তোর আসক্তি পাগল করেছে আমায় পর্ব -২৩

#তোর_আসক্তি_পাগল_করেছে_আমায়
#সিজন_০২
#সাবিয়া_সাবু_সুলতানা
২৩.
হ্যাচকা একটানে বেলাকে রুমের ভিতরে ঢুকিয়ে দেয়ালের সাথে চেপে ধরে। বেলা প্রথমে একটু চমকে গেলেও তার বুঝতে বাকি নেই এই কাজ কার হতে পারে, বেলা আগের থেকেই জানত তার সাথে এমন কিছু ঘটতে পারে, আর তার উপর দিয়ে যে এখন বেশ ঝড় বয়ে যাবে সেটাও বুঝতে বাকি নেই বেলার। বেলা মাথা উঁচু করে সাঁঝের চোখ চোখ রাখতেই কেঁপে ওঠে ভয়ানক ভাবে লাল হয়ে আছে চোখ দুটো মনে হচ্ছে এখুনি রক্ত গড়িয়ে পড়বে দেখতে ভীষণভাবে হিংস্র লাগছে সাঁঝের চোখ দুটো, তার ক্রোধের আগুন জ্বালিয়ে পুড়িয়ে শেষ করে দেবে মনে হচ্ছে। বেলা শান্ত চোখে সাঁঝের দিকে তাকিয়ে আছে তবে বেলার এই শান্ত দৃষ্টি সাঁঝকে যেনো আরো বেশি করে রাগিয়ে তুলছে। সাঁঝ বেলার কাছে উদরের শার্ট এর কাছে জোরে টান মারতে ইন করা শার্ট ছেড়ে যায় সাথে নিচের দিকে থেকে কয়েকটা বাটান কেটে পড়ে যায় শার্ট এর ফাঁক দিয়ে কোমরে খামছে জড়িয়ে ধরে মিশিয়ে নেয় তার সাথে বেলা ব্যাথায় কুকড়ে উঠে চোখ চেপে বন্ধ করে নেয় তবে বেলার এইরকম প্রতিক্রিয়া দেখার পরও সাঁঝের রাগের এক বিন্দু পরিমাণ পরিবর্তন আসেনি। আরেক হাত উঠিয়ে বেলার ঘাড়ে পেচিয়ে বেলার মুখ উপরের দিকে করে নেয় সাঁঝের চোখে বারবার আজকের আর.এমের সাথে দাঁড়িয়ে হেসে হেসে কথা বলাটা ভেসে উঠছে। বেলার কানের কাছে মুখ নিয়ে হিসহিসিয়ে বলে ওঠে।

-“আমাকে জ্বলতে দেখতে চেয়েছিলে তুমি তাইনা?

-” নিশ্চয় খুব খুশি হয়েছ আমার এমন জলন দেখে। কিন্তু এই খুশি বেশিক্ষণ থাকবেনা তুমি আমাকে জ্বলতে দেখতে চেয়েছিলো আর আমিও জ্বলেছি এইবার আমার আগুনে তোমাকে জ্বালিয়ে পুড়িয়ে মারবো।

সাঁঝের এমন কন্ঠস্বর শুনেই বেলা কেঁপে ওঠে এতক্ষণ মনে যা সাহস সঞ্চয় করে রেখেছিলো সবটা সাঁঝের এই কথা শুনে পালিয়ে গেছে আজ যে তার অবস্থা করুণ হতে চলেছে সেটা বুঝতে বাকি নেই বেলার। তারপরেও চোখ মুখ খিঁচে বন্ধ করে রেখেছে তার শরীর কেঁপে কেঁপে উঠছে এই নিয়ে এত কাছে এই ভাবে সাঁঝ দ্বিতীয়বার তার কাছে এসেছে এর আগে কাছে আসলেও এতটা ঘনিষ্ঠতা ছিলোনা।

-“জ্বলছে না খুব জ্বলছে আমাকে অন্যের সাথে হেসে হেসে কথা বলতে দেখে! হাহ বেলা সাহস করে তাচ্ছিল্যভরা কন্ঠে বলে ওঠে।

-” হ্যাঁ আমার জ্বলছে তোমার পাশে কোনো ছেলে কে ওই ভাবে আমি মেনে নিতে পারিনা আর পারবো না কখনই। সাঁঝ হিংস্র ভাবে বলে ওঠে।

-“আমার পাশে কাউকে মেনে নিতে পারোনা অথচ নিজের সাথে দিনের বেশি সময়ে অন্য মেয়েকে চিপকে রাখতে পছন্দ করো তাইনা? বেলা তাচ্ছিল্য করে বলে ওঠে।

-” খুব মজা লাগে তখন মেয়েদের সাথে ওই ভাবে চিপকে থাক… ।

বেলাকে আর কোনো কথা বলতে না দিয়েই বেলার অধর নিজের অধরযুগলের মাঝে বন্দি করে ফেলে, বেলা বাঁধা দিয়েও পারেনা বেলাকে আরো শক্ত ভাবে মিশিয়ে নেয়, বেলা আর বাঁধা দেওয়ার চেষ্টা করেনা জানে করেও কোনও লাভ হবেনা কারণ সে ঘুমন্ত সিংহকে জাগিয়ে দিয়েছে এখন যতক্ষণ না পর্যন্ত নিজের রাগ মিটিয়ে নেবে ততক্ষণ তাকে ছাড়বে না আগের দিনের সাঁঝের ব্যবহার তার মনে আছে। আগ্রাসী ভাবে শুষে নিতে থাকে বেলার অধরসুধা মেটাতে থাকে তার ভিতরের জমে থাকা এতক্ষণের সমস্ত ক্রোধ হিংস্রতা গভীর থেকে গভীর ভাবে ডুবে যায় বেলার অধরে সাথে ছোটো ছোটো কামড়ে ভরে দেয়। বেলা ব্যাথায় সাঁঝের শার্ট খামছে একহাত সাঁঝের বুকের কাছে আর একহাত পিঠে দুটো হাতেই শক্ত করে খামছে ধরে এর ফলে বেলার হাতের নখ পিঠে আর বুকে গেঁথে যায় কিছুটা এতে সাঁঝের ব্যাথা লাগলে সেদিকে তার কোনো ধ্যান নেই সে এখন বেলার মধ্যে ডুবে আছে, বেলার কোমরে খামছে ধরে থাকা হাতটা দিয়ে আসতে আসতে বেলার পেট সংলগ্ন জায়গায় স্লাইড করতে থাকে। কতক্ষণ অধরসুধাতে মেতে ছিল হিসাব নেই তবে শ্বাস আটকে আসতেই বেলা ছটফট করতে শুরু করে ছাড়া পাওয়ার জন্যে বেলার ছটফট করা দেখেই সাঁঝ বেলার অধর মুক্ত করে দেয়। বেলা বড় বড় করে নিঃশ্বাস নিচ্ছে, সাঁঝ নেশাক্ত চোখে বেলার মুখের দিকে একবার তাকিয়ে নিয়ে বেলার গলায় মুখ ডুবিয়ে দেয় এতে যেনো বেলার শ্বাস প্রশ্বাসের গতি আরো দ্রুত হয়ে বেলার মনে হয় তার দম আটকে আসতে চলেছে, সাঁঝের স্পর্শে বারবার কেঁপে কেঁপে উঠছে বেলা তার শরীরে অনুরণন শুরু হয়ে গেছে সাঁঝ বেলার গলায় নিজের অধর ছুয়ে যাচ্ছে বারংবার বেলাকে সাঁঝ তার উষ্ণ স্পর্শে আরো বেশি করে উত্যক্ত করে চলেছে বেলা সাঁঝের চুল খামছে মাথা সরিয়ে দিতে চেয়েও পারেনা বেলার এমন ছটফট দেখে সাঁঝের ঈষৎ হয়ে যাওয়া রাগটা আবারো বেড়ে যায় গলা ঘাড়ে এবার কামড় বসাতে শুরু করে। বেলার কানেরপাতায় অধর ছুয়ে দিয়ে আলতো করে কামড় বসিয়ে দেয়।

-“আমি কোনো মেয়ের সাথেই চিপকে থাকিনা একমাত্র তুমি ছাড়া অন্য কোনো মেয়েই আমাকে কোনোভাবেই আকর্ষণ করতে পারেনা যদি সে সম্পূর্ন অনাবৃত হয়েও আমার সামনে এসে দাঁড়াও তারপরেও আমার মধ্যে কোনো উত্তেজনা কাজ করেনা আমাদের কে ছোট থেকে সব বিষয়ে পরিপূর্ণ প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। শুধুমাত্র তোমাকে ছাড়া, তোমাকে দেখলেই আমি বেসামাল হয়ে পড়ি, কোনো ভাবেই নিজেকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারিনা। সাঁঝ বেলার কানের পাতায় নিজের অধর ছুয়ে রেখে নেশাগ্রস্ত কন্ঠে বলে ওঠে।

সাঁঝের কথা শুনেই বেলা কিছুটা কেঁপে ওঠে সাথে সাঁঝের অধর তার কর্নকুহর স্পর্শ করে যেতে তার শরীরে শীতল স্রোত বয়ে যায়, সাঁঝের বেলার কেঁপে ওঠা অনুভব করে মুখ সামান্য উঁচু করে বেলার মুখের দিকে তাকায় দেখে এখন চোখ চেপে বন্ধ করে আছে অধরযুগল তিরতির করে কেঁপে উঠছে।

-“আমি জানি তুমি মেয়েদের বলতে কি বলতে চেয়েছ তুমি দিশার কথা বলতে চেয়েছ সেটাও বুঝতে পেরেছি তবে তুমি এটাও দেখেছ আমার কাছে আসার জন্যে তাকে প্রতি মুহূর্তে কতটা অপমানিত হতে হয় তবে তুমি আমার ওকে থাপ্পড় মারা টা দেখনি। সাঁঝ বলে ওঠে।

বেলা সাঁঝের মুখে থাপ্পড়ের কথা তড়িৎ গতিতে চোখ মেলে তাকায় সাঁঝের দিকে বেলার ভ্রু কুঁচকে আছে চোখে জমা হয়েছে একরাশ প্রশ্ন। সাঁঝ বেলার মুখ দেখে বুঝতে পারে সে কথায় কথায় কি বলে ফেলেছে বেলার কাছে। সেদিন সকালে যে থাপ্পড় দিয়েছিলো দিশাকে তার কাজের জন্যে সেটা বেলার কাছে বলা যাবেনা এই ঘটনা বেলা সহ্য করতে পারবে তাকে নিয়ে বেলা খুবই সেন্সসিটিভ এইরকম কিছু বেলা মেনে নিতে পারবে না। দিশা লিমিট যখন ছাড়িয়ে তখন আর সাঁঝ নিজেকে আটকে রাখতে পারেনা থাপ্পড় মেরে মেরে আধমরা করে তবুও এরপরও ঠিক তারসাথে চিপকাতে আসে। বেলা সাঁঝের দিকে তাকিয়ে কিছু বলতে নেবে তার আগেই বেলাকে কোলে তুলে নিয়ে ওয়াশরুমে চলে যায় সাওয়ারের নিচে দাঁড়িয়ে হাত বাড়িয়ে সাওয়ার অন করে দেয় বেলার চোখের দিকে তাকিয়ে থাকে সাঁঝ বেলাও এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে সাঁঝের দিকে দুজনেই ভিজে চুপ চুপে হয়ে গেছে। বেলার দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে বেলাকে ছেড়ে বাইরে বেরিয়ে যায় কিছুক্ষণ পর বেলার ড্রেস নিয়ে রেখে দিয়ে দরজা আটকে রেখে আবার বের হয়ে যায় সাঁঝ রুমের মধ্যে চেঞ্জ করে নিয়ে বারান্দায় চলে যায়।

বেলা ওয়াশরূম থেকে বের হয়ে দেখে রুমে সাঁঝ নেই বারান্দার দিকে উঁকি দিতেই সাঁঝকে দাঁড়িয়ে থাকতে বেলা বারান্দার দিকে গিয়ে কোনো কথা না বলে সাঁঝের হাত টেনে রুমে এনে বিছানায় বসিয়ে দেয় বেলার এমন কাণ্ডে সাঁঝ হতভম্ব হয়ে ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে থাকে বেলার দিকে তবে বেলা সেদিকে পাত্তা না দিয়ে ফার্স্টএড বক্স এনে সাঁঝের সামনে বসে ডান নিজের কোলের উপর টেনে নিয়ে মেডিসিন লাগিয়ে দিয়ে ব্যান্ডেজ করতে থাকে। অফিসের ভাঙচুরে হাত কেটে গিয়েছিলো এটা বেলা তখনই সাঁঝের অফিসে থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময়ে লক্ষ করেছিলো আর তাই সেও তাড়াতাড়ি করে বাড়ি ফিরে এসেছিল বেলা সাঁঝকে জ্বালাতে চেয়েছিলো কিন্ত কোনোভাবে আঘাতপ্রাপ্ত হতে সে দেখতে পারবে না। বেলা জানতো সে নিজেই সিংহের গুহাতে যেচে ঢুকতে যাচ্ছে তাকে সামনে পেলে সাঁঝ তার সমস্ত রাগ তার উপর দিয়ে ওঠাবে তারপরেও দ্রুত বাড়ি ফিরে আসে সে জানত সাঁঝ কখনই এই কাঁটা হাতে মেডিসিন লাগাবে না আর সেটাই হলো রক্ত শুকিয়ে গিয়ে কড়া পড়ে গিয়েছিলো তারপরেও সাঁঝের এতক্ষণ কোনো হেলদোল ছিলোনা।

চলবে…?

ভুল ত্রুটি মার্জনা করবেন..। নিজেদের মতামত জানাবেন ।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here