তোমাতে আসক্ত পর্ব ৯+১০

#তোমাতে আসক্ত
#নাহিদা ইসলাম
#পর্ব ৯

অভ্র আমার হাতের দিকে তাকিয়ে, অভ্রের হাতটা ছাড়িয়ে নেয়। আমি শুধু অভ্রের দিকে তাকিয়ে আছি। আমাকে এভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে অভ্র বললো,

–সামান্য একটু ভালো ব্যবহার করছি বলে মনে করবেন না আমি আপনাকে মেনে নিয়েছি। শুধু অন্যের বাড়িতে আছি তাই কিছু বলছি না।

–বাহ্ জিএফ এর কথা বলতে তো বেশ রেগে গেলেন

অভ্র আর কোনো কথা না বলে বাহিরে চলে গেলেন।আমি ও দরজা হালকা চাপিয়ে শুয়ে পড়লাম, যদি কিছুর প্রয়োজন পড়ে তাহলে এসে নিয়ে যেতে পারে।

বহিরে যেমন অন্ধকার, রুমের ভিতরে তেমন নিরবতা। মিহির খুব মন খারাপ হচ্ছে এতো করে একটা মানুষকে বলার পর ও কেনো এতো রাগ দেখিয়ে চলে গেলো। তাহলে কী অভ্রের সত্যি ই গার্লফ্রেন্ড আছে। যদি থাকতো ই তাহলে কেনো আমাকে ই বিয়ে করলো। ঐসব ভেবে কী আর আমার লাভ আছে, যেমন দিন যাচ্ছে, তেমন যেতে দেই। সময় মতো সব জানা যাবে। বলে ই শুয়ে পড়লো মিহি।

পাখির কিচিরমিচিরের শব্দ ঘুম ভাঙ্গলো মিহির। উঠে জানালা খুলে বাহিরে তাকাতে ই দেখলো, দেওয়াল ঘেঁষে দাড়িয়ে থাকা আম গাছটায় দোয়েল,শালিকের সংসারিক আলাপে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে তারা। খুব সুন্দর লাগছে, তাদের ভাষা বুঝতে পারলে হয়তো আরো ভালো লাগতো।

এসময় অভ্র রুমে প্রবেশ করলো,

–রেডি হয়ে নিন।

অভ্র কে দেখে মিহি কোনো কথা না বলে জানালা থেকে সরে দাড়ায়। ফ্রেশ হয়ে অভ্রের সাথে কোনো কথা না বলে ই নাস্তার টেবিলে চলে যায়।

–কী হলো মিহি অভ্রকে নিয়ে আসলি না।

—পারবো না।

–তুই এমন কেনো মিহি, জামাই এর দিকে একটু খেয়াল রাখতে পারিস না।

–উনি বাচ্চা না, যে আমার কোলে নিয়ে হাটতে হবে।

—আপনার কোলে উঠার বড্ড শখ আমার আমায় একটু কোলে নিন।

অভ্র টেবিলে বসতে বসতে বললো, মিহি হাসি মুখে উওর দিলো।

–এমন শখ পূরন করতে হলে এমন হাতির বাচ্চাকে কোলে নিয়ে সাথে সাথে কোমায় চলে যেতে হবে।

–হাতির বাচ্চা কাকে বললেন।

মিহি চোখ বড় বড় করে বলে, হায়রে আবার কী বলতে কী বলে ফেললাম।

–না, আম্মু বলছিলো একটা হাতির বাচ্চা পালবে তো আমি বললাম হাতির বাচ্চা কোলে নিলে আমি কোমায় চলে যাবো।

অভ্র এবার মিহির মার দিকে তাকায়। মিহির মা মুখ টিপে টিপে হাসি মেয়ের কথা শুনে।উনি রান্না ঘরে চলে গেলেন।

–কাকে যে হাতির বাচ্চা বলছেন তা তো বেশ ভালো ই বুঝেছি, বাসায় যাই তারপর বুঝাবো।

–কার সাথে পাঙ্গা নিবেন, বুঝে নিয়েন।

অভ্র মেকি হাসি দিয়ে খাবার মুখে দেয়।
মিহি খাবার শেষ করে রেডি হয়ে নেয়। অভ্র রেডি হয়ে গাড়িতে চলে যায় আগে ই। মিহি মা বাবার কাছ থেকে বিদায় নেয়। যেতে ইচ্ছে করছে না, বার বার কান্না পাচ্ছে তাও কান্না চেপে রেখে বাসা থেকে বের হয়ে যায়।

বাসা থেকে বের হয়ে কিছু দূর যেতে ই পিছন থেকে মিহির মা ডাক দেয়।

—মিহি দাড়া।

–হে মা কিছু বলবে।

–তোর বাবা, অভ্র সব সময় সামনে ছিলো তাই জিজ্ঞেস করতে পারিনি। তোর আর অভ্রের মধ্যে কী কোনো জামেলা হয়েছে। বিয়ের মাত্র চারদিন হলো কী বা জামেলা হবে এটা ও ভাবছি।

–না মা কিছু না।

–তাহলে অভ্রে জানি কেমন লাগছে।

–ঐসব কিছু না মা, যাই আমি,।শুধু এইটুকু করো আমি যদি তোমাদের কাছে ফিরে আসি তাহলে আমাকে ফিরিয়ে দিয়ো না।

কথাটা বলে ই গাড়িতে গিয়ে বসলাম।অভ্র আমার দিকে তাকিয়ে বললো,

–আমাকে কী আপনার ড্রাইভার মনে হয়। পিছনে বসেছেন কেনো।

–আমার ইচ্ছে আমি কোথায় বসবো।

–সামনে আসুন

—আসবো না।

–সমস্যা কী আপনার।

–আমার সাথে পাশাপাশি ঘুমাতে পারেন না। তো বসতে পারবেন কীভাবে। আমি আপনার স্পর্শে আসতে চাই না।

অভ্র আর কোনো কথা না বাড়িয়ে গাড়ি চালাচ্ছে। মিহি যেমন অল্পতে ই অনেক খুশি হয়,। ঠিক অল্পতে অনেক কষ্ট ও পায়। বাহিরের দিকে তাকিয়ে নিয়তির এই খেলার জন্য কান্না করছে মিহি। একদিনের মধ্যে নিজের জীবনের বিশাল পরিবর্তনট মনে নিয়ে ও কষ্টে থাকতে হচ্ছে। তাও মুখে হাসি ফুটিয়ে রাখার চেষ্টা করবো সর্বদা।

________________

বাসার ভিতরে ডুকে ই মিহি সবার সাথে কথা বলায় ব্যস্ত হয়ে গেলো। মিনতি, মিহির কাছে এসে জিজ্ঞেস করলো,

–মা, বাবা কেমন আছে মিহি। আর তুই না বলেছিস আসবি না।

–ভালো আছে। তা আমাকে মিহি বলে ডাকিস কেনো আমি তোর বড় জ্যা মনে রাখিস।

–তোকে আমি ভাবি ডাকবো।

–ভাবি ডাকবি কিনা তোর ব্যাপার, সম্মান দিবি বুঝলি।

মিনতি বড় বড় চোখ করে আমার দিকে তাকিয়ে আছে। আমি ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে উপরে দাদিমার রুমে গেলাম।

–কীরে তুই নাকি বলেছিস আসবি না, আমরা কী তোকে আদর কম করি।

–দাদিমা আমাকে দেখে ই এই কথা বলা শুরু করলে, আগে বলো কেমন আছো।

–ভালো, আমার নাতি তো বউকে চোখে হারায়।

–কোন নাতি।

–কোন নাতি আবার অভ্র

–তাই নাকি, তা কিভাবে বুঝলে বউকে চোখে হারায়।

— কালকে যখন শুনলো তুই আসিস নাই, সাথে সাথে চলে গেলো তোকে আনার জন্য। খুব ভালোবাসে তোকে মিহি।

অভ্রকে দাদির রুমে আসতে দেখে বললাম,

–হে দাদিমা তোমার নাতি যা রোমান্টিক, কী আর বলবো লজ্জা ই লাগে।

–মিহি কী বলছেন এসব।

–দাদিমাকে সত্যিটা বলছি।

উনি কোনো কথা না বলে আমার হাত ধরে টেনে রুমে নিয়ে আসলেন। আমি হ্যাচকা টান দিয়ে হাত সরিয়ে নিলাম। দ্রুতগতিতে আলমারি থেকে ড্রেস নিয়ে ওয়াশরুম চলে গেলাম।

ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে দেখলাম উনি আমার ফোনে কি একটা করছে। আমি দেখে ও না দেখার বান করে ড্রেসিংটেবিলের সামনে চুল ঠিক করতে লাগলাম। উনি আর চোখে আমাকে দেখছেন।এটা দেখে আমি অন্য দিকে ফিরে বসে পড়লাম।

আমাকে অন্য দিকে ফিরতে দেখে উনি আমার সামনে এসে বসেন। আমি এখান থেকে উঠে জানালার পাশে গিয়ে দাড়াই। আমাকে জানালার পাশে যেতে দেখে অভ্র আমার সামনে গিয়ে মুখ চেপে ধরে বলে

–আমাকে ভাব দেখাছিস, সকাল থেকে কোনো কথা জিজ্ঞেস করলে বাঁকা উওর দিচ্ছিস কেনো।

আমার মুখ ছেড়ে দিয়ে ধীরে ধীরে আমার অনেকটা কাছে চলে এসেছে। ভয়ে আমার
প্রাণ বেরিয়ে যাওয়ার অবস্থা….
#তোমাতে আসক্ত
#নাহিদা ইসলাম
#পর্ব ১০

এখন ভয় পাচ্ছিস কেনো। আমি যেভাবে বলবো তোকে ঐভাবে ই থাকতে হবে।

কথাটা বলে সাথে সাথে আমাকে ছেড়ে দিয়ে বেলকনিতে চলে গেলো। আমি ও আর কিছু বললাম না। রুমে থেকে বের হয়ে নিচে চলে আসলাম।

নিচে অনেক হাসাহাসি শব্দ শোনা যাচ্ছে, আমি নিচে গিয়ে জিজ্ঞেস করলাম,

–কী হইছে মিনতি এতো হাসতেছিস কেনো।

–সবাই মিলে সিলেটে ঘুরতো যাবো।

–সত্যি, তাহলে আমি ও যাবো।

–জ্বি নাহ্। আপনি অভ্র ভাইয়া যাচ্ছেন না ভাবি।

–মিনতি তুই এভাবে বলছিস কেনো, আর ভাবি ডাকা বন্ধ কর।

— তুই না একটু আগে বললি তোকে সম্মান দেওয়ার জন্য।

–এগুলো বাদ দিয়ে বল তো, কবে যাচ্ছি।

–কালকে সকালে সবাই মিলে যাবো শুধু তুই আর অভ্র ভাইয়া বাদে।

এবার আমি অভ্রের মার কাছে গিয়ে বললাম,

–আম্মু আমি তোমাদের সাথে যাবো।

–নাহ্। অভ্র আমাদের সাথে কোথাও ঘুরতে যায় না তাই তুমি বাসায় থেকে অভ্রের কী প্রয়োজন তা দেখবে।

–আম্মু উনারটা উনি একা ই করতে পারবে। আমি তোমাদের সাথে যাবো।

হাজার বলে ও লাভ হলো না,আমি ঘুরতে কতো ভালোবাসি কিন্তু এই অভ্র বজ্জাতটার জন্য আর যাওয়া হলো না। কান্না পাচ্ছে খুব।

আচ্ছা অভ্রকে গিয়ে রাজি করালে তো আমাকে ওরা সাথে নিয়ে ও যেতে পারে। তাই আর দেরি করলাম না দ্রুত রুমে গেলাম।
দেখলাম অভ্র ফোনো কিছু একটা করছে,গুটিগুটি পায়ে এগিয়ে গিয়ে বললাম,

–বাসার সবাই সিলেট যাচ্ছে। আপনার জন্য আমাকে ওরা নিয়ে যেতে চাচ্ছে না তাই আপনি একটু বলে দেন, আমাকে নিয়ে যেতে।

–সবাই চেয়েছিলো তোমাকে নিয়ে যেতে।

–তারপর

–আমি নিষেধ করেছি,আমি যাবো না তো আমার বউ ও যাবে না।

–এই আপনি সব সময় আমার পাকা ধানে মই দিতে আসেন কেনো। অসহ্য। আপনার কী খেয়ে আর কোনো কাজ নেই নাকি।

আমি হাতের আঙ্গুল ঘুরিয়ে কথাগুলো বলছি অভ্র হঠাৎ আমার আঙ্গুটা মুখে নিয়ে আলতো করে একটু কামড় দিয়ে ছেড়ে দিলো।

আমি পাঁচ মিনিট ফ্রিজ হয়ে দাড়িয়ে ছিলাম।আর এই পাঁচ মিনিটে উনি আমার সামনে থেকে উধাও হয়ে গিয়েছে। অভ্রের ছোয়াতে আমি নিজের মধ্যে থাকি না। মানুষটাকে বুঝি না জোর করে বিয়ে করলো। এই ভালো এই খারাপ ঠিক হঠাৎ বৃষ্টির মতো।।
_____________________________

বিকেল বেলা বেলকুনিতে বসে আছি, বাহিরে বাগানের দিকে তাকিয়ে। বাহিরে গোলাপ গাছের গোলাপ ফুলগুলো সূর্যের হালকা আলোয় মনখুলে হাসছে মনে হচ্ছে। ফুলকে তো সবাই ভালোবাসে৷ আমি ও যদি ফুলের মতো হতে পারতাম তাহলে আমাকে ও সবাই ভালোবাসতো।

–ভাবি।

ডাকটা শুনে পিছনে ঘুরে দেখলাম, অনি।

–ভাবি তোমাকে কখন থেকে খুজতেছি।

–হে, বলো

–আমরা সবাই মিলে ট্রুথ অর ডেয়ার খেলবো। অভ্র ভাইয়াকে ও অনেক কষ্ট রাজি করিয়েছি খেলার জন্য, প্লিজ তুমি ও আসো।

–আচ্ছা চলো।

–তার আগে তোমাকে একটা কাজ করতে হবে।

–কী কাজ?

–আম্মু বলেছে তোমাকে আম্মুর সাথে দেখা করার জন্য।

আমি রুমের ভিতরে ডুকে দেখলাম অভ্রের অনেকগুলো কাজিন বসে আছে আর অভ্র লেপটাবে কাজ করছে। আমি সবার সাথে কথা বলে নিচে যেতে লাগলাম। আম্মুর রুমে গিয়ে জিজ্ঞেস করলাম,

–আম্মু ডেকেছো আমায়।

–হে, আমরা তো কালকে সকালে চলে যাবো।

–হুম।

–তুমি অভ্রের খেয়াল রেখো। আমি কাজের লোককে বলে দিয়েছি। ও সকালে রান্না করে দিয়ে চলে যাবে বাকি কাজগুলো তুমি করে নিয়ো।

–ঠিক আছে মা, আমি যদি আপনার ছেলেকে রাজি করাতে পারি।

–দেখো পারো কিনা আমি তো কখনো পড়লাম না আমার ছেলেকে সাথে করে কোথাও ঘুরতে নিয়ে যেতে। আমি কী কারো কথায় ই যায়নি

–হে মা আমি একবার চেষ্টা করে দেখি।

এটা বলে ই উপরে চলে গেলাম, দেখলাম সবাই আমার জন্য ওয়েট করতেছে। আমি যেতে ই অভ্র উঠে ওদের সাথে যোগ দিলো।

অভ্রের আর অনির মাঝখানে আমার জায়গা দিলো। চুপ করে বসলাম। সামনে একটা টেবিল রাখা হলো, টেবিলে উপর বোতল রাখা হলো,
ফাস্ট ঘুরানো পর ই অনির দিকে বোতলের মুখ পড়লো,

–অনি বলো ট্রুথ ওর ডেয়ার।

–ট্রুথ

–বলো কয়টা রিলেশন করেছো।

–একটা ও না ভাবি তোমার জামাই সব সময় আমার পিছনে লোক লাগিয়ে রাখতো আমি কখনো রিলেশন করতে পারিনি। এখন তো আমি বিবাহিত ই, জামাই বেচারা ও বিদেশ।

–খুবই দুঃখজনক অনি, এবার আবার খেলা শুরু করো।

এবার বোতলের মুখ অরুর দিকে পড়লো, অরু আয়ুশি অভ্রর কাজিনদের নাম।

–অরু ট্রুথ অর ডেয়ার।

–ট্রুথ

–তোমার ক্রাশের নাম কী।

–তোমার জামাই অভ্র ছিলো।

সবাই অরুর কথাশুনে হাসছে, অভ্র আমার দিকে তাকিয়ে বললো সবারটা তো আপনি দিচ্ছে মিহি। আপনার ট্রুথ অর ডেয়ার আমি দিবো।

–ওকে।

এবার বোতল ঘুরানোর পর অভ্রের দিকে আসলো,

–পেয়েছি এবার, ট্রুথ অর ডেয়ার। সবগুলো ভাই বোন তো ট্রুথ ই নিচেছে, আপনি কী আর ডেয়ার নিবেন।

–ওহ, তাই নাকি তাহলে আমি ডেয়ার ই নিলাম।

–আপনি এখন আম্মুকে গিয়ে বলবেন আমরা কালকে সিলেট যাচ্ছি সবার সাথে।

–নাহ্।

–সাহস থাকলে বলে আসেন। খেলার নিয়ম অনুযায়ী এটা আপনাকে করতে হবে।

–আমি আম্মুকে কখনো মিথ্যা বলি না।

–মিথ্যা বলতে বলছে কে। আমরা কালকে যাবো সিলেট।

আপনার খুব ইচ্ছে না যাওয়ার আচ্ছা ঠিক আছে আমরা যাবো।

অভ্র আস্তে আস্তে মিহির কানেকানে গিয়ে বললো, আপনার যে সবার সামনে কী হাল করি বুঝবা।

এবার বোতলের মুখটা মিহির সামনে এসে পড়লো,

অভ্র হাসি মুখে বললো,

–সবাই চুপ কর, মিহিকে আমি ডেয়ার দিবো।

আবার আমার কানের কাছে এসে বললো, সবার সামনে অভ্রকে কিস করার জন্য।
আমি অভ্রের দিকে বড় বড় চোখ দিয়ে তাকিয়ে আছি। কর করবো এখন…..

চলবে

[ভুলগুলো ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন আজকে অনেক ব্যস্ত ছিলাম কী লিখেছি পরে আবার পড়ে দেখিনি]
চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here