নীল দিগন্তে পর্ব ১৭

#নীল_দিগন্তে
পর্ব- ১৭
লেখা- নীলাদ্রি নীরা

রাজীব রাতে পুষ্পকে রুমে পেয়েই পিছন থেকে ঝাপটে ধরলো। সাথে সাথেই পুষ্প ধাক্কা দিয়ে সরে গেল। রাজীব হতভম্ব! এভাবে ধাক্কা দিয়ে সরে যাওয়ার কি আছে? সবসময় এরকম করে কেন পুষ্প? পুষ্পর চোখে মুখে বিরক্তি আর ঘৃণার ছাপ স্পষ্ট। রাজীব ভ্রু কুচকে পুষ্পর দিকে তাকালো। পুষ্প তাকে অগ্রাহ্য করে চলে যেতে নিলেই রাজীব বলল,
-” আমি কাছে আসলেই কি তোর ইলেক্ট্রিক শক লাগে ?”
পুষ্প ওর দিকে না তাকিয়ে বলল,
-” ভালো লাগছে না সরো।”
-” কেনো ভালো লাগছে না?”
-” জানিনা।”
কোনো না কোনো সমস্যা হয়েছে সেটা বুঝতে রাজীবের বেশিক্ষণ লাগার কথা না। আর পুষ্প যেই মেয়ে ওর বুক ফাটবে তো মুখ ফোটবে না। সে দুই হাত দিয়ে পুষ্পর মুখটা উঁচু করে বলল,
-” কি হয়েছে? ”
-” কিছু হয়নি।”
-” আমাকে বলা যাবে না?”
-” হলে তো বলব?”
-” আমি তো কিছু করিনি তাহলে হবে কিভাবে! ”
পুষ্প চুপ করে রইল। রাজীব আবারও বলল,
-” আচ্ছা সকালে তো বেশ হাসিখুশি ছিলি। এখন কি হয়েছে? ”
-” সকালে হাসিখুশি থাকলে এখনও থাকতে হবে? ”
-” পুষ্প প্লিজ। আমি কিছু করেছি? ”
পুষ্প কিছু না বলে ওয়াশরুমে চলে গেল। ফুল স্পীডে শাওয়ার ছেড়ে ফুঁপিয়ে কাঁদতে শুরু করলো। পৃথিবীটা এত নিষ্ঠুর কেন? কেন ওকে নিয়ে এত খেলে? এক চিলতে সুখ কি ওর জীবনে লিখা নেই? কেন সবাই ওকে এত ঠকায়? কেন?
রাজীবের দুশ্চিন্তার শেষ নেই। পুষ্প ঘন্টাখানেক হলো ওয়াশরুমে ঢুকেছে। শাওয়ার এর শব্দ শুনা যাচ্ছে। এত রাতে শাওয়ার নিতে গিয়েছে কেন? আবার অসুখ বাঁধাতে চায়? কি হয়েছেই বা মেয়েটার। রাজীব নক করলো। কোনো রেসপন্স নেই। রাজীব হুংকার করে বলল,
-” পুষ্প তুই যদি দুই মিনিটের মধ্যে বের না হস তার ফল অবশ্যই খুব খারাপ হবে।”
প্রায় সাথে সাথেই পুষ্প ওয়াশরুমের দরজা খুলে দিল। রাজীব ওয়ারড্রোব থেকে কাপড় আর টাওয়াল এগিয়ে দিল। পুষ্প চুপচাপ ড্রেস চেঞ্জ করে এসে কাঁথা গায়ে দিয়ে গুঁটিসুটি মেরে শুয়ে রইল। দুজনের কারো চোখেই ঘুম নেই। একজন নিরবে কাঁদছে, অন্যজন অজানা আশংকায় মাথার চুল টানছে।

সৌরভের বাবা মাকে দেখে খুব অবাক হলেও মুখে কিছু প্রকাশ করলেন না মশিউর রহমান। শওকত সাহেবকে দেখেই বুঝা যাচ্ছে তিনি বিব্রত এবং লজ্জিত। উনার স্ত্রী মহিমাও খুব বিব্রত বোধ করছেন সেটা মশিউর রহমান খুব ভালোই বুঝতে পারছেন। উনারা দুজনেই ছেলের এমন কর্মকাণ্ডে বিরক্ত তবে তা প্রকাশ করছেন না। মশিউর রহমান খুব চিন্তিত ভঙ্গিতে চায়ে চুমুক দিলেন। লইয়ারদের কে বেশি বেশি ভং ধরতে হয়। এই যে তিনি এখন খুব সুন্দর করে গুছিয়ে বললেন,
-” দেখুন শওকত সাহেব। আপনার ছেলে যা করেছে সেটা সত্যিই অত্যন্ত লজ্জার এবং অসম্মানের৷ বুঝতে পারছেন তো আমি কি বুঝাতে চাইছি। হ্যা আমাদের মেয়েটার ও দোষ আছে। নিজেদের মেয়ের দোষ ঢেকে ফেলার মতো ইডিয়ট আমি নই। অবশ্যই সে ও ভুল করেছে।”
শওকত সাহেব একবার মহিমার দিকে তাকালেন। মহিমা ইশারায় সায় দিলেন। তারপর শওকত সাহেব বললেন,
-” হ্যা সেজন্যই আমরা চাচ্ছি সসম্মানে মেয়েটাকে পুত্রবধু হিসেবে গ্রহণ করতে। অন্তত অনাগত সন্তানটার ভবিষ্যত চিন্তা করেও আপনি আমাদের প্রত্যাখ্যান করবেন না আশা করি।”
মশিউর রহমান মনে মনে বললেন, আয় বেটা লাইনে আয়। এমনি এমনি কি ছত্রিশ বছর উকালতি করেছি? বললেই তো মেয়েটাকে তুলে দিয়ে দিতে পারি না। দেখা যাবে নিয়ে শুরু করেছো টর্চার। তখন হবে আরেক ঝামেলা। তারচেয়ে বরং একটু কাঠখড় পোড়াও। মশিউর রহমান বললেন,
-” আমাদের মেয়েটাকে অলরেডি অনেক কথাই শুনতে হচ্ছে। বাচ্চা একটা মেয়ে। এই বয়সে অতি আবেগে ছেলেমেয়েরা এমন ভুল করে ফেলে। কিন্তু সেই ভুলের মাশুল ছেলেদের দিতে হয় বলুন? কখনোই না। যত অপমান, অসম্মান সব সহ্য করতে হবে মেয়েটাকে। আমি এরকম অনেক কেস লড়েছি। মেয়েকে ফাঁসিয়ে ফুসিয়ে ফিজিক্যাল রিলেশনে যাবে। তারপর ছেলে লাপাত্তা। মেয়ের জীবন নিয়ে টানাটানি। দেখা যায় মেয়েও আবার গর্ভধারণ করে ফেলেছে। এরপর কি হলো যে, মামলা মোকাদ্দমা করে মেয়েকে সসম্মানে বিয়ে করে ঘরে তুলে শুরু করবে টর্চার। মেয়েটা মুখ গুজে সহ্য করলে ভালো নয়তো তালাক। এরপর মেয়ের জীবন ধবংস করে ছেলে দ্বিতীয় বিয়ে করতে গেল।এগুলো যাস্ট কমন একটা বিষয়।”
শওকত সাহেব মাথা নিচু করে দীর্ঘশ্বাস ফেললেন। উনার ফেমিলিকে এসব শুনা মানে উনাদের দিকে থুথু ছোড়া। ছেলেটার জন্য আজকে এসবও শুনতে হবে সেটা তিনি জীবনেও কল্পনা করেন নি। এখনও উনার মনে হচ্ছে এটা কোনো দুঃস্বপ্ন। মহিমা এ পর্যায়ে বললেন,
-” ভাই আমরা রাত্রির কাছেই শুনি যে সে কি চায়। সে যা চাইবে সেটাই নাহয় হউক।”
-” দেখুন রাত্রি আমার বোনের মেয়ে হলেও ওর বাবার অনুপস্থিতিতে আমি তো ওকে জলে ঠেলে দিতে পারিনা। এই মুহূর্তে ওর গার্ডিয়ান হিসেবে তো আমরাই আছি। অবশ্যই রাত্রির মতামত জানতে হবে। তবে রাত্রির জন্যে যেটা ভালো হবে সেটাই আমি করব।”
মশিউর রহমান সোহেলীকে উদ্দেশ্য করে বললেন রাত্রিকে নিয়ে আসতে। রাত্রিকে দেখেই বড়সড় একটি শক খেলেন মহিমা। চেহারার কি অবস্থা করেছে এই মেয়ে! এই সময়ে আদৌ নিজের যত্ন নেয় কি না কে জানে! আচ্ছা মেয়েটার ক’মাস চলছে এখন? প্রথম যেদিন রাত্রি উনাদের বাসায় যায়, সেদিনই মেয়েটাকে উনার খুব ভালো লেগে যায়। কি মিশুক একটা মেয়ে। প্রতিটি কথায় ওর চাঞ্চল্য। এই মেয়ে যেই ঘরে থাকবে সেই ঘর কোলাহলে মাখামাখি হয়ে থাকবে। মনে মনে এমন মেয়েই তো উনি চাইতেন। দ্বিতীয় বার যখন উনাদের বাসায় গেলো মেয়েটাকে সেদিন একটু ফ্যাকাশে এবং বিষন্ন লাগছিল। স্বামীর ভয়ে মেয়েটার সাথে ঠিক করে কথাও বলেন নি। কি হতো এই মিষ্টি মেয়েটাকে সেদিন না ফিরিয়ে দিয়ে? নিয়ম কি ভাঙ্গা যায় না? উনার ছেলে তো অলরেডি ভেঙ্গেই ফেলেছে। মহিমার বড্ড মায়া হচ্ছে মেয়েটার উপর। তিনি শতভাগ শিওর মেয়েটার চোখ ছলছল করছে। এজন্যই মেয়েটা মাথা নিচু করে রেখেছে যাতে কেউ বুঝতে না পারে। রাত্রি বেশ খানিকক্ষণ চুপ করে থেকে প্রাণহীন গলায় বলল,
-” আংকেল আপনি আমাকে সময় দিয়েছিলেন ভাববার জন্য। আমার ভাবা শেষ হয় নি। শেষ হলেই আমি জানাবো।”
মশিউর রহমান খুশি হলেন। মনে মনে বললেন,
-” গ্রেট। দ্যাটস লাইক মাই গার্ল।”
শওকত সাহেব বললেন,
-” ঠিক আছে মা। আমরা অপেক্ষা করবো।”
রাত্রি যাওয়ার আগে মহিমার দিকে আড়চোখে তাকালো। মহিমার মনে ছ্যাঁত করে উঠলো। তিনি স্পষ্ট দেখলেন মেয়েটার গাল বেয়ে চোখের জল গড়িয়ে পড়ছে। মেয়েটা সেটা লুকোনোর জন্যই দ্রুত এই রুম ছেড়ে চলে গিয়েছে।

….
রাজীবকে পুষ্প পুরোপুরি ইগনোর করছে। রাজীব যত চাইছে ওদের মধ্যে কোনো ভুল বুঝাবুঝি হলে সেটা মিমাংসা করতে ততই পুষ্প রাজীবকে ইগনোর করছে। তার এত ধৈর্য নেই যে পুষ্পর এত অবহেলা সে সাদরে গ্রহণ করবে। তার ও রাগ আছে, অভিমান আছে। প্রিয় মানুষের কাছে এরকম ব্যবহার সহ্য করার মতো ছেলে সে না। সকালেও ডাইনিং টেবিলে পুষ্প অসহ্য একটা ব্যাপার ঘটিয়েছে যেটা হলো অন্যরা যখন ব্রেকফাস্ট করছিল তখন পুষ্প সবাইকে ঠিকই সার্ভ করে দিচ্ছিল কিন্তু রাজীব সেখানে যেতেই পুষ্প মাথাব্যথার ছুতো দেখিয়ে কেটে পড়েছে। তার নাকি প্রচন্ডরকম ব্যথা। তাহলে এত মাথাব্যথা নিয়ে ধেই ধেই করে বাহিরে যায় কিভাবে? অন্যরা কিছু না ভাবলেও এই ব্যাপারগুলো নিশ্চয়ই ঝেড়ে ফেলে দেয়ার মতো না। এর জন্য তো একটা স্টেপ নিতেই হচ্ছে। রাজীব পুষ্পকে আপাদমস্তক লক্ষ্য করলো। এত রাতে পুষ্প স্টাডি টেবিলে বই নিয়ে বসেছে। পুষ্প যে খুব একটা পড়ুয়া মেয়ে না সেটা সবারই জানা। রাজীব টেবিলের উপরে বসে পুষ্পর দিকে দৃষ্টি নিক্ষেপ করে বলল,
-” তোর ফাইনাল পরীক্ষা কবে?”
পুষ্প বইয়ের থেকে দৃষ্টি না সরিয়ে বলল,
-” আগামী মাসে”
রাজীব বলল,
-” ত্রিশ দিন থেকে ১০ মিনিট মাইনাস হলেও এমন কোনো আহামরি ক্ষতি হয়ে যাবে কি যে বই থেকে দৃষ্টি সরানো যাবে না? এমন না যে তুই খুব পড়াশোনা করিস।”
পুষ্প চুপ করে আছে। রাজীব বিরক্ত এবং ক্রুদ্ধ। থাপড়ে এই মেয়ের সবকয়টা দাত ফেলে দিতে ইচ্ছে হচ্ছে ওর। যাতে সারাজীবনের জন্য চুপই হয়ে থাকে। দরকার কি কথা বলার? রাজীব পুষ্পর বইটা কেড়ে নিয়ে বলল,
-” আচ্ছা কোন প্যারাটা পড়ছিলি বল তো। চল তোর একটা এক্সাম নেই। বল তো আমলাতন্ত্র কি বল তো? এর মূলনীতি কি? বল! কি হলো? এই দুই পেজে তো দুইটাই টপিক। চুপ করে আছিস কেন? তুই না পড়ছিলি এতক্ষন?”
পুষ্প চুপ করেই আছে। সে কি পড়ছিলো নাকি যে বলতে পারবে? রাজীব বইটা ঠাস করে টেবিলে রাখলো। পুষ্প ভয়ে চোখ বন্ধ করে ফেলল। ব্যাপারটা যে ভয়াবহ রকমের অবস্থার দিকে যাচ্ছে সেটা ও বুঝতে পারছে। রাজীব পুষ্পর দিকে ঝুঁকে এসে বলল,
-” থাপ্পড় চিনস? ঠিক কয়টা খেলে তোর মুখ খুলবে? ”
পুষ্প চুপচাপ চেয়ার টেবিল ছেড়ে এসে বারান্দায় চলে গেল। রাজীবের পুরোপুরি মেজাজ খারাপ হয়ে গেল। এই মেয়ের সাথে বকবক করাই বৃথা। দরকার নেই, যা ইচ্ছা করুক। পরক্ষনেই আবার সে ভাবলো, ব্যাপারটা আরও গাঢ় হওয়ার আগেই মিটমাট করে ফেলা দরকার। অন্ততপক্ষে পুষ্পর দিকটাও ভেবে দেখা উচিত। রাজীব বারান্দায় গিয়ে পুষ্পর পাশে দাড়ালো।
-” চুপ করে থাকলে কোনো কিছুরই সমাধান হয় না পুষ্প। আরও সম্পর্ক নষ্ট হয়। আমাদের সম্পর্কটা এমনিতেই নড়বড়ে। আমি স্বাভাবিক করতে চাইলেও তুই অবহেলা করছিস। যথেষ্ট সময় তুই পেয়েছিস। আমি তোকে মানিয়ে নেওয়ার জন্যে আপ্রাণ চেষ্টা করে গিয়েছি। কিন্তু আম ফেইলড! গত পরশু রাতেও সব ঠিক ছিল। কিন্তু কাল থেকে আজ এখন অবধি এসবের মানে কি? আমার জানা মতে আমি এমন কিছুই করিনি যে তুই এত ইগনোর করবি আমাকে। ”
পুষ্প হাসলো। অদ্ভুতভাবে হাসলো। রাজীব হতবাক হয়ে চেয়ে আছে পুষ্পর দিকে। হাসার মতো সে কি কিছু বলেছে? পুষ্প রাজীবের দিকে ফিরে তার চোখে চোখ রেখে বলল,
-” কিছুই করো নি?”
-” মনে হচ্ছে না”
-” আমাকে ঠকাচ্ছো না তুমি? ”
পুষ্প দৃষ্টি সরালো। রাজীব পুরো হতভম্ব! সে ঠকাচ্ছে পুষ্পকে? পুষ্প বলছে সেটা? রাজীব নিজেকে শান্ত রাখার চেষ্টা করলো। হুটহাট উত্তেজিত হওয়ার প্রফেশন তার না। তাদেরকে মাথা ঠান্ডা রেখে সবটা শুনতে হয়। সে পুষ্পকে নিজের দিকে ফিরিয়ে বলল,
-” আমি ঠকাচ্ছি? ঠিক কিভাবে ঠকাচ্ছি?”
পুষ্প বলল,
-” তুমি জানো না?”
-” না। জানি না”
-” কেন নাটক করছো? কাছে আসার জন্য? ওটা তো এখনও বাকী এই জন্য?”
রাজীবের এবারে সত্যিই ইচ্ছে হচ্ছে পুষ্পকে আছাড় দিয়ে মেরে ফেলতে। পুষ্পর মেন্টালিটি এতোটা চিপ হতে পারে সে ভাবতেই পারে না। রাজীব কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে বলল,
-” তোর কাছে আসার জন্য আমার কোনো নাটকের প্রয়োজন নেই পুষ্প। আমি সেটা চাইলেই পেতে পারি।”
পুষ্প তাচ্ছিল্যের হাসি হাসলো। রাজীব বলল,
-” টপিক অন্যদিকে চলে যাচ্ছে। কিভাবে ঠকাচ্ছি সেটা বল।”
-” রুমাকে এখনও ভালোবাসো তাই না?”
রাজীবের টার্গেট মিস হলো না। যা ভেবেছিলো তাই। সে একটু হেসে বলল,
-” হ্যা তা তো বাসিই। তো কি হয়েছে?”
পুষ্প চিৎকার করে বলল,
-” আমাকে কেন বিয়ে করেছো? চাচা চাচীকে ওর কথা বলে ওকেই বিয়ে করতে। আমার জীবন নিয়ে কেন খেলছো?”
রাজীব পুষ্পকে টেনে রুমে নিয়ে আসলো। সে চায় না ওদের চেচামেচি বাহিরে যাক। রাজীব বারান্দার দরজাটা বন্ধ করে বলল,
-” তোর জীবন নিয়ে আমি কেন খেলতে যাব?”
পুষ্প তেড়ে এসে বলল,
-” আমার জীবন নিয়ে খেলছো না? একটা মেয়েকে বিয়ের লোভ দেখিয়ে তার সাথে থেকেছো। তারপর উদ্দেশ্য হাসিল করে পালিয়েছ। এখন আমাকে বিয়ে করেও ঐ মেয়ের পিছনেই ছুটছ। তাকে আবার প্রতিদিন ফোন কর, টেক্সট করে বলো তুমি তাকে মিস করছ, তাকে ফিরে পেতে চাও। তাহলে আমার সাথে থাকছো কেন? ডিভোর্স দিয়ে ওকে বিয়ে করতে পারো না? নাকি ঘরের বাইরে অসভ্যতা করে বেড়াতে খুব ভালো লাগে?”
রাজীব ঠাস করে পুষ্পর গালে চড় বসিয়ে দিলো। তাল সামলাতে না পেরে পুষ্প ফ্লোরে পড়ে গেল। রাজীব কিছু না বলে রুমের দরজা খুলে বের হয়ে গেল। এই মেয়ের সাথে একসাথে থাকার কোনো প্রশ্নই আসে না। পুষ্প ওয়াশরুমে ঢুকে শাওয়ারটা ছেড়ে দিলো। চিৎকার করে কাঁদতে ইচ্ছে হচ্ছে পুষ্পর। কিন্তু সে এই জিনিসটা পারে না। সে কাঁদে নিরবে। কাঁক পক্ষী ও টের পাবে না। কেউ কিছু বুঝবে না, জানবে না এইভাবেই কাঁদে সে। অন্যকে জানিয়ে করে কি লাভ? ফ্লোরে বসে নিরবে কাঁদছে পুষ্প। একটা কথাই ওর মাথায় ঘুরছে, বিশ্বাসঘাতকদের সর্বোচ্চ শাস্তি কি হয়?

চলবে…..

(বানান ভুল হলে ঠিক করে পড়ে নিবেন😍)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here