দ্যা_বিউটি_অফ_লাভ পর্ব ৮+৯

#দ্যা_বিউটি_অফ_লাভ
#লেখিকাঃরাকিবা_ইসলাম_আশা
#পর্বঃ৮

রাতে কিনারা কায়ানকে খাইয়ে,গল্প করতে করতে প্রায় অনেক রাতই হলো।কারণ এতোদিন পর ভাইকে পেয়েছে ওকে ছাড়তেই ইচ্ছে করলো না। তারপর নিজে খেয়ে,সব কিছু গুছিয়ে রুমে গেলো।তখন প্রায় রাত বারোটা বাজতে চলল।কিনারা ফোনটা হাতে নিলো,দেখলো সাদিতের কোনো ফোন বা মেসেজ নেই,আসার পর একটা ফোন করে জিজ্ঞাসাও করার সময় পেলো না,কিনারা একটা শ্বাস ফেলে, ফ্রেশ হতে চলে গেলো।ফ্রেশ হয়ে বাথরুম থেকে বের হলো।শোয়ার জন্য খাটের ওখানে গিয়েও থেমে গেলো।দেখলো বারান্দার দরজাটা খোলাই আছে।কিনারা দরজার দিকে এগিয়ে গেলো।

অনেক রাত হয়ে যাওয়াই বারান্দার লাইট গুলো তেমন ভাবে জ্বলছিলো না।একটু অন্ধকার ছিলো,কিন্তু কিনারা বারান্দায় কাউকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখলো।দেখলো লোকটি কালো শার্ট পড়ে চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছে।ওই অল্প আলোতে তার মায়াবী চোখ গুলো থেকে যেনো রশ্মি বেরিয়ে আসছিলো।কম আলোতেও তার মুখের সমস্ত স্ট্রাকচার বুঝা যাচ্ছিলো।সে এমনভাবে কিনারার দিকে তাকিয়ে ছিলো যে যা দেখে কিনারার সারা শরীর কেঁপে উঠলো।তাছাড়া অন্ধকারে এভাবে দাঁড়িয়ে থাকলে যে কেউই ভয়ে কেঁপে উঠবে।

কিনারা সাদিতকে দেখে অবাক হয়ে গেলো।কিনারা তার দিকে হা করে তাকিয়ে রইলো। মি-মি-মিস্টার চৌধুরী!!!!আ-আআ-আপনি।
আপনি এখানে কি করছেন।

সাদিত কিনারাকে এভাবে অবাক হতে দেখে, সাদিত একটু হেসে কিনারার দিকে এগিয়ে গেলো। কিনারাকে কোমড় থেকে জড়িয়ে ধরে বলল,তুমি আমাকে দেখে খুশি হওনি।

কিনারা চুপ করে রইলো।সাদিতকে দেখে কিনারার৷ হার্টবিট ঘোড়ার মতো ছুটতে লাগলো। কিনারার চোখের পাতা পড়ছেনা।কিনারা বুঝতে পারছে না ও কি ঠিক দেখছে।নাকি স্বপ্ন।

আপনি এখানে,এভাবে কেন এসেছেন।মিস্টার চৌধুরী।

সাদিত কিনারাকে জড়িয়ে ধরে আরো কাছে টেনে নিলো,একদম সাদিতের বুকের কাছে,যেনো মনে হলো সাদিত কিনারার শরীরটাকে নিজের শরীরের সাথে মিশিয়ে দিতে চাইছে।

সাদিত কিনারাকে জড়িয়ে ধরে বলল তোমাকে খুব মিস করছিলাম।তারপর কিনারার শরীরের মিষ্টি সুবাসটা পেতেই সাদিত কিনারার কাঁধে শ্বাস ফেলে,কিনারার কানের কাছে নিজের ঠোঁট দুটো এগিয়ে নিয়ে প্রশ্ন করলো— কিনারা তুমি কি আমাকে একবারের জন্য ও মিস করেছো।

সেই মুহূর্তে কিনারা অনুভব করতে পারলো,সাদিত ওকে ঠিক কতটা কাছে টেনে নিয়ে শক্তভাবে নিজের শীতল বুকের সাথে জড়িয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে।কিনারার ছোঁয়া পেয়ে সাদিতের সারা শরীরে হঠাৎই একটা উষ্ণতা নেমে এলো।সাদিত কিছুটা গম্ভীরভাবে জিজ্ঞাসা করলো — কিনারা তুমি কি আমাকে মিস করেছো।

কিনারা কি বলবে ভেবে পেলো না।কিনারা নিজেও জানেনা সাদিতকে কি মিস করেছে কিনা।
তাই কিনারা বলল,আমি আপনাকে মিস কেন করতে যাবো, বলে সাদিতের কাছ থেকে সরে আসতে চাইলো।

কিনারা প্লিজ ডোন্ট মুভ।সাদিত কথাটা বলা মাত্রই কিনারাকে আরো কিছুটা কাছে টেনে নিয়ে কিনারার কাঁধের উপর নিজের ঠোঁটটাকে আস্তে ছোঁয়ে দিলো। আমি আজ ভিষন টায়ার্ড।প্লিজ আর একটা মিনিট। তারপরই ছেড়ে দিবো।

কিনারা সাদিতের স্বরে একটা ক্লান্তি ভাব অনুভব করতেই, কিনারা কোনো হ্যাজিটেশন ছাড়াই, নিজের শরীরটাকে সাদিতের শরীরের সাথে আরো নম্রভাবে মিশিয়ে দিলো।কিনারা বুঝতে পারলো এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে মিস্টার চৌধুরী হয়তো ছোঁয়াটাকে ভিষণভাবে অনুভব করছে।

প্রায় মিনিট পাঁচেক পর—–
কিনারা সাদিতকে বলল আপনি রাতে ডিনার করেছেন।

সাদিত কিনারাকে ছেড়ে মাথা নেড়ে বলল না,এখনো করিনি।

কিনারা বলল ওকে।আপনি বাথরুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে আসুন।

আমি আসছি।বলে কিনারা সাদিতকে রেখে রুম থেকে বেরিয়ে গেলো।

সাদিত রুমটাকে একবার চোখ বুলিয়ে চারপাশটা দেখে নিলো।

বাড়িটা দুতলা হলেও বেশ অনেক পুরোনো। কিনারার রুমটা বেশি বড়ো না।একপাশে সিঙ্গেল একটা খাট, সাথে পড়ার টেবিল,আর চেয়ার।অন্য পাশে একটা পুরোনো মডেলের আলমারি। একটা বুকসেল্ফ বইয়ে ভরা।আর একটা বারান্দা। তার পাশের দেওয়া একটা বড়ো ফ্রেমের ছবি।ছবিতে একজন ভদ্রলোক আর মহিলা—ছোট্ট ছেলেটি লোকটির কোলে আর ছোট্ট মেয়ের কাঁধে হাত দিয়ে দাড়িয়ে আছে মহিলাটি।সাদিতের বুঝতে অসুবিধা হলো না। এটা কিনাটার ফ্যামিলি ফটো।কারণ কিনারার ছোট্ট কালের মুখের সাথে এখনো অনেকটা মিল আছে। তারপর সাদিত ফ্রেশ হতে চলে গেলো।

ফ্রেশ হয়ে বের হতেই দেখলো কিনারা একহাতে খাবারের প্লেট আর অন্য হাতে এক গ্লাস পানি এনে টেবিলের উপর রাখলো।

সাদিত কে দেখে কিনারা বলল—আপনার জন্য খাবার এনেছিলাম।যদিও আপনি এসব খাবার খাননা। তবুও যদি একটু কষ্ট করে খেয়ে দেখতেন। ভালোই হয়েছে রান্না,দাদি রান্না করেছে।জানেন দাদির হাতের রান্না, মাছের ঝুল,ডাল সাথে আলু ভাজা।হেব্বি খেতে।

সাদিত কিনারার কাছে গিয়ে বসলো।তারপর খাবারের প্লেটটা হাতে নিয়ে কিছু খাবার মেখে কিনারার মুখের সামনে এক লুকমা ধরলো।ধরে বলল হা করো।

কিনারা বলল– আমি খেয়েছি আপনি খেয়ে নিন।

সাদিত বলল — খেয়েছো ভালো করেছো।এখন দুই লুকমা খাবার খেলে মরে যাবে না।বলে কিনারাকে কিছু বলতে না দিয়ে ওর মুখে খাবার পুরে দিলো।

কিনারা খাবার চিবতে চিবতে, হাতের উল্টো পাশ দিয়ে চোখের পানিটা মুছলো।

সাদিত খাবারের প্লেটটা রেখে — কিনারার মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বলে উঠলো — একি তুমি কাঁদছো কেন।

কিনারা হেঁচকি তুলতে তুলতে বলে উঠলো — জানেন মিস্টার চৌধুরী — ছোট বেলায় মা ঠিক এইভাবেই খাইয়ে দিতো।আমি খেতে চাইতাম না, মা ও ঠিক এভাবে জোর করে মুখে খাবার দিয়ে দিতো।আজ মাকে খুব মনে পড়ছে।

সাদিত কিনারার চোখের পানি অন্য হাত দিয়ে মুছে দিয়ে বলল—এখন থেকে প্রায় আমি তোমাকে এভাবে খাইয়ে দিবো কেমন।

এভাবে গল্প করতে করতে সাদিতের খাওয়া৷ শেষ হবার পর সাদিত গিয়ে কিনারার বিছানায় শোয়ে পড়ে।।

কিনারা খাটের কাছে গিয়ে বলল আপনি কি৷ আজ বাসায় ফিরে যাবেন না।

সাদিত উঠে এসে কিনারাকে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরে বলল —৷ বউ আমি আজকে রাতে কোথাও যাচ্ছিনা।আমি আজ এখানেই থাকবো। ঠিক আছে।

আপনি এখানে থাকবেন।বাট এমন খাটে আপনার থাকা অভ্যাস নেই। এতো ছোট খাটে আপনার থাকতে কষ্ট হবে।

সাদিত সঙ্গে সঙ্গে বলে উঠলো —হ্যাঁ,,,,,আমি থাকতে পারবো।কারণ আমি থাকতে চাই।আর তুমি যদি ওখানে থাকতে পারো আমি পারবো না কেন।

সাদিতের কথাটা শুনেই কিনারার সারা শরীর কেঁপে উঠলো। সাদিতের প্রতিটা নিশ্বাস-প্রশ্বাস কিনারার ঘাড়ের ওপর পড়াই,কিনারা কেমন একটা ঘোরের মধ্যে চলে গেলো।

সাদিত কিনারাকে আরো শক্ত করে জড়িয়ে বলল—ভয় পেয়ো না বউ, আমি তোমার সাথে কিচ্ছু করবো না। বলে কিনারার মাথায় চুমু দিয়ে ছেড়ে দিলো।
#দ্যা_বিউটি_অফ_লাভ
#লেখিকাঃরাকিবা_ইসলাম_আশা
#পর্বঃ৯

কিনারা সাদিতকে খাটে ঘুমাতে বলে কারণ অতো ছোট সিঙ্গেল খাটে দুজন ঘুমানো অসম্ভব, কিনারা নিজে গিয়ে ফ্লোরে শুয়ে পড়লো।কিনারা ফ্লোরে শুয়ে চোখ বন্ধ করতেই কিনারা অনুভব করলো ও যেনো শূন্যে ভাসছে।চোখ খুলতেই দেখলো,ও সাদিতের কোলে, পুরো ব্যাপারটা বুঝতে পেয়ে সাদিতের গলা জড়িয়ে ধরলো।ততক্ষণে সাদিত ওকে বিছানায় শুইয়ে দিয়েছে।

বউ তোমার কি মনে হয় তুমি ফ্লোরে গিয়ে ঘুমালে, আমি বিছানায় খুব শান্তিতে ঘুমাতে পারবো।একটা কাজ করো তুমি বিছানায় ঘুমাও আমি ফ্লোরে ঘুমিয়ে পড়বো।অসুবিধা নেই।

কিনারা একবার ফ্লোর দিকে তাকালো,তারপর ভাবলো,মিস্টার চৌধুরীর তো ফ্লোরের শক্ত বিছানার ঘুমানোর অভ্যাস নেই। উনি ঘুমাতেও পারবেন না।তারপর কিনারা সাদিতের দিকে তাকালো–

সাদিত এমনভাবে কিনারার দিকে ঝুঁকে ছিলো৷ যা দেখে কিনারা মুখটা কাচুমাচু করতে শুরু করে।মনে মনে ভাবে মিস্টার চৌধুরী কি করতে চাইছে,উনার সাথে এভাবে এই খাটে ঘুমাতে হবে।

কিনারার মুখ দেখে সাদিত বলে উঠলো —-
বউ প্লিজ বউ তোমার কাছে একটু থাকতে দাও,ভয় পেয়ো না, আমি তোমার সাথে কিচ্ছু করবো না।এসব বলতে বলতে কিনারার কানের কাছে যতই এগিয়ে যাচ্ছিলো,ততই সাদিতের গলা অ্যাক্ট্রাকটিভ লাগছিলো,কিনারা কেমন ঘোরের মধ্যে চলে গেলো।আর সাদিতকে কিচ্ছু বলতে পেলো না।কিন্তু লজ্জায় ওর মুখখানা হঠাৎই গোলাপি হয়ে উঠলো।কিনারা ভাবলো উনি একটু ঘুমাতেই তো চেয়েছেন,এর থেকে বেশি কিছু না।এই ভেবে নিজেকে কিছুটা শান্ত করলো।

সাদিত কিনারার পাশে শুয়ে, কিনারার কোমড়টা শক্ত করে জড়িয়ে ধরে,এক ঝটকায় নিজের দিকে ঘুরিয়ে নিলো।সেই অবস্থায় কিনারার মুখটা সাদিতের মুখের সামনে থাকার কারণে– কিনারা লজ্জা পেয়ে নিজের নিশ্বাস আর ফেলতে না পেয়ে,মাথা টা নিচু করে ফেলল।

সাদিত কিনারার মুখের দিকে তাকিয়ে দুটো আঙুল থুতনির কাছে ধরে, কিনারার মিষ্টি লাজুক মুখখানা ওর মুখের সামনে তুলে ধরলো।কিনারার চোখের দিকে তাকিয়ে একটা চার্মিং হেসে সাদিত বলল—কিনারা আমি তোমাকে যদি একটু জড়িয়ে ধরে ঘুমায়, আমার ঘুমটা ভালো হবে।এই দুইরাতে আমি যখন আমার বাড়িতে,, তোমাকে জড়িয়ে ধরে ঘুমিয়েছিলাম, তুমি আমার বুকের সাথে খুব পারফেক্টলি ফিট হয়ে গিয়েছিলে।তোমার ছোট্ট কমল পুতুলের মতো শরীরটা ছাড়তে আমার একটুও ইচ্ছে করছিলো না।আজকের রাতটাও প্লিজ আমাকে সেভাবেই ঘুমাতে দাও।বলে ঘোর লাগা চোখে কিনারার ঠোঁটের দিকে এগিয়ে গেলো।

কিানারা সাদিতের ওই কালো রঙের তীক্ষ্ণ চোখটার দিকে তাকাতেই কিনারা প্রচন্ড নার্ভাস ফিল হলো।ওই চোখের গভীরতা বুঝতে গিয়ে কিনারার ঠোঁট আচমকাই কেঁপে কেঁপে উঠলো।

ততক্ষণে সাদিতের ঠোঁট কিনারার ঠোঁটকে আঁকড়ে ধরে ছিলো।কিনারার শরীর থেকে যে মিষ্টি সুবাসটা আসছিলো সেটা সাদিতকে মাতোয়ারা করতে যথেষ্ট ছিলো। সাদিত কিনারার ঠোঁট দুটো এমন ভাবে আঁকড়ে ধরে কিস করছিলো যে,কিনারার দম বন্ধ হয়ে আসছিলো।কিনারার মনে হলো আর একমিনিট এভাবে থাকলে ও মারা যাবে, তাই কিনারার আর থাকতে না পেয়ে সাদিতকে এক ধাক্কায় সরিয়ে দিলো।
অবশেষে যেনো কিনারা প্রাণ ফিরে পেলো।কিনারার চোখ মুখ লাল হয়ে গিয়েছিলো।আর ভয়ে কাঁপছে।কিনারা সাদিতের দিকে চোখ বড়ো বড়ো করে তাকালো

সাদিত কিনারার দিকে তখনো তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে,

তখন কিনারার সাদিতের ওই দৃষ্টি দেখে মনে হচ্ছিলো,কোনো হিংস্র পশুর সামনে কোনো নিরিহ প্রাণী শিকার হিসেবে ধরা পড়েছে।আর ভয়ে থরথর করে কাঁপছে।

কিনারা উঠে বসে রাগে ফুঁসতে ফুঁসতে হাঁপাতে হাঁপাতে বলল—-এটা কি হলো।

সাদিত স্বাভাবিক ভাবে বলে উঠলো কই কি হলো।

কিনারা রেগে বলল কেন আপনি জানেন না,কি করলেন

সাদিত ভাবলেশহীন ভাবে বলে উঠলো — না কি হয়েছে বউ

আপনি আবার আমাকে জিজ্ঞাসা করছেন,,,আপনি বললেন কিছুই করবেন না। আর একটু হলেই তো আমি দম আটকে মরে যেতাম।

সাদিত আবার বলে উঠলো — কেন কি করেছি

দেখুন একদম ঢং করবেন না,মনে হচ্ছে উনি কিছুই জানেন না।

সাদিত হালকা হেসে বলল আমি কি করলাম, তুমি রাগ করেছো বউ।

আপনি তো একটা যা তা, আপনি আমাকে এভাবে কিক………………কিনারা লজ্জায় মুখ চেপে ধরলো।বলবো না।

কি হলো বউ বলো—-আরে না বললে বুঝবো কি করে।
বলে সাদিত হাসতে হাসতে শুয়ে পড়লো।

এই এই আপনি একদম হাসবেন না।আপনার হাসি দেখে আমার শরীর জ্বলে যাচ্ছে।কিনারা সাদিতের দিকে ঝুঁকে গিয়ে বলল—-

সাদিত কিনারার হাতটা ধরে এক টানে বুকের উপর ফেলে দিয়ে বলল — বউটা আমার শুধু সাপের মতো ফুসফুস করে।একটুও তো আদর করেনা।আমি করলেও সেটার নেগেটিভ মানে বের করে।আমি কেন তোমাকে মারতে যাবো।

আপনি তো আমার দম বন্ধ করতে যাচ্ছিলেন।তাই তো।আমিইই—–

সাদিত কিনারার ঠোঁটে আঙুল দিয়ে চুপ করিয়ে বলল–হিসসসসস চুপ।তারপর সাদিত কিনারার মাথায় হাত বুলিয়ে বলল– সরি বউ একটু বেশিই ঘোরের মধ্যে চলে গিয়েছিলাম।যার ফলে নিজের কন্টোল হারিয়ে ফেলেছিলাম।সরি এখন ঘুমাও অনেক রাত হয়েছে, বলে কিনারার মাথায় একটা চুমু খেলো।

এতোক্ষনে কিনারা একটু শান্ত হলো।তারপর আস্তে আস্তে সাদিতের বুকে ঘুমিয়ে পড়লো।

★★★★

পরের দিন কিনারার ঘুম ভাঙতেই দেখলো ও বালিশে ঘুমিয়ে ছিলো আর গায়ের উপর বেডসিট টা দেওয়া।ঘুম ভাঙতেই সাদিতকে দেখতে না পেয়ে হঠাৎই কিনারার মনটা খারাপ হয়ে গেলো।উনি কি চলে গেছেন।আমাকে তো একবার ডেকে বলেও যেতে পারতেন।তারপর কিনারা ভাবলো,মিস্টার চৌধুরী আমাকে বলবে কেন,আমাকে বলার প্রয়োজনই বা কি উনার,উনি তো শুধু থাকার জন্যই আমাকে বিয়ে করেছেন।আর আমি এতো কিছু ভাবছিই বা কেন আমার যতটুকু স্ত্রীর দায়িত্ব সেটাই সেটাই না হয় পালন করবো।অন্য দিকে কিনারা এটাও ভাবলো থাকলো হয়তো সাদিতের সাথে ওর বিয়েটা বেশিদিন স্থায়ী হবেনা।মিস্টার চৌধুরী হয়তো আমাকে পেয়ে এখন খুবই উৎসাহিত পরবর্তী হয়তো আমাকে একঘেয়েমি ও লাগতে পারে।সে কারণ বসতো আমাদের ডিভোর্সও হতে পারে।কি জানি বলা যায়না,বড়ো লোকদের বিশ্বাস করতে নেই, উনারা তো শুধু শরীরটাকেই চিনে।
তারপর একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বাথরুমে চলে গেলো।

সারাদিন ওদের বাড়ি থাকার পর বিকালে কিনারা চৌধুরী ম্যানশন চলে গেলো।

★★★★★

কিনারা রুমে বেডে বসে ওর জামা-কাপড় গুলো ভাঁজ করছিলো—-

এমন সময় মিসেস সাদিয়া চৌধুরী দরজাতে নক করলেন।

কিনারা মা আসবো রে—–

আরে আম্মু এসো এসো—-তোমার বাড়ি তোমার রুম আর তুমি রুমে ঢুকতে আমার কাছে পারমিশন চাইছো।

মিসেস চৌধুরী হাসতে হাসতে রুমে এসে বেডে বসতে বসতে বলল —- আরে সে যাই হোক— ছেলে মেয়ে বড়ো হলে রুমে লক করেই আসতে হয়।তোদেরও তো একটা পার্সোনালিটি আছে।

কিনারা বেডের উপর ভাঁজ করা কাপড় গুলো আলমারিতে রাখতে রাখতে বলে— হয়েছে,সে যাই হোক তোমার একলিস্ট আমি রুমে থাকলে পারমিশন নিতে হবে না।

মিসেস চৌধুরী কিনারাকে বলল ঠিক আছে, এখন এদিকে আয় দেখ তোর জন্য কি এনেছি।

কিনারা বেডে বসতে বসতে বলল — কি এনেছো আম্মু।

কিনারা দেখলো মিসেস চৌধুরী হাতে একটা ডার্ক পিংক কালালের উপর গোল্ডের জরি সুতার আর পুঁতির চোখ ধাঁধানো নকশা করা কাজ। আর তার সাথে একটা বক্স।

মিসেস চৌধুরী ওগুলো কিনারার হাতে ধরিয়ে দিয়ে বলল— কাল সন্ধ্যায় একটা পার্টির অ্যারেঞ্জমেন্ট করেছি।সেখানে তোর পাপার কিছু ফ্রেন্ড সার্কেল আর আমাদের কাছের কয়েকজন আত্মীয়-স্বজনদের বলা হয়েছে।
আসলে তোদের বিয়ের কথা এখনো তো কেউ ঠিক ওইভাবে জানে না।এদের না জানালে না হয়,,,তাই তোর পাপা ঠিক করেছেন ছোট খাটো একটা অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তা জানাতে।

কিনারা শাড়ি আর বক্সের দিকে তাকিয়ে বলল– ঠিক আছে তা বুঝলাম কিন্ত এই বক্স ভিতর কি আছে আম্মু।

মিসেস চৌধুরী বললেন, এখানে কাল পার্টিতে পড়ার শাড়ির সাথে কিছু জুয়েলারি।আমার পছন্দ অনুযায়ী সব কেনা।আশা করি তোরও পছন্দ হবে।

এভাবে কিছুক্ষন গল্প করে মিসেস চৌধুরী চলে গেলেন।

#চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here