তোমার আড়ালে পর্ব ৭

💞 তোমার আড়ালে 💞

Urme prema (sajiana monir)

পার্ট :৭

আরোশ থেকে বেশ দূরত্ব বজায় রেখে সুবাহ শুয়ে আছে ।সুবাহ অন্যদিকে ফিরেই নিজের চোখের জল ফেলছে আর নিশব্দে কান্না করে যাচ্ছে কিছু সময় আগেই আরোশ আর সুবাহ র মধ্যে ঝগড়া হয়েছে আর প্রত্যেকবারের মতই এবার আরোশ সুবাহকে রাগের মাথায় আঘাত করে কথা বসে ফেলেছে যা সুবাহ বেশ কষ্ট লেগেছে তা শুনার পর থেকেই মুখ ঘুরিয়ে কান্না করেই যাচ্ছে নিসব্দে !
আরোশ সুবাহর দিকে ঘুরে তাকে পিছন দিক থেকে তাকে দেখছে সুবাহ শব্দ না করে কাঁদলেও সে ঠি কই বুঝতে পারছে যে সুবাহ কাদঁছে !
আরোশের ও বেশ খারাপ লাগছে আরোশ সুবাহকে আঘাত করে কথা বলতে চায় নি কিন্তু রাগের বসে তাকে বলে ফেলেছে ।আরোশ বেশ কিছুসময় ধরেই তাকে পিছন থেকে দেখছে অবশেষে তা সয্য করতে না পেরে সুবাহর কাছে যেয়ে তাকে পিছন থেকে জরিয়ে ধরে সুবাহ র খোলা চুলের ভাজে নিজের মুখ গুঁজে চোখ বন্ধ করে আলতো স্বরে বলতে লাগে
“সরি
আ’ম সো সরি
আমার তোমাকে আঘাত দেওয়ার ইচ্ছা ছিলো না !”
সুবাহ আরোশের থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে আরো দূরে স্বরে শোয় ।আরোশ একটানে সুবাহ কে কাছে টেনে এনে সুবাহকে নিজের দিকে ঘুরিয়ে সুবাহর কপালে কপাল ঠেকিয়ে চোখ বন্ধ করে নাকের সাথে নাক ঘষতে ঘষতে মাতাল কন্ঠে বলতে লাগে
“বললাম তো সরি !”
সুবাহ আস্তে আস্তে চোখ খুলে পিটপিট চোখে আরোশের দিকে তাকিয়ে বলতে লাগে
“আপনি কেন সরি বলছেন !
আপনি তো আপনার কাজ করছেন যার জন্য আপনি আমাকে বিয়ে করেছেন ।
প্রতিশোধ নিচ্ছেন আঘাত দিচ্ছেন কষ্ট দিচ্ছেন যন্ত্রনা দিচ্ছেন ।
সবই তো ঠি কই চলছে তো সরি বলার কোন কারনই দেখিনা আপনি আপনার জায়গায় পার্ফেক্টলি রাইট !
আমি বেচে থাকি মরে..!”
আরকিছু বলতে পারেনা সুবাহ তার আগেই আরোশ তার ঠোঁট নিজের আয়ত্তে নিয়ে নিয়েছে বেশ আবেশে তার উপর ঘ্রাশ করে যাচ্ছে বেশ কিছুসময় পর আরোশ তাকে ছাড়ে !
সুবাহ ঘন ঘন নিশ্বাস নিতে লাগে আরোশ সুবাহ র ঠোঁটে নিজের বুড়ো আঙ্গুল দিয়ে হাত বুলাতে বুলাতে বলতে লাগে
“তোমাকে কষ্ট দিবো ,আঘাত করবো ,যন্ত্রনা দিবো তোমার থেকে প্রতিশোধ নিবো কিন্তু তোমাকে কখনো দূরে যেতে দিবো না তোমাকে নিজের আড়াল হতে দিবোনা সারাজীবন আমার কাছেই থাকতে হবে আমার চোখের সামনে আমার স্ত্রি হয়ে !
তোমার সাথে সব কিছু করার অধিকার আমার আছে !”
সুবাহ চোখ উচুঁ করে ড্যাব ড্যাব করে তাকিয়ে বলতে লাগে
“আর ভালোবাসা ?”
আরোশ এর উত্তরে সুবাহ কে নিজের বাহুডোরে আবদ্ধ করে রাখে ।সুবাহ ও আরোশের খালি বুকে নিজের ঠোঁটের আলতো স্পর্শ করে সেখানে নিজের মাথা রেখে চোখ বন্ধ করে ফেলে কারন সুবাহ জানে আরোশ তার ভালোবাসা গুলো সুবাহ র আড়াল করে রাখতে চাইছে তাই সে আর কথা বাড়ায় না কারন তার যা উত্তর পাওয়ার ছিলো তা সে পেয়ে গেছে !
আরোশ সুবাহ এলোমেলো চুলে নিজের হাত গুজে মাথায় হাত বুলাতে লাগে আজ সারাদিন পর সে সুবাহ কে কাছে পেয়েছে এই মুহূর্তটাকে সে হাত ছাড়া করতে চাচ্ছেনা এখন সে সুবাহ তে ডুবে থাকতে চায় ।কাল রাতে সুবাহ কে আপন করে নেওয়ার পর তো তার নেশাটা আরো বেশি প্রক্ষর হয়ে গেছে এতো চাওয়ার পর ো তার থেকে দূরে থাকতে পারছেনা !
এসব ভাবতেই সুবাহর চেহারার দিকে চোখ পড়ে দুনিয়ার সব মায়া ভালোবাসা যেন তার মাঝে বিরাজ করছে !
বেশ মায়াবী লাগছে ।
আজ থেকে চার বছর আগের সেই দিনের কথা ভাবতেই বুকে কেমন জানো চিনচিন অনুভূতি জাগ্রত হয় !
বুকে শিতল হাওয়া বয়ে যায় কোন এক মেয়ে যে তাকে এতটা অগোছালো করে দিবে তা তার জানা ছিলোনা ।ভাবতে ভাবতেই কল্পনাতে ডুব দেয় !
আজ যদি তার বক্ত কথাগুলো সে না প্রকাশ করে তাহলে হয়তো তার দম আটকিয়ে যাবে নিজের মধ্যে বন্ধি হয়ে রয়ে যাবে তাই সে জানে সুবাহ ঘুমিয়ে গেছে তাই সে আস্তে আস্তে সুবাহকে সাবধানে শুয়িয়ে বেডথ্কে উঠে আলমারী থেকে একটা ডাইরী বের করে তাতে লিখতে থাকে !
মানুষ বলে নিজের মনের কথা ,কষ্ট কোন ভাবে প্রকাশ করলে তা কমে আরোশ ও সেই চেষ্টায় লেগে যায় তাহলে হয়তো তার কষ্ট কিছুটা লাঘব পাবে !

তখন সবে মাত্রই আমি ভার্সিটি তে অনার্স ফাস্ট ইয়ারে ভর্তি হয়েছি।নতুন ভার্সিটি জীবন নতুন বন্ধু বান্ধব সব মিলিয়ে দিন গুলো বেশ ভালোই যাচ্ছিলো !
হঠাৎ ভার্সিটিতে আমাদের ডিপার্টমেন্ট থেকে ৭ দিনের ট্যুরের ব্যবস্থা করে ঢাকা টু কক্সবাজার ।আমি কিছুদিন ঢাকা বেস্ত শহরের বাহিরের খোলামেলা পরিবেশে কাটাতে চাইছিলাম !
২ দিন বেশ সুন্দর করেই কেটে যায় ।তৃতীয় দিন রাতে খালি পায়ে সমুদ্রের পাড়ে ঘুড়ছিলাম হঠাৎ কোন কিছু দেখে থমকিয়ে যাই একাএকাই দুই কদম পিছনে চলে যাই সামনে অপরূপ দৃশ্যের দিকে তাকিয়ে থাকি !
একটি মেয়ে সমুদ্রতে নিজের পা ভিজাচ্ছে পড়নে কালো সেলোয়ার স্যুট লাল উড়না তার কোকড়ানো খোলা চুল গুলো সমুদ্রের পাড়ের বাতাসে এলো মেলো করে দিচ্ছে সামনে ছোট করে কাটা চুল গুলো বারে বারে মুখের সামনে এসে পোড়চ্ছে ঠোঁটে পাগল করা হাসি কানে এন্টিকের ঝুমকাটা বাতাসের সাথে দুলছে কপালে ছোট কালো টি প পূর্নিমার চাদেঁর আলো তার চেহারার মায়া যেন আরো বাড়িয়ে দিচ্ছিলো সে সমুদ্রপাড়ে দাড়িয়ে নিজের পা ভিজাচ্ছিলো হাত দিয়ে সমুদ্রের পানি নিয়ে খেলছিলে আর খিলখিল করে হাসছিলো একদম ছোট বাচ্চাদের মত !মেয়েটা টি নএজার হবে হবে !
আমি ঠিক মুগ্ধ নয়নে তার দিকে কতসময় তাকিয়ে ছিলাম তা আমার মনে নেই ।তার বেশ কাছাকাছি দাড়িয়ে তাকে দেখছিলাম ।মেয়েটা দেখতে বেশ বাচ্চা বাচ্চা লাগছিলো চেহারায় পবিত্রতা বিরাজ করছিলো !কেন যানো এই অচেনা মেয়েকে দেখে মনে লোভের জন্ম হয়
খুব লোভ লাগছিলো তার একহাত ধরে তার পাশে দাড়িয়ে সময়টাকে উপভোগ করতে !
পরক্ষনেই নিজের চিন্তা আর ইচ্ছা শক্তির উপর কাবু করি !
কারন সে আমার জন্য একচেনা পথচারী ছিলো যাকে চলতে চলতে দেখেছি !
না জানি তার নাম না জানি পরিচয় কিন্তু তার পর ও তার প্রতি ছিলো অদ্ভুদটান !
কেন এই তা সত্যি আমার ধারনার বাহিরে ছিলো কেন জানি তার উপর একটা চাওয়া কাজ করছে মনে হচ্ছে আমার তাকে চাই ।বেশ কিছু সময় তার দিকে ড্যাব ড্যাব করে তাকিয়ে থাকি কেমন যেন ভালো লাগছিলো এভাবে তাকিয়ে তার দিকে তাকিয়ে থাকতে ।হঠাৎ মেয়েটাকর চোখ আমার দিকে পড়তেই আমার এই চাহনিতে সে যেন কিছুটা অপ্রস্তুত হয়ে পড়ে তাই আমার দিকে ছোটছোট চোখ করে তাকিয়ে সেখান থেকে চলে যায় !
আমি তার এমন কাজে ফিক করে হেসে দেই কারন তার চোখের চাহনিটাই ছিলো বেশ ইনোসেন্ট যা তার বাচ্চামো স্বভাবটাকে আরো ফুটিয়ে তুলেছে ।
আমি তার যাওয়ার দিকে বেশ কিছু সময় তাকিয়ে হোটেলে নিজের রুমে চলে আসি ।সেদিন রাতে আর চোখের পাতায় ঘুম নামে না বারবার সে মেয়েটির কথা মাথায় গুড়পাক খেতে লাগে !
সারাটা রাত তার ভাবনায় পাড় করে দেই ।
অচেনা মেয়ের প্রতি আমার এই অদ্ভুদটান আমাকে বেশ ভাবাচ্ছি নিজের মধ্যে উত্তর খুজছিলাম কিন্তু উত্তরটা পাচ্ছিলাম না ।পরের দিন আবারো সমুদ্র পাড়ে সূর্য অস্ত দেখতে গিয়ে আবারো সেই মেয়েকে দেখতে পাই এবার ও আগের দিনের মত দূর থেকে নিজের চোখের তৃপ্তি মেটাচ্ছিলাম ।কেমন জানো অদ্ভুদ মায়া তার প্রতি কাজ করছিলো !
সেদিন রাতে আমার বন্ধুদের সাথে সিবিজে গানের আড্ডা ছিলো ।গিটার বাজানোটা আর গান গাওয়াটা আমার হবি ছিলো সেদিন সবার আবদারে গান গাইতে হলো ।আমি নিজের চোখ বন্ধ করে গিটার বাজাতে বাজাতে গান গাইতে লাগলাম
“ “ভিতর ও বাহির অন্তরে অন্তরে
আছো তুমি হৃদয় জুড়ে

ভিতর ও বাহির অন্তরে অন্তরে
আছো তুমি হৃদয় জুড়ে………

ঢেকে রাখে যেমন কুসুম
পাপড়ির আবডালো ফসলের ঘুম

ঢেকে রাখে যেমন কুসুম
পাপড়ির আবডালো ফসলের ঘুম

তেমনি তোমার নিবিড় চলা……..

তেমনি তোমার নিবিড় চলা
মরনের মূল পথ ধরে……

আমার ভিতর ও বাহির অন্তরে অন্তরে
আছো তুমি হৃদয় জুড়ে

আমার ভিতর ও বাহির অন্তরে অন্তরে
আছো তুমি হৃদয় জুড়ে …………”

চোখ বন্ধ করে যখন গানটা গাইছিলাম সে সময় বার বার শুধু সেই মেয়েটার চেহারাটা মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছিলো ।
আমার সাথে কি হচ্ছিলো তা আমার জানা ছিলোনা শুধু বার বার মনে হচ্ছিলো মেয়েটা আমার !
তার উপর আমার অধিকার রয়েছে ।
গান শেষ হয়ে পাশে ফিরতেই হঠাৎ দূরে মেয়েটাকে দেখতে পেলাম দূর থেকে হয়তো গান শুনছিলো হাতে একটা কফির মগ তাকে এসময় এখানে দেখে আবারো মনটা নাড়া দিয়ে উঠে !দূর থেকে তাকে দেখে গেলাম ।এভাবে আরো দুদিন কেটে যায় অচেনা মেয়েটা আমার নেশা হয়ে গিয়েছিলে যার নামটা পর্যন্ত আমি জানতাম না !
সেদিন আবারো তাকে সমুদ্র পাড়ে হাটতেঁ দেখে ডিসিশন নেই যে তার সাথে কথা বলেই ছাড়বো !
তাকে একা দেখে যখনই তার দিকে আঘাই ঠিক সে সময়ে একজন মহিলা চলে আসে হয়তো কার মা হবে আমিও আর হার মানিনা সেদিন সারাদিন তার সাথে কথা বলার জন্য তার আসে পাশেই থাকি কিন্তু সে তার আবাসও পায় না !
ঠিক কতটা বাচ্চা হলে এমন বেখেয়ালী হতে পারে কোন ছেলে তাকে ৪ দিন ধরে ফলো করে যাচ্ছে অথচ তার কোন খেয়ালই নেই ।যখন সে সমুদ্রের পাড়ে নিজের পা ভিজাচ্ছিলো হঠাৎ তার বাম পায়ের পায়েলটা সেখানেই রয়ে যায় ।সে সেখান থেকে যেতেই তার পায়েলটা আমি আমার হাতে উঠিয়ে নেই কেন জানো তা তাকে ফিরিয়ে দিতে ইচ্ছে করছিলোনা নিজের কাছেই রেখে দিতে ইচ্ছে করছিলো ।আর যে ভাবনা সেই কাজ নিজের কাছে পায়েল রেখে দেই !
সেদিন সারাদিন তার পিছন পিছন ঘুরে তার নামটা পর্যন্ত জানতে পারলাম না !
নিজের উপর বেশ মায়া হচ্ছিলো যে আমি কিনা মেয়েদের পিছনে তাকাইনা পর্যন্ত আজ ৪ দিন ধরে একটা মেয়ের পিছনে পাগল পাগল হয়ে ঘুরছি যা আমার কেরেক্টেরের পুরো বিপরীত !
মেয়েটার প্রতি যে আমার ভালোবাসা জন্মিয়ে ছিলো তা আমি ঠি কই টের পেয়েছি ।
সারাদিন ঘুরে শুধু তারা যে হটেলে উঠেছে তার নাম জানতে পেড়েছি ।আর আড়ালে তার বেশ কিছু ছবি তুলেছি যা সে টের পায়নি !
সেদিন হঠাৎ করে আমার চোখের আড়াল হয়ে যায় ।তার পরের দিন তাকে সিবিজে না দেখে যে হটেলে উঠেছে সেখানে তার ছবি দেখিয়ে খুজতেঁ লাগলাম পরে হোটেলের স্টাফ খেকে জানতে পারলাম তারা ঢাকায় ফিরে গেছে ।
কথা শুনেই কেমন জানো বুকে মোচড় দিয়ে উঠে ।যার প্রতি ভালোবাসার সৃষ্টি হয়েছে তার নামটাই পর্যন্ত জানতে পারলাম না !
তার পরের দিনই ঢাকায় ফিরে আসি !ঢাকায় ফিরে নিজেকে বেস্ত করে রাখতে শুরু করি কারন অবসর পেলেই তার কথা মাথা ঘুর পাক খেতে লাগে ।তার পাওয়াটা নাসিবের উপর ছেড়ে দেই ।কেন জানো মনে হচ্ছিলো তাকে আমি খুঁজে পাবো তার সাথে আবার দেখা হবে কোন একদিন এভাবে সময় কাটতে লাগে আমি তার সেই স্মৃতি আর নুপুর টা দেখেই দিন পাড় করতে লাগে তার পর কোন মেয়েকে কেন জানো চোখে লাগে নি !
বলে না ভালো তো একজনকেই বাসা যায় যাকে ভালোবাসার পর অন্য কারো দিকে তাকাতে পর্যন্ত ইচ্ছে হয়না আমার ও ঠি ক সেই ভালোবাসাটা হয়েছিল সে ‌অচেনা মেয়ের উপর !
এভাবে ৪ টি বছর কেটে যায় আর আমি তার খেয়ালে সে ভাবেই ডুবে থাকি ।

আমি যখন ফাইনাল ইয়ারে ফাস্ট ইয়ারের নবিন বরন অনুষ্টানে হাজারো লোকের ভিরে কাউকে দেখে পুরোপুরি শক হয়ে যাই !
বুঝতে পারছিলাম না সে কি আমার কল্পনা ?
নাকি আমি বাস্তবেই তাকে দেখছি !
আদো কি আমি তাকে দেখছি ?
হ্যা সে মেয়েটা ছিলো সমুদ্রপাড়ের সেই মেয়েটি যে আমার ভাবনা জুড়ে ছিলো আমার অস্তিত্বের মধ্যে বিলিন হয়ে ছিলো তাকে নিজের চোখের সামনে দেখে বিশ্বাস করতে পাড়ছিলাম না !
মনে হচ্ছিলো আমার স্বপ্নের জগৎ থেকে নেমে এসেছে ।৪ বছরে তার চেহারায় শরীরের গঠনে বেশ পরিবর্তন এসেছে তার পড়নে ছিলো জামদানী শাড়ি কোকড়ানো ঢেউ খেলা চুল গুলো স্টেট করে ছেড়ে দিয়েছে মনমুগ্ধকর সাজ হাতে মেচিং চুড়ি আর মুখে তার পাগল করা হাসি !
তাকে আমার চোখের সামনে দেখে নিজের বেশ খুশি লাগছিলো ! ইচ্ছে করছিলো তাকে এখনই সবার সামনে জরিয়ে ধরে নিজের মনের পিন্জিরায় আটকিয়ে রেখে দেই যাতে আর তাকে হারাতে না হয় !
সেদিন নবীনবরনে পুরোটা সময় আমার নজর তার দিকে ছিলো তার প্রত্যেকটা কাজ গভীর ভাবে পর্যবেক্ষন করছিলাম নিজের চার বছরের তৃষনা মিটাচ্ছিলাম ।খোজঁ নিয়ে জানতে পারি তার নাম“ সুবাহ” এবার অনার্স ফাস্ট ইয়ারের স্টুডেন্ট !
আমি তার ব্যপারে সব খোজঁ খবর নেই সেদিন রাতেই তার ফেসবুক আইডির খোজেঁ পাই আমার এক মেয়ে ফ্রেন্ডের মাধ্যেমে ।জানতে পারি তার আইডির নাম “প্রভাতদিপ্তুি “ ।
সার্চ দিয়ে পেয়ে যাই আইডি তে ডুকতেই দেখি সে আমাকে আগের থেকে ফ্রেন্ডরিকুয়েস্ট দিয়ে রেখেছে আমি যেন আকাশ থেকে পরি তা দেখে আমি ১ সেকেন্ড ও দেরী না করে সাথে সাথে এক্সেপ্ট করে তাকে “হ্যায় “ দেয় তারপর বেশ কিছু সময় পরই সে উত্তর পাঠায় “হ্যালো “তারপর তার সাথে যোগাযোগ শুরু হয় প্রথমে বন্ধুত্ব তারপর প্রেম ।আমি জানতাম সুবাহই আমার প্রভা তাকে যখনই ভার্সিটিতে দেখতাম নিজেকে আটকাতে কষ্ট হতো তার কাছে ছুটে চলে যেতাম যখনই তার সামনে যেয়ে দাড়াতাম সে ঘাবড়িয়ে যেত হয়তো ভাবতো আমি তাকে চিনে ফেলেছি কিন্তু সে এটা জানতো না যে আমি যে তাকে সে কবে থেকে নিজের অস্তিত্বের সাথে জরিয়ে ফেলেছি । সে নিজেকে আমার আড়ালে রাখতে চাইতো আমিও তার ইচ্ছায় সায় দিয়ে তাকে বুঝতে দিতাম না যে আমি তাকে চিনি !
তার সামনে এমন ভঙ্গিমা করতাম যেন তাকে কখনো দেখিনি !
এভাবে আরো কয়েকমাস কেটে যায় আমাদের সম্পর্ক তখন বেশ গভীর হয়ে গেছে ।তাকে প্রায়ই দেখতাম যখন আমি গিটার বাজাতাম কেম্পাসের মাঠে সে ভিড়ের মাঝে থেকে মুগ্ধ হয়ে শুনতো !
তাকে দেখা করার কথা বললে সে বার বার না করে দিতো তাই আমিও তাকে জোর করতাম না !
হয়তো তার কিছু সময় দরকার তাই সে নিজেকে আড়াল করে রাখছে তার সময় হলে সে ঠি কই সামনে আসবে !
কিন্তু তাকে পাবার অপেক্ষায় ছিলাম নিজের করে একান্তই নিজেক করে !
হঠাৎ একদিন সে তার সাথে দেখা করার কথা বলে নিজের থেকে আমি তা শুনে বেশ খুশি হয়ে যাই কারন আমার এতদিনের অপেক্ষার পর তাকে নিজের করে পেতে যাচ্ছি তার সাথে সামনাসামনি দেখা করতে যাচ্ছি ।তাই তাকে আমার মনের মত করে সেজে আসতে বলি নীল শাড়িতে এর পরের দিন সকাল থেকে তার অপেক্ষা করতে লাগি রেস্টুরেন্টে কিন্তু তার আসার নাম নেই মেসেন্জারে ফোন দেই ফোন বাজছে কিন্তু তার উঠানোর নাম নেই !
২ দিন তাকে ফোন দিতে লাগি কিন্তু সে একাবরের জন্যও ফোন উঠায়নি ২ দিনে পাগল পাগল হয়ে গিয়েছিলাম তার সাথে কথা বলতে না পেরে তাকে না দেখে !
অবশেষে একদিন রাতে ফোন দিয়ে বলে সে আমার সাথে দেখা করতে চায় সেই আগের ঠিকাানাতে আমি বেশ খুশি হয়ে যাই অনেক অপেক্ষার পর তাকে পাবো তো তাই !হাতে ফুল নিয়ে তার জন্য অপেক্ষা করছিলাম খুব বেশি এক্সসাইডেমেন্ট কাজ করছিলো তার সাথে দেখা হবে তাই ।রেস্টুরেন্টের সামনে তার অপেক্ষা করছিলাম তাকে রিসিভ করবো বলে হঠাৎ সামনে চোখ পড়তেই দেখি সে নামছে সাথে একটা মেয়ে ।আমি তার দিকে এগিয়ে যেয়ে মুচকি হেসে ফুলের বুকেটা “সুবাহ”দিকে এগিয়ে দেই হঠাৎ পাশ থেকে টান দিয়ে মেয়েটা নিজের হাতে নিয়ে নেয় ।তারপর বলতে লাগে
“আমি নিদ্রা মানে “প্রভাতদিপ্তি “ও আমার মামাতো বোন সুবাহ !”আমি তা শুনে অবাক দিষ্টিতে তাকিয়ে থাকি তাদের দেখে বেশ বড় শক খেয়েছিলাম!
অন্যদিকে সুবাহ আমার দ চোখের দিকে তাকাচ্ছেনা মাথা নিচু করে আছে ।
আমি কাপাঁ কাপাঁ কন্ঠে নিদ্রার দিকে তাকিয়ে বলতে লাগে
“মানে তুমি “প্রভাতদিপ্তি “প্রভা ?”
নিদ্রা লজ্জামাখা মুখ নিয়ে বলতে লাগে
“হুম আমি তোমার প্রভা !”
আমি একবার সুবাহর দিকে তাকায় আর একবার নিদ্রার দিকে সে যেন থমকিয়ে গেছে ।সেদিন কোন মতে তাদের সাথে দেখা করে সেখান থেকে বের হয়ে যাই নিজেকে বেস অগোছালো লাগছিলো ।
আমি প্রভাকে সুবাহ ভেবেছি
সুবাহ কে ভালোবেশেছি আর আইডিও তার ছিলো তাহলে নিদ্রা আসলো কোথা থেকে বেশ অগোছালো হয়ে গিয়েছিলাম কি র্যকরবো কিছুই বুঝছিলামনা !
যদি নিদ্রা প্রভা না হয় তাহলে সে কেন মিথ্যা বলবে ।আর সুবাহ কেন মিথ্যা বলবে ?
উফফ সব কিছু অগোছালো লাগছিলো !
মনে হচ্ছিলো যা দেখছি তা সত্যি না সত্যিটা অন্যরকম ।
তার আবার নিদ্রার কথা চিন্তা করলাম যদি সে সত্যি প্রভা হয়ে থাকে তাহলে তাকে ঠকানো হবে তার সাথে অন্যায় হবে যা আমি করতে পারবোনা নিজের বিবেকের কাছে হেরে যাবো !
এভাবে বেশ কয়েকদিন যেতে লাগে আমি নিদ্রার সাথে যেগাযোগ করিনা সেই নিজের থেকে আমার সাথে যেগাযোগ করার চেষ্টা করে ।আমি বেশ কয়েকবার ইগনোর করি অবশেষে নিজের মধ্যে বিবেকবোধ কাজ করে নিজের কাছে নিজেকে ছোট মনে হতে লাগে মনে হচ্ছিলো আমি তাকে ঠকাচ্ছি ।তার তো দোষ ছিলো না দোষ তো ছিলো আমার যে আমি তাকে সুবাগ ভেবেছি তাহলে সে কেন তার মুসুল দিবে ।তাই সে ফোন দিলে তার সাথে টুকটাক কথা বলা শুরু করি কিন্তু তার সাথে কথা বলে আগের প্রভাকে খুজেঁ পেতাম না মনে হতো এটা আমার প্রভাই না বেশ কয়েকবার নিজের কাছে মনে হলো সে প্রভা না তাই তাকে যাচাই করতে আমার আর প্রভার মধ্যে বিভিন্ন কথোপকথোন জিগাসা করি কিন্তু সে প্রত্যেকটাই ভুল উত্তর দেয় ।যদি সে প্রভা হতো তাহলে সে জানতো কিন্তু সে আমার প্রভাই ছিলোনা !
রেগে কঠোর ভাবে নিদ্রাকে জিগাসা করলে সে ভয়ে ভয়ে বলতে লাগে
“সরি আমার কোন দোষ নেই যা করেছি সুবাহর কথায় করেছি ।সে বলেছে এসব করতে আমি কিছু করিনি ।সে আদিকে ভালোবাসতো আর তোমার সাথে অভিনয় করছিলো টাইম পাস করছিলো তাই আমি ওর কথা মত এসব করেছি ।
আসলে সে আদিকে বিয়ে করতে চায় তার ছোটবেলার ভালোবাসা আদি ।”
এই সব কথা শুনে আমার মাথা খারাপ হয়ে যায় সুবাহ কে খুন করে দিতে ইচ্ছে করে কিন্তু নিজের ভালোবাসার কাছে আমি অসহায় ছিলাম তাই সিদ্ধান্ত নেই তার সামনে নিদ্রাকে বিয়ে করবো সে আনাকে আর নিদ্রাকে বিয়ের বন্ধনে আবদ্ধ হতে দেখবে আর ভাববে সে কি হারিয়েছে ।পরের দিনই বাবা মাকে তাদের বাসায় বিয়ের প্রপোজাল পাঠাই আর তারা রাজিও হয়ে যায় ।কিন্তু এত কিছুর মধযে যতবারই সুবাহকে দেখতাম সব ভুলে যেতাম তাতে ডুবে যেতাম তার মাঝে হারিয়ে যেতাম ।
২ দিন পর জানতে পারি আদি আর সুবাহর বিয়ে ঠিক হয়েছে আমার আর নিদ্রার বিয়ের একদিন আগে !
যা আমার রাগ আরো বেড়ে যায় পদে পদে তাকে অপমান করতে লাগি নিচু দেখাতে লাগি ।তার সামনে নিদ্রাকে কাছে টেনে নিতাম কিন্তু সে জানো সব কিছু দেখেও অদেখা করে যেত !
সুবাহর আসেপাশে আদিকে দেখলে আমার মাথা ঠিক থাকতো না ।
এভাবে আরো বেশ কিছু সময় কেটে যায় আস্তে আস্তে বিয়ের দিন আগাতে লাগে ।হলুদের দিন সুবাহর পাশে যখন আদিকে দেখি সে সময় প্রত্যেকটা মূহুর্ত মরন যন্ত্রনার মত মনে হয়েছে ।হলুদে আদি যখন সুবাহ র হাত ধরছিলো তাকে কাছে টেনে নিয়েছিলো সেসময় ইচ্ছে হচ্ছিলো আদিকে খুন করে দি ।জিদের বসে সেদিন রাতে ডিংক্স করি ।ড্রিংক্স করে মাতাল হয়ে আমার সেই মুহূর্তে সুবাহ কে খুব দরকার ছিলো মনে হচ্ছিলো যদি তাকে আমার কাছে না রাখি তাহলে দম বন্ধ হয়ে যাবে ।
তাই সেদিন রাতে তার রুমে যাই তার পর কি হয় আমার তা জানা নেই ।
সকালে নিজেকে আমার বন্ধুদের সোহানের রুমে পাই মাথা ধরে আসছিলো সুহান বলে রাতে সুবাহর রুমে বেশ পাগলামি করেছি ।
হঠাৎ সুবাহর কথা মনে পড়তেই তারাতারি করে উঠে পড়ি কারন আমি হলুদের রাতে বুঝে গেছি যার আসে পাশে কাউকে সয্য করতে পারিনা তাকে অন্যকারো কি করে হতে দিবো?
সুবাহকে আমার চাই আমার নিজের করে চাই সারাজীবনের জন্য ।সুবাহ যা করেছে তা ভালো করেনি তার ফল তাকে পেতে হবে আমি তাকে নিজের করে তাকে সব কিছুর জন্য শাস্তি দিবো ।আমার সাথে অন্যায় করার শাস্তি দিবো ধোকা দেওয়ার শাস্তি দিবো ।
আমি হুঝে গেছি আমার সুবাহ কে ছাড়া চলবে আমি তাকে ছাড়া বাচঁতেই পারবোনা আর তাকে ‌অন্যকারো হতে দেওয়ার তো প্রশ্নই উঠেনা।
তাই তার বিয়ের দিন তাকে উঠিয়ে নিয়ে বিয়ে করি ।কারন সব পারবো তাকে হারাতে পারবোনা ……..

চলবে……
❤️❤️❤️❤️

Plz সবাই সবার মতামত জানাবেন 😊😊😊

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here