জলপদ্ম পর্ব -১০

#জলপদ্ম
#কুরআতুল_আয়েন

|১০|
হামিদ দাদার বাড়ির পিছনের দিকটায় মাঝারি সাইজের একটা বাগান আছে।বাহারী রকমের ফুলে ভরপুর।বাগানের কিছুটা দূরত্ব রেখে দাঁড়িয়ে আছি আমি।আমার চোখে,গোলাপী,সাদা মিশ্রণের কসমস ফুল গুলো ভাসছে।কয়েক কদম পার হয়ে বাগানের সন্নিকটে যেতেই দেখতে পেলাম আবির ভাইকে।গোপাল ফুলের গাছ টাকে খুব মনোযোগ সহকারে দেখছে।আবির ভাইয়ের মতিগতিই বলে দিচ্ছে যেকোনো সময় ফুল টা টুস করে ছিঁড়ে ফেলবে।আমি আর দেরি না করে আবির ভাইয়ের দিকে এগিয়ে গেলাম।আবির ভাইয়ে কাঁধে একটা চাপড় দিয়ে বললাম,

‘আবির ভাই!!পছন্দ হয়েছে বুঝি।যেভাবে দেখছো মনে হচ্ছে এই গোলাপ টা তোমার খুব দরকার।’

আবির ভাই আমার দিকে সরু চোখে তাকালো।এমতাবস্থায় বললো,

‘লাভ নেই!আমি কিছুই বলছি না তোকে।তুই যে তনায়ার চামচা সেটা আমি অনেক আগে থেকেই জানি।তাই,এই ফুল নিয়ে আমি কি করবো সেটা আমার মধ্যেই থাক।’

আমি চোখ পিটপিট করে তাকালাম আবির ভাইয়ের দিকে।আবির ভাইয়ের কথার ধরণে আমার মুখে যেনো কথা আটকে গিয়েছে।আমতাআমতা করে বললাম,

‘তুমি যা ভাবছো তা একদমই নয় আবির ভাই।আমি কেনো তনায়া আপুর চামচা হতে যাবো।’

আবির ভাই গোলাপ ফুল টাকে ভালো করে দেখে বললেন,

‘যাই বলিস না কেনো,আমি কিছুই বলবো না।পারলে মুখে আমি একদম সুপার গ্লু লাগিয়ে রাখবো।যাতে করে,খোলার কোনো চান্সই না থাকে।’

‘তুমি না বললেও আমি কিছুটা আন্দাজ করতে পারছি।আর,আমার মন বলছে আমি যা ভাবছি তাই ঠিক হবে।’

আবির ভাই তাড়াহুড়ো করে আমার দিকে ফিরে তাকালো।চোখদুটোকে বেঁকিয়ে বললো,

‘কি আন্দাজ করতে পারছিস তুই?এই রিমঝিম তোর মতিগতি আমার ভালো ঠেকছে না।’

‘ওইটা আমার মধ্যেই থাক।’

‘এই রিমঝিম বল না!তুই কি আন্দাজ করতে পারছিস।’

আবির ভাইয়ের কথাকে পাত্তা না দিয়ে আমি সামনের দিকে হাঁটা ধরলাম।জোর গলায় বললাম,

‘সময় হলেই তুমি জানতে পারবে আবির ভাই।এখন আমাকে জিজ্ঞেস করেও লাভের লাভ কিছুই হবে না।’

পিছন ফিরে তাকিয়ে দেখি আবির ভাই ক্যাবলার মতো আমার দিকে তাকিয়ে আছে।মনে হচ্ছে,এই কেঁদে দিবে।আমিও আবির ভাইয়ের দিকে তাকিয়ে মুচকি একটা হাসি নিক্ষেপ করে চলে আসলাম।কিছুটা পথ আগানোর পর দেখা হলো নির্ঝর ভাইয়ার সাথে।পকেটে দুই হাত গুঁজে দিয়ে একটা ভাব নিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন।আমাকে দেখেই দাঁত কেলিয়ে বললেন,

‘আরে রিমঝিম!তুমি আমার থেকে এতো পালিয়ে বেড়াও কেনো?’

বিরক্তিতে আমার চোখ,মুখ কুঁচকে এলো।কথা বলতে একদন্ডও ইচ্ছা করছে না।এমনকি সামনে থেকে সরেও যেতে পারছি না।হঠাৎ তারিন আপুর হাসির আওয়াজে পাশের কোণায় থাকা আম গাছটার দিকে তাকালাম।আম গাছটার দিকে তাকিয়ে আমার চোখ যেনো চড়াকগাছ হয়ে গিয়েছে।আম গাছের সাথে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন রক্তিম ভাই।শুধু তাই নয়,তারিন আপুর ডান হাত টা নিজের হাতের সাথে আঁটকে রেখেছেন।তাদের দু’জনের মুখেই অদ্ভুত এক হাসি।যা দেখে আমার ভিতরে প্রবল বেগে অস্থিরতা কাজ করছে।মনে হচ্ছে চোখ ফেটে কান্না চলে আসবে।

‘তারিন আর রক্তিম যেনো একে অপরকে ছাড়া থাকতেই পারে না।তাদের দু’জনকে একসাথে রাজযোটকও লাগে বটে।’

নির্ঝর ভাইয়ার কথায় আমার চোখ দিয়ে দু’ফোঁটা অশ্রু গড়িয়ে পড়লো।চুল গুলো সামনে ছিলো বিধায় তা নির্ঝর ভাইয়ার দৃষ্টিগোচর হয় নি।তাড়াহুড়ো করে চোখের পানিটুকু মুছে নিলাম।এখনো আমার চোখ রক্তিম ভাই আর তারিন আপুর মধ্যে সীমাবদ্ধ।

‘তুমি কি ভাবছো রিমঝিম?’

‘কিছু না নির্ঝর ভাইয়া।আমাকে যেতে দিন।’

নির্ঝর ভাইয়াকে পাশ কাটিয়ে চলে আসতে নিলেই বাঁধলো আরেক বিপত্তি।নির্ঝর ভাইয়া আমার হাত ধরে আঁটকে আছেন।মুহুর্তেই আমার রাগ যেনো আরো চড়ে গিয়েছে।এমনেই রক্তিম ভাইয়ের উপর অভিমান করে আছি সেই সাথে নির্ঝর ভাইয়ের এমন হুটহাট আচরণ দেখে আমার মুখ দিয়ে খুব বাজে রকমের গালি আসছে।মনে মনে একদফা গালি দিয়ে কিছুটা শক্ত গলায় বললাম,

‘এসব কি নির্ঝর ভাইয়া!আপনি আমার হাত ধরে রেখেছেন কেনো।এসব কি ধরনের আচরণ!আমাকে যেতে দিন বলছি।’

‘আরে রিমঝিম!এখন তো হাত ধরাটা খুব কমন ব্যাপার।সামান্য হাত ধরাতেই এতো তেজ দেখাচ্ছো কেনো?তুমি এতো আনস্মার্ট তা জানা ছিলো না আমার।’

আমি ক্ষিপ্ত চোখে তাকালাম নির্ঝর ভাইয়ের দিকে।কিছুটা জোর গলায় বললাম,

‘আমার হাত ছাড়ুন বলছি।আপনার মন মানসিকতা এতোটা নিচ তা আমার ভাবনার বাহিরে ছিলো।আমি আনস্মার্ট হলেও আপনার কি তাতে।যত্তসব!!’

নির্ঝর ভাইয়া সুড়সুড় করে হাত টা ছেড়ে দিলেন।নির্ঝর ভাইয়ার থেকে ছাড়া পেয়ে আমি ধপাধপ পা’য়ে সামনের দিকে এগিয়ে গেলাম।পাশ ফিরে তাকিয়ে দেখি রক্তিম ভাই আমার দিকে অন্যরকম এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছেন।মনে হচ্ছে আমাকে সামনে পেলেই গিলে খাবেন।রক্তিম ভাইয়ের এরূপ চাহনি দেখে আমার রাগ যেনো আরো দ্বিগুণ বেড়ে গিয়েছে।রক্তিম ভাইয়ের থেকে চোখ ফিরিয়ে নিলাম।উফফ!আজকের দিনটাই খারাপ হয়ে গেলো।
————-
হামিদ দাদার জোরাজুড়িতে আমাদের আজকে থাকতেই হলো।বাড়ির কিছুটা অদূরেই দাঁড়িয়ে আছি।রাতের আকাশে আজকে তারাদের কোনো দেখা নেই।কেমন একটা বিদঘুটে রূপ করে আছে।বাড়ির ভিতরের থেকে হাসির আওয়াজের ধ্বনি আমার কানে এসে লাগছে।আমি কিছুটা সামনে এগিয়ে গেলাম।কিছুক্ষণ পর অনুভব করলাম কেউ একজন আমার পিছনে দাঁড়িয়ে আছে।তার শ্বাস-প্রশ্বাসের আওয়াজ আমি শুনতে পাচ্ছি।পিছনে ফিরতে যাবো তার আগেই একজোড়া শক্তপোক্ত হাত আমার মুখটাকে চেপে ধরলো।ভয়ের তাড়নায় চোখ,দুটো খিঁচে বন্ধ করে আছি।মুহুর্তেই আমাকে বাড়ির পিছনের দিকটায় নিয়ে গেলো।গাছের আঁড়ালে নিয়ে গিয়ে আষ্ঠেপৃষ্ঠে জড়িয়ে ধরলো।আমি ভয়ে কিছুই বলতে পারছি না।কপালে ঘামের রেখা জন্ম নিচ্ছে।

‘তোর এতো কি কথা নির্ঝরের সাথে।তোকে তো আমি না করে দিয়েছিলাম তুই ওর আশেপাশে যাবি না রিমঝিম।’

রক্তিম ভাইয়ের কথা শুনে আমি চট করে রক্তিম ভাইয়ের দিকে তাকালাম।অন্ধকারে রক্তিম ভাইয়ের মুখ স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে না।আমি রক্তিম ভাইকে নিজের থেকে দূরে সরিয়ে দিয়ে কটকটে গলায় বললাম,

‘আমার কাছে আসবেন না রক্তিম ভাই।’

রক্তিম ভাই ফোনের ফ্ল্যাশ লাইট অন করে আমার মুখের উপর ধরে বললেন,

‘কি বললি তুই রিমঝিম।আরেকবার বলে দেখ!’

‘আপনি কি কানে শুনেন না রক্তিম ভাই।আমি বলেছি আপনি আমার কাছে আসবেন না।’

‘তুই তো খুব ধড়িবাজ রিমঝিম।তুই আমাকে নিষেধ করছিস।’

‘দেখুন রক্তিম ভাই আমি আপনার সাথে কথা বলতে ইচ্ছুক না।একদম আমার কাছে আসবেন না,আপনার বান্ধুবী তারিন আপুর কাছে গিয়ে এইসব করেন।’

রক্তিম ভাই তেড়ে এসে আমার গাল চেপে ধরলেন।বেশ জোরেই ধরেছেন।মনে হচ্ছে,আমার দাঁতের পাটি খোলে নিবেন।আমি ব্যথায় কুঁকড়িয়ে উঠি।যার কারণে,রক্তিম ভাইয়ের বুকে সজোরে একটা ঘুষি বসিয়ে দেই।রক্তিম ভাই আর একটু শক্ত করে চেপে ধরে বললেন,

‘ভালোই তো শক্তি আছে তোর।কি খাস রে!এখনো হরলিক্স গিলিস নাকি।ছোট বেলায় আমার হরলিক্স টা খেয়ে নিতিস তুই।কি রাক্ষসের মতো খেতিস।মনে হতো জীবনেও তুই এইসব খাস নি।’

আমি আড়চোখে তাকালাম রক্তিম ভাইয়ের দিকে।রক্তিম ভাইয়ের মুখ এখন কিছুটা দেখা যাচ্ছে।নাক ফুলিয়ে রেখে আমার দিকে রাগান্বিত দৃষ্টি নিয়ে তাকিয়ে আছেন।আমি আপ্রাণ চেষ্টা করছি রক্তিম ভাইয়ের থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে আনতে,কিন্তু কিছুতেই পারছি না।আমি নড়াচড়া করতেই রক্তিম ভাই আমার কোমর চেপে ধরে নিজের কাছে এগিয়ে নিয়ে গেলেন।গাল থেকে হাতের বাঁধন টা ছাড়িয়ে দিয়ে আমার দিকে নিষ্পলক তাকিয়ে রইলেন।ছাড়া পেয়ে আমি লম্বা শ্বাস নিতে থাকলাম।গালের দু’পাশ ব্যথায় টনটন করছে।কথা বলতেও কষ্ট হচ্ছে।আমি রাগে,দুঃখে রক্তিম ভাইয়ের থেকে চোখ ফিরিয়ে নিলাম।চোখ দিয়ে টপটপ করে পানি পড়ছে।বাহিরে মৃদু বাতাস বইছে।সেই সাথে শীতের জাগানও বাড়ছে।মৃদু বাতাসটা যেনো আমার সারা শরীরে কাঁপন ধরিয়ে দিচ্ছে।রক্তিম ভাই আমার চুলের ফাঁকে হাত ডুবিয়ে দিলেন।গলার চারপাশে রক্তিম ভাইয়ের ঠান্ডা হাতের ছোঁয়া পেয়ে আমি যেনো আরো জমে যাই।রক্তিম ভাই আমার কানের লতিতে ছোট করে একটা কাঁমড় বসিয়ে দিয়ে বললেন,

‘প্রতিনিয়ত আমি পুঁড়ছি!ভালোবাসার দহনে পুঁড়ছি।’

আমি চমকে উঠলাম।রক্তিম ভাইয়ের এরূপ কথা বলার কারণ কি হতে পারে তা আমি কিছুতেই বুঝতে পারছি না।কিছুটা কিউরিসিটি নিয়েই বললাম,

‘মানে!’

‘আমার গোপন ভালোবাসার দহন!’

‘উফফ!রক্তিম ভাই আমি আপনার কথার আগামাথা কিছুই বুঝতে পারছি না।কিসব যা তা বলছেন।’

রক্তিম ভাই মুচকি হাসলেন।আমাকে ছেড়ে দিয়ে বললেন,

‘এখন তোর মাথায় কিছুই ঢুকবে না রিমঝিম।সময় হলে ঠিকই উপলব্ধি করতে পারবি।’

কথাটা বলেই কপালে একটা গভীর চুমু খেয়ে জায়গা প্রস্থান করার জন্য সামনের দিকে হাঁটা ধরলেন।আমি একপলকে তাকিয়ে রইলাম রক্তিম ভাইয়ের দিকে।রক্তিম ভাইয়ের মতিগতি বুঝা খুবই মুশকিল।রক্তিম ভাই মনে হয় অন্য ধাঁচের তৈরি!!
——–
মশার প্রকোপে আমার ঘুমের বারোটা বেজে গিয়েছে।হামিদ দাদার বাড়িতে যে এতো মশা আছে তা আগে জানা ছিলো না।অতিরিক্ত মানুষ জন হওয়ায় আমাদের জায়গা হয়েছে বড়ঘরের ফ্লোরে।এই দিকটায় মশার প্রকোপ অনেক।কোনোমতে নড়েচড়ে আবারও ঘুমানোর প্রস্তুতি নিলাম।কিছুক্ষণ পর মশার ভনভনানির আওয়াজে বাধ্য হয়ে শোয়া থেকে উঠে পড়লাম।সবাইকে পাশ কাটিয়ে গুটিগুটি পায়ে বারান্দার দিকে এগিয়ে গেলাম।চারপাশ কুয়াশায় আচ্ছন্ন হয়ে আছে।দূরের কোনো কিছুই স্পষ্ট না।

‘এই মাঝরাতে এইখানে কি করিস তুই রিমঝিম।’

ঠান্ডা,নিস্তব্ধ পরিবেশে হঠাৎ কথার আওয়াজ পেয়ে আমি কিছুটা ভয় পেয়ে যাই।পিছন ফিরে তাকিয়ে দেখি রক্তিম ভাই পাতলা একটা টি-শার্ট জড়িয়ে বারান্দার গ্রিলে ঠেস দিয়ে দাঁড়িয়ে সিগারেট ফুঁকছেন।রক্তিম ভাই আমার দিকে ভ্রু জোড়া নাচিয়ে পুনরায় বললেন,

‘কি হলো বল!এখানে দাঁড়িয়ে আছিস কেনো?’

‘ঘুম আসছিলো না তাই।আপনি কেনো দাঁড়িয়ে আছেন রক্তিম ভাই!আপনারও কি ঘুম আসছিলো না।’

‘ঘুম তো বরাবরই আমার পাতলা।তার উপর মশারা অনেক জ্বালিয়েছে আমাকে।’

‘কবে থেকে সিগারেট খাওয়া শুরু করেছিলেন রক্তিম ভাই?’

রক্তিম ভাই সোজাসাপটা উত্তরে বললেন,

‘যবে থেকে আমি আমার গোপন ভালোবাসার দহনে পোঁড়া শুরু করেছি তবে থেকেই।’

আমি রক্তিম ভাইয়ের সোজাসুজি গিয়ে দাঁড়ালাম।বুকে হাত গুঁজে দিয়ে বললাম,

‘কে আপনার গোপন ভালোবাসা রক্তিম ভাই।যার দহনে আপনি প্রতিনিয়ত পুঁড়ছেন।’

কথাটা শেষ হতে না হতেই রক্তিম ভাই আমাকে হেঁচকা টান দিয়ে নিজের বাহুডোরে আবদ্ধ করে নিলেন।এমন হওয়ায় আমি ছিটকে গিয়ে রক্তিম ভাইয়ের বুকের মধ্যিখানে গিয়ে পড়ি।রক্তিম ভাই আমাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে আছেন।ঘাড় থেকে চুল গুলো সরিয়ে দিয়ে হালকা ভাবে ঠোঁট ছুঁইয়ে দিয়ে বললেন,

‘সময় এখনো আসে নি।সেই সময়ের জন্য যে আমিও অধীর আগ্রহে বসে আছি।’

রক্তিম ভাইয়ের নেশা জড়ানো কথায় আমার সারা শরীর শিউরে উঠলো।মাথা তোলে পিটপিট করে তাকালাম রক্তিম ভাইয়ের দিকে।আমি তাকাতেই রক্তিম ভাই টুপ করে আমার নাকের ডগায় একটা চুমু খেলেন।আমি সাথে সাথে মাথা নামিয়ে ফেলি।কেনো জানি আমার বারবার মনে হচ্ছে,রক্তিম ভাই আমাকে ভালোবাসেন!আমিই রক্তিম ভাইয়ের গোপন ভালোবাসা।কিন্তু,তারিন আপু আর রক্তিম ভাইকে একসাথে দেখলে আমার ভাবনা সবকিছুই মিথ্যে হয়ে যায়।তখন বারবার মনে হয়!আমি ভুল।রক্তিম ভাই আমাকে ভালোবাসেন না,ভালোবাসতে পারেনও না।কিন্তু,এতো দ্বিধা দ্বন্দের মাঝে একটা কথা ঠিকই সত্যি!সেটা হলো আমি ভালোবাসি রক্তিম ভাইকে।ভিষণ ভালোবাসি!!আমার উপলব্ধি জুড়ে শুধু রক্তিম ভাইয়ের বিচরণ।

চলবে..

(আমি কি লিখছি তা কিছুই জানি না😒।)#জলপদ্ম
#কুরআতুল_আয়েন

|১০|
হামিদ দাদার বাড়ির পিছনের দিকটায় মাঝারি সাইজের একটা বাগান আছে।বাহারী রকমের ফুলে ভরপুর।বাগানের কিছুটা দূরত্ব রেখে দাঁড়িয়ে আছি আমি।আমার চোখে,গোলাপী,সাদা মিশ্রণের কসমস ফুল গুলো ভাসছে।কয়েক কদম পার হয়ে বাগানের সন্নিকটে যেতেই দেখতে পেলাম আবির ভাইকে।গোপাল ফুলের গাছ টাকে খুব মনোযোগ সহকারে দেখছে।আবির ভাইয়ের মতিগতিই বলে দিচ্ছে যেকোনো সময় ফুল টা টুস করে ছিঁড়ে ফেলবে।আমি আর দেরি না করে আবির ভাইয়ের দিকে এগিয়ে গেলাম।আবির ভাইয়ে কাঁধে একটা চাপড় দিয়ে বললাম,

‘আবির ভাই!!পছন্দ হয়েছে বুঝি।যেভাবে দেখছো মনে হচ্ছে এই গোলাপ টা তোমার খুব দরকার।’

আবির ভাই আমার দিকে সরু চোখে তাকালো।এমতাবস্থায় বললো,

‘লাভ নেই!আমি কিছুই বলছি না তোকে।তুই যে তনায়ার চামচা সেটা আমি অনেক আগে থেকেই জানি।তাই,এই ফুল নিয়ে আমি কি করবো সেটা আমার মধ্যেই থাক।’

আমি চোখ পিটপিট করে তাকালাম আবির ভাইয়ের দিকে।আবির ভাইয়ের কথার ধরণে আমার মুখে যেনো কথা আটকে গিয়েছে।আমতাআমতা করে বললাম,

‘তুমি যা ভাবছো তা একদমই নয় আবির ভাই।আমি কেনো তনায়া আপুর চামচা হতে যাবো।’

আবির ভাই গোলাপ ফুল টাকে ভালো করে দেখে বললেন,

‘যাই বলিস না কেনো,আমি কিছুই বলবো না।পারলে মুখে আমি একদম সুপার গ্লু লাগিয়ে রাখবো।যাতে করে,খোলার কোনো চান্সই না থাকে।’

‘তুমি না বললেও আমি কিছুটা আন্দাজ করতে পারছি।আর,আমার মন বলছে আমি যা ভাবছি তাই ঠিক হবে।’

আবির ভাই তাড়াহুড়ো করে আমার দিকে ফিরে তাকালো।চোখদুটোকে বেঁকিয়ে বললো,

‘কি আন্দাজ করতে পারছিস তুই?এই রিমঝিম তোর মতিগতি আমার ভালো ঠেকছে না।’

‘ওইটা আমার মধ্যেই থাক।’

‘এই রিমঝিম বল না!তুই কি আন্দাজ করতে পারছিস।’

আবির ভাইয়ের কথাকে পাত্তা না দিয়ে আমি সামনের দিকে হাঁটা ধরলাম।জোর গলায় বললাম,

‘সময় হলেই তুমি জানতে পারবে আবির ভাই।এখন আমাকে জিজ্ঞেস করেও লাভের লাভ কিছুই হবে না।’

পিছন ফিরে তাকিয়ে দেখি আবির ভাই ক্যাবলার মতো আমার দিকে তাকিয়ে আছে।মনে হচ্ছে,এই কেঁদে দিবে।আমিও আবির ভাইয়ের দিকে তাকিয়ে মুচকি একটা হাসি নিক্ষেপ করে চলে আসলাম।কিছুটা পথ আগানোর পর দেখা হলো নির্ঝর ভাইয়ার সাথে।পকেটে দুই হাত গুঁজে দিয়ে একটা ভাব নিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন।আমাকে দেখেই দাঁত কেলিয়ে বললেন,

‘আরে রিমঝিম!তুমি আমার থেকে এতো পালিয়ে বেড়াও কেনো?’

বিরক্তিতে আমার চোখ,মুখ কুঁচকে এলো।কথা বলতে একদন্ডও ইচ্ছা করছে না।এমনকি সামনে থেকে সরেও যেতে পারছি না।হঠাৎ তারিন আপুর হাসির আওয়াজে পাশের কোণায় থাকা আম গাছটার দিকে তাকালাম।আম গাছটার দিকে তাকিয়ে আমার চোখ যেনো চড়াকগাছ হয়ে গিয়েছে।আম গাছের সাথে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন রক্তিম ভাই।শুধু তাই নয়,তারিন আপুর ডান হাত টা নিজের হাতের সাথে আঁটকে রেখেছেন।তাদের দু’জনের মুখেই অদ্ভুত এক হাসি।যা দেখে আমার ভিতরে প্রবল বেগে অস্থিরতা কাজ করছে।মনে হচ্ছে চোখ ফেটে কান্না চলে আসবে।

‘তারিন আর রক্তিম যেনো একে অপরকে ছাড়া থাকতেই পারে না।তাদের দু’জনকে একসাথে রাজযোটকও লাগে বটে।’

নির্ঝর ভাইয়ার কথায় আমার চোখ দিয়ে দু’ফোঁটা অশ্রু গড়িয়ে পড়লো।চুল গুলো সামনে ছিলো বিধায় তা নির্ঝর ভাইয়ার দৃষ্টিগোচর হয় নি।তাড়াহুড়ো করে চোখের পানিটুকু মুছে নিলাম।এখনো আমার চোখ রক্তিম ভাই আর তারিন আপুর মধ্যে সীমাবদ্ধ।

‘তুমি কি ভাবছো রিমঝিম?’

‘কিছু না নির্ঝর ভাইয়া।আমাকে যেতে দিন।’

নির্ঝর ভাইয়াকে পাশ কাটিয়ে চলে আসতে নিলেই বাঁধলো আরেক বিপত্তি।নির্ঝর ভাইয়া আমার হাত ধরে আঁটকে আছেন।মুহুর্তেই আমার রাগ যেনো আরো চড়ে গিয়েছে।এমনেই রক্তিম ভাইয়ের উপর অভিমান করে আছি সেই সাথে নির্ঝর ভাইয়ের এমন হুটহাট আচরণ দেখে আমার মুখ দিয়ে খুব বাজে রকমের গালি আসছে।মনে মনে একদফা গালি দিয়ে কিছুটা শক্ত গলায় বললাম,

‘এসব কি নির্ঝর ভাইয়া!আপনি আমার হাত ধরে রেখেছেন কেনো।এসব কি ধরনের আচরণ!আমাকে যেতে দিন বলছি।’

‘আরে রিমঝিম!এখন তো হাত ধরাটা খুব কমন ব্যাপার।সামান্য হাত ধরাতেই এতো তেজ দেখাচ্ছো কেনো?তুমি এতো আনস্মার্ট তা জানা ছিলো না আমার।’

আমি ক্ষিপ্ত চোখে তাকালাম নির্ঝর ভাইয়ের দিকে।কিছুটা জোর গলায় বললাম,

‘আমার হাত ছাড়ুন বলছি।আপনার মন মানসিকতা এতোটা নিচ তা আমার ভাবনার বাহিরে ছিলো।আমি আনস্মার্ট হলেও আপনার কি তাতে।যত্তসব!!’

নির্ঝর ভাইয়া সুড়সুড় করে হাত টা ছেড়ে দিলেন।নির্ঝর ভাইয়ার থেকে ছাড়া পেয়ে আমি ধপাধপ পা’য়ে সামনের দিকে এগিয়ে গেলাম।পাশ ফিরে তাকিয়ে দেখি রক্তিম ভাই আমার দিকে অন্যরকম এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছেন।মনে হচ্ছে আমাকে সামনে পেলেই গিলে খাবেন।রক্তিম ভাইয়ের এরূপ চাহনি দেখে আমার রাগ যেনো আরো দ্বিগুণ বেড়ে গিয়েছে।রক্তিম ভাইয়ের থেকে চোখ ফিরিয়ে নিলাম।উফফ!আজকের দিনটাই খারাপ হয়ে গেলো।
————-
হামিদ দাদার জোরাজুড়িতে আমাদের আজকে থাকতেই হলো।বাড়ির কিছুটা অদূরেই দাঁড়িয়ে আছি।রাতের আকাশে আজকে তারাদের কোনো দেখা নেই।কেমন একটা বিদঘুটে রূপ করে আছে।বাড়ির ভিতরের থেকে হাসির আওয়াজের ধ্বনি আমার কানে এসে লাগছে।আমি কিছুটা সামনে এগিয়ে গেলাম।কিছুক্ষণ পর অনুভব করলাম কেউ একজন আমার পিছনে দাঁড়িয়ে আছে।তার শ্বাস-প্রশ্বাসের আওয়াজ আমি শুনতে পাচ্ছি।পিছনে ফিরতে যাবো তার আগেই একজোড়া শক্তপোক্ত হাত আমার মুখটাকে চেপে ধরলো।ভয়ের তাড়নায় চোখ,দুটো খিঁচে বন্ধ করে আছি।মুহুর্তেই আমাকে বাড়ির পিছনের দিকটায় নিয়ে গেলো।গাছের আঁড়ালে নিয়ে গিয়ে আষ্ঠেপৃষ্ঠে জড়িয়ে ধরলো।আমি ভয়ে কিছুই বলতে পারছি না।কপালে ঘামের রেখা জন্ম নিচ্ছে।

‘তোর এতো কি কথা নির্ঝরের সাথে।তোকে তো আমি না করে দিয়েছিলাম তুই ওর আশেপাশে যাবি না রিমঝিম।’

রক্তিম ভাইয়ের কথা শুনে আমি চট করে রক্তিম ভাইয়ের দিকে তাকালাম।অন্ধকারে রক্তিম ভাইয়ের মুখ স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে না।আমি রক্তিম ভাইকে নিজের থেকে দূরে সরিয়ে দিয়ে কটকটে গলায় বললাম,

‘আমার কাছে আসবেন না রক্তিম ভাই।’

রক্তিম ভাই ফোনের ফ্ল্যাশ লাইট অন করে আমার মুখের উপর ধরে বললেন,

‘কি বললি তুই রিমঝিম।আরেকবার বলে দেখ!’

‘আপনি কি কানে শুনেন না রক্তিম ভাই।আমি বলেছি আপনি আমার কাছে আসবেন না।’

‘তুই তো খুব ধড়িবাজ রিমঝিম।তুই আমাকে নিষেধ করছিস।’

‘দেখুন রক্তিম ভাই আমি আপনার সাথে কথা বলতে ইচ্ছুক না।একদম আমার কাছে আসবেন না,আপনার বান্ধুবী তারিন আপুর কাছে গিয়ে এইসব করেন।’

রক্তিম ভাই তেড়ে এসে আমার গাল চেপে ধরলেন।বেশ জোরেই ধরেছেন।মনে হচ্ছে,আমার দাঁতের পাটি খোলে নিবেন।আমি ব্যথায় কুঁকড়িয়ে উঠি।যার কারণে,রক্তিম ভাইয়ের বুকে সজোরে একটা ঘুষি বসিয়ে দেই।রক্তিম ভাই আর একটু শক্ত করে চেপে ধরে বললেন,

‘ভালোই তো শক্তি আছে তোর।কি খাস রে!এখনো হরলিক্স গিলিস নাকি।ছোট বেলায় আমার হরলিক্স টা খেয়ে নিতিস তুই।কি রাক্ষসের মতো খেতিস।মনে হতো জীবনেও তুই এইসব খাস নি।’

আমি আড়চোখে তাকালাম রক্তিম ভাইয়ের দিকে।রক্তিম ভাইয়ের মুখ এখন কিছুটা দেখা যাচ্ছে।নাক ফুলিয়ে রেখে আমার দিকে রাগান্বিত দৃষ্টি নিয়ে তাকিয়ে আছেন।আমি আপ্রাণ চেষ্টা করছি রক্তিম ভাইয়ের থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে আনতে,কিন্তু কিছুতেই পারছি না।আমি নড়াচড়া করতেই রক্তিম ভাই আমার কোমর চেপে ধরে নিজের কাছে এগিয়ে নিয়ে গেলেন।গাল থেকে হাতের বাঁধন টা ছাড়িয়ে দিয়ে আমার দিকে নিষ্পলক তাকিয়ে রইলেন।ছাড়া পেয়ে আমি লম্বা শ্বাস নিতে থাকলাম।গালের দু’পাশ ব্যথায় টনটন করছে।কথা বলতেও কষ্ট হচ্ছে।আমি রাগে,দুঃখে রক্তিম ভাইয়ের থেকে চোখ ফিরিয়ে নিলাম।চোখ দিয়ে টপটপ করে পানি পড়ছে।বাহিরে মৃদু বাতাস বইছে।সেই সাথে শীতের জাগানও বাড়ছে।মৃদু বাতাসটা যেনো আমার সারা শরীরে কাঁপন ধরিয়ে দিচ্ছে।রক্তিম ভাই আমার চুলের ফাঁকে হাত ডুবিয়ে দিলেন।গলার চারপাশে রক্তিম ভাইয়ের ঠান্ডা হাতের ছোঁয়া পেয়ে আমি যেনো আরো জমে যাই।রক্তিম ভাই আমার কানের লতিতে ছোট করে একটা কাঁমড় বসিয়ে দিয়ে বললেন,

‘প্রতিনিয়ত আমি পুঁড়ছি!ভালোবাসার দহনে পুঁড়ছি।’

আমি চমকে উঠলাম।রক্তিম ভাইয়ের এরূপ কথা বলার কারণ কি হতে পারে তা আমি কিছুতেই বুঝতে পারছি না।কিছুটা কিউরিসিটি নিয়েই বললাম,

‘মানে!’

‘আমার গোপন ভালোবাসার দহন!’

‘উফফ!রক্তিম ভাই আমি আপনার কথার আগামাথা কিছুই বুঝতে পারছি না।কিসব যা তা বলছেন।’

রক্তিম ভাই মুচকি হাসলেন।আমাকে ছেড়ে দিয়ে বললেন,

‘এখন তোর মাথায় কিছুই ঢুকবে না রিমঝিম।সময় হলে ঠিকই উপলব্ধি করতে পারবি।’

কথাটা বলেই কপালে একটা গভীর চুমু খেয়ে জায়গা প্রস্থান করার জন্য সামনের দিকে হাঁটা ধরলেন।আমি একপলকে তাকিয়ে রইলাম রক্তিম ভাইয়ের দিকে।রক্তিম ভাইয়ের মতিগতি বুঝা খুবই মুশকিল।রক্তিম ভাই মনে হয় অন্য ধাঁচের তৈরি!!
——–
মশার প্রকোপে আমার ঘুমের বারোটা বেজে গিয়েছে।হামিদ দাদার বাড়িতে যে এতো মশা আছে তা আগে জানা ছিলো না।অতিরিক্ত মানুষ জন হওয়ায় আমাদের জায়গা হয়েছে বড়ঘরের ফ্লোরে।এই দিকটায় মশার প্রকোপ অনেক।কোনোমতে নড়েচড়ে আবারও ঘুমানোর প্রস্তুতি নিলাম।কিছুক্ষণ পর মশার ভনভনানির আওয়াজে বাধ্য হয়ে শোয়া থেকে উঠে পড়লাম।সবাইকে পাশ কাটিয়ে গুটিগুটি পায়ে বারান্দার দিকে এগিয়ে গেলাম।চারপাশ কুয়াশায় আচ্ছন্ন হয়ে আছে।দূরের কোনো কিছুই স্পষ্ট না।

‘এই মাঝরাতে এইখানে কি করিস তুই রিমঝিম।’

ঠান্ডা,নিস্তব্ধ পরিবেশে হঠাৎ কথার আওয়াজ পেয়ে আমি কিছুটা ভয় পেয়ে যাই।পিছন ফিরে তাকিয়ে দেখি রক্তিম ভাই পাতলা একটা টি-শার্ট জড়িয়ে বারান্দার গ্রিলে ঠেস দিয়ে দাঁড়িয়ে সিগারেট ফুঁকছেন।রক্তিম ভাই আমার দিকে ভ্রু জোড়া নাচিয়ে পুনরায় বললেন,

‘কি হলো বল!এখানে দাঁড়িয়ে আছিস কেনো?’

‘ঘুম আসছিলো না তাই।আপনি কেনো দাঁড়িয়ে আছেন রক্তিম ভাই!আপনারও কি ঘুম আসছিলো না।’

‘ঘুম তো বরাবরই আমার পাতলা।তার উপর মশারা অনেক জ্বালিয়েছে আমাকে।’

‘কবে থেকে সিগারেট খাওয়া শুরু করেছিলেন রক্তিম ভাই?’

রক্তিম ভাই সোজাসাপটা উত্তরে বললেন,

‘যবে থেকে আমি আমার গোপন ভালোবাসার দহনে পোঁড়া শুরু করেছি তবে থেকেই।’

আমি রক্তিম ভাইয়ের সোজাসুজি গিয়ে দাঁড়ালাম।বুকে হাত গুঁজে দিয়ে বললাম,

‘কে আপনার গোপন ভালোবাসা রক্তিম ভাই।যার দহনে আপনি প্রতিনিয়ত পুঁড়ছেন।’

কথাটা শেষ হতে না হতেই রক্তিম ভাই আমাকে হেঁচকা টান দিয়ে নিজের বাহুডোরে আবদ্ধ করে নিলেন।এমন হওয়ায় আমি ছিটকে গিয়ে রক্তিম ভাইয়ের বুকের মধ্যিখানে গিয়ে পড়ি।রক্তিম ভাই আমাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে আছেন।ঘাড় থেকে চুল গুলো সরিয়ে দিয়ে হালকা ভাবে ঠোঁট ছুঁইয়ে দিয়ে বললেন,

‘সময় এখনো আসে নি।সেই সময়ের জন্য যে আমিও অধীর আগ্রহে বসে আছি।’

রক্তিম ভাইয়ের নেশা জড়ানো কথায় আমার সারা শরীর শিউরে উঠলো।মাথা তোলে পিটপিট করে তাকালাম রক্তিম ভাইয়ের দিকে।আমি তাকাতেই রক্তিম ভাই টুপ করে আমার নাকের ডগায় একটা চুমু খেলেন।আমি সাথে সাথে মাথা নামিয়ে ফেলি।কেনো জানি আমার বারবার মনে হচ্ছে,রক্তিম ভাই আমাকে ভালোবাসেন!আমিই রক্তিম ভাইয়ের গোপন ভালোবাসা।কিন্তু,তারিন আপু আর রক্তিম ভাইকে একসাথে দেখলে আমার ভাবনা সবকিছুই মিথ্যে হয়ে যায়।তখন বারবার মনে হয়!আমি ভুল।রক্তিম ভাই আমাকে ভালোবাসেন না,ভালোবাসতে পারেনও না।কিন্তু,এতো দ্বিধা দ্বন্দের মাঝে একটা কথা ঠিকই সত্যি!সেটা হলো আমি ভালোবাসি রক্তিম ভাইকে।ভিষণ ভালোবাসি!!আমার উপলব্ধি জুড়ে শুধু রক্তিম ভাইয়ের বিচরণ।

চলবে..

(আমি কি লিখছি তা কিছুই জানি না😒।)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here