নিরু পর্ব ১+২

#নিরু❤
পর্ব-০১
writer- #shanta_islam

আহ ব্যাথা লাগছে,,প্লিজ ছাড়ুন,,,আহ ছাড়ুন বলছি,,ভাইয়া খুব লাগছে প্লিজ ছাড়ুন,,,
-লাগুক,,
-হাতটা ছাড়ুন ভাইয়া প্লিজ খুব লাগছে,,,
-আমার যে লাগছে সেটা দেখতে পাস না!
-প্লিজ ভাইয়া হাতটা ছাড়ুন,,,,
– বডো বার বেরেছিস তুই,,খুব শখ হয়েছে ওই পালাশের সাথে হেসে হেসে কথা বলতে তাই না,,,
কথাগুলো বলেই আবির ভাইয়া আরো শক্ত করে আমার ডান হাত চেপে ধরে। আবির ভাইয়া এতো শক্ত করে হাতের কব্জিটা ধরেছে যে কোনো ভাবে ছাড়াতে পারছি না,,হাত ছাড়ানোর চেস্টা করতে করতে আমার বেধে রাখা চুলগুলো খুলে গেছে,,,
আবির ভাইয়া এক হাতে আমার হাত শক্ত করে ধরে রেখেছে আরেক হাতে আমার খোলা চুলগুলো কানে গুজে দিয়ে কানের কাছে মুখ এনে ফিসফিসিয়ে বলতে লাগলো,,
– একটুও বুঝিস না আমাকে? কেনো এমন করিস বলতো!
আবির ভাইয়ার কথার আগা গোরা কিছুই বুঝতে পারছি না। ভাইয়া কি বলতে চাচ্ছে। কেনো করছে ভাইয়া এমনটা আমার সাথে। কি দোস করেছি আমি!
আবির ভাইয়া আমার মার ফ্রেন্ড নীলা খালার একমাত্র সুপুত্র। ছোট বেলা থেকেই দেখেছি আবির ভাইয়া সবার সাথে খুব কম কথা বলে,,,আবির ভাইয়া খুব পরিপাটি একজন মানুষ,,, দেখতে খুব সুদর্শন,,গালে চাপ দাড়ি,,গায়ের রং শ্যামলা,,সবচেয়ে বেশি চোখ আটকায় তার এলোচুলগুলোর উপর,,তার কথাবার্তা চলাফেরা সব কিছুই পারফেক্ট,,,ছেলেটার মধ্যে এতোগুলো গুন আছে যে বলে শেষ করা যাবে না। আমার কাজিন আর ফ্রেন্ডগুলো তার জন্য ফিদা,,এক কথায় বলতে গেলে এলাকার সব মেয়েগুলোর এক মাত্র ক্রাস আবির ভাই,,,আবির ভাইয়া আর আমাদের বাসা পাশাপাশি,, সেই সুবাদে আমাদের ছাদ আর ভাইয়াদের ছাদও পাশাপাশি থাকায় ভাইয়াদের ছাদ থেকে আমাদের ছাদে খুব সহজেই এক লাফ দিয়ে আসা যায়,,
বিকেল বেলার ঠান্ডা হাওয়া গায়ে লাগাতে ছাদে উঠেছিলাম,,,হঠাৎ কোথা থেকে আবির ভাইয়ার আগমন ঘটে,,ছাদে এসেই আমার হাতটা ধরে হেচকা টান দিয়ে তার দিকে মুখ ফিরিয়ে কথাগুলো বলতে থাকেন,,,
-ভাইয়া আমি কিন্তু এখন চিৎকার করবো,,
-চিৎকার করবি কর,,,দেখি কতো দূর চিৎকার করতে পারিস,,,সবি বুঝিস শুধু আমাকেই বুঝিস না! আমার জায়গায় ওই পলাশ হাতটা ধরলে খুব ভালো লাগতো তাই না,,
-আহ আমার খুব ব্যাথা লাগছে,,,দেখেন এখন যদি আপনি আমার হাত না ছারেন তাহলে কিন্তু আমি সত্যি সত্যি চিৎকার করবো,,,
আবির নিরুর হাতটা না ছেরে আরো শক্ত করে চেপে ধরে,,,আবির ভাইয়ার চোখে স্পষ্ট রাগ দেখতে পাচ্ছি। রাগে চোখ দুটো রক্তবর্ণের মতো আর গাল দুটো টমাটোর মতো টক টকে লাল হয়ে আছে। কিন্তু আমার উপর কিসের জন্য তার এতো রাগ তা বুঝে উঠতে পারছি না। আমি আর সহ্য করতে না পেরে চোখ দুটো বন্ধ করে যেই চিৎকার করতে যাবো সাথে সাথে আমার ঠোঁট জোরার উপর অন্য কারো ঠোঁটের স্পর্শ অনুভব করি,,চোখ মেলে দেখি আবির ভাই নেশাগ্রস্তের মতো আমার ঠোঁট জোরা তার আয়ত্ত করে নিয়েছে। আমি চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে আছি,,, আমার সাথে কি ঘটছে তা আমি কিছুই বুঝে উঠতে পারছি না। আমি ভাইয়াকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দেওয়ার চেস্টা করি। কিন্তু তার শক্তির কাছে আমার শক্তি ক্ষুদ্র পীপিলিকার মতো বলা যায়। আবির ভাইয়াকে যতো ধাক্কা দিয়ে দূরে সরানোর চেস্টা করছি সে আরো শক্ত করে আমার কোমড় জাপটে ধরে কিস করতে থাকে,,,প্রায় কতোক্ষণ যাবত এভাবে ছিলাম বলতে পারবো না,,,হঠাৎ যেনো মনে হচ্ছিলো এখনি দম বন্ধ হয়ে মারা যাবো,,,নিশ্বাস নিতে পারছিলাম না,,চারদিকে কেমন জেনো অন্ধকার ঘনিয়ে আসলো। তারপর আমার সাথে কি হলো আর কিছু বলতে পারলাম না,,,
চোখ মেলে দেখি আম্মা দাদি আমার মাথার পাশে বসে সুরা পাঠ করছে আর কতোক্ষন পর পর মাথায় ফু দিচ্ছে,,,আর সবাই দাড়িয়ে দাড়িয়ে কি যেনো কানাকানি করছে। মাথাটা খুব ভারি হয়ে আছে,,, হালকা উঠে বসতেই ছোট বোনের কুটনামি শুরু হয়ে যায়,,,,
-ঠিকি আছে,,ভালোই হয়েছে,,,আমি অনেক খুশি হয়েছি,,জ্বীন একেবারে সারাজীবনের জন্য ওকে নিয়ে যেতে পারলো না,,
আম্মা- আহ আশা চুপ থাকবি নাকি ঠাটিয়ে মারবো এক,,,
মার কথা শেষ হতে না হতেই আরেক অদ্ভুত ঘটনার উন্মোচন ঘটলো,,,দাদি আমার কানি আঙ্গুলটা চিমটি কেটে ধরে আমাকে জিজ্ঞেস করতে লাগলো,,
– কিরে কোথা থেকে এসেছিস বল,,
-আহ দাদি আঙ্গুল ছারো,,ব্যাথা লাগছে,,,
– সত্যি করে বল দেখি,,কোন গাছ থেকে এসেছিস,,,তেতুল গাছ থেকে নাকি পাশের বাড়ির ওই শিমুল গাছ থেকে।
এমনিই মাথা ব্যাথাতে ফেটে যাচ্ছে তার উপর আমার পরিবারের পুরোনো বাংলা ছায়াছবির ড্রামা আরাম্ভ হয়ে গেছে,,,এখন আল্লাহই জানে কখন শেষ হবে এই ড্রামা,,,
– দাদি তুমি আঙ্গুল ছারো,,আমি নিরু,,,,
মা- আম্মা ছেরে দেন,,,মনে হয় নিরুকে কিছুই ধরেনি,,খামোখা মেয়েটা কস্ট পাচ্ছে।
দাদি- বৌমা তুমি আমার থেকে বেশি বোঝো না,,, সত্তুর বছরের অভিগতা আছে আমার,,,এটা কোনো সাধারণ জ্বীনের কাজ না,,,
আশা- নিরু আপুকে মনে হয় বড় সড় জ্বীন আছোর করেছে,,,ঠিকি আছে কি দরকার ছিলো ভরা বিকেলে ছাদে যেয়ে রং ঢং করার,,,দাদি শুকনো মরিচ আনবো নাকি? পুরিয়ে নাকের কাছে ধরলে বাপ বাপ করে পালাবে,,
নিরু- আশা মাথা গরম করিস না,,ভাগ এখান থেকে,,,,নাহলে কানের নিচে মারবো ঠাটিয়ে!
আশা- দেখেছো দাদি দেখেছো বলেছি না ওর গারে কিছু একটা আছোর করেছে,,শুকনো মরিচের কথা শুনতেই কেমন অস্বাভাবিক আচরণ করছে।
নিরু বসা অবস্থায় খাটের নিচে উকি মেরে কি যেনো খুজতে থাকে।
মা- কিরে কি খুজছিস?
আশা- জ্বীনের ভাইয়ের কিছু প্রয়োজন মনে হয়। তা জ্বীন ভাই খাটের নিচে কি খুজছেন?
নিরু- ঝারু খুজছি,,,,কোথায় যে গেলো ঝারুটা?
মা- ঝারু দিয়ে কি করবি?
নিরু- তোমার প্রানের প্রিয় ছোট মেয়ের গায়ে কয়েকটা ঝারুর বারি না পড়া পর্যন্ত ও এখান থেকে যাবে না। তাই ঝারুর ব্যবস্থা করছিলাম আর কি?
আশা- দেখ আপু সবার সামনে এভাবে কথাটা বলে ঠিক করলি না কিন্তু!
নিরু- তুই গেলি এখান থেকে নাকি ঝারু নিবো?
আশা দৌড়ে রুম থেকে বের হয়ে যায়।
নিরু- মা উনাদের এখান থেকে ভির কমাতে বলো তো!
– দেখেছেন ভাবি দেখেছেন মেয়েটা কতো বেয়াদব! ভেবেছিলাম খারাপ কিছু হয়েছে তাই দৌড়ে দেখতে এলাম,,কে জানতো বাবা দেখতে আসলে এতো কথা শুনতে হবে।
নিরু- আপনারা তো আমাকে দেখতে আসেননি চাচি,,
এসেছেন আমার ঘারের ভুত দেখতে। এখন ভুত চলে গেছে,,তাই সবাই সবার বাসায় যেয়ে যার যার কাজ করুন,,আবার ভূত আসলে আমরা আপনাদের খবর দিবো,,,দেখতে আসিয়েন কেমন!
#নিরু❤
পর্ব-০২
writer- #shanta_islam

নিরু- আপনারা তো আমাকে দেখতে আসেননি চাচি,,
এসেছেন আমার ঘারের ভুত দেখতে। এখন ভুত চলে গেছে,,তাই সবাই সবার বাসায় যেয়ে যার যার কাজ করুন,,আবার ভূত আসলে আমরা আপনাদের খবর দিবো,,,দেখতে আসিয়েন কেমন!
মা- আহ নিরু কি হচ্ছে?
– শুনেছেন ভাবি মেয়েটার কথা শুনেছেন! যত বড় মুখ নয় ততো বড় কথা। চলেন ভাবি চলেন,,আমরা চলে যাই। আমাদেরও শক নেই মানুষের বাসায় যেচে এসে অপমান হওয়ার,,,,,(ভেংচি কেটে।)
ব্রেকিং নিউজও মনে হয় না এতো তারাতারি ছড়ায় যত তারাতারি পাশের বাসার আন্টিরা ঘুজব ছড়ায়। এবার মনে হচ্ছে আমিও তাদের ব্রেকিং নিউজ মানে গুজবের লিস্টে পরে গেলাম। দাদি এখনো পাশে বসে মাথায় ফু দিচ্ছি,,,মানে তাদের ভাষ্যে মতে ভূত তাড়ানোর চেস্টা করছে। দাদিকে বললাম,,,দাদি তুমিও রুমে যেয়ে পান চাবাও গিয়ে। তোমাকে আর ওজাগিরি করতে হবে না।
প্রতিউত্তরে দাদি হুংকার দিয়ে বললো,,,তুই আমার থেকে বেশি বুঝিস। তোর ঘাড়ে ভূত আছে মানে আছে। ওই ভূতকে আমি তাড়িয়েই ছাড়বো। এই আমি বলে রাখলুম।
আমার দাদি হলো এমন একটা প্রানী যাকে ক বললে সে ওটাকে খ বলবে আর সেটা যে খ সে সেটা প্রমান করেই ছাড়বে। আমাদের পরিবারটা হলো সম্পূর্ণ একটা চিরিয়াখানা। আর এই চিরিয়াখানার প্রধানমন্ত্রী হলো আমার দাদি। চিরিয়াখানার অন্য প্রানীরা বর্তমানে বাসায় নেই। দিপা আপু মানে আমার চাচাতো বোনের বিয়ের সপিং করতে বাহিরে গেছে ফিরে আসলেই আপনারা নিজেই চিরিয়াখানার প্রানীদের সাথে পরিচিত হতে পারবেন। দাদিকে কোনো ভাবে বুঝিয়ে পারবো না যে আমাকে ভূতে ধরেনি। কারণ সে যে এই চিরিয়াখানার প্রধানমন্ত্রী। তাকে বোঝানো বড় দায়। তাই তার সাথে আর তর্ক না করে মুখটা বিপরীত দিকে ঘুরিয়ে রাখলাম। দাদি আমাকে প্রশ্ন করছে। কিন্তু আমি তার কোনো কথার জবাব দিচ্ছি না। অবশেষে সে নিজেই বিরক্ত হয়ে বলতে লাগলো,,,
-আজ কালের ছেলেমেয়েরা আমাদের থেকেও বেশি বোঝে। যখন ঘাড় ধরে মটকে দিবে তখন টের পাবি। কথাটা বলেই দাদি রেগে গজগজ করতে করতে রুম থেকে বের হয়ে গেলো।
মা- আহ নিরু তোর মাথা কি গেছে নাকি? সবাইকে কি যাতা বলছিস এসব? সবাই তো তোর ভালোর জন্যই বলছে!
নিরু- যাও তো মা! ভালো লাগছে না এসব অহেতুক কথাবার্তা। আমি ঠিকাছি,,,, আমাকে কোনো জ্বীন ভূত ধরেনি।
মা- তাহলে তোর হাতে এই দাগ কিসের।
মার কথায় শুনে হাতের দিকে তাকিয়ে দেখি সত্যিই তো আমার হাতের কব্জিটা লাল হয়ে আছে। হাতের দিকে তাকাতেই মনে পরে গেলো আবির ভাইয়ের কথা। আবির ভাই এতো শক্ত করে হাতটা ধরেছিলো যে হাতের কব্জিটা লাল হয়ে গেছে। এতোক্ষণ হাতে ব্যাথা অনুভব হচ্ছিলো না। কিন্তু এখন যখন দেখলাম হাতটা পুরো লাল হয়ে আছে কেনো জানি হঠাৎ খুব ব্যাথা করতে লাগলো। খুব রাগ লাগছে আবির ভাইয়ের উপর। কেনো আজ আবির ভাই আমার সাথে এমনটা করলো।
মা- কিরে কি হলো,,কিছু বলছিস না কেনো?
-কিছু হয়নি আমার,,পড়ে যেয়ে হালকা ব্যাথা পেয়েছি।
মা- কিভাবে এমন ব্যাথা পেলি। আর এই দাগ দেখেও মনে হচ্ছে না এটা পড়ে যাওয়ার দাগ।
ওই যে শুরু হয়ে গেছে আমার মার ঠাকুমার জুলির প্রশ্নের ঝুরি। একবার যদি তার প্রশ্নের ঝুরি খুলে যায় তা কখন বন্ধ হবে সেটা সয়ং আমার বাপেরও অজানা। মাঝে মাঝে আমার বাবার জন্য খুব দুঃখ হয়। কিভাবে যে আব্বা তার প্রশ্নের ঝুরির মুখোমুখি হয়।
– আহ মা ভালো লাগছে না। তোমার প্রশ্নের ভান্ডার শেষ করো তো। আমার খুব মাথা ব্যাথা করছে,,,একটু ঘুম,,,
কথা শেষ না করতেই আবার শুরু হলো মায়ের গ্যানগ্যানানি,,,
– কি বলছিস নিরু তোর মাথা ব্যাথা করছে,,,আবার মনে হয় জ্বীন ভর করেছে। তোর দাদিকে ডাক দিবো কি?
-মা আমাকে একটু ঘুমাতে দেও তো,,,ঘুমালে মাথা ব্যাথা ঠিক হয়ে যাবে। তুমি এখন এখান থেকে যাও।
মাকে কোনো মতে রুম থেকে বিদায় করে ভাবতে লাগলাম,,আজ বিকেলে আবির ভাই কেনো এই ভয়ংকর কান্ডটা আমার সাথে ঘটালো। খুব রাগ হচ্ছে আবির ভাইয়ের উপর,,,মনে হচ্ছে এখনি ভাইয়ার সামনে যেয়ে তার গালে কসিয়ে কয়েকটা থাপ্পড় মারি। কিন্তু কিছুতেই ভেবে পাচ্ছি না আবির ভাই কেনো এরকম একটা কান্ড আমার সাথে করলো। যতদূর জানি আবির ভাই এমন কান্ড করার মতো ছেলে নয়। আবির ভাইয়ের মতো এতো ভালো একটা ছেলে আমার সাথে এমন একটা ভয়ংকর কান্ড করতে পারে ভাবা যায় না। হয়তো বা আমার মনের ভুলও হতে পারে। কিন্তু বিকেলের ঘটনাটা যদি আমার মনে ভুলও হয়ে থাকে তাহলে হাতের চোটটা কিভাবে আসলো। আবির ভাই তখন এতো শক্ত করে হাতটা ধরেছে বিধায় হাতে দাগ হয়ে গেছে। না না এখন কিছুই ভেবতে পারছি না। যা হবে কাল দেখা যাবে। এই ভেবে কাথা গায়ে দিয়ে ঘুমের দেশে ডুব দিলাম। ঘুমের মধ্যে হঠাৎ মনে হলো কেও যেনো আমার ঠোঁট ছুয়ে দিচ্ছে। কেনো জানি মনে হচ্ছে এই উষ্ণ আবেশ এর আগেও আমি পেয়েছি। অনুভব করতে পারছি কারো গরম নিশ্বাস আমার মুখে এসে পরছে। অনেক চেস্টা করছি চোখ দুটো মেলতে,,,কিন্তু কিছুতেই চোখ দুটো মেলতে পারছি না। ঘুমের মধ্যেই সেই উষ্ণ আবেশ অনুভব করছি। হঠাৎ কোথায় যেনো আস্তে আস্তে সেই উষ্ণ আবেশ মিলিয়ে গেলে। ঘুম ভাঙ্গলো দিপা আপুর ডাকে,,,এই নিরু নিরু উঠ,,,আর কতো ঘুমাবি,,,সকাল হয়ে গেছে তো,,,। দিপা আপুর ডাক শুনে বুঝতে পারলাম চিরিয়াখানার সব মেম্বাররা চলে এসেছে। আধো আধো করে চোখ খুলে দেখি দিপা আপুর হাতে অনেকগুলো সপিং ব্যাগ। আপুকে প্রশ্ন করলাম,,,তোমরা কখন এলে,,
– কাল রাতেই এসেছি। এসেই দেখি তুই গভির ঘুমে। তাই আর রাতে ডাকিনি। কিরে তোর হাতে ব্যান্ডেজ কিসের?
দিপা আপুর কথা শুনে হাতের দিকে তাকিয়ে দেখি আসলেই তো আমার হাতে ব্যান্ডেজ করা। কিন্তু কাল রাতে তো কোনো ব্যান্ডেজ করিনি। হয়তো মা ঘুমের মধ্যে ব্যান্ডেজ করে দিয়েছে।
– কিরে কি হলো কথা বলছিস না কেনো?
– ও কিছু না। পড়ে গিয়ে হালকা ব্যাথা পেয়েছিলাম।
– অহ আচ্ছা,,,হ্যাঁ রে কি শুনলাম তোকে নাকি ভূতে ধরেছে। কথাটা সত্যি নাকি? সকাল সকাল আপুর মুখে আবার সেই ভুতে ধরার কথা শুনে মেজাজটাই বিগরে গেলো।
– তোমাকে কে বলেছে এই কথা?
-কে আবার আশা বলেছে।
প্রচলিত একটা কথা শুনেছিলাম ঘড়ের শত্রু বিভীষন,,আজ তার প্রমান পেলাম। আমার বোন যে ঘড়ের শত্রু বিভীষন তাতে কোনো সন্দেহ নেই। আমার বোনের মধ্যে একটা গুন আছে সে রেডিও এফেমের থেকেও দূত গতিতে কথা টেলিকাস্ট করতে পারে। এক কথায় ব্রডব্যান্ডও বলা যেতে পারে। কাল রাতে যেই ধমক দিয়েছি মনে মনে ভাবছিলা হয়তো আশা তার প্রতিশোধ নিবে। এখন মনে হচ্ছে সেই প্রতিশোধ সরুপ আশা আমার ভুতে ধরার কথা ছড়াছে। আল্লাহই জানে আর কাকে কাকে এই কথা বলেছে।
জলদি বিছানা ছেরে আশাকে খোজার জন্য বেরিয়ে পরলাম। পিছন থেকে দিপা আপুর ডাক পড়েছিলো,,,
– কিরে কোথায় যাচ্ছিস,,,আমার বিয়ের সপিং তো দেখে যা।
– পরে এসে দেখবো,,,বলেই দৌড় লাগাই আশাকে খুজতে। একবার হাতের নাগালে পাই সয়তানটাকে তারপর বুঝাবো মজা,,সিড়ি থেকে তাড়াহুড়ো করে নামতেই হঠাৎ মনে হলো কিছুর সাথে ধাক্কা খেলাম। উপর হয়ে তাকাতেই দেখি আবির ভাই,,,

চলবে,,,,,
চলবে,,,,,,,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here