” মিষ্টি আপু আজ বাড়িতে কেউ নেই,শুধু তুমি আর আমি ছাড়া।এসেছো ভালোই হয়েছে,আমরা আজকে অনেক আড্ডা দিবো।বাইরে কেনো? ভেতরে এসো ”
টিউশনি করাতে এসে স্টুডেন্টের এরুপ কথা শুনে আমি হকচকিয়ে গেলাম।বাড়িতে কেউ নেই,এখন যাওয়া কি ঠিক হবে?। আমতা আমতা করে বিষন্নকে বললাম
” বাড়ির সবাই কোথায় গেছে? ”
” বাবাতো অফিসে,মা আর আপু গেছে দাদুকে দেখতে, তিনি হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েছে তো, ”
” তুই যাস নি যে ? ”
” অসুস্থ ব্যাক্তিকে দেখতে আমার ভালোলাগে না, তুমি এখনো দারিয়ে আছো কেনো ভেতরে এসো তো ”
” আজ নাহয় থাক বিষন্ন,কাল পড়াতে আসবো ”
” ধুর আসো তো ”
বলেই আমার হাত ধরে টেনে ঘরে নিয়ে আসলো বিষন্ন। আমি বারবার বলছি যে ” বিষন্ন ছাড়,আমি নিজেই যাচ্ছি,এভাবে হাত ধরে টানতে হবে না “। তবুও ও হাত ছাড়লো না।হাত শক্ত করে ধরে ডিরেক্ট ওর বিছানায় বসিয়ে দিয়ে বললো
” আপু আজ আমি আমার ঘরেই পড়বো,তুমি বসো,আমি এক্ষুনি আসছি ”
আমি থম মেরে বসে আছি বিছানায়।মনে মনে একটু ভয় হতে লাগলো।ভয়ের কারন হলো এখন বাড়িতে কেউ নেই,আর আমি একটা ছেলের রুমের বিছানায় বসে আছি।বিষয়টা খুব বাজে দেখাচ্ছে।বিষন্ন হলো আমার বেস্টফ্রেন্ড নীলুর ছোট ভাই।বিষন্ন এইবার ইন্টার ফাস্ট ইয়ারে উঠেছে।আর আমি ইংরেজি নিয়ে ঢাকা ভার্সিটিতে অনার্স করছি।আমার নিজের বলতে কেউ নেই,ছোট থেকে অনাথ আশ্রমে বড় হয়েছি।টিউশনি করিয়ে যে টাকা পাই সেটা দিয়ে গার্লস হোস্টেলে থাকি।আমার গার্ডিয়ান বলতে নীলুর পরিবার’ই বলা যেতে পারে।কেননা নীলুর বাবা,মা আমায় নিজের মেয়ের মতোই স্নেহ করে।আমি বেশিরভাগ সময় এই বাড়িতেই থাকি।কিন্তু আজকে কেমন যেন অস্বস্তি লাগছে,কেন জানি মনে হচ্ছে আজ আমার সাথে ভয়ঙ্কর কিছু একটা হয়ে যাবে,খুব ভয়ঙ্কর।
বিষন্ন দুই হাতে দুই-কাপ চা নিয়ে ঘরে ঢুকলো।আমি স্বাভাবিক থাকার চেষ্টা করলাম।যেনো বিষন্ন বুঝতে না পারে যে আমি নার্ভাস ফিল করছি।বিষন্ন কাপটা আমার দিকে এগিয়ে দিয়ে বললো
“নাও চা খাও,আর তোমায় আজ কিন্তু অনেক সুন্দর লাগছে,আজ দেখছি ঠোঁটে লিপস্টিক দিয়েছো।লিপস্টিক দিলে তো তোমায় দারুন লাগে ”
কাপটা হাতে নিয়ে বললাম ” থ্যাঙ্কিউ বিলু,আর তোকে এই টি-শার্টে কেমন লাগছে জানিস? বাদরের মতো, হাহাহা”
বিষন্ন রাগি দৃষ্টিতে তাকিয়ে বললো “তোমায় কতবার বলেছি আমায় বিলু বলবে না,তবুও বারবার এই নামে ডেকে রাগিয়ে দিতে খুব ভালোলাগে তাই না? আর আমি রাগলে কি হয় জানো তো? আর আজকে বাড়িতেও কেউ নেই,তুমি পুরোটাই এখন আমার দখলে,সাবধান ”
বিষন্নের মুখে এমন কথা শুনে হতভম্ব হয়ে তাকিয়ে রইলাম ওর দিকে।অবলীলায় কথাগুলি বলে ও শান্ত ভঙ্গিতে চায়ে চুমুক দিলো।আমার মনের ভয়টা যেনো আরো গাঢ় হতে লাগলো।ধমক দেওয়ার মতো করে বললাম
” এসব কেমন কথা বিষন্ন? তোর দখলে আছি মানেটা কি,তুই ভুলে যাচ্ছিস আমি তোর সিনিয়র,গালে কিন্তু এবার পটপট করে চ*ড় বসিয়ে দিবো ”
” এইজন্যই এতো ভালোলাগে তোমাকে,তোমার এমন শাসন যে আমার কি পছন্দ সেটা তুমি জানোনা ”
ওর কথায় অনেকটা বিব্রত হয়ে বললাম ” মানে?কি বলছিস এগুলা ”
” কেমন ভালোলাগে সেটা বুঝো না?আচ্ছা বেপার না,চলো তোমায় বুঝিয়ে দিই ”
বলেই বিষন্ন চায়ের কাপটা টেবিলে রেখে আমার দিকে আসছে।আমি ভয়ে জমে গেছি।বিষন্ন কি করতে চাইছে? আমি যেমনটা ভাবছি তেমন কিছু করবে না তো?করতেই পারে,এই বয়সের ছেলেদের বিশ্বাস নেই,ভয়ে জড়োসরো হয়ে কাঁপা কাঁপা স্বরে বললাম
” বি..বিষন্ন কি করছিস তুই,কা..কাছে আসছিস কেন, মতলব কি তোর,উল্টোপাল্টা কিছু করলে মে*রে পিট লাল করে দিবো ”
” মতলবটা হলো তুমি।আজ বাড়িতে কেউ নেই,তোমায় আজ ছাড়ছি না বাবু।আজ আমার ইচ্ছেটা পূরন করার সুযোগ পেয়েছি ”
বলতে বলতে বিষন্ন আমার একদম সামনে দারালো।ওর নিশ্বাস আমার মুখের ওপর পড়ছে।বিষন্ন আমার ওড়নাটা বুক থেকে নিয়ে ছুড়ে ফেলে দিলো।এরপর…
চলবে?
#তোমায়_চেয়েছি_পুরোটাই
#জয়ন্ত_কুমার_জয়
#পার্টঃ১