নেশাক্ত ভালোবাসা পর্ব-৩৩+৩৪

#নেশাক্ত_ভালোবাসা
#Season_2
#লেখিকাঃ Tamanna Islam
#পর্বঃ ৩৩

আইরাত বর্তমানে কিচেনে। ছোট এশ কালারের একটা ফ্রোক পরে চুলগুলো কে ওপরে বেধে ঠোঁটের কোণে হালকা জিভ বের করে গভীর মনোযোগ দিয়ে রান্না করছে। তাকে দেখে এমন মনে হচ্ছে যে খুব কষ্ট করে চেষ্টা করে এইসব করছে। গরমে কিছুটা ঘেমে কপালে বিন্দু বিন্দু পানিফোটা জড়ো হয়েছে। সেগুলো থেকে থেকে হাতের উল্টো পাশ দিয়ে সে মুছে যাচ্ছে। সামনের চুলগুলো কপালে আর সাইডে এসে ঠেকে রয়েছে। তার দুহাতে লেগে রয়েছে নানা ধরনের মশলা যা ফলে কিছুটা কাশিও দিচ্ছে সে। আসলে আব্রাহাম বাসায় নেই মানে রুমে নেই আর কি তাই আইরাত এক প্রকার লুকিয়ে-চুরিয়েই রান্না ঘরে গিয়েছে রান্না করতে। আজ হঠাৎ করেই মনে হলো যে নতুন কিছু ট্রাই করা যাক তাই তার পদাচরণ হলো রান্নাঘরে। আব্রাহাম জানলে কি করবে তাকে সেও জানে না। মূলত আইরাতের আব্রাহামের জন্যই রান্না করা। আব্রাহামের কষা মাংস অনেক বেশিই পছন্দের। তাই আইরাত আস্তে ধীরে সময় নিয়ে পরম যত্ন সহকারে বানাচ্ছে। হ্যাঁ অবশ্য সামনে ফোন অন করে তাতে ইউ টিউবের একটা রেসিপি ভিডিও অন করা আছে। অতঃপর বেশ কয়েক ঘন্টা পর রান্না হলো। মাংসের কালার তো দারুন এসেছে না জানি খেতে কেমন হয়েছে। ওইদিন পায়েসের মতো চিনির জায়গায় লবণ না দিলেই হয়েছে। কয়েক টুকরো মাংস তুলে মুখে পুড়ে নেয়। নাহ, সেইদিনের থেকে অনেক বেশিই ভালো হয়েছে। আইরাত তো খুশিতে গদগদ। এই প্রথম তার মাংস রান্না তাও আবার আব্রাহামের জন্য তার ওপর আবার ভালোও হয়েছে। রান্না শেষে কোমড়ে নিজের দুহাত ঠেকিয়ে রান্নাঘরের চারিপাশে একবার চোখ বুলায়। এটা কি আদৌ রান্নাঘর নাকি গোয়ালঘর তা বুঝা বড়ো দায়। আইরাতের মাথা ঘোড়াচ্ছে। এখন আবার তাকে এইসব গোছগাছ করতে হবে। খাবার সুন্দর করে সার্ভ করে টেবিলের ওপর রেখে দিয়ে এসে আবার রান্নাঘর গোছাতে লাগে। দ্রুত করতে হবে আব্রাহামের আসার আগেই। সে আইরাত কে বলে গিয়েছিলো যে ইম্পর্ট্যান্ট কিছু কাজ আছে হয়তো আসতে টাইম লাগবে আর সেই ফাকেই আইরাত এইসব কিছু করে নিয়েছে। টুকটুক করে সব কাজ সেরে ফেলে আইরাত। তারপর সোজা একটা লম্বা শাওয়ার নিয়ে নেয়। রুমে এসে বসে ছিলো আব্রাহামের অপেক্ষায় তখনই আব্রাহাম আসে। আইরাত খেয়াল করে দেখে আব্রাহাম রাগে কেমন একটু ফুলে ফুলে আছে। এখন আইরাত কি করবে বুঝে না। তবে নিজের সামনে তাকিয়েই আব্রাহাম তাকে দেখে দেয় এক হাসি।

আব্রাহাম;; বেশি দেরি করে ফেললাম কি?

আইরাত;; না একদম না।

আব্রাহাম;; কিছুর একটা স্মেল পাচ্ছি।

আইরাত;; গ্যাস হুয়াট!

আব্রাহাম;; হুমমমমমম। এটা….

আইরাত;; হুম বলুন বলুন।

আব্রাহাম;; এটা কষা মাংসের স্মেল।

আইরাত;; হ্যাঁ

আব্রাহাম;; স্মেল র‍্যালি গুড।

আইরাত;; ওয়েট।

আইরাত গিয়ে হাতে একটা বাটিতে বেশটুকু কষা মাংস আনে। তারপর এসেই আব্রাহামের মুখে পুড়ে দেয়।

আইরাত;; কেমন হয়েছে?

আব্রাহাম;; অসম্ভব ভালো। তবে কি দরকার ছিলো রান্নাঘরে যাওয়ার?

আইরাত;; আপনি বুঝলেন কি করে যে আমি রেধেছি।

আব্রাহাম;; তো আমি বুঝবো না তো আর কে বুঝবে।

আইরাত;; হুমম।

আব্রাহাম আইরাতের হাত দুটো নিয়ে কিছুটা স্মেল নেয়।

আইরাত;; কি করছেন?

আব্রাহাম;; ঘরের বউ রান্না করলে তাদের হাত থেকে যেমন সুগন্ধ ছড়ায় ঠিক তেমন সুগন্ধ আসছে এখন। লাইক এ টিপিকাল ওয়াইফ।

আইরাত;; আমার রান্না যে খাওয়ার যোগ্য হয়েছে তাই যথেষ্ট।

আব্রাহাম ফ্রেশ হয়ে আসে তারপর দুজন মিলে একসাথে খেয়ে নেয়। করিডরে গিয়ে বসে পরে। আব্রাহাম বসে বসে বই পড়ছে আর আইরাত দুহাত ভাজ করে গোল দোলনা তে বসে আছে। একমনে আব্রাহামের দিকে তাকিয়ে আছে।

আইরাত;; ওইই ওইই ওইই

আব্রাহাম;; হ্যাঁ

আইরাত;; ওইইইইই

আব্রাহাম;; আরে বাবা শুনছি তো বলো।

আইরাত;; আপনি কি ব্যাস্ত?

আইরাত;; একবার শুধু বল যে তুই ব্যাস্ত তারপর কিয়ামত হইয়া যাবো সোজা (মনে মনে)

আব্রাহাম;; না বেবিগার্ল, বাকিদের জন্য ব্যাস্ত কিন্তু আমার বউটার জন্য কখনোই না।

আইরাত মেকি হাসে।

আইরাত;; ওয়েট আব্রাহাম আমাকে রেখে বই পড়ছে কেনো? (মনে মনে)

আইরাত;; বই বেশি ইম্পর্ট্যান্ট?

আইরাত;; বুকসেল্ফে আজকে আগুন লাগায় দিমু আমি দাড়া (মনে মনে)

আব্রাহাম ঠাস করে বই টা রেখে দিয়ে আইরাতের দিকে তাকায়। আইরাত মুখ টা অন্য দিকে ঘুরিয়ে ফেলে। আব্রাহাম উঠে এসে আইরাতের দুগাল ধরে মুখ টা উঁচু করে নিয়ে তার ঠোঁটে চুমু বসিয়ে দেয়। তারপর আইরাত কে নিজের কোলে নিয়েই বসে পরে।

আইরাত;; ভাবছিলাম একটা বড়ো সড়ো ঝগড়া করবো তা আর হইলো না। এই পোলা আগেই সব বুইঝা যায়।

আব্রাহাম;; কিছু বললে?

আইরাত;; না।

আব্রাহাম;; বাইরে যাবে?

আইরাত;; ঘুড়তে?

আব্রাহাম;; আজকে শুট করেছিলে?

আইরাত;; গেলাম ই না তো।

আব্রাহাম;; আজকে যেনো নিশানা ঠিক থাকে!

আইরাত;; আচ্ছা৷

তখনই টাফি & সফটি দৌড়িয়ে করিডরে আসে। তারা ঘুমাচ্ছিলো। ঘুম থেকে উঠেই সোজা এখানে ছুটে চলে এসেছে। আইরাত তাদের দেখে উঠে পরে। একটা আব্রাহামের কোলে চলে যায় আরেকটা আইরাতের কোলে। তারা দুজনেই এত্তো পরিমানে কিউট। তাদের জন্য খাবার, কাপড় সহ সব কিছুই এনে দিয়েছে। একটা ছোট বেড আছে তাদের জন্য সেখানেই তারা থাকে। একদিনেই তারা আব্রাহাম-আইরাতের পোষ মেনে গেছে।


বিকেলের দিকে আইরাত একাই রুমের বাইরে বের হয়ে পরে। আব্রাহাম নিজেই যেতে বলেছে আইরাত কে যদিও তার সাথে গার্ড আছে। আইরাত এখন যাচ্ছে শুট করার ফ্লোরে। সেখানে গিয়ে আগে গুলি করতে হবে নয়তো আব্রাহাম এসে তাকেই গুলি করে দিবে। আইরাত যাচ্ছিলো একাই তবে একজনের নজর তার দিকে পরে। সে হচ্ছে আতিকের এক চেলা বিজয়। আতিক একটা সময় এই বিজয় কেই আইরাতের সব বায়ো ডাটা বের করতে বলেছিলো। সে সব খোঁজ নিয়ে আতিক কে বলেছিলোও। তবে এখন যে এখানে সে আইরাত কে দেখবে তা ভাবে নি। বিজয় সাথে সাথে আতিক কে খবর টা জানিয়ে দেয়।

ওদিকে আব্রাহাম রাশেদের সাথে কথা বলছে। রাশেদের একই কথা যে কবে তারা দেশে ফিরবে। কিন্তু এদিকে বললেই তো আর আসতে পারছে না সব ঝামেলা শেষ করে তবেই আসতে হবে। সেদিকের অবস্থা আছে ভালোই। আইরাতের ফ্যামিলি সহ বাকি সবাই অনেক ভালো আছে। কথা বলে শেষ করে দেখে আইরাত বাইরে গিয়েছে প্রায় আধা ঘন্টা হবে আব্রাহাম রেডি হয়ে দ্রুত তার কাছে চলে যায়। তবে একটা ব্যাপার হচ্ছে যে এখানে আব্রাহাম কে কোন কিছুর বিষয়ে মাথা না ঘামিয়ে যেভাবে খুশি সেভাবে থাকা যায়। অর্থাৎ দেশে কেমন রিভলবার বের করার আগে আশেপাশে কে আছে, কি করছে, পুরো পরিস্থিতি বুঝে তারপর সব করতে হয় কিন্তু এখানে চায় তুমি রিভলবার পকেটে নিয়ে ঘুরো বা হাতে কেউ কিছুই বলবে না। আব্রাহাম মুখে এক গম্ভীরতা এনে যেতে লাগে। আইরাত উনিশ ফ্লোরের যেই রুমে আছে সেখানে চলে যায়। গিয়ে দেখে আইরাত শুধু চোখে সেইফটি গ্লাস পরে দুহাতের ভাজে একটা গান নিয়ে ঠাস ঠাস করে গুলি একের পর এক করেই যাচ্ছে। প্রথমগুলো কয়েকটা নিশানা সঠিক না হলেও এবারের গুলো সব নিশানা ভেদ করে যায় একদম।

আব্রাহাম;; আয় হায় Bandook meri laila…

আইরাত আব্রাহামের দিকে তাকিয়ে দেখে সে দুহাত ভাজ করে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে৷

আইরাত;; দেখুন আমি সব ঠিকঠাক করে করেছি৷

আব্রাহাম;; হুম গুড। তবে সাউন্ড প্রুফ গেজেট পরো নি কেনো?

আইরাত;; একচুয়ালি আই লাভ দ্যাট সাউন্ড তাই।

আব্রাহাম;; হুমম।

আইরাত;; এখন এখান থেকে যাই?

আব্রাহাম;; চলো।

তারা দুজন বের হয়ে পরে। যেতে যেতেই হঠাৎ আব্রাহামের সাথে তার এক চেনা পরিচিত মানুষের সাথে দেখা হয়ে যায়। মিস্টার ডিসোজা৷ আসলে আব্রাহামের সাথে তার অনেক আগে থেকেই ভালো সম্পর্ক। উনি এটাও জানেন যে আব্রাহাম-আইরাত দুজন হাসবেন্ড & ওয়াইফ। এখানে যে আব্রাহাম আছে তা তিনি জানতেন না। এভাবে হুট করেই আব্রাহামের সাথে তার দেখা হয়ে যায় সাথে উনার বউ-বাচ্চাও রয়েছে৷

ডিসোজা;; আব্রাহাম!

আব্রাহাম;; হে ম্যান হাউ আর ইউ?

ডিসোজা;; ভালো। তুমি এখানে আছো আগে বললে না যে?

আব্রাহাম;; আমিই জানতাম না যে তুমি এখানে আছো৷ ভেবেছি কাজে ব্যাস্ত।

ডিসোজা;; তেমন কিছুই না। ওকে তো এ হচ্ছে আমার বউ আর আমার ছেলে।

আব্রাহাম আইরাত কে পাশ থেকে জড়িয়ে ধরে বলে…

আব্রাহাম;; আমার।

এটা বলেই সবাই কিছুটা হেসে দেয়। মিসেস ডিসোজার সাথে আইরাতের অনেক কথা হয়। তাদের একটা ছোট্ট ছেলে আছে অনেক কিউট। আইরাত আর থাকতে না পেরে কোলে নেয়। আইরাত আর মিসেস ডিসোজা একটা টেবিলে গিয়ে বসে পরে তারা দুজন কথা বলছে আর তাদের থেকে কিছুটা দূরেই আব্রাহাম আর মিস্টার ডিসোজা কথা বলছে। ডিসোজা সব কথা বলে যতটুকু বুঝলো তা হলো আব্রাহাম সোজাকথা নিজের জান দেয় আইরাতের ওপর।

ডিসোজা;; আচ্ছা বউ কে তো সবাই ভালোবাসে তাই না! তবে সত্যি বলতেই হবে আমি অন্য কাউকেই দেখি নি কারো জন্য এতো টা পাগল থাকতে। বাকিদের টা জানি না তবে অন্তত আমি তো দেখি নি।

আব্রাহাম;; ‘যেই মেয়ে একটা কাপড় চুস করতে গিয়ে পুরো দোকান/শো-রুম উলট-পালট করে ফেলে সে বেছে বেছে তোমাকে চুস করেছে তাও আবার পুরো জীবনের জন্য,, ব্রো একটু তো ভালোবাসো”!

ডিসোজা আব্রাহামের কথায় হেসে দেয়। অতঃপর তাদের সাথেই বেশ সময় আড্ডা দিয়ে আব্রাহাম আইরাত কে নিয়ে এসে পরে৷ আসার সময় আব্রাহাম বিজয় কে একনজর দেখে। তাকে দেখেই আব্রাহামের ডাউট হয় যে আতিক তাহলে এখানেই আছে আর তার কাছ থেকেই কোহিনূরের ব্যাপারে সব জানা যাবে। তবে এখন ঝামেলা না করে সেখান থেকে দ্রুত কেটে পরে আব্রাহাম।


সারাটা দিন এটা ওটা করেই কেটে যায় তাদের। এখন রাত বেজে চলেছে বারো টার ওপরে৷ আব্রাহাম হাপিয়ে গেছে আইরাত কে ঘুমানোর কথা বলতে বলতে তবে কে শোনে কার কথা। আইরাত ফ্লোরে বসে বসে পাজাল বক্স সলভ করছে আর আব্রাহাম বসে বসে আইরাত কে দেখছে।

আব্রাহাম;; এই মেয়ে!

আইরাত;; কি হইছে (কিছুটা চিল্লিয়ে)

আব্রাহাম;; কিছু না।

আইরাত আবার তার পাজালের দিকে নজর দেয়। আসলে সে পাজাল গুলো ঠিক করে আস্তে আস্তে একটা ঘর বানাচ্ছে। সব এলোমেলো হয়ে ছিলো সেগুলো দিয়ে সুন্দর করে একটা ঘর বানাচ্ছে আইরাত। গভীর মনোযোগ দিয়ে করছে এতে আব্রাহাম ডিস্টার্ব করলে থেকে থেকে চিল্লিয়ে ওঠে।

আব্রাহাম;; তুমি কি ঘুমাবা না। ঘুম নাই চোখে? নিশাচরী কোথাকার।

আইরাত;; বাড়ি বানাতে দিন আগে আমাকে।

আব্রাহাম;; আহ বাড়ি! আমার বাড়ির অভাব পরছে।

আইরাত;; আপনি চুপ করেন।

আইরাতের এইসব ত্যাড়ামি আর নিতে না পেরে আব্রাহাম হাত দিয়ে আবার এলোমেলো করে দেয় আইরাতের বানানো আধো বাড়ি টা। এতে তো আইরাত থুম মেরে বসে থাকে। আস্তে করে মাথা তুলে আব্রাহামের দিকে তাকায়। আব্রাহামও ড্যাবড্যাব করে তাকিয়ে থাকে আইরাতের দিকে। কতোক্ষম চুপ করে থেকে আইরাত এক চিল্লানি দিয়ে ওঠে….

আইরাত;; এইইইইইইইইইই।

আব্রাহাম তার কান চেপে ধরে।

আইরাত;; আপনি এটা কি করলেন?

আব্রাহাম;; কি করেছি?

আইরাত;; কি করেছেন মানে? আপনি জানেন না কি করেছেন। আমি এতো কষ্ট করে ঘর টা বানালাম আর আপনি ভেঙে দিলেন কেনো?

আব্রাহাম;; আম……

আইরাত;; আপনি ভাঙলেন কেনোওওওওও?

বুঝলো আইরাত চেতে গেছে। এখন আব্রাহাম কি করবে। আইরাত চোখ লাল করে বসে আছে।

আব্রাহাম;; আমার লক্ষীটি, আমার ময়নাবউ, আমার সোনা বউ, আমার কলিজা বউ, আমার আদরের বউ রাগ করে না প্লিজ বউ। আমার সুন্দর বউ, আমার বান্দর বউ।

শেষের কথা টা বলেই আব্রাহাম দাঁত দিয়ে জিভ কাটে। আইরাতের তো কান দিয়ে ধোঁয়া বের হতে লাগলো। এ যেনো আগুনে ঘি। আব্রাহাম তো মুখ ফস্কে বলে ফেলেছে। এখন কি করবে। আইরাত রাগে আগ-বাবুলা হয়ে গেছে। সে কিছু একটা বলতে যাবে তার আগেই আব্রাহাম আইরাতের বাহু ধরে টান নিয়ে নিজের ওপর ফেলে দেয়। আইরাতের কোমড় একহাতে ধরে আরেক হাত তার চুলের ভাজে ঢুকিয়ে দেয়। তারপর সে আইরাতের ঠোঁট গুলো আকড়ে ধরে। আইরাত চোখ গুলো বড়ো বড়ো করে তাকায়। সে আব্রাহামের কাছ থেকে সরে আসতে চায় কেননা তার কাছে এখন তার ঘর ভাঙার ব্যাপার টা বেশি বড়ো। তবে আব্রাহাম তাকে ছাড়ে নে। কিছু সময় পর ছেড়ে দেয়। আব্রাহাম তো খুশি, তবে আইরাত একদম ভাবলেশহীন ভাবে বসে আছে।

আব্রাহাম;; ওইইই

আইরাত;; আপনি আমার বাড়ি ভেঙে দিলেন কেনো?

আব্রাহাম;; ধুর ছাই তুমি আর তোমার বাড়ি।

আইরাত;; আমি আপনাকে লাদেনের বোম মেরে চান্দে পাঠায় দিবো।

আব্রাহাম;; পরে জামাই পাবা কোথায়?

আইরাত;; পেয়ে যাবো আবার।

আব্রাহাম দেয় এক ধমক। এতে আইরাত চমকে ওঠে। আব্রাহাম বুঝলো যে এই মেয়ে আর আজ সারারাত ঘুমাচ্ছে না। কি আর করার এরপর আব্রাহাম-আইরাত দুজনেই মিলে একসাথে পাজাল দিয়ে বাড়ি বানাতে লাগলো।

এখানে সহজে ইলেক্ট্রিসিটির প্রব্লেম হয় না তাই রুমের লাইট ইচ্ছে করেই বন্ধ করে দিয়ে বসে আছে দুজনে। করিডরের বড়ো সাদা পর্দা দুদিকে কিছুটা জড়ো করে দিয়ে রেখেছে। আব্রাহাম বসে আছে একদম দরজার মুখেই। আব্রাহামের বুকেই পিঠ ঠেকিয়ে হেলান দিয়ে বসে আছে আইরাত। আব্রাহাম তাকে জড়িয়ে ধরে রেখেছে। ঠান্ডা শীতল বাতাস এসে ছুইয়ে যাচ্ছে। রুমের ভেতরে কোন আলো নেই। শুধু দুটো বড়ো আকারের ক্যান্ডেল জ্বলছে। আর বাইরের আলো এসে পুরো রুম আলোকিত করে রেখেছে। আইরাত উঠে পরে আব্রাহাম কে বলে তারপর দু-কাপ কফি বানিয়ে আনে। একটা আব্রাহামের দিকে এগিয়ে দেয়। তারা নিজেদের কাপে এক চুমুক কফি খেয়ে তারপর কাপ এক্সচেঞ্জ করে নেয়।

আব্রাহাম;; বেবিগার্ল!

আইরাত;; হ্যাঁ জামাইজান।

আব্রাহাম;; তুমি গান গাইতে পারো রাইট!

আইরাত;; আপনার থেকে মোটেও মোটেও ভালো না, একদম না।

আব্রাহাম আর কিছু না বলেই উঠে গিয়ে গিটার নিয়ে এসে আবার করিডরের মুখে বসে পরে।

আইরাত;; কি করছেন? গান গাবেন আপনি। ওয়াও।

আব্রাহাম;; আমি না তুমি গাবে।

আইরাত;; আব্রাহাম আমি সত্যি পারি না।

আব্রাহাম;; হ্যাঁ আমার জানা আছে। এবার গাও।

আইরাত;; আরে কিন্তু…

আব্রাহাম;; বাথটাবে ফেলে দিয়ে আসবো কিন্তু এতো রাতে।

আইরাত;; না।

আব্রাহাম;; তাহলে গাও।

আইরাত আর কোন উপায় না পেয়ে রাজি হয়েই গেলো। আব্রাহাম গিটারে টুংটাং আওয়াজ তুলে সেই তালে তালে আইরাতও তার ছাড়া গলায় গান ধরে…

~প্রাণ দিতে চাই, মন দিতে চাই
সবটুকু ধ্যান সারাক্ষণ দিতে চাই
তোমাকে…. ওওওওওও তোমাকে~`~

~স্বপ্ন সাজাই, নিজেকে হারাই
দুটি নয়নে রোজ নিশুতে যাই
তোমাকে…. ওওওওওও তোমাকে~`~

*~জেনেও তোমার আঁখি চুপ করে থাকে
রোজ দুইফোঁটা যেনো আরও ভালো লাগে
গানে, অভিসারে, চাই শুধু বারেবারে••

তোমাকে…. ওওওওওও তোমাকে~`~

-*-যেদিন কানে কানে সব বলবো তোমাকে
বুকের মাঝে জাপ্টে জড়িয়ে ধরবো তোমাকে~

*~* পথ চেয়ে রই, দেরি করো না যতই
আর ভোলা যাবে না জীবনে কখনোই,,
তোমাকে…. ওওওওওও তোমাকে~`~

~•~ তুমি হাসলে আমার ঠোঁটে হাসি,
তুমি আসলে জোনাকি রাশি রাশি `•
“রাখি আগলে তোমায় অনুরাগে
বলো কীভাবে বোঝাই ভালোবাসি ❤️!?

~* সব চিঠি সব কল্পনা জুড়ে
রঙ মিশে যায় রুক্ষ দুপুরে 🍂
সেই রঙ দিয়ে তোমাকে আঁকি
আর কীভাবে বোঝাই ভালোবাসি ❤️!?

~হ্যাঁ প্রাণ দিতে চাই, মন দিতে চাই
সবটুকু ধ্যান সারাক্ষণ দিতে চাই
তোমাকে…. ওওওওওও তোমাকে~`~

স্বপ্ন সাজাই, নিজেকে হারাই
দুটি নয়নে রোজ নিশুতে যাই
তোমাকে…. ওওওওওও তোমাকে ❤️🥀~`~

আব্রাহাম বসে বসে গিটার বাজাচ্ছিলো আর এক দৃষ্টিতে আইরাতের দিকে মুচকি হেসে তাকিয়ে ছিলো। আইরাত তো গাওয়া শেষ করে বসে আছে। গিটার টা হাত থেকে পাশে রেখে দিয়ে আইরাতের দিকে নিজের দুহাত মেলে ধরে আব্রাহাম। আইরাত সোজা গিয়ে আব্রাহামের বুকে ঝাপটে জড়িয়ে ধরে।

।#নেশাক্ত_ভালোবাসা
#Season_2
#লেখিকাঃ Tamanna Islam
#পর্বঃ ৩৪

কাজ & ঝামেলার চাপে এখনো আমেরিকা তে থাকলেও মন যেনো আর এখানে টিকছেই না। দেশে ইলা, অনামিকা, নিজের বন্ধুবান্ধবদের প্রচুর মিস করে আইরাত। আব্রাহামও চাইছে যে যত জলদি সম্ভব দেশে ফিরে যাবে কিন্তু তা যেনো আর হতেই চাইছে না। আইরাত এখন রুমেই, আর আব্রাহাম গিয়েছে বাইরে। রুমের টুকটাক কাজ করছিলো আইরাত তখনই ল্যান্ডলাইনে কল আসে।

আইরাত;; হ্যালো।

তায়াফ;; গুড মর্নিং।

আইরাত;; আপনি কে?

তায়াফ;; আরে ভুলে গেলেন এতো জলদি। ঠিকআছে আপনি ভুলেছেন, তবে আমি না। আপনি বলেছিলেন গোলাপের সাথে কাটাও থাকে। আমি চাচ্ছি কাটা দিয়ে ক্ষত-বিক্ষত হতে।

আইরাতের বুঝতে আর সময় লাগে না যে এটা তায়াফ ছাড়া আর কেউ না।

আইরাত;; কেনো ফোন করেছেন?

তায়াফ;; বারবার মন-মস্তিষ্কের দরজায় আপনিই এসে কড়া নাড়ছিলেন তাই।

আইরাত ফোন রেখে দিতে যায় তখনই তায়াফ তড়িঘড়ি করে বলে ওঠে…

তায়াফ;; আরে আরে ফোন কাটবেন না একদমই।

আইরাত;; সমস্যা কি আপনার?

তায়াফ;; আপনাকে দেখার আগ পর্যন্ত সবই ঠিক ছিলো এখন আপনাকে দেখার পর না জানি কি হয়ে গেছে।

আইরাত;; আমি মনে করি কোন ভদ্র ঘরের ছেলে একজন অচেনা মেয়েকে ফোন দিয়ে এভাবে জ্বালাতন অবশ্যই করে না,, সো প্লিজ।

তায়াফ;; খোঁজ নিলাম আপনার ব্যাপারে।

আইরাত;; মানে?

তায়াফ;; মানে কিছুই না এইযে আপনার সাথে কথা বললাম আর কি।

আইরাত;; আশা করি এইসন আজাইরা কথা বলার জন্য দ্বিতীয় বার আর ফোন করবেন না।

এই বলেই আইরাত ঠাস করে ফোন কেটে দেয়। খুব মেজাজ খারাপ হচ্ছে। আচ্ছা ঝামেলা এই লোক। আইরাত একবার ভাবে যে আব্রাহাম কে সব বলে দিবে কিন্তু আবার নিজ মনে মনেই ভাবে যে থাক আর বলতে হবে না তাকে। কেননা এমনিতেই সে অনেক ঝামেলায় আছে তার ওপর উল্লাসকে মারলো। আবার নতুন করে এই উটকো ঝামেলা না পাকাক। তাই পরক্ষণেই ঝেড়ে ফেলে এই কথা মাথা থেকে।


অন্যদিকে আব্রাহাম আজ বেশ সাবধানে চলাফেরা করছে। কেননা উল্লাসের অনেক লোকই আছে এখানে। আর তারা যদি জেনে যায় যে আব্রাহামই উল্লাস কে মেরেছে তাহলে তারা বুঝে যাবে যে এখানে আব্রাহাম কোহিনূরের জন্যই এসেছে এবং আরো সতর্ক হয়ে যাবে যা আব্রাহাম চাইছে না। একদম মূলবিন্দু থেকে তারপর ধাপে ধাপে ওপরের দিকে যেতে হবে। উল্লাস বলেছিলো এখানে আতিক আছে তারাও এর সাথে জড়িত। তাহলে সবার আগে আতিকের চেলা বিজয়ের কাছ থেকে তার সব খোঁজ-খবর নিতে হবে তারপর আতিক অব্দি পৌঁছাতে পারলেই মূল উদ্দেশ্য পর্যন্ত যেতে পারবে। আব্রাহাম এখন একটা কফিশপের ভেতরে বসে আছে। তার সামনে দুজন বিদেশি লোক বসে আছে। তাদের সাথে কথায় ব্যাস্ত ছিলো আব্রাহাম তবে তার মাঝেই হঠাৎ করে তার চোখ যায় একজন লোকের দিকে। সেদিকে কপাল কুচকে তাকালে লোকটা তার পেছন ঘুরে তাকায়। আব্রাহাম দেখে এই বিজয়। যাক ভালোই হলো। বেশি একটা খুঁজতে হয়নি, একাই চোখের সামনে পরে গেছে। আব্রাহাম কথা বলছে আর বিজয়ের ওপর নজর রাখছে। এখন কোন মতেই একে হাতছাড়া করা যাবে না। বেশ কিছুক্ষন পর বিজয় হঠাৎ সেখান থেকে চলে আসতে ধরে আব্রাহামও তার সামনে বসে থাকা লোক দুটো কে বলে সেখান থেকে দ্রুত উঠে পরে। মুখে একটা কালো মাস্ক পরে বেশ আড়াল করেই যেতে লাগে। আসলে আব্রাহাম বিজয় কে ফলো করছে। যেতে যেতেই বিজয় ০৩ নাম্বার ফ্লোরের ১৩ নাম্বার রুমের ভেতরে চলে যায়। এখন আব্রাহাম ভেতরে যাবে কি করে। তবে সব রুমেরই ডুপলিকেট চাবি থাকে। তাই সে সোজা রিসিপশনের কাছে চলে যায়।

রিসিপশনিস্ট;; Yes sir, how can i help you?

আব্রাহাম;; Actually i want a duplicate key of room number 13.

রিসিপশনিস্ট;; Sorry sir, we have no permission……

রিসিপশনিস্টের পুরো কথা শেষ না হতেই আব্রাহাম তার মুখ থেকে মাস্ক টা নিচে নামিয়ে দেয়। আব্রাহাম কে দেখে সে একটু ঝটকাই খায়। আর কোন কথা না বলে সোজা ১৩ নাম্বার রুমের চাবি আব্রাহাম কে দিয়ে দেয়। আব্রাহাম চাবি নিয়ে এসে পরে। বিনা শব্দে ধীর গতিতে রুমের ভেতরে চলে যায়। কিন্তু রুমে কেউ নেই, পুরো রুম ফাকা। আব্রাহাম আশেপাশে চোখ বুলাচ্ছিলো তখনই খেয়াল করে ওয়াসরুম থেকে পানির শব্দ আসছে। আব্রাহাম সেদিকে এগিয়ে যায়, গিয়ে দেখে ওয়াসরুমে কেউ নেই শুধু পানি ঝড়ছে। হুট করেই তার কেনো যেনো মনে হতে লাগলো যে তার ঠিক পেছনেই কেউ দাঁড়িয়ে আছে। সে পেছনে ঘুড়ে দেখে বিজয় দাঁড়িয়ে আছে আর তার হাতে এক বেধ ধারালো চাকু। বিজয় এক চিৎকার দিয়ে আব্রাহামের ওপর চাকু দিয়ে যেই না আঘাত করতে আসবে তখন আব্রাহাম দ্রুত সেখান থেকে সরে গিয়ে উল্টো ঘুরে বিজয় কে পেছন থেকে শক্ত করে প্যাচিয়ে ধরে একহাতে। বিজয় ছাড়া পাবার জন্য প্রচুর নড়াচড়া করতে লাগে কিন্তু পারে না।

আব্রাহাম;; দেখ আমার তোর সাথে কোন শত্রুনা নেই অযথা আগ বারিয়ে মরতে আসিস না। চুপচাপ বল আতিক কোথায়?

বিজয়;; বলবো না আমি।

আবাহাম;; বাহ, তুই তো দেখি অনেক বেশিই বিশস্ত ব্যাক্তি আতিকের। কিন্তু আফসোস এই বিশস্ততা খারাপ দিকের কোন ভালো দিকের না। এবার বেশি সময় নষ্ট না করে বলে দে যে আতিক কোথায় আছে!

বিজয় কিছু বলছে না দেখে আব্রাহাম তার পায়ে লাথি নিয়ে নিচে বসিয়ে দেয়। তবুও কিছু বলে না দেখে আব্রাহাম উল্টো ঘুরিয়ে বিজয়ের হাতে চাকু নিয়ে ইচ্ছে মতো তারই হাতে কয়েক ঘা বসিয়ে দেয়। যন্ত্রণায় আর্তনাদ করে ওঠে সে। একটা সময় আর না সইতে পেরে সে বলেই দেয়।

বিজয়;; উনিহ, উ উনি সাত নাম্বার ফ্লোরের রুম নাম্বার এগারো তে আছেন।

আব্রাহাম ক্ষনিকের জন্য বিজয় কে ছেড়ে দেয়। রাগে রক্তচক্ষু নিয়ে আছে। বিজয় কে ছেড়েই দিতো আব্রাহাম কিন্তু পরমূহুর্তেই তার মনে পরে যে বিজয় আইরাতের সব খোঁজ নিয়ে আতিক কে বলেছিলো। এটা মনে পরতেই মেজাজ আরেকদফা চটে যায়। দাঁত গুলো কটমট করতে করতে বিজয়ের হাত থেকে ছুরি টা নিয়ে সোজা তার গলায় চালিয়ে দেয়। কথা বলার সময় টুকুও পায় না। অতঃপর বিজয়ের দেহকে ওয়াসরুমের পানিভর্তি টাবে ফেলে দেয়। মূহুর্তেই যেনো টাবের পানিটুকু গাঢ় লাল বর্ণ ধারন করে রক্তের ধারায়। আব্রাহাম আবার তার মুখে মাস্ক পরে এসে পরে। এখন খুন করে ফেলার কথা কেউ জানলে জানুক, কেউ না জানলে না জানুল তাতে কিছুই যায়-আসে না তার। আব্রাহাম সোজা সেই ফ্লোর থেকেই বের হয়ে পরে। এবার যত দ্রুত সম্ভব আতিক কে খুঁজে বের করতে হবে। আব্রাহাম এখনই আতিকের খোঁজে বের হয়ে পরতো কিন্তু তখন আইরাত ফোন করে বসে।

আব্রাহাম;; হ্যালো

আইরাত;; কোথায় আপনি?

আব্রাহাম;; আমি বাইরে কেনো কিছু কি হয়েছে নাকি!

আইরাত;; বাইরে বের হয়েছেন ৩ ঘন্টা। এখনো আপনার কাজ শেষ হলো না! রুমে আসুন জলদি।

আব্রাহাম;; কন্ঠ এতো ধীর লাগছে কেনো? বেবিগার্ল ঠিক আছো?

আইরাত;; হ্যাঁ আপনি প্লিজ চলে আসুন তাহলেই হবে।

আব্রাহাম;; আচ্ছা আসছি।

আইরাত ফোন কেটে দেয়। তার কিছু সময় পরেই আব্রাহাম রুমে আসে এসে দেখে আইরাত জানালার থাই গ্লাস টা সরিয়ে দিয়ে দুহাটু ভাজ করে বসে আছে। দরজা খোলার আওয়াজ পেয়ে তাকিয়ে দেখে আব্রাহাম এসেছে। আব্রাহাম নিজের ওপর থেকে জেকেট টা খুলে রাখে। আইরাতের সামনে গিয়ে বসে পরে। আইরাত তার দিকে তাকালে দে খানিক ভ্রু নাচায়। আইরাত মুখ ঘুরিয়ে নেয়।

আব্রাহাম;; আরে বাবা হয়েছে কি?

আইরাত;; কবে সব ঝামেলা শেষ হবে? কবে আমরা দেশে যাবো? কবে বাড়ি যাবো?

আব্রাহাম;; কেনো খুব তো দেশের বাইরে যাওয়ার ইচ্ছে ছিলো মিটে গেছে তা!?

আইরাত;; ইচ্ছে ছিলো আর আছেও। মিটে নি। কিন্তু আমি এইসব অহেতুক ঝামেলা চাই নি যেগুলো এখন হচ্ছে।

আব্রাহাম আইরাতের গালের পাশে নিজের হাত রেখে দেয়।

আব্রাহাম;; খুব শীঘ্রই যাবো আমরা।

আইরাত;; হুমম।

আব্রাহাম;; খেয়েছিলে কিছু নাকি এমনিই বসে আছো?

আইরাত;; খেতে ইচ্ছে করছে না।

আব্রাহাম শার্টের হাতা গুটাতে গুটাতে উঠে পরে। তারপর নিজেই খাবার বেরে এনে আইরাতের মুখের সামনে ধরে। প্রথমে না না করলে আব্রাহাম গিয়ে এক বাটি কাচা মরিচ এনে আইরাতের সামনে রেখে দেয়। দুপা ভাজ করে হাতে মরিচের বাটি নিয়ে বসে পরে। আব্রাহাম তার মুখে খাবার তুলে দিচ্ছে আর আইরাত হাতে কাচা মরিচ নিয়ে ইচ্ছে মতো খাচ্ছে। এটা নতুন কিছু না। আব্রাহাম জানে যে আইরাত প্রচন্ডরকমের ঝাল প্রিয়। কিন্তু তখনই দরজায় কড়া নাড়ে। আব্রাহাম গিয়ে দরজা খুলে কিছুটা অবাকই হয়।





চলবে~~

(

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here