#দ্যা_বিউটি_অফ_লাভ
#লেখিকাঃরাকিবা_ইসলাম_আশা
#পর্বঃ১০
পরের দিন বাড়িটাকে সুন্দর করে আর্টিফিসাল ফুল,এলইডি লাইটিং করে সুন্দর করে ডেকোরেশন করা হলো ।সন্ধ্যে হতেই একে একে সব মেহমানরা পার্টিতে আসতে শুরু করলো।পুরো বাড়ি আলোয় ঝলমল করছে।
সাদিত আজ কালো শার্ট,কালো পেন্ট আর কালো সুট আর হাতে ব্র্যান্ডের ব্লাক ওয়াচ পড়েছে।ফর্সা সুঠাম শরীরে এই কালো রঙটাতে সাদিতকে একদম হিরোর কোনো অংশে কম লাগছে না,এরকম হ্যান্ডসাম লুক দেখে যেকোনো মেয়েই ফিদা হতে বাধ্য। সাদিত আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে চুলটাকে সেটিং স্প্রে দিয়ে সেট করছিলো,এমন সময় বাথরুমের দরজা খুলে কিনারা বের হলো।
সাদিত দেখলো কিনারা শাড়িটা কোনো মতো শরীরে পেচিয়ে বের হয়েছে। সাদিত কিনারার সামনে দাঁড়িয়ে বলল কি হলো তুমি এখনো রেডি হওনি।সেই কখন থেকে ওয়াশরুমের ভিতর ঢুকে ছিলে কি করছিলে,এদিকে বাড়িতে সব মেহমান আসা শুরু করেছে।মম এসেছিলো একটু আগে।
কিনারা তোতলাতে তোতলাতে বলল আসলে
সাদিত কিনারা কি কি বলবে তা বুঝতে পেয়ে দুষ্ট হেসে বলল আসলে কি বউ—–
কিনারা বলল মানে হলো—
সাদিত এবার বলল— কি কখন থেকে তোতলাচ্ছো কি বলতে চাও বলো তো।
আমি আসলে শাড়ি পড়তে পারি না,যদিও এতোক্ষন ইউটিউব এর টিউটোরিয়াল ভিডিও দেখে ট্রাই করছিলাম তবুও—-চোখ বন্ধ করে বলে ফেলল কিনারা।
কিনারা চোখ বন্ধ করেই আছে,কিন্তু সাদিত কিছুই বলছে না জন্য কিনারা আস্তে আস্তে চোখটা খুলে তাকালো, দেখে সাদিত ওর দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।মুখের কোনো ভাবমূর্তি নেই। রাগ করেছেন কিনা তাও বুঝতে পারছে না কিনারা।
সাদিত হাসতে হাসতে বলল এই কথা বলতে এতো সংকোচ তোমার —-সাদিতের হাসি যেনো থামছেই না।কোনো রকম হাসি থামিয়ে সাদিত বলে উঠলো — শুনো কিনারা আমাদের সম্পর্কটা নতুন।তোমার ব্যাপারে অনেক কিছুই আমি জানিনা।তুমিও আমার ব্যাপারে অনেক কিছুই জানোনা।একজন মানুষ একটা জিনিস নাই পারতে পারে।আমাদের সম্পর্ক গাঢ় করতে আমাদের দুজন দুজনকে সময় দিতে হবে।একজন অন্য জনকে সাহায্য করতে হবে।তুমি কি পারো না পারো,তুমি কি পছন্দ-অপছন্দ করো তা আামকে জানতে হবে।তোমার ক্ষেত্রেও সেইম।তার জন্য আমাদের একে অন্যের প্রবলেমটা নির্দ্বিধায় শেয়ার করতে হবে। না হলে বুঝবো কি করে।আর আমি কাউকে পাঠিয়ে দিচ্ছি এসে তোমাকে শাড়ি পড়িয়ে দিয়ে যাবে।
কিনারা হা করে এক দৃষ্টিতে সাদিতের দিকে তাকিয়ে আছে—-ইসসস কত সুন্দর করে উনি কথা বলতে পারেন।কত সুন্দর করে আমাকে বুঝিয়ে বললেন।উনার কথা বলার ধরণ দেখে যে কেউই হুটহাট করে প্রেমে পড়ে যাবে।
তো ওয়েট আমি পাঠিয়ে দিচ্ছি। বলে সাদিত রুম থেকে বেরিয়ে গেলো।
তারপর একটা মহিলা এসে কিনারাকে সুন্দর করে শাড়ি পড়িয়ে দিলো।তারপর কিনারা হালকা মেকআপ করে,মিসেস চৌধুরীর দেওয়া গহনা গুলো পড়েনিলো।
এমন সময় সাদিত দরজা খুলে রুমে প্রবেশ করতে করতে বলল— কিনারা তোমার হয়েছে।
কিনারা মুখ ঘুরিয়ে সাদিতের দিকে তাকিয়ে বলল–হ্যাঁ হয়েছে আর একমিনিট।
আর সাদিত বলেই হা করে তাকিয়ে রইলো—
কিনারা কাল মিসেস চৌধুরীর দেওয়া শাড়িটা পড়েছে,মুখে হালকা মেকআপ লুক আর ঠোঁটে শাড়ির সাথে ম্যাচিং করা ডার্ক পিংক কালারের লিপস্টিক।।চুলটা ছেড়ে রেখেছে,তা কোমড় ছড়িয়ে আছে ।তাতেই কিনারাকে অসম্ভব সুন্দর লাগছে।
কিনারা আয়নার সামনে থেকে উঠে এসে সাদিতের কাছে এসে বলল চলুন।বলে চলে নিতে ধরলেই
সাদিত পিছন থেকে কিনারাকে খুব রোমান্টিক মুডে ডাকলো,কিনারা লিসেন টু মি—-
কিনারা এগিয়ে গিয়েও ফিরে এসে শাড়ির কুঁচি ঠিক করতে করতে সাদিতের সামনে দাঁড়িয়ে বলল—৷ জি বলুন।
কিনারা দেখছে শাড়ির কুঁচি আর সাদিত দেখছে কিনারাকে।সাদিত কিছু বলছে না দেখে কিনারা মুখ তুলে অধৈর্য হয়ে বলল — কি হলো ডেকে কিছু বলছেন না যে।তাড়াতাড়ি বলুন নিচে সবাই অপেক্ষা করছে।
সাদিত কিনারার হাতটা টেনে কাছে নিয়ে আসলো,ওরা দুজন দুজনের একদম কাছাকাছি,একজনের নিশ্বাস অন্য জনের উপর এসে পড়ছে।সাদিত খুব রোমান্টিক মুডে আছে।কিনারা অস্বস্তিতে পড়ে গেলো,,ছটফট করতে শুরু করলো,কি করছেন কি ছাড়ুন আর নিচে চলুন।
সাদিত বলল হ্যাঁ যাবো তো তার আগে আমার কথা শুনো।তারপর বাকি কাজ।তারপর সাদিত কিনারার হাতটা ধরে ড্রেসিংটেবিলের আায়নার সামনে এনে দাঁড় করালো।তারপর ডোয়ার থেকে কাজল টা বের করে কিনারার সামনে ধরলো।তারপর ইশারায় কিনারাকে পড়ে নিতে বলল—
কিনারা বুঝতে পারলো না কিনারা জানে ও কাজল পড়েছে,সাদিত আবার বলতে কিনারা আবার বুঝলো না।
এবার সাদিত নিজে কিনারাকে কাজলটা পড়িয়ে দিলো।
বলল তুমি কাজল পড়েছো ঠিক আছে কিন্তু কাজলটা গাঢ় করে পড়লে তোমাকে আরো বেশি মায়াময়ী লাগবে।বলে কিনারার ঠোঁটের উপর আস্তে করে একটা চুমু খেলো।
কিনারা ভাবতে পারেনি সাদিত এই মুহূর্তে এমন কিছু করতে পারে।তাই কিনারা হা হয়ে চোখ বড়ো বড়ো করে সাদিতের দিকে তাকালো।
কিনারা সাদিতের ওই গভীর তীক্ষ্ণ চোখের দিকে তাকিয়ে আছে।
দুজন দুজনের দিকে তাকিয়ে রইলো।সাদিত কিনারাকে দেখতে ব্যস্ত আর কিনারা সাদিতকে।
কিনারা দেখলো সাদিতকে এই কালো রঙের পোষাকে বেশ মানিয়েছে।কিনারা তাকিয়ে তাকিয়ে সাদিতের মুখের বর্ণনা করছে, সাদিতদের এমন ফর্সা মুখ সরু টিকালো নাক, গোলাপি ঠোঁট সব মিলিয়ে একদম চকলেট বয় লাগছে।কিনারার মনে ইচ্ছে হলো সাদিতের ঠোঁটটা চকলেট ভেবে টুপ করে খেয়ে নিতে।কিন্তু পরক্ষনেই কিনারা ভাবলো— ছি ছি কি সব ভাবছি।তারপর হঠাৎই কিনারার মাথায় একটা দুষ্ট বুদ্ধি খেলে গেলো।নিতান্তই ছেলে মানুষির বুদ্ধি —
সাদিতের দিকে তাকিয়ে বলল– জানেন মিস্টার চৌধুরী আমরা যখন গ্রামে থাকতাম।তখন কেউ সুন্দর করে সাজলে তার কপালে টিপ পড়িয়ে দেওয়া হতো, যাতে কারোর নজর না লাগে।অবশ্য আপনাকে প্রত্যেকদিনই সুন্দর লাগে,কিন্তু আজ আপনি একটু বেশি সুন্দর করে সেজেছেন যার জন্য অন্য দিনের চেয়ে বেশি সুন্দর লাগছে।।আজ তো অনেক লোক আসবে যদি আপনার নজর লেগে যায়।তখন তো আপনার শরীর খারাপ করবে।তার চেয়ে আসুন আপনাকে একটা নজর টিপ দিয়ে দেয়।
এই বলে কিনারা সাদিতের কানের কাছে চুলের নিচে কাজল লাগিয়ে দিলো।এবার ঠিক আছে আর কেউ নজর দিতে পারবে না।বলে দৌড়ে রুম থেকে বেরিয়ে গেলো।
সাদিত পিছন থেকে ডেকে উঠলো কিনারা—-
কিনারা ততক্ষণে চলে গেছে।
কিনারা বেরিয়ে যেতেই সাদিতের ঠোঁটে হাসি ফুটে উঠলো।আর বলল পুরাই পাগলী।
#চলবে