জ্বীন লাভার পর্ব-০১

জ্বীন_লাভার
Writer : Shabnaj Hossain Moon
Part_1
#কাল্পনিক
#তাশলে_আলি_বালিবে এটা আমার স্বামীর নাম ।কেমন ভূতুরে নাম যে এই লোকের মা বাবা দিয়ে সেটা আল্লাহয় জানে।
আমার নাম. মেহেরিমা ….
কি সুন্দর নাম আমার আর আমার বরের নাম কিনা ভূতুরে অদ্ভুদ।
(কথা গুলো বলছিলো #মেহেরিমা)
#মেহেরিমা ভিষন স্মার্ট এই যুগের মেয়ে সে অবশ্য এসব ভূত জ্বীনে ভিলিব করেনা ।
.
.
.
মেহেরিমা শুনে ছিলো জ্বীনেদর মধ্যে নাকি সবচেয়ে ইফিস্দ্রিস নামের এক প্রকার জ্বীন নাকি বেশি শক্তিশালি ।
এদের সাথে কেউ পেরে উঠেনা ।
মেহেরিমা বেনারসি শাড়ি পড়ে ফুলসজ্জ্বা ঘরে বসে আছে স্বামীর অপেক্ষাতে …
.
.
.
মেহেরিমার জিবনের আজকে বিশেষ দিন অথচ সে কিসব ফালতু কথা ভাবছে ….
যেদিন থেকে তার বিয়ে ঠিক হয়েছিলো সেদিন থেকে মেহেরিমা এসব জ্বীন ভূতের কথা বেশি বেশি ভাবছে …
এগুলো সে কেনো ভাবছে তা বুঝতে পারছেনা মেহেরিমা ।
.

.
বরের নাম পছন্দ হয়নি বলে মেহেরিমা তার বরকে বিয়ের আগে একটুও দেখেনি …

যদিও তার বিয়ে করার ইচ্ছে ছিলোনা …
মেহেরিমার ঘর সংসারের প্রতি তেমন টান নেই বললেই চলে ….
সে জব করে স্বাধীন জিবন যাপন করতে চায় ..
মেহেরিমা অনার্স 2য় বর্ষের ছাত্রি ….
.
.
.
মেহেরিমার দেখতে চাদেঁর মতো আর গোলাপের মতো ফুটন্ত সুন্দরি …
কুইন অব সেবা ,হেলেন অব ট্রয় , ক্লিয়োপ্রেটার মতো শতাব্দির থেকে শতাব্দির সেরা সুন্দরিদের মধ্যে একজন ।
এজন্য মেহেরিমার দাদু তাকে একটা তাবিজ পরিয়ে দিয়েছিলো ছোটবেলা থেকে …
যেনো কোনো অতৃপ্ত জ্বীনের নজরে না পরে ….
মেহেরিমা তখন ভিষন হাসতো দাদুর এসব কান্ড দেখে …
দাদু বলতো …
_মেহেরিমা কখনো এটা খুলবেন, এটা তোমাকে কু নজর থেকে রক্ষা করবে ,,,
আমাদের কোনো শখ নেই জ্বীনকে নাত জামাই বানানোর ….
দাদু কেনো এমন অদ্ভুদ কথা বলতো কে জানে ।
.
.
.
.
মেহেরিমা বরের জন্য অপেক্ষা করতে করতে ঘুমিয়ে পড়েছে ….
মেহেরিমার আরো ছয়টা বিয়ে ভেঙেছে কেনো যেনো ।
বিয়ে ঠিক হবার পর কোনো ছেলে পালিয়ে যায় তো কেই হাড়িয়ে যায় আবার কেউ পাগল হয়ে যায় ..
মেহেরিমার দাদু খুব চিন্তিত ছিলেন বিয়ে নিয়ে ..
হঠাৎ একদিন তাশলে আলি বালিবে নামের লোক এসে চিন্তা মুক্ত করে …
মেহেরিমা ভেবে রেখেছে যদি আজকে তার বর তাকে ছোয়ার চেষ্টা করে তাহলে ছূরি দিয়ে সোজা পেট ফুটো করে দেবে …
মেহেরিমা কোমরে একটা আপেল কাটার ছোট ছূরি নিয়েও এসেছে …
মেহেরিমার কেমন যেনো লাগছে বিয়ে হবার পর ..
চারদিকে কেমন যেনো ঠান্ডা বাতাস …
বাতাস গুলো তাকে কি যেনো বলতে চায় এমন লাগে মেহেরিমার ….
.
.
.
মেহেরিমা ঘুমের মধ্য থেকে দেখলো তার পাশে একটা লোক ঘুমিয়ে আছে …
লোকটার হাত পা ঠান্ডা খুব ।
মেহেরিমা লোকটাকে দেখে কেমন যেনো চেনা চেনা লাগলো ,,,
মনে হয় আগে কোথাও দেখেছে এমন লাগছে …
ভালো করে খেয়াল করলো মেহেরিমা …
মেহেরিমা গ্রামে যখন দাদু বাড়ি যেতো তখন একটা লোক তাকে গাছ থেকে আম পেড়ে দিতো …
মেহেরিমা লোকটাকে তেমন খেয়াল করতো না …
একদিন লোকটার হাতে মেহেরিমার হাতের স্পর্ষ হয় ।
লোকটার হাত প্রচন্ড ঠান্ডা ছিলো …
পরের দিন আম গাছের নিচে একটা ছেলের লাশ পাওয়া গিয়েছিলো …
চারদিকে রক্ত আর রক্ত ..
ছেলেটার নাড়ি বুড়ি সব বেরিয়ে এসেছিলো …
এই ছেলেটা একদিন মেহেরিমার জামা ছিড়ে ফেলে ছিলো ..
সেটা অবশ্য কেউ জানেনা ।
.
.
.
ছেলেটার মৃত্যুতে মেহেরিমা ভয় পেয়ে ছিলো …
আশচর্যের বিষয় হলো ..
যে লোকটা মেহেরিমাকে আম পেড়ে দিতো তাকেও কখনো দেখতে পাওয়া যায়নি ….
এসব মেহেরিমার ছোটবেলার ঘটনা ….
.
.
.
মেহেরিমার আত্মা ধক করে উঠলো …
মেহেরিমার পাশে তার স্বামি থাকার কথা…
কিন্ত মেহেরিমার মনে হচ্ছে তার স্বামি নয় অন্য কিছু তার পাশে শুয়ে আছে …
.
.
.
মেহেরিমা সেই ছোটবেলার লাসের কাফনের গন্ধ পাচ্ছে ।
মেহেরিমার ভিষন ভয় করছে …
পাশে থাকা লোকটার মুখ ঠিক মতো দেখা যাচ্ছেনা কিন্ত লোকটা শুয়ে শুয়ে মেহেরিমার দিকে তাকিয়ে আছে …
লোকটা এক সময় বিকট হাসি দিলো …
দেয়াল ফেটে যাচ্ছে হাসিতে ।
.
.
.
মেহেরিমা ভয়ে ঘর থেকে পালানোর জন্য ডোরে ধক্কা শুরু করলো বাট ডোর ওপেন হচ্ছেনা কেনো যেনো….
লোকটা এক সময় মেহেরিমার দিকে হাসতে হাসতে এগিয়ে এলো ..
লোকটা বিকট কন্ঠে কিছু কথা বললো মেহেরিমাকে ..
_মেহেরিমা আমার মেহেরিমা …
আজ থেকে তুমি আমার হয়েছো …
গত 100 বছর ধরে তোমার জন্য অপেক্ষা করছি ..
আজকে তুমি আমার হয়ে গিয়েছো চির জন্মের মতো ।
তোমাকে আমার কাছ থেকে কেউ কেড়ে নিতে পারবেনা…
পুরো পৃথিবী ধ্বংস করে দেবো তবু আলাদা কেরতে দেবোনা তোমাকে আমার থেকে …
আমি তোমাকে ভালোবাসি ।
.
.
.
লোকটা মেহেরিমার খুব কাছে আসতেই মেহেরিমা জ্ঞান হাড়ালো …
.
.
মেহেরিমার চোখ গুলো মিট মিট করছে …
মাথাটা ভারি হয়ে আছে …
সে অনুভব করলো কে যেনো তার মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে ‌…
খুব শান্তি লাগছে তার …
মনে হচ্ছে দুনিয়েতেই তার জন্য আল্লাহ বেহেস্ত দান করেছে ….
.
.
.
মেহেরিমার কানে একটা খুব অমায়িক মিষ্টি কন্ঠ ভেসে উঠলো ….
মেহেরিমার হঠাৎ কিছুক্ষন ঘটে যাওয়া ঘটনার কথা মনে পড়লো …
ঘটনা মনে পড়তেই মেহেরিমা এক লাফ দিয়ে বেড থেকে উঠে বসলো …
ভয়ে তার কলিজা শুকিয়ে আছে …
মেহেরিমা ভয়ে চিৎকার করলো …
সে সময় কে যেনো মিষ্ট কন্ঠে বললো ….
_কি করছো তুমি ??
চিৎকার করছো কেনো ??
মেহেরিমা এক নিমিষেই স্বাভাবিক হয়ে গেলো …
চিৎয় বন্ধ করে চারদিক তাকালো …
সেই অদ্ভুদ টাইপ লোকটাকে সে দেখতে পেলোনা কোথাও …
পর লাসের কাফনের গন্ধটাও নেই ,এছাড়া কোনো বিকৃত আওয়াজও রুমে হচ্ছেনা ….
.
.
.
রুমে মিষ্টি একটা কন্ঠ ভেসে আসছে সেই সাথে মিষ্ট একটা সুভাসও বাহিত হচ্ছে।
মেহেরিমা বুঝতে পারলো সে সপ্ন দেখেছে …
খুব বাজে সপ্ন ….
মেহেরিমার হঠাৎ তার সামনে বসে থাকা লোকটার দিকে খেয়াল করলো …
লোকটা বললো …
_আমি তাশলে আলি বালিবে তোমার স্বামি ।
আমার সাথে তোমার বিয়ে হয়ে ছে ..
তুমি আমাকে বিয়ের আগে দেখোনো কিন্ত আমি তোমায় দেখেছি বিয়ের আগে …
অনেকবার দেখেছি তোমায়।
তাই তোমাকে পছন্দ করে বিয়ে করলাম …
কি হলো কিছু বলছোনা কেনো ??
আমি একা একাই বক বক করে যাচ্ছি …
.
.
.
মেহেরিমার গলা দিয়ে কথা বের হচ্ছেনা …
ঘেমে পুরো একাকার হয়ে ভিজে গেছে সে …
মেহেরিমা গলায় হাত দিচ্ছে বার বার …
লোকটা হঠাৎ এক গ্লাস পানি এগিয়ে দিয়ে বললো ..
_পানি খাও ,তোমার নার্ভাস ফিল হচ্ছে , শুরুতে নতুন জায়গায় এমন ফিল হয় পরে ঠিক হয়ে যাবে ..
মেহেরিমা পানি পান করলো ।
মেহেরিমার স্বামি বালিবে গ্লাসটা হাত থেকে নিয়ে বললো …
_রুমে এসে দেখি বিরাট ঘোমটা দিয়ে বিছানার মাঝখানে শুয়ে আছো ..
তোমাকে কয়েক বার ডাকা সত্বেও তুমি সারা দিলে না ।
কি হয়েছিলো তোমার ??
তুমি কি ঘুমিয়ে পড়েছিলে ???
.
.
.
মেহেরিমা তার স্বামিকে সত্যি কথা বললো না ..
_আমি ক্লান্ত হয়ে ঘুমিয়ে পড়ে ছিলাম ..
_তুমি আমার কাছ থেকে কিছু লুকিয়ো না .
আমি তোমার স্বামি ,
আমাকে বন্ধু ভাবতে পারো ।
আমি বিয়ের দিন তোমার উপর কোনো জোর বা অধিকার খাটাবো না ।
আমার এসব বিষয় ভালো লাগেনা ।
একটা মেয়ে সব ছেড়ে অচেনা জায়গায় যায় ,,মেয়েটাকে সেদিন অন্তত ছাড় দেওয়া উচিৎ ।
আমি ঠিক করেছি আগে আমরা বন্ধু হবো তারপর ধীরে ধীরে স্বামি স্ত্রি …
.
.
.
মেহেরিমা লোকটাকে যত মন্দ ভেবেছিলো লোকটা তত মন্দ নয় …
বালিবে আবার বললো ..
_চলো এখন আমরা পরিচয় হয়ে নিই …
যদিও আমরা একে অপরের নাম জানি ..
তবুও প্রথম থেকে পরিচয় হওয়া ভালো …
.
.
.
আমি বালিবে ,
পুরো নাম তাশলে আলি বালিবে …
তুমি আমায় যে কোনো নামে ডাকতে পারো …
_আমার নাম মেহেরিমা …
পুরো নাম মেহেরিমা ইয়াসমিন মেহুল …
লোকটা হেসে বললো ,,,আমার নামের মতো তোমার নামও দেখছি অনেক বড় …
ইউর নেইম ইজ টু লং সো আই কল্ড ইজ মেহেরিমা …
.

.
বালিবের মুখে নিজের নাম শুনে কেমন যেনো লাগলো মেহেরিমার ….
লোকটাকে এখনো দেখা হয়নি মেহেরিমার …
বিকোজ মেহেরিমার মুখে এখনো লম্বা ঘোমটা আছে ..
.
.
.
চলবে,,,,,,,,,,(ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে ,প্রথম অলৌকিক গল্প লিখলাম )

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here