জানি দেখা হবে পর্ব ৩১+৩২

#জানি_দেখা_হবে ❤️
Israt Jahan Tanni ✍️
#Part_31
..

চারিদিকটা নিস্তব্ধতায় ছেয়ে আছে, ঘুটঘুটে অন্ধকার বিরাজ করছে চারপাশে, এরই মাঝে পিটপিট করে তাকালো এক জোড়া চোখ।
মাথাটা ব্যথা করছে বেশ, শরীরটা কেমন ম্যাজম্যাজ করছে। চারপাশটায় বেশ ভালো করে তাকালো তারা। এ কোথায় সে? কিছুই দেখা যাচ্ছেনা। হাত পা নাড়ানোর চেষ্টা করে যাচ্ছে সে, কিন্তু পারছেনা। কিভাবে পারবে সে, হাত পা যে চেয়ারের সাথে বাধা।

বিকেলের কথাটা মনে হতেই ভয়ে পুরো গা জমে গেলো ওর।
ধ্রুবর কথা অমান্য করে বিকেলে গিয়েছিলো সে বাগানে, বাগানের এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্তে ঘুরাঘুরি করার সময় হটাৎ ই চোখ গেলো মেইন গেইটের দিকে। একি, গেইট খোলা, সাথে দারোয়ান চাচাও নেই গেইটের সামনে।
পরক্ষণেই তারার মনে হলো, দারোয়ান চাচা বোধহয় পাশের চায়ের দোকানে গেছে চা খেতে। তারা আর পাত্তা দিলোনা ব্যাপারটাকে।

কিছু একটা শব্দে আবারও তারার মনোযোগ গেলো গেইটের দিকে। একটা বৃদ্ধ লোক, কোত্থেকে এসেছে কে জানে, গেইটের সামনে এসেই পড়ে গেলো, ব্যাথায় ককিয়ে উঠলেন তিনি। আহারে বেচারা, এই বয়সে এইভাবে পড়ে যাওয়া যে কতোটা কষ্টের সেটা ভেবেই তারার মনটা ব্যাথায় ছেয়ে গেলো। লোকটি সেইযে পড়েছে, উঠতে পারছেনা। তারা এগিয়ে গেলো সেখানে, লোকটির হাত ধরে টেনে তুলার চেষ্টা করছে সে, ঠিক সেই মুহূর্তে একটা কালো গাড়ি চলে আসে সেখানে, তারার পাশে এসেই গাড়িটা দাড় করায়। আকস্মিক এমন হওয়ায় ভড়কে যায় তারা, সাথে সাথেই কেউ একজন গাড়িতে হ্যাচকা টানে তুলে ফেলে তারাকে। হতভম্ব হয়ে যায় তারা। যখন দেখলো, সেই বৃদ্ধ লোকটা এক লাফে গাড়িতে উঠে গেছে আর মুখের দাড়ি গোফ গুলো একটানে মুখ থেকে সরিয়ে ফেলে ঠিক সেই মুহূর্তে তারা বিস্ময়ের চূড়ান্ত পর্যায়ে গিয়ে পৌছে যায়।

এতোক্ষণে খেয়াল হয় তারাকে কিডন্যাপ করা হচ্ছে, আর সেই বৃদ্ধ লোকটি ছিলো তারাকে ধরার ফাদ, এটা ভেবেই তারা জোরেশোরে একটা চিৎকার করে উঠে। কিন্তু ভাগ্য সহায় ছিলো না তখন। কেউ একজন তারার মুখে সাথে সাথেই রুমাল চাপা দিয়ে দেয়। এরপর কি হয়েছে আর কিছুই জানেনা তারা। সেন্সলেস অবস্থায় পড়ে ছিলো এতোক্ষন।
নিজেকে খুব অসহায় মনে হচ্ছে তারার। সে জানেনা কোথায় আছে, আদৌ এখান থেকে বেরিয়ে যেতে পারবে কিনা সেটাও জানেনা সে। সবচেয়ে বড় কথা, কেন ওকে কিডন্যাপ করা হয়েছে, কারা কিডন্যাপ করিয়েছে সেটা পর্যন্ত জানেনা সে।

দীর্ঘ সময় পার হয়ে যায়, তারা বুঝতে পারেনা কোথায় আছে। ধীরে ধীরে এক অজানা আতংক গ্রাস করতে থাকে তারাকে।। ভয়ে জমে যায় একদম। কি করবে তারা? কি করার আছে ওর? আর সবচেয়ে বড় কথা, হাত পা বাধা অবস্থায় কিভাবে নিজেকে ছাড়াবে সে?
ধ্রুবর কথার অবাধ্য হওয়ার ফল হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে তারা। কিন্তু এই মুহূর্তে কিচ্ছু করার নেই ওর৷
তারা ভয়ে চেচামেচি করতে থাকে, চিতকার করে ডাকতে থাকে আশেপাশের মানুষজনকে। আদৌ আশেপাশে কেউ আছে কিনা সেটাও জানেনা সে। তবুও সে চিৎকার করা বন্ধ করেনা। জোরে জোরে চিল্লাতে থাকে তারা। চোখ দিয়ে একনাগাড়ে অশ্রু ঝরছে তারার। কেউ নেই, কারো কোনো সাড়াশব্দ নেই। তারার ভয় বেড়ে গেলো আরও কয়েকগুণ।

হটাৎ দরজা খোলার শব্দ পায় তারা। তারাহুরো করে মাথা তুলে তাকায় সামনে। কিছুই দেখা যাচ্ছেনা। ঘরটা প্রচন্ড অন্ধকার। অনেক রাত হয়ে গেছে বোধহয়, তবুও ঘরে একটা লাইট পর্যন্ত জ্বালানো নেই। তারা সামনে তাকিয়ে আছে একভাবে। একটা অবয়ব দেখা যাচ্ছে, যেটা ক্রমশই তারার দিকে এগিয়ে আসছে। তারার কপাল থেকে ঘাম বেয়ে বেয়ে নাকে ঠোটে এসে পরছে। এই ঠান্ডায়ও প্রচন্ডভাবে ঘামছে তারা।
একটা সময় সেই অবয়বটা তারার কাছাকাছি এসে দাঁড়িয়ে গেলো। তারার গলা দিয়ে কথা বের হচ্ছেনা। মনের মধ্যে সাহস সঞ্চয় করলো সে, কাপা কাপা গলায় বললো
-কে আপনি?
লোকটি নিশ্চুপ। কোনো উত্তর দিলোনা সে।
তারা আবারও বললো
-কে আপনি? কেন ধরে এনেছেন আমাকে? কথা বলছেন না কেন?
-তোমারও দেখছি, তোমার স্বামীর মতো খুবই তারাহুরো, একদম ধৈর্য নেই তোমাদের।
তারা অবাক হলো। একটা অপরিচিত কন্ঠ, কিন্তু ওর স্বামীর কথা বলছে কেন? তাহলে কি ওরা ওদের পরিচিত কেউ?
-কে আপনি?
-জানতে চাও আমি কে?
-জানতে চাই আমি। কে আপনি, আমাকে কেন ধরে এনেছেন? আমার স্বামীর সাথে কি সম্পর্ক আপনার?
-একসাথে এতো কিছু জানতে চাও?
তারা কোনো উত্তর দিলোনা। সে বিস্ময়ে তাকিয়ে আছে সামনে। আচমকা ঘরের লাইট জ্বলে উঠলো, একটা তরতাজা যুবক ছেলে দাড়িয়ে আছে ওর সামনে, যাকে বিকেলে বৃদ্ধ ভেবে নিজের জীবনের সবচেয়ে বড় ভুল করেছে সে, সেই সাথে এই ভয়ংকর জায়গায় এসে দাড়াতে হয়েছে ওকে।
তারা চোখমুখ শক্ত করে ফেললো। কপাল কুচকে বললো
-আমার সাথে আপনার কি শত্রুতা? কেন এনেছেন আমাকে?
-শত্রুতা তোমার সাথে নয়, আর না তোমার স্বামীর সাথে। ইনফ্যাক্ট, আমার সাথে তোমাদের কোনো কানেকশন নেই মিস।
-তাহলে কেন আমাকে ধরে এনেছেন? চিৎকার করে বললো তারা।
-গলা নামিয়ে কথা বলো। ভুলে যেওনা, তুমি আমার বন্দী,
কথাটা বলেই পৈশাচিক ভাবে হেসে দিলো ছেলেটা।
-কেন ধরে এনেছেন আমাকে?
-সেটা নাহয় তোমাকে অন্য কেউ বলবে।
-অন্য কেউ? কে সে?
-নিজেই দেখে নাও। বলে আবারও বাকাভাবে হাসলো লোকটি। সেই সাথে দরজার দিকেও তাকালো সে।

তারা দরজার দিকে তাকিয়ে আছে অবাক নয়নে। কে হতে পারে?
ঠিক এই মুহূর্তে কেউ একজন এসে ঢুকলো রুমে। তারা বিস্ময়ে বিস্ফোরিত হয়ে গেল। গলা দিয়ে নিজের অজান্তেই বলে উঠলো
-মা তুমি?
-কে তোর মা? আমি তোর মা নয়। তোর সৎ মা আমি, বুঝেছিস? বেশ ঝাঝালো গলায় বললেন তুরিনের মা।
-তাহলে তুমিই আমাকে ধরিয়ে এনেছো? কিন্তু কেন?
-আমার মেয়ের সুখের জন্য, আমার সুখের জন্য।
এমন একটা কথায় অবাকের চূড়ান্ত সীমায় গিয়ে পরলো তারা।
-আমাকে ধরে এনে তোমাদের কি লাভ?
-তুই তো আমাদের দাবার গুটি, তোকে ব্যাবহার করেই তো আমারা আমাদের সুখের নাগাল পাবো। বুঝেছিস আমার মিষ্টি আপু।
ভিতরে ঢুকতে ঢুকতে বললো তুরিন।
-মানে? অবাক হয়ে বললো তারা।
তুরিন তারার সামনে দিয়ে হাটাহাটি করছে, সামনে দাঁড়িয়ে থাকা ছেলেটাকে দেখিয়ে তুরিন বললো
– একে চিনিস তুই?
তারা তাকালো ছেলেটার দিকে আবারও। কিছুটা তাচ্ছিল্যতার সাথে বললো
-চিনিনা আবার, এইতো সেই অমানুষ, যে আমাকে এখানে ধরে এনেছে।
-মুখ সামলে কথা বলবি, এ কে জানিস? এ আমার তুষার, আমার উড বি হাজবেন্ড। আমার উড বি কে তুই অমানুষ বলছিস কোন সাহসে? জানিস আমরা তোর কি করতে পারি?
-খুব ভালো করেই জানি, তোর দৌড় কতদুর।
-আমাকে রাগাবি না বললাম। তুই চিন্তাও করতে পারবিনা আমরা তোর কি হাল করবো।
-তাহলে দেরি করছিস কেন? করে ফেল কি করবি? বেশ রেগে গিয়ে বললো তারা।
তুরিন চটে গেলো আরও কয়েকগুণ। আচমকায় তারার গালে গিয়ে প্রচন্তভাবে কষিয়ে দিলো এক থাপ্পড়। তারা বাকরুদ্ধ হয়ে তাকিয়ে রইলো তুরিনের দিকে।

তুরিন রাগীমুডে তাকিয়ে রইলো তারার দিকে। তুষার তুরিনের রাগী চেহারা দেখে এগিয়ে এলো ওর দিকে। ওকে শান্ত্বনা দিয়ে বললো..
-Oh dear, come on. Calm yourself. If so much hyper goes? There is so much more waiting ahead, what will you do if you run out of energy now?
So calm yourself, keep a cool head baby.
তুরিন রাগীচোখেই তাকালো তুষারের দিকে। পরক্ষণেই তারার দিকে তাকিয়ে বললো
-বলেছিলাম না আমাকে রাগাবি না, কিন্তু দিলি তো রাগিয়ে। ভেবেছিলাম আমাদের কাজ হাসিল করেই তোকে ছেড়ে দিবো, কিন্তু নাহ।
দেখ এইবার আমি কি হাল করি তোর ধ্রুবর। তোর সামনে আগে ওর সবকিছু নিজের নামে করে ওকে নিঃস্ব করবো। তারপর তোরই চোখের সামনে…
তুরিন একটা পৈশাচিক হাসি দিলো। তারা বিস্ফোরিত চোখে তাকিয়ে আছে তুরিনের দিকে।
– কি করবি তুই আমার স্বামীর সাথে?
– এলেই দেখতে পাবি। আগে তো আসতে দে তোর নাগরকে।
-কি চাল চেলেছিস তোরা? আমাকে বল। চিৎকার করে বলতে লাগলো তারা।

তুষার এগিয়ে এলো তারার সামনে। ঠোটের কোনায় একটা শয়তানী হাসি লাগিয়ে বললো
-No no, not at all. No screaming okay? I don’t like shouting.
তারা রেগে গেলো বেশ। বললো
–রাখ তোর ইংলিশ বলা। কি মনে করিস তুই নিজেকে? একটা মেয়েকে এভাবে বেধে রেখে অনেক ধরনের খারাপ পরিকল্পনা করছিস, আর ফটর ফটর ইংরেজি বলে নিজেকে ভদ্র সাজাচ্ছিস?
-অনেক বলেছিস, চুপ থাক এখন। আগে তোর স্বামীকে আসতে দে, পরে তোর ব্যবস্থা করছি। তারার কানের কাছে মুখ নিয়ে বললো তুষার।

তারার গলায় কথা আটকে যাচ্ছে। চোখ দিয়ে অঝোরে পানি ঝরছে। আর কিছুই বলতে পারছেনা তারা।

রুমের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্ত পায়চারি করছেন ধ্রুবর বাবা। ধ্রুবর মা সোফার এক কোনে বসে আছে মনমরা হয়ে। সোফার এক পাশে দাঁড়িয়ে আছেন তারার বাবা। তিনি আজ বাকরুদ্ধ। এক মেয়ের জন্য আরেক মেয়ের বিপদ আজ। সেই সাথে বিপদে ধ্রুবদের পুরো পরিবারটাই।
তুরিন ধ্রুবকে শর্ত দিয়েছে, যদি ওদের সমস্ত প্রোপার্টি তুষার আর তুরিনের নামে লিখে দেয়, তাহলেই তারাকে ওরা ছাড়বে, তা নাহলে তারার লাশটাও ওরা পাবেনা।
এইরকম একটা কথা শুনার পর সকলেই ভেংগে পড়েছে, শুধু ভেংগে পড়েনি ধ্রুব। সে নিরবে তুরিনের সকল শর্ত মেনে নিয়েছে এবং ওদেরই দেওয়া এড্রেসমতে বেরিয়ে পরেছে সেই কখন।
কোনো প্রটেকশন পর্যন্ত নেয়নি সে সাথে। এমন অবস্থায় নিজের পুত্রবধু আর একমাত্র পুত্রের নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন উনারা।
তারার মায়ের ভাবলেশহীন চেহারা দেখে ধ্রুবর বাবা এগিয়ে এসে বসলেন উনার পাশে, হাতের উপর হাত রেখে তাকালেন ধ্রুবর মায়ের দিকে।
চোখদুটো ভিজে আছে ধ্রুবর মায়ের। ধ্রুবর বাবা উনাকে আস্বস্ত করে বললো
-ভেংগে পরোনা তুমি, আমার ছেলের উপর আমার বিশ্বাস আছে। আমি জানি, সবকিছু ঠিকঠাক করেই ও বাসায় আসবে।
-জানিনা আল্লাহ আমার পরিবারের উপরই এতো বিপদ দেন কেন। কি অন্যায় করেছি আমি আল্লাহর কাছে?
-হয়তো আল্লাহর কোনো পরীক্ষা এটা। ধৈর্য ধরো। সব ঠিক হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ।
ধ্রুবর মা আশাহত চোখে তাকালো উনার দিকে। উনিও চোখের ইশারায় আস্বস্ত করলেন তাকে।

তুরিন আর তুষার বসে আছে একটা সোফায়। পাশের একটা চেয়ারে বসা তুরিনের মা। আর তার পাশের রুমটাতে বন্দী তারা। সকলের মনের মধ্যেই ঘুরপাক খাচ্ছে একটা কথা, “ধ্রুব আসবে তো? সব সম্পত্তি ওদের নামে লিখে দিবে তো?”
এমন সময় ধ্রুব এলো সেখানে। ধ্রুবর মুখটা মলিন হয়ে আছে৷ সেই সাথে চোখদুটো লাল হয়ে আছে একদম।
তুরিন একটা দুষ্টু হাসি দিলো ধ্রুবকে দেখে। বললো
-My dear Husband, কেমন আছো তুমি?
-তোমার মতো একটা পিশাচের হাত থেকে ছাড়া পেয়েছি আমি, তাই খুব ভালো ছিলাম। কিন্তু এইবার তুমি যা করলে, সেটা হয়তো সমস্ত পাপকে ছাড়িয়ে গেছে। শান্ত গলায় বললো ধ্রুব।
তুরিনের যেনো এই কথায় কিছু আসলো গেলোনা। সে এইসব কথাকে উড়িয়ে দিয়ে বললো
-বাদ দাও নীতিকথা। যা কথা ছিলো সেটা মনে আছে তো?
-সব মনে আছে আমার।
-ভেরি গুড। কই তাহলে দেরি করছো কেন, দাও। ধ্রুবর দিকে হাত বাড়ালো তুরিন।
ধ্রুব একবার তাকালো তুরিনের হাতের দিকে। একটা তাচ্ছিল্যের হাসি দিয়ে বললো
-ভিক্ষা চাইছো?
ধ্রুবর এমন কথায় ভ্যাবাচেকা খেয়ে গেলো তুরিন। থতমত করে বললো
– মানে কি?
-যেভাবে হাত পাতলে, আমার কাছে সেটা ভিক্ষার হাত ছাড়া আর কিছু মনে হলোনা।
-বাজে কথা রাখো, যা বলেছিলাম সেটা করো, আর নয়তো আমি কি করতে পারি, ধারনাও নেই তোমার।
-ধারণা নেওয়ার জন্যই তো এলাম।
ধ্রুব তাকালো তুষারের দিকে।
-এই সেই তোমার তুষার? এর জন্যই আমাকে ছেড়েছিলে?
-তোমাকে ধরেছিলাম কখন? আর যাইহোক, ওই আমার তুষার, আমার ভালোবাসা। বলেই তুষারকে জরিয়ে ধরলো তুরিন। ধ্রুব হাসলো।

তুরিন কিছু বললো না আর। ধ্রুব ওর হাতের ব্রিফকেসটা থেকে কতগুলো পেপার বের করলো। পেপার গুলো দেখে তুরিনের চোখ চকচক করতে লাগলো। ধ্রুব পেপারগুলোর দিকে তাকিয়ে আরেকবার হাসলো। সেগুলো তুলে দিলো তুরিনের দিকে। তুরিন সেগুলো চিলের মতো থাবা দিয়ে কেড়ে নিলো ধ্রুবর হাত থেকে।
#জানি_দেখা_হবে ❤️
Israt Jahan Tanni ✍️
#Part_32
..

লোভাতুর চোখে পেপারগুলোকে গিলে খাচ্ছে তুরিন। তুরিনের মা ও সেখানে শামিল হলো। তুরিন খুটিয়ে খুটিয়ে দেখছে পেপারটাকে। পেপারে ধ্রুবদের সমস্ত প্রোপার্টি তুরিন আর তুষারের নামে উইল করা আছে। সেটা দেখে তুরিন খুশিতে আত্মহারা প্রায়৷
তুষার এতোক্ষণ দূরে দাঁড়িয়ে ছিলো। পেপার ঠিক আছে কিনা দেখার জন্য সেও এগিয়ে এলো তুরিনের দিকে। দক্ষ লোকের মতো সুচারু চোখে পেপারগুলো খুব যত্নসহকারে দেখছে সে।
নাহ, ঠিকই আছে সব। তুষার ওর ঠোঁটের কোনে একটা দুষ্টু হাসির আভা ফুটালো। ধ্রুব কপাল কুচকালো তাতে।
আচমকা সে তুষারের হাত থেকে এক টানে পেপারগুলো কেড়ে নিলো। আকস্মিক এমন করায় হতভম্ব হয়ে গেলো সবাই। তুষারের চোখেমুখে স্পষ্ট রাগের ছাপ দেখা গেলো তাতে।
তুরিন রাগে চেচিয়ে উঠলো।
-এটা কি হলো? নিয়ে গেলে কেন পেপারগুলো।
-আমার ইচ্ছে তাই নিয়েছি।
-এটা কিন্তু কথার খেলাপ হচ্ছে। পেপারগুলো দিয়ে দাও বলছি।
-তারা কোথায়?
-আছে। আগে পেপারগুলো দাও।
-আগে তারাকে নিয়ে আসো সামনে। তারপর পেপার পাবে।
-তুমি কি ভেবেছো, পেপারগুলো না দিয়ে এখান থেকে ফিরতে পারবে তো?
-তোমার কি মনে হয়, তারাকে অক্ষত না দেখে পেপারগুলো এমনি এমনি আমি তোমাদের দিয়ে দেব?
-তারা ঠিক আছে, আগে পেপারগুলো দাও।
-বললাম তো, আগে তারাকে আমার সামনে আনো।

তুরিন হতাশ হলো, তবে পেপারটা নিজেদের নামে আছে, সেটা ভেবেই ঠোঁটের কোনে হাসি ফুটে উঠলো। সাথে একটা দুষ্টু বুদ্ধিও আটলো মাথায়।
আগে তারাকে সামনে এনে পেপারটা হাত করুক, পরে দেখা যাবে বাকিসব।
তুরিন ওর মাকে ইশারা করলো তারাকে পাশের রুম থেকে নিয়ে আসার জন্য। মেয়ের ইশারা পেয়ে ওর মা চলে গেলো তারাকে নিয়ে আসতে।
ধ্রুব তাকিয়ে আছে অস্বস্তি নিয়ে, মনের মধ্যে ভয় কাজ করছে খুব, একটা প্রশ্নই ঘোরপাক খাচ্ছে, “তারা ঠিক আছে তো?”

ধ্রুবর মনের খটকা দূর করে তারাকে নিয়ে আসা হলো পাশের রুম থেকে।
ধ্রুবর চোখেমুখে আতংক, জীর্ণশীর্ণ তারাকে দেখে সেটা আরও কয়েকগুণ বেড়ে গেলো। একদিনেই তারার মুখটা কেমন মলিন হয়ে গেছে। এমন অবস্থায় তারাকে দেখে ধ্রুবর বুকে মোচড় দিয়ে উঠলো। তারাতাড়ি করে গিয়ে সে তারাকে ধরলো। তারার অবস্থা খুবই খারাপ। তারা ঠিকমতো দাড়াতেই পারছেনা। তারাকে এমন অবস্থায় দেখে মাথাটা বিগড়ে গেলো ধ্রুবর। মেজাজটা খারাপের চুড়ান্ত পর্যায়ে গিয়ে পৌছে গেছে ততোক্ষণে। ইচ্ছে করছে এখনই সবগুলোকে গিয়ে মাটিতে পুতে ফেলতে।
তারা প্রায় ঢলে পরছে। ধ্রুব তারাকে আঁকড়ে ধরে বললো
-ভয় পেওনা তারা, আমি এসে গেছি। এরা তোমার সাথে যা করেছে তা সুধে আসলে উঠাবো আমি। তুমি শুধু নিজেকে একটু শক্ত করো।

তারা ভেজা নয়নে তাকালো ধ্রুবর দিকে। পরম আবেশে চোখদুটো মুছে দিলো ধ্রুব। তারা চোখদুটো বন্ধ করে ফেললো।

এতোক্ষন দূরে দাঁড়িয়ে এইসব দেখছিলো তুরিন। এবার রাগে ফুসতে লাগলো সে। বিষাক্ত সাপের মতো তেড়ে এসে বললো
-বন্ধ করো এইসব প্রেমলীলা। সহ্য হচ্ছেনা আমার।
-কেন তোমার সহ্য হচ্ছেনা? ভ্রু কুচকে বললো ধ্রুব।
-পেপার দাও।
-দিবো, তবে একটা শর্ত আছে।
-শর্ত মানে? কিসের শর্ত? রেগে চেচিয়ে বললো তুরিন।
-গলা নামিয়ে কথা বলো। তারাকে ছাড়াতে তোমরা আমাকে শর্ত দিয়েছিলে প্রোপার্টির জন্য,, আমি সেই শর্ত মেনেছি, এখন আমারও একটা শর্ত তোমাদের মানতে হবে। এমনি এমনি আমি তো তোমাদের এতোকিছু দিয়ে দিতে পারিনা, তাইনা?
-কি বলতে চাও।
-একটা কন্ট্রাক্ট করতে হবে আমার সাথে।
-কিসের কন্ট্রাক্ট? ভ্রু বাকিয়ে সামনে এগুতে এগুতে বললো তুষার।
ধ্রুব নড়েচড়ে উঠলো। জিব দিয়ে ঠোটগুলো ভিজিয়ে বললো
-পেপারগুলো পেয়ে আমাকে আর আমার তারাকে যেনো কিছু না করো সেই কন্ট্রাক্ট, আমি আর তারা যেনো সুস্থভাবে বাসায় ফিরতে পারি সেই কন্ট্রাক্ট।
-এর জন্য কন্ট্রাক্ট করা লাগে? কপাল কুচকে বললো তুরিন।
-হ্যা লাগে, তোমাদের আমি বিশ্বাস করিনা।
-ওকে, কি করতে হবে বলো।
-আমি কন্ট্রাক্ট পেপার রেডি করে এনেছি, এখন সেটাতে তোমাকে, তোমার মাকে আর তোমার প্রাণপ্রিয় তুষারকে জাস্ট সিগনেচার করতে হবে। আর কিছুই না। হাত নাড়িয়ে নাড়িয়ে বললো ধ্রুব।

তুরিন একটা লম্বা শ্বাস নিলো। ওদের কাছে প্রোপার্টি পাওয়াটাই প্রধান বিষয়। বাকিসব তুয়াক্কা করেনা ওরা। সে বললো
-দাও পেপার।
ধ্রুব বাকাভাবে হাসলো। ব্রিফকেস থেকে আরেকটা পেপার বের করলো সে। তুরিন তাকিয়ে আছে সেদিকে। ধ্রুব পেপারটা একটা টেবিলের উপর রেখে পকেট থেকে পেন বের করলো।
পেনটা তুরিনের দিকে এগিয়ে দিয়ে বললো
-পেপারটা পড়ে নাও।
তুরিন মুখ বাকালো। বললো
-দরকার নেই।
-As Your Wish.
তুরিন সাইন দেওয়ার জন্য পেপারটা হাতে নিতেই তুষার বাধ সাধলো সেটাতে, বললো
-দাড়াও তুরিন, আগে পেপারটা পড়ে দেখা দরকার। ওর আমাদের সাথে চিটিং করতে পারে।
-দেখুন না, ভালো করে দেখে নিন। আমি মানা করিনি। ধ্রুব বললো।

তুষার ভালোকরে পেপারগুলো চেক করলো, কথায় আজ লেখায় মিল আছে কিনা দেখার জন্য। যখন দেখলো পেপারে ধ্রুবর কথাগুলোই লেখা আছে, তখন নিশ্চিত হলো ওরা। এক এক করে তিনজনই পেপারে সাইন দিয়ে দিলো। এইবার তুরিন হাসতে হাসতে বললো
-এইবার দাও প্রোপার্টির পেপারগুলো।
-যদি না দেই?
-মানে কি? ভালো হবেনা বলে দিলাম। চেচিয়ে বললো তুরিন।
-মজা করছিলাম। এই নাও পেপার।
তুরিন হুড়মুড় করে পেপারগুলো নিয়ে নিলো ধ্রুবর হাত থেকে।

তুষার বললো
–এইবার যেতে পারো তোমরা। কথায় আর কাজে মিল ছিলো বলেই এতো সহজে ছেড়ে দিচ্ছি। উল্টাপাল্টা কিছু করলে কিন্তু এতো সহজে ছাড়া পেতেনা মিস্টার।
ধ্রুব হাসলো, বললো
-আমি কিন্তু এতো সহজে ছাড়ছিনা।
ধ্রুবর কথায় অবাক হলো তুরিনসহ বাকিরা। তুরিনের মা পান চিবুতে চিবুতে বললো
-সম্পত্তি যখন একবার আমগো হাতে আসছে, তখন তুমি কোনো ঝামেলায় করতে পারবানা। এখন সব আমগো হাতে।
-তাই নাকি? তা কোন সম্পত্তি আপনাদের হাতে?
-কোন সম্পত্তি মানে? তোমাগো সম্পত্তি।
-আচ্ছা? কোথায় দলিল? দলিল দেখান।
-মজা করো? এইমাত্রই তো দলিলগুলান দিলা তুমি। এই যে দলিল। মেয়ের হাত থেকে পেপারগুলো নিয়ে ধ্রুবর সামনে এগিয়ে ধরলো তুরিনের মা।

ধ্রুব সেগুলো হাতে নিয়ে ভালোভাবে দেখে বললো
-আরে এইটা তো নকল দলিল।
বাজ পরলো তুরিন আর তুষারের মাথায়। অবাকের চূড়ান্ত সীমায় গিয়ে পরলো ওর মা।
তুরিন চেচিয়ে বললো
–এইরকম মজা একদম ভালো লাগছেনা বললাম। তুমি কোন সাহসে এইরকম মজা করছো আমাদের সাথে? জানো তোমরা আমাদের বন্দী।
–আমিতো জানি তোমরা তিনজন আমার বন্দী, আমরা নয়।
তুরিন আর তুষার হু হু করে হেসে দিলো ধ্রুবর কথায়।
তুষার বললো
— Are you Mad Mr Dhrubo? প্রোপার্টি হারিয়ে পাগল হয়ে গেছেন নাকি?
-প্রোপার্টি আমি হারাইনি। হারিয়েছেন আপনারা, আপনাদের সুন্দর জীবনটা।
-Just Shut up ধ্রুব, পেপারগুলো দাও।
-নকল কাগজ নিয়ে কি করবে তোমরা?
-কি বলছো এইসব? তোমার সাথে আমাদের কি ডিল ছিলো ভুলে গেছো সেইসব?
-আমি ভুলিনি। কিছুই ভুলিনি, আমাকে কষ্ট দিয়েছো সেটা ভুলিনি, আমার সাথে বেইমানি করেছো সেটাও ভুলিনি, তারাকে মিথ্যা অপবাদ দিয়েছো তাও ভুলিনি, তোমার পাতা ফাদে পড়ে তারাকে বের করে দিয়েছিলাম সেটাও ভুলিনি। ইনফ্যাক্ট, আমার বাচ্চাটা আমার কারণে দুনিয়াতে আসার আগেই চলে গেছে, সেটাও ভুলিনি। এই কথাটা বলতে বলতে ধ্রুব কেদে দিলো প্রায়। তারা অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে ধ্রুবর দিকে। কিছু বলার মতো ভাষা আসছে না তার মুখে।

তুরিন রেগে তেড়ে আসলো ওদের দিকে। ধ্রুবর শার্টের কলারে ধরে চাপা আক্রোশে বললো
-তোমার এইসব নাটক শুনার জন্য এখানে তোমাকে নিমন্ত্রণ করিনি আমি। আমাদের সাথে বেইমানি করলে, এখন বুঝবে এই তুরিন কি জিনিস। এইখান থেকে তুমি আর তারা কেউই বেচে ফিরতে পারবেনা।
-আমাদের কিছু করার আগে জেনে নাও, তোমরা এখন আমার বন্দী। তোমাদের লিখিত জবানবন্দিও আছে আমার কাছে?
-কিভাবে?
-এই যে, এই পেপারে তোমাদের লিখিত জবানবন্দি।
-এইটা? অবাক হয়ে বললো তুরিন।
-হ্যাঁ, কোনো সন্দেহ?
-এইটা তো তোমাদের কিছু না করার পেপার।
-ভুল তুরিন, আমাকে এতোটাও কাচা ভেবোনা। তোমাদের হাত থেকে ছাড়া পাওয়া আমার বা হাতের খেলা। এর জন্য লিখিত স্ট্যাম্পের কি দরকার।
-কিন্তু এইটা তো..

ধ্রুব ওই পেপারটার উপর থেকে আরেকটা পাতলা কাগজ হালকা টানে আলাদা করলো, যেটাকে তুষার ভেবেছিলো তারাকে কিছু না করার ডিল। শুধু লেখার অংশটুকুই আলাদা, সেই আলাদা পেপারের নিচের পেপারে লেখা আছে তুরিন ওর মা আর তুষারের কীর্তিকলাপ। এমন ভাবে পেপারে লেখা আছে, যে ওরা নিজেরাই নিজেদের ভুল শিকার করেছে, আর সেই ভুল শিকার করে নিজেদের সিগনেচার দিয়েছে।
হতভম্ব হয়ে গেছে তুষার সহ বাকিরা। তুষার তেড়ে এসে বললো
–You Cheater…
-তোমাদের থেকে বেশি না। হেসে বলল ধ্রুব।
-এইবার দেখো আমাদের সাথে বেইমানি করার ফল কি হয়।

-তার আগে একবার বাইরে তাকিয়ে দেখো।।
ধ্রুবর কথায় তুরিন, তুষার আর তুরিনের মা একসাথে বাইরে তাকালো। একগাদা পুলিশ সেখানে দাঁড়িয়ে আছে, দেখে মনে হচ্ছে পুরো ফোর্স টাই এসে গেছে। অগ্নিমূর্তি হয়ে গেলো সবাই। তুরিন চেচিয়ে বললো
-আবারও ধোকা দিলে আমাদেরকে?
-তোমার থেকেই শিখেছি, ধোকাটা কিভাবে দিতে হয়।

কিছুক্ষণের মধ্যেই পুলিশ এসে এদের তিনজনকে হ্যান্ডকাফ পরিয়ে নিলো। তারার মাথায় কিছুই ঢুকছেনা। এতো কিছু কখন করলো ধ্রুব।
তুরিন রাগে ফুসতে লাগলো। বললো
-দেখে নিবো আমি তোমায়।
-এখনই দেখে নাও যতো দেখার। এরপর আমি জেলে যাবো না তোমাকে দেখা দিতে।
তুরিন রাগে হুংকার করে উঠলো। বিনিময়ে ধ্রুব শুধু হাসলো। পুলিশের হাতে লিখিত স্ট্যাম্প টা দিয়ে বললো
-এই নিন, এটাই ওদের লিখিত জবানবন্দি আছে, আশা করি ওদের জন্য এর চেয়ে বেশি প্রমাণ লাগবেনা।
অফিসার হেসে বললো..
-আমরা সব শুনেছি ওদের কথা, এখানেই ছিলাম তো। এই পেপারটা জাস্ট একটা প্রমাণ। কিন্তু এরচেয়ে বড় প্রমাণ তো আমরা নিজেরাই।
ধ্রুব হাসলো। পুলিশ চলে গেলো ওদের নিয়ে।

তারাকে নিয়ে কিছুক্ষণের মধ্যেই বাসায় চলে এলো ধ্রুব। রাত অনেক হয়ে গেছে। প্রায় ১ টা। বাসায় আসা অব্দি কোনো কথা হয়নি দুজনের মধ্যে। বাসায় ফিরার পর ওদেরকে দেখে সকলেই যেনো প্রাণ ফিরে পেলো। অনেক রাত হওয়ায় কেউ বেশি কিছু জিগ্যেস করলো না ওদের। সুস্থ অবস্থায় ফিরেছে এটাই অনেক। তার জন্য আল্লাহর কাছে শুকরিয়াও জানিয়েছে সবাই। তারা আর ধ্রুব কেউই খেতে চায়নি এতো ধকলেই পর, তাছাড়া রাত ও হয়ে গেছে অনেক। তবুও মায়ের জুরাজুরিতে হালকা খেতে হলো দুজনকেই।
খাওয়া শেষে ধ্রুব চলে গেলো দুই বাবার কাছে, ওরা পাশের সোফাতেই বসা ছিল। এইরকম একটা বিপদে চোখ এক করতে পারেনি কেউ।
তারা খেয়াল করলো ধ্রুব ওর বাবা আর শশুরের সাথে কিচু একটা নিয়ে কথা বলছে, সকলের মুখই গম্ভীর দেখাচ্ছে।

এবার তারাকে রুমে গিয়ে শুয়ার জন্য বললো শাশুড়ী। তারা সেটাতে সম্মতি জানিয়ে মাথা নাড়ালো। রুমে যাওয়ার জন্য উঠে দাড়াতেই ধ্রুব এগিয়ে এলো সেখানে। রাগীচোখে তাকিয়ে আছে সে তারার দিকে। তারা সংকোচে মাথা নামিয়ে নিলো, কিছুটা ভয়ও কাজ করছে মনে, ওর কথা অমান্য করে বাগানে গিয়েছিলো, সেই ভয়।
ধ্রুব কিছুক্ষণ তারার দিকে তাকিয়ে থেকে বললো..
-বেশি তেল মাখছি, তাইনা? সেইজন্য আমাকে এতো ইগ্নোর, আমার কথা অমান্য করা হয়? কি ভেবেছো তুমি? মানা করেছিলাম না বাইরে যেতে? কেন গিয়েছিলে তাহলে? তারা কিছু বলতে পারছেনা। কি বলবে সে।
মাঝখানে বাধ সাধলো ধ্রুবর মা। বললো
-কি হচ্ছে কি ধ্রুব? এখন এইসব কথা কেন হচ্ছে শুনি? কতোটা ধকল গেছে মেয়েটার উপর দিয়ে, তাছাড়া সকাল হোক, পরে এইসব কথা নিয়ে আলাপ করা যাবে। এখন গিয়ে ঘুমা।
-সকালে ওর সাথে কোনো কথায় হবেনা আমার। ওকে বলে দিও, ওর মুখটা যেনো সকালে আমাকে না দেখায়। ওর বাবাকে বলে দিয়েছি, যেনো সকালে উঠেই ওকে নিয়ে চলে যায় আমার বাসা থেকে।
কথাটা বলেই হনহন করে নিজের রুমে চলে গেলো ধ্রুব। হতভম্ব হয়ে গেলো তারা। এ কি বলে গেলো ধ্রুব?

To be Continue….
To be Continue…..

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here