নিরু পর্ব ৭+৮

#নিরু❤
পর্ব-০৭
Writer- #shanta_islam

বিয়ে বাড়ি চারদিকে হৈইহুল্লোর লেগে রয়েছে। দিপা আপুকে সকাল সকাল পাল্লারে পাঠানো হয়েছে সাথে আম্মা,চাচি,দাদি,আশা,ভাবি,নীলা খালা সবাই মিলে সাজ দিতে গিয়েছে। এতো টাকা খরচ করে ভূতুড়ে সাজ মানুষ কেনো যে সাজে আল্লাহ মালুম। আমি বাসায় থেকে যাবতীয় কাজগুলো সেরে নিচ্ছি। বিকেল হয়ে এলো কিন্তু মেকাপ পার্টির এখনো খবর নেই। আব্বা এসে বলে গেলো মেহমান আসা শুরু করে দিয়েছে আমি জানো জলদি করে রেডি হয়ে নেই। রেডি হবো কি কাজের ঠেলায় এখনো গোসলি করতে পারলাম না। আমাকে এই অবস্থায় দেখে যে কেও বলবে আমি এই বাড়ির কাজের বেটি। তাড়াতাড়ি করে গোসলে ডুকে গেলাম। দাদি এসে যদি দেখে আমি এখনো রেডি হয়নি তাহলে কথা শুনাতে একটুও ছাড় দিবে না। আর তার কথার মধ্যে মাস্ট থাকবেই এই মেয়েটাকে বিয়ে দেও। বিয়ে বিয়ে বিয়ে কথায় কথায় দাদির মুখে সুধু আমার বিয়েই শুনে গেলাম। এই চিরিয়াখানার মধ্যে যদি কেও একটা পাদও মারে তাহলে সেটাও নিরুর দোস। আমার দাদি কেনো যে শুধু শুধু আমার সাথে এমন করে একমাত্র আল্লাহই জানে। গোসল করতে যেয়ে গাড়ে হালকা কামড়ের দাগ দেখতে পেলাম। হয়তো কোনো পোকা মাকড় কামড় দিয়েছে তাই লাল হয়ে গেছে। কোনো কিছু না ভেবে জলদি করে গোসল সেরে নিলাম। ওয়াসরুম থেকে বের হয়ে দেখি বিছানায় একটা নীল শাড়ি রাখা আর তার পাশে একটা ছোট চিরকুট। চিরকুটে লিখা ছিলো আজ এই নীল শাড়িটা পড়বি। আর চোখে কাজল টানতে যেনো ভুলে যাস না। কিছুই বুঝলাম না এখানে কে শাড়িটা রাখলো। আর সাথে চিরকুটটা। বাবা চাচা বা ভাইয়া তাদের মধ্যে কেও রাখেনি এটা আমি সিওর কারন তারা রাখলে সাথে কখনো চিরকুট দিতো না। আর আমাদের বাড়ির মহিলা মন্ডলির সবাই আছে পাল্লারে এখনো তারা আসেনি। তাহলে কে দিলো এই শাড়ি। ভাবতে ভাবতে শাড়িটা হাতে নিয়ে পুরোটা খুলে দেখলাম বাহ খুব সুন্দর তো। যে শাড়িটা পছন্দ করেছে তার চয়েস আছে বলতে হবে। পুরো শাড়িটা নীল সুধু আচলের দিকে কালো পাইট দেওয়া। নাহ শাড়িটা যদি না পড়ি তাহলে নির্ঘাত পাপ হবে। যারি হোক আমার কি। পরে শাড়ির মালিক খুজে পেলে তখন নাহয় দিয়ে দিবো। এখন যেহেতু আমি খুজে পেয়েছি তাই এটা আমার। শাড়িটা পড়ে নিলাম। কানে এক জোড়া জুমকোও পরেছি। চুল ছারবো না। চুল ছাড়তে আমার ভালো লাগে না তাই খোপা করে নিলাম। গাড়ো লাল লিপস্টিক লাগালাম, কাজলটা হাতে নিতেই সেই চিরকুটটার কথা মনে পরলো। আচ্ছা যে দিয়েছে সে কিভাবে জানলো আমি কাজল লাগাবো কি না। যাই হোক বাবা এতো বুঝে আমার কাজ নেই,,,
আশা- কিরে নিরু আপু তোকে তো বেশ লাগছে।
এই শাড়িটা কোথায় পেলি।
নিরু- তোরা কখন এলি?
আশা- এই তো এই মাত্র এলাম। কিরে বলছিস না কেনো শাড়িটা কোথায় পেলি?
নিরু- রাস্তায় টুকিয়ে পেয়েছি তোর কি?
আশা- সত্যি করে বল। নাহলে দাদির কাছে পিনিক লাগাবো।
নিরু- যা তো এখান থেকে।
আশা- বলবি না তাইতো। দাদিই,,,
নিরু- আরে দারা দারা। বিছানায় পড়া পেয়েছি।
আশা কিছুক্ষণ চুপ থেকে আবার বলা শুরু করলো,,
আশা- ওওও আমি তো ভুলেই গেছি। আসলে এই শাড়িটা আমার। আমিই বিছানায় রেখে গেছিলাম।
আমি জানি কুটনিটা মিথ্যা বলছে। কিছু পারুক আর না পারুক মিথ্যা বলে মানুষের কাছ থেকে কিভাবে কিছু আদায় করে নিতে হয় সেটা আশার থেকে ভালো কেও জানে না।
নিরু- তুই বিছানায় রেখেছিলি তাই না!
আশা- হ্যাঁ,,,
নিরু- কিন্তু অয়ন ভাইয়া যে আমাকে বললো,, নে নিরু এই শাড়িটা তোকে দিলাম। বিয়েতে তুই তো বেশি শপিং করিস নি তাই তোর জন্য এই শাড়িটা দিলাম।
আশা জিব্বায় কামড় দিয়ে বলে উঠলো,, যাহ ধরা খেয়ে গেলাম! বলেই এক দৌড়। আমি জলদি কাজলটা টেনে বাইরে বের হলাম। বের হয়েই দেখি বর যাত্রী এসে গেছে। সবাই আমাকে ছাড়া গেটও ধরে ফেলেছে। দূর ছাই মিস করে দিলাম। এমনি তো শাড়ি পরেছি তার উপরে হিল। হাটাটাই কস্টদায়ক হয়ে উঠলো। আমিও গেটের সামনে গেলাম শুনলাম বিশহাজার টাকা দাবি করা হয়েছে। নাহলে নাকি গেট ছারবে না। ভির আমার একদমি পছন্দ না। তাই এসব গেট ধরার মধ্যে আমি নেই। গেট আমার কাজিনরা আর আশা মিলে ধরেছে। আমি এক পাশে দাড়িয়ে দাড়িয়ে সবার মজা করা দেখছি। এমনিতেও যেই হিল পরেছি কখন যে উসঠা খাই আল্লাহই জানে। অবশেষে অনেক চিন্তা ভাবনা করে বরযাত্রী হাতে পাচশ এক টাকা ধরালো আর বললো বাকী টাকা বিয়ে করার পর পরিশোধ করবে। এই প্রস্তাবে মেয়েরা রাজি ছিলো না কিন্তু অয়ন ভাইয়ের ধমক খেয়ে সবাই গেট ছেরে পালায়,,
আমি একটা চেয়ারে বসার জন্য এগোতে লাগলেই চোখের সামনে আবির ভাই পড়ে যায়। ইস আজ আবির ভাইকে যা লাগিছে না। আবির ভাই নীল কালার পাঞ্জাবি পরেছে। হাতে ঘড়ি আর থাক আর কমু না লজ্জা করে🙈। বেশি বললে আবার পাঠিকারাও ক্রাস খাইতে পারে😏।
আবির ভাইকে দেখে কিছুক্ষণ অবাক হয়ে তাকিয়ে ছিলাম। আবির ভাই আমার সামনে এসে কানের কাছে হালকা ফিসফিসে বললো,,,
-নিরু স্টেজের পিছনে একটু আয় তো!
#নিরু❤
পর্ব-০৮
writer- #shanta_islam

-নিরু একটু স্টেজের পিছনে আয় তো! কথাটা বলেই আবির ভাই হনহন করে চলে গেলো।
সুবহানাল্লাহ আজকে আমার কপালে কি আছে আল্লাহই জানে। আমি ভয়ে ভয়ে স্টেজের পিছনে যেয়ে দেখি আবির ভাই আমার জন্য অপেক্ষা করছে। আবির ভাইয়ের নীল পাঞ্জাবি আর আমার নীল শাড়ি উফ দুজনকে এক সাথে যে কেও দেখলে বলবে আমার দুজন কাপাল। আবির ভাইয়ের সামনে যাবো তার আগেই পলাশ ভাই আমার সামনে এসে হাজির হয়।
পলাশ- কি ব্যাপার নিরু! কাল থেকে দেখছি তুমি আমাকে ইগনোর করছো? এতোবার কথা বলার চেস্টা করছি কিন্তু তুমি কোনো পাত্তাই দিচ্ছো না!
আমি একটু আড়চোখে আবির ভাইয়ের দিকে তাকাই,,,
আল্লাহ গো আজকে আমি শেষ। আবির ভাই চোখ বড় বড় করে বিস্ফরিত ভাবে আমার দিকে তাকিয়ে আছে। মনে হচ্ছে এখনি আমাকে গিলে খাবে।
কি করবো কিছুই বুঝতে পারছি না। এখন যদি পলাশ ভাইয়ের কথার জবাব দেই তাহলে মনে হয় আবির ভাই আজ আমাকে খুন করেই ফেলবে নাহলে জেন্ত গিলে খাবে।
পলাশ- কি হলো নিরু কথা বলছো না কেনো?
নিরু- আসলে ভাইয়া বিয়ে বাড়ি জানেনি তো কতো কাজ! আপনার কিছু লাগবে কি ভাইয়া,,লাগলে আমাকে বলুন,,না চাওয়া সত্যও একটু হেসে কথাগুলো বলতে হচ্ছিলো। আমার কথা শেষ হওয়ার আগেই দেখি আবির ভাই রেগে গজগজ করতে করতে আমাদের সামনে এসে দাড়ালো,,
আবির- বিয়ের কিছু জিনিসপত্র লাগবে চাচি তোকে নিয়ে আসতে বলেছে! কথাগুলো আবির ভাই রেগে বলছিলো সেটা স্পষ্ট বুঝা যাচ্ছে।
পলাশ- নিরু একা কিভাবে যাবে চলো নিরু আমি তোমাকে নিয়ে যাচ্ছি!
আবির- পলাশ রাফিন তোকে খুজে বেড়াছে!
পলাশ- কি রাফিন এসেছে। কিন্তু কই আমি তো রাফিনকে দেখলাম না।
আবির- এসেছে যেয়ে ভালো করে খুজ।
পলাশ- কিন্তু নিরু,,
আবির- নিরুকে নিয়ে তোকে ভাবতে হবে না। নিরুর সাথে আমি আছি। কথাটা বলেই আবির ভাই আমার হাত ধরে হাটা শুরু করে। পিছন থেকে পলাশ ভাই বলে উঠে,,বায় দা ওয়ে নিরু বলা হয়নি,,আজ তোমাকে নীল শাড়িতে খুব সুন্দর লাগছে। আগে জানলে আমিও নীল কালার একটা পাঞ্জাবি পড়ে আসতাম। কথাটা শোনা মাত্রই আবির ভাই আমার হাত আরো শক্ত করে চেপে ধরে বাইরে নিয়ে আসে।
নিরু- আহ আবির ভাই আমার লাগছে। হাতটা ছাড়ুন!
আবির- বাইকে বস!
নিরু- কোথায় যাবো?
আবির- বাইকে বসতে বলেছি,,জোরে একটা ধমক দিয়ে কথাটা বললো আবির ভাই। উনার ধমকের চোটে এক লাফে বাইকে চরে বসলাম। বুকে একটু থুথুরি দিয়ে নিলাম যেই ধমক দিয়েছে আল্লাহরে আল্লাহ ভয় পেয়ে গেছি।
ভয়ের থেকেও বড় ভয় পাই তখন যখন আবির ভাই বাইক স্টার্ট দেয়। মাশাল্লাহ যেই জোরে বাইক চালাচ্ছে আজকে যে মাডার কেস হবে এটা নিশ্চিত। ফাকা রাস্তা পেয়ে আবির ভাই আরো জারে বাইক চালাতে থাকে। এমন রাগ করার করনটা কি? রাগের ঠেলায় মানুষ মারবে নাকি। আর সহ্য করতে না পেরে বলেই দিলাম,,একটু আস্তে চালান,,,আমার ভয় করছে।
ও মা এ নাছড় বান্দা দেখি আরো জোরে বাইক চালানো শুরু করে দেয়। এখন আমার প্রচুর ভয় করছে ভয়ের ঠেলায় মনে হয় কান্না করে দিবো। ভয়ে আমি চোখ বন্ধ করে আবির ভাইয়ের পাঞ্জাবির কলারটা আরো শক্ত করে চেপে ধরি। আজ মনে হয় আমি ইন্তেকাল করতে যাচ্ছি। মনে মনে পাচ কালেমা পড়া শুরু করে দেই। কখন যে ধপাস করে এক্সিডেন্ট করি বলা যায় না। অন্তত কালেমা পরতে পরতে মারা গেলে জান্নাত তো পাবো।
হঠাৎ মনে হলো বাইক থেমে গেছে। চোখ মেলে দেখি আবির ভাই একটা শুনশান জায়গায় বাইক থামিয়েছে। আশে পাশে অনেক সুন্দর ফুল গাছে ভরা। বিভিন্ন ধরনের ফুল এখানে মানুষজন খুব কম নেই বললেও চলে। পাশে একটা পুকুরো আছে আর বসার জন্য কিছু দূর পর পর টেবিল রাখা। মনে হয় কাপালসদের জন্য জাগাটা। চোখ বুলিয়ে জাগাটা ভালো করে দেখতে না দেখতেই আবির ভাই রাগান্বিত কন্ঠে বলে উঠলো,,,
আবির- বাইক থেকে নাম,,,
আবির ভাইয়ের কমান্ড শুনে জলদি করে বাইক থেকে নেমে পরলাম। যেই পরিমান রেগে রয়েছে আল্লাহই যানে কখন আমার খুন করে ফেলে। ভয়ে ভয়ে আমতা আমতা করে জিজ্ঞেস করলাম,,
– এ,,এ,,এখানে,,নি,,নিয়ে,,এ,,এসেছে,,কে,,কে,,,কেনো?
আবির ভাই আমার কথার কোনো উত্তর না দিয়ে বাইক থেকে নেমে পাশে থাকা টেবিলটা লাথি দিয়ে ভাঙ্গা শুরু করে দিলো। আল্লাহ রে মানুষটা এমন করছে কেনো মিরকি বেরাম উঠলো নাকি। ভয়ে আমার গলা শুকিয়ে কাঠ হয়ে গেছে।
আবির- তোকে আমি পলাশের সাথে গেসাগেসি করতে মানা করেছিলা।
খাইছে রে মনে মনে যেটার ভয় পাচ্ছিলাম ঠিক সেটাই হলো।
নিরু- আ,,আ,,আমি ক,,,কই,,গেসাগেসি,,,
আবির- ওই পলাশের জন্য মনটা খুব আকুবুকু করে তাই না। পলাশের সাথে কথা বলার জন্য পাগল হয়ে যাস। কিছু লাগলে আমাকে বলুন,,আহ হা শখ কতো। পলাশকে খুব ভালো লাগে তাই তো। কথাগুলো বলতে বলতে আবির ভাই আমার সামনে এগোতে থাকে। আমি ভয়ে ভয়ে এক পা দুপা করে পিছু হতে থাকি। সবচেয়ে বেশি ভয় লাগছে আবির ভাইয়ের চোখর দিকে তাকিয়ে। মনে হচ্ছে চোখ দিয়ে অগ্নিগিরি বের হচ্ছে। এখনি আমাকে আস্তো গিলে খাবে। আমি পিছুতে পিছুতে একটা গাছের সাথে ধাক্কা খেলাম। অন্য দিকে যাবো তার আগেই আবির ভাই আমাকে গাছের সাথে জাপটে ধরে,
এমন ভয় লাগছে মনে হচ্ছে এখনি ভয়ের ঠেলায় ফিট হয়ে পড়ে যাবো।
আমি আদো আদো করে বলার চেস্টা করলাম,,
– আ,,আ,,আমি,,,কি,,,কি,,কিছু,,ক,,ক,,,ক,,,ক,,,,
আবির- চুপ একদম চুপ। আমার ঠোঁটে আঙ্গুল রেখে,,
কতোবার বলেছি যেনো ওই পলাশকে তোর আশে পাশে না দেখি। তবুও ও কেনো তোর আশে পাশে ঘুরে,,
(রাগান্বিত কন্ঠে,,)
আবির ভাই এতো কাছে এসে কথাগুলো বলছিলো উনার প্রতিটি নিশ্বাস আমি অনুভব করতে পারছিলাম। এমনিতেই ভয়ে মরে যাচ্ছি তার উপর উনি আমার এতো কাছে আসছেন,,, আমার হৃদপিন্ড এতো জোরে জোরে দুক দুক করছিলো তা মনে হয় ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না।
নিরু- আমি কি,,,কি,,কিভাবে বলবো। পলাশ,,
আর কিছু বলতে পারলাম না পলাশ এতোটুকু শুনেই আবির ভাই গাছে এলোপাতি ঘুসি শুরু করে। ঘুসি মারতে মারতে এক পর্যায়ে আবির ভাইয়ের হাত দিয়ে রক্ত বের হতে শুরু করে। আমি আর নিজেকে আটকে রাখতে পারলাম না আবির ভাইকে জরিয়ে ধরে ভ্যা ভ্যা করে কেদে দিলাম। জরিয়ে ধরার সাথে সাথে আবির ভাই গাছে ঘুসি মারা বন্ধ করে দিলো। কান্না করতে করতে বললাম,,
নিরু- বিশ্বাস করেন আমি উনার সামনে যাইনি। উনার সাথে কথাও বলিনি। পলাশ ভাই নিজে যেচে এসে,,,
আমার কথা শেষ না হতেই আবির ভাই আমাকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিয়ে ঠাস ঠাস করে গালে কয়েকটা চড় মারে।
আবির- তোর সাহস হলো কি করে তুমি আমাকে জড়িয়ে ধরিস।
আবির ভাইয়ের কান্ড দেখে আমি গালে হাত দিয়ে অবাক দৃষ্টিতে উনার দিকে তাকিয়ে আছি। আর আমার চোখের পানি টপটপ করে গাল দিয়ে বেয়ে পরছে। এবার এই কান্নাতে কোনো আওয়াজ নেই শুধুই অজরো অশ্রু বয়ে পরছে।
আবির- শুধু তুই অয়নের বোন বলে ছেরে দিলাম। তোর জায়গায় আজ অন্য কেও হলে আমি কি করতাম তার ধরনা তোর নেই,,আর কখনো যেনো এমন ভুল না হয়। কথাটা বলেই আবির ভাই বাইক স্টার্ট দিয়ে চলে যায়।
আর আমি ওখানে ঠিক সেই ভাবেই দাঁড়িয়ে আছি। হয়তো আমার বুঝতে একটু সময় লাগছে,,,,একটু আগে কি হলো। কেনো হলো? দশ মিনিটের মতো ওভাবেই ওখানে দাঁড়িয়ে ছিলাম। ফোনের শব্দে আমার হুস ফিরলো। ভাবি ফোন করেছে। আমি কোথায় আছি খোজ করছে। তারাতারি করে একটা রিক্সা ঠিক করে বাসায় পৌছালাম। যেয়ে দেখি বিয়ে পড়ানো হয়ে গেছে। আশা নতুন দুলাভাইয়ের জুতা নিয়ে দৌড়াদৌড়ি করছে।
ভাবি- নিরু কোথায় নিখোঁজ ছিলে এতোক্ষণ,,জলদি চলো বরযাত্রীদের থেকে পুরো টাকা আদায় করবো।
– ভাবি আপনি যান আমি আসছি।
ভাবি- এই নিরু এক মিনিট তোমার গাল এতো ফুলে রয়েছে কেনো? গালে কিসের দাগ? কি হয়েছে? দেখি দেখি!
ভাবি আমার গালে হাত দিতে নিলে আমি দৌড়ে আমার রুমে এসে পরি। ওয়াসরুমে ডুকে তারাতারি করে শাড়ীটা খুলে সাওয়ার ছেরে দিয়ে জোরে জোরে চিৎকার করে কান্না করতে থাকি।
কেনো আবির ভাই আমার সাথে এমনটা করছে। উনার যখন ইচ্ছে হয় তখন কাছে টেনে নেয় আবার যখন ইচ্ছে হয় তখন দূরে সরিয়ে দেয়। আমি কি উনার হাতের পুতুল নাকি। কিই বা করেছি। একটু জড়িয়েই ধরেছিলাম। কিন্তু উনি যে কাছে টেনে আমাকে স্পর্শ করে ওটাকি ভুল না। আমার ঠোঁটগুলোকে ছুয়ে দেয় ওটাকি ভুল না। আমার মনের মধ্যে যেই তোলপাড় সৃষ্টি করে ওটাকি ভুল না। কেনো জানি মনে হয়েছিলো আবির ভাই আমাকে ভালোবাসে। উনার জন্য যে আমার মনে ফিলিংস তৈরি হচ্ছিলো সেটাকি সে জানে না। কেনো জানি মনে হয়েছিলো আবির ভাই এই শাড়ি আর চিরকুটটা রেখেছিলো,,কেনো জানি মনে হয়েছিলো উনি আগে থেকে প্লেন করে রেখেছিলো উনি নীল পাঞ্জাবি পড়বে আর আমি নীল শাড়ি। কেনো জানি মনে হয়েছিলো আজ উনি স্টেজের পিছনে আমাকে উনার মনের কথাটা বলার জন্য ডেকেছিলেন। কিন্তু আমার ধারনা ভুল। আজ উনার এই বিহেবে বুঝতে পারলাম উনার মনে আমার জন্য কোনো ফিলিংসি নেই। উনি আমাকে কখনো ভালোই বাসেনি। তাহলে সেদিনের মাথায় ফুল গুজে দেওয়া, চুরি পরিয়ে দেওয়া, কাছে টেনে আমার ঠোঁট ছুয়ে দেওয়া। সবি কি আমার ভুল ছিলো। কেনো নিরু কেনো তোর এতো কিছু মনে হয় কেনো,,কেনো তুই এতো কিছু ভাবিস। না আর না অনেক হয়েছে,,,এতোদিন যা হয়েছে তার কোনো কিছুই আর মনে রাখবো না। কারো জন্যই আমার মনে কখনো ফিলিংস তৈরি হয়নি আর হবেও না। নিরু কথাগুলো ভাবছে আর জোরে জোরে কান্না করছে।
আশা- নিরু আপা নিরু আপা। তুই কই রে,,,
আশার শব্দ শুনে নিজেকে সামলিয়ে বলাম আমি ওয়াসরুমে আছি।
আশা- তুই এখন ওয়াসরুমে কি করছিস। জলদি বের হ। দেখ নতুন দুলাভাই কি দুই নাম্বারিটাই না করলো। এমনিতেও যা দাবি করেছি তা তো দেয়নি। তার উপর নকল পাচশ টাকার নোট ধরিয়ে দিয়েছে,,,খালি এক টাকার কয়েনটাই আসল,,,

চলবে,,,,,
চলবে,,,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here