#চিত্তদাহ
লেখনীতে : শুভ্রতা আনজুম শিখা
পর্ব ৩১
🍂🍂🍂
~আপামনি, খালাম্মা আপনারে ঘরে যাইতে কইছে। (রেনু)
~কিছু বলেছে? মানে রেগে আছে? (শুভ্রতা)
~নাহ, খালি কইছে আপনারে তার ঘরে যাইতে কইতে।
শুভ্রতা আস্তে করে দরজা ঠেলে ঘরে প্রবেশ করলো। ঘরের এক কোণে রকিং চেয়ারে বসে আছে উমা। শুভ্রতা সারা ঘরে চোখ বুলিয়ে নিলো একবার। মায়ের কাছে গিয়ে নিঃশব্দে বসলো। উমার চোখ বন্ধ, গা এলিয়ে বসে আছে। শুভ্রতা মায়ের কোলে মাথা রেখে পা ছুঁয়ে মাফ চাওয়ার ভঙ্গিতে বলল,
~ক্ষমা করে দাও আম্মু, আর কখনো কোনো কথা লুকাবো না।… ও আম্মু, কথা বলবে না? রাগ করেছো?
টুপ করে এক ফোঁটা অশ্রু উমার পায়ে পড়লো। ধীরে ধীরে শুভ্রতার কান্নার বেগ বাড়লো কিন্তু উমার কোনোরূপ হেলদোল নেই। সে আগের ন্যায়ই চোখ দুটো বন্ধ করে বসে আছে। শুভ্রতা এবার মাথা তুলে মায়ের দিকে তাকালো। শুভ্রতার কান্নায় কখনোই এভাবে চুপ থাকে না উমা। অস্থির হয়ে পড়ে। কিন্তু আজ? একটু চোখ খুলে তাকালোও না তার দিকে। রাগের পরিমাণ হয়তো খুব বেশি। শুভ্রতা মায়ের পা ধরে ঝাঁকালো,
~ও আম্মু! আম্মু? এই আম্মু?
উমা তাকাচ্ছে না দেখে শুভ্রতার চিন্তা বাড়লো। উঠে মায়ের গালে হাত দিয়ে হালকা চাপড় দিয়ে ডাকতে লাগলো। কিছু একটা আন্দাজ করতেই চিৎকার করে উঠলো,
~অরণ্য ভাইয়া!!!!!!!
_________________________________
হাসপাতালের করিডোরে মাথা চেপে বসে আছে শুভ্রতা। অস্পষ্ট স্বরে বিড়বিড় করে আওড়াচ্ছে,
~আম্মু ঠিক হয়ে যাবে, আম্মুর কিছু হবে না। আম্মু ঠিক হয়ে যাবে, আম্মুর কিছু হবে না।
অনিকা শুভ্রতার কাধে হাত রাখতেই সে ঝাড়া মেরে সরিয়ে দিলো। আগের ন্যায় বিড়বিড় করতে লাগলো। অনিকা হতাশ হলো, ক্ষিপ্ত চোখে শাশুড়ির দিকে চাইলো। একদিকে ননদের অবস্থা ক্রিটিক্যাল, অন্যদিকে শাশুড়ি শুভ্রতার প্রতি রাগ। এদিকে শুভ্রতা পাগলের ন্যায় ব্যবহার করছে। মেয়েটার গলায় পাঁচ আঙ্গুলের দাগ একদম স্পষ্ট। শুভ্রতা নিজের কাছেই যেতে দিচ্ছে না। মলম লাগিয়ে দিবে কি করে? শুভ্রতা যা করেছে উমার জন্যই করেছে। কথা লুকানোটা তার ভুল ছিল তাই বলে এভাবে ওকে মারবে জমেলা বেগম। হাতাহাতির সময় দেওয়ালে লেগে শুভ্রতার মাথাও যথেষ্ট ফেটে গেছে। গাল, গলা গড়িয়ে রক্ত পড়ছে। কিন্তু মেয়েটা কাছে যেতে দিলে তো! শাশুড়ির দিকে ক্ষিপ্ত হয়ে তাকিয়েই রইলো সে। জমেলা বেগম বাজখাই গলায় বললেন,
~এভাবে চেয়ে আছো কেনো? চোখ নামাও! ওই মেয়ের সাথে বসেছো কেনো? এখানে এসো। এই মেয়ের সাথে আমাদের কোনো সম্পর্ক নেই। আমার মেয়ে সুস্থ হলে আমি আমার মেয়েকে আমার সাথে নিয়ে যাবো। এই মেয়ে একাই থাকবে।
অনিকা দাঁতে দাঁত চেপে শাশুড়িকে বললেন,
~নেহাৎ এটা হাসপাতাল মা। নয়তো শুভ্রতাকে মারার জন্য এতক্ষণে কুরুক্ষেত্র বাঁধিয়ে ছাড়তাম। উমার অসুস্থ হওয়ার কয়েক ঘন্টার মধ্যেই তার মেয়ের এই দশা করেছেন আপনি। সে সুস্থ হলে কি জবাব দিবেন তা ভাবতে থাকুন আপনি।
জমেলা রেগে চিল্লিয়ে উঠার আগেই অনিকা উসমানের দিকে চেয়ে দ্বিগুণ কঠিন গলায় বললো,
~আপনার মাকে বলেন আমার মেয়ের থেকে দূরে থাকতে।
~শুভ্রতা….
চন্দ্রের কণ্ঠ কর্ণপাত হতেই মাথা তুলে তাকালো শুভ্রতা। এতক্ষণে এক ভরসার হাত পেলো সে। অন্যদিকে শুভ্রতাকে দেখতেই চন্দ্রের বুক মোচড় দিয়ে উঠলো। এলোমেলো চুল, কপাল কেটে রক্ত বেয়ে পড়ছে, গলায় আঙ্গুলের ছাপ, চোখে জল টইটুম্বুর। চন্দ্রর কাছে এলোমেলো পায়ে এগিয়ে গেলো সে।
~আপনি এসেছেন? সত্যিই এসেছেন?
চন্দ্র নিঃশব্দে মাথা ঝাঁকালো। তার চোখেও জল। ভেবেছিলো হটাৎ এসে আজ শুভ্রতা সহ সকলকে চমকে দিবে। কিন্তু বাড়ি গিয়ে জানতে পারলো উমার অবস্থার কথা। এখন সে নিজেই শকড।
~দেখুন না চন্দ্র আম্মুর কি হয়েছে। চোখ খুলছে না, কথা বলছে না। ঐযে… ওই ঘরে ভাইয়া নিয়ে গেছেন তাকে। বললো মায়ের অবস্থা নাকি ক্রিটিক্যাল।
চন্দ্র শুভ্রতার সারা মুখে চোখ বুলালো। স্বযত্নে তার দু গাল ধরে কাঁপা গলায় বললো,
~তোমার এই অবস্থা কেনো শুভ্রতা?
শুভ্রতা সে প্রশ্নের জবাব দিলো না। কাতর ভঙ্গিতে বলল,
~আম্মু হয়তো আমার প্রতি রাগ করেছে। সে তো আপনার সব কথা শুনে চন্দ্র। তাকে গিয়ে বলবেন আমার প্রতি যেনো রাগ না করে। আমি ভালো মেয়ে হয়ে যাবো। তার সব কথা শুনবো, তার সাথে সব কথা শেয়ার করবো, কোনো কথা লুকাবো না।
চন্দ্র শুভ্রতার দৃষ্টি অনুসরণ করে আইসিইউর দিকে একবারের জন্যও তাকালো না। চিত্রা আর রাত্রিকে সামনে আসতে ইশারা করতেই ওরা কাছে এলো। চন্দ্র বেশ দাম্ভিক কণ্ঠে বলল,
~তোমরা থাকতেও ওর এই অবস্থা কেনো? আমি ফিরে না আসা পর্যন্ত ও তোমাদের দায়িত্বে থাকবে। আমার জানের গায়ে যদি আর একটা টোকা লাগে তবে এখানে উপস্থিত প্রত্যেকের লাশ পড়বে।
এতক্ষণ শুভ্রতার সাথে কথা বলা চন্দ্র আর এই চন্দ্রের মধ্যে আকাশ পাতাল তফাৎ। একটু আগের চন্দ্র ছিল শান্ত, নরম আর এই চন্দ্র কঠোর, দাম্ভিক। জমেলার মধ্যে চন্দ্রের এমন কথায় কেউ কোনো প্রকার হেলদোল দেখতে পেলো না। তবে চন্দ্র খেয়াল করেছে। চন্দ্রের কথায় জমেলা ভয়ে তার আঁচল খামচে ধরেছে। চন্দ্রর ঠোঁটে ফুটে উঠলো বাঁকা হাসি। সে নিশ্চিত হলো এখন তার শুভ্রতা নিরাপদ থাকবে।
🍂৪ দিন পর🍂
~আম্মুকে কখন বাসায় নিয়ে যাবো ভাইয়া?
~ ব্রেইন স্ট্রোকের ফলে একপাশ সম্পূর্ণ প্যারালাইজড। সুস্থ হতে বেশ সময় লাগবে।
~আমি আম্মুর সাথে দেখা করে আসি?
~তুই গত চারদিন ধরে এখানে। এক মিনিটের জন্য ঘুমাসনি, ঠিক মত খাওয়া দাওয়াও করছিস না। আগে বাসায় গিয়ে ফ্রেশ হয়ে আয়। আহনাফ, মা, আমরা সবাই তো আছি এখানে।
~চন্দ্র তো অটিতে। এখানে কোথায় দেখলেন? ছাড়ুন ওসব কথা। আম্মুর সাথে দেখা করতে যাই?
অরণ্য দীর্ঘশ্বাস ছাড়লো,
~আচ্ছা যা তবে বেশি কথা বলিস না। জ্ঞান ফিরেছে আটচল্লিশ ঘন্টাও হয়নি এখনও।
.
~তোর কপালে কি হয়েছে শুভ্রতা?
উমার কথায় কপাল থেকে হাত সরিয়ে নিজের হাতের মুঠোয় উমার হাতটা নিয়ে বললো,
~তুমি তো জানোই তোমার মেয়ে কত বেখেয়ালী। পড়ে গিয়ে ব্যাথা পেয়েছি।
~এতোটা..বেখেয়ালী কেনো তুই? একটু অসুস্থ হওয়ায় তোর এই হাল। আমি চলে গেলে কি হবে তোর?
~তুমি যেখানে যাবে আমিও যাবো।
উমা চুপ রইলেন। মেয়ের সাথে তর্ক করে সে জিততে পারবেন না কখনোই। এই দুর্বল অবস্থায় একদমই না। উমা ফের প্রশ্ন করলো,
~সত্যি করে বলতো শুভ্রতা, মা তোকে মেরেছে?
শুভ্রতা ভুত দেখার মত চমকালো। থতমত খেয়ে বললো,
~কি… কি বলছো এসব? আমাকে কেনো কেউ মারবে?
কথা বলতে বলতেই শুভ্রতা গলার স্কার্ফটা আরেকটু ঠিক করে নিলো। জোরপূর্বক হাসলেও উমা শান্ত হলেন না। চোখ বেয়ে গড়িয়ে পড়লো অশ্রুকণা। চোখ বন্ধ করে লম্বা লম্বা শ্বাস নিলেন। শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে। কথা বলছে খুব ধীরে। একটু শান্ত হয়ে ধীর কণ্ঠে বললেন,
~একটা ওয়াদা কর শুভ্রতা। আমার অনুপস্থিতিতে ভেঙে পড়বি না, কারো অত্যাচার সহ্য করবি না।
শুভ্রতা জিজ্ঞেস করলো,
~মা, তুমি কি আমার প্রতি রাগ?
~আম্মুর থেকে মা? (ঠোঁটের কোণে মলিন হাসি টেনে) মেয়ের প্রতি মা বেশিক্ষণ রাগ করে থাকতে পারে না। তোর ওপর রেগে থাকা আমার পক্ষে অসম্ভব।
শুভ্রতা ফুপিয়ে কেঁদে উঠলো। উমা চেয়ে রইলো মেয়ের কান্নামাখা মুখশ্রীর দিকে। শরীরের এক পাশ সম্পূর্ণ প্যারালাইজড, অন্য হাতে ক্যানেলা লাগানো। হাত বাড়িয়ে মেয়ের চোখের অশ্রু মুছবে সেই শক্তিটাও তার মধ্যে অবশিষ্ট নেই। নিজেকে আজ অক্ষম মনে হচ্ছে। মা হয়ে মেয়ের কান্না দেখে যাচ্ছে। হাত বাড়িয়ে অশ্রু মুছে দেওয়ার সামর্থ্য টুকুও নেই। অশ্রুশিক্ত চোখে এক দৃষ্টিতে দেখলো মেয়ের দিকে। মনে মনে আওড়ালো,
~এই দিন দেখার আগে মৃত্যু দিলে না কেনো মাবুদ!
~এমন ছিচকাঁদুনে মেয়ে কথা থেকে এনেছো বলো তো আম্মু? নির্ঘাত রাস্তায় কুড়িয়ে পেয়েছিলে একে?
চন্দ্রের কথায় কান্না থামিয়ে তার দিকে হা করে চেয়ে রইল শুভ্রতা। চন্দ্র কাছে এসে শুভ্রতার চোখের পানি মুছে দিলো। গাঢ় দৃষ্টি স্থির করলো শুভ্রতার চোখের দিকে। তাতে স্পষ্ট অভিমান দেখতে পেলো চন্দ্র। মাথা নুয়ে একটু হাসলো। লাল হয়ে যাওয়া নাকটা টেনে দিয়ে বললো,
~দেখো আম্মু, নাক দিয়ে পানি পড়ছে। ছি! আমার হাতে লেগে গেছে। দেখি! দেখি! ওড়নাটা এগিয়ে দাও, খাচ্চর মেয়ে!
শুভ্রতা ফ্যাল ফ্যাল করে চেয়ে রইলো। কি বলা উচিত বুঝে আসছে না। অন্যদিকে উমা খুশি মনে মেয়ে আর চন্দ্রের দিকে চেয়েই রইলো। সে না পারুক, তার অনুপস্থিতিতে কেউ তো আছে যে তার মেয়ের চোখের পানি মুছে দিবে, তার কান্না থামাবে, তাকে হাসাবে। এতকিছুর মাঝেও সে যেনো একটু স্বস্তি পেলো। এবার সে মনে মনে বললো,
~এবার আমি মরে গেলেও আফসোস নেই। আমার মেয়ের জন্য যোগ্য পাত্রই রেখে যাচ্ছি আমি।
_________________________________
কেবিন থেকে বের হতেই শুভ্রতার ফোন বেজে উঠলো। নুরের কল এসেছে দেখে একটু হাসলো। ওদের সাথে দেখা হয়না, কথা হয়না চারদিন যাবত। করিডোরের চেয়ারে আরাম করে বসে কল রিসিভ করলো। বান্ধবীদের নিজের জন্য চিন্তিত দেখে মন কিছুটা ভালো হয়ে এলো। সে চরম দ্বিধায় ভুগছে। ওদের কি সব জানানো উচিত এখন? নাকি জানাবে না? কথার মাঝেই দেখলো অনিকা উমার কেবিন থেকে বের হয়েছে। অনিকা কিছু বলে উঠার আগেই শুভ্রতা নূরকে বললো,
~আমি বাড়ি গেলে তোদের জানাবো।
দ্রুত কল কেটে অনিকার দিকে তাকালো। অনিকা উদাসীন হয়ে শুভ্রতার পাশে এসে বসলো। কয়েক মিনিটের ব্যবধানেই শুভ্রতাকে জড়িয়ে ধরে হুহু করে কেঁদে উঠলেন। উমা ব্রেইন স্ট্রোক করেছে। যার কারণে শরীরের এক পাশ প্যারালাইজড হয়ে গেছে। অবস্থা তেমন ভালো না বললেও চলে। কয়েকদিন আগেও যেই মানুষটা খুশিতে আত্মহারা ছিল। সেই মানুষটার আজ এই হাল ভাবতেই বুক চিরে কান্না আসছে। শুভ্রতা শান্তনা দেওয়ার ভঙ্গিতে বললো,
~মামী কাঁদবেন না প্লীজ। দেখুন, মা শুনতে পেলে কষ্ট পাবে। সে ভেঙে পড়বে। আমি, আমিও ভেঙে পড়বো। প্লীজ মামী।
অনিকা তবুও থামলো না। কান্নার বেগ বাড়লো। করিডোরে মানুষ যাতায়াতের সময় ফিরে ফিরেই ওদের দিকে তাকাচ্ছে। হাসপাতালে এসব কান্নাকাটিতে কারো তেমন আগ্রহ নেই বললেও চলে। এখানে রোজ শত শত মানুষ প্রাণ ত্যাগ করে, আবার কত মানুষের জন্ম এখানে, কেউ বা আবার মৃত্যুর দ্বারপ্রান্ত থেকে ফিরে আসে। অনিকার এই কান্না এখানে একদম সাধারণ এক বিষয়।
_____________________________________
~আপামনি, আপনারে খালাম্মা ডাকে।
রেনুর কথাটা কর্ণপাত হতেই শুভ্রতা দ্রুত কেবিনে গেলো। পেছন পেছন অনিকাও এলো।
~বাসায় গিয়ে একটু ফ্রেশ হয়ে আয়। তোকে এভাবে দেখতে ভালো লাগছে না আমার। (উমা)
~তুমি একা থাকবে? আমি থাকি, সমস্যা কি?
~সবাই তো আছেই। তুই ফ্রেশ হয়ে আয়। কিছুক্ষণের মধ্যে তো চিত্রাও খাবার নিয়ে চলে আসবে। (অনিকা)
শুভ্রতাকে এক প্রকার জোর করেই উঠালো অনিকা। শুভ্রতা উঠে দাঁড়াতেই উমা ডাকলো,
~শুভ্রতা, রেনুকে সাথে করে নিয়ে যা।
~কেনো? ও থাকুক। আমার টেনশন কম হবে।
~তোর হাতে বানানো চিকেন স্যুপ খেতে ইচ্ছে করছে। রেনু কে দিয়ে পাঠিয়ে দিস। আর তুই ধীরে সুস্থে ফ্রেশ হয়ে আয়।
~আচ্ছা।
~আর তোর কালো থ্রি পিছটা পড়ে আসিস।
শুভ্রতা এবার ভ্রু উচু করে তাকালো। আজ হটাৎ এমন সব আবদার দেখে তার কাছে ব্যাপারটা বেশ অদ্ভুত ঠেকলো। তার গায়ে নীল রঙের একটা থ্রি পিস। মায়ের কালো পছন্দ না। বেশির ভাগ কালো জামা হওয়ায় প্রায় সময়ই উমা বকাঝকা করতো। রঙিন জামা পড়তে বলতো আর আজ উমা বলছে জামা পাল্টে কালো জামা পড়ে আসতে। শুভ্রতা কণ্ঠে অবিশ্বাসের সুর টেনে বললো,
~তুমি বলছো কালো জামা পড়তে? আচ্ছা… কালো জামার অভাব আছে নাকি? কোনটা পড়বো বলো।
~গত ঈদে যে গিফট্ করেছিলাম সেটা।
~ওটায়? ওটাতো একদম কালো। তোমার না কুচকুচে কালো অপছন্দ। আমায় না বলেছিলে একমাত্র আমার পছন্দ বলেই কিনে দিয়েছো।
~তোকে দেখতে ইচ্ছে করছে ওই জামায়। কালোতে তোকে ভালো মানায়। আমি তো এমনি বকাঝকা করতাম।
শুভ্রতা আলতো হাসলো। বাড়ির উদ্দেশ্যে বেরিয়ে আসার আগে অনিকাকে বেশ কড়াভাবে বলে গেছে যেনো উমার সামনে থেকে এক পলকের জন্যও না সরে সে। অনিকা আশ্বাস দিতেই সে বেরিয়েছে।
~~~
চলবে~