়ি মুখ টিপ হাসার চেষ্ট করছে।হাসি থামিয়ে ভর্ৎসনা করে বলল
“অর্ধেক বয়স হাটুর নিচে গেছে এখনও ঠিক করে শাড়ী পরতে পারে না”
লিজা বেগম নিজ থেকে এগিয়ে এসে শাড়ীর কুচি ঠিক করে দিলো।
“বৌমার খেয়াল রাখা হচ্ছে বুজি”
দরজার কাছে তাকিয়ে।খুশিতে কোনায় কোনায় ভরে গেলো লিজা বেগমের।
“বিথী।মা তুই”
বিথী লিজা বেগমের গলা জরিয়ে।আহ্লাদী স্বরে বলল।তুমি ডাকলে আমি সারা না দিয়ে পারি।
বিথী তুষারের খালাতো বোন।তুষারের সঙ্গে বিয়ের কথা ছিলো।পৌষীকে দোখার পর বিয়ে ভেঙে দেয়।তাতে বিথী অনেক রেগে ছিলো পৌষীর উপর ঠিক ঠাক ভাবে কথা বলতো না।তবে এখন ওরা অনেক মিশুক।যেনো দুজন বেস্টফ্রেন্ড।
তুষার সময়ের আগেই বাড়ী ফিরেছে।
ততক্ষণে পৌষী শাড়ী খুলে ফেলেছে।
চোখে কাজল।ঠোটে লিপস্টিক।কিছু গয়না।
মুখে মেক আপও করেছিলো।
বাড়ীতে একা থাকলে সময় পার করার জন্য হাবিজাবি করে এখনতো।বিথীও চলে এসেছে।
,
তুষার অপরাধী মুখ নিয়ে পৌষীকে বলল।
“সরি”
“হুম”
এই সরি।ঝগড়া শুনতে আর দেখতে দেখতে কান পচে গেছে।
“হুম মানে বুজলাম না।আমি তোমার সাথে এতো কিছু করলাম আমায় ক্ষমা করে দিবে এতো সহজে”
“হুম”
প্রথম প্রথম পৌষী ব্যপারটা গায় মাখ তো না।মাঝে কষ্ট হতো এখন সয়ে গেছে।কেননা সামনে আরও অনেক কিছু সহ্য করতে হবে।না এই জীনিসটা এভয়েট করতে পারবে না।মেনে নিতে পারবে।তার থেকে চুওচাপ থাকা ভালো।
“তোমার টাকাটা।ফয়সাল ভাই দিসে”
উৎসাহ দৃষ্টিতে চোখে মুখে জিজ্ঞাসু ছাপ নিয়ে তাকিয়ে।
“সরি ফয়সাল ভাই কাল ফেন দিয়ে।তোমার কথা বলছিলো।এমন ভাবে বলেছে।যে আমি ভেবেছি”
তুষারের কন্ঠে অনুতপ্তের ছাপ।
“আমি সত্যি অনুতপ্ত।পৌষী”
“হুম”
পৌষী কথা বলতে চায় না বললেই কথায় কথা বারে।
“আমার তেমাকে বিশ্বাস করা উচিৎ”
“বিশ্বাসে মিলায় বস্তু তর্কে বহু দূর”
“রেগে আছো।রাগটা কমিয়ে দিবো”
তুষার জরিয়ে ওকে ধরলো।পৌষী ওকে ছারীয়ে দিয়ে পাস ফিরে শুয়ে পরলো।
তুষার ওকে ঘাটালো না।শুয়ে পরলো।
,
কালো একটা ছায় ধীরেধীরে ওর দিকো এগিয়ে আসছে হঠাৎ ওর গলাটিপে ধরলো।শ্বাসকষ্ট হচ্ছে।
চেনা একটা গন্ধ।গদম ফুলের গন্ধ নাকে লাগছে।
পৌষী ছটফট ছটফট করছে।যেমন পানি হীনা মাছ ডাঙায় ধরফর করে।
,
হাত দিয়ে তুষারকে ধাক্কা দিতেই লাফদিয়ে উঠলো।ততক্ষণে ছায়াটা ওকে ছেড়ে ব্যলকনির দিকে গিয়ে নিচে ঝাপ দিলো।
,
তুষার ধরফর করে উঠে বসে দেখলো।পৌষী চোখ বন্ধ করে ছটফট করছে।ঘেমে নেয়ে একাকার।
বিরক্ত হয়ে উঠলো তুষার।সারাদিন কাজ করার।পর প্রতী রাতে।এসব জেনো ওর আর ভালো লাগে না।
,
লাইট অন করতে পৌষী উঠে বসে পাসে টেবিলের উপরে জগ থেকে পানি ঢেলে ডগডগ করে এক নিঃশ্বাসে খেয়ে ফেললো।
,
তুষার বিরক্তি নিয়ে জানতে চাইলো কি হয়েছে।
কিছুখন আগে ঘটা সব কথা বলল।তুষার বলল কই আমি তো দেখিনি কাউকে এখানে তুমি স্বপ্ন দেখেছো।
,
তুষার ভুল কিছু বলে নি।এরকম স্বপ্নইতো ও দেখে।
,
পৌষীকে শুয়িয়ে দিয়ে।ও ভাবতে লাগলো। মনের ভিতর খুচ খুচ করছে।পৌষীর কি কোনো সাইক্লোজিকাল প্রবলেম হয়েছে।
নাকি সত্যি অদৃশ্য কোনো কালো ছায়া আছে,
,
পুরুষ মানুষের নাকি ভয় পেতে নেই শিরদারা শক্ত রাখতে হয়।তাই ড্যম কেয়ার বলে।কালো ছায়া বলতে কিছু নেই ভেবে নিজেই নিজেকে বুজালো ।
,
,
চলবে,,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here