জেদ পর্ব -০৭

#জেদ(A Conditional LoveStory)

#পার্ট০৭

#আফরিন_ইনায়াত_কায়া

.

.

আরাজ হা করে আমার মুখের দিকে তাকিয়ে আছে।ওকে দেখেই বুঝা যাচ্ছে আমার কথাগুলো সে হজম করতে পারেনি।কয়েক সেকেন্ড পর নিজেকে সামলে নিয়ে বলল

-ইনায়াত আমাদের বিয়ে……

-দেখো আরাজ আমি জানি এই সিচুয়েশনে এসে এই রকম কথা বলা অনেকটা অড কিন্তু আমার হাতে আর অন্য কোন অপশন নেই।আরাজ আমি মাত্র এক বছর হয়েছে অফিস জয়েন করেছি ।I still have a lot of works to do,a lot of dreams to fill up.আমি বিয়ের জন্যে এখনো রেডী না হ্যা তুমি হয়তো বলতে পারো আমি এসব আমার প্যারেন্টস্কে না বলে তোমাকে কেন বলছি?কারন বিয়ে একজন না। দুইজনের হয়।আমি একা না করলে তারা আমাকে প্রেশারাইজড করবে কিন্তু আমরা দুইজনেই যদি বিয়েতে অমত করি তাহলে তারা আর সেই সুযোগ পাবেন না।Hope yot got that.

-আর তারপরেও যদি তারা না মানে?

আরাজ মুখ ভার করে জিজ্ঞেস করল।

আরাজের কথায় হালকা দমে গেলা আমি।কিন্তু কথাটা ফেলে দেওয়ার মতোও না ।বাবার #জেদ খুব ভালো করেই জানি আমি।বাবা একবার একটা সিদ্ধান্ত নিলে সেটা টলানো অনেক কঠিন হয়ে যায়।তার উপর এবার ব্যাপার তার সম্মানের সাথে জড়িত।আমি নিজেকে সামলে বললাম

-তারপরেও আমার সিদ্ধান্ত পাল্টাবে না।যে মানুষটাকে আমি চিনিনা জানি না যার পুরো নামটা পর্যন্ত আমি জানি না তার হাতে আমি আমার সারা জীবনের দায়িত্ব দিতে পারবনা।আর যদি বিয়ে করাটা আমার জন্যে অতি প্রয়োজনীয় হয়ে দাঁড়ায় still I’m Sorry.আমি already committed.তাকে ছাড়ে অন্য কাউকে বিয়ে করা আমার পক্ষে পসিবল না।

-তার মানে তুমি আমাকে রিজেক্ট করছ তাই তো?

-না আরাজ প্লিজ নেগেটীভ চিন্তা করো না।আমি তোমাকে রিজেক্ট করছি না কিন্তু তাকে ছেড়ে তোমাকে বিয়ে করা আমার পক্ষে সম্ভব না।If I weren’t committed তাহলে হয়তো ব্যাপারটা এতোটা কমপ্লিকেটেড হতো না।আমরা কথা বলে বিয়েটা পিছিয়ে নিতে পারতাম।We could have settle down but এখন এটা কোন ভাবেই সম্ভব না।তার মানে এই না যে আমি তোমাকে রিজেক্ট করছি ।

কথাগুলো বলেই উদ্বিগ্ন চোখে আমি আরাজের দিকে তাকালাম।আরাভ মুখখানা গম্ভীর করে আছে।আমাকে অবাক চোখে তাকিয়ে থাকতে দেখে সে হঠাত করেই হাসিতে ফেটে পড়ল।পেটে হাত দিয়ে হাসছে সে ।আমি ভ্রু কুচকে তার দিকে তাকাতেই আমাকে হাত দিয়ে থামতে ইশারা করল সে।

.

.

হাসি থামিয়ে বলল

-Relax .I was joking.তুমি তো দেখি সিরিয়াস হয়ে গেলে।আমি তোমার সিচুয়েশনটা বুঝি।হুট করেই যে কারো সাথে বিয়ের বন্ধনে আবদ্ধ হওয়াটা আসলেই সোজা কাজ না ।মেয়েদের জন্যে ব্যাপারটা আরও কঠিন।তারা সারাজীবন অন্যের বাসায় গিয়ে থাকবে!কিন্তু তার মানে এই না যে আমরা সারাজীবন অপরিচিত হয়েই থাকব।Come On Inayat.বিয়ে না করি but at least we can be friends.Right?

আমি আরাজের কথায় হেসে সায় দিলাম।

-সো আজ থেকে আমরা ফ্রেন্ডস ওকে?

কথাটা বলেই আরাজ আমার দিকে হাত বাড়িয়ে দিল।আমিও হসিমুখে তার বন্ধুত্ব কবুল করলাম।

-তুমি চিন্তা করো না ।আমি বাবা আর আংকেলের সাথে কথা বলে তাদেরকে ম্যানেজ করার চেস্টা করব ।বাট তোমাকে একটা প্রমিস করতে হবে।

-কি?

-আমাকে তোমার উনার সাথে দেখা করাতে হবে।আমিও তো দেখি কে সেই ভাগ্যবান ব্যক্তি।

-Of course .তুমি ফ্রি থাকলে বলিও আমি তোমাকে তার সাথে পরিচয় করিয়ে দেব।

-বাট সে ফ্রি থাকবে?

-আমার জন্যে তার পুরো লাইফটাই ফ্রি পরে আছে।

-That’s Cool.তাহলে বলো কবে দেখা করাচ্ছ?

-যখন তুমি বলো!

-ওকে দেন।আমি তোমাকে টাইম আর প্লেস জানিয়ে দিব।

-ডান।

আরাজ আর আমি ছোট খাটো গল্পে ব্যস্ত হয়ে গেলাম।

.

.

বিল মিটিয়ে আমরা রেস্টুরেন্ট থেকে বের হয়ে আসলাম।গাড়ি কাছে আসতেই আরাজ বলে উঠল

-চলো কোথা থেকে ঘুরে আসি ।বেশি দূরে না বাট আশেপাশের এরিয়াতেই।What say?

-I would have agreed but am so sorry আমার সন্ধ্যায় একটা ইম্পরট্যান্ট কাজ শেষ করতে হবে।আমার এখন বাসায় যাওয়াটা খুব জরুরী।আরেকদিন যাই প্লিজ?

আমার কথায় আরাজ কিছুটা দমে গেল ।কিন্তু পরক্ষনেই মুখে হাসি ফুটিয়ে বলল

-Never mind.এটলিস্ট বাসা পর্যন্ত তো ড্রপ করতেই পারি।চলো।

আরাজের সাথে কথা বলে বেশ শান্তি লাগছে।মনে হচ্ছে বুকের উপর থেকে একটা পাথর নেমে গেল।আরাজ বলেছে ও বাবা আর আংকেল কে ম্যানেজ করবে।ছেলেটা অতটা খারাপও না ।এতটুকু ট্রাস্ট করাই যায় তাকে।আর তাছাড়া তো সেও আমাকে আগে থেকে চিনতো না বা আমার প্রতি তার কোন ফিলিংস কাজ করার কথাটা ।তাই হুটহাট অফ সিজন বিয়ে ভাঙ্গলে তার কোন যায় আসার কথা না।

কথাগুলো ভাবতে ভাবতে ফোন হাতে নিলাম।স্ক্রীনের দিকে তাকাতেই আমার চক্ষু চরক গাছ।আরদ্ধের ১২টা মিসড কল ৫টা ম্যাসেজ।

দুপুরে কাজ করার টাঈমে ফোন সাইলেন্ট ছিল।তাড়াহুরোয় বাসা থেকে বের হওয়ার টাইমে ফোনের সেটিন্স চেঞ্জ করার কথা মাথায় ছিল না।আমি তড়িঘড়ি করে আরদ্ধকে কল দিলাম।দুবার রিং পরতেই কল রিসিভ হল

-Aroddho I’m so so so so so sorry.আমি আসলে খেয়াল করিনি ফোণ সাইলেন্ট ছিল।বাসা থেকে বের হওয়ার টাইমে……..

-ইনা রিলাক্স।কৈফিয়ত দিতে হবে না আমাকে।

ওপাশ থেকে বরফ শীতল গলায় আরদ্ধের জবাব এল।

-আরদ্ধ তুমি কি আমার উপর রাগ করে আছ?

-রাগ করব কেন?

-না মানে ….আমি যে……

-ইনা আমরা ক্লাস নাইট টেনের নিব্বা নিব্বি না যে এসব ছোট খাটো বিষয়ে ইস্যু ক্রিয়েট করব।আর যদি হতামও তাহলেও বলতাম তোমার লাইফ তোমার টাইম তুমি কাকে দিবা কি করবা এটার সম্পূর্ন সিদ্ধান্ত তোমার।কোন কিছুর জন্যে কাউকে তোমার কৈফিয়ত দিতে হবে না।ইনা আমি তোমাকে ট্রাস্ট করি।তোমার কৈফিয়ত দেওয়া না দেওয়াতে তার বিন্দুমাত্র চেঞ্জ হবে না।আর ভালোবাসায় কোন জবাবদিহিতা থাকে না ।জবাবদিহিতা থাকে মালিকানায় আর জেদে যার দুটোর একটাও আমি খাটাতে চাইনা তোমার উপর।

আরদ্ধের কথা শেষ হতে না হতেই আমি তাকে ভিডিও কল দিলাম।মাত্র গোসল করে এসেছে সে।চুলের ডগায় এখনো ছোট ছোট পানির দানা চিকচিক করছে।কানে ব্লুটুথ গোজা।গলায় ঝুলানো তোয়ালার নিয়ে মাথা মুছছে আরেক হাতে ফোন ধরে আছে।ছেলেটাকে দেখতে এত মায়াবী লাগছে মনে হচ্ছে আল্লাহ পৃথিবীর সব মায়া মিশিয়ে তাকে বানিয়েছে।আরদ্ধ কিছু বলার আগেই বলে উঠলাম

-I love you Aroddho.

আরদ্ধ একটা ভুবন ভুলানো হাসি দিয়ে বলল

-Love is a medium I just want you cz I need you.

আরদ্ধ হাসছে আর আমি মুগ্ধ চোখে তার দিকে তাকিয়ে আছি।তার এই হাসি দেখার জন্যে আমি হাজারবার বলতে রাজী “ভালোবাসি তোমাকে আরদ্ধ”।……….

চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here