তুমি আমার প্রেম পর্ব ১৩

#তুমি_প্রেম_আমার❤️
#part:13💘
#Writer: #TanjiL_Mim❤️
.
.
🍁
“সূর্য্যি মামা তার দেওয়া আলোতে পুরো রুম ভরে দিয়েছে’!!হালকা তাপমাত্রায় বাতাস বইছে চারদিকে’!!বাতাসে জানালায় থাকা পর্দাগুলো উড়ছে’!!সব মিলিয়ে মুহূর্তটা শীতলতায় ঘেরা’!!আর এই শীতলতায় ঘেরা পরিবেশে চা হাতে বিছানায় বসে আছি আমি’!!আর আপু আমার সামনে’!!সকাল সকাল আপুর হাতের চা সত্যি খুব ভালো লাগে’!!মুহূর্তেই কিছু একটা ভেবে মন খারাপ লাগলো আমার’!!প্রতিদিন আপু চা টা কে যে খুব মিস করব আমি’!!চায়ের কাপ টা টেবিলে রেখে আপুকে জড়িয়ে ধরলাম আমি’!!

“হর্ঠাৎ আপুকে জড়িয়ে ধরাতে আপু অবাক হয়ে বললোঃ

——-“কি হলো ছুটকি??

——–“আপু তুমি আমায় ছেড়ে চলে গেলে আমি থাকবো কিভাবে’!!??

“আমার কথা শুনে আপুও মন খারাপ করে বললোঃ

——-”ধুর পাগলী কেন থাকতে পারবি না সাথে থাকলে তো শুধু জগড়া হয়’!” দূরে গেলে তো ভালোই থাকবি’!!

——–“আপু তুমি খুব পঁচা যাও তোমার সাথে কোনো কথা নেই আমি শুধু তোমার সাথে ঝগড়া করি’!!এই বলে আপুকে ছেড়ে দিলাম’!!

“আপু মুচকি হেঁসে আমাকে জড়িয়ে ধরে বললঃ

——-“ধুর পাগলী আমি তো মজা করছিলাম’!!আচ্ছা শোন তুই যদি একান্তই থাকতে না পারিস তাহলে আমার দেবর আরিয়ান আছে না ওর সাথে তোর বিয়ে দিয়ে দিবো তারপর দুই বোন মিলে একসাথে থাকব কেমন লাগল আইডিয়াটা’!!

——-“খুব বাজে’!!ভাঙা টেপ রেকর্ডারকে বিয়ে করবো আমি তোমার মাথা খারাপ সারাদিন শুধু ঝগড়া হবে আমাদের’!!তবে একদিক থেকে ভালোই হতো তুমি আমি একসাথে থাকতাম’!!কিন্তু তারপরও আমি রাজি নই’!!”

“আমার কথা শুনে আপু হাসলো’!!কিন্তু হাসার কারনটা বুঝলাম না’!!না বুঝে আমিও আপুর সাথে তাল মিলিয়ে হেঁসে দিলাম’!!

“এমন সময় রুমে ঢুকলো আম্মু’!!আমাদের হাসতে দেখে বললোঃ

——–“কি হলো দুই বোন মিলে হাসছিস কেন??

——-“এমনি হাসছি”!!

——–“আচ্ছা শোন আজকে পুরো বাড়ি পরিষ্কার করব তাই তাড়াতাড়ি তোর খাওয়া শেষ কর তারপর আমায় সাথে কাজ শুরু কর’!!

“আম্মুর কথা শুনে মেঘলা বললোঃ

——-“মা আমি কি করব’!!

——-“তুই কিছু করবি না আজকে সব কাজ মীম করবে’!

“আম্মুর কথা শুনে অবাক হলাম আমি’!!কি বলে এওতো বড় বাড়ি নাকি আমি পরিষ্কার করব’!!

—–“😳😳 চোখ বড় বড় করে তাকালাম আম্মুর দিকে’!!!

“আমাকে এভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে আম্মু বললঃ

——-“ওভাবে তাকিয়ে আছিস কেন কথা কি কানে যায় নি তাড়াতাড়ি কর’!!দিনে দিনে শুধু কাম-চোর হইতাছোস’!!কিন্তু আজকে আর কোনো বাহানা চলবে না’!!

——-“আম্মু আজ আমার ভার্সিটি আছে’!!

——-হো আজকে শুক্রবার তোর ভার্সিটি আছে’!!!

“আম্মুর কথা শুনে ঠোঁটে কামড় দিলাম আমি’!!তারপর একটা দাঁত কেলানি দিয়ে বললামঃ

——“ওটাতো মজা করছিলাম এই বলে এক প্রকার দৌড়ে ওয়াশরুমে চলে গেলাম’!!

“আমাকে এভাবে দৌড়াতে দেখে আম্মু বললোঃ

——“হুম তুমি যে কতো মজা করতে ছিলে ভালোভাবে জানা আছে আমার’!!!

__________________________________________


“কাঁথা গায়ে ঘুমিয়ে আছে আরিয়ান’!!কাল রাতে মীমকে পুরো রাস্তা কোলে করে হাঁটতে হাঁটতে তেমন কষ্ট না হলেও অনেকটাই ক্লান্ত ছিল সে’!!তাই বাড়ি ফিরেই ঘুম দেয় সে’!!বিছানার পাশে থাকা জানালাটা খুলে পর্দা সরানোর ফলে আরিয়ানের মুখে রোদ এসে পরে’!!সাথে সাথেই নড়ে চড়ে উঠল আরিয়ান’!!আরিয়ান কিছুটা বিরক্ত মাখা মুখ নিয়ে বললোঃ

——“উম আম্মু পর্দা সরিও না’!!

“আরিয়ানের আম্মু মুচকি হেঁসে বললেনঃ

———“আর কত ঘুমাবি বাবা,এখন উঠ তোকে একটা কাজ করতে হবে’!!

“আরিয়ান চোখ বন্ধ করেই বললোঃ

——“কি কাজ আম্মু আর ভাইয়াকে বলো না’!!

——-“তোর ভাইয়াকেই বললাম তবে বিয়ের আগে শশুড় বাড়ি যাওয়াটা কি ভালো দেখায়’!!

“আরিয়ান তার চোখ খুলে অবাক হয়ে বললোঃ

——“মানে

——“মানে তোকে একটু মেঘলাদের বাড়িতে যেতে হবে’!!

——-“কেন???

——–“বিয়ের কার্ড দেখাতে ওনাদের পছন্দ হয়েছে কিনা’!!

“আরিয়ান কিছুক্ষন ভেবে বললোঃ

——-“ঠিক আছে তুমি যাও আমি ফ্রেশ হয়ে আসছি??

“আরিয়ান আম্মু খুশি হয়ে বললোঃ

——“ঠিক আছে তাড়াতাড়ি আসিস কিন্তু সবাইকে দাওয়াত দিতে হবে তো’!!সবার আগে ওনাদের দেখিয়ে আনবি’!!

——-“হুম বুঝতে পারছি’!!আর ভাইয়া কথায়……

——-“আকাশ তোর বাবার সাথে অফিস গেছে…..

——-ওহ…….

——হুম তারপর

“আরিয়ানের আম্মু চলে গেলেন’!!আরিয়ান বিছানা থেকে উঠে বসল তারপর চলে গেল ওয়াশরুমে তারপর ফ্রেশ হয়ে কিছু খেয়ে বিয়ের কার্ডটা নিয়ে বসে পরল গাড়িতে তারপর গাড়ি চালাতে শুরু করল আপন গতিতে’!!!তারপর ফোনটা হাতে নিয়ে ফোন করল আরুশকে!!……….
কিন্তু আরুশ ফোন তুললো না’!!!তাই আর কিছু না ভেবে সে একাই চললো…………

__________________________________________


“মায়ের আদেশে বাজার করতে এসেছে আরুশ’!!ফোনটা আনতে ভুলে গেছে’!!সকাল সকাল ঘুম ভেঙে বাজার করতে আসাটা সত্যি অদ্ভুত লাগছে তার কাছে’!!জীবনে প্রথমবার হয়তো বাজার করতে এসেছে আরুশ’!!!এক প্রকার জোর করেই এসেছে সে’!!হর্ঠাৎই সামনে আম্মুর বলা টমেটো দেখতে পেল আরুশ’!!সাথে সেদিকেই পা বাড়ালো আরুশ’!!

“টমেটোর দোকানদারকে বললোঃ

——-“টমেটো কত???

——-“৩০টাকা’!!

——“দিকে আছে এক কিলো দিন…….

“এমন সময় রিতু এসে পাশে দাঁড়ালো’!!
আরুশকে টমেটো কিনতে দেখে হাসলো রিতু’!!

“এদিকে রিতুর হাসার কারন বুঝতে পারলো না আরুশ’!অবাক হয়ে বললো সেঃ

——-“হাসছো কেন “পঁচা পান্তা ভাত’!!

——-“হাসবো না জীবনে কোনোদিন টমেটো কিনেছেন’!!

——–“মানে’

——“ওগুলো পঁচা চোখে দেখেন না’!!

——-“কি তুমি আমার চেয়ে বেশি জানো কোনটা ভালো কোনটা পঁচা আমাকে চিনাতে এসেছো (একটু ভাব নিয়ে)

——-“হুম তা তো দেখতেই পাচ্ছি’!!!তা ফাটা ডিসপ্লে জীবনে কোনোদিন বাজার করতে এসেছেন'”!!

“এই রে এখন যদি পঁচা পান্তা ভাতকে সত্যি কথা বলে দেই তাহলে তো নিশ্চিয়ই পঁচাবে সত্যি কথা বলা যাবে নাই’!!আমি জানি কালকের জন্যই ও এখন মিথ্যে কথা বলছে যে টমেটো পঁচা’!!কিন্তু আমি কি বোকা নি হু”!

“আরুশ একটা এটিটিউড নিয়ে বললঃ

——“আসছি আরো কতো বার’!!!

——-“ওহ ডাহা মিছা কথা’!!!

——“তুমি আমাকে নিয়ে সন্দেহ করছো’!!

——-“সন্দেহ করছি না হাসা কতা বলতে আছি’!!

“এই দুজনের মধ্যে কথা কাটা কাটি হয়ে ঝগড়া লেগে যায়’!!হর্ঠাৎ রিতু একটা টমেটো নিয়ে মারলো আরুশের মুখে’!!সাথে সাথে আরুশ বুঝতে পেরেছে রিতু সত্যি কথাই বলেছে টমেটো তো সত্যি পঁচা কিন্তু এই মুহুর্তে তা বললে মান সম্মান সব ফালুদা হয়ে যাবে’!!

“তাই আরুশ একটা রাগী লুক নিয়ে বললোঃ

——“তুমি গায়ে টমেটো মারলে’!!!

“ওদিকে রিতু হাসতে হাসতে বললোঃ

——-ওগুলো পঁচা টমেটো “ফাটা ডিসপ্লে”!!!

তারপর আরুশও একটা টমেটো নিয়ে মারলো রিতুর দিকে’!!কিন্তু রিতু সরে যার ফলে পড়ে একটা টাকলুর মাথা উপর’!!

“আরুশের এমন কান্ডে রিতু আরো উচ্চ স্বরে হেঁসে দেয়’!!

“ওদিকে টাকলু এদিকে ওদিক তাকিয়ে কিছু দেখতে না পেয়ে আবার তার কাজে মন দেয়’!আরুশ আবার একটা পঁচা টমেটো নিয়ে মারলো রিতুর দিকে’!এইবার গিয়ে পরল রিতু গালে’!”!

“রিতু গালে হাত দিয়ে বললঃ

——-“ইউ ফাটা ডিসপ্লে আপনি আমার গালে পঁচা টমেটো মারলেন দারান এই বলে রিতুও আবার একটা টমেটো নিয়ে মারতে লাগল’!!এই বার পরল আরুশের সাদা রঙের শার্টে’!!পুরো শার্ট লাল হয়ে গেছে’!!আরুশ এইবার রেগে গিয়ে আবার মারলো রিতু দিকে টমেটো’!!এই নিয়ে একে অপরের মধ্যে শুধু হলো টমেটো নিয়ে মারামারি’!!!

এদিকে দোকানদার দু’জনের মারামারি দেখে আগেই দৌড়’!!একি তো পঁচা টমেটো বিক্রি করতে নিয়েছে তারওপর তার টমেটো নিয়ে মারামারি’!!তাই সে কোনো জামেলা শুধু হওয়ার আগেই দৌড়’!!এদিকে “পঁচা পান্তা ভাত” আর “ফাটা ডিসপ্লে” টমেটো নিয়ে উড়াধুরা মারামারি’!!!

__________________________________________


“Dil pa pat har rakha mukpa Makeup karli a mara saia jisa mana aj backup karli a suba sabara utka mana aisab karli a…..ফুল সাইড দিয়ে মিউজিক সিস্টেম বাজিয়ে উড়াধুরা নাচতে নাচতে আর গাইতে গাইতে ঘর পরিষ্কার করছি আমি’!!ঘর পরিষ্কার করা প্রায় শেষ এখন মোছা বাকি’!!পুরো এক বালতি পানি পুরো রুমে ডেলে দিয়েছি আমি’!!তারপর আর কি মোছামুছি শুরু’!!!আর সাথে নাচ আর গান’!!কিন্তু কথা হলো এত পানি ঢেলেছি যে এখন হাঁটতে সমস্যা হচ্ছে’!!!
.
.
.
.
.
“এদিকে কলিংবেল বাজাতেই দরজা খুললো মেঘলা’!!সামনে আরিয়ানকে দেখে মুচকি হাসলো সে’!!তারপর আরিয়ানকে সোফায় বসতে বললো মেঘলা’!!

-“এমন সময় রান্না ঘর থেকে আম্মাজানও বেরিয়ে আসলেন’!!

“আম্মাজানকে দেখেই আরিয়ান সালাম দিয়ে বললোঃ

——-“আম্মু পাঠালো বিয়ের কার্ডটা দিতে’!!

“আম্মুও মুচকি হেঁসে কার্ডটা নিয়ে বললোঃ

—–“বসো না খেয়ে যাবে না কিন্তু’!!

“আরিয়ান প্রথমে বারন করলেও এক প্রকার জোর রেখে দিলেন আম্মু’!!আরিয়ানও বাধ্য হয়ে বসে পরল সোফায়’!!!

“মেঘলাও গেল রান্না ঘরে খাবার তৈরি করতে’!!আরিয়ান চুপটি করে সোফায় বসে রইল’!!হর্ঠাৎই খেয়াল করল একটা রুমে মিউজিক বাজছে’!!আরিয়ান কিছু না ভেবেই সেদিনে পা বারায়’!!!হর্ঠাৎ আরিয়ান চেঁচানোর আওয়াজ পেলা সাথে দ্রুত গতিতে গিয়ে দরজা খুলে হা হয়ে গেল’!!কারন মীম নিচে বসে ফ্যাল ফ্যাল করে কাঁদছে’!!
.
.
.
.
ও মা গো আমার কোমড় গেল রে’!!শালা পানি তোগো জন্য পড়ে গেলাম আমি’!!তোরা খুব পঁচা তোদের তো পুলিশে দিবো আমি’!!

“কিছুক্ষণ আগে পানিতে পা পিছলে পড়ে গেলাম আমি’!!পা টা মনে হয় ভেঙেই গেছে রে’!!হর্ঠাৎ কারো হাসির আওয়াজ শুনে সামনে তাকালাম আমি’!সামনের ব্যক্তিকে দেখে হা হয়ে তাকিয়ে আছি অটোমেটিক মুখ থেকে বেরিয়ে এলোঃ

——“ভাঙা টেপ রেকর্ডার আপনি”!!হর্ঠাৎই খেয়াল করলাম উনি এদিকেই আসছে ও নো’!!!

“এক চিৎকার দিয়ে বললামঃ

——“না……”ভাঙা টেপ রেকর্ডার” আমার ভাঙা কোমড় আরো ভেঙে যাবে’!!

“কিন্তু কে শোনে কার কথা আরিয়ান যেই না আসতে যাবে সাথে সাথে পা পিছলে পরলো আমার উপর’!!!

——“ওহ নো আমার ভাঙা কোমড় আরো ভেঙে গেল রে…….

“এই মুহুর্তে আমি নিচে আর আরিয়ান আমার উপরে’!!

“আরিয়ান একটা রাগী লুক নিয়ে বললোঃ

——–“ঝাঁঝ বতী লবঙ্গ এসব কি করলে পুরো রুমে পানি ঢেলে রেখেছো কেন’!!এই বলে যেই না উঠতে যাবে আবারও হাত পিছলে পরলো আবার’!!

“আর এই আমি অসহায় দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছি তার দিকে যার অর্থ আমার অবস্থা শেষ “ভাঙা টেপ রেকর্ডার”!!

“কিন্তু কথা হলো এখন কি হবে’!!আমরা উঠবে কিভাবে……..!!

__________________________________________


এদিকে টমেটো নিয়ে মারামারি করে অনেক ক্লান্ত হয়ে বসে পরল আরুশ আর রিতু’ পাশাপাশি”!!!

“এদের অবস্থা পুরোই খারাপ’!!দু’জনের শরীর দিয়েই পঁচা টমেটোর গন্ধ বেরোচ্ছে'”!!

রিতু ক্লান্ত মাখা মুখ নিয়ে বললোঃ

——-আপনার জন্য আমার পুরো শরীর দিয়ে বাজে গন্ধ আসছে”!!!

——-“আর আমার তো সুন্দর গন্ধ আসছে তাই না’!!

“রিতুর হাতে ছিলো আর একটা টমেটো রিতু একটু হেঁসে আরুশের মুখে দিয়েই হাসতে লাগল’!!

“এদিকে আরুশ বা কম যায় কিসে সেও মেখে দিয়ে হাসতে লাগল’!!

“কথা হলো কেউ এই বার রাগ না করেই দু’জনেই একসাথে হেঁসে দিল’!!😂😂
!
!
!
!
#চলবে……………

❤️[ভুল-ত্রুটি ক্ষমার সাপেক্ষ বাকীপর্বগুলো লেখা হলে দেব]

#TanjiL_Mim❤️

3 COMMENTS

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here