তোর চোখে আমার সর্বনাশ পর্ব – ১৪

তোর চোখে আমার সর্বনাশ

১৪.

রিশাবের সামনে বসে আছে ফারাহ্। সুফিয়ানের বলা কথা গুলো শুনার পর থেকে মন একে প্রকার খা’রা’প হয়ে আছে। রিশাব বেশ কিছু ক্ষণ পর বলল ,

” ফারাহ্ তুমি ঠিক আছো? ”

জোর করে হাসল ফারাহ্। হাসির মানে ও ঠিক আছে। রিশাব পানি খেয়ে দীর্ঘ আলোচনা করার ভঙ্গিতে বলল ,

” শুর থেকে বলি , তোমার আর তারা এ’ক্সি’ডে’ন্ট হওয়ার পর পরিবারের সবাই পা’গ’ল পা’গ’ল অবস্থা। একে তো অন্য দেশ। হাসি মজার মাঝে তোমাদের অবস্থা দেখে নাহিয়ান পুরো পা’থ’র হয়ে যায়। তারা মৃ’ত্যুর সংবাদ শুনে ওর কি হাল হতে পারে সেটা আন্দাজ করতে পারছো নিশ্চয়ই। সেদিন আমরা দেশে ফিরে আসি। তারা দা’প’ন কা’ফ’নের জন্য। তুই তখন ও ইন্ডিয়া ছিলে। কারণ তোমাকে ডাক্তার ছাড়ে নি। মিরাজ , ইফতেখার আংকেল , আর তোমার আম্মু ছাড়া আর সবাই দেশে ফিরে আসে। তার ঠিক দুয়েক দিন পর তোমায় নিয়ে আসা হয়। বাড়িতেই চিকিৎসার সব ব্যবস্থা করে ছিল। নাহিয়ান ওর রুম থেকে নিজেই বের হয়ে তোমার রুমে গিয়ে তোমাকে জড়িয়ে ধরে অনেক ক্ষণ কেঁদে ছিল। আমরা জোর করে ওকে তোমার কাছ থেকে ছাড়িয়ে আনি তুমি তো তখন ও অজ্ঞান। এভাবে কিছু দিন যাওয়ার পর তুমি যখন সুস্থ হয়ে তারা কথা জানতে পেরে নাহিয়ানের কাছে গিয়ে কেঁদে ছিলে। সেদিনের পর থেকে নাহিয়ান কিছু টা স্বাভাবিক হয়। এর আগে ওকে কেই-ই স্বাভাবিক করতে পারে নি। __ মিরাজের বিয়ের সময় থেকে আমার কেনো জানি মনে হতে থাকে নাহিয়ান তোমার উপর কোনো না কোন ভাবে দূর্বল। সেটা হয় তো সুফিয়ান ও বুঝতে পেরে ছিল। তাই ও আমাকে বলে ছিল তোমার সাথে সব সময় চিপকে থাকতে। যাতে নাহিয়ানের অনুভুতি বুঝতে পারি। নাহিয়ান তখন ও অনুভূতি হীন ছিল। পরিবারের সবাইকে জানালাম তোমাদের বিয়ে দিতে তাহলে হয় তো আমাদের কাজে সফল হবো। হ্যাঁ তাই হয়েছে তুমি নাহিয়ানের বউ হওয়ার পর ও আমার সাথে তোমাকে সহ্য করতে পারতো না। সেটা তুমি ও জানো। আমার সাথে তোমাকে দেখলেই ডেকে নিয়ে যেতো। যেদিন তুমি অসুস্থ হয়ে পড়ে ছিল। নাহিয়ান আমার কাছ থেকে তোমাকে নিয়ে গিয়ে ছিল ওই দিনে পর আমি আর তোমার সাথে তেমন কথা বলি নি কেনো জানো? কারণ _আমি বুঝতে পেরে গেছিলাম নাহিয়ান তোমাকে ভালোবাসে। আনজানে-মে। আমি এত কিছু বলতাম না জাস্ট বলেছি এই জন্য তোমার আর নাহিয়ানের সম্পর্ক দিন দিন খা’রা’পের দিকে নিয়ে যাচ্ছো তুমি। ওকে একটু সময় দাও। বুঝতে শিখো দেখবে নাহিয়ান শুধু তোমার হয়ে গেছে। তারা নামক স্মৃতি মুছে দাও ওর মনের পাতা থেকে। দুরত্ব দিয়ে নয় পরস্পর এক সাথে থেকে সম্পর্ক ঠিক করো। ”

_________

মধ্য রাত। পুরো বাড়ি অন্ধকার , নিস্তব্ধ। ফাতেহ’র ঘুম ভেঙে যায় কারো ডাকে। ওর নাম ধরে ডাকছে কেউ। উঠে বসল সে। আওয়াজ টা হল রুম থেকেই আসছে। এত রাতে ওকে কে ডাকবে? আগে কখন ও ডাকে নি কেউ। ঘাবড়ে গেলো সে। কন্ঠ স্বর টা ও অচেনা। রুমের লাইট অন করতে গিয়ে ও করল না। আস্তে আস্তে দরজা খুলে বের হল রুম থেকে। অনুমান করে হাঁটছে সে। হল রুমের মাঝ বরাবর যেতেই পুরো বাসার আলো জ্বলে উঠে সাথে সাথে সবাই চিৎকার করে বলল ,

” হ্যাপি বার্থডে ফাতেহ / ফাতেহ মামা। ”

ফাতেহ বিস্মিত। চমকে তাকালো সবার দিকে। চেনা আজানা মুখ গুলো দেখে। অজানা কারণে যে ভ’য় টা পাচ্ছিল তা কেটে গেছে। আফজাল সারাফাত , ফাতের পিঠে চাপড়াই বললেন ,

” সাল ঘিরাকা মোবারক , ফাতেহ। ”

” ধন্যবাদ জিজা ওয়ান , ধন্যবাদ সবাইকে তোমরা কি করে জানো আজকে আমার জন্মদিন? ”

নাহিয়ান সনাট হয়ে দাঁড়িয়ে পকেটে হাত গুজে মৃদু স্বরে বলল ,

” ফাতেহ মামা এটা কোনো কথা? তোমার বায়োডাটা দেখেছিলাম। আগে কখন ও খেয়াল করি নি। গত কাল কিছু কাগজ পত্র দেখছিলাম তখন তোমার বায়োডাটা টা সামনে এলো। ”

” আমি তো ভ’য় পাইয়ে গিয়ে ছিলাম এত রাতে কে আমাকে ডাকছে __কিন্তু __ আমি যে কন্ঠটা শুনেছি তা আগে শুনেছি বলে মনে হয় না। ”

সুফিয়ান শার্টের কলার উঁচু করে বলে উঠে ,

” কন্ঠ টা আমার ছিল ফাতেহ মামা। ”

” তোমার ছিল? কিন্তু তোমার কন্ঠ তো আমি চিনি আর তখন কার কন্ঠ টা আলাদা ছিল। ”

” তুমি হয় তো জানো ফাতেহ মামা আমাদের সুফিয়ান কন্ঠ ন’ক’ল করতে পারে। ”

মিরাজের কথা শুনে অবাক হয়ে কিছু বলবে তার আগে কেক নিয়ে এলো পপি। ফারাহ্ উৎফুল্লতার সাথে বলল ,

” যত কথা সব পরে হবে চলো ফাতেহ মামা এখন কেক কাটবে। ”

” কেক আমি কাটবো? ”

ইফতেখার সারাফাত মস্করা করে বললেন ,

” না ফাতেহ কেনো কাটবে আজকে তো আমাদের বাসার পাশে যে কুকুর টা থাকে ওর জন্মদিন ও কাটবে কেক। ”

সবাই উচ্চ স্বরে হাসতে শুরু করে। ফাতেহ গাল ফুলিয়ে তাকালো ইফতেখার সারাফাতের দিকে। হাসা – মজা করতে করতে ফাতেহ কেক কাটে। সবাই কে নিজ হাতে খাইয়ে দিল। উপস্থিত সবাই ও ফাতেহ কে কেক খাইয়ে দে। একে একে অনেক মজা করল। রাত একটা পয়ত্রিশের দিকে সবাই ঘুমাতে চলে এলো। নাহিয়ান কে ডিভানে বসে থাকতে দেখে বিরক্তের সাথে জিজ্ঞেস করল ফারাহ্ ,

” আপনি ঘুমাবে না? ”

নিশ্চুপ নাহিয়ান। ফারাহ্ আবার জিজ্ঞেস করল ,

” কি হল কথা বলছেন কেনো? কিছু জিজ্ঞেস করছি আমি? ”

নড়চড়ে বসল নাহিয়ান। ফারাহ্’র দিকে পূর্ণ দৃষ্টিতে তাকালো। সে গভীর চাহনী। তার মুখ ভঙ্গিমা দেখে ফারাহ্ কিছুই বুঝল না। ভ্রু নাচিয়ে ইশারায় জানতে চাইলো কি হয়েছে? আচমকা উঠে দাঁড়ালো নাহিয়ান লাইট অফ করে বিছানায় শুয়ে ফারাহ্ কে বুকে জড়িয়ে নিল। আহম্মক বনে গেল ফারাহ্। আকষ্মিক এমন কিছুর জন্য মোটেও প্রস্তুত ছিল না। নাহিয়ান কে মৌন দেখে আর পাল্টা কিছু জিজ্ঞেস করল না৷
.
হাত টান পড়ায় ঘুম ভেঙে যায় ফারাহ্’র সবেই সবে চোখ গেলে এসে ছিল। ভোর ছয়টা এখন। অল ব্ল্যাক জগিং স্পোর্টস স্যুট পরিধানে নাহিয়ান দেখে অবকা হল না। এই সময় নাহিয়ান জগিং-এই যায় এটা স্বাভাবিক। কিন্তু অবাক হচ্ছে ওকে কেনো টেনে তুলল। ওর সাদের ঘুম খানিকে কেনো কষ্ট দিচ্ছে। লম্বা একটা হাই তুলে চোখ ছোট ছোট করে প্রশ্ন ছুড়ল নাহিয়ানের পানে ,

” আমাকে উঠালেন কেনো? ”

” আজকে থেকে আমার সাথে জগিং-এ যাবি তাই , হারি আপ। ”

ভ্রু কুচকে বিস্মিত হয়ে বলল ,

” আমি যাবো আপনার সাথে তাও জগিং-এ? ”

” ইয়াহ , এত অবাক হচ্ছিস কেনো? শুয়ে বসে খেয়ে খেয়ে মোটা হয়ে যাচ্ছিস। ”

খেঁ’কে উঠল ফারাহ্ বিছানার উপর দু’হাঁটু ভর দিয়ে ডান হাত নাচিয়ে বলল ,

” মাত্র ছচল্লিশ কেজি আমি আর আপনার আমাকে মুটি লাগছে কোন দিক দিয়ে? ”

নাহিয়ান ভ্রু কোণাকুণি করব বাঁকিয়ে ফারাহ্ কে পুরোপুরি একবার দেখে স্মিথ সুরে বলল ,

” সব দিক দিয়ে এখন তারাতাড়ি তৈরি হয়ে আয় না হলে এমনি নিয়েই চলে যাবো। ”

” আমার জগিং স্যুট নেই। ”

” বোরকা পড়ে আয়। ”

” কিহহহহহ! লাইক আপনার মাথা ঠিক আছে রাস্তা ঘাটে সবাই আমায় বেহেনজ্বি ডাকবে। ”

” তোকে এত কথা কে বলতে বলেছে এত সকাল সকাল তোর জন্য কেই আসন পেতে রাস্তা ঘাটে বসে থাকে। তারাতাড়ি করতো আজকে এমনি লেট হয়ে গেছে। আমি নিচে অপেক্ষা করছি। ”

বলেই দ্রুত কদম পেলে চলে যায়। ফারাহ্ কাবার্ড থেকে একটা বোরকা হাতে নিয়ে হতাশ চোখে তাকালো। সুফিয়ান , ফাতেহ দেওয়ালের সাথে হেলান দিয়ে চোখ বন্ধ করে আছে। মিরাজ , পপি একে অপরে সাথে ঘেঁষে দাঁড়িয়ে আছে। চোখ বন্ধ। ওদের সবার ভোরে উঠার অভ্যাস থাকলে ও আবার ঘুমায় বলে তাই এখন ঘুম কাটছে না। নাহিয়ানের ঠেলাঠেলি আজকে সবাইকে জগিং-এ যেতে হচ্ছে। এখন থেকে নাকি প্রতিদিন ওর সাথে যেতে হবে। এদিকে নাহিয়ান ফারাহ্ কে এখন ও আসতে না দেখে হাত ঘড়ির দিকে চেয়ে বিরক্ত নিয়ে বিরবিরিয়ে বলল ,
‘ ডিসগাস্টিং! ‘

সুফিয়ান আধো আধো চোখ মেলে নাহিয়ান কে দেখে আবার চোখ বন্ধ করতে যাবে তখনই চোখ যায় ফারাহ্’র দিকে। ও বাসার সদর দরজা দিয়ে বের হচ্ছে। চোখ বড় বড় করে তাকালো। এই কাকে দেখছে ও। ফাতেহ হা করে তাকিয়ে থেকে টেনে টুনে মুখ দিয়ে উচ্চারণ করল ,

” ফা রা্ হ্ মনি… ”

ফাতেহ কথা শুনে নাহিয়ান , মিরাজ , পপি সামনের দিকে তাকালো। নাহিয়ান কল্পনা ও করতে পারে নি ফারাহ্ সত্যি এমন কিছু পরে চলে আসবে। ফারাহ্ নাহিয়ানদের কাছে এসে থেমে খুশি মনে জিজ্ঞেস করল ,

” কেমন লাগছে আমাকে? ”

কোমড়ে দুই হাত রেখে মৃদু ভাবে দুলছে। sneakers জুতো , হোয়াইট স্পোর্টস প্যান্ট , টিশার্ট , টিশার্টের উপরে ব্লু জ্যাকেট , চুল গুলো উঁচু করে ব্ল্যাক বারার দিয়ে জুঁটি বাঁধা। মাথায় হোয়াইট কাপড়ের বেল্ট। বাম হাত খালি। ডান হাতে হোয়াই ব্লেটের ঘড়ি। মেয়েটা সর্বদায় ডান হাতে ঘড়ি পড়ে। কানে ব্লুটুথ সিস্টেমের হেডফোন ফারাহ্’র এই রূপে প্রথম দেখছে সবাই। আপাতত নাহিয়ানদের সবার চোখ কপালে। ফারাহ্ তুড়ি বাঁচিয়ে বলল ,

” হোয়াট এভাবে তাকিয়ে আছো কেনো সবাই , লেটস গো দেরি হচ্ছে আমাদের। ”

নাহিয়ানের হৃদয় স্পন্দন থেমে যাওয়ার যোগাড়। হার্ট জোরে জোরে বিট করছে। বুকে হাত দিয়ে তাকালো ফারাহ্’র যাওয়ার দিকে। মেয়েটা কথা শেষ করেই দৌড় দিয়েছে। মিরাজ নাহিয়ানের কানে ফিসফিসয়ে বলল ,

” ভাই চল দৌড়া তোর বউ আবার হারিয়ে না যায়। ”

হালকা কেশে নিজেকে সামলে নিল নাহিয়ান। ফারাহ্ একটু দৌড়ে থেমে যায়। কোমড়ে দুই হাত চেপে উপরের দিকে গলা উঁচু করে কয়েক টা শ্বাস নিল। আর পারবে না দৌড়াতে। নাহিয়ান ফারাহ্ কে থেমে যেতে দেখে নিজে ও থেমে যায়। ফারাহ্’র কাছে এসে জিজ্ঞেস করল ,

” থামলি কেনো চল। ”

” আমি আর পারবো না। ”

” এই টুকু তেই দম শেষ? ”

” প্লিজ আজকে বাসায় ফিরে যাই। ”

” নো। ”

” প্লিজ সত্যি বলছি আমি আর পারছি না। ”

ক্লান্ত সুরে কথা গুলো বলে নাহিয়ানের দিকে কাতর চোখে চেয়ে আছে । নাহিয়ান কিছু একটা ভেবে বলল ,

” আচ্ছা ঠিক আছে চল। ”

ফারাহ্ ঘেমে একাকার হয়ে গেছে। কপালে , ঘাড়ে চুলের ফাঁক দিয়ে চিকন ঘাম বেয়ে পড়ছে। নাহিয়ান ফারাহ্’র কোমড় ধরে নিজের কাছে টেনে আনে। নাহিয়ানের স্পর্শ পেয়ে ফারাহ্ উল্টো ঘুরে শরীরের ভর ছেড়ে দিল নাহিয়ানের উপর। পিঠ ঠেকালো প্রাণ প্রিয় মানুষ টার সুষ্ঠুম বুকে। চমকালো নাহিয়ান বাম হাত দিয়ে কোমড় ধরে রেখে ডান হাত চিবুকে রেখে আলতো চাপড়াই অস্থির কন্ঠে জিজ্ঞেস করল ,

” বেশি খারাপ লাগছে ফারাহ্? ”

ফারাহ্’র চক্ষুদ্বয় বন্ধ অনিয়মিত শ্বাস-প্রশ্বাসের সাথে শীতল কণ্ঠে জবাব দিল ,

” না একটুই বাসা পর্যন্ত হেঁটে যেতে পারবো না। ”

সঙ্গে সঙ্গে চট করে কোলে তুলে নিল নাহিয়ান। ফারাহ্ দুই হাত দিয়ে নাহিয়ানের গলা জড়িয়ে ধরে বুকে মাথা এলিয়ে দিল। নাহিয়ান ফারাহ্’র মাথা ওষ্ঠাদ্বয় ছুয়ে দিল। আশে পাশে নজর বুলিয়ে মিরাজদের খুঁজলো। একটু এগিয়ে যেতেই দেখে ওরা চার জনে একটা বেঞ্চিতে গেঁতাগেঁতি করে বসে আছে। দেখেই থেমে যায়। হাঁক ছেড়ে বলল ,

” মিরাজ , সুফিয়ান চল বাসায় ফিরে যাই। ”

কথা শেষ করে হাঁটা শুরু করে। সারাফাত ম্যানসনে এসেই ফারাহ্ কে কোল থেকে নামিয়ে দিয়ে জিজ্ঞেস করল নাহিয়ান ,

” উপরে যেতে পারবি? ”

চটপটে উঠে ফারাহ্। অনেক খানি দূরে সরে আসে নাহিয়ানের থেকে। সিড়ির কাছাকাছি দাঁড়িয়ে গায়ের জ্যাকেট খুলে কোমড়ে বেধে নিল। এক পা সিড়িতে অন্য পা সিড়ির নিচে। দু’ষ্টু হেসে শুধায় ,

” মিস্টার নাহিয়ান সারাফাত থ্যাংক ইউ সো মাচ আমাকে এত কষ্ট করে বাসায় নিয়ে আসার জন্য , বাই। ”

বলেই দিল ছুট। এক ছুটে সিড়ি সব গুলো টপকে করিডর পেরিয়ে রুমে চলে গেল। নাহিয়ান কিংকর্তব্যবিমূঢ়। ফারাহ্ ওকে বোকা বানিয়েছে! ‘ বোকা ‘ শব্দ টা মস্তিষ্কে হানা দিতে গ্লাসে মোড়ানো পিলার টা জোরে পিঞ্চ মারলো। শামীম আখতার হাসলেন। ছেলেকে বলে উঠেন ,

” সকাল সকাল মেয়েটার ঘুম ন’ষ্ট করলি তুই আর তোকে ও এমনি এমনি ছেড়ে দিবে। ”

নাহিয়ান হাত ঘড়ি খুলতে খুলতে রুমে প্রবেশ করে। ড্রেসিং রুমের সামনে গিয়ে থমকে যায় সে। চোখ জোড়া শীতল হয়ে যায়। ফারাহ্ নাহিয়ান কে দেখে ফাঁকা ঢোক গিলল। একটু আগে-ই তো বুদ্দু বানিয়ে এসে ছিল লোক টা কে। এখন কি ওর ঘাড় মোটকাবে! হাতে থাকা তোয়েলা টা খঁসে পড়ে গেল নিচে। নাহিয়ান ফারাহ্ কে ভ’য় পেতে দেখে বাঁকা হাসল। খলনায়কের ভঙিতে এক পা এক পা করে এগিয়ে যায়। ফারাহ্ পিছালো না। পিছাবেই বা কোথায়? ওর পিছনে-ই কাবার্ড। অগ্যত দাঁড়িয়ে থাকতে হলো। সামনে দিয়েই পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা ও ভুল। ওর জ’ম সং সামনে। নাহিয়ান ফারাহ্’র দুই কাঁধের উপর কাবার্ডে হাত রাখল। অদ্ভুত এক দৃষ্টিতে তাকালো। ঠোঁটের কোণে ও অদ্ভুত ধূর্ত হাসি। আর তাকিয়ে থাকার সাহস ফেল না ফারাহ্। খিঁচিয়ে আঁখি জোড়া বন্ধ করে নিল। নাহিয়ান ফারাহ্’র মুখের দিকে আরেক টু ঝুঁকে ফুঁ দিয়ে দূরে সরে আসে। ফারাহ্’র অন্তর স্থলে কম্পন সৃষ্টি হল। পিটপিটিয়ে চোখ মেলে দেখে নাহিয়ান ইতি মধ্যে ওয়াশরুমে চলে গেছে। একটা দীর্ঘ শ্বাস চাপলো সে দিকে চেয়ে থেকে।

_____

মিরাজের মাথায় র’ক্ত উঠে গেছে। এত দিন ওদের ফ্যাক্টরিতে আ’গু’ন কিভাবে লেগে ছিল তা নিয়ে তদন্ত করেছে তার এক জন বন্ধু। যে কি না পুলিশের কাজে নিয়োজিত। আজকে হাস্পাতালে আসার পর ওর ওকে খবর দিল ,

‘ আ’গু’ন ভু’লবশত লাগে নি কেউ নিজের ইচ্ছেতে লাগিয়েছে৷ আর সে কেউ টা কেউ নয় তাদের-ই পরিচিত একজন। ‘

এটা শুনার পর প’শু’টে হয়ে উঠে নাহিয়ান। ওদের কেউ ওদের পিঠ পিছে ছু’ড়ি মারলো। আর ওরা টের-ই পায়নি এত নিখুঁত ভাবে খেল খেলল। তীব্র রোদের ভ্যাঁপসা গরম অনুভব করছে নাহিয়ান। অস্থিরে পুরো কেবিন জুড়ে পদচারণ করছে। চেনা জানা আপন জনের কাছ থেকে অপ্রত্যাশিত কিছু ফেলে। মনে হয় মরুভূমিতে হারিয়ে গেছে। মিরাজ চেয়ারে বসে ভাবছে , ক্ষু’ধা’র্ত বাঘ জেগে গেছে নিঃশব্দে শেষ করে দিবে ওই কালপ্রিট টা কে।

#চলবে

®️আহমেদ মুনিয়া
•••••×কার্টেসী ছাড়া কপি করা নিষেধ×

(ভুল ত্রুটি মানিয়ে নিবেন।)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here