নীল দিগন্তে পর্ব ১৮

#নীল_দিগন্তে
পর্ব- ১৮
লেখা- নীলাদ্রি নীরা

রাজীব গিয়ে উঠলো ওর এক স্কুল জীবনের বন্ধুর বাসায়। নাম সামিউল। বাসা কলাবাগানে। এত রাতে রাজীবকে হুট করে দেখে প্রচন্ড রকমের একটা ধাক্কা খেলো সামিউল। সেটা অগ্রাহ্য করে রাজীব বলল,
-” সামি তোর এখানে ঘুমাতে এসেছি। অনেকদিন ঠিকঠাক ঘুমাই না। খবরদার আমার ঘুম ক্লিয়ার না হওয়া পর্যন্ত ডাকবি না।”
সামিউল হতভম্ব। রাজীবের কি মাথা খারাপ হয়ে গিয়েছে? তার বাসায় কি ঘুমোবার জায়গা নেই যে এত রাতে এখানে আসলো!
সামিউল মনেমনেই প্রশ্ন আওড়ালো। রাজীব সারাদিন বেঘোরে ঘুমোলো। তার ঘুম ভেঙেছে বিকালে এবং সেটা সামিউলের ডাকেই। নিজে থেকে ওঠেনি সে। তার উপর রাতে গাড়ি গ্যারেজে পার্ক না করে পার্ক করেছে বাগানে। সামিউলের বাবার শখের ফুলের বাগানের দুই চারটা গাছ গাড়ির চাকায় পিষে গিয়েছে। সামিউলের বাবা কঠিন রাগে পুরো বাগানের গাছগুলোই কেটে ফেলেছেন। একটা গাছ নষ্ট করা মানে পুরো বাগানই নষ্ট করে ফেলা।
সন্ধ্যায় রাজীবের হাতে কফি এগিয়ে দিয়ে সামিউল প্রশ্ন ছুড়ে দিলো,
-” ব্যাপারটা কি রাজীব? আম কনফিউজড এবাউট ইউ ফ্রম লাস্ট নাইট।”
রাজীব কফিতে চুমুক দিয়ে ভাবলো, সামির সাথে ব্যাপারটা নিয়ে ডিসকাস করলে কেমন হয়! অন্তত একটা ফাইনাল সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্য সামির কাছ থেকেও ভালো মন্দ বুঝা যাবে। সবটা শুনে সামিউল বলল,
-” প্রথম প্রেম কি ভোলা যায়?”
রাজীব শান্তগলায় বলল,
-” না। বাকিংহাম প্যালেসে যায়।”
-” এক্সাক্টলি। দ্যাট প্লেস ইজ থাউজেন্ড টাইম বেটার দ্যান ভোলা।”
সামিউল উচ্চস্বরে হেসে উঠলো। যেন খুব মজা পেয়েছে সে। রাজীব বিরক্ত এবং তিক্ত। সামির স্বভাব কখনো বদলাবে না। সিরিয়াস ব্যাপারেও দাত কেলিয়ে হাসবে।
-” বাই দ্যা ওয়ে, আমি বুঝতে পারছি না, রুমা মেয়েটা এতো **** কেনো? হোয়াই! ও যেমন চিপ ক্যারেক্টারের মেয়ে ওর সাথে রিলেশনশিপ করা মানে নিজেকে ওই লেভেলে নিয়ে যাওয়া। ও কিভাবে যে নিজেকে এত সাধু সাজিয়ে বেড়ায় আল্লাহ নো’জ ওয়েল। এখনও বদলায় নি শালী। দুইদিন পর পর কি এখনও বয়ফ্রেন্ড চেঞ্জ করে?”
রাজীব বলল,
-” সেটা তো আমার জানার দরকার নেই। পাস্ট ইজ পাস্ট!”
-” বুঝলাম। তারপরও ওর সমস্যাটা কি আমি বুঝতে পারছি না। এই মেয়ের কি মানুষের চালে ঢিল না মারলে ভাত হজম হয় না?”
-” না”
-” তবে তোর উচিত ছিলো পুষ্পকে বুঝিয়ে বলা। ও সহজ সরল একটা মেয়ে। যা বলেছে তাই বিশ্বাস করে ফেলেছে। আর ভালো হত যদি তুই আগেই রুমা সম্পর্কে পুষ্পকে অ্যালার্ট করে রাখতে পারতিস। রুমা এরকম করতে পারে এটা অবিশ্বাস্য কিছু না।”
-” তোর কি মনে হয়, পুষ্পকে আমি আগে আগে বলে রাখলে ও আমার কথাই বিশ্বাস করতো? রুমার কথা বিশ্বাস করতো না? হাহ! পুষ্পকে আমি খুব ভালো করে চিনি সামি। ও ভাবতো যে আমিই দোষী আর এইজন্যই ওকে আগেই বুঝিয়ে দিচ্ছি যাতে ও পরে কিছু শুনলেও বিশ্বাস না করে। তাও পুষ্পকে আমি অ্যালার্ট করেছি। গাধীটা বুঝেনি। আর রুমা এর আগে আমাকেও পুষ্প সম্পর্কে অনেক কিছু বলেছে যার জন্যে পুষ্পকে আমি নিজেও ভুল বুঝেছিলাম। ”
-” কি বলেছিলো?”
-” বলেছে পুষ্প ওর ক্লাসমেট একটার সাথে রিলেশন আছে আবার আরেক ছেলের সাথেও নতুন রিলেশন এ গিয়েছে। ওরা রেস্টুরেন্টে মীট করে আরও অনেক কিছু। ডিটেইলসে বলতে পারছি না সামি আমার ভালো লাগছে না।”
-” আচ্ছা এখন কি করবি?”
-” কিছুই করব না।”
-” কিছুই করবি না মানে? এভাবে বসে থাকবি?”
-” তো আর কি করার আছে? পুষ্পকে আমি কিছুই বলব না। পুষ্প সম্পর্কে যখন রুমা আমাকে বলে তখন তো ব্যাপারটা পুষ্প জানতেও পারেনি। আমিও বলিনি। পরে নিজেই আমি সত্যিটা জেনেছি যে রুমা মিথ্যে বলেছে। পুষ্পকেও নিজে থেকেই সব কিছু জানতে হবে। এটাও ওর শাস্তি। খুব জ্বালিয়েছে আমাকে।”
-” দেখ যা ভালো বুঝিস। পরে না আবার হিতে বিপরীত হয়ে যায়।”
-” কাশ্মীর যাবি?”
-” কেন?”
-” আরেকটা বিয়ে করতে।”
সামিউল হো হো করে হেসে উঠলো।
-” জবে জয়েন করলে তো আর ঘোরার সময় পাবো না। বেকার সময় কাটানোর থেকে শেষ বারের মতো নিশ্চিন্তে ঘুরে আসি। মাইন্ড ফ্রেস করার জন্য ট্রিপ দরকার। যাবি?”
-” তোর ছুটি কয়দিন আছে আর?”
-” ১০ দিন। তবে ৯ দিন ধরতে হবে একটা দিন তো রেস্ট, এডজাস্টমেন্টের জন্য লাগবেই।”
-” পারফেক্ট! আচ্ছা রাজীব পুষ্পকে আমি বুঝিয়ে বলি ওকে ডাকি। ডেকে আমরা একটা সলিউশনে আসি। তারপর বরং পুষ্পকে নিয়েই কাশ্মীর ঘুরে আয়। আই থিংক এটাই করা ঠিক হবে। তোরাও একটু প্রাইভেট টাইম স্পেন্ড কর‍তে পারতিস।”
-” সামি ব্যাপারটা তুই ইজি করে নিচ্ছিস। পুষ্প এখন মরে গেলেও আমার সাথে ঘুরতে যাবে না। একরোখা, ঘাড়ত্যাড়া একটা মেয়ে ও। আর আমি পুষ্পকে নিতে চাচ্ছিও না। তুই না গেলে না কর। আমি সিলেট ঘুরে আসি।”
-” আচ্ছা রবিনকে বলব? সাফওয়ান, নিশান, পুনমদের?”
-” বলে দেখ। গ্রুপ করে গেলে খরচ কম পড়বে।”
-” ওয়েট কল দিচ্ছি। আচ্ছা শুধুই কাশ্মীর? অন্য কোথাও ঘুরব না?”
-” সামি ইন্ডিয়া আমরা অনেক ঘুরেছি। দার্জিলিং, ডাউকি, সিকিম, শ্রীলং তো দেখাই। কাশ্মীরটা ঘুরা হয়নি। আরও যেগুলো আছে সময় পেলে নাহয় গেলাম।”
-” তাহলে তো কাশ্মীর সহ আগ্রার তাজমহল ও ঘুরে আসা যাবে যদি দিল্লী হয়ে যাই। আমার তো তাজমহল দেখার জন্য জান উতলা হয়ে আছে। একদম নিজ চোখে ভালো করে দেখে তারপর বিয়ে করে বউয়ের জন্য আমিও একটা তাজমহল বানাবো। তুই ও বানাবি পুষ্পর জন্য। তাজমহলে ঢুকিয়েই তালা মেরে দিবি যাতে চিল শকুনের ছাঁয়াও না পড়ে।”
রাজীন হাসল। সামিউল ও হেসে বলল,
-“ফ্লাইটে যাবি? নাকি বাস, ট্রেন?”
-” পাগল নাকি! ফ্লাইটে গেলে শুধু যাওয়া আর আসাই যাবে। ঘোরার টাকা থাকবে না আর। ট্রেনে কলকাতা হয়ে গেলে ভালোই হতো। তারপর দিল্লী ঘুরলাম। ঘুরেটুরে তারপর জাম্বু আর কাশ্মীর। কাশ্মীর ঘুরে সোজা কলকাতা ফিরে আসলাম কলকাতা থেকে বাংলাদেশে।”
-” সময় কম। তাড়াতাড়ি একটা প্ল্যান করে সিডিউল মেক করে ফেললে ভালো হয়। রাতে টিকিট কনফার্ম করে ভোরে বাসেই না হয় রওনা দিলাম। ট্রেনে যেতে হলে কাল বিকাল অবধি অপেক্ষা করতে হচ্ছে। আর টিকিটের ব্যাপার ও আছে।”
সামিউল ম্যাপ দেখে দেখে কাগজ কলম ছাড়া ব্রেইনের মধ্যেই সিডিউল করছে। রাজীব অন্য চিন্তায় ডুব দিলো। ওর পোস্টিং রাঙ্গামাটি জেলায়। ওখানে কত শত পর্যটন স্পট আছে। কত ভেবেছিলো সময় পেলেই মাঝেমধ্যে পুষ্পকে নিয়ে ঘুরে আসবে। মেয়েটা জীবনে কয়বার ট্যুরে গিয়েছে? হয়তো কলেজ ইউনিভার্সিটি ট্যুরই শুধু। আচ্ছা সামিউলের জায়গায় পুষ্প থাকলে কি হতো? এরকম একটা সময়ে একটা ট্যুর কি ওরা দুজনে দিতে পারতো না? সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে পুরো পৃথিবীই পুষ্পকে ঘুরে দেখাতো সে। সবকিছু ঠিক কি আদৌ থাকবে? পুষ্প যেই কথা গুলো গত রাতে বলেছে সেগুলো মনে হলেই পুষ্পকে মেরে ফেলতে ইচ্ছে হয় ওর। হোক অন্যকেউ পুষ্পকে উল্টাপাল্টা বুঝিয়েছে। তো কি হয়েছে? পুষ্প কি এতদিনেও রাজীবকে চিনে ওঠতে পারেনি? তার চরিত্র এতটা নীচ? পুষ্পও সেটা বিশ্বাস করে ফেললো?
….

রাজীব বাসা থেকে রাগ করে গিয়েছিলো পুরো এক মাস আগে। তার সাথে পুষ্পর কোনো প্রকার যোগাযোগই নেই। রাজীব কখনো ফোন করেনি। পুষ্পও নিজে থেকে ফোন করেনি। কেম করবে? শুধু চাচীর কাছ থেকে শুনেছে অফিসে জয়েন করে ফেলেছে সে। আবার ওই সময় নাকি বন্ধুদের নিয়ে ইন্ডিয়া ঘুরতে গিয়েছিলো সে। তার তো ঘোরারই সময় এখন। খুব কষ্ট পেয়েছিল সেদিন পুষ্প। একটা মেয়ের জীবন নিয়ে খেলে দেশ বিদেশে ঘুরে এসেছে সে। সে কি কোনো মানুষ? নাকি পশু? পশুরা কি পুলিশের ইউনিফর্ম পড়ে? সে তো পশু! পশু কেন পুলিশের ইউনিফর্ম পড়েছে! উহু পুলিশের না! পুলিশ সুপারের। অমানুষ ও পুলিশ সুপার হয়? সে অফিসে তার টেবিলে বসা। গোছানো একটা রুম। মাথার পিছনের দেয়ালে শেখ মুজিব এবং শেখ হাসিনার ছবি ঝুলছে। একপাশে বিশাল জানালা তবে সেটা বন্ধ। আরেকপাশে বিশাল এক র‍্যাক। র‍্যাকে হাবিজাবি কিছু থাকতে পারে। পুষ্প রাজীবের দিকে চোখ বুলালো। হাসি হাসি চেহারা। এত হাসি তার কোথা থেকে আসছে? ইউনিফর্মের বাম দিকটায় একটা নেমপ্লেট। যাতে গোটা গোটা অক্ষরে লিখা তানজিম আহসান। ছবিটা খুটিয়ে খুটিয়ে দেখতে গিয়েই চোখ দুটি ঝাপসা হয়ে গেল পুষ্পর। চাচী টের পাওয়ার আগেই সে মুছে ফেলল। সোহেলী রাজীবের ছবিটাই দেখাচ্ছিলেন আর বলছিলেন, -” কেমন রাজপুত্র লাগছে না বল? যেন সদ্য দায়িত্ব প্রাপ্ত রাজপুত্র রাজ্যাভিষেক হওয়ার পর সিংহাসনে বসেছে। লাগবে না কেন! রাজপুত্রের রাজ তো রাজীবের নামেই আছে। তাকে রাজপুত্রই তো লাগবে।”
পুষ্প শুধু হু হা করছে। সোহেলী আবার বললেন,
-” বুঝেছিস! রাজীবের একটা ছোটবেলার ছবি আছে। ওর সাত বছর ছিলো তখন। তোর তখন মাত্র ছয়মাস কি একবছর ছিলো। তোর চাচা ক্যামেরা কিনলেন। যা পেতেন তারই ছবি তুলতেন। একদিন রাজীবকে আমি রাগ করে খুব মারলাম। গালের দিকটা কেটে গিয়েছিল। এই দাগটা এখনও আছে। তুই কি খেয়াল করেছিস দাগটা?”
পুষ্প মাথা নাড়ালো। সোহেলী আবার বললেন,
-” আচ্ছা একদিন দেখে নিস। যা বলছিলাম। হলো কি, রাজীব খুব কান্নাকাটি করতে শুরু করলো। চোখের পানি, আর নাকের ঘি এক হয়ে জগন্য অবস্থা। সে ফ্লোরে গড়িয়ে গড়িয়ে কাঁদছে। তার উদোম গা, শুধু পড়নে হাফ প্যান্ট। এই সময় তোর চাচা ক্যামেরা নিয়ে ওর একটা ছবি তুলে ফেললেন। সেই ছবি আমি যত্ন করে রেখে দিলাম। রাজীব যখন বড় হলো একবার আমি সেই ছবি দেখালাম ছেলে লজ্জায় লাল হয়ে গেলো। বুঝলি আমি ভাবছি এই ছবি বড় করে বাধিয়ে রাজীবের অফিসে ঠিক ওর মাথা বরাবর দেয়ালে নিজ হাতে টাঙিয়ে দিব। ফাজিল ছেলে বুঝবে কত ধানে কত চাল। এটা কেন করবো জানিস? এই যে জয়েনের আগে আমাদের সাথে দেখা করেছে? করেনি। তার উচিত ছিলো না বাবা মাকে সালাম করে তাদের দোয়া নিয়ে যাওয়া? চুপিচুপি রাত্রিকে দিয়ে প্রথমে ঘুরতে যাওয়ার জন্য পাসপোর্ট নিলো, তারপর এসে জিনিসপত্র কুরিয়ারে করে নিয়েছে। যা এইবার দেখবি মজা। যেই অফিসে যাবে সেই ছবিটা দেখবে।”
পুষ্প বললো, হুম। সোহেলী বিরক্ত হলেন। পুষ্পর সাথে কথা বলাই বৃথা! এই মেয়ে কি খেল দেখানো শুরু করেছে? কিছুদিন খুব খুশি খুশি থাকবে, আবার কিছুদিন সেই আগের মতো গোমড়া মুখ করে বসে থাকবে। থাকুক! যা ইচ্ছে করুক! ঢং শুরু করে দিয়েছে। আরে বাবা বাড়ির বউ একটু হাসিখুশি থাকলে কি হয়? তোকে কি তোর স্বামী শাশুড়ি অত্যাচার করে বেড়ায় যে এমন প্যাঁচার মতো মুখ করে থাকবি?
সোহেলীর মনে হলো রাজীব পুষ্পর মধ্যে ঝামেলা হয়েছে। নয়তো এই মেয়ে ছবিটা এভাবে খুটিয়ে খুটিয়ে দেখতো না। তিনি স্পষ্ট দেখলেন মেয়েটার চোখ ছলছল করছিল। ঝামেলা হয়েছে বলেই হয়তো রাজীবের সাথে কনটাক্ট নেই। নাহলে মাকে ছবি পাঠিয়েছে যখন বউকেও পাঠাতো। পাঠায় নি নাকি? নাই পাঠাক। ঝগড়া হয়েছে ওদের? হোক। মাঝেমধ্যে ঝগড়া হতে হয়। যেই সম্পর্কে যত ঝগড়া, রাগারাগি বেশি হবে সেই সম্পর্কই তত বেশি মজবুত হবে। ঝগড়া করবে, রাগ করবে, আবার মিমাংসা করে সুখে সংসার করবে, আবার ঝগড়া করবে আবার মিমাংসা করবে। এভাবেই চক্রাকারে ঘুরতে থাকবে। সম্পর্ক নিরামিষ টাইপের হলে সেই সম্পর্কে কোনো ইন্টারেস্ট থাকে না। কারোরই একঘেয়েমির জীবন ভালো লাগে না। দেখা যায়, একসময় সেই সম্পর্কের বাঁধন ছিড়ে ফেলতে ইচ্ছে হয়।
সোহেলী খাতুন পুষ্পর কাছ থেকে সরে এলেন। বাসাটা পুরো খালি খালি লাগে ইদানিং। কেউ নেই। যেন একটা ভুতের বাড়ি। মশাও যদি পিনপিন করে তাহলে মনে হয় যেন কেউ সাউন্ড বক্সে মিউজিক ছেড়ে দিয়েছে। সবকিছু কেমন যেন বদলে গেলো। রাহাতের এখনও কোনো খোঁজ নেই। নাসির হোসেনকে ময়মনসিংহ থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। জাহানারা বাপের বাড়ি চলে গিয়েছে। খুশবুও পুষ্পর সংঘটনে চলে গিয়েছে। সেখানেই নাকি রাজ্য খুলে বসে তিনি রাজ্য পরিচালনা করছেন। রাত্রিও মায়ের আঁচল ধরে মায়ের রাজপ্রাসাদে চলে গিয়েছে। সোহেলী খাতুনের মনে হলো রাত্রিটা বাসায় থাকলে ভালো হতো। ওখানে কেমন আছে কে জানে! মেয়েটার ডেলিভারির ডেটটা কবে? আচ্ছা রাজীবের ছবিটা দেখে রাত্রি কি বলতো? এটা বলতো?
-” ওহ মাই গড! বড় মামী আমি দেখছি! ভাইয়াকে তো দেখে মনে হচ্ছে বিশ বছরের এক তরুন ফটোসেশনের জন্য পুলিশ সুপারের বেশে বসে আছে। আচ্ছা মামী, পুলিশের ইউনিফর্ম কি এইজ মিরাকল ইউনিফর্ম নাকি যে পড়লেই দশ বছর কমে যাবে? তবে ভাইয়ার দশ বছর কমে নি। কমেছে আট বছর। ওই একই হলো! মামী ভাইয়াকে বলো তো, আমার জন্যে যেন একটা লেডিস ইউনিফর্ম পাঠিয়ে দেয়।”

চলবে….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here