তোকে দিয়েছি মন পর্ব ৪৩+৪৪

তোকে_দিয়েছি_মন❤
৪৩.৪৪
পর্ব – ৪৩
Writer: Sidratul muntaz

🍂
কিছুসময় স্তব্ধ হয়ে বসে থাকার পর হঠাৎ মনের অজান্তেই আমি ঈশানের পাশে গিয়ে দাড়িয়ে পরলাম। আমায় দেখে ঈশান চেয়ার ছেড়ে উঠে দাড়ালেন। নিজের চেয়ারটায় আমাকে বসতে দিলেন। আর উনি আমার পাশে দাড়িয়ে রইলেন। ভদ্রমহিলা চশমার আড়ালে থাকা চোখ দুটো আমার দিকে নিক্ষিপ্ত রেখে মৃদু হেসে জানতে চাইলেন–এখন কেমন লাগছে মা তোমার?

আমি উনার প্রশ্নের তোয়াক্কা করলাম না। কেমন লাগছে নিজেও জানিনা। বোধশক্তি যেন হারিয়ে ফেলছি। এতোবড় শক মেনে নেওয়া কঠিন। আমি টলমল দৃষ্টি নিয়ে জানতে চাইলাম–

আমার কি হয়েছে ডক্টর ম্যাম?

ভদ্রমহিলা একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে ঈশানের দিকে তাকালেন। ঈশান হয়তো আমাকে জানানোর অনুমতি দিয়েছেন। তাই উনি একটা রিপোর্ট আমার দিকে এগিয়ে দিলেন। আমি রিপোর্ট টা হাতে নিলাম। কিন্তু কিছুই বুঝতে পারছি না। ভদ্রমহিলা আমাকে শান্তনা দেওয়ার উউদ্দেশ্যে আমার হাতের উপর হাত রেখে বললেন–

তোমার পিরিয়ডের এই হেভি ফ্লো প্রবলেম কবে থেকে?

আমি ছলছল চোখেই উনার দিকে তাকালাম। পলক ফেলতে গেলেই জল গড়িয়ে পড়বে এমনই অবস্থা আমার। ভাঙা ভাঙা গলায় বললাম– শুরু থেকেই এই প্রবলেম।

কখনো ডাক্তার দেখাও নি?

দেখিয়েছিলাম….. কিন্তু ডাক্তার বলেছিলেন বয়স আঠারো হলে ঠিক হয়ে যাবে সব।

উনি হতাশার সুরে বললেন– শোনো মা। তোমার একটা মারাত্মক শারীরিক সমস্যা আছে। পিরিয়ডের এই সমস্যাকে বলা হয় এন্ডোমেট্রিওসিস। এর প্রাথমিক পর্যায়ই হচ্ছে মেন্সট্রুয়েলের সময় পেটে ব্যথা। অসহ্যকর ব্যথা। যা মানুষকে শারীরিক ও মানসিক ভাবে কাবু করে ফেলে। ডাক্তারি পরিভাষায় এটাকে বলা হয় “প্রোগ্রেসিভলি ওয়ারসেনিং হেভি পেইনফুল পিরিয়ড”। এটা তোমার বন্ধ্যাত্বের অন্যতম একটা কারণ। এছাড়াও তোমার জরায়ুতে এন্ডোমেট্রিওটিক সিস্ট নামক একটা সিস্ট আছে। এই রিপোর্টও সেটাই প্রমাণ করে। যা থেকে আমি নিশ্চিত হয়ে বলতে পারি…. যে তুমি কখনো কন্সিভ করার ক্ষমতা রাখো না।

ভদ্রমহিলার কথায় ভেতরটায় তোলপাড় শুরু হয়ে যাচ্ছে আমার। হ্রদয়টাকে যেন কেউ দুমড়ে মুচড়ে দিচ্ছে খুব নিষ্ঠুরভাবে। উনি আরো কিছু কথা বললেন কিন্তু সেসব আমি খেয়াল করলাম না। আর শুনেই বা কি হবে? জীবনের সবথেকে বড় সত্যিটাই যে শুনে নিয়েছি। আমি ফট করে উঠে দাড়ালাম। দাড়ানো অবস্থাতেই আরেকবার মাথা ঘুরে আসলো। তখন ঈশান আমায় ধরে ফেললেন। ভদ্রমহিলাকে উদ্দেশ্য করে বললেন–

আন্টি ওকে আর কিছু বলার দরকার নেই। আপনি শুধু এমন কিছু মেডিসিন দিয়ে দিন যেন ওর ব্যাথাটা না হয় এট লিস্ট।

ভদ্রমহিলা চশমার ফ্রেম ঠিক করে প্রেসক্রিপশনটা আমাদের দিকে এগিয়ে দিলেন–

হ্যা দিয়েছি। আমি আমার যথাসাধ্য চেষ্টা করবো। কিন্তু তোমাদেরও সচেতন থাকতে হবে। ( আমার দিকে তাকিয়ে) মা আমি তোমার হাসব্যান্ডকে সবকিছু বুঝিয়ে দিয়েছি। তুমি শুধু চেষ্টা করবে ওর কথা মেনে চলার।

আমি ভ্রু কুচকে কাপা কাপা কণ্ঠে বললাম— তাতে কি হবে?? মা হতে পারবো আমি? কন্সিভ করতে পারবো।

আমার কথা শুনে ঈশান আমায় শক্ত করে চেপে ধরলেন। ভদ্রমহিলা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললেন–

না….. এতে তুমি সুস্থ থাকবে শুধু।
🍂

তোকে_দিয়েছি_মন
পর্ব – ৪৪
Writer: Sidratul muntaz

🍂
কাচের জানালায় দৃষ্টি স্থির রেখে সংকুচিত অবস্থায় বসে আছি আমি। স্নিগ্ধ বৃষ্টির উজ্জল ফোটা গুলো বেশ এলোমেলো ভাবে ভিজিয়ে দিচ্ছে জানালার কাচ। হসপিটাল থেকে বের হতেই শুরু হয়েছে এই মুষলধারে বৃষ্টি। জানিনা হুটহাট বৃষ্টি আসার কি মানে….. তবে মনে হচ্ছে বৃষ্টির পানিগুলোর সাথে পাল্লা দিয়ে প্রতিযোগিতায় নেমে আমার চোখের অশ্রুগুলোও। তাইতো কেদে চলেছি আমি নিঃশব্দে। আমার ভেতরটায় আঘাত হানছে প্রবল বেগে ঝড়। এই ঝড়ের শেষ কোথায় আমি জানিনা। নিজেকে আজ খুব তুচ্ছ মনে হচ্ছে। অপ্রয়োজনীয় মনে হচ্ছে। অস্বাভাবিক মনে হচ্ছে। আমার বেচে থাকার বিশেষ কোনো কারণই খুজে পাচ্ছি না আমি। ভেতরের এই আত্মচিৎকার আমার ডানপাশে বসে ক্রমান্বয়ে গাডির স্টেয়ারিং ঘুরিয়ে যাওয়া নিশ্চুপ ঈশানের কান পর্যন্ত পৌছাচ্ছে কিনা তাও আমি জানিনা। তবে এইটুকু বলতে পারি….. উনি হয়তো আমার থেকেও দিগুণ কষ্ট পাচ্ছেন। তার ওই নিরাশ মুখের চিন্তার ভাজ আমার কষ্ট গুলোর পাল্লা আরো ভারি করে দিচ্ছে। অনেক ভারি…খুব বেশিই ভারি যা আমি নিতে পারছি না। কিছুতেই পারছি না। একটা কথাই বারবার মনে হচ্ছে। কেনো ঈশান আমাকে বিয়ে করলেন?? কেনো আমার সাথে জড়িয়ে নিজের জীবনটা নষ্ট করলেন?? কি দিতে পারবো আমি উনাকে?? আর পাচটা সাধারণ মেয়ের মতো সন্তান জন্মদানের ক্ষমতাটাও যে আমার নেই। আচ্ছা ঈশানের মা বাবা যখন জানতে পারবে আমার এই সীমাবদ্ধতার কথা উনারা কি আমায় মেনে নিবেন? যদি উনারা ঈশানকে বলেন আমায় ডিভোর্স দিয়ে দিতে? যদি ঈশানের অন্য কোথাও বিয়ের সিদ্ধান্ত নেয়? ঈশানকেও কি হারিয়ে ফেলতে হবে আমায়? তখন কোন মুখে আমি ঈশান কে নিজের কাছে বেধে রাখবো? আমার না আছে সেই ক্ষমতা আর না আছে ঈশানকে ছাড়া বাচার কোনো ইচ্ছা। যদি সত্যিই এমন কোনো কঠিন সময় আসে যখন ঈশানকে আমায় ত্যাগ করতে হবে….তাহলে সেইসাথে আমি নিজের জীবনটাও ত্যাগ করতে চাই। বাচতে চাই না। ঈশানহীন যন্ত্রণাময় জীবন বয়ে বেড়ানোর চেয়ে মৃত্যুই অনেক শ্রেয়। অনেক শান্তির। গাড়ি ব্রেকের আচমকা ধাক্কায় অনেকটা সামনে ঝুকে পড়লাম সাথে ছেদ পড়লো আমার চিন্তাজগতেও। ঈশানের দিকে তাকিয়ে দেখলাম উনার অসম্ভব শান্ত চোখজোড়া আমাকেই দেখে চলেছে। উনার এই দৃষ্টির ভাষা আমার জানা নেই। তাই বোকার মতো তাকিয়ে বোঝার চেষ্টা করছি। তবে বোঝাবুঝির সুযোগটাও বেশিক্ষণ হলো না। তার আগেই উনি একটানে আমাকে নিজের সিটে নিয়ে আসলেন। আমার কোমর চেপে ধরে নিজের কোলের উপর বসালেন আমায়। আর আমি? মুখটা হালকা খুলে গোল গোল চোখে তাকিয়ে আছি। চোখের কোন হতে শুরু করে গাল পর্যন্ত বয়ে চলা অশ্রু গুলো কখন যে শুকিয়ে গেছে তারও খবর রাখিনি। ঈশান সামনে সাজিয়ে রাখা টিস্যু বক্স থেকে ফটাফট কয়েকটা টিস্যু বের করলেন। আমার সারামুখ টিস্যু দিয়ে মালিশ করতে করতে হালকা হাসলেন। উনার হাসি দেখে চোখ দুটোয় বিস্ময় নেমে এলো আমায়। কপালে ভাজ পড়ল অজান্তেই। ঈশান আমার দুই গাল চেপে ধরে প্রথমে আমার কপালে চুমু দিলেন। তারপর পর্যায়ক্রমে গালে ঠোটে সারামুখে…. আমি এবার বাধ সাধলাম। নিজেকে সরিয়ে নিয়ে কৌতুহলী দৃষ্টিতে বললাম—

কি করছেন?

ঈশান আরেকবার মুচকি হেসে বলে উঠলেন —

কাদলে তোমাকে পুরো আপেল লাগে। মনে হয় যেন লাল টসটসে দুটো আপেল গালে নিয়ে বসে আছো তুমি। এতো কিউট কেনো? আমার গুলুমুলু কিউটি টা! ( গাল টিপে দিয়ে)

বলেই আমাকে শক্ত হাতে জড়িয়ে ধরলেন উনি। বিড়বিড় করে উচ্চারণ করলেন– ” আই লভ ইউ”। আমার মুখ ডুবে গেলো ঈশানের সিল্কি চুলের অন্তরালে। মোটা মোটা লম্বা ঘাসের মতো চুলগুলোর ধারে সুরসুরি অনুভুত হচ্ছে আমার। তবে এই সুরসুরিটা সহনীয়। আরামদায়কও বটে। আমার মুখ তুলতে ইচ্ছে হলো না। উনার চুলগুলো মুষ্টিতে নিয়ে আরো ডুবিয়ে দিলাম নিজেকে। মনে হচ্ছে যেন ব্ল্যাক ফরেস্টে হারিয়ে যাচ্ছি। এ কেমন অন্যরকম অনুভূতি। উনার চুলের সুভাষে এক অদ্ভুত মাদকতার স্বাদ পাচ্ছি। কিছুটা সময় এক প্রকার ঘোরেই কেটে গেলো। বৃষ্টির ঝুমঝাম শব্দ থেমে গিয়ে টুপটাপ শব্দতরঙ্গ কানে আসছে এবার। সেই শব্দ জানান দিচ্ছে যে বৃষ্টি অনেকটাই থেমে গেছে। ঈশান হঠাৎই বলে উঠলেন—

চলো তারা!

কোথায়?

বাহিরে।

বলেই আমাকে কোল থেকে নামিয়ে গাড়ির দরজা খুললেন উনি। আমি কিছু আন্দাজ করার আগেই আমার হাত ধরে বেরিয়ে এলেন আবদ্ধ গাড়ির বিদঘুটে পরিবেশের বিপরীতে এক খোলামেলা চোখ জুড়ানো ঝিলপাড়ে । মনে হচ্ছে জায়গাটা কোনো ক্যান্টনমেন্ট এরিয়া। রাস্তাঘাট অসম্ভব পরিচ্ছন্ন। সাথে বৃষ্টির পানিতে যেন চিকচিক করছে মাটি। এমন রাস্তার মাঝখানে পা ছড়িয়ে বসে পড়া যায় নির্দ্বিধায়। ঈশান এখনো আমার হাত ধরে আছেন। ঝিলের কিছুটা সামনে এগিয়ে নিয়ে আমার দুই হাত মেলে ধরলেন উনি। কানের কাছে এসে ফিসফিসিয়ে বললেন–

কাদো।

কথাটা উনি যেই মুহুর্তে উচ্চারণ করলেন ঠিক তার পরমুহুর্তেই কেনো জানি চোখের পাতায় আর্দ্রতা অনুভব করলাম আমি। সঙ্গে সঙ্গে উনাকে ছেড়ে একটু দুরে সরে দাড়ালাম। উনি আমার চোখের দিকে তাকিয়ে আছেন। হয়তো আমার কান্নার অপেক্ষায়। আমি চোখের স্রোত ছেড়ে দিলাম এবার। কাদতে শুরু করলাম গলা ছেড়ে। চিৎকার করে। এক ঝিল পানিকে সাক্ষী রেখে কষ্ট গুলো ভাসিয়ে দিতে লাগলাম। হাটু গেড়ে বসে আর্তনাদ করছি সকল যন্ত্রণা বিসর্জন দেওয়ার চেষ্টায়। বিলাপের এই আর্তনাদ পর্ব বেশ কিছু সময় চালিয়ে যাওয়ার পর হঠাৎ ইচ্ছে হলো একবার পেছনে ফিরে দেখার। ঈশানও কি কাদছে আমার মতো? আমি দুই হাতে দুই গাল মুছে পেছন ফিরে তাকালাম। ঈশান দুই হাত ভাজ করে সোজা হয়ে দাড়িয়ে আছে। কান্নার লেশমাত্র জমেনি উনার চোখে। তবে মনখারাপের ছাপটা বেশ ভালোই বোঝা যাচ্ছে। আমি অশ্রুসজল চোখ নিয়ে উনার দিকে তাকিয়ে আরেকবার মুখ ভেঙে কেদে উঠলাম। এবার যেন আর সহ্য হল না উনার। এতোসময় ধরে হাসির আড়ালে চেপে রাখা গভীর কষ্ট গুলো জমে উঠল উনার চোখের ফাঁকে। কয়েক ফোটা জল গড়িয়ে পরল উজ্জল গাল বেয়ে। এই নির্মম দৃশ্য ঈশানের কান্নার দৃশ্য। যা জীবনে প্রথমবার দেখতে পাচ্ছি আমি। আমি এবার উঠে দাড়ালাম। এক দৌড়ে ঝাপিয়ে পড়লাম উনার বুকের উপর। তারপর আবার কান্না শুরু। এবার আমায় জড়িয়ে ধরে চাপা কান্না চালিয়ে যাচ্ছেন উনিও। আর আমি উপলব্ধি করছি। কষ্টময় উপলব্ধি। আমাকে কাদতে দেখলে উনারও কি এতোটাই কষ্ট হয়? যতটা এখন আমার হচ্ছে? ঈশান আমার দুই কাধ চেপে ধরে টেনে তুললেন আমায়। আমি মাথা তুলে উনার দিকে তাকিয়ে দেখলাম চোখ দুটো উনার লাল টকটকে হয়ে আছে। ফরসা মুখটায় গোলাপী আভা নেমে এসেছে। তার মধ্যে নাকের ডগাটা সম্পূর্ণ গোলাপী। আমি কান্নাভেজা চোখ মুছতে মুছতে উনাকে দেখছি। এখন মনে হচ্ছে উনাকে কাদাতে পেরেও আমি সার্থক। নাহলে কাদার পর যে উনার কিউটনেস এতোটা বেড়ে যায় সেটা জানা হতো না আমার। ঈশান গম্ভীর মুখ করে আমার চিবুক স্পর্শ করলেন। আমার মুখ কিছুটা উপরে তুলে আমার দিকে ঝুকে ভাঙা ভাঙা গলায় বললেন–

এটাই যেন শেষ কান্না হয় তোমার। এরপর আর কোনোদিন যদি তোমাকে কাদতে দেখি তাহলে কিন্তু আমার থেকে খারাপ আর কেউ হবে না। মনে থাকবে।

আমি কি বলবো বুঝতে না পেরে কান্নামাখা মুখেই হালকা করে হাসলাম। আমার হাসিতে সায় দিয়ে উনিও হাসলেন। আমি আরেকবার মাতাল হলাম উনার কান্নামিশ্রিত হাসি মুখের নেশায়…..

.

.

ডায়নার চিকন কণ্ঠের ডাকে ঘুম ভাঙল আমার। আধখোলা চোখ একটু কুচকে আশেপাশে তাকিয়ে দেখলাম সম্পুর্ন পুরো ঘরের চেহারা বদলে গেছে। অসংখ্য ফুলের সমন্বয় ছেয়ে আছে প্রতিটা ঘরের কোণা। এক কথায় অসাধারণ ডেকোরেশন করা হয়েছে। কিন্তু এসব কখন হলো? আমি টের পেলাম না কেনো। ধপ করে শোয়া থেকে উঠেবসে চোখেমুখে ডলা মেরে ডায়নার দিকে প্রশ্ন ছুড়লাম আমি—

এসব কখন হলো? এতো সুন্দর কে সাজিয়েছে ঘর?

ডায়না ঠোটের মাঝে দাগ কেটে হাসলো।

আমি আর রাকেশী সাজিয়েছি ম্যাম! কেমন হয়েছে? আপনার ভালো লেগেছে?

ভালো লেগেছে মানে? ভীষণ ভালো লেগেছে। পুরাই আউটস্টেন্ডিং৷ চমৎকার সাজিয়েছো।

ডায়না বড় করে হাসল– থ্যাংকিউ ম্যাম! কিন্তু তবুও টেনশন হচ্ছে। স্যারের পছন্দ হবে কিনা সেটাই ভাবছি।

স্যার মানে ঈশান?

জ্বী ম্যাম ( ঠোট উল্টে)

আরে হবে হবে। এতো সুন্দর ডেকোরেশন পছন্দ হবে না আবার? কিন্তু ঈশান কোথায়?

স্যার তো সেই ভোরবেলা বেরিয়েছেন। তারিফ স্যারের সাথে।

ভাইয়ার সাথে? কোথায় গেছেন?

আজকে বড় স্যার আর বড় ম্যাম আসছেন না? উনাদের রিসিভ করতে এয়ারপোর্টে গেছেন।

আমি মাথায় হাত রেখে জিভ কাটলাম– হায় আল্লাহ! আমি তো একদম ভুলে গেছি। রিসিভ করতে তো আমিও যেতে চেয়েছিলাম। আমাকে নিল না কেনো ওরা?

ম্যাম,,, স্যার ইচ্ছে করেই আপনাকে নেই নি। আপনি নাকি সিক। সেইজন্য।

আমি মুখ হালকা গোমরা করে বললাম– হুম।

ডায়না তাড়া দিতে দিতে বলল– ম্যাম আপনি এক কাজ করুন। এবার জলদি ব্রেকফাস্ট করে তৈরি হয়ে নিন। অলরেডি নয়টা বেজে গেছে। আর একটু পরেই শুরু হবে ওয়েলকাম পার্টি।

ওয়েলকাম পার্টি?

হুম! বড় স্যার আর বড় ম্যামকে ওয়েলকাম করতে হবে না? আপনার ড্রেস রেডি আছে ম্যাম। আপনি ফ্রেশ হয়ে আসুন। আমি ব্রেকফাস্ট নিয়ে আসছি।

আচ্ছা শোনো ডায়না!

জ্বী ম্যাম?

জায়মা কেমন আছে?

ভালো আছে ম্যাম!

আচ্ছা আমি যে ওর অ্যাবর্শনের কথা বলেছিলাম ওইটা হয়েছে?

না ম্যাম এখনো তো হয়নি। বাট আপনি বললে এখনি ডানা ফোন করে বলে দিব আমি।

না থাক। তার আর দরকার নেই। কাল আমি একবার জায়মার সাথে দেখা করতে চাই। তুমি নিয়ে যাবে আমাকে?

ডায়না কিছু একটা চিন্তা করে অপ্রস্তুত গলায় বলল– ওকে ম্যাম! (মাথা দুলিয়ে)
🍂

চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here