জেদ পর্ব -০৬

#জেদ(A Conditional LoveStory)

#পার্ট০৬

#আফরিন_ইনায়াত_কায়া

.

.

আরাজের দেওয়া লোকেশনে পৌছালাম বিকাল ৪টা ৩০ এ।আজকেও আধঘন্টা লেট।একটা রেস্টুরেন্টে ডেকেছে আরাজ।সেকেন্ড ফ্লোরটা বেশ ফাকা ।দুইটা কাপল ফ্লোরের দুই দিকে নিজেদের খোশ গল্পে ব্যস্ত ।একটু এগোতেই আরাজকে দেখতে পেলাম।এককোনের একটা টেবিলে বসে অপেক্ষা করছে ।বার বার ঘড়ির দিকে তাকানো দেখেই বুঝা যাচ্ছে ছেলেটা অনেক অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে আমার জন্যে।আমি ছোট একটা দম ফেলে ঠোটে হাসি টেনে এগিয়ে গেলাম তার কাছে।

আমাকে দেখে আরাজ একটা ভুবন ভুলানো হাসি দিয়ে উঠে দাঁড়াল।যেন জীবনের অনেক দামী কিছু পেয়ে বসেছে।

-Hey Inayat.Come sit.আসতে কোন কষ্ট হয় নি তো?

-না ।আম সরি লেট করে আসার জন্যে ।আসলএ বাসা থেকে বের হতে দেরী হয়ে গিয়েছল।Hope you didn’t have to wait for a long.

-আরে না।আমি নিজেই দশ মিনিট দেরী করে এসেছি জ্যামের জন্য।কি টেনশনেই না ছিলাম! ভেবেছিলাম তুমি হয়তো এসে বসে আছো।But এখানে পৌছে I felt relief.

কথাটা বলেই হালকা হাসল আরাজ।আমিও তার প্রতিউত্তরে হালকা হাসি দিলাম।

-Anyways কি খাবে বল?

-তেমন কিছু খাবো না ।আমি আসলে বাসা থেকে খেয়ে এসেছি।So sweets will be better I guess.

-Ok.তাহলে আমি অর্ডার দিচ্ছি।

আরাজ অর্ডার প্লেস করছে আর আমি সেই ফাকে তার উপর চোখ বুলিয়ে নিলাম ।সেদিনের মত আজকেও আরাজ ফরমাল ড্রেস পরে এসেছে।ব্লাক কোর্ট আর সাদা শার্ট ।হাতে ডিজিটাল ওয়াচ আর কোর্টের বুক পকেটে গোজা আছে সানগ্লাস।ফর্মাল ড্রেসে বেশ মানিয়েছে তাকে ।

.

.

অর্ডার দেওয়া শেহে আরাজ আমার দিকে তাকাল।হেসে বলল

-তারপর বল ।কী অবস্থা কেমন আছ?

-এইতো আছি আলহামদুলিল্লাহ।তোমার কি অবস্থা?বেশ কিছুক্ষন টুকটাক গল্প চলল আমাদের।তারপর হঠাত করে দুজনেই চুপচাপ।আরাজের হাব ভাব দেখে বোঝা যাচ্ছে সে কিছু একটা বলতে চাচ্ছে।কিন্তু কিভাবে বলবে সেটা নিয়ে চিন্তায় আছে।অবশেষে দিধাদ্বন্দ ক্সটিয়ে বলে উঠল

-ইনায়াত আসলে ….তুমি হয়তো জানো আমার আব্বু আর তোমার আব্বু মানে আমাদের দুই ফ্যামিলি চায় যাতে আমাদের বিয়েটা হয়ে যায়।আসলে আমার জব হলিডে ১ মাসের। তার মধ্যে অলরেডী ৬ দিন কেটে গিয়েছে।অথচ এখনো তোমার সাথে আমার ঠিকভাবে কথাই বলা হয়ে উঠেনি। ব্যাপারটা কেম যেন “যার বিয়ে তার খোজ নাই পাড়া পরশীর ঘুম নেই” টাঈপ হয়ে যাচ্ছে।তাই না?

কথাটা বলেই হালকা হাসার চেস্টা করল আরাজ।

-আমাকে বাবাই পাঠিয়েছে আজকে তোমার সাথে কথা বলার জন্যে।যাতে আমরা কথা বলে বিয়ের কার্ড,শপিং,ওয়েডিং ডেস্টিনেশন এসব কিছু ফাইনাল করতে পারি।Rest Is your descision.

এতটুকু বলে থামল আরাজ।ওর চেহারার দুশ্চিতার ভাব কেটে গিয়ে এখন আনন্দের ছাপ দেখা যাচ্ছে।যান বড় কো বোঝা নেমে গিয়েছে ঘাড়ের উপর থেকে।

.

.

আরাজের কথা শুনে বেশ দুশ্চিন্তায় পড়ে গেলাম আমি।চোখ বন্ধ করে বড় একটা শ্বাস নিয়ে বললাম

-দেখ আরাজ বেশি দূরে আগানোর আগে আমার কিছ কথা আছে।

-হ্যা বলো না!কথা বলার জন্যেই তো এসেছি।

-আসলে আমার ….

আমি কথা শুরু করার আগেই ওয়েটার এসে অর্ডার দিয়ে গেল।আরাজ দুজনের জন্যেই পুডিং,লাইট ডেজার্ট আর হট কফি অর্ডার দিয়েছে।

আমি এক নজর খাবারগুলোর দিকে চোখ বুলিয়ে নিলাম।সব গুলো খাবারই আমার অপছন্দের।আরাজ আমার দিকে পুডিং এর প্লেট এগিয়ে দিল।সার্ভ শেষে আরাভ বলল

-হ্যা ইনা……

-ইনায়াত

-সরি ইনায়াত।কি জানি বলছিলে?

-আরাজ আসলে…

-স্যার আপনাদের কিছু লাগবে আর?

আমি বলতে যাব তখনি ওয়েটার এসে আবার কথা থামিয়ে দিল।আরাজ হেসে উত্তর দিল

-না কিছু লাগবে না।থ্যাংকিউ।

ওয়েটার চলে গেল।আরাজ আমার দিকে তাকিয়ে একটা হাই দিয়ে খাওয়া শুরু করল।আমি একটা দম নিয়ে বললাম

-দেখো আরাজ আমার বাবা মানে আমাদের ফ্যামিলি চায় তোমার আর আমার বিয়ে হোক বাট তার আগে কিছু কথা আছে যেগুলো আমি মনে করি তোমার জানা দরকার।

আরাজ আবারও হাসল।খাবার প্লেটে মনযোগ দিয়ে বলল

-তোমার বয়ফ্রেন্ড ছিল?সমস্যা আই।ওটা আজকালকার মেয়েদের সবার এক দুইটা থাকে।ইনফ্যাক্ট আমার নিজেরও গার্লফ্রেন্ড ছিল।ওর সাথে আমার কলেজ লাইফে রিলেশন ছিল।কলেজ শেষ রিলেশন শেষ।

কথাটা বলেই একটা তাচ্ছিল্যের হাসি দিল আরাজ।আরাজের কথা শুনে আমার মেজাজ বিগড়ে গেল।রাগে গা জ্বলছে আমার ।হাত দুটো শক্ত করে মুঠো করে রাগ কন্ট্রোল করার চেস্টা করছি আমি।

-আরাজ আমার বয়ফ্রেন্ড ছিল না।এখনো আছে ।তোমার জন্যে হয়তো রিলেশন কলেজ লাইফের সাথে সাথে শেষ হয়ে যায় কিন্তু আমাদের ভালোবাসা আমাদের নিশ্বাস ফুরিয়ে গেলেও শেষ হবে না।Its not only a relationship its all about love.

এক নাগাড়ে কথাগুলো বলে দম নিলাম আমি।আরাজের হাসি মুখটাতে নিমিষেই কালো মেঘে ছেয়ে গেল………

চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here