তবে ভালোবাসো কী পর্ব -০৩

#তবে_ভালোবাসো_কী
#Mehek_Enayya(লেখিকা)

#পর্ব ০৩

সামনে বসা মানুষটিকে দেখে মাথায় আকাশ ভেঙে পরে মাহানুরের। মনের ভিতর কু ডাকছে তার। সবার দিকে একবার চোখ বুলিয়ে নিজেকে যথাসম্ভব শান্ত রাখার চেষ্টা করে। আরহামেরও একই অবস্থা। মাহানুরই যে তার বাবার বন্ধুর ভাস্তি ভাবতেও পারেনি আরহাম। প্রথমে মাহানুরকে চিনতে একটু অসুবিধা হয়েছিল। কিন্তু পরমুহূর্তেই মনে পরে যায় এই মাহানুরই সেই ধাক্কা খাওয়া ঝগড়াটে মেয়েটা। আরহাম মাথা থেকে পা পর্যন্ত আপাদমস্তক পরোক্ষ করে নেয় মাহানুরকে। আরহাম মনে মনে ভাবে, কাল যেমন অভদ্র লাগছিল মেয়েটাকে আজ লাগছে না। শাড়ীতে সব বাঙলি নারীকেই সুন্দর লাগে। তবে এই উজ্জ্বল গাঁয়ের রঙের মেয়েটাকে লাল শাড়ীতে, ভীত চেহারায় অপরূপ লাগছে!

মাহানুর জানো দুই বিল্ডিং এর চিপায় পরে গিয়েছে! না পারছে এখান থেকে উঠে যেতে, না পারছে শান্তি মতো বসে থাকতে! জীবনে প্রথমবার এইরকম জঘন্য ভাবে ফেঁসেছে সে। তার ওপর এই আরহাম নামের লোকটা সেই কখন থেকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে! মানে কী ভাই! কোনো কমনসেন্স নেই তার মধ্যে? অচেনা একটি মেয়ের দিকে কেউ এভাবে তাকিয়ে থাকে। বড়রা দেখলেই বা কী ভাববে! এইরকম হাবিজাবি চিন্তাভাবনা নিয়ে মূর্তি হয়ে বসে আছে মাহানুর। মাহানুরের অস্বস্থি বাড়িয়ে দেওয়ার জন্য তার বড় বাবা বলে,

-আম্মা ও হলো আরহাম। তুমি কাল যাকে দেখেছিলে সে আরহামের বন্ধু ছিল। (হামযা খান)

-ওহ।(মাহানুর)

শান্ত কণ্ঠে বলল মাহানুর। আরহাম মাহানুরের এতো ভদ্র রূপ দেখে ক্ষণে ক্ষণে অবাক হচ্ছে। ঠোঁটে আঙ্গুল ঠেকিয়ে নিজের হাসি লুকানোর চেষ্টা করে। জিয়া মাহানুরকে বলে,

-মা কিছু বলো তোমার বিষয়? কোন ইয়ারে পড়ছো? (জিয়া)

-জি ৪র্থ বর্ষে। (মাহানুর)

-ভীষণ ভালো। তবে আমি একটা জিনিস লক্ষ্য করেছি মাহানুর কিন্তু এখনও ছোটকালের মতোই আছে। ঐরকমই মায়াবী। (জিয়া)

-একদম ঠিক বলেছো জিয়া। তা মাহানুর মা তুমি নাহয় আরহামের সাথে একটু পরিচিত হয়ে এসো। (জাহেদ চৌধুরী)

-আমার পার্সোনালি কিছু বলার নেই আঙ্কেল। (মাহানুর)

-আমার আছে। আপনাকে সম্পূর্ণ ভাবে না জেনে আমি কীভাবে বিয়ে করি!(আরহাম)

আরহামের কথায় মাহানুর সহ বসা সকলেই একটু অবাক হয়। জিয়া চৌধুরী অসহায় দৃষ্টিতে ছেলের দিকে তাকিয়ে আছে। মেহরাব খান বলে,

-হ্যাঁ অবশ্যই। মাহানুর মা তুমি আরহাম বাবাকে আমাদের ছাদে নিয়ে যাও। (মেহরাব)

-জি বাবা। (মাহানুর)

বিরক্তি নিয়ে বসা থেকে উঠে দাঁড়ায় মাহানুর। সে আগে আগে হাঁটতে থাকে পিছনে আরহাম। সিঁড়ি দিয়ে ওপরে উঠার সময় মাহানুর শাড়ীর সাথে পা বেজে পড়তে নিয়েছিল। কোনোরকম নিজেকে সামলে নেয়। সূর্য ডুবে গিয়ে চাঁদের দেখা মিলছে। অন্ধকার আকাশে কয়েকটা তারার আনাগোন। মাহানুর ছাদের কিনারে চেয়ালের সাথে পা ঠেকিয়ে দাঁড়ায়। মাথা থেকে ঘোমটা সরিয়ে ফেলে। আরহাম পাঁচ হাত দূরে দাঁড়িয়ে মাহানুরের কাজ দেখছে।
নিজের আসল রূপে ফিরে এসে তেজি কণ্ঠে মাহানুর বলে,

-দেখুন আপনি হয়তো আমাকে চিনেছেন। কাল আপনার সাথে আমার যা হলো তারপর আপনাকে আমার আর বিয়ে করার কোনো ইচ্ছে নেই। আমার মতে আপনিও হয়তো আমার মতো ঝগড়ুটে মেয়ের সাথে কোনো সম্পর্ক করতে চাইবেন না। তাই এখন নিচে যেয়ে অথবা আপনাদের বাসায় গিয়ে আপনার মা বাবাকে বলবেন মেয়ে ভালো না আপনি বিয়ে করতে রাজি না। বুঝলেন?

বুকে দুই হাত ভাঁজ করে শান্ত ভঙ্গিতে দাঁড়িয়ে আছে আরহাম। তার চাহনি মাহানুরের ওপর নিবদ্ধ। কিছু সময় অতিবাহি করে বলে,

-আর কিছু না বুঝলেও আমি একটা জিনিস বুঝতে পারলাম সেটা হলো আপনি একটু বাঁচাল টাইপ মেয়ে! আর আমি না করবো নাকি হ্যাঁ বলবো ইটস্ মাই চয়েস।

আরহামের কথায় মাথা গরম হয়ে যায় মাহানুরের। সে তেড়ে যায় আরহামের কাছে। দুই হাত দরুত্ব রেখে দাঁড়ায়। দাঁতে দাঁত চেপে বলে,

-এটিটিউড দেখাচ্ছেন আমাকে? একদম ধাক্কা মেরে নিচে ফেলে দেবো। লাশও খুঁজে পাবে না কেউ!

-তাই নাকি। ইন্টারেষ্টিং মেয়ে তো আপনি!

-আমি শুধু ইন্টারেষ্টিং না এক্সপেন্সিভও বুঝতে পেরেছেন?

মুখ বাঁকিয়ে হাসে আরহাম। ধীরে ধীরে এগিয়ে আসে মাহানুরের কাছে। যে দুই হাতের দূরত্ব ছিল সেটা ঘুচিয়ে ফেলে। মাহানুর তার জায়গা থেকে নড়লো না। আরহাম মাহানুরের চোখের দিকে তাকিয়ে বলে,

-আই লাইক এক্সপেন্সিভ থিংস। ডোন্ট বি সো এট্রাক্টিভ ওকে!

মাহানুর পিছিয়ে যায়। রাগী চোখে আরহামের দিকে তাকায়। আরহাম মাহানুরের দৃষ্টি লক্ষ্য করে বাঁকা হাসে।

-আপনি তো দেখছি চরিত্রহীন! একজন মেয়ের সাথে এতো ক্লোস্ড হয়ে অচেনা ছেলে কথা বলে? মেনার্স এর ম ও নেই আপনার মধ্যে। দ্বিতীয়বার আমার সাথে কথা বলতে হলে পাঁচ হাত দূরত্ব থেকে কথা বলবেন নাহলে ভালো হবে না।

-ভয় পেয়ে গেলেন নাকি মাহানুর খান? যে মেয়ে একটা অচেনা ছেলের সাথে গায়ে পরে ঝগড়া করতে পারে সেই মেয়ে কিনা ছেলেদের নিকট সহ্য করতে পারে না। স্ট্রেঞ্জ!

-দুর ছাই! আপনার সাথে কথা বলার ইচ্ছেই নেই আমার। বিয়ে করা তো দূরে থাক!

-আপনার মতো উসশৃঙ্খল মেয়েকে ভালো করতে আমার মতো আরহামেরই প্রয়োজন। বিয়ে আপনার আমার সাথেই হচ্ছে।

-হ্যাঁ আপনার স্বপ্নে!

-স্বপ্নে নয় মাহানুর খান বাস্তবেই। তাই বলবো এইসব রাগ জিদ ছেড়ে বিয়ের প্রস্তুতি নিন মাই উল্ড বি ওয়াইফ।

কথা শেষ করে ছাদ থেকে চলে যায় আরহাম। মাহানুর তখনও অগ্নিমূর্তি হয়ে দাঁড়িয়ে রইলো। একটা ছেলে তার সাথে এটিটিউড দেখিয়ে কথা বলে চলে গেলো! আর সে চুপচাপ শুনলো! ভাবতেই মেজাজ বিগড়ে যায় মাহানুরের। দেখে নেবে এই ছেলেকে সে!

____________________

মাহানুর আর নিচে যায়নি তার রুমেই বসে ছিল। ড্রইংরুমে বড়রা কথা বলছে। সবাই মিলে একটা বড় ডিসিশন নিয়েছে। আরহাম কয়েকদিনের মধ্যে চট্টগ্রাম চলে যাবে। ঢাকায় আসতে আসতে হয়তো মাস কয়েক লাগবে। তাই জিয়া চৌধুরী চাচ্ছিলো এখনই মাহানুর ও আরহামের বিয়েটা সেরে ফেলতে। তাঁদের মাহানুরকে ভীষণ ভালো লেগেছে। ছেলে বউ শুধু ওকেই করবে। আরহামকে জিজ্ঞেস করেছিল বিয়ের বেপারে। তারও আজ বিয়ে করতে কোনো আপত্তি নেই। খান বাড়ির সকলেই রাজি। কিন্তু তারা মাহানুরের অনুমতি না নিয়ে কিছু করবেন না। তাই হাজেরা, হামযা আর মেহরাব মাহানুরের রুমে আসে তার সাথে কথা বলতে।

মাহানুর কানের দুল খুলছিলো বিছানায় বসে। হঠাৎ বাপ চাচাকে দেখে হালকা হাসে। হামযা খান মাহানুরের পাশে বসে পরে। কিছুক্ষন সময় নিয়ে বলে,

-আম্মা কিছু কথা বলতে এসেছিলাম আমরা।(হামযা)

-হ্যাঁ বলো বড় বাবা? (হামযা)

-আগে বল তোর কী বাবা আর বড় বাবার ওপরে বিশ্বাস আছে? (হামযা)

-আমার নিজের ওপরের থেকেও বেশি তোমাদের ওপরে বিশ্বাস আছে। (মাহানুর)

-আমরা একটা ডিসিশন নিয়েছি মা। (মেহরাব)

-উফফ বলো না? (মাহানুর)

-আরহামকে আমাদের ভীষণ মনে ধরেছে। তোর জন্য আরহামের থেকে বেস্ট ছেলে আমরা খুঁজে পাবো না মা। আমরা চাই তুই আরহামকেই বিয়ে কর। (মেহরাব)

নিশ্চুপ হয়ে যায় মাহানুর। এখন সে কী বলবে তার কী বলা উচিত ভেবে পাচ্ছে না। বাবা ও বড় বাবার দিকে তাকিয়ে বড় একটি নিঃশাস ছাড়ে। শান্ত কণ্ঠে বলে,

-ঠিক আছে। তোমরা যা ভালো বুঝো সেটাই করো। (মাহানুর)

-কিন্তু আম্মা আরহাম কয়েকদিনের মধ্যে চট্টগ্রাম চলে যাবে। এখন আমরা সবাই চাচ্ছিলাম আজই তোদের বিয়েটা হয়ে যাক। পরে অনুষ্ঠান করে তুলে নিয়ে যাবে। (হামযা)

মাহানুরের এখন মন চাইলো চিৎকার করে কান্না করতে। এই বিয়ে বিয়ে তার জীবন থেকে সরছে না কেনো!

-আরহাম সে কী রাজি? (মাহানুর)

-হ্যাঁ ওদের ফ্যামিলির সবাই রাজি। শুধু তোর উত্তরের আশায় আছি আমরা। (মেহরাব)

-ঠিক আছে আমিও রাজি। (মাহানুর)

হামযা খুশিতে আত্মহারা হয়ে মাহানুরের কপালে চুমু দেয়। হাজেরাও দু’হাত দিয়ে জড়িয়ে ধরে মাহানুরকে। মাহানুর একদম চুপ।

-আমি জানতাম আমার আম্মা রাজি হইবো। (হামযা)

-হ্যাঁ। বড় ভাই আপনি তাহলে সব ব্যবস্থা করুন। কাজীকে নিয়ে আসুন। (মেহরাব)

-কাজীকে আনতে গেছে করিম। (হাজেরা)

-তাহলে তো হলোই। (মেহরাব)

হাজেরা আর হামযা আর কিছুক্ষন কথা বলে নিচে চলে যায়। মেহরাব মলিন চোখে তাকায় মাহানুরের দিকে। পাশে বসে জড়িয়ে ধরে। মাহানুরও ইমোশনাল হয়ে যায়। মেহরাব মেয়ের মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে দিতে বলে,

-এতো জলদি বড় হয়ে যাবি ভাবতে পারিনি মা! তোর মা মারা যাওয়ার পর আমি অনেক বড় টেনশনে পরে গিয়েছিলাম। একা বাবা কীভাবে নিজের মেয়েকে মানুষ করবো আমি! কিন্তু হসপিটাল থেকে বাসায় আসার পর আমি আর আমার মেয়েকে পেতামই না। বাড়ির সকলে চিলিবিলি করে নিয়ে যেত তোকে! সবার আদরে আদরে বড় হয়ে গেলি তুই। এখন বিয়েও হয়ে যাবে! সব কিছুই জানো আমার কাছে স্বপ্ন!

-পর করে দিচ্ছ এখনই!

-না মা। এতো বছরে যদি এই বাবার ধারা কোনো ভুল হয়ে থাকে মাফ করে দিস মা।

-এইসব কী বলছো বাবা? ভুল সন্তান করে বাবা মা না। বরং আমার চোখে তুমি দুনিয়ার বেস্ট বাবা। এখন তুমি কী চাও আমি ইমোশনাল হয়ে কান্না করি?

-একদমই না। খুশি হয়ে মুখে হাসি ফুটিয়ে বিয়ে করবে আমার মায়।

___________________🖤

পুনরায় ড্রইংরুমে আনা হয় মাহানুরকে। আরহামের পাশে বসানো হয় তাকে। কাজী সব নিয়ম পালন করে মাহানুর ও আরহামের বিয়ে করিয়ে দেয়। কবুল বলার সময় অনেকক্ষন সময় নিয়েছিল মাহানুর। কিন্তু আরহাম একটুও সময় ব্যয় করেনি। বিয়ে সম্পূর্ণ হওয়ার সাথে সাথেই সবাই মিষ্টি মুখ করতে ব্যস্ত হয়ে পরে। তখন অসহায়ের মতো সোফায় বসেছিল মাহানুর। মাহানুরের ভাইয়েরা ইচ্ছে করে মাহানুরের কানের সামনে এসে চিল্লাপাল্লা করছে। মাহানুর আজ আর রাগ করলো না ভাইদের ওপর। আরহাম বসে বসে ফোনে কিছু একটা করছে। অতঃপর সবার অনেক রিকোয়েস্ট রাতে খাবার খেয়ে বাসায় চলে যায় আরহাম ও তার ফ্যামিলি। হামযা খান ও বাড়ির সকলেই আরহামকে বলেছিল আজ রাত থেকে যেতে। কিন্তু আরহাম মাহানুরের মুখের অবস্থা দেখে আর থাকলো না। মেয়েটা আজ অনেক জটকা খেয়েছে আর জ্বালিয়ে লাভ নেই! তাছাড়াও ফাঙ্কশন করে বিয়ে করার আগে মাহানুরের সাথে থাকবে না আরহাম।

রাত দুইটা। বিছানায় শুয়ে ফোন টিপছে মাহানুর। নিজের দুঃখের কথা বেস্টফ্রেন্ডদের সাথে শেয়ার করছে। ইয়াসিন আর সিয়াম তো শুনে অবাক! তন্দ্রা ভীষণ খুশি হয়েছে। বারে বারেই সে বলে যাচ্ছে,

-দোস্ত তুই জিতেছিস। ঐ ছেলেটা যা ছিল! একদম হ*টি বয়। (তন্দ্রা)

-তোর মুন্ডুর বয়!(মাহানুর)

-আচ্ছা মাহানুর আজ তো তোদের বাসররাত।জিজু কী আছে নি পাশে? (সিয়াম)

– না রে ভাই ঐ গন্ডার তার বাসায় চলে গিয়েছে। (মাহানুর)

-বেচারা আমাদের দুলাভাই! ফাস্ট নাইটেও বউর থেকে দূরে থাকছে। (তন্দ্রা)

-পাশে থাকলে বুঝি তাকে ফাস্ট নাইট পালন করতে দিতাম! লাত্থি দিয়ে জালানা দিয়ে ফেলে দিতাম। (মাহানুর)

-তুইও না দোস্ত! রোমান্টিক আর হইলি না। (তন্দ্রা)

-তোর রোমান্টিক নিয়ে তুই থাক বা*ল। (তন্দ্রা)

প্রতিদিনের মতো আজ সকালেও ভার্সিটির জন্য একদম তৈরি হয়ে নিচে নামে মাহানুর। ডায়নিং টেবিলে বসে নিজ মতো খাবার খেতে থাকে। হাজেরা এটা সেটা এগিয়ে দিচ্ছে মাহানুরকে। মাহানুর খাচ্ছে আর বক বক করছে। হঠাৎই মাহানুরের ছোট চাচার ছেলে তামিম এসে মাহানুরের কানে কানে বলে,

-আপু একটা নিউস।

-কী?

-তোমায় জামাই আরহাম ভাইয়া এসেছে আমাদের বাসায়।

তামিমের কথা শুনে নাকে মুখে উঠে যায় মাহানুরের। হাজেরা দ্রুত পানির গ্লাস এগিয়ে দেয়। মাহানুর সবটুকু পানি শেষ করে তামিমকে জিজ্ঞেস করে,

-কোথায় সে?

-উইযে দেখো ড্রইংরুমের সোফায় বসে বাবা ও বড় বাবার সাথে কথা বলছে।

>>>চলবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here