জানি দেখা হবে পর্ব ৩৩+৩৪

#জানি_দেখা_হবে ❤️
Israt Jahan Tanni ✍️
#Part_33
..

একটা শীতল বাতাশ তারার গা ছুয়ে চলে গেলো। কেপে উঠলো তারা। পরক্ষনেই নিজেকে আবার ঠিক করে নিলো সে। সেই দুপুরের পর থেকে এখন অব্দি নিজেদের বাসার ছাদে বসে আছে তারা। শরীরটা এখন গতকালের তুলনায় অনেক ভালো, কিন্তু মনটা? সেটা তো আবারও ক্ষত বিক্ষত হয়ে গেলো। ধ্রুব কিভাবে গতকাল এইসব বলতে পারলো? আমাকে আবার কষ্ট দেওয়ার জন্য? আমি নাহয় একটা ভুলই করেছিলাম, তার জন্য এতো বড় শাস্তি? চোখ বেয়ে পানি ঝরছে তারার।
ধ্রুবর বলা কথাগুলো তীরের মতো বিধেছিলো তারার মনে, তাইতো সকাল হওয়া মাত্রই বাবাকে নিয়ে চলে এসেছে নিজেদের বাসায়। শাশুড়ির জোরাজুরিতে সামান্য নাস্তা করতে হয়েছিলো
যদিও। কিন্তু খাবারগুলো যেনো গলা চিড়ে পেটে গিয়েছিলো তারার।

তারার বাবা আজ খুবই ব্যস্ত। এতোটা ব্যস্ততা কিসের বুঝতে পারেনা তারা। যেখানে তারাকে আজ ওর স্বামী আবারও বের করে দিয়েছে বাসা থেকে, সেখানে ওর বাবা এতোটা নিশ্চিন্ত হয়ে কিভাবে অন্য কাজে ব্যস্ত আছে? কথাগুলো ভেবেই তারার মাথাটা বিগড়ে গেলো আবার। এক মন খারাপ, দ্বিতীয়ত বাবার এই অবস্থায় ব্যস্ততা, দুটো মিলে তারাকে প্রচন্ড অবাক করছে। তারা ছাদে বসে এইসব গল্পনা জল্পনাই করছিলো।
এমন সময় কেউ পিছন থেকে এসে তারার চোখদুটো চেপে ধরলো। হটাৎ কেউ পিছন থেকে এসে এভাবে ধরায় প্রথমে ভয় পেয়ে গেলো তারা। পরমুহূর্তে ও নিজের বাসায় আছে, ভেবে কিছুটা স্বস্তি পেলো। শান্তভাবে বললো
-কে? কে আমার চোখে ধরেছেন?
কন্ঠ বিকৃত করে কেউ বললো
–গেস?
তারা ভাবতে লাগলো কে হতে পারে? নিজের হাত দিয়ে চোখে চেপে রাখা হাতদুটো ভালো করে বুলাতে লাগলো আর বুঝার চেষ্টা করলো এগুলো কার হাত হতে পারে, পরক্ষণেই মুখে হাসির রেখা ফুটিয়ে তুলে বললো
-নীল তুই?
নীলিমা চোখ থেকে হাত সরিয়ে নিলো। হাসতে হাসতে তারার সামনে গিয়ে বসে বললো
-হ্যাঁ আমি। কিভাবে চিনলি? কন্ঠ চেইঞ্জ করে কথা বললাম তো।
-তোকে চিনবো না আমি? তো হটাৎ কিভাবে এলি? কোনো সমস্যা হয়েছে কি?
-কেন, আমি আসতে পারিনা তোদের বাসায়? ভ্রু কুচকে বললো নীলিমা।
-আসতে পারিস, কিন্তু হটাৎ করে এলি তো তাই জিজ্ঞেস করলাম।
-আসলে আংকেল কল করেছিলো আমাকে।
-বাবা,? অবাক হয়ে বললো তারা।
-হ্যাঁ।
-কেন ফোন করেছিলো?
-আসলে আংকেল আমাকে ফোন করে গতকালের ঘটনাটা বললো, সাথে ধ্রুব ভাইয়াদের বাসা থেকে চলে এসেছিস ওটাও বললো।
তারার মনটা আবারও খারাপ হয়ে গেলো। বান্ধবীকে পেয়ে কিছুক্ষণের জন্য ভুলেই গিয়েছিল ধ্রুবর কথা। একটা লম্বা শ্বাস নিলো তারা।
নীলিমা সবটা খেয়াল করলো। বললো..
-মনটা খারাপ করিস না। ধ্রুব ভাইয়াকে ভেবছিলাম ভালো একজন লোক, কিন্তু আমার ভাবনা একদমই ভুল। লোকটা আসলেই অনেক পাজী।
তারা রাগীচোখে তাকালো নীলিমার দিকে। কিন্তু কিছু বললোনা। নীলিমা তারার এমন বিহ্যাভ দেখে মুখ টিপে হাসছে। তারা আড়চোখে দেখেছে নীলিমার হাবভাব। ব্যাপারটা মোটেও স্বাভাবিক লাগছেনা তারার কাছে। সে বললো
-কি ব্যাপার? হাসছিস কেন এভাবে?
-আমার ইচ্ছে তাই হাসছি। তোর কি।
-ওকে, হাসতে থাক যতোখুশি। কথায় বলে “কারো পৌষ মাস তো কারো সর্বনাশ। ”
-কার পৌষমাস?
-থামবি?
-ওকে থামলাম।

তারা কিছুক্ষণ চুপ থেকে বললো
–আজ থাকবি আমার সাথে? ভালো লাগছেনা আমার।
-মানে কি?
-আজ আমার সাথে থেকে যা না, আজ তুই যাস না, কাল চলে যাস।
-তুই এমন হলি কবে থেকে রে তারু?
-কেমন হলাম? ভ্রু কুচকে বললো তারা।।
-আমি এলাম পুরো দশদিন তোর সাথে থাকবো বলে, আর তুই কিনা আমাকে আজই বিদায় দিয়ে দিচ্ছিস কাল চলে যাওয়ার জন্য। মুখ ফুলিয়ে বললো নীলিমা।
-মজা করছিস তুই নীলিমা? গম্ভীরমুখে বললো তারা।
-আমি সত্যি বলছি তারা, আমি দশদিনের জন্য এসেছি তোদের বাসায়।
-সিরিয়াসলি? আনন্দে হতবিহ্বল হয়ে গেলো তারা।
-হুম সত্যি তারা।
-খুব ভালো করেছিস। জানিস, আমার সত্যিই খুব ভালো লাগছে এখন৷ আমি বিশ্বাস করতে পারছিনা।
-বিশ্বাস না করলেও আমার কিছু করার নাই। দশদিনের আগে আমার যাওয়া নিষেধ আছে।
-মানে? কিসের নিষেধ? কার নিষেধ?
-নাহ মানে, আমি দশদিনের জন্য এসেছি তো, তা আগেই কেন যাবো, দশদিন থেকেই যাবো। আমতাআমতা করে বললো নীলিমা।
-ওহ।
-তা সন্ধ্যা হতে চললো, আমাকে কি ছাদেই রাখবি, নাকি নিচে যেতে হবে?
-হুম চল।
-আমার না খুব রান্না করতে ইচ্ছা করছে রে তারু।
-তাহলে আজ রাতের খাবার টা তুইই রান্না কর না। তোর রান্নায় জাদু আছে জানিস তো। খুব মিস করি তোর রান্না করা খাবার।
-হয়েছে হয়েছে, আর ঢপ দিতে হবেনা। এইবার চল।

তারা আর নীলিমা দুজনেই একসাথে নিচে চলে এলো। মাগরিবের আজানের ধ্বনি কানে আসছে দূর দুরান্ত থেকে। নামাজের জন্য আহ্বান জানানো হচ্ছে সেই ধ্বনিতে। এমন এক মধুর আমন্ত্রনে সাড়া না দিয়ে থাকতে পারলো না ওরা দুই বান্ধবী। দুজনেই অজু করে নামাজে বসে গেলো। নামাজ শেষে কিছুক্ষণ তসবিহ জপলো একসাথে বসেই।

রাতের খাবারের আয়োজনে নেমে গেছে আজ দুই বান্ধবী। নীলিমার রান্না বরাবরই তারার পছন্দের। কলেজে পড়ার সময় প্রায়ই নীলিমার বাসায় চলে যেত তারা, শুধুমাত্র ওর হাতের রান্না করা খাবার খাওয়ার জন্য। আজও তারা অপেক্ষা করছে রান্না শেষ হবার। যদিও তারা সমানভাবে রান্নায় সাহায্য করে যাচ্ছে।
মুরগির মাংস দিয়ে বিরিয়ানি তারার সবচেয়ে পছন্দের খাবার। যদিও এতো এতো বাধা পেরিয়ে সেই পছন্দ অপছন্দের কথা ভুলেই গিয়েছিলো তারা, আজ নীলিমা নিজে থেকেই তারাকে বিরিয়ানির কথা মনে করিয়ে দেয়। ফ্রিজ থেকে মুরগির মাংস বের করে সেটাকে পানিতে ভিজিয়ে রেখেছিলো অনেক্ষন। এরপর মাংসগুলোকে টুকরো টুকরো করে কেটে সেটা দিয়ে খুবই সুস্বাদু আর ঝরঝরে বিরিয়ানি রান্না করে ফেলে নীলিমা। তারার খুবই ভালো লাগছে আজ। যদিও মনের মধ্যে অনেক ঝর বয়ে যাচ্ছে ওর, তবুও সেটাকে এক পাশে রেখে আনন্দের মুহুর্তটাকেই গ্রহণ করছে সাদরে।
নীলিমা, তারা আর ওর বাবা একসাথে বসেছে খাবার টেবিলে। নীলিমাই সার্ভ করছে খাবার। তারা বললো
-আজ তোকে কষ্টে ফেলে দিলাম রে,
-ভাব ধরবি না বলে দিলাম।
-ওকে বাবা, ভাব ধরবো না। আজ তোকে একটুও কষ্টে ফেলি নি।
-আবারও ভাব ধরছিস? মুখ ফুলিয়ে বললো নীলিমা।
-যেটা বলি সেটাই ভাব ধরা হয়? তাহলে কি করবো তুই বল।
-কিছু করতে হবেনা। চুপচাপ খা।
-আংকেল, আপনাকে আরেকটু দেই?
-নারে মা, আর খেতে পারবোনা। এটাই বেশি হয়ে গেছে।
-ভালো হয়নি বুঝি রান্না?
-কি যে বলো মা, ভালো না হলে খেয়েছি কিভাবে। আর পেটে জায়গা নেই। সকালে আরেকবার গরম করে দিও তো।
-আচ্ছা আংকেল।
..

রাত প্রায় ১২ টা।
নীলিমা আর তারা দুজন একসাথেই শুয়েছে। কারো চোখে ঘুম নেই। নীলিমা ছটফট করছে একটু ঘুমের জন্য, ঘুম আসছে না চোখে।
তারার চোখ বেয়ে পানি পরছে অঝোরে। ধ্রুবর বলা শেষ কথাগুলো এখনো ওর কানে বাজছে।
নীলিমার ছটফটানি দেখে চোখের পানি মুছে নিলো তারা। কন্ঠটাকে যথেষ্ট স্বাভাবিক করে বললো
-কিরে, এমন করছিস কেন?
-ঘুম আসছেনা রে। অসহায় ভাবে বললো নীলিমা।
-তোর ঘুম না আসার কারণ তো আমি দেখিনা। ঘুম আসছেনা কেন?
-ঘুম না আসার কারণ থাকতে পারে নাকি? চোখে ঘুম নেই, আসবে কি করে?
-নীলিমা..
-বল
-ভালোবেসেছিস কখনো কাউকে?
-হটাৎ এই কথা..!
-বল না।
-কাউকে যদি ভালবাসতাম, তাহলে তো তুই অবশ্যই জানতি তাইনা?
-তোর আর আমার মাঝে অনেকটা গ্যাপ চলে গেছে। এই গ্যাপে তোর জীবনে কেউ আসতেও তো পারে তাইনা।
-নাহ, এমন কেউ আসেনি। আসলে আসেনি বললে ভুল হবে। এসেছে, অনেকেই এসেছে, তবে মনের মতো কেউ আসেনি।
-তুই কিভাবে বুঝলি, তোর মনের মতো কেউ আসেনি? সবাইকে এক এক করে যাচাই করেছিস নাকি?
-ধুর, সবাইকে যাচাই করতে হয় নাকি? আসলে কি জানিস, প্রত্যেকটা মেয়েরই তৃতীয় নয়ন বলে একটা নয়ন থাকে, যে নয়নের মাধ্যমে মেয়েটা অতি সহজেই বুঝতে পারে কে তার মনের মানুষ, কে তাকে সত্যিকার ভালোবাসে।
-এমন কারো দেখা পাসনি আজো?
-নাহ পায়নি এখনো এমন একজনের দেখা। তবে আমার মন বলে, এমন কারো সাথে আমার নিশ্চয়ই দেখা হবে, যার অনুভবে মিশে যাবো আমি, আর আমার অনুভবে সে।
-আসলেই তুই পারবি সবকিছু, পারবি মনের মানুষ খোজে পেতে, পারবি তাকে ধরে রাখতে। কিন্তু আমিতো কিছুই পারিনা, না পারি ভালোবাসার মানুষের মন রাখতে, না পারি তাকে বেধে রাখতে।
নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে পর্যন্ত পারিনা আমি।
নীলিমা খেয়াল করলো, তারা চোখদুটো ছলছল করছে। মুখটা ফ্যাকাসে হয়ে গেছে খুব। নীলিমা চোখ বুঝলো।। বললো

-আমরা মানুষেরা খুব সহজেই হতাশ হয়ে পড়ি। পারি না, পারবোনা, আমার কপালে নেই কথাগুলো অনেকটাই universal truth এর মতো আমরা বলে থাকি। কিন্তু সবচেয়ে মজার ব্যাপার কি জানিস তারু, নিজেকে জিজ্ঞাসা করে দেখলে আসলে যে উত্তর পাওয়া যাবে তা একেবারেই উল্টো। আমি পারবো, আমাকে দিয়েই হবে… এই শক্তি কিন্তু আমাদের অন্তরেই লুকিয়ে থাকে। যেটা আমরা সবাই বুঝতে পারিনা। Just you need to wake it up…
তারা খুবই মনোযোগ সহকারে শুনলো নীলিমার বলা কথাগুলো। আসলেই কথাগুলো সত্য। তারা বললো…
-তুই আসলেই অনেক বুদ্ধিমতী নীল।
-হুম হয়েছে, এইবার ঘুমা। কাল আবার অনেক কাজ আছে।
-কিসের কাজ? অবাক হওয়ার ভংগিতে বললো তারা।
-নাহ কিছুনা। ঘুমাতো এইবার। আমার ঘুম পাচ্ছে খুব। গুড নাইট।
নীলিমা কম্বলটাকে ভালোকরে টেনে নিয়ে গুটিশুটি মেরে ঘুমিয়ে গেলো প্রায়। শুধু নীলিমা কেনো, এতো রাতে সবাই ঘুমিয়ে একাকার। শুধু ঘুম নেই তারার চোখে। যদিও ভালো থাকার অভিনয় করছে, নীলিমার সাথে হাসিখুশিতে মেতে উঠছে, কিন্তু আসলেই কি খুশি আছে? নাকি মনে সুখ আছে? নাহ নেই, না আছে সুখ আর না পারছে খুশিতে থাকতে।
এই গভীর রাতে শুধু ওর বালিশটাই জানান দিচ্ছে তারা সুখে নেই।

সকালে নাস্তার শেষে বাসা থেকে বেরিয়ে গেছে তারার বাবা। সাথে করে নিয়ে গেছে পুরোনো বাসার দারোয়ানকে। যদিও দারোয়ানকে কখনো কোথাও নিয়ে যায়না বাবা। কিন্তু আজ হটাৎ করে দারোয়ান চাচাকে সাথে করে নিয়ে যাবার কারণ খোজে পাচ্ছেনা তারা। কোথায় গেছে সেটাও জানেনা তারা। নীলিমাটারও যে কি হয়েছে আজ। পুরো বাসা পরিষ্কার করার কাজে নেমে পড়েছে সে। দেখে মনে হচ্ছে, বাসার সাথে যুদ্ধ করতে নেমেছে সে। তারা বুঝতে পারছেনা আজ কারো মতিগতি। কি হয়েছে কি আজ সকলের?
তারা এগিয়ে গেলো নীলিমার দিকে। একটা কাঠের টুলের উপর দাঁড়িয়ে উপরের দিকটা ঝেড়ে পরিষ্কার করতে ব্যস্ত সে। তারা যে পাশে গিয়ে দাড়িয়েছে সে খবর নেই ওর।
তারা কিছুটা রাগী গলায় বললো
-কি হয়েছে কি? কি করছিস এইসব?
-দেখছিস না কি করছি? কাজ করতে করতে বললো নীলিমা
-সেতো দেখতেই পাচ্ছি। তা হটাৎ এইসব করার মানেটা কি? তোকে কি বাসার বুয়া হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে?
-বাজে কথা রাখ তো। কাজ করছি, ডিস্টার্ব করিস না।
-হুহ। মুখ বাকালো তারা।
রেগে হনহন করতে করতে সেখান থেকে চলে এলো সে।

কিছুক্ষণ পর দুটো বড় বড় বাজারের ব্যাগ ভর্তি করে বাসায় ফিরলো তারার বাবা। এতোবড় দুটো ব্যাগ ভরা বাজার দেখে অবাকের চূড়ান্ত সীমায় গিয়ে পরলো তারা। এতো এতো তরিতরকারি? কে খাবে এতোসব? বাসায় তো মাত্র ওরা তিনজন। এই খাবার তো দশদিন খেয়েও শেষ করতে পারবেনা। আরো থেকে থেকে পঁঁচবে। নিজের কৌতুহলী মনের কৌতূহল মেটাতে গভীর আগ্রহ নিয়ে বাবার কাছে গেলো তারা। বাবাকে প্রশ্ন করলো
– এতো সব কেন এনেছো বাবা? বাসায় তো আমরা মাত্র তিনজন। তাহলে?
-মেহমান আসবে আজ। তাই এনেছি।
-মেহমান? কোথা থেকে আসবে?
-এলেই দেখতে পাবি। আমি একটু বাইরে গেলাম মা। নীলি কে নিয়ে তুই রান্নাবান্না টা করে নিস তো। ভালোভাবে রান্না করিস কিন্তু।
-কিন্তু বাবা।
আর কিছু বলার সুযোগ না দিয়েই বাবা চলে গেলেন তাড়াহুড়ো করে। তারা বেকুবের মতো দাঁড়িয়ে আছে আগেই জায়গাতেই। কিছুই ঢুকছে না ওর মাথায়।
কিছুক্ষণ পর নীলিমা আসলো কিচেন রুমে। তারাকে এভাবে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে বললো
-কিরে, এভাবে দাঁড়িয়ে আছিস কেন?
-আজ আমাদের কে আসবে রে?
-মেহমান আসবে।
-সেটাতো বুঝলাম, কিসের মেহমান আসবে? আর কোথা থেকেই বা আসবে?
নীলিমা তরিতরকারি গুলো ব্যাগ থেকে বের করে বড় গামলায় রাখছিলো। তারার কথার উত্তরে সে অবচেতন ভাবেই বলে উঠলো
-পাত্রপক্ষ আসবে, তোকে দেখতে।
#জানি_দেখা_হবে ❤️
Israt Jahan Tanni ✍️
#Part_34

“আমি কষ্টের স্মৃতি নিয়ে করি বসবাস….
আমায় নিয়ে কখনো করোনা উপহাস….
আমার জীবনটা হল, একটা দুঃখের ইতিহাস….
এটাই আমার ভাগ্যের, নির্মম পরিহাস।”

-এইবার থামবি তুই? তোর এইসব আবেগী কবিতা ভালো লাগছেনা আমার, কোথায় থাকে এইসব আবেগ? পাস কোথা থেকে এগুলো? বেশ রেগে গিয়ে বললো নীলিমা। তারা ছলছল চোখে তাকালো নীলিমার দিকে। নীলিমা দ্বিগুণ বেগে জ্বলে উঠলো। বললো
-ভাব ধরবি না আমার সামনে বলে রাখলাম। চোখে পানি কেন? চোখ মুছ এক্ষুনি।
-তুই এমন করছিস কেন? জানিস তো আমার মনের উপর দিয়ে কি যাচ্ছে।
-আমি কিচ্ছু জানি না, কিচ্ছুটি জানতে চাইও না। তারাতাড়ি রেডি হয়ে নে। মেহমান বোধহয় কিছুক্ষণের মধ্যেই চলে আসবে।
-মানে কি নীল? তুইও আমাকে এই কথা বলছিস? জানিস না আমি বিবাহিতা?
-তো কি হয়েছে? তোর ওই হাজবেন্ড তো একবার না, দুইবার করে তোকে বের করে দিয়েছে।
-বুঝার চেষ্টা কর নীল, আগের বার ওকে আমার সম্পর্কে ভুল বুঝানো হয়েছিলো, তাই আমাকে বের করে দিয়েছিলো, আর এইবার তো, আমার ভুলের কারণে আমার উপর শুধু রেগেছে মাত্র। সেটা রাগ কমলেই শেষ হয়ে যাবে।
-কি হবে কি হবেনা, সেটা পরে দেখা যাবে। এখন রেডি হো জলদি।
-আমি যাবোনা কারো সামনে।।
-প্লিজ তারা, এমন করিস না, আংকেলের দিকে তাকিয়ে হলেও যা ওদের সামনে।
-যা তো এখান থেকে।
-চুপ থাক। আমি কিচেনে যাচ্ছি, রান্নার ভাড় তো সব আমার উপর ঢেলে দিলি, যদি খেতে যাস, তখন খবর আছে তোর, আমি রান্নাটা দেখে আসছি, তুই চুপচাপ রেডি হয়ে নে।
তারা কোনো উত্তর দিলোনা। নীলিমা চলে এলো কিচেনে।
সকালে নীলিমার মুখে পাত্রপক্ষের কথা শুনামাত্রই মেজাজ খারাপ হয়ে গেছিলো তারার। তখন থেকেই রুমে এসে বসে আছে চুপটি করে।

ওদিকে সমস্ত রান্না শেষ করে ফ্রেশ হয়ে নিলো নীলিমা। সবকিছু পরিপাটি করে সেটা দেখার জন্য আশপাশটা আবারো ভালো করে চেক করে নিলো সে। একটা আকাশী রঙ এর সেলোয়ার-কামিজ পড়ে তারার রুমের দিকে এগিয়ে গেলো সে। তারা এখনো গুটিশুটি মেরে বসে আছে খাটের এক পাশে জানালার সাইডে। নীলিমা হাসি হাসি মুখ করে রুমে ঢুকতে ঢুকতে বললো
-মহারাণীর কি এখনো মন খারাপ?
-আমার এমন দিনেও তুই ঠাট্টা করা শুরু করেছিস নীল?
-কেমন দিন? ভ্রু বাকিয়ে বললো নীলিমা।
-তুই এমন কেন করছিস নীল? তুই তো আমার সবচেয়ে কাছের বান্ধবী, আমার বোনের মতো। তাহলে তুই কেন আমাকে বুঝতে চাইছিস না নীল।
-বাহানা বাদ দে তো। তারাতাড়ি রেডি হো। তোর এইসব ছ্যাকামার্কা কথা দিয়ে আমাকে ভুলানো যাবেনা। তোকে আজ পাত্রপক্ষের সামনে যেতেই হবে। ওরা কাছাকাছি চলে এসেছে বোধহয়।
-আমি যাবোনা। চোখমুখ শক্ত করে বললো তারা।
-সত্যিই যাবিনা?
-বললাম তো যাবোনা। কানে শুনিস না?
-যেতে তো তোকে হবেই। মুচকি হেসে বললো নীলিমা।
-তুই আমাকে জোর করে নেওয়াবি?
-কেন যাবিনা শুনি?
-জানিস না?
-তোর মুখে শুনতে চাই।
-আমার বিয়ে হয়েছে, আমার স্বামী আছে, সংসার আছে। তাই ওদের সামনে যাওয়ার প্রশ্নই আসেনা আমার।
-ওকে, তোকে বিয়ে করতে হবেনা। আংকেলের মুখের দিকে তাকিয়ে হলেও একবার ওদের সামনে যা প্লিজ, আংকেল কতো বড় মুখ করে ওদের কাছে তোর কথা বলেছে।
-তুই কি করে জানিস বাবা আমার কথা বড় মুখ করে বলেছে? তার মানে বাবা আর তুই এক হয়ে এই কাজ করেছিস? আর এর জন্যই আমাদের বাসায় এভাবে হুট করে এসেছিস? সন্দিহান চোখে নীলিমার দিকে তাকিয়ে প্রশ্ন করলো তারা।

নীলিমা থতমত খেয়ে গেলো তারার প্রশ্নে। আমতাআমতা করে বললো
-এটা তুই কি বলছিস তারা? আমি কি তোর সাথে এটা করতে পারি বল? আমি আসার পরেই তো আংকেল আমাকে ডেকে এই কথা বললো।
-বিশ্বাস করিনা আমি তোর কথা। অন্যদিকে মুখ ফিরিয়ে বললো তারা।
-তোর বিশ্বাসে আমার কিছু যায় আসেনা। তুই ওদের সামনে যাবি ব্যাস।
-এতোটাও পাগল হয়নি এখনো। তোর মন চাইলে তুই যা।
-তার মানে ওদের সামনে যাবিনা তুই? দ্বিগুণ তেজে বললো নীলিমা।
-না যাবোনা।
-যেতে তোকে হবেই। কোমরে হাত দিয়ে বললো নীলিমা।
-তার মানে? আমাকে জোর করে পাঠাবি?
-দরকার হলে তাই করবো।
-সেটা করলে তোরাই বিপদে পড়বি।
-কি রকম বিপদ?
-আমি গিয়ে ওদের বলে দিবো সব।
-কি বলবি শুনি?
-আমি বিবাহিত, আমাকে তোরা জোর করে অন্য জায়গায় বিয়ে দিতে চাইছিস, এটাই বলবো।
-আমার বিশ্বাস হয়না তুই এটা পারবি?
-চ্যালেঞ্জ করছিস?
-হুম করছি।
-ঠিক আছে, দেখিয়ে দিবো আমি।
নীলিমা প্রসঙ্গ পাল্টালো। ক্ষীণ কন্ঠে তারাকে বললো
-ধ্রুব ভাইয়া তো বারবার তোকে কষ্ট দিচ্ছে, তারপরও ওকে নিয়ে তোর এতো চিন্তা। এখনো উনাকে নিয়ে আশা দেখছিস?
-আশা করতে মানা?
-তা না, কিন্তু সেতো তোকে বারবার হতাশ করছে।
-আমরা হয়তো অসংখ্য বার হতাশ
হব, কিন্তু তারপরও অসংখ্যবার
আমাদের আশা করতে হবে”

নীলিমা হেসে দিলো তারার কথায়। বললো..
-একটা ভালো জামা পরে যাস সামনে। ইচ্ছে হলে শাড়ি পরেও যেতে পারিস।
-তোর মন চাইলে তুই পরে নিস শাড়ি। আমার এতো শখ নেই। ওয়াসরুমের দিকে যেতে যেতে উত্তর দিলো তারা।
নীলিমার তারার যাওয়ার প্রান্তে তাকিয়ে মুখ টিপে হাসছে শুধু।

দুপুরের আগ মুহুর্তে একটা বড় কালো গাড়ি এসে দাড়ালো তারাদের বাসার সামনে। গাড়ি থেকে নেমে সোজা বাসার ভিতরে গিয়ে ঢুকলো ধ্রুব আর ওর বাবা মা। ধ্রুবর পরনে অফ হোয়াইট কালারের শার্ট, সাথে ব্ল্যাক স্যুট।
নীলিমা হাসিমুখে তারার রুমে এসে ঢুকলো। তারাকে বেশ সাচ্ছন্দ্য দেখাচ্ছে আগের তুলনায়। শাওয়ার নিয়েছে কিছুক্ষণ আগেই। যার জন্য মুখের স্নিগ্ধতা বেড়ে গেছে দ্বিগুণ।
-বাহ, সকাল থেকেই মুখ গোমড়া করে বসে ছিলি তোকে দেখতে আসবে বলে, এখন কোথায় গেলো মুখের গোমড়া ভাব? ডিসিশন চেইঞ্জ? এতো তারাতাড়ি?
-মুখ বন্ধ রাখ। ভুলে গেলি চ্যালেঞ্জের কথা? সেটাই করে দেখাবো তোকে।
-I want to see too. Let’s see how much your breath is. I was waiting for that time. All the best my dear.
তারা কোনো উত্তর দিলোনা। ক্রোধভরা চোখে কিছুক্ষণ নীলিমার দিকে তাকিয়ে থেকে চোখ সরিয়ে নিলো অন্যদিকে। নীলিমা হাসতে হাসতে বললো
-এই ভাইয়াটা কিন্তু খুব হ্যান্ডসাম রে তারু। তোর সাথে মানাবে বেশ।
-বিয়ে করে নে না। না করেছে কে।
-এটা তোর। আমি কেন এই সেকেন্ড হ্যান্ড কে খামোখা বিয়ে করতে যাবো।
-সেকেন্ড হ্যান্ড মানে? আগেও বিয়ে করেছে নাকি?
-করতেও পারে। আজকালকার ছেলেদের বিশ্বাস আছে নাকি?

ধ্রুবর চোখদুটো বার বার উপরের তারার রুমের দিকে যাচ্ছে। নীলিমা সেটা খেয়াল করে বললো
-কি ব্যাপার ভাইয়া? মেয়ে দেখতে এসে এতো ছ্যাচড়ামো করছেন কেন? চোখদুটো কন্ট্রোল করেন। এইরকম লাগামহীন স্বভাব হলে আমরা কিন্তু মেয়ে দিবোনা।
-বিয়ে করা বউ এর সাথে ছ্যাচড়ামো করাটা প্রতিটা বরের মৌলিক অধিকার।
-মৌলিক অধিকার নাকি যৌগিক অধিকার সেটা বুঝবেন সময় হলে। আপনার জন্য আমার বেস্টিটার সাথে আমাকে কতো মিথ্যা বলতে হচ্ছে।
-তোমার যখন সময় হবে, তোমার বরকেও আমি সাহায্য করবো, সব শোধবোধ করে দিবো তখন।
-এটা কি হলো? ভ্রু কুচকে বললো নীলিমা।
-কোথায় কি হলো?
-এই যে, কষ্ট করছি আমি আপনার হয়ে, আর আপনি কিনা কোথাকার কোন ছেলেকে সাহায্য করবেন, এটা কিন্তু ভারী অন্যায়। মুখ ফুলিয়ে বললো নীলিমা।
-এই অন্যায় কাজটা কিন্তু আমি তোমার কাছ থেকেই শিখেছি শ্যালিকা। চোখ টিপ দিয়ে বললো ধ্রুব।

ধ্রুবর কথায় নীলিমা কিছুটা দমে গেলো, কারণ সেওতো নিজের বান্ধবীকে ছেড়ে ওর বর কে সাহায্য করছে। ধ্রুবও সেই ইঙ্গিতটাই করেছে নীলিমাকে। এর জন্যই কারো ভালো করতে নেই। মনে মনে বিরবির করতে লাগলো নীলিমা।
-তোমার বান্ধবীর সাজগোছ করতে আর কত সময় লাগবে?
-সেটা নিজে গিয়ে দেখে আসুন। আমি আপনাকে আর কিছু বলছি না, আর না আপনার কথা শুনছি।
-কোনো ব্যাপার না, আমিই গিয়ে দেখে আসছি। বলেই বসা থেকে উঠে গেলো ধ্রুব।
নীলিমা অবাক হয়ে বললো
-আপনি কি সত্যি সত্যিই যাচ্ছেন নাকি তারার কাছে।
-বউ এর কাছেই তো যাচ্ছি। সমস্যা কি।
-তাহলে সারপ্রাইজ কোথায় থাকলো?
-সেটা ঠিক, তবে আমার যে মন মানছে না। খুব দেখতে ইচ্ছা করছে বউটাকে।
-বাহ, এতো ভালোবাসা!
-খুউব।
-আমারই পোড়া কপাল। এই পোড়া কপালে কারো ভালোবাসা নাই। কপাল চাপড়াতে চাপড়াতে বললো নীলিমা।
ধ্রুব নীলিমার কাছাকাছি এলো কিছুটা। কন্ঠে কিছুটা গভীরতা এনে বললো
-ভালোবাসতে শেখ, ভালোবাসা দিতে শেখ তাহলে তোমার জীবনে ভালোবাসার অভাব হবে না।
-ছাগল পোষার এতো টাইম নাই আমার।
নীলিমার কথায় ভ্যাবাচেকা খেয়ে গেলো ধ্রুব। থতমত খেয়ে বললো
-ভালোবাসার সাথে ছাগল পোষার সম্পর্ক কি?
-ভালোবাসা মানেই তো প্যারা তাইনা? কাউকে যদি ভালোবাসতে শুরু করি তাহলে তার মনমতো কিছু না হলেই তো ছাগলের মতো ভ্যা ভ্যা করা শুরু করবে। আর আমাকে ঘাসপাতা, মানে নানান অজুহাত দিয়ে তার ভ্যা ভ্যা থামাতে হবে। উফফ কি ঝামেলা।
ধ্রুব হু হু করে হাসতে লাগলো নীলিমার কথায়। নীলিমা ভ্রু কুচকে তাকালো ধ্রুবর দিকে। চোখ রাঙ্গিয়ে বললো
-কি ব্যাপার?
-নাথিং।

ধ্রুব কিছুক্ষণ চুপ থাকলো। এপাশ ওপাশ তাকিয়ে দেখে নিলো চারপাশটা। ধ্রুবর বাবা মা ওর থেকে কিছুটা দুরে বসে আছে। ধ্রুবর মা নীলিমাকে বললো..
-তারা কোথায় মামনি?
-উপরের আছে, রেডি হচ্ছে মনেহয়। মুখে হাসির রেখা টেনে বললো নীলিমা।
ধ্রুব ভ্রু বাকিয়ে বললো
-একটা জামাই থাকতেও আরেকটার জন্য সাজগোছ শুরু করে দিয়েছে?
-মোটেও না। আমার বান্ধবীর চরিত্র আপনার মতোনা। সে খুবই ইনোসেন্ট।
-বা রে, আমি আবার কি করলাম?
-বলবোনা, লজ্জা পাবেন।
-ঠিক আছে, আমাকে লজ্জা দিয়ে আপনার কোনো কাজ নেই৷ এবার তারাকে নিয়ে আসুন প্লিজ।।
-আজ্ঞে জনাব, আপনি অপেক্ষা করুন।

উপরে গিয়ে নীলিমা তারাকে ওর চ্যালেঞ্জের কথা মনে করিয়ে দিলো, তাতে হুশ এলো তারার। সে নিজেকে মানসিকভাবে প্রস্তুত করে নিলো ওদেরকে কড়া কথা শুনানোর। সেই কথা মাথায় রেখেই রুম থেকে বেরোলো সে। নীলিমা পিছন থেকে ওকে ডাকতে ডাকতে বললো…
-আরে আরে যাচ্ছিস কোথায়? জামা টা তো পালটে যা।
-কোনো দরকার নেই। হনহন করে সামনে এগুতে লাগলো তারা।
নীলিমা পিছন থেকে মুখ টিপে হাসছে আর তারার যাওয়া দেখছে।
তারা এক ধাপ করে সিড়ি দিয়ে নামছে। নেই কোনো সাবধানতা। ধ্রুব একনজরে তাকিয়ে আছে তারার প্রান্তে। ওর প্রতিটা পদক্ষেপ ধ্রুবর বুকে এক অজানা অনুভূতির সঞ্চার করছে, ধ্রুবর হার্টবিট বাড়ছে ক্রমশই।
তারা মাথাটা নিচু করে সামনে এসে দাড়ালো ওদের। এখনো কারো মুখের দিকে তাকায় নি সে। এতোক্ষণ মনের মধ্যে যতোটা সাহস ছিলো তার সবটুকুই ওদের সামনে আসা মাত্রই ফুরুত হয়ে গেছে। তারা ঢোক গিলছে বারবার। এতোক্ষণ এতোকিছুই ভাবলো সে, কিন্তু এখন সামনে তাকানোর সাহসটা পর্যন্ত নেই। নাহ এভাবে দাঁড়িয়ে থাকলে চলবেনা। ওদেরকে সবটা বলতেই হবে৷
তারা চোখমুখ বন্ধ করে নিলো, সেইসাথে চোখ দুটো খিচে নিলো শক্ত করে। বলতে লাগলো সে..
-আপনারা চলে যান এখান থেকে, আমি বিয়ে করতে পারবোনা আর কাউকেই। আমার বিয়ে হয়েছে, স্বামী আছে, সংসার আছে।
আপনারা চলে যান, আপনাদের এখানে আনানোটা সবটাই আমার বাবার আর বান্ধবীর ষড়যন্ত্র। যদি আপনাদের বিয়ে করার বা করানোর বেশি তাড়া থাকে, তাহলে আমার বান্ধবী আছে পিছনে, ওকে করে নিন। ও আমার চাইতে বেশি সুন্দরী, রান্নাও জানে ভালো।
তারা এবার থামলো। দম নিলো শান্তির। চোখগুলো এখানো বন্ধ। নীলিমা দূরে দাঁড়িয়ে মুখ টিপে হাসছে।
ধ্রুব কিছুক্ষণ তাকিয়ে রইলো তারার দিকে, হটাৎ করেই শব্দ করে হেসে দিলো ধ্রুব।
হাসির শব্দে বিরক্ত নিয়ে সামনে তাকালো তারা, ওরা তিনজনকে দেখেই অবাক হওয়ার চূড়ান্ত সীমায় গিয়ে পরলো সে। কন্ঠে উৎকন্ঠা নিয়ে বললো
-আপনারা? আপনারা এখানে?
-বিয়ে করবো, তাই মেয়ে দেখতে এসেছি। শান্ত গলায় বললো ধ্রুব।

To be Continue…..
To be Continue……

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here