তৃণশয্যা পর্ব ১১+১২

#তৃণশয্যা
#নিয়াজ_মুকিত
#১১তম_পর্ব

পকেট থেকে পকেট নাইফ বের করে আদনান।চারু এক ঝটকায় উঠে দাঁড়ায়।কিছুক্ষন আগে রেগে যাওয়া আদনান এবার হো হো করে হেসে ওঠে।চারু আদনানের দিকে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।এতদিন জানতে হাসলে শুধু মেয়েদের গালে টোল পড়ে কিন্তু এখানে তো ছেলের গালেও টোল পড়েছে।

আদনান হাসতে হাসতে বলে,
—‘ নাইফ দেখে ভয় পেয়ে গেছিস চারু।মনে করেছিস নাইফ দিয়ে তোকে মারবো।আরে না,নাইফ দিয়ে এইযে পিনটা তুলব। ‘

এই বলে ইজি চেয়ারের মধ্যে একটা আলপিন দেখায় আদনান।চারু আলপিনটা দেখে বড় একটা নিশ্বাস ফেলে।সে মনে করেছিল আদনান মনে হয় নাইফ দিয়ে তার হাত কেটে দিবে।কিন্তু এরকম হবে ভাবেনি।
আদনান মন দিয়ে পিনটা তুলছে।চারু এক দৃষ্টিতে তার দিকে তাকিয়ে আছে।পিন তোলা শেষ হলে নাইফটা আবার পকেটে রেখে দেয় আদনান।মাথা তুলে চারুর দিকে তাকিয়ে বলে,

—‘ শোন,তোকে একটা কাজ করতে হবে আমার হয়ে।পারবি? ‘

চারু টুলটা টেনে গালে হাত দিয়ে বসে বাচ্চাদের মতো করে বলে,

—‘ কি কাজ বলো,চেষ্টা করবো! ‘

আদনান এবার নীল ডায়েরীটা চারুর হাতে দেয়।তারপর ইজি চেয়ার থেকে উঠে বসে।রওনা দেয় রুমের দিকে।কিছুক্ষন পর বের হয়ে আসে আদনান।হাতে একটা খাম।খামটাও চারুর হাতে দেয় সে।তারপর চেয়ারে বসতে বসতে বলে,

—‘ এই জি‌নিসগুলো তোর কাছে রাখবি।কখনো হাড়িয়ে ফেলবি না।আমি কালকে ঢাকা চলে যাব।কবে আসবো জানি না।তুই এই জিনিসগুলো ভালো করে রাখবি।অবশ্য আমি রাখতে পারতাম তবে এগুলো দেখলে আমি খুব ইমোশনাল হয়ে পড়ি।তুই এইগুলো তোর কাছে রাখবি।কি পারবি না? ‘

চারু শুধু মাথা নাড়িয়ে হা বলে কিন্তু মুখে কোনো‌কথা বলে না।আদনান আবার বলতে শুরু করে,
—‘ আমি বুঝতে পেরেছি এই চট্টগ্রামে আমার থাকা যাবেনা।এখানে থাকলে অতসহজে ভুলতে পারবো না নিতিকে।ঢাকা গিয়ে বাবার অফিসের ব্যাঞ্চটা দেখা-শোনা করবো।কাজের মধ্যে থাকবো।যদি ভুলতে পারি নিতিকে। ‘

চারু ডায়েরীটা আর খামটা একহাতে ‌নিয়ে অন্যহাতটা আদনানের চেয়ারের হাতলে রাখে।চোখটা স্থির রাখে আদনানের দিকে,যাতে আদনান তার দিকে তাকালেই চোখা-চোখি হয়।চারু এবার বলে,

—‘ আমিও যাব আপনার সঙ্গে তাইনা ‘

চারুর ৫বাক্যের এই কথাটা শুনে মাথা তুলে তার দিকে তাকায় আদনান।চোখা-চোখি হয়ে যায় দুজনের মধ্যে।আদনান চারুর চোখের দিকে তাকানো‌ অবস্থায় বলে,

—‘ নাহ,আমি একাই যাব।দেখ আমাদের বিয়ে হয়েছে ঠিকই বাট আমার অনিচ্ছাসত্ত্বে।তুই যদিও আমাকে স্বামী মনে করিস কিন্তু আমি তোকে স্ত্রী মনে করিনা।আমি শুধু মাত্র নি…’

এইটুকু বলে থেমে যায় আদনান।মোবাইল বেজে ওঠে পকেট থেকে।এতোরাতে কে ফোন দিল ভেবে অবাক হয় সে?কৌতুহল নিয়ে ফোনটা উপরে তোলে।ফোনের স্কিনে ভেসে ওঠে রনিক নামটা।রনিক আদনানের বন্ধু।আদনান তাকে ঢাকা যাওয়ার টিকেট জোগার করতে বলেছিল।তাই মনে হয় ফোন দিয়েছে।আদনান ফোনটা রিসিভ করে।রিসিভ করার সাথে সাথে ওপাশ থেকে বলে ওঠে,

—‘ দোস্ত টিকেট পাই নাই।কালকে পর্যন্ত কোনো বাস ঢাকা যাবেনা। ‘
এই বলে ফোন কেটে দেয় ওপাশের লোকটা।আদনান অবাক হয়ে ফোনটার দিকে তাকিয়ে আছে।রনিকের উপর তার রাগ বাড়তেছে।তাকে কথাটুকুও বলার সুযোগ দিল না।ফোনে লাউড স্পিকার দেয়া থাকার কারনে সব শুনতে পায় চারু।সে আদনানের দিকে তাকিয়ে বলে,

—‘ আমি অতকিছু বুঝিনা,আমি আপনার সাথে ঢাকা যাব।যদি আমাকে না নেওয়ার কথা ভেবে থাকেন তাহলে আমার থেকে ভয়ংকর কেউ হবে না। ‘

এই বলে ডায়েরী আর খামটা নিয়ে হনহন করে রুমে চলে আসে চারু।ডায়েরী আর খামটা বেডের উপর ফেলে দিয়ে নিজে সোফায় বসে পড়ে।অনেক হয়েছে আর না।কি পেয়েছে তাকে সবাই?পুতুলের মতো ব্যবহার করছে সবাই।যার সাথে বিয়ে হলো সে নাকি স্ত্রী হিসেবে মানে না।ঢাকাও নিয়ে যাবেনা।এটা কোন ধরনের ফাজলামি।চারু মনে মনে সিদ্ধান্ত নেয় আজ থেকে সে অন্যরকম হয়ে যাবে।আদনান ভালোবাসবে ঠিকই কিন্তু সেটা অন্যভাবে।

চারু বিছানায় শুয়ে ভাবতে থাকে কি করা যায়?এইসময় আদনান এসে চারুর পাশে শুয়ে পড়ে।চারু টপ‌ করে আদনানের বুকের উপর শুয়ে পড়ে।আদনান চারুকে সড়ানোর চেষ্টা করলে চারু আদনানের ঠোট দুটো নিজের দখলে করে নেয়।আদনানে চোখ বড় বড় করে চারুর দিকে তাকিয়ে আছে কিন্তু চারু আদনানের ঠোটের স্বাদ নিতেই ব্যাস্ত।

প্রায় ১মিনিট পর আদনান চারুকে এক ঝটকায় বিছানায় ফেলে দেয়।তারপর চোখ লাল করে তাকায় চারুর দিকে।আগে চারু ভয় পেলেও এখন আর ভয় পায় না।সে উল্টো চোখ রাঙ্গিয়ে বলে,

—‘ কি শয়তানি শুরু করেছেন?বিয়ে করবেন আমাকে,ভালোবাসবেন অন্য একজনকে।ফাজলামি পাইছেন।আজ থেকে আর তা হবে না।আপনি শুধু আমার,এই চারুর।এখন থেকে কেউ আপনার দিকে তাকালে চোখ তুলে নেব। ‘

এই বলে চারু আদনানকে আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরে শুয়ে পড়ে।চারুর এহেন ব্যবহার আদনানকে আকাশ থেকে ফেলে দিয়েছে।কালকে যে মেয়েটা কথা বলতে ভয় পেত,আজকে সে এত বড় বড় কথা বলছে কি করে?আদনান চারুকে অনেক সড়ানোর চেষ্টা করলেও তা সম্ভব হয় না তার পক্ষে।শেষ পর্যন্ত দুইজনে ওই অবস্থায় ঘুমিয়ে পড়ে।

১৮.

সকাল বেলা উঠে চারু দেখতে পায় সে শুধু বিছানায় পড়ে আছে।পাশে তাকিয়ে দেখে আদনান নেই।চারু তারাতারি করে উঠে বসে।চোখ পিটপিট করে তাকাতে থাকে সম্পুর্নটাতে।বোঝার চেষ্টা করে আদনান তাকে রেখে পালিয়ে গেছে কিনা?তারাতারি বিছানা থেকে উঠে দাঁড়ায় চারু।ওরনা ঠিক করে দৌড় দেয় বেলকনির দিকে।বেলকনিতে গিয়ে দেখে আদনান নেই।অথ:পর চারু রুম থেকে বের হয়ে দৌড় দেয় ছাদে।ছাদের গিয়েই চোখে পড়ে আদনানকে।এত সকালে ছাদে কি করছে আদনান তা দেখার জন্য চুপি চুপি তার দিকে এগোতে থাকে চারু।সে আদনানের কাছাকাছি যেতেই ঝট করে তার দিকে ঘুরে দাঁড়ায় আদনান।তারপর ভ্রু-নাচিয়ে বলে,

—‘ কি চুপ করে আমার পিছনে আসতেছিস কেন? ‘

হঠাৎ আদনান এভাবে ঘুরে দাঁড়ানোর কারনে থতমত খেয়ে যায় চারু।তোতলাতে তোতলাতে বলে,
—‘ এমনি,এত সকালে কি করছেন দেখছিলাম আরকি? ‘
চারুর কথা মোটেও বিশ্বাস হয় না আদনানের।সে ভ্রু-নাচিয়ে আবার বলে,
—‘ সত্য কথা বল! ‘
চারু মাথা নাড়িয়ে বলে এটাই সত্য।এবার আদনানের একটু হলেও বিশ্বাস হয়।সে পকেট থেকে মোবাইলটা বের করে।তারপর একটা ফোল্ডারে প্রবেশ করে যেখানে শুধু তার আর নিত্তিয়ার ছবি।আদনান একের পর একটা ছবি দেখতে শুরু করে।এদিকে চারুর মাথা খিব গরম হয়ে যায়।তার স্বামী তার সামনে অন্য একটা মেয়ের ছবি দেখছে এটা মানতে পারেনা সে।সে চিলের মতো আদনানের কাছ থেকে মোবাইলটা নিয়ে ছুড়ে মারে মাটিতে।

নিজের মোবাইলটা ভেঙ্গে ফেলতে দেখে মাথার তার ছিড়ে যায় আদনানের।জলন্ত চোখে তাকায় চারুর দিকে।চারুও জলন্ত চোখে তাকিয়ে আছে আদনানের দিকে।দুইজনেরই মাথার তার ছিড়ে গেছে।হঠাৎ চারু এমন কাজ করে বসে যা আদনান কল্পনাও করতে পারেনি।আদনানের অবস্থা বর্তমান এমন যে মৃত্যু যেকোন সময়েই হতে পারে..
#তৃণশয্যা
#নিয়াজ_মুকিত
#১২তম_পর্ব

আদনানকে এক হাত দিয়ে শক্ত করে ধরে আছে চারু।ছেড়ে দিলেই নির্ঘাত মৃত্যু।আদনান থ মেরে তাকিয়ে আছে চারুর দিকে।কিন্তু এই মুহুর্তেও চারু কোনো প্রকার উত্তেজিত না হয়ে ভ্রু-কুচকে আদনানের দিকে তাকিয়ে বলে,

—‘ এতদিন থেকে কি করছেন করছেন?সেটা বড় কথা নয়,বড় কথা এখন আপনি আমার বর।আমার সামনে অন্য মেয়ের ছবি দেখবেন,কান্না করবেন এসব মানবো না।এবারের জন্য বাঁচিয়ে দিচ্ছি।পরেরবার সোজা উপরে।হুহ..’

এই বলে একটানে আদনানকে একটানে কোণা থেকে নিয়ে আসে মাঝে।আদনান নিজেকে সামলাতে না পেরে গিয়ে পড়ে চারুর উপরে।দুজনে ধপাস করে পড়ে যায় ছাদের মেঝেতে।চারু নিচে তার উপরে আদনান।এতজোরে পরার কারনে আদনানের খানিকটা লাগে।সে অবাক হয়ে চারুর দিকে তাকায়।চারু এক দৃষ্টিতে তার দিকে তাকিয়ে আছে।আদনান তারাতারি উঠে দাঁড়ায়।আদনান উঠে দাঁড়ালে চারুও উঠে দাঁড়ায়।

আদনান কোনো কথা না বলে চারুর দিকে একবার তাকিয়ে ছাদ থেকে নিচে নামতে শুরু করে।আদনান নিচে নামতেই চারু নিজেই নিজের বুকে এক ফু দেয়।মনে মনে তারিফ করে নিজের।এতসাহস সে কিভাবে পেল ভাবতেই অবাক হয় সে।চারু মনে মনে বলে,এখন থেকে এইরকম অত্যাচার তোমাকে সহ্য করতে হবে মি.আদনান।আমি পারবোনা এটা দেখতে যে আমার স্বামী আমার সামনে অন্যএকটা মেয়ের ছবি দেখে কান্না করছে।

১৯.

ব্রেকফাষ্টের টেবিলে বসে আছে সবাই।ব্রেকফাষ্ট করে চারু বাবা-মা রওনা দেবে।তাদের এগিয়ে দিয়ে আসার দায়িত্ব পড়েছে আদনান আর চারুর উপর।প্রথমে আদনান যেতে না চাইলেও পড়ে যেতে রাজি হয়।
ব্রেকফাষ্ট করে গাড়ি বের করে আদনান।এক এক করে সবাই উঠে বসে গাড়িতে।গাড়ির সামনের সিটে আদনানের সাথে বসে পড়ে চারু,পিছনে তার বাবা-মা।

একপর্যায়ে তারা এসে থামে বাসষ্টান্ডে।তারপর গাড়িতে উঠে পড়ে চারুর বাবা-মা।বিদায়ের মুহুর্তে চারু ততটা কান্না করেনি তবে চোখের পানি বাধ মানেনি।চারু মন খারাপ করে গিয়ে গাড়িতে বসে পড়ে।কিছুক্ষন পর আদনান এসে বসে পড়ে গাড়িতে।সে চারুকে থ মেরে বসে থাকতে দেখে কোনো কথা না বলে গাড়িতে বসে পড়ে।তারপর সামনের দিকে তাকিয়ে বলে,

—‘ সিটবেল্ট পড়ে নে! ‘

আদনানের আদেশ পেয়ে সিটবেল্ট পড়ার চেষ্টা করে চারু।কিন্তু আগে থেকে অভ্যাস না থাকায় প্রতিবারে ফলাফল হয় ব্যার্থ।বারবার ব্যার্থ হয়ে একপর্যায়ে খুব রেগে যায় চারু।চিৎকার করে বলে,

—‘ ধুর,পড়বোই না। ‘

এই বলে সে সিটবেল্ট না পড়ে বসে থাকে।আদনান টের চোখে তার দিকে তাকিয়ে গাড়ি চালাতে শুরু করে।চারু একটা বিষয় লক্ষ্য করে আদনান তাদের বাসার রাস্তায় না গিয়ে অন্য একটা রাস্তা দিয়ে গাড়ি নিয়ে যাচ্ছে।চারু একবার আদনানের দিকে তাকিয়ে তারপর চুপ করে বসে থাকে।আদনান এক মনে এক ধ্যানে গাড়ি চালাচ্ছে।

একপর্যায়ে গাড়ি এসে থামে একটা কাশবনে।জায়গাটা খুব নির্জন।আদনান গাড়ি থেকে ‌নেমে পড়ে।সে চারুর সাথে কোনো কথা না বলে চুপ করে হাটতে শুরু করে।চারু অবাক হয়ে আদনানের দিকে তাকিয়ে টপ করে গাড়ি থেকে নেমে পড়ে।তারপর সে দৌড়ে আদনানের কাছে যায়।আদনান টের চোখে তার দিকে তাকিয়ে আবার হাটায় মন দেয়।

কাশবনে কাশ ফুলে ভরে গেছে।সাথে হালকা বাতাস ফুল গুলো দুলিয়ে দিচ্ছে।এর ফলে কাশবনের সৌন্দর্য বেড়ে গেছে কয়েকগুন।হালকা বাতাসে চুলগুলো এলোমেলো হয়ে যায় আদনান চারু দুজনেরই।আদনান তার কপালে পড়া চুলগুলো হাত দিয়ে উপরে তুলে দেয়।চারু তার চুল ঠিক করে ব্যান দিয়ে ভালোভাবে আটকে দেয়।

আদনান গিয়ে বসে পড়ে একটা বেঞ্চে।চারু গিয়ে চুপটি করে বসে পড়ে আদনানের পাশে।তাদের মতো অনেক জুটি বসে আছে চারদিকে।কারো দিকে কেউ তাকাচ্ছেনা।সবাই‌ নিজেদের নিয়ে ব্যাস্ত সময় পার করছে।

আদনান চুপ করে আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকে।চারু কৌতুহল নিয়ে উপরে তাকায় কি আছে দেখার জন্য?কিন্তু সে উপরে আকাশ ছাড়া কিছুই দেখতে পায় না।অধৈর্য্য হয়ে মাথা নিচে নামিয়ে বিরবির করতে থাকে সে?

তাকে এরকম বিরবির করতে দেখে আদনান তাকে জিজ্ঞাসা করে,
—‘ বিরবির না করে কি বলতেছিস জোরেই বল।আমরাতো গণতান্ত্রিক দেশে বাস করি,আমাদেরও তো ‌শোনার অধিকার আছে! ‘
চারু দীর্ঘ সময় ধরে আদনানের দিকে তাকিয়ে থেকে একটা মুচকি হাসি দেয়,তারপর‌ খানিকটা বিরক্তি নিয়ে বলে,

—‘ এইযে,আপনি আকাশের দিকে তাকিয়ে আছেন?কি দেখতেছেন কে জানে?পাগল হইছেন নাকি এটাই ভাবছি..’

চারুর কথা শুনে আদনান হো হো করে হেসে ওঠে।হাসতে হাসতে বলে,
—‘ পাগল হইনাই,প্রকৃতি দেখছি।পাগল হইলে তো এতক্ষনে ওইযে আইসক্রিম ওয়ালার সব আইসক্রিম নিয়া পালিয়ে যাইতাম। ‘

আইসক্রিমের কথা শুনে মনটা আনন্দে নেচে ওঠে চারুর।সেই কতদিন ধরে আইসক্রিম খায়না সে।বাসায় থাকতে প্রতিদিন ৩টা করে আইসক্রিম খাইতো আর এখানে একটাও খাইতে পারে না।চারু তারাতারি উঠে দাঁড়ায় অথ:পর আদনানের হাতটা ধরে টানতে শুরু করে।

আদনানকে টানতে টানতে আইসক্রিম ওয়ালার সামনে নিয়ে আসে সে।আইসক্রিম ওয়ালার সামনে আসলে আদনান চারুর হাত থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে নিয়ে ভালোভাবে দাঁড়ায়।ততক্ষনে চারু আইসক্রিম ওয়ালাকে অডার্র দিয়ে দিয়েছে।
চারুর কথামতো আইসক্রিম ওয়ালা তাকে অনেক গুলা আইসক্রিম দেয়।চারু সেগুলো নিয়ে আগের জায়গায় ফিরে আসে।বিল নিয়ে তার কোনো মাথা ব্যাথা নেই।

আদনান বিল মিটিয়ে দিয়ে মুখটা গোমড়া করে এসে চারুর পাশে বসে।এদিকে চারু মনের সুখে আইসক্রিম খাচ্ছে।চকিতে সে একবার তাকায় আদনানের দিকে।আদনানের মুখ গোমড়া দেখে একটু হেসে ওঠে চারু।তারপর নিজের একটা আইসক্রিম এগিয়ে দেয় আদনানের দিকে।

আদনান মনে হয় এই সময়টার জন্যই অপেক্ষা করছিল।সে এক মিনিটও দেরি না করে চারুর হাত থেকে আইসক্রিমটা নিজের দখলে করে নেয়।তারপর দুইজনেই মনের সুখে আইসক্রিম খেতে থাকে।

২০.

‘ ইস,ছেলেটা পুরাই লাড্ডু।একটা যদি ইয়ে করতে পারতাম, ‘

মেয়েটার এরকম উগ্র মনোভাব কানে আসে চারু ও আদনান দুইজনেরই।আদনান চারুকে রাগানোর জন্য সামনে থাকা মেয়েটার উদ্দেশ্য হাত নারে।প্রতিউত্তরে মেয়েটাও হাত নারে।চারু খুব রেগে যায়।সে সাটাম উঠে দাঁড়িয়ে হাতে থাকা আইসক্রিমটা ছুড়ে মারে খুব জোড়ে।তারপর দ্রুতপায়ে এগোতে শুরু করে মেয়েটার দিকে।একেবারে এসে থামে মেয়েটার সামনে।

মেয়েটার বয়স চারুর সমানই হবে।চারু মেয়েটাকে কোনো কথা বলার সুযোগ না দিয়ে ঠাস করে একটা মেরে দেয়।তারপর মেয়েটার চুল ধরে চিল্লিয়ে বলে,

—‘ কি করবি?বল,কি করবি? ‘

মেয়েটা কান্না করতে শুরু করে দেয়।মেয়েটার কান্নার আওয়াজ শুনে তার গার্ডিয়ান ছুটে আসে।মেয়েটার গার্ডিয়ানকে দেখে চারু ভিষন ভরকে যায়।সে মেয়েটাকে ছেড়ে দিয়ে ভয়ে ভয়ে পিছিয়ে যায় আদনানের কাছে।তারপর আদনানের পিছনে লুকিয়ে পড়ে।চারুর চোখে এরকম ভয় আদনান খুব কমই দেখেছে।কিন্তু কেন এত ভয় পাচ্ছে সে?লোকটা কে?নাকি লোকটা চারুর…

চলবে,,ইনশাআল্লাহ

{খুব তারাতারি লিখছি।ভুলত্রুটি ক্ষমা করবেন।আজকে সন্ধ্যায় দিলাম সকালের বদলে।}

নামাজ কায়েম করুন।আল্লাহ হাফেজ।
চলবে..
{ভুলত্রুটি ক্ষমা করবেন।}
নামাজ কায়েম করুন।আল্লাহ হাফেজ।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here