নীল শূন্যতা,পর্ব:৬

#নীল_শূন্যতা
লেখনীতে: মাহমুদা

|৬|

বিশ মিনিটের জায়গায় রাকিব চল্লিশ মিনিট লাগিয়ে দেয়৷ রাকিব এসে দেখে তুষার চোখ বন্ধ করে বসে তার জন্য অপেক্ষা করছে। রাকিব তুষারকে ডেকে বলে,
‘বন্ধু, কেন ডেকেছিস?’
তুষার চোখ খুলে রাকিবের দিকে তাকায়৷ বসা থেকে উঠে রাকিবের দিকে এগোতে এগোতে সে প্রশ্ন করে,
‘ মিমেত চরিত্র খারাপ? মিম তোকে প্রপোজ করেছিল, এটাই তো বলছিলি? ’
‘ হ্যাঁ, কেন? আমার কথা কি তোর বিশ্বাস হচ্ছে না?’
‘ বিশ্বাস হচ্ছে। কিন্তু বুঝতে পারছি না, তুই আমায় কথাটাকে ঘুরিয়ে কেন বললি?’
‘ কথা ঘুরিয়ে বলেছি?’
‘ কাগজের লেখাটা তো তোর,’ তুষার তার পকেট থেকে কয়েকটি কাগজ বের করে দেখায়। কাগজগুলোতেই রাকিব বাজে শব্দ ব্যবহার করে মিমকে চিঠি দিয়েছিল। সেগুলো দেখে রাকিব প্রথমে কিছুটা ঘাবড়ে গেলেও পরবর্তীতে হেসে দেয়। সে বলে,
‘ওহ, তবে তোকে সত্যটা বলে দিয়েছে? শোন, মালটা হেব্বি। পুরো রসে টইটুম্বুর। হেল্প করে দে, তুইও খেতে পারবি!’
রাকিবের এসব বাজে ইঙ্গিতে তুষার প্রথমে হাসে৷ সে উত্তরে বলে,
‘অবশ্যই হেল করব। কারণ তুই আমার বন্ধু, যতই হোক। কিন্তু তুই একটা কথা জানিস না।’
‘কী সেটা?’
তুষারের পায়ের কাছে একটি ভাঙা কাঠ পড়েছিল। তুষার কাঠের দিকে তাকায়৷ পরক্ষণে নিচের দিকে ঝুঁকতে ঝুঁকতে সে বলে,
‘ এটাই যে, মিম আমার হবু স্ত্রী।’

রাকিব কিছু বুঝে উঠার আগে তুষার কাঠের খন্ডটি হাতে তুলে নিয়ে রাকিবের মাথায় বারি মারে। তাল সামলাতে না পেরে রাকিব একপাশে পড়ে যায়। মুহুর্তে বারি দেওয়া অংশ হতে রক্ত বের হতে থাকে। গরম ও তরল রক্তে হাত দিয়ে রাকিব বড়বড় দৃষ্টিতে তুষারের দিকে তাকায়। তুষার রাকিবের দিকে ঝুঁকে বসে। সে রাকিবের বাম হাত দেখিয়ে বলে,
‘এ-ই হাত দিয়ে চেপে ধরে আমার মিমের হাত তুই লালচে বানিয়েছিলি। তাইতো? তোর খুব শখ না, মিমের সাথে রিলেশন করার, তাকে টাচ করার?’

রাকিব উত্তরে মাথা দিয়ে না পারা সত্ত্বেও নিষেধ করে যাচ্ছে। তুষার কয়েকবার কাঠের খন্ডটিকে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে দেখে রাকিবের বাম হাতের কব্জি বরাবর গেঁথে দিয়ে বলে,

‘নে, তোর ইচ্ছা আমি পূরণ করে দিলাম।’

ব্যথায় চিৎকার করে উঠে রাকিব। অতঃপর অসহ্য যন্ত্রণায় কাতরাতে থাকে। তুষার উঠে দাঁড়ায় এবং বলে,
‘যেই চিৎকারটা তুই এখন দিচ্ছিস না, আজ এসব না করলে সেই চিৎকার আমার মিমের কন্ঠে বের হতো। তুই আমার বন্ধু দেখে এতটুকু পেলি। তুই আমার জীবনের আলোর দিকে হাত বাড়িয়েছিলি, তোকে তো একেবারে শেষ করতে ইচ্ছা করছিল। কিন্তু আমার আফসোস, আর তোর সৌভাগ্য যে, বন্ধুত্ব নামের কোন শব্দ তোর আর আমার মাঝে ছিল।’

বেশ অনেকক্ষণ রাকিব ব্যথায় কাতরাতে থাকে। দেহ থেকে অনেকটা রক্ত বের হওয়ার কারণে এবং ব্যথার কারণে রাকিব জ্ঞান হারায়। এরপর তুষার নিজেই রাকিবকে হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা করায় এবং অন্যদেরকে জানায় যে সে অর্থাৎ রাকিব নেশাখোরদের সাথে দ্বন্দে ছিল। হাসপাতালে আনার আগে রাকিবের মোবাইল থেকে নিজের শেষ কল মুছে দিয়েছিল সে।

বিকালে,

মিম সোনালি বর্ণের লম্বা গোল জামা পরে প্রস্তুত হয়ে তুষারের অপেক্ষা করতে থাকে। তুষার আসলে জনাবা বেলির সাথে কথা বলে দু’জন বেরিয়ে পরে।
অস্তমিত সূর্যটার লাল, হলুদ ও মেঘের ধূসর-কালো বর্ণ, পাখিদের নীড়ে ফেরার দৃশ্য সাথে নদীর শীতল বাতাস ও পানির হালকা ঢেউ। মেঘদল উড়ে যাওয়ার স্পষ্ট দৃশ্য, ফড়িংএর উড়াউড়ি এবং প্রিয়তমার মুখের প্রকৃত হাসি। এসব কিছু তুষারকে শ্রেষ্ঠ এক উপহার দিয়েছে। সে নিজে বেশ খুশি হয়েছে। সে ভাবছে, ভালোবাসা বুঝি এ-ই! ভালোবাসা অব্যক্ত রেখে, অপ্রকাশিত রেখেও বুঝি খুশি থাকা যায়, ভালো থাকা যায়, ভালো রাখা যায় এবং ভালোবাসা যায়!
বেশ ভালো একটা সন্ধ্যা উপভোগ করে দু’জন। সূর্য ডুবো-ডুবো হওয়ার সময় মিমকে বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার উদ্দেশ্যে রওনা হয় এবং মিমকে বাড়িতেও পৌঁছে দেয় তুষার। বাড়ি ফিরে এসে বেশ ফুরফুরে মনে সে পরিবারের সাথেও সময় কাটায়।

মিমের টেস্ট শুরু হয় এবং টেস্ট পরীক্ষার মাঝেই তুষারের ছুটিও শেষ হয়। মিম স্বাভাবিকভাবে পড়ালেখা করে এবং পরীক্ষা দেয়। দেখতে দেখতে এসএসিও দেয় মিম।
আজ তার এসএসসি পরীক্ষার ফলাফল দেওয়ার দিন। গত রাত থেকেই সে চিন্তিত। তার থেকেও অধিক চিন্তিত যেন তুষার। কোন কাজ সে মনোযোগ সহকারে করতে ব্যর্থ হচ্ছে।
সকালের নাস্তাতে শুধু একটু পানি পান করে মিম, দুপুরের খাবার একই অবস্থা। তার গলা দিয়ে যে খাবার নামছে না, চিন্তা একটাই এবং তা হলো ফলাফল। যতো সময় যাচ্ছে তার অস্থিরতা তার চিন্তা যেন আরো বেড়ে যাচ্ছে। এসএসি পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে তুষারের মিমের রোল নাম্বার ও।রেজিস্ট্রেশন নাম্বার নিয়ে গিয়েছিল।
দুপুর দুইটা। মিম ঘড়ির দিকে একটু পরপর তাকাচ্ছে ও আল্লাহ তায়ালার নাম অনবরত নিয়ে যাচ্ছে। এমনসময় শব্দ করে জনাবা বেলির মোবাইল বেজে উঠে। বসা থেকে উঠে গিয়ে টেবিলের উপর থেকে মিম মোবাইল ফোনটি হাতে নেয়। তুষারের নাম দেখে রিসিভ করে কাঁপা-কাঁপা কন্ঠে সালাম দেয়। সালামের উত্তর নিয়ে গম্ভীর কন্ঠে তুষার বলে,

‘টেস্টের পর কী লেখাপড়া করোনি?’
তুষারের এমন কথাতে মিমের হৃদস্পন্দন আরো বেড়ে যায়। এতক্ষণ অব্দি যে কান্না সে ধরে রেখেছিল এখন তা আর বাধা মানেনি। চোখের সীমানা ভেদ করে অশ্রুজল গাল গড়িয়ে ঝরে পরে। সে কান্না করে দিয়েই বলে,
‘আমি আমার সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছিলাম।’
‘ আরে পাগলি, কান্না করছ কেন?’
‘সরি, আমি সকলের আশাতীত রেজাল্ট দিতে পারিনি,’ মিম আরো কান্না করে বলে।
‘আরে পাগল মেয়ে, তুমি এ প্লাস পেয়েছ,’ তুষার হেসে বলে উঠে।
কিন্তু তুষারের আশাতে পানি ঠেলে মিম আরো কান্না করে উঠে। মেয়ের কান্নার একটু শব্দ শুনে জনাবা বেলি ছুটে আসেন। সে মিমকে প্রশ্ন করে,
‘কী হয়েছে, মিম? কে কল করেছে? কান্না করছ কেন?’
মিমের হাত থেকে মোবাইল ফোন নিয়ে তুষারের নাম্বার দেখে জনাবা বেলি নিজে কথা বলতে থাকে। তুষার তাকে বেলির ফলাফল সম্পর্কে জানালে জনাবা বেলিরও দৃষ্টি অশ্রুতে ভরে উঠে। এতো সুখের অশ্রুজল। তুষার ফোন কেটে দিলে মিমকে জড়িয়ে ধরে বলে,
‘বিশ্বাস কর মা, আমি আজও তেমন।খুশি হয়েছি যেমন তোর প্রতি পাবলিক পরীক্ষার ফলাফলে হই। বল তুই, কী চাস আমার কাছে?’
জনাবা বেলি মিমের চোখের পানি মুছে দেয়। মিম কান্নারত কন্ঠে বলে,
‘আমি অনেক পড়ালেখা করতে চাই, আম্মু।’
‘ইনশাআল্লাহ, তুই তোর স্বপ্ন পূরণ করতে পারবি।’

বলা হয় ‘সুখ ক্ষণস্থায়ী’। প্রবাদ বাক্যটিকে সঠিক প্রমাণিত করে মিমের জীবনে রাকিব নামক ঝড়টি আবারও তেড়ে আসে। সে এবার প্রত্যক্ষভাবে নয়, যা করার পরোক্ষভাবে করে। তবে, যা হয় তা মানুষের মঙ্গলের জন্যই হয়।
কলেজে ভর্তির পর কয়েকমাস সে বেশ ভালোমতোই ক্লাস করে। কিন্তু এরপর তাকে ও তুষারকে নিয়ে বিভিন্ন রটনা রটতে থাকে। তুষারের বলা কথা, ‘মিম আমার হবু স্ত্রী’ কথাটি বাতাসের গতির মতো ছড়তে থাকে। পাড়াপ্রতিবেশিসহ সহপাঠীদের থেকেও তাকে বিভিন্ন কথা শুনতে হয়। প্রথমত সে এসবে কর্ণপাত করে না। সে ভাবে, তার ও তুষারের মাঝে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের জন্য হয়তো সবাই এসব বলে। কিন্তু একদিন নিহার ও মিম কলেজ থেকে ফেরার পথে নিহার বলে,
‘মিম, অনেকদিন যাবত একটি কথা জিজ্ঞাসা করব বলে ভাবছি। আজ করি? কিছু মনে করিস না?’
‘ তুই অনুমতি নিচ্ছিস! আচ্ছা বল।’
‘ তুষার ভাইয়ের সাথে না-কি তোর বিয়ে ঠিক, তাও ছোটবেলা থেকে? দেখ আমি এটা আম্মুর থেকে শুনেছি। তারপর হিসাব কিতাব করে কিছুটা সত্যও বুঝতে পেরেছি। তুই নিজেই ভেবে দেখ, তুই এখন কলেজে পড়িস, তবুও তোর মা তুষার ভাইয়ার সাথে মেলামেশা নিয়ে তেমন কিছু বলেন না তোকে। তাছাড়া তোদের দু’জনের পরিবারেই বন্ডিং অনেক ভালো। এমন হতেও তো পারে।’
‘আমি এ ব্যাপারে কিছু জানি না। আমি আম্মুর থেকে জেনে নেই আগে,’ ভাবান্তর মিম উত্তর দেয়। নিহারের বলা কথাগুলো শোনার পর সে চিন্তা করে যে নিহারের কথা অযৌক্তিক না।

বাসায় ফিরে সে পোশাক পরিবর্তন করে ফ্রেশ হয়ে নেয়। খেতে বসে হঠাৎ তার মা’কে প্রশ্ন করে,
‘মা, লোকজন এসব কী বলছে আমায়! তুষার ভাইয়া এবং আমার না-কি বিয়ে ঠিক! কথাতে কতটুকু সত্যতা আছে?’

মেয়ের প্রশ্নে জনাবা বেলি থমকে যায়। সে খাওয়া দাওয়া বন্ধ করে মেয়ের দিকে তাকিয়ে বলে,
‘সম্পূর্ণটাই সত্য, মিম।’

মিম এমন উত্তর আশা করেনি। সে হতবাক দৃষ্টিতে তার মায়ের দিকে তাকায়। তার মা কিছু বলতে চায়। কিন্তু মিম বলে,

‘ তুমি আগে থেকে আমায় বিয়ে নামক শব্দে জড়িত করে বলো আমার স্বপ্ন পূরণ করতে দিবে, মা? এটা আশা করিনি। আমার এত কষ্ট করে পড়ালেখা করার মানে কি তবে?’

ছলছল নয়ন নিয়ে খাবার টেবিল থেকে উঠে যায় মিম। জনাবা বেলি মেয়েকে পেছন থেকে ডাকার আগে সে অন্য একটি কন্ঠস্বর শুনতে পায় যা রাগে ঝনঝন করছিল। মিমের দাদা রাগান্বিত হয়ে অশ্রাব্য ভাষায় গালাগাল করতে করতে এসেছেন। জনাবা বেলিকে দেখে সে বলেন,
‘আমার ছেলে দেশে না থাকায় মা-মেয়ে তো খুব ফূর্তিতে আছ! কোথায় তোমার বেশ্যা মেয়ে, যে স্কুল কলেজের নাম অরে ফষ্টিনষ্টি করে বেড়ায়? বাহিরে বের হতে বল। আমার বংশের মান সম্মান খাওয়ার অধিকার ওরে কে দিছে দেখব আমি।’
‘আমার মেয়েকে যা ইচ্ছে তাই বলার অধিকার কে দিল আপনাকে? আপনি ওর দাদা হলেও কোন সাহসে এসব অশ্রাব্য ভাষায় কথা বলে আমার মেয়ের দিকে আঙুল তুলছেন। মিমের বাবা-মা এখনও বেঁচে আছে, ভুলবেন না।’
‘হো, মেয়েরা তো মায়ের থেকেই শিখে। তুমিও তোমার বাবার বাড়িতে এমন প্রেম পিরিতি করে বেড়াতে নিশ্চয়ই। নয়তো মেয়েরে এভাবে সমর্থন করতে পারতে না। শিক্ষকতার নামে কোন পরপুরুষের সাথে যাও? শুনি?’

এমন একটা কথাতে জনাবা বেলি বাকরুদ্ধ হয়ে যায়। সরাসরি তার চরিত্র তুলে কথা বলেছে। ঘরের ভেতর থেকে সবটা শুনছে মিম। মায়ের অপমান ও চরিত্র নিয়ে বকা শুনে মিমের সহ্য হলো না। সে কক্ষ থেকে বের হয়ে হুংকার ছেড়ে তার দাদাকে বলল,
‘অনেক হয়েছে, দাদা। অনেক বলছেন। আমি আপনার ছোট মেয়ের মতো বেশ্যা নই আর না তার মতো অন্য কোন ছেলের সাথে ফষ্টিনষ্টি করেছি। যার সাথে আমার রটনা রটেছে আমার বাবা-মা নিজ থেকে তাকে আমার জন্য পছন্দ করে রেখেছে এবং বিয়েও ঠিক করে রেখেছে। আপনি মান-সম্মানের কথা বলছেন, আপনাদের সম্মান আছে! আপনার ছোট মেয়ে, আমার ফুপি কি করেছে না করেছে ভাববেন না তা আমি জানিনা। যা হয়েছে আমার বুঝ শক্তির পরই হয়েছে। অন্যের সন্তান গর্ভে নিয়ে বাড়ি ফিরেছিল, তখন মান সম্মান কোথায় ছিল, সপ্তম আসমানে?’

মিমের কথায় তার দাদা হাতের লাঠি নিয়ে তেড়ে আসে মিমকে মারতে। সেসময় মিমের মা দেয়াল হয়ে দাঁড়ায়। সে বলে,
‘খবরদার, আমার প্রাপ্তবয়স্ক মেয়ের গায়ে হাত তুলবেন না! আপনার ছেলেসহ আমি কেস করব আপনার নামে।’
‘খুব তেজ হইছে না, মা মেয়ের? দেখি তোদের দৌড় কতদূর!’

এ-ই বলে গালাগাল করতে করতে মিমের দাদা বাড়ি ত্যাগ করলেন। মিম তার মায়ের দিকে তাকিয়ে বলে,
‘দেখ মা, কী করেছ? আমার সাথে সাথে নিজেকেই অকথ্য ভাষা শোনানোর মতো সুযোগ করে দিয়েছ।’

মিম নিজ কক্ষে চলে যায়। মাথায় হাত দিয়ে জনাবা বেলি চেয়ারে বসে পড়েন। সে কিছুই চিন্তা করতে পারছে না। বারংবার এটাই মনে হচ্ছে যে, তাকে এসব শুনতে হলে লোকজনদের থেকে তার মেয়েকে কি-না-কি শুনতে হচ্ছে। জনাবা বেলি চিন্তা করতে না পেরে মিমের বাবাকে সবটা জানায়। মিমের বাবা তাকে চিন্তা করতে নিষেধ করে। এমনিতেও তার ফেরার সময় হয়ে এসেছিল। ফিরে এসে ব্যাপারটি দেখবে এবং মিম ও নিজের খেয়াল রাখার কথা জনাবা বেলিকে জানায়।

চলবে,,,,,,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here