তোকে দিয়েছি মন পর্ব শেষ

তোকে_দিয়েছি_মন❤
শেষ পর্ব
Writer: Sidratul muntaz

🍂
আমি মায়ের ঘরে মায়ের কোলের উপর মাথা রেখে কেদে ভাসাচ্ছি। আর মনে মনে ঈশানের গুষ্টি উদ্ধার করছি। উনি আমার বাম গালটা কি পেয়েছেন? সরকারি সম্পদ? যখন ইচ্ছা চড় মেরে দিয়ে চলে যাবেন আর আমি কিচ্ছু বলবো না? এই নিয়ে মোট তিন তিনবার চড় মেরেছেন উনি এই এক গালে। তাও আবার কি কারণে? উনাকে না জানিয়ে বাহিরে বেরিয়েছি তাই। তার উপর আমার একটা কথা পর্যন্ত শুনলেন না তখন। ডায়নার সাথে বাসায় পাঠিয়ে দিলেন। উনার নাকি খুব গুরুত্বপূর্ণ কাজ আছে। আচ্ছা উনি আবার জায়মাকে বিয়ে করে ফেলবেন না তো? যদি বাচ্চার কথা শুনে দুর্বল হয়ে যায়? তারপর কি হবে? ভাবতেই আবারো কান্না পাচ্ছে আমার। ভীষণরকম কান্না। মা আমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বললেন—

হয়েছে তারু এবার থাম তো। এখন কিন্তু বেশি বেশি হচ্ছে। স্বামী তো একটু শাসন করবেই। তা বলে এভাবে কেদে গা ভাসাতে হবে?

আমি মাথা উঠিয়ে নাক মুছতে মুছতে বললাম–

আমি যে কেনো কাদছি সেটা তুমি বুঝবে না মা। তাই শুধু শুধু কথা বলো না। কাদতে দাও আমাকে। আর শোনো,,, কাল তো তোমরা চলে যাচ্ছো না? আমাকেও সাথে নিয়ে যাবে। আমি আর এখানে থাকবো না। আর আজরাতে আমি তোমার সাথেই ঘুমাবো। উনার ধারে কাছেও আর যাবো না।

বলতে বলতে আবার কান্না জুড়লাম আমি। মা কিছুক্ষণ ভ্রু কুচকে তাকিয়ে থেকে হঠাৎ বলে উঠলেন —

অনেক নাটক হয়েছে। এবার বের হো তুই। আমি তোকে আমার সাথে রাখবো না। যা বের হো।

মানে? রাখবে না মানে? আমি এখান থেকে ভুলেও কোথাও যাবো না।

এক খাটে কয়জন জায়গা হবে তারু? আমি ঘুমাবো, তোর দাদী ঘুমাবে তুই কোথায় ঘুমাবি তাহলে?

দাদীকে বলবে অন্যরুমে গিয়ে থাকতে।

অন্যরুমে তোর দাদী যাবে না। উনি ভয় পায়। এখনো ভুতের ভয় যায়নি উনার মাথা থেকে।

ভয় তো আমারও লাগে। কিন্তু তাতে কি? দরকার হলে আমি ডাইনির সাথে গিয়ে ঘুমাবো তাও ভালো।

বিছানা ছেড়ে উঠে দাড়ালাম আমি। মা অবাক হয়ে বললেন—

ডাইনিটা কে আবার?

ডাইনি মানে ডায়না।

বলেই উল্টোদিকে ঘুরে হাটা দিলাম আমি। পেছন থেকে মা বিড়বিড় করে কি যেন বললেন। আমি শুনলামও না। মায়ের ঘর থেকে বাহিরে পা রাখতেই দেখা হল শাশুড়ী মায়ের সাথে। আমি উনাকে দেখেই অন্যদিকে ঘুরে চোখ মুছতে লাগলাম। মা আমার কাধে হাত রেখে হাসিমুখে ভ্রু কুচকালেন–

তারিন। কি হয়েছে তোমার? মনখারাপ নাকি?

আমি মুখ স্বাভাবিক করে মায়ের দিকে তাকালাম। উনার মুখে সবসময় হাসি লেগেই থাকে। হাসিবতী একটা। ইচ্ছে করছে বলে বলে দিতে উনার ছেলের কার্যকলাপের কাহিনি। কিন্তু বললাম না। মুখে জোর করে হাসি আনলাম–

কিছু হয়নি আন্টি। ঠিকাছি আমি।

মা আমার কথা বিশ্বাস করলেন কিনা জানিনা। কিছু একটা ভেবে বলে উঠলেন–

ঈশান বাসায় ফিরেছে?

আমি মাথা নেড়ে না বললাম।

এতোরাতেও বাসায় আসেনি ছেলেটা? কোথায় গেছে তুমি জানো?

না আন্টি। উনি আমাকে কিচ্ছু বলে না।

মা ঠোট চেপে হাসলেন। আমার হাত ধরে বললেন —
এসো তুমি আমার সাথে এসো।

আমি কোনো প্রশ্ন না করেই মায়ের সাথে হাটতে লাগলাম। মা আমায় নিয়ে আসলেন উনার বেডরুমে। এই রুমটায় আগে কখনো আসা হয়নি আমার। কিন্তু আজ এসে মনে হচ্ছে আমার জীবন সার্থক। এতো সুন্দর করে কিভাবে সাজায় মানুষ? আমি চারদিক পর্যবেক্ষণ করতে শুরু করলাম। মা আমাকে বসতে বলে কফি আনতে গেলেন। আর আমি গুটি গুটি পায়ে হাটতে লাগলাম সারা ঘর জুড়ে। বিছানার উপর বিশাল এক ঝাড়বাতি। টাইলসের ফ্লোরে অপরুপ নকশা। রুমের একসাইডের দেয়াল সম্পুর্ন কাচের। পর্দা সরালেই চোখে পড়ে ঈশানের বার্ড হাউজ আর মায়ের যত্নে গড়া ফ্লাওয়ার গার্ডেন। পাখিদের কলরবও শোনা যাচ্ছে। কি মনোরোম! সবথেকে অবাক হলাম বারান্দা দেখে। এটাও যে ছোটখাটো একটা গার্ডেন। বারান্দার ফ্লোরের কার্পেট টা পর্যন্ত ঘাসের। সবুজ সুন্দর বারান্দা। গ্রিলের প্রতিটি ভাজে ভাজে ফুলের টব ঝুলানো। ভেঙে যাওয়া কাচের বোতল গুলোকেও মা গাছের টব হিসেবে ব্যবহার করেছেন। মায়ের বুদ্ধি দেখে আমি হাসলাম। এক কথায় অতুলনীয়। হঠাৎ মায়ের ডাকে বারান্দা থেকে বেরিয়ে এলাম আমি। মা টি টেবিলে কফি সেট সাজিয়ে আমাকে বললেন–

তারিন তুমি বসো। কফি খাও। আমি একটু ঈশানকে ফোন করে দেখছি। কোথায় আছে ছেলেটা।

আমি মুচকি হেসে বললাম– আচ্ছা আন্টি।

মা চলে গেলেন। উনি হয়তো বুঝতে পেরেছেন যে উনার গুণোধর ছেলের জন্যই আমার মনখারাপ। এখন যদি ঈশান টাকে ফোন করে আচ্ছামতো ঝেড়ে দিতো না? খুশিতে ডান্স দিতাম আমি। বাবাকে দেখলাম দরজা ঠেলে ভেতরে ঢুকলেন। আমি সাথে সাথে উঠে দাড়ালাম। বাবা আমাকে দেখে বড় করে হাসি দিলেন—

বসো বসো দাড়াতে হবে না। কফি বানাচ্ছো নাকি?

আমি কফিসেটের দিকে একবার তাকিয়ে বললাম— হ্যা আঙ্কেল। আপনি খাবেন?

অবশ্যই! বানাও তো মা।

আমি খুশি মনে কফি বানাতে বসলাম। বাবা বুক শেলফ থেকে কি যেন একটা বের করছেন। এতোক্ষণে আমি খেয়াল করলাম এই ঘরে ছোটখাটো একটা লাইব্রেরিও আছে। যার মধ্যে হাজার হাজার বইয়ের সমাহার। একদিন খুজে দেখতে হবে হুমায়ুন স্যারের শুভ্র কালেকশন আছে কিনা। আমি আবার কফি বানানোয় মনোযোগ দিলাম। বাবা আমার পাশে এসে বসলেন। টেবিলে দাবার বোর্ড সাজাচ্ছেন উনি।

— তারিন তুমি দাবা খেলতে পারো?

পারি কিন্তু তেমন একটা ভালো না।

উনি মুচকি হেসে বললেন–

আচ্ছা তাহলে পরোখ করে দেখি একবার। কেমন পারো?

ওকে আঙ্কেল!

আমি বাবার হাতে কফি মগ এগিয়ে দিলাম। বাবা কফিতে চুমুক দিয়ে ভ্রু কুচকালেন। আমিও ভ্রু কুচকে বললাম—

কি হয়েছে আঙ্কেল? কফি ভালো হয়নি?

হুম? না ভালো হয়েছে। সত্যিই ভালো হয়েছে। ওয়ান্ডারফুল!

আমি আনন্দের সাথে হাসলাম– আচ্ছা আঙ্কেল তাহলে চলেন শুরু করি।

তুমি কোনটা নিবে সাদা না কালো?

সাদা!

আচ্ছা ঠিকাছে……( গুটি সাজাতে সাজাতে)

আমি আর বাবা দাবা খেলায় ব্যস্ত। কিছুক্ষণ বাদে মাও এসে আমাদের পাশে বসলেন। মা আমাকে চিয়ার করছেন। যেন আমি জিততে পারি। যেকোনো চাল দেওয়ার আগে আমাকে বুঝিয়ে দিচ্ছেন এভাবে না ওইভাবে। এই নিয়ে আবার বাবার সাথে উনার ছোটখাটো তর্কও হচ্ছে । সহজ কথায় বলা যায় আমার মাধ্যমে দুজনে ইচ্ছেমতো ঝগড়া করছে। আর আমি দর্শকের মতো গালে হাত রেখে ঝগড়া দেখছি। আবার মাঝে মাঝে খেলায় কনসেনট্রেট করছি। এই সুখ শান্তি বেশিক্ষণ টিকল না। এরই মাঝে বাম হাত ঢোকাতে ঈশান চলে এলেন। আর এসেই চেচামেচি শুরু।

— তারিন ঘরে চলো।

আমি ঈশানকে দেখে মায়ের হাত চেপে ধরলাম। বাবা বিচলিত হয়ে বললেন–

কেনো তারিন যাবে কেনো? খেলা চলছে তো। খেলা শেষ হলে পাঠিয়ে দিবো তুই যা।

ঈশান দাবার গুটি এলোমেলো করে দিয়ে বললেন– কোনো খেলা হবে না। ও এখন আমার সাথে ঘরে চলবে।

মা সরু চোখে তাকিয়ে বললেন— ঈশান? কি হচ্ছে? তারিন যাবে না। ও এখন আমাদের সাথে টাইম স্পেন্ড করছে। এন্ড ইউ আর নট এলাউড। আউট।

মায়ের সাথে আমিও তাল মিলিয়ে বললাম— হুম। আউট।

আর এই বলাটাই কাল হয়ে দাড়ালো। উনি দাতে দাতে চেপে ফট করে এসে আমায় কোলে তুলে নিলেন। তাই দেখে মা মুখে হাত দিয়ে বললেন—

হোয়াট ইজ দিজ ঈশান??( বাবার দিকে তাকিয়ে) এই ম্যানারলেস ছেলেটা সত্যিই কি আমার ছেলে?

বাবা কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে হো হো করে হেসে দিলেন। আর আমি পারলে লজ্জায় মরে যাই। উনি হনহন করে আমাকে নিয়ে বেরিয়ে এলেন। রুমে ঢুকতেই আছাড় মেরে বিছানায় ফেললেন আমাকে। আর এদিকে আমার হাত পা কাপাকাপি শুরু হয়ে গেছে। সারাজীবন উনার হাতের চড় আর আছাড় খেতে খেতেই আমার আয়ু অর্ধেক কমে যাবে যা দেখছি। উনি ধপ করে বিছানায় বসে মুখে হাত রাখলেন। আর আমি গুটিশুটি মেরে বসে রইলাম। উনি আমার দিকে ঘুরেই খুব উচ্চশব্দে উচ্চারণ করলেন—

আচ্ছা তুমি কি সারাজীবন এমন স্টুপিড থাকবে? মাথায় বুদ্ধি কবে হবে তোমার?

আমি আবার কি করলাম??

এতোবড় একটা বিষয় আমাকে জানাও নি কেনো?

আপনাকে টেনশন দিতে চাইনি। তাই।

তাই না? ইডিয়ট একটা!! জায়মা তোমাকে বোকা বানিয়েছে।

মানে?

মানে প্র্যাগনেন্সি ট্যাগনেন্সি এসব মিথ্যে কথা। কিচ্ছু হয়নি ওর। আর তাছাড়া একটা ভার্জিন মেয়ে প্র্যাগনেন্ট কিভাবে হতে পারে? এইটুকু বিষয় তুমি ধরতে পারলে না? এতোটা অবিশ্বাস করো আমাকে?

ম মানে….এসব কি বলছেন আপনি? কোথ থেকে জানলেন এসব?

শোনো তারা,,, তোমাকে একটা কথা বলে রাখি। ফিউচারে আর কখনো আমার কাছে কিছু লুকাতে এসো না। তাহলে এভাবেই পস্তাতে হবে।

আচ্ছা লুকাবো না। কিন্তু বলবেন তো কিভাবে জানলেন এসব?

জায়মাকে লাই ডিটেক্টর টেস্ট করিয়েছি।

লাই ডিটেক্টর টেস্ট? আরে ওসব কি সত্যি হয় নাকি? আপনি ভুল ভাবছেন। আমি নিজে জায়মার প্র্যাগনেন্সি টেস্ট করিয়েছি। ও সত্যিই প্র্যাগনেন্ট?

তুমি নিজে করেছো? নিজের চোখে দেখেছো?

না দেখিনি….. আমাকে তো ডায়না বলেছে।

মিস ডায়না? সে তো আরেক স্টুপিড। মিস রাকেশী ওর থেকে বেশি ইন্টেলিজেন্ট। তুমি যদি রাকেশীর হেল্প নিতে তাহলেও আজকে এতোকিছু হতো না ডাফফার!

আচ্ছা আপনি ধমকাধমকি বন্ধ করে একটু ঠান্ডা মাথায় কথা বলুন না। আমার মাথা ব্যাথা করছে তো।

ঈশান চুলগুলো পেছন ঠেলে দিয়ে মাথায় হাত ঠেকালেন। আমি এবার উনার একটু কাছে এসে বললাম–

আচ্ছা একটা কথা বলেন তো? আমার হসপিটালে যাওয়ার খবর আপনাকে কে দিল?

মিস ডায়না।

কি? আমি ওকে বলতে নিষেধ করেছিলাম তবুও ও বলে দিল?

হ্যা বলে দিল। কারণ বলে দেওয়া ছাড়া ওর কাছে আর কোনো অপশন ছিল না।

কিরকম?

ঈশান জোরে একটা নিঃশ্বাস ফেলে বললেন– আজকে সকালে সিসিটিভি রেকর্ড চেক করছিলাম। তখনই জায়মার ফুটেজ চোখে পড়ল আমার। বুঝতে পারলাম যে জায়মা এসেছিল। কিন্তু সেটা তুমি আমাকে জানাও নি। তখনি খোটকা লাগল আমার। তারা তুমি হয়তো জানো না আমার বেডরুমেও কিন্তু একটা সিকরেট ক্যামেরা আছে।

কি?????? আপনার বেডরুমে ক্যামেরা?? আপনি আমাকে আগে বলেন নি কেনো? এইখানে আমি কতকিছু করি…..

তারা স্টপ! ওইটা সিকরেট ক্যামেরা। অপ্রয়োজনীয় রেকর্ডস আমি ডিলেট করে দেই। শুধুমাত্র সেফটির জন্য রাখা হয়েছে। উইথ স্পিকার।

স্পিকারও আছে?

হুম। অনেক দিন ধরে ক্যামেরার রেকর্ড চেক করা হচ্ছিল না। আজ সকালে জায়মার ফুটেজ দেখে আমি রেকর্ডস গুলো চেক করলাম। তারপরই সবটা জানতে পেরেছি।

আর তারপর আপনি কি করলেন?

কি আর করবো? মিস ডায়নাকে ফোন করলাম। জিজ্ঞেস করলাম তোমরা কয় নম্বর কেবিনে আছো।

মানে কি? আপনি কিভাবে জানলেন আমরা হসপিটালে গিয়েছি?

আমি আসলে গেস করেছি। ডায়নার ছোটবোন হসপিটালের নার্স সেটা জানতাম। আর তুমিও ডায়নার হেল্প নিয়েছো। জায়মাকেও বাড়িতে কোথাও রাখা হয়নি। তাই বুঝেই নিয়েছিলাম যে হসপিটালেই রাখা হয়েছে।

ওওও!!! তারপর ডায়নাকে ফোন করার পর সে আপনাকে বলে দিল সব?

আমি তো ওকে জিজ্ঞেসই করিনি। শুধু স্বীকারোক্তি চেয়েছি। আর জায়মার প্র্যাগনেন্সি টেস্টের বিষয়টা ডায়না তোমাকে সম্পুর্ন মিথ্যে বলেছে তোমাকে। আসলে ওর কোনো টেস্টই হয়নি। জায়মা ডায়নার বোন ডানাকে ইমোশোনাল ব্লেকমেইল করে নিজের দিকে ঘুরিয়ে নিয়েছিল। আর তাই ডানা ডায়নাকে মিথ্যে কথা বলেছে যে জায়মা প্র্যাগনেন্ট। এবার বুঝতে পেরেছো?

আমি খানিক চুপ থেকে বলে উঠলাম —

কিন্তু ঈশান? আপনিই তো একদিন আমাকে বলেছিলেন জায়মা আপনাকে থাঞ্চুর কাছে নিয়ে গেছিল….. ইনফেক্ট আপনার বুকেও কিসব খামচির দাগ। তাহলে এসব কি? আমি তো এগুলো দেখেই জায়মাকে বিশ্বাস করেছিলাম।

দেখো তারা ওইদিন আমার সাথে কি হয়েছিল আমি জানিনা। কিন্তু ওইরকম কিছু হয়নি এটা নিশ্চিত। আমার মনে থাকতো অবশ্যই এতো সিরিয়াস কিছু হলে। পুরোটাই আসলে একটা বড় প্ল্যান। আমাদেরকে কনফিউজড করে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে এসব করে। জায়মার স্টেটমেন্ট আমি নিয়ে রেখেছি। এইজন্য ওর শাস্তি হবে। সেটা কি জানো?

কি?

আমি থাঞ্চুর সাথে জায়মার বিয়ে দিব।

হোয়াট?

হুম। থাঞ্চুর তো কিছু মনে নেই। তাই ওকে রাজি করাতে তেমন প্রবলেম হবে না। আর জায়মার মতামতের আমি ধার ধারি না। কারণ এইটা ওর শাস্তি। ওদের বিয়ে দিয়ে হানিমুনে পাঠিয়ে দিবো সেই কালোপাহাড়ে। কেমন হবে?

আপনি কি সিরিয়াসলি বলছেন?

অবশ্যই আমি খুব সিরিয়াস। ওদের দুজনেরই শাস্তি হওয়া উচিৎ। আর তোমারও শাস্তি হবে।

আমার শাস্তি? কিন্তু আমার কি দোষ?

তুমি কি দোষ? আবার জিজ্ঞেস করছো? জায়মার ঘটনাগুলো যদি প্রথম থেকেই আমাকে বলতে তাহলে তো এসব কিছুই হতো না। আরো অনেক আগেই ব্যাপারটা সোলভ হয়ে যেতো। এইখানেই তোমার দোষ। আর তাই তোমার শাস্তি হচ্ছে…… আচ্ছা শাস্তি পরে বলবো। তার আগে একটা গুড নিউজ দেই। সেদিন তোমার আল্ট্রাস্নোগ্রাফির রিপোর্ট ভুল এসেছিল। তোমার কন্সিভ করতে আসলে কোনো প্রবলেম নেই। ইউ আর টোটালি নরমাল।

আমি বিস্ফোরিত চোখে তাকালাম— সত্যি??

হুম। আর রিপোর্ট ভুল আসার পেছনেও কাহিনি আছে। ডানা তোমার রিপোর্ট বদলে দিয়েছিল। সেটাও জায়মার ইচ্ছেতে হয়েছে। আচ্ছা মেয়েটা কি জাদু টোনা জানে? সবাইকে এমন বশে আনে কিভাবে বলো তো??

আমি কোনো উত্তর দিলাম না। টলমল চোখে তাকিয়ে আছি। খুশির ঠেলায় কান্না পাচ্ছে আমার। যাই হোক না কেনো এর থেকে সুন্দর গুড নিউজ আর হতেই পারে না। আমি চোখের পানি ছেড়ে হেসে দিলাম। ঈশানকে জড়িয়ে ধরে হাসতে লাগলাম। ঈশান আমাকে সরানোর চেষ্টা করে বললেন–

নো!! এখন এসব করে কোনো লাভ নেই। আমাকে উইক করার চেষ্টা তাইনা? আমি কিছুতেই উইক হচ্ছি না। ওঠো ওঠো!! তোমার কঠিন শাস্তি হবে। বারবার একই ভুল করে পার পেয়ে যাবে সেটা হবে না।

আমি চোখের জল মুছে নিয়ে হাসিমুখ করে বললাম— যাই শাস্তি দেন কিচ্ছু যায় আসেনা। কারণ আজকে আমি অনেক খুশি।

আমার কথায় ঈশান ফিক করে হাসলেন। কপালে চুমু দিয়ে বললেন— আমিও খুব খুশি তারা!

🍂

সমাপ্ত

( গল্পটা এভাবে শেষ হয়ে যাওয়ায় খারাপ লাগছে। খুব মিস করবো । সবার গঠনমূলক মন্তব্য প্রত্যাশা করছি। অবশ্যই বলবেন আপনাদের কোন বিষয়টা ভালো লেগেছে আর কোন বিষয় খারাপ লেগেছে। ভুল ত্রুটি ধরিয়ে দিবেন। সাথে থাকার জন্য সবাইকে ধন্যবাদ)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here