জ্বীন লাভার পর্ব-০৩

জ্বীন_লাভার
Writer : Shabnaj Hossain Moon
Part_3
( )
.
মেহেরিমা আর বালিবে রাস্তা দিয়ে হাটছে….
মেহেরিমা রুস্তম স্যার এর কথা ভাবছে…
রুস্তম স্যারের চোখ গুলো কেমন লাল লাল ছিলো …
দেখে মনে হতো মেহেরিমাকে চোখ দিয়ে গিলে খাবে….
রুস্তম স্যার সব সময় বাজে নজর দিয়ে তাকাতো মেহেরিমার দিকে…
মেহেরিমার গা ঘিন ঘিন করতো রুস্তম স্যারকে দেখে…
.
.
.
মেহেরিমা আর বালিবে তাদের বাসায় গেলো…
মেহেরিমা বালিবের সাথে আসার সময় একবারও তার দিকে তাকায়নি….
.
.
.
মেহেরিমার মন খারাপ কারণ আজকেই তাকে যেতে হবে নিজের বাড়ি ছেড়ে….
তার স্বামির বাড়ি যেতে হবে বালিবের সাথে….
মেহেরিমা মন খারাপ করে বসে আছে করিডরে….
তার চোখ থেকে পানি পড়ছে‌…
হঠাৎ সে ফিল করলো কেউ তার খুব কাছে আছে…
কারো নিঃশ্বাস এর ঘন ঘন শব্দ শুনতে পাচ্ছে সে…
.
.
.
মেহেরিমা সেই সুভাসও পাচ্ছে….
মন মাতানো সুভাস…
সে এদিক ওদিক তাকালো বাট কাউকে দেখতে পেলোনা…
.
.
.
মেহেরিমা কে সন্ধ্যার সময় বিধায় দেওয়া হলো…
চাচা ,চাচিমা ,বাবা ,মা ,দাদু ,দিদা ,বাহার সবাই তাকে জরিয়ে ধরে কান্না করলো…
দাদু মেহেরিমার হাতে একটা তাবিজ দিলো …
আর খুব সাবধান করে বললো এই তাবিজ যেনো সে না খোলে…
বাবা বললো….
_আমার চাদেরঁ মতো দেখতে শাহজাদি কে একজন শাহাজাদার কাছে বিয়ে দিয়েছি ….
আমার শাহাজাদি তার শাহাজাদার সাথে সুখে থাকবে…
সে কখনোই আমার শাহাজাদির চোখের পানি আসতে দেবেনা…
বালিবেকে আড়ালে নিয়ে গিয়ে মেহেরিমা কে দেখে শুনে রাখার জন্য অনেক কিছু বললেন তার দাদু…
বালিবে মেহেরিমার দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসলো…
.
.
.
বালিবে ড্রাইভ করছে আর মেহেরিমা পাশে বসে আছে…
জানালা দিয়ে অনেক ক্ষন বাহিরে তাকিয়ে নিজের বাড়ি দেখলো যতদূর দেখা যায় …
.
.
.
মেহেরিমা বাহিরে তাকিয়ে একটা দূর্গন্ধের সুভাস পেলো….
সে সাথে সাথেই বাহির থেকে ভেতরে বালিবের দিকে তাকালো…
বালিবে কোনো কথা বলছেনা সে শুধু ড্রাইভ করছে আর মেহেরিমার দিকে তাকাচ্ছে…
.
.
.
মেহেরিমার মন খারাপ বাড়ির জন্য…
মেহেরিমার চোখের পানিতে শাড়ি ভিজে গিয়েছে আর চোখের কাজলও লেপ্টে আছে …
বালিবে মেহেরিমা কে একটা বোতল দিলো…
মেহেরিমা প্রথমে নিতে চাইলো না বাট বালিবের জোরা জোরিতে বোতল নিয়ে কিছুটা পানি খেলো সে….
পানি খাওয়ার পর মেহেরিমার মন ভালো হয়ে গেলো…
এখন সব ব্যথা ভুলে গিয়ে তাকে স্বভাবিক লাগছে…
বালিবে হঠাৎ মেহেরিমার হাতে নিজের হাত রাখলো…
মেহেরিমার আচমকা ঠান্ডা অনুভব হলো আর সে এক ঝটকায় হাত সরিয়ে নিলো বালিবের….
.
.
.
বালিবে কার থামিয়ে দিয়ে মেহেরিমার দিকে তাকালো…
মেহেরিমা কিছুটা ইতস্ত হয়ে অপরাধির মতো নিচে তাকিয়ে রইলো…
.
.
.
.
_মেহেরিমা ইউর নেম ইজ টু লং সো আই কলড ইউ বউ……
এখন থেকে আমি তোমাকে বউ বলে ডাকবো…
এখন হাত সরিয়ে নিলে নাও তবে আগামীতে তোমার হাত শত বছরের জন্য ধরে থাকবো…
.
.
.
_শত বছর মানে ???
_এমনিই কথার কথা…
মানুষ কি আর শত শত বছর বাচতে পারে???
.
.
.
বালিবে আবার ড্রাইভ করছে…
রাত হয়ে গিয়েছে বেশ…
মেহেরিমা ক্লান্ত হয়ে ঝিমুচ্ছে আর ভাবছে শশুর বাড়ি আর মধুর হাড়ি কত দূর…
বেশ ক্ষিধেও লেগেছে মেহেরিমার …
লজ্জায় বালিবে কে বলেনি মেহেরিমা…
.
.
.
হঠাৎ বালিবে কার থামালো…
_বউ তোমার তো ক্ষিধে লেগেছে তাইনা??
_মেহেরিমা অবাক হয়ে বললো….
_হ্যাঁ বাট কি করে বুঝলেন ???
বালিবে নরম গলায় বললো….
_আমার বউয়ের ক্ষিধে লেগেছে আর আমি জানিনা…
বালিবে কার থেকে নেমে বললো…
_বউ তুমি ওয়েট করো একটু…
সামনে একটা হোটেল আছে ..
দেখি কিছু পাওয়া যায় কিনা…
মেহেরিমা কিছু বলার আগেই বালিবে তাড়াতাড়ি পাশের জঙগলে ঢুকে গেলো….
মেহেরিমা এতক্ষনে খেয়াল করলো বালিবে কার আর তাকে দুপাশে ঘন জঙগলের মধ্যে রোডে রেখে গিয়েছে…
.
.
.
মেহেরিমা কার থেকে নেমে বালিবে কে খুজতে লাগলো…
বালিবে কেনো জঙ্গলের ভেতর ঢুকে গেলো…
এখানে নির্জন জায়গায় আবার হোটেল কিসের….
.
.
.
.
হোটেল যদিও থাকে সেটা জঙ্গলের ভেতর কেনো…
অনেক ক্ষন হয়ে গেলো বালিবের আসার নাম নেই…..
মেহেরিমার টেনশন হচ্ছে হাজার হলেও স্বামি বলে কথা…
.
.
.
বালিবে মেহেরিমা কে কার থেকে নামতে নিষেধ করেছিলো বাট তবু নিষেধ অমান্য করে মেহেরিমা নামলো…
.
.
.
হঠাৎ মেহেরিমার ধমকা বাতাসের শব্দ পেলো…
আর জঙগলের থেকে কারো খট খট হাসির শব্দ পেলো…
মেহেরিমা মনে করেছিলো এটা মনের ভুল ..
কিন্ত ক্রমশ হাসির শব্দ ভারি হতে লাগলো…
মেহেরিমার বেশ ভয় করছে…
বালিবে এখনো আসছেনা আর এই জায়গা তার কাছে ঠিক মনে হচ্ছেনা…
.
.
.
হঠাৎ মেহেরিমা জঙগল থেকে কারো চিৎকারের আওয়াজ পেলো…
বালিবের আওয়াজ করে মেহেরিমা বলে কেউ ডাকছে…
মেহেরিমা ভাবলো বালিবের কোনো বিপধ হয়েছে…
.
.
.
মেহেরিমা লেট না করে জঙগলের ভেতর ঢোকার জন্য পা বাড়ালো…
তখনি সে কোমরে কারো হাতের স্পর্ষ পেলো …
কানে কানে ফিস ফিস করে কেউ বললো…
_মেহেরিমা তোমাকে লাল শাড়িতে হেব্বি লাগছে…
আরেকটু কাছে এসো প্লিজজজজ…
মেহেরিমার ভয়ে নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে যাচ্ছে …
সে কোনো রকম নিজেকে ছাড়িয়ে দৌড়াতে লাগলো…
হঠাৎ সে কারো বুকের সাথে ধাক্কা খেলো…
এটা হলো সেই মিষ্টি সুভাস…
চাদেরঁ আলোতে মেহেরিমা বেশ দেখতে পেলো বালিবেকে…
বালিবে কে দেখেই মেহেরিমা জরিয়ে ধরলো…
_আপনি কোথায় গিয়েছিলেন ??
আমার অনেক ভয় করছে…
বালিবে মেহেরিমার মাথায় আর পিঠে হাত বুলিয়ে বললো…
_এইতো আমি এসেছি…
তোমার জন্য খাবার আনতে গিয়েছিলাম…
তোমাকে না বলেছি কার থেকে বের হবেনা…
কেনো বের হলে বউ ???
.
.
.
বালিবের কঠোর চেহেরা ভেসে উঠলো…
মেহেরিমা পরিষ্কার সেটা দেখতে পেলো…
বালিবে কে মেহেরিমার বেশ ভয় লাগছে…
বালিবের কথা শোনা উচিৎ ছিলো তার…
এভাবে কথা অমান্য করে বালিবে কে রাগানোর কোনো মানে ছিলোনা…
.
.
.
বালিবে শক্ত করে মেহেরিমা র হাত ধরে কারে নিয়ে গেলো….
বালিবে একটা প্যাকেট খুলে বিড়িয়ানি বের করে নিজ হাতে মেহেরিমা কে খাইয়ে দিতে লাগলো…
মেহেরিমা প্রথমে খেতে চাইনি বাট বালিবের রাগি লুক দেখে খেতে বাধ্য হলো…
মেহেরিমা এখনো বালিবে কে ভয় পাচ্ছে…
বালিবের চোখ গুলো কেমন যেনো জ্বল জ্বল করছে…
এটা দেখে আরো ভয় লাগছে মেহেরিমার…
.
.
.
বিরিয়ানির স্বাদটা যেনো অমায়িক ছিলো…
এমন বিরিয়ানি কখনো মেহেরিমা খায়নি…
বালিবের হাতটাও ইচ্ছে করছে খেয়ে ফেলতে মেহেরিমার …
বালিবের হাতটা কেমন যেনো মিষ্টি মিষ্টি…
মেহেরিমা খাচ্ছে আর এদিক ওদিক তাকাচ্ছে…
ঘন জঙগলের মাঝে মাত্র তারা দুজন প্রাণি …
চিকেন বিরিয়ানি খাচ্ছে সে জঙগলের মাঝে….
দাদু বলতো চিকেন জাতীয় কিছু খোলা জায়গায় খাওয়া ঠিক না …
তাতে অতৃপ্ত কিছু হানা দিতে পারে…
মেহেরিমার বালিবেকে বেশ ভয় লাগছে…
তাই এই‌কথা বলতে পাচ্ছেনা…
.
.
.
বালিবে মেহেরিমা কে অবাক করে দিয়ে বললো….
_ভয় পেয়োনা বউ ..
আমি আছিতো…
আমি থাকতে কোনো কিছুর সাহস নেই এখানে আসার বা তোমাকে আমাকে বালিবে রক্ত করার…
মেহেরিমা অবাক হয়ে তাকালো বালিবের দিকে …
সে কি করে বুঝতে পারলো মনে মনে কি ভাবছে মেহেরিমা আর বালিবে থাকলে কেউ কেনো আসতে পারবেনা…
.
.
.
_বউ এতো ভেবে লাভ নেই…
তোমার মাথা নষ্ট হয়ে যাবে এসব ভাবলে…
তোমার যেটা নিয়ে ভাবা উচিৎ সেটা নিয়ে ভাবো মানে তোমার স্বামিকে কিভাবে সুখে রাখবে সেটা নিয়ে ভাবো….
মেহেরিমা মাথা নাড়ালো….
বালিবে মেহেরিমাকে খাইয়ে দিয়ে পানি খাওয়ালো…
বালিবে কিছু খেলোনা…
মেহেরিমা সেটা খেয়াল করে বালিবে কে খেতে বলতে গেলো কি ভেবে আর বললোনা …
.
.
.
বালিবে অনেক ক্ষন ধরে মেহেরিমার দিকে তাকিয়ে আছে…
মেহেরিমা কিছু বুঝতে পাচ্ছেনা…
সে হঠাৎ নিজের দিকে তাকিয়ে দেখলো তার শাড়ি ঠিক নেই…
দৌড়ানোর সময় শাড়ি অর্ধেক খুলে গিয়েছিলো আর সামনের আচলটাও ঠিক নেই…
মেহেরিমা বেশ লজ্জা পেলো….
সে নিচে তাকিয়ে আছে…
বালিবে হঠাৎ মেহেরিমার দিকে খুব কাছে আসলো…
মেহেরিমার বেশ লজ্জা লাগছে….
বালিবে মেহেরিমার আচল ঠিক করা সহ শাড়িও ঠিক করে দিলো…
.
.
.
.
মেহেরিমা বালিবের নিঃশ্বাসের শব্দ শুনতে লাগলো…
মেহেরিমার কেমন নিজে নিজেকে নেশা গ্রস্তের মতো এলোমেলো লাগছে…
বালিবে মেহেরিমার চুল ঠিক করে দিলো…
তারপর হাত দিয়ে মেহেরিমার ঠোট মুছে দিলো…
মেহেরিমার ঠোট দুটো নড়ছে…
তার চোখ বন্ধ…
বালিবে মেহেরিমার খুব কাছে এসে যেই মেহেরিমার ঠোটের ছোয়া পেতে চাইলো তখনি মেহেরিমা চোখ অন করলো…
বালিবে একটু দূরে সরে গিয়ে নিজের মাথা চুলকিয়ে ড্রাইভ করতে শুরু করলো….
.
.
.
বালিবে একটু পর পর মেহেরিমার দিকে তাকাচ্ছে…
আর মেহেরিমা এতোক্ষনে ঘুমিয়ে পড়েছে…
চাদেরঁ আলোয় মেহেরিমার চেহেরায় জোসনাঁ ছড়াচ্ছে…
আর তার গোলাপি ঠোট দুটো নড়ছে….
বালিবে ড্রাইভ থামিয়ে মেহেরিমার কাছে গেলো আর তার গায়ের সুভাস নিতে লাগলো…
মেহেরিমা ঘুমন্ত অবস্থায় কিছুক্ষন শিহরীত অবস্থায় নড়ে নড়ে উঠছে….
.
.
.
হঠাৎ বালিবের চোখ দুটো কেমন যেনো হয়ে গেলো….
ভয়ংকর থেকে ভয়ংকর হতে লাগলো সে….. অন্ধকারের জন্য তাকে এমন দেখাচ্ছে নাকি কে জানে….
.
.
.
চলবে…….❤❤❤❤❤

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here