#তুমি_যে_আছো_অন্তরে_মিশে💔
#Writter_Ishanur_Tasmia [ Mira ]🌸
# Part : {03}🌸
মাঝরাতে নিরার মনে হয় কেউ তার ঠোঁটে চুমু দিচ্ছে,,, তীব্র থেকে তীব্র ভাবে,,,, নিরা চোখ খুলতেই দেখে নিরব তার উপর উবু হয়ে শুয়ে তাকে চুমু দিচ্ছে,,,এটা দেখা মাত্রই নিরা নিরবকে জোড়ে একটা ধাক্কা দেয়,,,,আচমকা ধাক্কা দেওয়ায় নিরব একটু দূরে সরে যায়,,,
নিরব দূরে সরতেই নিরা নিরবকে আরেকটা ধাক্কা দিয়ে বলে,,,,
নিরাঃ কি সমস্যা কি আপনার নিরব,,,কেন করছেন এমন,,, আপনিই তো বলেছেন,,, আমাকে আপনার ভালো লাগে না,,, তাহলে আমার কাছে আসেন কেন,,,আমি তো আসি না,,, হ্যাঁ আগে আসতাম,, কিন্তু এখন আপনার অপমান সহ্য করতে পারি না আমি,,, কেন এমন করছেন,,,প্লিস বলুন,,আমি আর এগুলো সহ্য হচ্ছে না,,,, যদি আপনি আমাকে পছন্দই না করেন তাহলে বিয়ে করেছেন কেন,,,??আমি আপনাকে বলেছিলাম,,,প্লিস চলে যান,, আমার আর ভালো লাগছে না এগুলো,,,,
একাধারে কথাগুলো বলে নিরা জোড়ে জোড়ে শ্বাস নেওয়া শুরু করে,,,, আর নিরব,,,,সে নিচের দিকে তাকিয়ে হাত মুষ্টিবদ্ধ করে আছে,,,,নিরার কথা শেষ হতেই নিরব পাশে থাকা টেবিলে একটা জোড়ে লাথি মারে,,, তারপর রুম থেকে বের হয়ে যায়,,, না,না,, শুধু রুম থেকে না,, বাসা থেকেই বের হয়ে যায়,,,নিরার দিকে একবার ফিরেও তাকায় না,,,
নিরবের আচার-আচরনে নিরা কিছুই বুঝে না,,, এ-ই ভালোবাসবে,, তো এই আবার কষ্ট দিবে,, কেন এমন করে তা নিরাকে বললে কি হয়,,, কি এমন করেছে সে,,, যে নিরব তাকে এভাবে শাস্তি দিচ্ছে,,, মাঝে মাঝে তো নিরার মনে হয় এখান থেকে অনেক দূরে চলে যেতে,,, কিন্তু তা করা যাবে না,,, কারন আগে সে নিরবের জন্য এখান থেকে পালিয়ে যেত না,,, আর এখন তার বৃদ্ধ মার কারনে,,,এ বাড়ি টাই তাদের শেষ সম্বল,,,এখান থেকে যদি তাকে আর তার মাকে বের করে দেয়,,, তাহলে সে তার বৃদ্ধ মাকে নিয়ে কোথায় যাবে,,, তাই সব কষ্ট সহ্য করে সে,,, কিন্তু নিরবের এসব যে তার সহ্য হয় না,,, ইচ্ছা করে নিরবকে অনেক কষ্ট দিতে,,, যা সে তাকে দিয়েছে,,,কিন্তু আফসোস সে তা পারবে না,,,,,
ভেবেই একটা দীর্ঘ শ্বাস ফেলে নিরা,,, আর বারান্দায় দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করতে থাকে নিরবে,,,,
,
,
,
,
,
,
সকালে……
রাত পেরিয়ে সকাল হয়ে যায় কিন্তু নিরব আসে না,,, খুব চিন্তা হচ্ছে নিরার,,,যেভাবে নিরব ঘর থেকে বের হয়েছে,,না যানি বাইরে কোনো অঘটন ঘটায়,,,,
অনেক্ষন অপেক্ষার পরেও যখন নিরব বাসায় আসে না,,, নিরা নিরবকে কল দেওয়া শুরু করে,,, কিন্তু তাতেও লাভ হচ্ছে না,,, কারন নিরবের ফোন সুইচড অফ,,,নিরা কি করবে বুঝতে পারছে না,,, তাছাড়া তার বাড়ির বাইরে যাওয়া নিষেধ,, নাহলে সে অনেক আগেই নিরবকে খুঁজতে বের হয়ে যেত,,, কিন্তু আফসোস সে সেটা পারবে না,,,
আর এদিকে নিরার অনেক কাজও বাকি,,, সে তো আর এ বাড়ির বউ না,,,পরিবারের জন্য কাজের মেয়ে+আশ্রিতা আর নিরবের জন্য রক্ষিতা,,,,,তাই কাজ করতে শুরু করে দেয়,,, নাহলে যে মিসেস মুজমাল তাকে আর তার মাকে অনেকগুলো কথা শুনাবে,,, যা নিরা সহ্য করতে পারলেও,,, নিরার বৃদ্ধ মা পারবে না,,, ভেবেই একটা দীর্ঘ শ্বাস ফেলে নিরা,,, তারপর আগে নিজের রুম পরিষ্কার করা শুরু করে,,,,,,
রুম পরিষ্কারের সময় নিরা একটা রুমাল পায়,,, যা নিরা নিরবকে দিয়েছিল,,,যখন নিরব আমেরিকা থেকে বাংলাদেশে এসেছিল,,,নিরার ভাবতেও অবাক লাগে,,, এখনও এটা আছে,,, সে তো ভেবেছিল নিরব এটা ফেলে দিয়েছে,,,কিন্তু এখনো এত যত্ন করে কেন রেখেছে সে,,,আসলেই নিরব অনেক অদ্ভুদ,,, কখন কি করে,,, কেন করে,, তা বলা মুশকিল,,,,
হঠাৎ নিরার চোখ যায় রুমালের এক পাশে লেগে থাকা চায়ের দাগে,,,,চায়ের দাগটা দেখেই নিরার অতীতের ভয়ংকর একটা কথা মনে পরে যায়,,,,,,
,
,
,
,
,
,
নিরব নিরার সাথে এমন বাজে ব্যবহার করায়,,, নিরা ভেবেছিল সে আর নিরবের সামনে যাবে না,,,, কিন্তু সে ভাবলেই তো হবে না,,, আর তাছাড়া সে কাজের মেয়ে,,, তার ইচ্ছার কোনো দাম নেই এখানে,,,,যখন যা বলবে তখন তার সেটাই করতে হবে,,,
মেহমান যাওয়ার সময় নিরাও সবাইকে বিদায় দিতে আসে,,,বিদায়ের এক পর্যায় তূর্য নিরাকে জড়িয়ে ধরে,,, যা কেউ না দেখলেও একজনের চোখ এটা এড়ায় নি,,, সে রাগে গজগজ করতে করতে চলে যায় তার রুমে,,, আর এদিকে নিরা সবাইকে এক এক করে বিদায় দিতে থাকে,,,,
প্রায় অনেক্ষন পর বিদায় পর্ব শেষ হয়,,, সবাই সবার মতো চলে যায় নিজ নিজ বাসায়,,, বাড়ির সবাইও তখন ঘুমের প্রস্তুতি নিচ্ছিলো,,,, নিরা ও তাই করছিল,,,নিজের রুমে যাবে,, ঠিক তখনই,, বাড়ির আরেক কাজের মেয়ে নিরাকে বলে,,,,,
কাজের মেয়েঃ আফা,, আপনেরে নিরব ভাইয়ায় কইসে হেতের রুমে চা বানাইয়া নিয়া যাইতো,,,,
নিরাঃ এত রাতে,,, আচ্ছা তুই যা,, আমি চা বানাই নিয়ে যাব,,,,
কাজের মেয়েঃ জ্বী আইচ্ছা আফা,,,
বলেই কাজের মেয়ে চলে যায়,,, আর নিরা,,, সে তো মহা বিপদে পরেছে,,,, কারন সে ভেবেছিল নিরবের সামনে যাবে না,,, কিন্তু এখন না গেলে নিরব রেগেও যেতে পারে,,, তারপর মিসেস মুজমালের সেই তিতা তিতা কথা শুনতে হবে নিরার,,, তাই ভেবেছে,,, তাড়াতাড়ি করে চা বানিয়ে নিরবের রুমে দিয়ে আসবে,,, নিরবের দিকে একবার তাকাবেও না,,,,
যেই ভাবা সেই কাজ,,,,নিরা চা বানিয়ে নিরবের রুমে যায়,,,দেখে নিরব রুমে নেই,,, এটা দেখে নিরা একটা প্রশান্তির শ্বাস ফেলে,,,, তারপর তাড়াতাড়ি করে চায়ের কাপটা বিছানার পাশের টেবিলে রেখে যেই না ঘুরতে যাবে,,, তার আগেই কে যেন নিরাকে একটা ধাক্কা দেয়,,, সাথে সাথে নিরা বিছানায় পরে যায়,,, নিরার হাত লেগে পাশে থাকা চায়ের কাপটা পরে যায়,,, আর সেই কাপের থেকে চা নিচে থাকা রুমালটায় পরে,,,যা নিরা আগে খেয়াল না করলেও বিছানায় পরে যাওয়ার পর খেয়াল করে,,,,
নিরা রুমালটা থেকে চোখ সরিয়ে উপরে তাকাতেই ভয় পেয়ে যায়,,, কারন তার সামনে নিরব দাঁড়িয়ে আছে,,,, তার চোখ মুখ অনেক লাল হয়ে আছে,,, হাত থেকে বেয়ে বেয়ে রক্ত পরছে,,,,চুল গুলোও এলোমেলো,,,আর মুখটা কেমন এক ভয়ংকর রাগি ভাব,,,সব মিলিয়ে নিরবকে অনেকটা হিংস্র দেখাচ্ছে,,,
, নিরা বিছানা থেকে উঠতে নিলেই নিরব নিরাকে বিছানার সাথে চেপে ধরে,,, তারপর নিরার ঠোঁটের দিকে তাকিয়ে বলে,,,,
নিরবঃ মানা করেছিলাম,,, ছেলেদের থেকে দূরে থাকতে,,, কিন্তু তুই শুনলি না,,,,, আমার কথার অবাধ্য হয়েছিস না,,, এখন শাস্তি ভুগ,,,,[দাঁতে দাঁত চেপে]
নিরাঃ আ,,মি,,কি,,ছু,,
আর বলতে পরলো না নিরা,,, কারন নিরব তার ঠোঁট দখল করে নিয়েছে,,,,প্রতিটা চুমু যেন কামড়ে পরিণত হচ্ছে নিরবের,,, যা সহ্য করতে পারছে না নিরা,,, অনবরত থাক্কা দিচ্ছে নিরবকে,,, কিন্তু নিরব যে পুরুষ,,তার শক্তিতে নিরা পেরে উঠছে না,,,, কিন্তু হার মানে নি সে,,, নিরবকে নিজের থেকে দূরে সরানোর অপ্রাণ চেষ্টা করছে,,,, আর এদিকে নিরব নিরার ঠোঁট কামড়াচ্ছে,,, আর নিরার শরীরে খুব রুড ভাবে হাত দিচ্ছে,,,, যা সহ্য করতে না পেরে নিরা জ্ঞান হারিয়ে ফেলে,,,,,
,
,
,
,
,
,
,
#চলব🌸
ওয়েল কারন ছাড়া এমন কেউ করে না,,,,সো নিরবের এমন করার নিশ্চয়ই একটা কারন আছে,,, তাই সেই কারনটা জানার আগে কেউ কোনো বাজে মন্তব্য করবেন না,,, আর যদি নিরব কারন ছাড়াই এমন করে,,,তাহলে আমি নায়ক পালটে দিব,,,, তাই ধর্য সহকারে একটু পড়ুন,, আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে,,,, ধন্যবাদ,,,,,