তুমি নামক অক্সিজেন পর্ব -১৩

#তুমি_নামক_অক্সিজেন
#পর্ব_১৩
Tahrim Muntahana

হৃদিআপু তোমাদের বাসায় যাচ্ছি তুমি তাড়াতাড়ি এসো। তোমার ভালোবাসার প্রমাণ দিতে।

ম্যাসেজটার দিকে কতক্ষন তাকিয়ে হৃদিতাও বেরিয়ে পড়লো। পথি মধ্যে দোকানে গিয়ে একটি গিফ্ট একটি সরি কার্ড কয়েকটা সরি লাভসেইড বেলুন নিয়ে নিলো। বাসায় কেউ নেই। পরশ দরজা খুলে ভেতরে ঢুকলো কোনো দিক না তাকিয়েই উপরের ঘরের দিকে পা বাড়ালো। কেউ কিছু বলছে না সবাই শুধু ওকে অনুসরণ করছে। পরশ হৃদিতার ঘরে ঢুকলো।

এখানে কি দেখাতে আনলি পরশ -সোহা

কিছু না বলে হৃদিতার স্টাডি রুমে ঢুকে গেল। পুরস্কার গুলো দেখে তো আর সবার মুখে হাত চলে গেছে সিয়া আর হিয়ার ও। ওরা চোখ বড় বড় করে পুরস্কার গুলো দেখছে। তার পর আলমারির পেছন থেকে একটা সুইচে চাপ দিলো সাথে সাথে দেয়ালের কিছু অংশ দরজার মতো করে খুলে গেল। রাইসা রাহি রোহানি আধির সাহিল পরশ নাশিন রিয়া বাদে সবাই অবাক হয়ে গেছে হৃদান ও। পরশ ঢুকার সাথে সাথে সবাই ঢুকে গেল। ভেতরে অন্ধকার নাশিন গিয়ে বাতিটা জ্বালিয়ে দিলো। যা দেখলো তাতে সবার চক্ষু চড়কগাছ। যারা এই বিষয়ে জানতো তারা বাদে সবার চোখ থেকেই পানি পড়ছে হিয়া সিয়া বাদে।

ঘরটার দেয়ালের তিন পাশে শুধু হৃদানের ছবি। জগিং করছে তার ছবি, সদ্য গোসল করে তোয়ালে পড়ে আছে ছবি, ঘুমিয়ে আছে সেই ছবি, কপালে হাত দিয়ে চোখ বন্ধ করে আছে সেই ছবি, খাচ্ছে, মিটিং রুমে মিটিং করছে তার ছবি, অনেক অনেক জায়গায় গিয়েছে সেখানের প্রত্যেক স্টেপের ছবি। টপ বিজনেস মেন হিসেবে যতগুলো পুরস্কার পেয়েছে তার ছবি। আরেক পাশে শুধু হৃদান আর হৃদিতার ছোট বেলার ছবি। পুতুল পুতুল খেলছে একসাথে সেই ছবি। হৃদানের কোলো হৃদিতা বসে আছে সেই ছবি। হৃদান হৃদিতাকে খাইয়ে দিচ্ছে সেই ছবি। আরো বিভিন্ন ছবি আছে। এসব দেখে হৃদানের চোখ দিয়ে টপ টপ করে পানি পড়ছে।আরেকপাশে ছোট একটা আলমারি। নাশিন গিয়ে আলমারি খুলল সেখানে লাল টুকটুকে একটা শাড়ি লাল শেরওয়ানী ছোটদের কয়েকটা জামা তার পাশেই তিনটা ডাইরি তারপাশে কয়েকটা ছবি।
পিয়ানি ছবি গুলো হাতে নিয়ে চমকে গেলো।

এসব কি -পিয়ানি

দেখি দেখি -অরনি

এ তো লাল শাড়ি পড়ে একটা মেয়ে তার পাশে হৃদান তুই -সাগর

এটা আমাদের বিয়ের ছবি -হৃদান

কিহহহহ -সোহান

হ্যাঁ বিয়ের ছবি। তো হৃদভাইয়া হৃদির মোহের প্রমাণ পেলেন -রাইসা

হৃদান কোনো কথা বলছে না ওর মুখ দিয়ে কথায় বের হচ্ছে না কি বলবে। একদিক দিয়ে যেমন একঝাঁক খুশি অন্যদিকে ভুল বুঝার জন্য বুকে চিনচিনে ব্যাথা করছে। পরশ আবার বলতে শুরু করলো

এইসব গুলো ডাইরিতে কি আছে জানিস। হৃদপরীর হৃদরাজের কথা লিখা আছে। হৃদিপাখি যখন ক্লাস থ্রি তে পড়ে তখন হৃদান এসএসসি এক্সাম দিয়েছে। হৃদান যখন নিজের ক্যারিয়ারের জন্য দেশ থেকে চলে গেল আমার কলিজাটা মানতে পারেনি। তখন ওর ছোট্ট হৃদয়ে অনেক বড় একটা আঘাত লাগে। যা ওকে একদম নিশ্চুপ করিয়ে দেই। হৃদান চলে যাবার পর হৃদিপাখি হাসতো না খাবার খেত না শুধু তোর শেরওয়ানিটা নিয়ে বসে থাকতো কেন জানিস মামুনি বলে ছিলো একদিন এটা তোর স্মৃতি হৃদিপাখি যেন নিজের কাছে রেখে দেই। তখন হৃদিপাখি কি বুঝেছিলো জানিনা কিন্তু এই শেরওয়ানিটা সবসময় আকড়ে ধরে রাখতো। তুই তো জানিস হৃদ ও ছোট্ট থাকলেও সবসময় বড় বড় ভাব রেখে চলতো। একদিন বাবাই আর মামুনি কথা কাটাকাটি করছিলো

ফ্লাশবেক

তোমার জেদের কারণে আমার মেয়েটা কেমন হয়ে গেছে দেখেছ তুমি, না জানি আমার ছেলেটার কি অবস্থা

রিদি তুমি জেদ বলছো কেন আমার ছেলের ভালোটা আমাকে দেখতে হবে না

কি ভালোটা হলো শুনি আমার ছেলেটাকে আমার থেকে দূরে করে দিলে আর ওই পিচ্চি মেয়েটাকেও কষ্ট দিচ্ছো

আমার বুঝি কষ্ট হয়না। মেয়েটা তো আমারও প্রাণ কিন্তু ভালোর জন্য করতে হলো

হাসিখুশি মেয়েটাযে কেমন হয়ে গেল দেখছ

কিছুই হবে না দেখবে কয়দিন পর ও সব ভুলে যাবে হৃদানকেউ মনে থাকবে না। তখন সব স্বাভাবিক হয়ে যাবে

আল্লাহ ভালো জানে

বর্তমান
সেদিন এই ভুলে যাওয়ার কথাটা মনে করেই হৃদিপাখি ছোটবেলার সব কথা লিখে রেখেছে যাতে হৃদ কে ভুলে না যায়। যখন ও ক্লাস ভাইভে পড়ে সেদিন থেকে ও প্রত্যেকদিনে কথা ডাইরিতে লিখে রাখে সাথে হৃদানের উপর নানা অভিযোগ। কাউকে জানতে দেইনি একটু ও শুধু রাইসা রা জানতো -পরশ

তাহলে তুমি জানলে কেমনে ভাইয়া -আনহা

একদিন আমি হৃদিরানীকে ডাকতে এসেছিলাম। সরাসরি স্টাড়ি রুমে গিয়ে দেখি হৃদরানী এই রুমে ডুকছে তারপরই আমি ভাইয়া কে বলে হৃদিরানীর থেকে লুকিয়ে এসেছিলাম। এসেই দেখি এসব -নাশিন

হৃদান একটা ডাইরি নিয়ে পড়া শুরু করে

‘আজ না আমার হৃদরাজ আমাকে ছেড়ে ওই অনেকককক দূরে চলে গেছে। আর আমার সাথে খেলবে না। আমাকে খাইয়ে দিবে না আমাকে চকলেট এনে দিবে না। কেউ বকলে তাকে উল্টো বকে দিবে না। আমার খুব কান্না পাচ্ছে। ভালো লাগছে না কিছু।
বাবাই বলছিলো আমি নাকি আমার হৃদরাজকে ভুলে যাবো। আচ্ছা তাই কি কখনো হয়। হৃদপরী কি তার হৃদরাজকে ভুলে যেতে পারে। তাই তো ডাইরিতে হৃদরাজের কথা লিখে রেখেছি। হৃদরাজ না খুব পঁচা।
কাল আমাদের নাকি বিয়ে হয়েছে। আমি লাল শাড়ি পড়েছিলাম আর হৃদরাজ লাল শেরওয়ানি নাকি বলে ওইটা পড়েছিলে তখন না হৃদরাজ কে রাজপূত্রের মতো দেখতে লাগছিলো।

‘এখন আমি ক্লাস ফাইভে পড়ি। আমি সবসময় প্রথম হয়। সবাই বলে আমার বয়স কম হলেও ম্যাচিওরিটি আছে। এখনো আমার হৃদরাজকে খুববব মনে পড়ে। কেন চলে গেল হৃদরাজ সে কি জানে না তাকে ছাড়া আমার কষ্ট হয়’

আরো অনেক কিছু লিখা আছে ওইরকম বিভিন্ন ছোটবেলার কথা।

‘আচ্ছা আমি তো হৃদরাজ কে ভালোবাসি কিন্তু হৃদরাজ কি আমায় ভালোবাসে। নাকি ওখানে গিয়ে তার হৃদপরীকে ভুলে গেছে। ভুলে গেছে হয়তো। কিন্তু আমার হৃদরাজ না খুব ভালো,কোনো মেয়ের আশেপাশেও থাকে না। আমি যখন ক্লাস নাইন এ পড়ি তখন একদিন মামির বাড়িতে গিয়ে দেখি পিয়াস ভাইয়ার সাথে হৃদরাজের ছবি। তারপর থেকেই পিয়াস ভাইয়ার সাথে যোগাযোগ করে হৃদরাজের সব খবর রাখতাম। হৃদরাজ জানতেই পারে নি। কিন্তু সে তো আমার খুঁজ রাখেনা’

হৃদান পিয়াসের দিকে তাকালো। পিয়াস অপরাধির মতো মাথা নিচু করে বলতে শুরু করলো

আমার কিছু করার ছিলো না হৃদ। হৃদি আমাকে প্রমিজ করিয়েছিলো যাতে এই কথাটি কেউ না জানতে পারে। অনেক কান্না করে অনুরোধ করেছিলো আর আমিও আমার বোনটার আনুরোধ ফেলতে পারিনি। তোর সব খবর ওকে দিতাম। তোর সব মুমেন্ট ক্যাপচার করে পাঠিয়ে দিতাম। তোর পাশে কোনো মেয়ে ঘেসলেই বা তোকে নিয়ে কেউ প্রশংসা করলেই আমি গিয়ে হৃদির কথা বলতাম তাদের। সেটা হৃদিই বলে দিয়েছিলো। কিন্তু তুই ও যে হৃদির সব খবর নিতি সেটা হৃদি জানতো না। মোট কথা আমি দুই দিক দিয়েই ঠিক ছিলাম। বেস্ট ফ্রেন্ড ভাই দুটোর দায়িত্বই পালন করেছি’

হৃদান পিয়াসের থেকে দৃষ্টি সরিয়ে আবার ডাইরি পড়তে শুরু করলো

‘আমি এখন অনার্স থার্ড ইয়ারে পড়ি। আমি আমার কথা কখনো ডাইরি তে লিখি না। আমার সব টুকুতেই শুধু হৃদরাজ। এখনো হৃদরাজ এলো না। না আমার কোনো খোঁজ নিয়েছে। কোনো প্রয়োজন ই মনে করে না। কয়েকদিন পর আলো আপুর বিয়ে। আচ্ছা বোনের বিয়েতে কি ভাই আসবে না। আসলে আমি হৃদরাজকে দেখতে পাবো ইশশ কত দিন পর সরাসরি দেখব। ‘

‘আমি আমার রিয়ুর উপর হওয়া অন্যায়ের শাস্তি দিবো হ্যাঁ দিবো। আগে আমার রিয়ুর হার কে জয়ে পরিনত করবো তারপর একে একে সবাইকে বুঝিয়ে দিবো হৃদিতা চৌধুরীর ভালোবাসায় হাত দিলে কি পরিনতি হয়। আমি বাস্কেটবল খেলায় নাম দিয়েছি কিন্তু আবেদন গ্রান্টেড হলো না। ভাইয়ুকে বললাম জাস্ট আধাঘন্টায় ডান। আজকে আমার হৃদরাজ এসেছে। কিন্তু রাগের কারণে দেখতেই পারলাম না’

‘আমার হৃদরাজ আমায় মনে রেখেছে হ্যাঁ আমার হৃদরাজ তার হৃদপরীকে ভুলেনি। আমি যেমন তাকে ভালোবাসি সেও আমাকে ভালোবাসে। আজ আমি যে খুশিটা পেয়েছি ১২ বছরে এতটা পায়নি। কোথাও একটা ফাঁক থেকে যেত। ভালোবাসি হৃদরাজ খুববব ভালোবাসি আমার বর টাকে’

তো মোহ কাকে বলে পিয়ানি আপু তোমরা দেখেছ -সাহিল

এতটাই মোহ যে ১২ টা বছর ধরে চেপে রেখেছে -রাইসা

আমি ভুল করেছি আ.

আর বলতে পারলো না হৃদান কিছু পারার শব্দ শুনে সবাই দরজার দিকে তাকিয়ে আছে। নিচে একটা গিফ্ট বক্স পড়ে আছে। দরজায় হৃদিতা দাঁড়িয়ে আছে। নির্বাক চোখে তাকিয়ে আছে। হৃদিতা যখন বাড়িতে কোথাও কাউকে পেলনা তখন ছাদে গিয়েছিলো। ওখানেও না পেয়ে ম্যাসেজের কথা মনে হতেই দৌড়ে নিজের ঘরে চলে যায়। গিয়েই এসব শুনে ফেলে। হৃদান অসহায় চোখে হৃদিতার দিকে তাকিয়ে কিছু বলতে যাবে তার আগেই হৃদিতা দৌড়ে চলে আসে ওখান থেকে। হৃদান ও পিছু নেই কিন্তু ধরতে পারে না তার আগেই গাড়ি নিয়ে চলে যায়। হৃদানের দেখাদেখি সবাই নিচে নেমে আসে।

প প পরশ আমি ভু ভু ভুল করেছি

এটা ভুল না হৃদভাইয়া চরম অন্যায় করেছো তুমি হৃদির ভালোবাসার দিকে আঙুল তুলে। ১৬ বছর ধরে ভালোবাসো এতবছর ধরে সব খোঁজ খবর রাখো অথচ মানুষটাকেই চিনতে পারলে না -রাহি

সামান্য রেগে কয়েকটা কথা বলেছে আর তোমার মনে হলো ভালোবাসা না সব মোহ জেদ -আলো

আর পিয়ানি আপু বললে না আমি পিচ্চি ভালোবাসার কি বুঝি। আমি পিচ্চি হলেও ভালোবাসার অনুভূতিটা আমারও আছে। ভালোবাসা বয়স দেখে না ভালো মন দেখে হয় আমার মনে হয়না আমার ভাইয়ের এই মনটা আদও আছে -আনহা

তুই তোর ভাইয়াকে কথা শুনাচ্ছিস ওই মেয়ের জন্য যে তোর ভাইয়াকে সবার সামনে অপমান করলো -হিয়া

জাস্ট সাট আপ আমাদের মাঝে তোমাকে কেউ কথা বলতে বলেনি। এমনিই চুপ করে দাড়িয়ে থাকো না হলে চলে যাও -নাশিন

হৃদপরী কোথায় গেল এখন কোথায় খোঁজবো -হৃদান

হৃদিপাখি আছে সেই জায়গাটিতেই যেখানে ওর মন খারাপ বা রাগ হলে যায় -পরশ

সবাই বেড়িয়ে পড়ে হৃদিতার খোঁজে হিয়া অপমানে চলে যায় সিয়াকে নিয়ে। এত তাড়াতাড়ি গাড়ি চালিয়েছে হৃদান আধা ঘন্টার পথ দশ মিনিটে কভার করতে পেরেছে। গাড়ি থেকে নেমেই ওরা ছুটলো। গিয়ে যা দেখলো তাড়াতাড়ি দৌড়ে গেল

প্রেকটিসিং ড্রেস পরে অনবরত দৌড়াচ্ছে। ঘামে শরীর ভিজে গেছে কোনো খেয়াল ই নেই। আবাদত না হলেও ২০ রাউন্ড দিয়েছে। হঠাৎ থেমে গেল বাস্কেট বল নিয়ে প্রেকটিস করছে খুব রুডলি।

আমার ভালোবাসা মোহ। ১২ বছরের ভালোবাসাটা আজ জেদ মোহ হয়ে গেল। প্রমাণ করতে হবে আমার ভালোবাসা। কতটা ভালোবাসি তার প্রমাণ চাইছে। ১২ টা বছর ধরে যে যাতনায় পুড়েছি তার প্রমাণ চাইছে। পারবে আমার চোখের পানির হিসেব দিতে। পারবে নির্ঘুম কাটা রাতের হিসেব দিতে। তাহলে আমার ভালোবাসার প্রমাণ কেন চাইছে। ১২ বছর তার অনুপস্থিতি আমাকে যেভাবে পুড়েয়েছে পারবে সেই ক্ষত ভালো করতে। পারবে না। চাইলেও আমি আমার ১২ বছরের কষ্ট ভুলতে পারবো না। যখন সকল অভিমান ভুলে তাকে নিয়ে বাঁচতে চাইলাম তখন সেই আমাকে আমার ১২ বছরের কষ্টের সাথে আবার নতুন করে পরিচয় করিয়ে দিলো। ক্যারিয়িরের জন্য যখন আমার এই ছোট্ট হৃদয়ে আঘাত দিয়েছিলো তারপরও আমি বলেছিলাম তার ভালোবাসার প্রমাণ দিতে? না বলিনি তাহলে আজ কেন আমার ভালোবাসার প্রমাণ
করতে হচ্ছে। রেগে যাওয়ায় সামান্য কড়া কথা সহ্য হলো না তখন আমার ১২ বছরের কষ্ট কেমনে সহ্য করেছি আমি। কোনো দিন ও ক্ষমা করবো না তোমায় কোনো দিন ও না। ভালোবাসি না তোমায়, বাসি না ভালো

বলেই কান্নায় ভেঙে পড়লো হৃদিতা। উপস্থিত সবাই কান্না করছে। হৃদান দৌড়ে গিয়ে ঝাপটে ধরল হৃদিতাকে।

আমায় ক্ষমা করো হৃদপরী। প্লিজ ফরগিভ মি। আমি অন্যায় করেছি যা শাস্তি দিবে মাথা পেতে নিবো কিন্তু আমাকে ছেড়ে যেওনা প্লিজ। আমি বাঁচতে পারবো না আর। ১২ টা বছর ধরে আমিও কম কষ্ট পায়নি। তুমি তো ছোটবেলায় শুধু আমার অনুপস্থিতির জন্য কষ্ট পেতে কিন্তু আমি, আমি তো ভালোবেসে কাছে না পেয়ে কষ্ট পেয়েছি। তুমি তো তখন ভালোবাসা কি বুঝতে না কিন্তু আমি, আমি শত ইচ্ছের পরও আমার হৃদপরীকে কাছে থেকে দেখতে পারেনি। স্বযত্নে তোমার চোখের পানি মুছে দিতে পারিনি। দিনে হাজারো কাজে ব্যস্ত থেকে রাতে একাকিত্ব আমাকে কুড়ে কুড়ে খেয়েছে কাউকে দেখাতে পারিনি। তোমার মতো আমি তো কান্না করতে পারিনি কিন্তু আমার কলিজাটায় যে বড্ড ব্যাথা করতো। ১২ টা বছর পরিবার থেকে দূরে থেকে ভালোবাসা থেকে দূরে থেকে আমি যে ভালো থাকতাম না। তুমি বললে না আমার ক্যারিয়ারের জন্য আমি তোমাকে ছেড়ে চলে গিয়েছি। তুমি ভুল জানো এখানের প্রত্যেকটা মানুষ ভুল জানে। আমার হৃদপরী কাছে যেখানে আমার জীবন ই কিছু না সেখানে আমার ক্যারিয়ার অতি নগন্য

এতক্ষন হৃদিতা সহ সবাই হৃদানের কথা শুনছিলো। হৃদানের কথা শুনে হৃদিতার কান্না আগেই থেমে গিয়েছে। ও বুঝতে পেরেছে হৃদান তার থেকে বেশী কষ্ট পেয়েছে।

মানে তাহলে কেন চলে গিয়েছিলি -পরশ

হৃদান বলতে শুরু করলো…

চলবে…?

(

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here