দীর্ঘ রজনী পর্ব -১৯+২০

গল্পের নাম:#দীর্ঘ_রজনী।
লেখনীতে:#সাদিয়া_আফরোজ।
পর্ব:১৯

মেঘ বিহীন আকাশে তারার মেলা বসেছে। তার সাথে মৃদু মন্দ বাতাসে ভেপশা গরমের ভাব কেটে গেছে। এই পরিবেশ উপভোগ করার জন্য প্রেয়সীর সঙ্গ অনিবার্য। প্রেয়সী বলেতেই সাদের ঠোঁটে কোনে হাসির রেখা ফুটে উঠল।ড্রাইভ করতে করতে ছোট খাটো একটা পরিকল্পনা করলো সাদ।

ঘড়ির কাঁটা বরাবর নয়টা। ঘড়িতে নয়টা বাজেনি যেন সাজির ক্ষিদে জোয়ার এসেছে। ক্ষিদে লেগেছে করে করে বাড়ি মাথায় তুলেছে। অনিলা রহমান চিন্তিত ভঙ্গিতে সাজির দিকে তাকিয়ে থেকে টেবিলে খাবার সাজায়। যেই মেয়েকে ভাত খাওয়ানোর জন্য রিতিমত পেছনে পেছনে ছুটাছুটি করতে হয়, সে আজ নিজেই ভাতের জন্য ছুটাছুটি করছে? বিষয়টা সন্দেহ জনক। অনিলা রহমান একা নয় তার সাথে রেনুও সন্দেহে দৃষ্টিতে তাকিয়ে সাজিকে দেখছে।অনিলা রহমান আজ লক্ষ করলেও রেনু বিগত দুইদিন ধরে ব্যাপারটা খেয়াল করছে। যার দরুন তার দৃষ্টি প্রগাঢ়। রেনু মনে মনে ছপকষে রেখেছে।আজই হাতে নাতে ধরবে। সাদ ভাইয়া আর সাজি আপায মধ্যে কি চলছে তা বের করেই ছাড়বে।

আজ সাজি রাফির সাথে বসে ডিনার কমপ্লিট করে ফেলেছে। খাওয়ার দাওয়া শেষ হওয়া মাত্রই তড়িঘড়ি করে তার জন্য বরাদ্দকৃত রুমে চলে গেলো। সাজি যাওয়ার মিনিট পাঁচেক পরেই সাদ এসে উপস্থিত। রেনুর অ*ক্ষিজুগল বেরিয়ে আসার জোগাড়। তাহলে এই ব্যাপার? সাজি আপা সাদ ভাইয়ার জন্যই এতো হড়বড় করে খেয়ে ভেগে গেছে! রেনু আফসোস করে নিজের মাথা চাপড়ালো। এতো বুদ্ধীমতি হওয়ার পরেও অংক মেলাতে পারলো না সে। এ জিবন রেখে লাভ কি!

অনিলা রহমান ঘড়ির কাঁটার দিকে তাকিয়ে রহস্য করে বললো,, কেউ একজন ঘড়ির কাঁটা দেখে বলতে পারবে আমার ছেলের আসার সময় হয়েছে। অথচ আমি মা হয়েও বুঝতে পারলাম না।

সাদ ল্যাপটপের ব্যাগ টি-টেবিলের উপর রেখে সোফায় গা এলিয়ে দিলো। হঠাৎ মায়ের এমন কথায় হকচকিয়ে উঠে বসলো।

~ কি বলছো মা? কে ঘড়ির কাঁটা দেখে বলতে পারবে?

অনিলা রহমান মৃদু হেসে পানির গ্লাস এগিয়ে দিলো। রেনু টিভির অন করে ক্রা*ই*ম পে*ট্রোল দেখতে দেখতে বলল,, কে আবার! যে এই দুইদিন আপনি আসার আগে আগে খাবার দাবার সেরে লুকিয়ে পড়ে সে।

সাদ পানির গ্লাস রেখে চোখ পাকিয়ে বলল,, রেনু তুই ইদানিং পুলিশের চাকরি নিয়েছিস? আজকাল তোকে দেয়ালে আশেপাশে ঘেঁষে ঘেঁষে চলতে দেখি। ক্রা*ইম পে*ট্রো*ল দেখে দেখে ভোতা মাথা ধারাচ্ছিস তাইনা?

রেনু ভীতু চোখে তাকিয়ে টিভি বন্ধ করে কিচেনের দিকে ছুটলো। এইখানে থাকা বি*প*জ্জনক। যেকোনো সময় হাত পা ভে*ঙ্গে হাতে ধরিয়ে দিতে পারে। সাদ ভাইয়াকে বিশ্বাস নেই।

অনিলা রহমান মুচকি হেসে ছেলের শিয়রে বসলো। মমতা মাখা হাত ছেলের মাথায় বুলিয়ে আদুরে গলায় সুধালো,, মেয়েটাকে ভ*য় দেখাস কেন তুই? আজ দুইদিন ধরে দেখছি। তুই বাড়িতে থাকলেই তোর ভয়ে মেয়েটা আমার আঁচল ধরে ঘুরে বেড়ায়। তোর আসার আগে খেয়ে দেয়ে রুমে চলে যায়। কি করেছিস বলতো?সব সময় রে*গে কথা বলাকি খুব দরকার সাদ?

মায়ের কথায় ফোঁস করে নিঃশ্বাস ফেললো সাদ। এই মেয়ে তাকে জ্বা*লি*য়ে মা*রছে। না ঠিক মতো ঘুমাতে পারছে ,না খেতে পারছে কাজের সাথে তো প্রায় ব্রেকাপ হবার দশা। এতো লজ্জা কই থেকে আসে! নাহ আজ এই মেয়েকে সায়েস্তা করতেই হবে। আপাতত মাকে সামলাই।

~ তেমন কিছু না মা। দেখো গিয়ে কোনো সয়তানি করে আমার জিনিস পত্র ভেঙ্গেছে। এখন মা*র খাওয়ার ভ*য়ে লুকিয়ে বেড়াচ্ছে।

অনিলা রহমান ছেলের কথা শুনে কুঁচকে রাখা ভ্রু জুগল সিথিল করলো।সাদের কথা সত্য। সাজি আগেও একবার এমন করেছিল। ছুটোছুটি করতে গিয়ে সাদের ক্রীক্রেট টুর্নামেন্টে পাওয়া ম্যান অফ দা ম্যাচ ট্রফিটা ভেঙে লুকিয়ে পড়ে। যার জন্য সাদ সাজির উপর ভিষন ক্ষে*পে যায়। এর পর থেকেই তো সাজি সাদকে ভয় পেতে শুরু করে। যদিও এই ঘটনার বছর ছয় হয়ে এসেছে তাও, সাজিতো আর বদলাইনি। এখনো সেই ছোট্ট সাজিই আছে।

~ মা আমি ফ্রেশ হয়ে আসছি। তুমি খাবার গরম করে দাও।

সাদের কথায় অনিলা রহমান উঠে কিচেনে চলে গেল। ঘড়ির কাঁটা দশটা ছুঁই ছুঁই। বাড়ির নিয়ম অনুযায়ী দশটা মানেই সবাইকে খাবার টেবিলে উপস্থিত থাকতে হবে। যদিও বা মাঝে মাঝে এর হেরফের হয়। কিন্তু সাদের বাবা বেঁ*চে থাকা অবস্থায় এই নিয়মটা কড়াকড়ি ভাবেই পালন করতো।

খাবারের পাট চুকিয়ে সবাই সবার রুমে ঘুমাতে চলে গেল। একটা বেজে গেছে,সবাই ঘুমিয়ে পড়লেও ঘুম নেই শুধু সাদের চোখে। এই দিকে সাজি বেচারি চক্ষু লজ্জার কারনে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। যেই মেয়েকে রাত বারোটায়ও টিভির সামনে থেকে উঠাতে পারতো না, কিন্তু সে এখন দশটা বাজার আগে আগে ঘুমিয়ে পড়ে। অন্যের ঘুম হা*রাম করে নিজে চিৎ পটাং হয়ে ঘুমাচ্ছে। এতক্ষণে হয়তো শত শত স্বপ্ন দেখাও শেষ।

সাদ কিছুক্ষণ পায়চারি করে রুমের বাইরে উঁকি মে*রে সব রুমের লাইট চেক করলো। লাইট অফ দেখে স্বস্থীর নিঃশ্বাস ফেলে পা টিপে টিপে রুম থেকে বেরোয়। অসয্য!! এই মেয়ের কারনে নিজের বাড়িতে নিজেকে চোরের মতো ঘুরে বেড়াতে হচ্ছে। জংলি মেয়ে কোথাকার। থা*প্প*ড় মে*রে মে*রে সব দাঁত আজই ফে*লে দিবো।

দাঁতে দাঁত পিষে রাগ সংবরণের চেষ্টা চালাতে চালাতে সাজির রুমে পৌছে গেলো সাদ। কোলস্টফোবিয়া থাকার কারণে ছোট বেলা থেকেই দরজা খোলা রেখে লাইট জ্বালিয়ে ঘুমায় সাজি। তাই রুমে ঢুকতে তেমন একটা বেগ পেতে হয়নি।

হাত পা ছড়িয়ে ছিটিয়ে ঘুমিয়ে আছে সাজি। ছাই রঙা লেডিস ট্রাউজারের সাথে হালকা বেগুনি রঙের লং টিশার্ট পরে ঘুমাচ্ছে । চুল গুলো এলোমেলো হয়ে মুখের উপর পড়ে আছে, ছোট বাচ্চাদের মতো ঠোঁট উল্টে রেখেছে। কে বলবে কিছুদিন পর মেয়েটা ভার্সিটিতে ভর্তি হবে? এখনো বাচ্চাই রয়ে গেছে।

এতক্ষণ এই মেয়ের জন্য যতোটা রাগ পুষে রেখেছিল তার ছিটেফোঁটাও নেই এখন। মাথা চুলকাতে চুলকাতে মুচকি হাসলো সাদ। এই মেয়ে সত্যি তাকে এলোমেলো করে দিচ্ছে। শক্ত পোক্ত ধৈর্য্যের অধিকারী মানুষটার ধৈর্য শক্তি ভে*ঙে গুঁ*ড়ি*য়ে দিচ্ছে। কি আছে এই মেয়েতে? কেন এই মেয়ে তার অন্তঃস্থলে বি*না*ষি*নি রূপ নিয়েছে?এই মেয়ের ক্ষমতা এতো প্রখর কেন? সাজির মাথায় হাত বুলিয়ে হাসলো সাদ। কিছুই জানে না সে, শুধু জানে এই মেয়েটাকে তার জিবনে লাগবে। সাজি নামক মেয়েটা তার জিবনে অপশনাল নয় বরং মেন্ডেটোরি বিষয়ের মতো। যাকে ছাড়া চলবে না, একদম চলবে না।

বালিশের পাশ থেকে ছাই রঙা ওড়নাটা পকেটে পুরে নিলো সাদ। এলোমেলো চুল গুলো আলগোছে কানের পেছনে গুঁজে দিয়ে পাজা কোলে তুলে নেয় । ঘুম কাতুরে মেয়ে, কোথায় রাত জেগে প্রেমিক-কে সময় দিবে!তা না করে পড়ে পড়ে ঘুমাচ্ছে। কি মেয়েরে বাবা!

ধীর পায়ে সিঁড়ি বেয়ে ছাদে উঠে গেলো।সাজি তখনও ঘুমে। সাদের মতে এই মেয়েকে ঘুমে রেখে দেশান্তর করে দিলেও টের পাবে না। কেউ যদি চায় তো ক্লো*রো*ফর্ম ছাড়াই কি*ড*ন্যা*প করতে পারবে।

ছাদের একপাশে পেতে রাখা চেয়ার টেবিল। অন্ধকারে পা টিপে টিপে আন্দাজ করে সেই ওবদি পোঁছে গেলো সাদ। পা দিয়ে চেয়ার টেনে সাজিকে নিয়ে বসে পড়লো। রাত গভীর হওয়াতে আকাশের বুকে তারা গুলো আরো বেশি প্রগাঢ় হলো। বড় তারা গুলোর পাশাপাশি ছোট ছোট তারা গুলোও মিট মিট করে জ্বলছে। সেই মিটমিটে আলো তারার চারপাশে ঈষৎ আলোকিত করছে। তার সাথে মৃদু মন্দ বাতাসে ঝাপটা পরিবেশটাকে আরো বেশি রোমাঞ্চিত করে তুলছে।

সাদ বুক ফুলিয়ে শ্বাস নিলো। বাতাসের ঝাপটায় কিছু চুল সাজির চোখে মুখে আঁচড়ে পড়ে। এতে সাজি বেজায় বিরক্ত, বিরক্তে চোখ মুখ কুঁচকে সাদের বুকে মাথা গুঁজে মুখ ঘসলো। সাদ সাজির এহেন কান্ডে প্রথমে চমকে উঠলেও পরক্ষনেই শব্দ করে গা দুলিয়ে হেসে উঠে।
সাদের হাসির শব্দে নড়েচড়ে উঠে পিটপিট করে চোখ মেলে তাকালো সাজি। চারপাশে অন্ধকার দেখে ঘা*বড়ে গেল।বড় বড় করে নিঃশ্বাস ফেলতেই পুরো শরীর ঝাকুনি দিয়ে উঠে। পুরো শরীর ইতিমধ্যে ঘামতে শুরু করে। ভয়ে জড়সড় হয়ে কাঁপা কাঁপা গলায় কিছু বলতে নিয়ে থেমে যায়। কথা সব গলায় দলা পাকিয়ে যাচ্ছে যেন।

ততক্ষণে সাদ হাসি থামিয়ে সাজির গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করে।হুট করে সাজির সমস্যার কথা মনে পড়তে,ওহ শিট!! বলে পকেটে হাত গলিয়ে মোবাইল খুজে বের করে। তাড়াতাড়ি মোবাইলের ফ্লাশলাইট অন করে সাজির দিকে তাক করায়। এতক্ষণে সাজির চোখ মুখ লাল হয়ে উঠেছে। হাত পা অবশ হয়ে এসেছে প্রায়। লাইট অন হওয়াতে টেনে নিঃশ্বাস নেয় সাজি। সাদ একহাতে সাজিকে বুকের সাথে আলতো করে চেপে আশ্বস্ত করে বললো,, আমি আছিতো। ভয় পাচ্ছিস কেন? শান্ত হয় এই দেখ তোর সাদ ভাই এইখানেই আছে।
সাজির অবস্থা দেখে নিজেকেই নিজের কাছে অপরাধী লাগছে। ইস! কি করে এই ব্যাপারটা মাথা থেকে বেরিয়ে গেলো? কি জন্য এনেছে আর কি হয়ে গেল!

সাজি খানিকবাদে কিছুটা স্বাভাবিক হয়। মাথা তুলে সাদের দিকে তাকিয়ে দেখে সাদের মুখটা বাংলার পাঁচের মতো করে রেখেছে। সাজি চারপাশে চোখ বুলিয়ে বুঝতে পারে এইটা তার ফুপ্পির বাসার ছাদ। সাদ ভাই তাকে এইখানে নিয়ে এসেছে। কিন্তু কেন?
সাজি সাদের মুখের দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে বলল,, মুখটা এমন করে রেখেছেন কেন? আর আমিই-বা এইখানে কেন? কি মতলব সাদ ভাই?

সাদ মুখ ফুলিয়ে বললো,, প্রেম করার জন্য নিয়ে এসেছি কিন্তু কপাল করে প্রেমিকা পেয়েছি,লাখে একটা। প্রেম আর হলো কই প্রেমিকার হুশ ফেরাতে ফেরাতেই জান যায়। কোথায় ভাবলাম এই সুন্দর রাতে লং ড্রাইভে যাবো!

সাজি দাঁতে দাঁত চেপে কটমট করে বললো,, ইহো জন্মে শুনিনি ছাদে উঠে লং ড্রাইভে যায়।

সাদ ফুঁসে ওঠে বললো,, মাথা মোটা আমিকি বলেছি ছাদে উঠে লং ড্রাইভে যাবো? ষাঁড়ের মত পড়ে পড়ে ঘুমাচ্ছিস দেখে ছাদে নিয়ে এসেছি। নয়তো ঠিকই নিয়ে যেতাম।

~ এতো বড় সাহস আমাকে ষাঁড় বলে? আপনি র*গচটা শেয়াল যার বদ বুদ্ধি আর রাগ দুটোই নাকের ডগায় থাকে। আসছে লং ড্রাইভে নিতে।

~ আমি র*গচটা শেয়াল? এখন এই রগচটা শেয়ালের কোলেই বসে আছিস। বেশি করলে উপর থেকে ফেলে কোমর ভে*ঙে দি*বো। গিয়েছিস কখনো রাতের বেলা লং ড্রাইভে ?

সাজি দাঁত কিড়মিড় করে সাদের গেন্জি টেনে ধরে হিস হিস করে বলে উঠলো, এখন এতো বড় বড় কথা বলছেন,নিয়ে গেছিলেন কখনো?

সাদ ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে বললো,, আমি কেন নিয়ে যাবো?

সাজির রাগ আকাশ ছুঁই ছুঁই। একপ্রকার রেগে চেঁচিয়ে বলে উঠলো,, বাবা দেশে নেই সব দায়িত্ব আপনার। আপনিই তো ফা*লতু নিয়ম করে দিয়েছিলেন যেখানেই যাই যেন বিকলে পাঁচটার আগে বাড়ি ফিরি। তাহলে এই কথা বলছেন কোন সাহসে? আপনার ভয়ে একটা প্রেম ওবদি করিনি। নয়তো কলেজ বাংক করে ঠিকই প্রেমিকের সাথে লং ড্রাইভে যেতাম। আসছে এখন ভ্রু কুচকাতে!

সাজির কথায় সাদ বেকুবের মত তাকিয়ে রইল। সাজির কথা গুলো আসলেই সত্যি। সাদ অপরাধীদের মত সাজির দিকে তাকিয়ে কিছু বলতে নিবে তার আগেই সাজি হুঙ্কার দিয়ে বললো,, কোলে তুলে নিয়ে এসেছেন কোলে তুলে ঘরে দিয়ে আসুন। এইটা মোটেও আশা করবেন না, আমি পায়ে হেঁটে যাবো। তাড়াতাড়ি ঘরে দিয়ে আসুন।কুইক!

এই প্রথম সাজির কথায় সাদ ভয় পেলো। ভীষণ ভয় পেলো। সাজির হাতে মোবাইল ধরিয়ে সাজিকে নিয়ে উঠে দাঁড়ালো সাদ। মিটমাট করতে এসে আরো বেশি রাগিয়ে দিলো। কে বলেছে এই মেয়ের প্রেমে পড়তে! প্রেম বাঘের মতো আমিটাকে বিড়াল বানিয়ে ছাড়লো। ছিঃ!!
____

বিঃদ্রঃ যারা গল্প পড়বেন ধৈর্য নিয়ে পড়বেন। গল্পের প্রতি পর্বে রোমাঞ্চকর কিছু থাকবে এমনটা কিন্তু নয়। তবে প্রতিটা পর্বে প্রতিটা চরিত্র একটা গল্পকে “গল্প” হিসেবে গড়ে তুলতে মূখ্য ভূমিকা পালন করে।তাই সবাই ধৈর্য নিয়ে পড়বেন❤️। সাথে আপনাদের মতামত গুলো শেয়ার করবেন। এতে লেখার আগ্ৰহ বাড়বে এবং গুছিয়ে লিখতে পারবো।

ইনশাআল্লাহ চলবে,,,

( ভুল গুলো সুধরে দিবেন।)গল্পের নাম:#দীর্ঘ_রজনী।
লেখনীতে:#সাদিয়া_আফরোজ।
পর্ব:২০

ভোরের আলো ফুটেছে অনেক আগেই। স্নিগ্ধ ভোরে জানালার কাঁচ ভেদ করে একফালি রোদ্দুর এসে পড়লো সাজির চোখে মুখে। সেই মিষ্টি রোদ্দুর সাজির কাছে বিরক্তের কারন ব-ই কিছুই না। কপাল কুঁচকে আড়মোড়া ভেঙে চোখ খুললো সাজি। বালিশের পাশে হাতড়ে ওড়না খোজার ব্যার্থ চেষ্টা চালালো। ওড়না না পাওয়ায় কপাল কুঁচকে বিরক্তি প্রকাশ করে উঠে পড়লো। ওড়না বালিশের পাশেই তো রেখেছিল। তাহলে গেলো কোথায়? বিছানার নিচে খুঁজে ধপাধপ পা ফেলে ওয়াশ রুমে চলে গেল। সকাল সকাল মুড খারাপের জন্য ছোট একটি কারনেই যথেষ্ট ছিলো।

দাঁত ব্রাশ করে মুখে পানির ঝাপটা দিতেই টনক নড়লো। রাতের কথা মনে হতেই শুকনো ঢোক গিললো সাজি।সাদ ভাইকে কি কি বলেছে, কি ভাবে ধমক দিয়েছে সব একে একে চোখের সামনে স্পষ্ট হতে শুরু করলো। ওড়নার চিন্তা মাথা থেকে ছুঁড়ে ফেলে দিলো এতক্ষণে। ওয়াশ রুম থেকে বেরিয়ে মুখ মুছতে মুছতে নিজের ভেতরে সাহস সঞ্চার করলো। যা হবে দেখা যাবে। আমিতো আর এমনি এমনি বলিনি। ঘুমের ঘোরে বলেছি সব। ঘুমের ঘোরে মানুষ অনেক কিছুই বলে। এইসব সিরিয়াসলি নেওয়ার কিছু নেই। তারউপর আমি ছোট মানুষ। এমন একটু আধটু ভুল হবেই। হ্যা তাইতো! থা*প্প*ড় মারার আগেই স্যরি বলে নিবো।
নিজেকে নিজে শান্তনা দিয়ে আরেকটা ওড়না নিয়ে বেরিয়ে পড়লো।
রুম থেকে বেরিয়ে যেতে যেতে বিড়বিড় করে বলে উঠলো,, বেশি করলে ফুপ্পির পেছনে লুকিয়ে পড়বো। এতো ভয় পাওয়ার কি আছে? বাঘ না ভাল্লুক যে ভয় পাবো!হু!

আজ শুক্রবার ছুটির দিন। সাদের আজ অফিস না থাকলেও অফিসের কাজ ঠিকই আছে। সকাল ছয়টা থেকে সোফায় বসে ল্যাপটপে প্রয়োজনীয় ই-মেইল আর ফাইল গুলোই চেক করছিলো।

সাজি হেলেদুলে ডাইনিং টেবিলে এসে বসলো। গ্লাসে পানি ঢেলে নিয়ে টেবিলে মাথা এলিয়ে স্বভাবসুলভ জোরে জোরে চিল্লিয়ে অনিলা রহমানকে ডাকতে লাগল।

সাজির চিল্লানোতে সাদ হকচকিয়ে গেল। ল্যাপটপ থেকে চোখ সরিয়ে সাজির দিকে একরাশ বিস্ময় নিয়ে তাকালো। সাজিকে এইভাবে কখনো ডাকতে দেখেনি। দেখবেই বা কি করে?তার সামনে এই মেয়ের মুখে বুলিই তো ফোটে না।কি মেয়েরে বাবা। সাত সকালে পুরো বাড়ি মাথায় তুলে রেখেছে।

পুরো বাড়িতে ফুপ্পি শব্দটা বার কয়েক প্রতিধ্বনি হতে লাগলো।

অনিলা রহমান আঁচলে হাত মুছতে মুছতে কিচেন থেকে ছুটে বেরিয়ে এলো। বাড়িতে থাকলে মাকে এইভাবে ডেকে পুরো বাড়ি মাথায় তুলে। ফুপ্পির বাড়িতে থাকলে ফুপ্পিকে। এই দুই জায়গায় সাজি তার আবদার খাটায়। তাছাড়া দাদার বাড়ি কিংবা নানার বাড়িতে সাজির রা শব্দ শুনা যায় না।

অনিলা রহমান মৃদু হেসে সাজির মাথায় হাত বুলিয়ে আদর করে বুকে জড়িয়ে ধরে। সাজি ছোট বাচ্চাদের মতো লেপ্টে থেকে বলে উঠলো,, তাড়াতাড়ি খেতে দাও ফুপ্পি। ভীষণ ক্ষিদে পেয়েছে।

অনিলা রহমান আড় চোখে সাদের দিকে তাকিয়ে ঠোঁট টিপে হাসলো।ছেলে তার অবাকাতার চরম সীমান্তে পৌছে গেছে। সাদ হা করে তাকিয়ে আছে। সাজি যে তার মায়ের কাছে এতোটা বাচ্চামো আবদার জুড়ে দেয় তা সাদ জানতো না। সাদের কাছে মনে হচ্ছে সাজি ছোট বাচ্চা।
হুট করে রাতের কথা মনে পড়লো।মূহুর্তে চোখ মুখ শক্ত করে বিড়বিড়িয়ে বলে উঠলো,, আদরে বা*দ*র হওয়া বাচ্চা।

অনিলা রহমান সাজিকে নাস্তা এনে খেতে দিলো। সাজি পা দুলিয়ে পরোটা চিবোচ্ছে। রেনু কিচেনে কাজ করছে,এইদিকে রাফি পুরো বাড়িতে ছুটোছুটি করে বেড়াচ্ছে। মাঝে মাঝে সাজির কাছ থেকে পরোটার টুকরো নিয়ে খাচ্ছে। চাঁদ ঘুমাচ্ছে তাই তার শব্দ নেই। এইদিকে সাজির বিন্দু পরিমান আইডিয়া নেই তার ঠিক পেছনে সোফায় বসা ব্যাক্তি তার দিকে তীক্ষ্ম দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।

খাওয়া শেষে টেবিল ছেড়ে উঠে পেছনে ফিরে হকচকিয়ে গেল।ভয়ে বুক দুরুদুরু করতে লাগলো।এই সময় সাদকে মোটেও আশা করেনি। তাছাড়া সাদ যেভাবে তাকিয়ে আছে তাতে বুঝতে দেরী হলোনা তার কপালে শনির দশা ঘুরছে। সাদ ভাই নামক শনির দশা। সাজি ভয়ে শুকনো ঢোক গিললো। উনি এইভাবে তাকিয়ে আছে কেন?কাল রাতে কি বেশি বলে ফেলেছি? না এতো বেশি তো বলিনি। কিন্তু ধ*মক দেওয়া আমার মোটেও উচিত হয়নি। আল্লাহ এই যাত্রায় বাঁ*চিয়ে দাও। পরের যাত্রায় জিবনেও ধমক দিবো না।

সাদ ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে গম্ভীর গলায় ডাকলো,, এইদিকে আয় কথা আছে।

ব্যাস আর কি লাগে। জিবন এইখানেই শে*ষ। ইচ্ছে করছে টমের মতো মাথার উপর ফুলের টব রেখে নিজেকে রিপ ঘোষণা করে দিতে। কিন্তু এই মূহুর্তে ফুলের টব জোগাড় করা কষ্ট সাধ্য হয়ে যাবে।সাজি চোখ ঘুরিয়ে আশেপাশে নিজের প্রিয় ফুপ্পিকে খোঁজার চেষ্টা চালালো। কিন্তু ফলাফল শূন্য!

বুকে হাত দিয়ে জোরে নিঃশ্বাস নিয়ে এগিয়ে গেলো। সাদ ইশারায় সোফা দেখিয়ে বসতে বলে। সাজি গুটিসুটি মে*রে বসে পড়লো।
সাদ কিছু বলবে তার আগে কলিং বেল বেজে উঠলো।

কলিং বেল নয় যেন সাজির ছুটির ঘন্টা বেজেছে। খুশিতে লাফিয়ে উঠার জোগাড়।সাজি উঠতে গেলে সাদ হাত দিয়ে থামিয়ে দেয়।কে না কে এসেছে তা না জেনেই সাজিকে দরজা খুলতে দেওয়া মোটেও উচিত নয়। সাদ উঠে দরজা খুলে দিলো।

সাদের দাদার বাড়ি থেকে তার কাজিনরা এসেছে। সাদ তার দাদার বাড়ির আত্মিয়দের পছন্দ না করলেও তার কাজিন গুলোকে সে বড্ডো বেশি স্নেহ করে। সাদের মতে মা বাবার দো*ষের দা*য়ভার সন্তানরা কেন বহন করবে!মনমালিন্য চাচা,ফুপুদের সাথে তাদের ছেলেমেয়েদের সাথে নয়। সাদ দরজা খুলে সবাইকে ভেতরে আসতে বলে ।

সাদের দাদার বাড়ি থেকে রশনি,জিহান, আজাদ , বিন্দু, আর শেফালী এসেছে। বাড়ির ভেতর ঢুকতেই সবাই হই হই করে উঠলো। সাজি সবার এমন হইচই শুনে থমথমে খেয়ে বসে আছে। তার ঠিক কি রিয়েকশন দেওয়ার কথা সেটাই বুঝতে পারছে না।

অনিলা রহমান হইচই শুনে কিচেন থেকে বেরিয়ে এলো।
অনিলা রহমানকে দেখা মাত্র ছুটে গিয়ে সালাম করলো সবাই। অনিলা খুশি হয়ে সবাইকে একে একে জড়িয়ে ধরে মাথায় হাত বুলায়।

~ এতো দিন পর মনে পড়লো?

অনিলা রহমানের এহেন অভিমানী কথায় রশনি মুখ ফুলিয়ে বললো,, কি করবো মামুনী! কারো ক্লাস ছিল তো কারো পরীক্ষা। এইজন্যই আসতে পারিনি। আজ শুক্রবার হওয়াতে সবাই চলে এলাম। রশনির কথায় আজাদ সম্মতি দিয়ে বললো,, হ্যা মামুনি তা না হলেতো রশনি আপু প্রায় উড়ে চলে আসে।এই বাড়ি তার একটু বেশিই প্রিয় কিনা।
বিন্দু বরাবরের মতই চুপচাপ। চোখের চশমা ঠিক করে মুচকি হাসলো শুধু ।
শেফালী অনিলার গলা জড়িয়ে ধরে আবদারের সুরে বলল,, তোমাকে খুব মিস করি জেঠি।
অনিলা রহমান মৃদু হেসে শেফালির মাথায় পিঠে হাত বুলোয়।
জিহাদ মুখ বেঁকিয়ে বললো,, জেঠিকে মিস করিস নাকি তার হাতের বিরিয়ানি মিস করিস! মি*থ্যুক মেয়ে কোথাকার!

জিহাদের কথায় সবাই হা হা করে হেসে উঠলো। অনিলা রহমান সবাইকে বসতে বলে কিচেনের দিকে ছুটলো। ছেলেমেয়ে গুলো এতো দিন পর এসেছে। খালি মুখে বসিয়ে রাখবে নাকি!
রেনুকে তাড়া দিয়ে সবার জন্য নাস্তা বানাতে বললো।

সাজি পিটপিট করে তাকিয়ে সবাইকে দেখছে। এদের আরো আগেও একবার দেখেছে। তবে নাম গুলো ঠিক মনে নেই। অবশ্য মনে না থাকারই কথা।

সবাই ক্লান্ত ভঙ্গিতে সোফায় বসলো। ঠিক তখনই সবার চোখ সাজির দিকে পড়ে। সাজি সবার তাকানোতে কিছুটা অপ্রস্তুত হয়। সবার দৃষ্টি কেমন অদ্ভুত হলেও তন্মধ্যে চশমা পরা মেয়েটা মিষ্টি করে হেসে তাকাচ্ছে।

বিন্দু মুচকি হেসে সাজির সাথে কুশলাদি বিনিময় কর। যদিও আর সবাই সাজিকে দেখে তেমন একটা খুশি হতে পারলো না। যার দরুন কুশলাদি বিনিময়ের চেয়ে তারা নিজেদের মধ্যে ফিসফিস করায় ব্যাস্ত।
শেফালী রশনিকে চিমটি কে*টে সাজির দিকে ইশারা করলো।
এতে রশনি এক ভ্রু উঁচিয়ে কিঞ্চিৎ বিরক্ত প্রকাশ করে। এই মেয়েকে রশনি একটুও পছন্দ করে না। এই মেয়ের জন্যই সাদ একটু বেশিই দরদ দেখায়। বেশি কেয়ার করে, যা রশনির খুব বেশি অপছন্দ।

সাদ এতক্ষণ ফাইল আর ল্যাপটপ নিয়ে ব্যাস্ত। ফাইল গুলো গুছিয়ে ল্যাপটপ নিয়ে উঠে পড়ে। সাদের সাথে কথা বলার জন্য উদ্যত হয়ে উঠে দাঁড়ালো রশনি।

সাদ রশনিকে দাঁড়াতে দেখে ভ্রু কুঁচকে বললো, তুই কোথায় যাচ্ছিস?

~ কোথায় আবার! তোর সাথে যাচ্ছি। অনেক দিন পর দেখা ভাবলাম গল্প করি।

সাদ নিরেট স্বরে বলল,, গল্প করার জন্য আমার পেছনে পেছনে যাওয়ার কোনো কারণ দেখছি না। গল্প এইখানে বসেও করা যায়। এইখানে সবার সাথে বস আমি এই গুলো রেখে আসছি।

সাদের কথায় রশনির মুখটা চুপসে গেল। সব সময় সাদ এইভাবেই কথা বলে । একটু হেসে,সুন্দর করে কথা বললে কি হয়?

সাদ গটগট করে হেঁটে রুমে চলে গেল।

রশনি সাদের মেজো ফুফুর বড় মেয়ে, আজাদ ছোট ফুফুর ছেলে। শেফালী, জিহাদ আর বিন্দু ছোট চাচার ছেলে মেয়ে। রশনি ছাড়া বাকি সবাই সাদের চার পাঁচ বছরের ছোট। রশনি আর সাদের বয়সের গ্যাপ একবছর। তাই সাদকে তুই সম্বোধন করে কথা বলে।

সাদ যেতে রশনি মুখ ফুলিয়ে সোফায় বসে পড়লো।নজর ঘুরিয়ে বার কয়েক সাজিকে দেখে মুখ বেঁকিয়ে শেফালির সাথে ফুসুর ফুসুর করে সাজিকে নিয়ে আলোচনা করতে শুরু করলো।
অন্য দিকে আজাদ আর জিহাদ আলোচনার শীর্ষেও সাজি রয়েছে। আজাদ আর জিহাদ দুইজন সমবয়সী। দুইজনের দৃষ্টি ঘুরেফিরে সাজির দিকে নিবদ্ধ হচ্ছে। যেই দৃষ্টি সাজিকে অস্বস্তিতে ফেলছে। কিন্তু ভদ্রতার খাতিরে উঠে যেতে পারছেনা।

সাজি বিন্দুর সাথে টুকটাক কথা বললেও সে ভীষণ পী*ড়ায় আছে। সামনে বসা দুইজোড়া মানুষ যে তাকে নিয়ে আলোচনা করছে তা বুঝতে বাকি নেই। তাদের তাকানো , কথার ভঙ্গি সেটাই ইঙ্গিত করছে বারবার। সাজি ওড়না টেনেটুনে পুনরায় ঠিক করে। বিন্দু সবটা বুঝেও চুপ করে রইলো। তার ইচ্ছা থাকার সত্তেও সবার ছোট হওয়ার দরুন কিছুই বলতে পারছে না। শুধু বারবার সাজির সাথে কথা বলে তাকে স্বাভাবিক করতে চেষ্টা করছে।

সাদ রুম থেকে বেরিয়ে কিছুক্ষণ দরজার সামনে দাঁড়িয়ে সবার কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করে। দাঁতে দাঁত চেপে ফোঁস করে নিঃশ্বাস ফেললো।শুরু থেকেই সাজির প্রতি এদের ব্যাবহার দেখছে সাদ। পুরো বিষয়টা পরিষ্কার ভাবে বুঝতে এদের ছেড়ে উঠে এসেছিল। এখন যা দেখছে বেশিক্ষণ এইভাবে থাকা যাবে না।

সাদ পকেটে দুহাত গুঁজে সাজির পাশে দাঁড়িয়ে গম্ভীর গলায় বলল,, চাঁদ ঘুম থেকে উঠে পড়েছে। কান্না করছে বোধহয়, যা গিয়ে কোলে নে। রেনু কাজ করছে ওকে ডাকিস না। তুই কিছুক্ষণ চাঁদকে সামলা।

সাদের কথা শেষ হতেই তড়িঘড়ি করে উঠে দাড়ালো সাজি। সাজের গলার স্বর তার ভয়ের কারন হলেও আজ ভয় পেলো না। বরং মনে মনে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করলো।এতক্ষণে স্বস্থির নিঃশ্বাস ফেলে একছুটে রেনুর রুমে চলে গেল। তখন থেকে মনে মনে এইটাই চাইছিল। যেন কেউ তাকে ডেকে এইখান থেকে নিয়ে যায়।

সাজি যাওয়ার পরপরই সাদ সাজির জায়গায় বসে পড়ে। কয়েক সেকেন্ড রশনি আর শেফালি তাকিয়ে কপালে আঙ্গুল ঘঁষে।না চাইলেও কিছু কথা বলা আবশ্যক।

ইনশাআল্লাহ চলবে,,

(ভুল গুলো সুধরে দিবেন।)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here