তোমাতেই পূর্ণ আমি পর্ব -০৩

#তোমাতেই পূর্ণ আমি
#পর্ব -৩
#লেখিকাঃআসরিফা সুলতানা জেবা

ভার্সিটির মাঠের মাঝখানে দাঁড়িয়ে আছি আমি।সকালের মিষ্টি রোদ এসে লাগছে চোখে মুখে। কিন্তু শাড়ি নিয়ে এই রোদে দাঁড়িয়ে থাকা খুবি বিরক্তির ব্যাপার।তার উপর চারদিকে মানুষের ছড়াছড়ি। আজ আমাদের নবীবরণ। প্রিয়ু মেয়েটা এতো জেদী যে শেষ পর্যন্ত আমায় শাড়ি পরিয়েই ছাড়ল। সাদার মধ্যে লাল পাড়ের একটা শাড়ি নিয়ে সকাল বেলা আমার বাসায় হাজির হয়েছে মহারানী। হাজার বার না করেও শেষ পর্যন্ত প্রিয়ু ও রীতি আপুর জেদের কাছে হার মানলাম আমি।নিজে সুখে না থাকি কিন্তু অন্য মানুষের মুখে তো একটু হলেও হাসি ফোটাতে পারি।আমাকে শাড়ি পড়িয়ে দুজন এমন ভাব করেছিল যেন অসাধ্য সাধন করে ফেলেছিলেন। দুজনের আনন্দিত ফেস টা মনে পড়তেই ভালো লাগা ছেয়ে যাচ্ছে এখনো। কাছের মানুষগুলো সবসময় ভালো থাকুক এটাই চাওয়া আল্লাহর কাছে।

না আর দাড়িয়ে থাকা সম্ভব না।রোদ টা কেও এই মুহুর্তে মিষ্টি লাগছে না।শাড়িটা ধরে নরম ঘাসের উপর দিয়ে হেঁটে এগিয়ে গেলাম কিছুটা দূরে থাকা শিউলি ফুল গাছটার নিচে।গাছের ছায়ায় দাড়িয়ে চারদিকে তাকিয়ে দেখলাম কিছু ছেলেমেয়ে আমার দিকে তাকিয়ে হাসছে।হাসার কারণ অবশ্যই আছে।নিজের পায়ের দিকে তাকালাম আমি।খালি পায়ে থাকা কি হাস্যকর?মানুষ কি সারাজীবন জুতা পায়ে দিয়েই থাকে?খালি পায়ে দেখলে কি কাউকে অন্য গ্রহের প্রাণী মনে হয় যে এভাবে তাকিয়ে থাকতে হবে?

কিছুক্ষণ আগে,,
মাঠের মাঝখানে এসে এক পায়ের জুতা ছিঁড়ে যায় আমার।খালি পায়ে দেখলে তো বাঙালি হাসবে আর সারাক্ষণ খালি পায়ে থাকা সম্ভব না। এখন কি করব বলতেই প্রিয়ু বলে উঠল,,

—দোস্ত এক কাজ করি আলতা নিয়ে আসি।সাদা লাল পাড়ের শাড়ির সাথে লাল আলতা বেশ মানাবে।

প্রিয়ুর এমন উদ্ভট কথায় অবাক হলাম আমি।কি বলছে কি এই মেয়ে?
–পাগল হয়েছিস তুই?আমার জুতা ছিঁড়ে গেছে আর তুই আলতার কথা বলছিস?কিসের সাথে কি মেলাচ্ছিস?আন্টি যে বলে তোর মাথা খারাপ একদম ঠিকি বলে।

— অনুষ্ঠান শুরু হতে তো আরো কিছু সময় বাকি আছে।দোস্ত তুই পাঁচ মিনিট দাঁড়া আমি দশ মিনিটে আসছি।

কথাটা বলেই প্রিয়ু তার শাড়ি আঁকড়ে ধরে কিছুটা দৌড়ের মতো করে চলে গেল।উফ পাগল মনে হয় এই মেয়ে।কি করব এখন আমি?একটু দাঁড়াই দেখি আসে কিনা।


গাছের ছায়ায় ভালোই লাগছে।কিছুটা বাতাস এসে গা ছুয়ে যাচ্ছে। খোলা চুলগুলো পিঠময় ছড়িয়ে আছে।এতে কিছুটা গরম অনুভব হচ্ছে। এইসব প্রিয়ুর কান্ড। মেয়েটা চুলগুলো পর্যন্ত বাঁধতে দিল না।দৌড়ে এসে প্রিয়ু আমার পাশে দাঁড়াল। হাতে শপিং ব্যাগ। খুব অবাক হলাম আমি।

—কী রে হাতে কি?

—তোর জুতো।

–আমার জুতো মানে?

–আরে তোর জন্য জুতো এনেছি।কিছুটা দূরেই তো একটা শপিং মল আছে।ওইখান থেকে কিনে নিয়ে আসলাম।সারাদিন তো জুতা ছাড়া হাঁটা পসিবল না।

–তুই কেন আবার কিনতে গিয়েছিস?বাসায় তো একজোড়া জুতা আছে প্রিয়ু।

–কি সারাদিন তুই জুতা ছাড়া থাকবি?নো নেবার। প্রিয়ুর কলিজার দোস্ত জুতা ছাড়া হাটবে আর প্রিয়ু জুতা পড়ে হাঁটবে হতেই পারে না।

প্রিয়ুর কথায় ফিক করে হেসে দিলাম আমি।মেয়েটা মানুষ কে হাসানোর জন্য পটু।

–দে জুতা দে। এখানে দাড়িয়ে থাকব নাকি?শাড়িতে গরমে খারাপ লাগছে।

জুতাগুলো পরে সামনের দিকে যাবো প্রিয়ু পিছন থেকে ডেকে উঠল।

–আবার কি হয়েছে প্রিয়ু?

–আলতা এনেছি দোস্ত।(দাঁত কেলিয়ে)

প্রিয়ুর কথায় অবাক হলাম আমি।

–এখন আলতা পড়ার সময়?আর মাঠের মাঝখানে আলতা পড়ব আমি?

–মাঝখানে কেন পড়বি?ওই যে বেঞ্চ টা দেখা যাচ্ছে ওইখানে বসে ঝটপট লাগিয়ে নিবি।(হাত দিয়ে দেখিয়ে)

—ঠিক আছে চল।


বেঞ্চিতে পা উঠিয়ে বসতেই প্রিয়ু খুব সুন্দর করে আলতা লাগিয়ে দিল আমার এক পায়ে।

—বাহ্ আলতা রাঙা পা খুব সুন্দর লাগছে তো।

–আপনি দিয়ে দিচ্ছেন ম্যাডাম সুন্দর তো হবেই।

–অন্য পা টা এগিয়ে দিন।


“ইউনিভার্সিটি আজকাল আলতা লাগানোর জায়গাতে পরিণত হয়ে গেল।”

কথাটা শুনেই মাথা তুলে তাকালাম আমি আর প্রিয়ু।তূর্য,আয়ুশ,নিশি আপু,,মিথি আপু,ফুহাদ ভাইয়া দাঁড়িয়ে। ঠেস মারা কথাটা শুনে আমার আর বুঝার বাকি রইল না যে বদমেজাজী তূর্য ভাইয়া ছাড়া এই কথাটা আর কেউ বলতেই পারে না।পা টা বেঞ্চ থেকে নামিয়ে উঠে দাঁড়ালাম আমি।আমার পাশাপাশি প্রিয়ু ও দাড়িয়ে পড়ল।আমার দিকে তীক্ষ্ণ নজরে তাকিয়ে আছে তূর্য ভাইয়া। এভাবে তাকিয়ে আছেন কেন তিনি?আবার অন্য কোনো ফন্দি আঁটছে নাতো?এমনিতেই তিনদিন ধরে ডান্স প্রেকটিস করতে করতে আমি শেষ।চোখ তুলে ওনার দিকে তাকালাম ।এখনো তার দৃষ্টি আমার দিকে।কালো একটা পাঞ্জাবি পড়ে এসেছেন তিনি।পাঞ্জাবি তে খুব সুন্দর লাগছে অহংকারী তূর্য সাহেবকে।ওনার বাঁকা কথায় ওনার দিক থেকে চোখ নামিয়ে নিলাম আমি।

–শুধু আলতা পড়ে ছেলেদের দেখিয়ে হেঁটে বেড়ালে হবে নাকি ডান্স ও শিখেছ মিস শ্রেয়সী ? ইউ নো না আজ নাচ না করলে কী কী হতে পারে?(হেঁসে)

চোখ দুটো ছলছল করে উঠল আমার।মিথ্যা অপবাদ দিলেন ওনি আমায়।স্কুল,,কলেজ জীবন পার করে আসলাম কিন্তু কখনও একটা ছেলে ফ্রেন্ড ও বানায় নি।এতো সুন্দর একটা মানুষের মন চিন্তা ভাবনা এমন কেন?আর এসব ভেবে লাভ নেই। যে যেমন তেমনই তো করবে।আজ নাচ করে নিজেকে ওনার কাছ থেকে উদ্ধার করতে পারলেই হলো।আর কখনো ভুলেও এদের সামনে পড়ব না।

—জ্বী ভাইয়া শিখেছি।আর আজ আমি অবশ্যই নাচব।

কথাটা বলে ওনার সামনে থেকে চলে আসব তখনি আয়ুশ ভাইয়ার ডাকে থেমে গেলাম।হেসে আমার দিকে এগিয়ে এল আয়ুশ ভাইয়া।নীল পাঞ্জাবি তে তাকেও বেশ ভালো লাগছে।পাশ থেকে প্রিয়ু খামচে ধরল আমার হাত।এই মেয়ের আবার কি হল?এই মেয়ের মতিগতি বুঝা বড় দায়।

—জেরি ইউ আর লুকিং সো পিটি।সাদা তে তোমায় খুব সুন্দর লাগে।
—ধন্যবাদ ভাইয়া।আপনাকেও ভালো লাগছে।–হেসে বললাম।


অনুষ্ঠানে যেখানে হচ্ছে সেখানে এসে উপাস্থিত হলাম আমি ও প্রিয়ু।চেয়ারে বসতেই পাশ থেকে ফিহা বলে উঠল,,দেখ না আজকাল মানুষ বিধবা হয়ে ও লাজ লজ্জা ভুলে সেজে বেড়ায়।প্রিয়ু চিল্লিয়ে বলল,,–তোমার এতো চুলকানি হলে চোখ বন্ধ করে রাখো।

—ইউ ইডিয়ট গার্ল।
—তুমি মনে হয় খুব সভ্য মাইয়া তাই না চুলকানি আপা?

প্রিয়ুর হাতটা চেপে ধরে বললাম,,–প্লিজ প্রিয়ু এখানে জগড়া লাগিস না।আমি কিন্তু এমন করলে চলে যাবো।
থেমে গেল প্রিয়ু।আমার দিকে তাকিয়ে বলল,,–আচ্ছা দোস্ত আমাকে কেমন লাগছে?
–একদম নীলপরী লাগছে তোকে প্রিয়ু বেবী।
–সত্যি বলছিস?
–একদম।
–তাহলে আরেকটা সত্যি কথা বলবি?

প্রিয়ুর দিকে ভ্রু কুঁচকে তাকালাম আমি।
–কেমন সত্যি কথা?
–তোর পায়ে এখনো ঐ পায়েল টা কেন শ্রেয়া?

চমকে উঠলাম আমি।কাঁপা কাঁপা কন্ঠে বললাম,,
–কোন পায়েল টা প্রিয়ু?
–ঐ পায়েল টা যে তোর অচে,,,,

প্রিয়ুর মুখে হাত দিয়ে আটকে দিলাম আমি।কোনো কিছুই আর শুনতে চাই না অতীতের কথা।এখনো মাঝ রাতে মনটা বড্ড কেঁপে উঠে। সেই মায়াভরা কথাগুলো মনে পড়ে যায়।মনে পড়ে যায় সেই অসম্পূর্ণ স্মৃতি গুলো।যা স্মৃতির পাতায় কখনও সম্পূর্ণ হয়ে ভেসে উঠে নি।

—এখন এসব বলার সময় না প্রিয়ু।অনুষ্ঠান শুরু হয়ে গেছে।অতীত তো অতীতই।আর এইসব ঘাঁটার কোনো প্রয়োজন নেই।
—তবে যাই বলিস শ্রেয়া আমার বড্ড ইচ্ছা একবার তাঁকে দেখার।আচ্ছা তোর ইচ্ছে করে না?যেই ব্যাক্তি এতো সুন্দর পায়েল দিতে পারে না জানি সে কতো সুন্দর হবে।

প্রিয়ুর কথায় বুকটা ধুক করে উঠল আমার।মনে অশান্তির ঝড় বয়ে যেতে লাগল।না আর কোনো ভাবেই সেই অতীত মনে করতে চাই না।স্মৃতির পাতায় থাকুক সে।বাস্তবে যেন আর কখনও দেখা নাহয় তার সাথে।

—আবার শুরু করেছিস? আমি কিন্তু চলে যাবো।
–আচ্ছা সরি সরি।

অনুষ্ঠান শুরু হয়ে গেল।উপস্থাপন করছেন আয়ুশ ভাইয়া।কিছু কিছু মেয়ে তার দিকে চোখ বড় বড় করে চেয়ে রয়েছে। সিনিয়র আপুরা ফুল দিয়ে বরণ করে নিলেন আমাদের।একের পর এক বক্তব্য দেওয়া শেষ।এবার শুরু হবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। সবাই খুব ভালো গাইছেন।তূর্য চৌধুরীর নাম এনাউন্সমেন্ট করতেই সব মেয়েরা নিজেদের মেকআপ ঠিক করতে লাগল।মনে হয় কোনো রকস্টার আসছে।উফফ ঢং দেখলে বাঁচি না।অ্যাটিটিউড নিয়ে স্টেজে এলেন তিনি।মুচকি হেসে সবাইকে রিলেক্স হতে বললেন।

—রিলেক্স গাইস।আজকের গানটা খুব স্পেশাল। আশা করি সবাই মনোযোগ দিয়ে শুনবেন।দিস সং ইজ ডেডিকেট ফর সামওয়ান।

একজন চিল্লিয়ে বলে উঠলেন–সেই মানুষ টা কে ভাইয়া?
তিনি মুচকি হেসে জবাব দিলেন–হয়তো এখানে উপস্থিত কেউ।
ওনার কথায় হাত তালি দিলেন সবাই।বাহ্!ওনার আবার বিশেষ কেউ আছে!যেই মেয়েই ওনার বিশেষ কেউ নিশ্চিত কপাল পুড়েছে তার।হঠাৎ -ই আমার দিকে তাকিয়ে তিনি গাইতে শুরু করলেন,,,

“কি করে তোকে রাখব ধরে বল না তুই আমায়
কত ভালোবাসা কত সুখে ভাসা কেন সবই বদলে যায়
ওও কি করে তোকে রাখব ধরে বল না তুই আমায়
ওও কত ভালোবাসা কত সুখে ভাসা কেন বদলে যায়
এক অচেনা ঝড়ে সব ভেঙে পড়ে বরবাদ হয়ে যায় মন
কেমন করে বল থাকবি দূরে হৃদয়ে তুই সারাক্ষণ
ওও কেমন করে বল থাকবি দূরে হৃদয়ে তুই সারাক্ষণ,,,,

পুরোটা গান গাওয়ার সময় ওনি এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে ছিলেন আমার দিকে।ওনার এই মোহময় দৃষ্টিতে কেমন যেন হারিয়ে যাচ্ছি আমি।এ কোন তূর্য?অন্যরকম লাগছে ওনাকে।মনে হচ্ছিল গানটা আমার জন্যই গাওয়া।এতো সুন্দর গান ওনি।সবার করতালিতে সম্মতি ফিরে আসল আমার।পাগল হয়ে গেছি আমি।ওনি কেন আমার জন্য গাইতে যাবেন।ওনি তো ওনার স্পেশাল মানুষটার জন্য গেয়েছেন।এখন নাচের পালা।পাঁচ নম্বরে আমার সিরিয়াল আসবে।তিনটা নাচ শেষ। শাড়ি টা কেমন যেন লাগছে।নাচের আগে একবার ঠিক করে নিলেই ভালো হবে।প্রিয়ু কে জানিয়ে পা বাড়ালাম ক্লাস রুমের দিকে।আচমকা আমার হাত ধরে খুব শক্ত করে টান দিল কেউ। আমি হুমড়ি খেয়ে পড়তে গিয়েও বেঁচে গেলাম।রুমটা পুরো অন্ধকার। মনে হচ্ছে বহুদিন দরজা জানালা কিছুই খোলা হয় না।বাহিরের ঝাপ্সা আলোয় পিছন ফিরে দেখতে যাব তার আগেই পিছন থেকে আমার চোখ দুটো বেঁধে দিল কেউ। হাত দিয়ে সরাতে যাব পিছন থেকে হাত দুটো মুচড়ে ধরে দেয়ালে ঠেসে দাঁড় করাল আমায়।হাতের ব্যাথায় মৃদু আওয়াজ করে উঠলাম ।ভয় হচ্ছে খুব বেশি।কাঁপা কাঁপা স্বরে প্রশ্ন করলাম,,,
–কককককে আপনি?
তখনি আমার কানের কাছে লো ভয়েসে কেউ বলে উঠল-হুশশশ,,একদম চুপ।

হৃদপিণ্ড প্রচন্ড বেগে স্পন্দিত হতে লাগল।মানুষ টা আমার একদম কাছে উপলব্ধি করতে পারছি আমি।তার স্লো ভয়েসে সারা শরীরে শিহরণ বয়ে যাচ্ছে। আবারও কানের কাছে মুখ নিয়ে বললেন,,,,

—শাড়ি ঠিক করে পরতে পারো না শুভ্রপরী?পরতেই যখন পার না তাহলে শরীরে শাড়ি রাখার কি দরকার।খুলেই ফেলি।

আঁতকে উঠলাম আমি।সত্যিই আবার খুলে ফেলবে নাতো?অনেক কষ্টে বললাম,,,

—প্লিজ শাড়ি,,,

ঠোঁট দুটো তে কারো স্পর্শ পেয়েই কেঁপে উঠলাম।অসমাপ্ত রয়ে গেল মুখের কথা।স্পর্শ আস্তে আস্তে গভীর হতে লাগল।ঠোঁট দুটো সামনে উপস্থিত থাকা মানুষটা দখল করে নিল।হাত ছাড়ানোর চেষ্টা করছি বারবার কিন্তু বরাবরই ব্যার্থ হচ্ছি।ঠোঁটে ওনার ছোয়া বেড়েই চলছে।আমার দু চোখ বেয়ে জল গড়িয়ে পড়তে লাগল।কে এমন করছে আমার সাথে?সাথেই সাথেই কোমড়ে স্পর্শ পেলাম ঐ মানুষটার।এতো জোরে খামচে ধরেছে মনে হচ্ছে নখ বিঁধে যাচ্ছে। ঠোঁট সরিয়ে গলায় মুখ ডুবাল লোকটা।ঘনঘন নিঃশ্বাস ফেলছি আমি।সেই মানুষটার গরম উত্তপ্ত নিশ্বাস ও গলায় পড়ছে।কোমড়ের অসহ্য যন্ত্রণায় চোখের জল ক্রমশ বেড়েই যাচ্ছে।বাহির থেকে ভেসে আসছে আমার নাম নাচের জন্য।

–তুমি নাচবে না শুভ্রপরী।কারো নজরই তোমার উপর পড়তে দিব না আমি।কতো বড় সাহস তোমার কোমর দেখিয়ে শাড়ি পড়েছিলে একদম মেরে ফেলব তোমায়।কোমড়ের এই অসহ্য যন্ত্রণা টা তোমার শাস্তি। পরের বার শাস্তি টা হয়তো আরো কঠোর হবে।

কানের কাছে স্লো ভয়েসে কথাগুলো বললেন অচেনা মানুষটা। মুখের কাছে আর কারো গরম নিশ্বাস এসে পড়ছে না। হঠাৎ -ই অনুভব করলাম আর কারো অস্তিত্ব টের পাচ্ছি না।বাধন খুলে চোখ মেলে সামনে তাকিয়ে দেখলাম কেউ নেই। হাঁটু ভেঙে ফ্লোরে বসে পড়লাম আমি।হৃদপিণ্ডে ঝড় এখনো বয়ে যেতে লাগল।অসহায় লাগছে নিজেকে অনেক।চোখের সামনে ভেসে উঠল পুরোনো সেই স্মৃতি,,,

চলবে,,,,

(ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here