ঝরা ফুলের বাসর পর্ব ১২

#ঝরা_ফুলের_বাসর_০৩
#পার্ট_১২
#Mst_Liza

হৃদ আমার কপালে নিজের কপাল ঠেকিয়ে বলল সত্যি বলছিস ফুল? তুই আমাকে ভালোবাসিস? আমি মাথা ঝাকিয়ে হ্যাঁ জানালে আমাকে জড়িয়ে ধরলো।মেঘ স্যার হৃদের চেম্বারের সামনে দিয়ে যাচ্ছিলো।দরজাটা খোলা পেয়ে আমাদের দুজনকে একসাথে দেখে খুশি হয়ে ভেতরে আসলো আর আমার নাম ধরে ডেকে উঠে বলল যাক তোমাদের মধ্যে সব ঠিক হয়েছে তাহলে।হৃদ কন্ঠ শুনে স্যারকে দেখে অনেক ভয় পেয়ে গেলো।আমাকে আরও শক্ত করে জড়িয়ে ধরে বলল ফুল আমার।ও আমাকে ভালোবাসে।যান এখান থেকে। হৃদের কথা শুনে স্যার ওর চোখের দিকে ভালো করে তাকালো আর আমাকে জিজ্ঞাসা করলো হৃদ কি নেশা করেছে? আমি মাথা ঝাকিয়ে হ্যাঁ অর্থ বোঝালে স্যার বলল সর্বনাশ বাবা হসপিটালের মধ্য এসব একদম এলাউ করে না।জানতে পারলে আজই হৃদকে বের করে দেবে।কথাটা শুনে আমি উঠে দাড়ালাম আর বললাম এখন কি হবে? পেছনের থেকে হৃদ আমার পেট জড়িয়ে ধরে নিজের কোলের উপরে টেনে নিলো।স্যার হালকা কেশে মুখটা অন্যদিকে ঘুরিয়ে নিয়ে বলল তোমরা বাড়িতে চলে যাও।আমি বললাম এই অবস্থায় হৃদকে নিয়ে আমি কিভাবে বাড়িতে যাবো? বাড়ির সকলে হৃদকে এই অবস্থায় দেখলে খুব কস্ট পাবে।স্যার বলল তাহলে আমার বাড়িতে চলে যাও। হৃদের নেশা না কাটা পর্যন্ত ওখানেই থেকো।বাবা আর আমি দুজনই এখন হসপিটালে বাড়িটা এখন ফাঁকা আছে।স্যার হৃদকে ধরে আমার সাথে সকলের চোখ এড়িয়ে চুপিচুপি হসপিটালের সামনে এনে ইজি বাইকে উঠিয়ে বাড়ির চাবিটা দিয়ে দিলো।আর আমি হৃদকে নিয়ে স্যারের বাড়িতে আসলাম।

হৃদের কাটা হাতটায় ব্যান্ডেস করে দিলাম আমি।বিছানার উপরে বসিয়ে ওকে শান্ত হয়ে থাকতে বলে কিচেনে গেলাম লেবুর পানি আনতে।গ্লাসটা হাতে উঠিয়ে ঘুরে দাড়াতেই হৃদের সাথে ধাক্কা খেলাম।আর গ্লাসটা আমার হাত থেকে নিচে পরে গেলো।হৃদকে বললাম তুমি এখানে কেন এসেছো? ও আমার চুলের ভাঁজে হাত ডুবিয়ে মুখটা কাছে এনে বলল তোর কাছে আসবো না? আমি বললাম হ্যাঁ আসবে কিন্তু তোমার অবস্থা তো এখন ঠিক নেই।হৃদ বলল তুই বলেছিস তুই আমার বউ।তাই আমি এখন তোকে আদর করবো।আমার চোখের দিকে তাকিয়ে নিজের ঠোঁটটা আমার ঠোঁটের কাছে নিয়ে আসলো।আমি হৃদকে ধাক্কা দিয়ে কিচেন থেকে বেড়িয়ে আসলাম।হৃদ আমার পেছনে পেছনে আসছে।রুমে এসে দরজাটা ভেতরের থেকে বন্ধ করবো তার আগেই হৃদ দরজাটা দুই হাতে টেনে ধরল।ভেতরে ঢুকে দরজাটা বন্ধ করলো।আমার দিকে আগাতে লাগলো আর আমি পেছাতে লাগলাম। মনে মনে বলছি কিছুতেই এই অবস্থায় হৃদের কাছে আসা যাবে না।এরই মধ্যে হৃদ আমার কাছে এসে আমার ঠোঁট দুটো নিজের দখলে নিয়ে নেয়। আমি দু হাত দিয়ে হৃদের বুকে হাত রেখে ঠেলছি আর হৃদ সেটাতে বিরক্তবোধ করে আমার হাতদুটো শক্ত করে ধরে বিছানার উপরে এনে ফেলে আমার হাতের আঙুলে আঙুল চেপে ঠোঁটে, গালে আর বুকে কিস করে চলেছে।কিছুক্ষণ এমন জোড় করার পর নিজেকে ছাড়াতে না পেরে পরে আমিও আর বাঁধা দিলাম না।হৃদ আমার হাত ছেড়ে দিলে ওকে ঠেলে শুইয়ে দিয়ে আমি ওর বুকে আসলাম।ওর শার্টের বোতামগুলো খুলতে লাগলাম।সেটা দেখে হৃদও আমাকে ঘুরিয়ে পিঠের থেকে চুল সরিয়ে জামার চেইনটা খুলল।আবার ঘুরিয়ে নিয়ে আমার বুকের উপরে এসে পা দিয়ে নিজের পা দুটো চেপে ধরলো।জামাটা টেনে পেট পর্যন্ত আনতেই আমি ওর পিঠে হাত রাখলাম।আর শক্ত করে ওকে নিজের বুকের সাথে চেপে ধরলাম।নিজেকে সমার্পণ করে দিলাম ওর ভালোবাসার কাছে।

দু’ঘন্টা পর। হৃদ ঘুমিয়ে আছে। আমি ঠেলে ওকে আমার উপর থেকে সরিয়ে দিলাম। জামাটা পরে পিঠে হাত পৌঁছিয়ে চেইনটা লাগালাম।হৃদকে ডাকলাম ও উঠলো না।মনে হয় নেশা এখনো কাটে নি।ওর বুকে আর গালে ঠোঁটের পরস ছুঁইয়ে শার্টের বোতামটা লাগিয়ে দিলাম।আয়নার সামনে দাড়িয়ে নিজেকে দেখে মুচকি হাসলাম।তারপর কিচেনে গিয়ে লেবুর পানি এনে হৃদকে ডেকে উঠিয়ে জোড় করে খাওয়ালাম।হৃদ মাথাটা চেপে ধরে আমার দিকে মিটমিট করে তাকালো।স্পষ্ট আমার মুখটা দেখে এক ধাক্কায় দূরে সরিয়ে দিলো।এদিক ওদিক তাকিয়ে বলল আমি কোথায়? আমি হৃদের পাশে এসে বসে ওর হাতটা চেপে ধরে বললাম এটা ডা.মেঘ স্যারের বাড়ি।কেন তোমার মনে নেই স্যারই তো তোমাকে এখানে নিয়ে আসতে বললো।তুমি মদ খেয়ে যা কান্ডটা করছিলে।আবির চৌধুরী ওই অবস্থায় দেখলে তোমায় হসপিটালের থেকে বের করে দিতো।আর বাড়িতে নিলেও সবাই খুব কস্ট পেতো।তাই তো স্যার এখানে আনতে বলেছে।সত্যি হৃদ ডা.মেঘ স্যার খুব ভালো।সঙ্গে সঙ্গে হৃদ আমার গালটা চেপে ধরলো।আমার মুখের সামনে রাগি দৃস্টিতে তাকিয়ে বলল এতো ভালো লাগে তোর ওই মেঘকে যে ওকে নিজের সবকিছু দিয়ে দিয়েছিস? লজ্জা করে না তোর বিয়ের আগে নষ্টামি করে ওর সন্তানের মা হয়ে এখন আবার ওর প্রশংসা করিস? কথাটা বলে আমাকে ধাক্কা দিয়ে দূরে সরিয়ে দেয় হৃদ।আমি এগিয়ে এসে ওর দুই কাঁধ হাত চেপে ধরে ঝাকিয়ে বলি এসব তুমি কি বলছো হৃদ? তোমার কি কিছু মনে নেই? হৃদ আমার চুলের মুঠি টেনে ধরে দাঁত কটমট করে বলে না আমার কিছু মনে নেই।আর মনে করতেও চাই না।তোর মেঘ স্যার যে কতোটা ভালো তা তোর প্রেগনেন্সিই বলে দেয়।তোকে আমি যতোটা না খারাপ ভাবতাম তারচেয়েও বেশি নষ্টা মেয়ে তুই।তোর সাথে কথা বলা তো পরের কথা তোর মুখ দেখতেও এখন আমার ঘৃণা হয়।কথাগুলো বলে আমাকে ধাক্কা দিয়ে চলে গেলো হৃদ।আমি পেছনের থেকে অনেক ডাকলাম ওকে।কিন্তু ও আমার কোনো কথায় শুনলো না।

হসপিটালে আপু নতুন ফোন কিনে মেসেন্জার আইডিটা ওপেন করলো।আমার পাঠানো ভিডিওটার নোটিফিকেশন আসতেই ক্লিক করলে বাইরে থেকে চিৎকার চেচামেচির আওয়াজ শুনতে পেল।আপু ছুটে নিচে গেলো এমন সময় আপুকে ডাকতে আবির চৌধুরী আপুর চেম্বারে আসলো।আপুকে না পেয়ে চলে যাচ্ছিলো এমন সময় ভিডিওটা লোড হয়ে ওপেন হতেই কন্ঠ শুনে দাড়িয়ে পরলো।হৃদের কন্ঠে ওর অপরাধের কথা শুনে এগিয়ে এসে মোবাইল ফোনটা হাতে নিয়ে পুরো ভিডিওটা দেখলো।আর রেগে গেলো।চেম্বার থেকে বেড়িয়ে নিচে গিয়ে দেখতে পেলো মাইক হাতে নিয়ে কিছু স্টুডেন্ট কাগজ দেখে দেখে হৃদের প্রসংশা ও যোগ্যতা পরছে।আর ভোট চাইছে হৃদের জন্য।আপু স্টুডেন্টের সামনে দাড়িয়ে হাসছে আর ওদের বাহবা দিচ্ছে।ওদের হাত থেকে মাইক নিয়ে এবার আপুও কিছু বলতে যাবে আবির চৌধুরী এসে আপুর হাত থেকে মাইকটা টেনে নিলো। আর চিৎকার করে বলল হসপিটালের কর্মরত যে যেখানে আছেন এক্ষুণি এখানে চলে আসুন।ডা.হৃদ আর নার্সের নাম ধরে বলল আপনারা অবশ্যই আসবেন।

চলবে,,,,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here